খেলাধুলা
নারী বিশ্বকাপ নিয়ে আমিরাত বোর্ডের সঙ্গে বিসিবি প্রধানের বৈঠক
দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম সফরে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) গেলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদ। ৩ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া নারী বিশ্বকাপের রোডম্যাপ ঠিক করতেই মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে উড়ে গেছেন তিনি।
এ আসরটি বাংলাদেশে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতায় নারী বিশ্বকাপ ইউএইতে সরিয়ে নিয়েছে আইসিসি। তবে আরব আমিরাতে গেলেও আসরের অফিসিয়াল আয়োজক বাংলাদেশই থাকছে।
আইসিসি প্রধান নির্বাহী জিওফ অ্যালারডাইসের উপস্থিতিতে আরব আমিরাত ক্রিকেট বোর্ড প্রধান মাবারাক আল নাহিয়ান ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিসিবি সভাপতি।
বৈঠক শেষে সফল এক টুর্নামেন্টের আশা প্রকাশ করেছেন ফারুক আহমেদ, ‘দুবাই ও শারজাহতে নারী টি২০ বিশ্বকাপ আয়োজনের পদক্ষেপ নেওয়ায় আমরা আমিরাত ক্রিকেট বোর্ডকে ধন্যবাদ জানাই। দুটি ভেন্যুতেই কিছু বড় বিশ্ব ইভেন্টসহ দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আয়োজন হয়েছে। টুর্নামেন্টটি সফলভাবে আয়োজনের জন্য তাদের ওপর আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। দুই বোর্ডের মধ্যে অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। আমরা দুই বোর্ড আইসিসির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে উন্মুখ। আরব আমিরাত বোর্ডের প্রধানও আসরটি সফলভাবে আয়োজনে বদ্ধপরিকর।’
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
সপরিবারে ভারত ছাড়ছেন কোহলি
ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার বিরাট কোহলি। দেশের জার্সিতে একের পর এক কীর্তি গড়েছেন এই ডানহাতি ব্যাটার। তবে ভারত ছেড়ে লন্ডনে স্থায়ীভাবে বসবাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি— এমন দাবি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর।
কোহলির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে তার ছেলেবেলার কোচ রাজকুমার শর্মা জানিয়েছেন, ভারত ছেড়ে লন্ডনে সংসার পাতবেন কোহলি। স্ত্রী আনুশকা শর্মা, কন্যা ভামিকা ও পুত্র অকায়কে নিয়ে সেখানেই থাকবেন তিনি।
রাজকুমার বলেন, ক্রিকেট ছাড়া বাকি সময়টা কোহলি পরিবারের সঙ্গেই কাটাতে ভালোবাসে। অবসরের পরে বাকি জীবনটা ও লন্ডনে কাটাতে চায়।
হঠাৎ করে কেন লন্ডনে যেতে চান কোহলি এমন প্রশ্ন করা হয় এই কোচকে। জবাব তিনি জানিয়েছেন, সেখানে অনেক স্বাভাবিকভাবে জীবন কাটাতে পারেন তিনি। সেই কারণেই এই ভাবনা।
তিনি বলেন, ওখানকার পরিবেশ ওদের ভালো লাগে। ভারতে থাকলে যেভাবে সারাক্ষণ ওদের নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে ঘুরতে হয় সেটা লন্ডনে দরকার পড়ে না। ওখানে অনেক স্বাভাবিকভাবে জীবন কাটাতে পারে ওরা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
ক্যারিবীয়দের হোয়াইটওয়াশ করে ইতিহাস গড়লো বাংলাদেশ
সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ জিতে আগেই সিরিজ নিশ্চিত করেছিল বাংলাদেশ। তাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য শেষ ম্যাচ ছিল মান বাঁচানোর লড়াই। ঘরের মাঠে ক্যারিবিয়ানরা সেটা রক্ষা করতে পারল না। শেষ ম্যাচে ৮০ রানের ব্যবধানে উইন্ডিজকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ফলে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রথমবারের মতো হোয়াইটওয়াশ করল টাইগাররা।
২০১২ সালে আয়ারল্যান্ডের পর তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে প্রতিপক্ষকে তাদের মাঠে ধবলধোলাইয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ। ভারত, পাকিস্তান এবং ইংল্যান্ডের পর চতুর্থ দল হিসেবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধবলধোলাই করল বাংলাদেশ।
সেন্ট ভিনসেন্টে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮৯ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। দলের হয়ে ৪১ বলে সর্বোচ্চ অপরাজিত ৭২ রান করেন জাকের আলি। জবাবে খেলতে নেমে ১৬ ওভার ৪ বলে ১০৯ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
১৯০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ইনিংসের প্রথম ওভারেই বাংলাদেশকে ব্রেকথ্রু এনে দেন তাসকিন আহমেদ। দ্বিতীয় বলেই ব্রান্ডন কিংকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন এই পেসার। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি। সিরিজের সবগুলো ম্যাচেই তাসকিনের শিকার হয়েছেন কিং।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসের ০.৫ ওভারে খেলার পরই হানা দেয় বৃষ্টি। তবে বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। মিনিট বিশেক পরই আবার খেলা শুরু হয়। দ্বিতীয় ওভারেই স্পিন আক্রমণে যায় বাংলাদেশ। নতুন বলে আরো একবার দুর্দান্ত শুরু করেন শেখ মেহেদি। নিজের প্রথম ওভার করতে এসেই উইকেটের দেখা পান। এই ডানহাতি অফ স্পিনারকে লং অন দিয়ে ছক্কা মারতে গিয়ে বদলি ফিল্ডার আফিফ হোসেনের হাতে ধরা পড়েন জাস্টিন গ্রিভস। তাতে ৭ রান তুলতেই ২ উইকেট হারায় উইন্ডিজ।
এরপর নিকোলাস পুরাণ ও জনসন চার্লস জুটি গড়ার চেষ্টা করেন। তবে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে গিয়ে ফেরেন পুরাণ। এই অভিজ্ঞ ব্যাটারকে বোকা বানিয়েছেন মেহেদি। অফ স্টাম্পের বাইরে থেকে নিচু হয়ে ভেতরে ঢোকা বলে লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন পুরাণ। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১০ বলে ১৫ রান।
পাঁচে নেমে ডাক খেয়েছেন রোস্টন চেইস। চার বল খেলে রানের খাতা খোলার আগেই হাসান মাহমুদের বলে মেহেদির হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। এক প্রান্ত আগলে রাখা চার্লস ফিরেছেন রান আউটের শিকার হয়ে। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৮ বলে ২৩ রান। তাতে দলীয় ফিফটির আগেই ৫ উইকেট হারায় উইন্ডিজ।
এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি স্বাগতিকরা। লোয়ার মিডল অর্ডারে রভম্যান পাওয়েল-গুড়াকেশ মোতিরাও ছিলেন আসা-যাওয়ার মিছিলে। খানিকটা ব্যতিক্রম ছিলেন কেবল রোমারিও শেফার্ড। তবে তার ২৭ বলে ৩৩ রানের ইনিংস কেবলই জয়ের ব্যবধান কমিয়েছে।
