অর্থনীতি
আশুলিয়ায় শিল্পাঞ্চলে যৌথ অভিযানে আটক ১৪
ঢাকার আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে পোশাক কারখানায় ভাঙচুর, হামলা ও পোশাক খাতে অস্থিরতা তৈরির সঙ্গে যুক্ত এমন সন্দেহভাজন মোট ১৪ জনকে আটক করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিভিন্ন সময়ে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়া এবং সাভারের বিভিন্ন এলাকা থেকে যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আহম্মদ মুঈদ।
পুলিশ সুপার আহম্মদ মুঈদ বলেন, “শিল্পাঞ্চলে অস্থিরতা তৈরির পাশাপাশি পোশাক কারখানায় হামলা-ভাঙচুরের সাথে জড়িত এমন সন্দেহভাজন মোট ১৪ জনকে আমরা আটক করেছি। এর মধ্যে ১১ জনকে আশুলিয়া থেকে এবং ৩ জনকে সাভার এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে।”
এছাড়াও এসব বিশৃঙ্খলার সাথে আটকদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়েও যাচাই-বাছাই চলছে জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আটককৃতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, আশুলিয়ায় পোশাক কারখানায় নারী-পুরুষের সমানুপাতিক হারে নিয়োগসহ বিভিন্ন দাবিতে নবীনগর-চন্দ্রা ও বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়ক অবরোধ করে সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) বিক্ষোভ করেন চাকরিপ্রত্যাশী শ্রমিকরা। একপর্যায়ে আন্দোলনরত শ্রমিকরা নবীনগর-চন্দ্রা ও বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ব্যারিকেড তৈরি করে অবরোধ করেন ও বিভিন্ন কারখানা লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন।
এমন পরিস্থিতিতে বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের বাইপাইল থেকে জিরাবো পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে অবস্থিত অন্তত ৩০টি কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের কারখানায় ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সবজিতে স্বস্তি ফিরলেও বোতলজাত সয়াবিনের সরবরাহ নেই
এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিকেজি আলুর দাম ৫ টাকা কমেছে। প্রতি ডজন ডিমের দাম ৫ টাকা কমে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ, চিনি, ছোলা ও শীতকালীন সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। এদিকে, বাজার থেকে অনেকটা উধাও হয়ে গেছে সয়াবিন তেল।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
মিরপুর মুসলিম বাজারের বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত শুক্রবারও বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি আলু ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। যা মঙ্গলবারে এসে ৫ টাকা কমেছে। সরবরাহ বাড়ায় শীতকালীন সবজির দামও কমেছে। ফুলকপি, বাঁধাকপি ও লাউ পিস হিসেবে ৫ টাকা থেকে ১০ টাকা কমেছে। প্রতি কেজি টমেটো ১৩০ টাকা থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬০ টাকা। একইভাবে প্রতিকেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ৮০-১১০ টাকায়। গত সপ্তাহে যা ছিল ১৪০-১৫০ টাকা।
সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম ৫ টাকা কমে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রমপুর ডিম ভাণ্ডারের স্বত্বাধিকারী শামসুল আলামিন বলেন, বাজারে শীতকালীন সবজির জোগান বেড়েছে। ডিমের ওপর চাপ কিছুটা কম। গত সপ্তাহে প্রতি হালি ডিম বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকায়, গত বুধবার থেকে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা কমেছে পেঁয়াজের দাম। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়, আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা। একইভাবে ৫ থেকে ১০ টাকা দাম কমে প্রতি কেজি ছোলা ১২৫ টাকা থেকে ১৪০ টাকায় ও প্রতিকেজি চিনি ১২৫ টাকা ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মিরপুর ১২ নম্বরের মুসলিম বাজারের ৫-৬টি মুদি দোকাম ঘুরে মেলেনি কোনো সয়াবিন তেল। আলিমুদ্দিন নামের একজন বিক্রেতা বলেন, কোম্পানি রেট বাড়াবে, এখন সাপ্লাই বন্ধ। ২-৩ দিন ধরে কোনো সয়াবিন তেল দিচ্ছে না।
