আন্তর্জাতিক
সশস্ত্র বাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে বললেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী

ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, ভারত শান্তিপ্রিয় দেশ। শান্তি রক্ষার জন্য ভারতের সশস্ত্র বাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। রাশিয়া-ইউক্রেন ও ইসরায়েল-হামাস সংঘাত এবং বাংলাদেশের পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে রাজনাথ তাঁর দেশের সামরিক কমান্ডারদের এসব ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণের পরামর্শ দেন।
ভারতের উত্তর প্রদেশের লক্ষ্ণৌতে গতকাল বৃহস্পতিবার সশস্ত্র বাহিনীর জয়েন্ট কমান্ডারস কনফারেন্সে সভাপতির ভাষণে এসব কথা বলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ। গতকাল ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিবৃতিটি ভারত সরকারের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর (পিআইবি) ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
ভারতের শীর্ষ সামরিক নেতৃত্বের এই সম্মেলনের দ্বিতীয় ও শেষ দিন ছিল গতকাল। সম্মেলনে জাতীয় স্বার্থ রক্ষাসহ ‘আত্মনির্ভর ভারত’-এর রূপকল্পকে এগিয়ে নিতে দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর অমূল্য অবদানের প্রশংসা করেন রাজনাথ। একই সঙ্গে তিনি তিন বাহিনীর মধ্যে যৌথতা ও সংহতিকে আরও এগিয়ে নিতে গৃহীত পদক্ষেপের প্রশংসা করেন।
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ বলেন, ভারত একটি শান্তিপ্রিয় দেশ। শান্তি রক্ষার জন্য ভারতের সশস্ত্র বাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
যৌথ সামরিক দৃষ্টিভঙ্গি বিকশিত করার তাৎপর্যের ওপর জোর দেন রাজনাথ। ভবিষ্যৎ যুদ্ধে দেশটি যে ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারে, সে জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি। পাশাপাশি উসকানির ক্ষেত্রে সমন্বিত, দ্রুত ও আনুপাতিক প্রতিক্রিয়ার ওপর জোর দেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন ও ইসরায়েল-হামাস সংঘাত এবং বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে রাজনাথ তাঁর দেশের সামরিক কমান্ডারদের এসব ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণ করার পরামর্শ দেন। এই প্রেক্ষাপটে ভবিষ্যতে ভারত যেসব সমস্যার মুখে পড়তে পারে, তা বিচার-বিশ্লেষণ করার পরামর্শ দেন। তিনি সামরিক বাহিনীকে ‘অপ্রত্যাশিত’ ঘটনা মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেন।
ভারতের উত্তর সীমান্তের পরিস্থিতিসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর ঘটনাপ্রবাহের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির শীর্ষ সামরিক নেতৃত্বের মাধ্যমে বিস্তৃত ও গভীর বিশ্লেষণের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন রাজনাথ। এসব বিষয় এই অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
রাজনাথ বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী অস্থিরতা সত্ত্বেও ভারত একটি অসাধারণ শান্তির সুফল উপভোগ করছে। ভারত শান্তিপূর্ণভাবে বিকশিত হচ্ছে। তবে ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জের কারণে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। অমৃতকালের সময় আমাদের শান্তি অটুট রাখা গুরুত্বপূর্ণ।’
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বর্তমানের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে। বর্তমানে আমাদের চারপাশে যা ঘটছে, এমন কার্যকলাপের ওপর নজর রাখতে হবে। ভবিষ্যৎমুখী হওয়ার দিকেও মনোযোগ দিতে হবে। এ জন্য আমাদের একটি শক্তিশালী ও বলিষ্ঠ জাতীয় নিরাপত্তা উপাদান থাকা দরকার। আমাদের অব্যর্থ প্রতিরোধ থাকা উচিত।’
এমআই