বাংলাদেশের হয়ে ২১ রানে ৩ উইকেট শিকার করে ইনিংসের সেরা বোলার রিশাদ হোসেন। তাছাড়া তাসকিন ও মেহেদি দুটি করে উইকেট পেয়েছেন। আর একটি করে উইকেট পেয়েছেন তানজিম সাকিব ও হাসান মাহমুদ।
এর আগে লিটনের সঙ্গে ইনিংস ওপেন করতে নেমে রীতিমতো ঝড় তোলেছিলেন পারভেজ হোসেন ইমন। তার আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে উড়ন্ত শুরু পায় বাংলাদেশ। অফফর্মে থাকা লিটনকেও আজ বেশ আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছিল। দারুণ কিছু শটও খেলেছেন। তবে ১৪ রানের বেশি করতে পারলেন না। অধিনায়ক ফেরায় ভাঙে ৪৪ রানের উদ্বোধনী জুটি।
লিটন ফেরার পর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ইমন। দুর্দান্ত ব্যাটিং করা এই ওপেনার আলজারি জোসেফকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন জাস্টিন গ্রেভসের হাতে। সাজঘরে ফেরার আগে ২১ বলে ৩৯ রান করেন তিনি। যেখানে ৪টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন ইমন। ইমনের দুর্দান্ত ইনিংসে ভর করে পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ ২ উইকেটে ৫৪ রান তোলে।
তিনে নেমে ভালো শুরুর আভাস দিলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি তানজিদ তামিম। এক ছক্কায় ৯ বলে ৯ রান করেছেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার।
৬৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে কিছুটা ব্যকফুটে গেলে আরো একবার দলের হাল ধরেন মেহেদি হাসান মিরাজ ও জাকের আলি। চতুর্থ উইকেট জুটিতে শুরুতে দুজনে কিছুটা রক্ষণাত্মক ব্যাটিং করেছেন। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হাত খুলেছেন। আর রানের গতি বাড়াতে গিয়েই ফিরেছেন মিরাজ। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২৩ বলে ২৯ রান।
এদিন ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন দেওয়া হয় শামিম হোসেনকে। কিন্তু গত দুই ম্যাচে দারুণ ব্যাট করলেও আজ তার ভাগ্য সহায় হয়নি। ২ রান করে জাকেরের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়েছেন। একই পথে হেটেছেন শেখ মেহেদিও।
দুই ব্যাটারের রান আউটের সঙ্গেই ছিল জাকেরের নাম। তাই বাড়তি দায়িত্ব ছিল তার ওপর। সেটা ভালোভাবেই পুষিয়ে দিয়েছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার। শুরুতে কিছুটা ধীরগতির ব্যাটিং করলেও ফিনিশিংটা করেছেন দুর্দান্ত। এক প্রান্তে রীতিমতো টর্নেডো বইয়ে দিয়ে ৩ চার ও ৬ ছক্কায় ৪১ বলে করেছেন অপরাজিত ৭২ রান।
জাকেরকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন তানজিম সাকিব। এক চার ও এক ছক্কায় ১২ বলে ১৭ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
হামজা এখন বাংলাদেশের
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লিগ ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ। সেই লিগে খেলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলার হামজা চৌধুরী। ইংলিশ লিগে খেললেও লাল-সবুজের দেশের প্রতিনিধিত্ব করার ইচ্ছে ছিল অনেক দিনের। নানা ধাপ পেরিয়ে বাংলাদেশের হয়ে খেলার অনুমতি পেয়েছেন প্রিমিয়ার লিগের দল লেস্টার সিটিতে খেলা এই মিডফিল্ডার।