আরেক বিক্রেতা বলেন, অনেক দোকানে সয়াবিন তেল নাই। অনেকেই আবার মজুত করে রাখছেন দাম বাড়লে বেশি দামে বিক্রি করবে।
কয়েকটি দোকানে প্যাকেটজাত সয়াবিন পাওয়া গেছে। তারা তেল বিক্রি করছে গায়ের রেটেই। রূপচাদা ১ লিটার সয়াবিন তেল ১৬৭, ৩ লিটার ৩৩৪ টাকা ও ৫ লিটার ৮১৮ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
সম্প্রতি শুল্ক, কর কমিয়ে সয়াবিন তেলের দাম কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কিন্তু সয়াবিনের দাম কমেনি। বিক্রেতারা বলছেন, তারা চাহিদার ১০ শতাংশ তেলও পাচ্ছেন না।
অপরিবর্তিত রয়েছে মাছ ও মাংসের দাম
বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৭৮০ টাকায়। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকা কেজিতে। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭৫-১৯৫ টাকা, কক মুরগি ২৯০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০-৫৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আকার ও ওজন অনুযায়ী, প্রতি কেজি ইলিশ মাছ ৮০০-২২০০ টাকা, পাবদা ৪০০-৮০০ টাকা, শিং ৪০০-১২০০ টাকা, টেংরা ৫০০-৮০০ টাকা, বোয়াল ৫০০-৯০০ টাকা, কাজলী মাছ ৮০০-১২০০ টাকা, রুই ৩৫০-৪৫০ টাকা, কাতল ৪০০-৬০০ টাকা, কালিবাউশ ৫০০-৮০০ টাকা, চিংড়ি ৮০০-১২০০ টাকা, কাচকি ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
শত বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তার ঘোষণা বিশ্বব্যাংকের
বিশ্বব্যাংক দরিদ্র দেশগুলোর জন্য শত বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা ঘোষণা করেছে। বৃহস্পতিবার (০৫ ডিসেম্বর) বিশ্বব্যাংকের এক মুখপাত্র এএফপি’কে একথা জানান।
বিশ্বব্যাংকের মুখপাত্র এএফপিকে জানায়, দরিদ্র ও বিপদাপন্ন দেশগুলোকে ১০০ বিলিয়ন ডলার অনুদান ও ঋণ সহায়তা দেওয়া হবে। ঋণ এবং অনুদানের জন্য প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেছে।
তিনি বলেন, গত তিন বছরে তহবিল সংগ্রহের প্রতিশ্রুতিকৃত প্রায় ২৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন থেকে সামান্য বৃদ্ধি করে দাতা দেশগুলো ব্যাংকের রেয়াতি ঋণ পরিশোধের জন্য ২৩ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এটি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (আইডিএ) নামে পরিচিত।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ঋণ ২০২১ সালে ছিল ৯৩ বিলিয়ন ডলার। এবার তা সামান্য বাড়িয়ে ১০০ বিলিয়ন ডলার করা হয়েছে।
আইডিএ প্রধানত বিশ্বের ৭৮টি দরিদ্রতম দেশকে অনুদান সহায়তা দিয়ে থাকে। এ খাতে কোভিড-১৯ এর প্রভাবে অর্থনৈতিক ক্ষতি থেকে শুরু করে জলাবায়ু পরিবর্তন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম আইডিএ। এ প্রকল্পে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, যুক্তরাজ্য, জার্মানিসহ ইউরোপীয় বেশ কয়েকটি দেশ প্রচুর অর্থায়ন করে। চলতি বছরে যুক্তরাষ্ট্র এ খাতে চার বিলিয়ন অর্থায়নের ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়া নরওয়ে এবং স্পেনসহ বিভিন্ন দেশও অর্থায়ন উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বেক্সিমকোর ১৬ কোম্পানি বিক্রির পরিকল্পনা সরকারের
বকেয়া বেতন, ভাতার দাবিতে শ্রমিক অসন্তোষের প্রেক্ষিতে, দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হিসেবে বেক্সিমকো গ্রুপের পোশাক খাতের ৩২ কোম্পানির মধ্যে ১৬টির স্বত্ব বিক্রির পরিকল্পনা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর বাইরে এই গ্রুপ সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু কোম্পানি বন্ধ করে দেওয়া হবে। চালু থাকবে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসসহ শুধু লাভজনক কোম্পানিগুলো।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে গঠিত ১১ সদস্যবিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সরকারি সূত্র মতে , ছোট-বড়, জানা-অজানা মিলিয়ে বেক্সিমকো গ্রুপের কোম্পানির সংখ্যা ১৬৯। এর মধ্যে পোশাক খাতের কোম্পানির সংখ্যা ৩২, যেগুলো উৎপাদনে রয়েছে। এই ৩২টি কোম্পানির মধ্যে ১৬ টির মালিকানা বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর বাইরে বেক্সিমকো গ্রুপের যেসব প্রতিষ্ঠান লোকসানে চলছে, সেগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তিন মাসের বেতন-ভাতা পরিশোধের পর বন্ধ করে দেওয়া হবে।
গত ২৮ নভেম্বর ১১ সদস্যবিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটির সভায় বেক্সিমকো গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানির বিষয়ে এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর আগে গত ২৪ নভেম্বর ‘বেক্সিমকো শিল্প পার্কের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রম ও ব্যবসায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটি’ গঠন করে। শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনকে আহ্বায়ক করে ১১ সদস্যবিশিষ্ট এই উপদেষ্টা কমিটি গঠিত হয়। গত ২৮ নভেম্বর ছিল এই কমিটির প্রথম বৈঠক। সেখানেই এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র ও নথিপত্র থেকে জানা যায়।
কমিটির সভার কার্যবিবরণী অনুযায়ী, সভায় বেক্সিমকো গ্রুপের ১৬৯টি প্রতিষ্ঠানকে এ, বি ও সি—এই তিন শ্রেণিতে ভাগ করার বিষয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে ‘এ’ অর্থাৎ ভালো কোম্পানির শ্রেণিতে থাকবে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। ‘বি’ শ্রেণিতে থাকবে ৩২টি কোম্পানি। আর বাকি সব কোম্পানি থাকবে সি শ্রেণিতে। বেক্সিমকোর কোম্পানিগুলোর এই শ্রেণিবিভাজনের প্রস্তাব দেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী। তাঁর ওই প্রস্তাবের ভিত্তিতে বেক্সিমকো গ্রুপের বিষয়ে উপদেষ্টা কমিটির প্রথম সভায় চারটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আশিক চৌধুরীর কাছে গত বৃহস্পতিবার ১৬৯ কোম্পানির তালিকা, কেউ না কিনলে এগুলোর পরিণতি, বন্ধ করে না দেওয়ার বিকল্প খোঁজা, শ্রমিকদের তিন মাস বেতন দেওয়ার পরের পরিস্থিতি ইত্যাদি বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। তিনি এসব বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বেক্সিমকোর কোম্পানিগুলোর বিষয়ে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রথমত বেক্সিমকো শিল্প পার্কের প্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রমিকদের আগামী তিন মাসের বেতন-ভাতার প্রয়োজনীয় অর্থ জোগান দেবে জনতা ব্যাংক। দ্বিতীয়ত, ‘বি’ শ্রেণির কোম্পানিগুলোর স্বত্ব বিক্রির জন্য এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট (ইওআই) চূড়ান্ত করে ঋণদাতা জনতা ব্যাংক আগামী ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে জানাবে। তৃতীয়ত, হাইকোর্টে চলমান রিটের জবাব তৈরির জন্য একজন অভিজ্ঞ আইনজীবী নিয়োগ করে প্রশাসকের কার্যপরিধি চূড়ান্ত করা। আইনজীবী নিয়োগের প্রয়োজনীয় খরচ দেবে অর্থ বিভাগ। চতুর্থত, এক সপ্তাহের মধ্যে বেক্সিমকোর কোম্পানিগুলোর শেয়ার হস্তান্তরের নিয়ন্ত্রণ নেবে কর্তৃপক্ষ, যা বাস্তবায়নের দায়িত্ব থাকবে বিএসইসি ও বেক্সিমকোর প্রশাসকের হাতে।