আজ (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় হামজা এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি তাবিথ আউয়ালও বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেছেন।
হামজা দেওয়ান চৌধুরীর পরিবার বাংলাদেশি। তার বেড়ে উঠা ইংল্যান্ড। তার পরিবারের ইচ্ছা ছিল হামজার বাংলাদেশের জার্সিতে খেলার। বেশ কয়েক বছর ধরে আলোচনা থাকলেও চলতি বছরই বাফুফে ও হামজা আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করে।
বাংলাদেশের হয়ে খেলার প্রথম ধাপ পাসপোর্ট। হামজার পরিবারের কাগজপত্রের মাধ্যমে বাফুফে ইংল্যান্ডে বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে পাসপোর্ট তৈরি করেছে। হামজা ইংল্যান্ড যুব দলের হয়ে খেলেছেন। এ জন্য ইংল্যান্ড ফুটবল ফেডারেশন থেকে অনাপত্তিপত্র নিয়েছে ফেডারেশন। এরপর বাফুফে ফিফার প্লেয়ার স্ট্যাটাস কমিটির কাছে হামজাকে বাংলাদেশের হয়ে খেলার পক্ষে আবেদন করে।
প্লেয়ার স্ট্যাটাস কমিটি কিছু পর্যবেক্ষণ দেয়। হামজা যে বয়সে ইংল্যান্ডের হয়ে খেলেছেন এ নিয়ে বিশেষ করে। হামজার সাথে রক্তের সম্পর্ক যাদের রয়েছে তারা বাংলাদেশের নাগরিক এটা বাফুফে পুনরায় প্রমাণ করেছে। ফিফা সব কিছু পর্যালোচনা করে হামজাকে বাংলাদেশের হয়ে খেলার অনুমতি দিয়েছে।
আগামী বছরের ২৫ মার্চ ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক হতে পারে হামজার।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে টাইগারদের সিরিজ জয়
তিন ম্যাচের সিরিজের প্রথম দুটি জিতে ইতোমধ্যে সিরিজ নিশ্চিত করে ফেলেছে লিটন দাসের দল। ক্যারিবিয়ানদের তাদেরই মাটিতে আজ ২৭ রানে হারিয়ে অর্ধযুগের এক আক্ষেপও মিটিয়েছেন লিটন-সোম্য-মিরাজরা। সেইন্ট ভিনসেন্টের অ্যারন্স ভ্যালেতে লো স্কোরিং ম্যাচটি জেতার মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ৬ বছর পর ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে সিরিজ জয় হলো টাইগারদের।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। মাত্র ৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার লিটন। ৪ বলে ২ রান করে তার পথ ধরেন তিনে ব্যাট করতে নামা তানজিদ তামিমও। তবে সৌম্য সরকারকে সঙ্গে নিয়ে রান তোলার চেষ্টা করেন মিরাজ। অবশ্য ইনিংস বড় করতে পারেনি দুজনের কেউই। ১১ রানে সৌম্য রান আউট হলে ২৬ রান করে তার দেখানো পথে হাঁটেন মিরাজ। এরপর রিশাদ ৫ রানে আউট হলে দলীয় ৫২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে টাইগাররা। এরপর ১১ বলে ১১ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন মাহেদী হাসান।
এদিন ব্যাট হাতে আলো ছড়াতে পারেননি জাকের আলীও। ২০ বলে ২১ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। দলের স্কোর তখন ১৬ ওভার এক বলে ৮৮ রান। হাতে মাত্র তিন উইকেট। মনে হচ্ছিল, একশোই হয়তো পেরোবে না স্কোর। কিন্তু, ক্রিজে নেমে দারুণ এক ক্যামিও খেলে দলের জন্য সম্মানজনক একটা স্কোর গড়ে দেন শামীম পাটোয়ারী। দুই চার ও দুই ছয়ে ১৭ বলে করা তার ৩৫ রানের ঝড়ো ইনিংসটির ওপর ভর করে ১২৯ রানের লড়াকু পুঁজি পায় বাংলাদেশ। ১১ বলে ৯ রান করে তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন তানজিম সাকিব।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ২ উইকেট শিকার করেন গুদাকেশ মোতি। এ ছাড়াও রোস্টন চেজ, আকিল হোসেইন, আলজারি জোসেফ ও ওবেদ ম্যাকয় একটি করে উইকেট নেন।
সহজ লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা দারুণই করেছিলেন দুই ক্যারিবিয়ান ওপেনার ব্র্যান্ডন কিং ও জনসন চার্লস। দুই ওভারে ১৯ রান তুলে ফেলেন দুজনে মিলে। কিন্তু তৃতীয় ওভারে এসেই আঘাত হানেন তাসকিন। তার প্রথম বলেই কট বিহাইন্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন কিং। চার বল পরেই একইভাবে ফেরান তিনে নামা ফ্লেচারকে। তাসকিনের চার বল খেলে এক রানও না করে সাজঘরে ফেরেন কযারিবিয় এ ব্যাটসম্যান। এরপর নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারাতে থাকে ক্যারিবিয়ানরা। চতুর্থ ওভারের চতুর্থ বলে মাহেদী হাসানের শিকার হন সেট হয়ে আসা জনসন চার্লস। এরপর আবার পঞ্চম ওভারে ফিরে নিকোলাস পুরানকে ফেরান মাহেদী। অষ্টম ওভারের দ্বিতীয় বলে হাসান মাহমুদের শিকার হন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েল। নবম ওভারের তৃতীয় বলে রোমারিও শেফার্ডকে ফেরান তানজিম সাকিব। ৪২ রান তুলতেই ৬ উইকেট নেই ক্যারিবিয়ানদের।
মাঝে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলেন রোস্টন চেজ। পাঁচে নামা এই ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানকে অপর প্রান্ত থেকে যোগ্য সঙ্গ দেন আটে নামা আকিল হোসেইন। দুজনের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রানের চাকা ঘুরতে থাকে ক্যারিবিয়ানদের। লক্ষ্যটা ছোট বলেই কি না, জয়ের আশা ভালোভাবেই বেঁচে ছিল স্বাগতিকদের।
১৬তম ওভারে বোলিংয়ে আসেন হাসান মাহমুদ। তার প্রথম দুই বলেই দুই ছক্কা হাঁকান রোস্টন চেজ। প্রথমটি স্কুপ করে, পরেরটি ফুল টসে স্ট্রেট দিয়ে। ১৬ রান দিয়েছিলেন হাসান মাহমুদ তার এই ওভারে। তাতে ম্যাচটাও অনেকটা ঘুরে যায় স্বাগতিকদের পক্ষেই।
তবে, পরের ওভারেই রিশাদ এসে পানি ঢেলে দেন ক্যারিবিয়ানদের জয়ের স্বপ্নে। পরপর দুই বলে সাজঘরে ফেরান ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা চেজ এবং নয়ে নামা গুদাকেশ মোতিকে। রিশাদের পরের ওভারে এসেই ক্যারিবিয়ানদের দশম ব্যাটসম্যান আলজারি জোসেফকে তুলে নেন তানজিম সাকিব। চোখের পলকেই ৮৯ রানে ৬ উইকেট থেকে স্বাগতিকদের স্কোর হয়ে যায় ৯০ রানে ৯ উইকেট।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের কফিনে শেষ পেরেকটা ঠোকেন সেই তাসকিন, যার হাতেই প্রথম উইকেটটি পড়েছিল তাদের। স্বাগতিকদের ইনিংস থামে ৯ বল বাকি থাকতে, ১০২ রানে। ২৭ রানের দারুণ এ জয়ে ৬ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিশ্চিত করল বাংলাদেশ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
বিজয় দিবসে অসাধারণ বিজয় বাংলাদেশের