উপদেষ্টা কমিটির এসব সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে বেক্সিমকো গ্রুপের পরিচালক (অর্থ ও করপোরেট অ্যাফেয়ার্স) ওসমান কায়সার চৌধুরী বলেন, ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত বৈঠক উপলক্ষে মন্ত্রণালয় আমাদের ডাকলেও বৈঠকে রাখেনি। সিদ্ধান্তের কোনো চিঠিও পাইনি। ফলে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারছি না।
সিদ্ধান্তের কথা জানানো হলে ওসমান কায়সার চৌধুরী বলেন, কীভাবে তালিকা করা হয়েছে, জানি না। সরকার কী করতে যাচ্ছে, তা-ও স্পষ্ট নয়। তবে বেক্সিমকো গ্রুপের অধীন ১৬৯টি প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি নেই। এ ছাড়া বি শ্রেণির কিছু কোম্পানির স্বত্ব বিক্রির সিদ্ধান্তের বিষয়টিও বাস্তবসম্মত বলে মনে হচ্ছে না। কোম্পানিগুলো ভালোভাবে পরিচালনার জন্য বরং ঋণপত্র (এলসি) খোলার ব্যবস্থা করলে আমরা ভালো করব।
এদিকে গত ২৮ নভেম্বর উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান অংশ নেন। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, অর্থসচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, বেক্সিমকো লিমিটেডের রিসিভার মো. রুহুল আমিন এবং বেক্সিমকো গ্রুপকে ঋণ দেওয়া জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মজিবুর রহমান প্রমুখ।
সভার কার্যবিবরণীতে বলা হয়, বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, শিল্পের শ্রমিকদের মজুরিসহ সার্বিক কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। কিন্তু সম্প্রতি শ্রমিকেরা তাঁদের বকেয়া ও ন্যায্য মজুরি না পেয়ে প্রায়ই রাস্তাঘাট বন্ধসহ বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। ফলে পোশাকসহ অন্য খাতেও এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
বেক্সিমকো গ্রুপ নিয়ে উপদেষ্টা কমিটির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়ে শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করবেন না। বি শ্রেণির কোম্পানিগুলোর স্বত্ব বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছেন, কেউ কিনতে না চাইলে কী হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে শ্রমসচিব বলেন, একটা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগে চেষ্টা করি। দেখিই না কী করা যায়। পোশাক খাতের কারখানাগুলো চালানোর জন্য আগে বিদেশি ক্রেতাদের আহ্বান জানানো হবে। আর কিছু কোম্পানিতে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দিয়ে পরিচালনার ব্যবস্থা করবে বিএসইসি।
বেক্সিমকো গ্রুপকে সবচেয়ে বেশি অর্থায়ন করেছে রাষ্ট্রমালিকানাধীন জনতা ব্যাংক। ফলে গ্রুপটি থেকে ঋণ আদায় না হওয়ায় বিপাকে পড়েছে ব্যাংকটি। এ অবস্থায় উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জনতা ব্যাংকের এমডি মজিবুর রহমান বলেন, বেক্সিমকোর শ্রমিক-কর্মচারীদের তিন মাসের বেতন-ভাতা ও মজুরি বাবদ পরিশোধ করতে হবে ১৮০ কোটি টাকা। ব্যাংকের পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে সরকারকে জানাব। আর বি শ্রেণির কোম্পানিগুলোর জন্যও প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করব বিডাকে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
কর অব্যাহতি উল্লেখযোগ্য হারে কমবে: এনবিআর চেয়ারম্যান
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলসহ (আইএমএফ) অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের চাপে কর অব্যাহতি উল্লেখযোগ্য হারে কমানোর পরিকল্পনা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় ওয়ালটন আয়োজিত শিল্পমেলা ‘এটিএস এক্সপো-২০২৪’ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের জন্য কর ছাড় দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এগুলো দিয়েছি, নয়তো আপনারা এখানে আসতে পারতেন না। এগুলো দিয়েছি এফডিআই (বিদেশি বিনিয়োগ) টানতে, দেশের বিনিয়োগ বাড়াতে। এখন ট্যাক্স এক্সপেন্ডিচার (কর অব্যাহতি) কমাতে হবে ড্রাস্টিক্যালি।