মহান বিজয় দিবস আজ। বিজয় দিবসের সকালে সাত সমুদ্র তেরো নদীর ওপার থেকে ভেসে এল বিজয়ের আনন্দ। সুদূর ক্যারিবীয় দ্বীপ সেন্ট ভিনসেন্টে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে দিল বাংলাদেশ। এই জয়ে বাংলাদেশ করল চক্রপূরণ।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে সেন্ট ভিনসেন্টে টসে হেরে আগে ব্যাটিং করে সৌম্য সরকারের ৩২ বলে ৪৩ রানের ওপর ভর করে স্বাগতিকদের ১৪৮ রানের লক্ষ্য দেয় সফরকারীরা। জবাবে ব্যাটিং করতে নেমে স্বাগতিকরা এক বল বাকি থাকতেই ১৪০ রানে অলআউট হয়ে যায়। তাতেই ৭ রানের জয় পায় বাংলাদেশ।
১৪৮ রানের লক্ষ্যে নেমে দলীয় ১ রানেই ভেঙে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদ্বোধনী জুটি। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে তাসকিন আহমেদকে তুলে মারতে যান ব্র্যান্ডন কিং। মিড অফ থেকে উল্টো দিকে দৌঁড়ে তানজিদ হাসান তামিম দারুণ ক্যাচ ধরেছেন। তাসকিনের মতো শেখ মেহেদী হাসানও নিজের প্রথম ওভারে উইকেট নেওয়া একরকম অভ্যাস বানিয়ে ফেলেছেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসের তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে নিকোলাস পুরানকে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন মেহেদী। ২ রানে ২ উইকেট হারিয়ে বেকায়দায় পড়া উইন্ডিজ এরপর পাল্টা আক্রমণ চালায় বাংলাদেশের ওপর। তৃতীয় ওভারে তানজিম হাসান সাকিবকে পিটিয়ে ২৫ রান নেয় স্বাগতিকেরা। এই ওভারে জনসন চার্লস ২ ছক্কা ও ১ চার মেরেছেন।
অতি আক্রমণাত্মক হতে গিয়েই নিজের উইকেটটা খুইয়েছেন চার্লস। পঞ্চম ওভারের পঞ্চম বলে মেহেদীকে তুলে মারতে গিয়ে মিড অফে ক্যাচ দিয়েছেন চার্লস। ১২ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় চার্লস করেন ২০ রান। তৃতীয় উইকেটে রস্টন চেজের সঙ্গে চার্লস ১৫ বলে ৩১ রানের জুটি গড়তে অবদান রেখেছেন।
এক ওভার বিরতিতে এসে মেহেদী দিয়েছেন জোড়া ধাক্কা। সপ্তম ওভারের তৃতীয় ও পঞ্চম বলে মেহেদী নিয়েছেন আন্দ্রে ফ্লেচার ও চেজের উইকেট। দুটি উইকেটেই ক্যাচ ধরেন উইকেটরক্ষক লিটন দাস। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর হয়েছে ১০ ওভারে ৫ উইকেটে ৫৭ রান। স্বাগতিকদের ইনিংসের অর্ধেক হওয়ার আগেই মেহেদী তার নির্ধারিত ৪ ওভার বোলিং করেছেন। ১৩ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট।
নিজের প্রথম ওভারে বেধড়ক পিটুনি খেলেও তানজিম সাকিব এরপর তার দ্বিতীয় ওভারে নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছেন। ১১তম ওভারে ২ রানে নিয়েছেন ১ উইকেট। ঠিক তার পরের ওভারে রিশাদ হোসেন নিয়েছেন আরও এক উইকেট। ১১.৪ ওভারে ৭ উইকেটে ৬১ রানে পরিণত হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপরই শুরু হয় বাংলাদেশের ওপর তাণ্ডব। অষ্টম উইকেটে ৩৩ বলে ৬৭ রানের জুটি গড়েছেন রভমান পাওয়েল ও রোমারিও শেফার্ড। উইন্ডিজ অধিনায়ক পাওয়েলের এক একটা ছক্কা গ্যালারিতে আছড়ে পড়তেই ক্যারিবীয় সমর্থকেরা করেছেন উল্লাস।
এর আগে টস জিতে ফিল্ডিং নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং পাওয়া বাংলাদেশ নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪৭ রান করে বাংলাদেশ। ইনিংস সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেন সৌম্য সরকার। ৩২ বলে মেরেছেন ২ চার ও ৩ ছক্কা। উইন্ডিজের আকিল, ম্যাকয় নিয়েছেন ২টি করে উইকেট। আকিল ৪ ওভারে দিয়েছেন ১৩ রান। এক ওভার মেডেনও দিয়েছেন।
কাফি