সম্প্রতি আইএমএফ প্রতিনিধিদের বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওনারা (আইএমএফ) বলেছেন আপনারা (এনবিআর) যে প্রতি বছর ৩ লাখ থেকে সাড়ে ৩ লাখ কর ছাড় দেন, এগুলো কমাতে হবে।
সামনে রাজস্ব বাড়ানোর বড় চ্যালেঞ্জ থাকার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, অনেক ঘাটতি বাজেট করা হয়েছে, অনেক ঋণ করতে হয়েছে। এগুলো এখন বোঝা হয়ে গেছে। এসময় সব করদাতাকে কর দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকার অনুরোধ জানান এনবিআর চেয়্যারম্যান।
ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো করা হচ্ছে জানিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ২০২৫ এর মার্চ থেকে একই জায়গায় ব্যবসার সব নিবন্ধন সনদ পাওয়া যাবে। আগামী বছর থেকে করপোরেট ট্যাক্স রিটার্নও অনলাইনে নিয়ে আসবো। আপনাদের ট্যাক্স দিতে যে তিক্ততা লাগে, সেটা যেন আর না লাগে।
অনুষ্ঠানে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম বলেন, বাংলাদেশে এখনো উৎপাদনকারী ও সংযোজনকারীর মধ্যে আইনিভাবে ভিন্নতা নেই। কর অব্যাহতির সুযোগ-সুবিধায়ও ভিন্নতা নেই।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এনবিআরের রাজস্ব বাড়ানোর পরিকল্পনা জানতে চেয়েছে আইএমএফ
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বর্ধিত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে পরিকল্পনা জমা দিতে বলেছে আইএমএফ।
আইএমএফ (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) জানিয়েছে, পরিকল্পনা চলতি মাসের মধ্যেই পেতে চায় এটি। এ পরিকল্পনা আইএমএফের ওয়াশিংটনের পর্ষদে উপস্থাপন করা হবে।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) এনবিআরের আয়কর, ভ্যাট এবং কাস্টমস উইংয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে এ বিষয়টি আলোচিত হয়। এনবিআরের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করে এ তথ্য জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআরের এক কর্মকর্তা জানান, নতুন লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করতে হলে আগের তুলনায় প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা বেশি আদায় করতে হবে। কীভাবে এ অতিরিক্ত অর্থ সংগ্রহ করা হবে, তার পরিকল্পনা দিতে বলেছে আইএমএফ।
তবে আয়কর শাখা থেকে নতুন করে চলতি অর্থবছরে কোনো কর রেয়াত বাদ দেওয়া বা করহার বাড়ানো কঠিন, কারণ বছরের মাঝামাঝি এসব পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব নয়।
আবার আমদানি পর্যায়ে শুল্ক বাড়ালে তার প্রভাব মূল্যস্ফীতিতে সরাসরি পড়বে উল্লেখ করে এ কর্মকর্তা এ বিষয়ে ভ্যাট শাখা কিছু পদক্ষেপ নিতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন।
এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয়েছে তিন লাখ ৬২ হাজার কোটি টাকা (আইবাস-এর হিসাব অনুযায়ী), যা জিডিপির ৭ দশমিক ৩ শতাংশ।
আইএমএফ-এর লক্ষ্য অনুযায়ী চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের হার জিডিপির শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বাড়ানোর কথা রয়েছে।
তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাজস্ব আদায় কমতির দিকে। জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত আদায় আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১ শতাংশ তথা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৩১ হাজার কোটি টাকা কম।
এ অবস্থায় এনবিআর লক্ষ্যমাত্রা কমানোর কথা ভাবছিল, কিন্তু বুধবারের সভায় লক্ষ্যমাত্রা আরও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে এনবিআর বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
অর্থনীতিবিদেরা মনে করছেন, বর্তমান বাস্তবতায় নতুন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবসম্মত নয়।