আন্তর্জাতিক
বাংলাদেশে আসতে চায় শুভেন্দুসহ বিজেপির টিম

ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) পশ্চিমবঙ্গের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের ‘সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সাম্প্রতিক হামলার ঘটনা’ পরিদর্শন করতে বাংলাদেশ সফর করবে বলে জানা গেছে। এমনটাই জানিয়েছেন, বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে সেই টিমে কতজন প্রতিনিধি থাকবে সে তথ্য এখনও জানা যায়নি।
কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ উপদূতাবাসও বিজেপি টিমের বাংলাদেশ সফরের তথ্য নিশ্চিত করেছে। দূতাবাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শুভেন্দুসহ বিজেপির একটি টিম বাংলাদেশে যাওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে। তাদের ভিসা নিয়ে সমস্যা হবে না বলেও জানানো হয়। তবে কতজন যাবে, বিজেপির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
গত শুক্রবার (৩০ মে) বিজেপির একটি টিম বাংলাদেশ মিশনে এসেছিলেন স্মারকলিপি জমা দিতে। এরপর সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে শুভেন্দু বলেন, সম্প্রতি যশোরে হামলার শিকার হওয়া সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি দেখতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল শিগগির বাংলাদেশে যাবে।
এ বিষয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদারকে। তাকে দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে। সড়কপথে পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে তারা যশোরের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন বলে জানিয়েছেন শুভেন্দু।
এরই মধ্যে কলকাতার বাংলাদেশ মিশনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন জানিয়েছে, যদি কোনো প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ যেতে চায়, তবে তাদের দ্রুত ভিসার ব্যবস্থা করা হবে।
মূলত গত সপ্তাহে যশোরের অভয়নগর উপজেলার ডহরমশিয়াহাটি গ্রামে মতুয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, এতে অন্তত ১৮টি বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে। যশোরের অভয়নগরে নওয়াপাড়া পৌর শাখা কৃষক দলের সভাপতি এস এম তরিকুল ইসলামকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনার পর এসব ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যায় বিএনপির ওই নেতার মৃত্যুর বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে অভিযুক্তের বাড়িসহ আশপাশের বাড়িতে আগুন দেয় উত্তেজিত জনতা।
শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপির পরিষদীয় দলের একটি প্রতিনিধি দল শুক্রবার কলকাতার বাংলাদেশ মিশনে স্মারকলিপি জমা দেন। শুভেন্দু জানান, বাংলাদেশ মিশন তাদের জানিয়েছে, ওই ঘটনায় ৭ জন গ্রেফতার হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার এসব ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ৬ হাজার টাকা, ৩০ কেজি করে চাল ও ২ বান্ডিল করে টিন সাহায্য দিয়েছে।
শুভেন্দু জানিয়েছেন, তারাও সাহায্য করতে চান। কিন্তু সরাসরি করা সম্ভব নয়। বাংলাদেশ সরকার যদি অনুমতি দেয়, তাহলে সেখানে মতুয়া সম্প্রদায়, রামকৃষ্ণ মিশন, গৌড়ীয় মঠ এবং ভারত সেবাশ্রম সংঘের মাধ্যমে সেখানে সাহায্য পৌঁছে দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে বিজেপির একটি টিম।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা-তেল আমদানি বাড়াতে চায় বাংলাদেশ

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে ঢাকা ওয়াশিংটনের সঙ্গে বাণিজ্য ভারসাম্য আনার উদ্যোগ নিয়েছে। এই লক্ষ্যে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও বেশি পরিমাণে তুলা ও জ্বালানি তেল আমদানি করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পেশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) টোকিওতে আয়োজিত নিক্কেই এশিয়া ফোরামের ফাঁকে জাপানের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়া-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ তথ্য জানান।
ড. ইউনূস বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেহেতু বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাসে আগ্রহী, তাই আমরা তাদেরকে প্রস্তাব দিয়েছি—আমরা যদি আরও বেশি মার্কিন পণ্য কিনি, তবে অন্যান্য দেশ থেকে এ ধরনের পণ্যের আমদানি কমিয়ে আনবো।”
তিনি আরও বলেন, “উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আমরা প্রচুর তুলা আমদানি করি মধ্য এশিয়া ও ভারত থেকে। এখন আমরা ভাবছি, কেন সেই তুলা যুক্তরাষ্ট্র থেকেই আমদানি করবো না? এতে আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি অনেকটাই হ্রাস পাবে।”
চলতি অর্থবছরে গত জুন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ ৬.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে এবং আমদানি করেছে ২.৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। এর মধ্যে তুলার পরিমাণ ছিল ৩৬১ মিলিয়ন ডলার।
বিশ্বের অন্যতম প্রধান পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এই অর্থবছরে প্রায় ৭.৯ বিলিয়ন ডলারের তুলা আমদানি করেছে, যার একটি বড় অংশ এসেছে উজবেকিস্তান ও তুর্কমেনিস্তানের মতো দেশ থেকে। মোট আমদানির ১২.৫ শতাংশই ছিল তুলা।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের তুলা উৎপাদনকারীদের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক সুদৃঢ় হয়েছে এবং তারা মার্কিন প্রশাসনে বাংলাদেশের পক্ষে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছেন। তার ভাষায়, “তুলা উৎপাদনকারীরা আমাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে উঠেছে, যারা আমাদের কিছু রাজনৈতিক সহায়তা দেয়।”
জ্বালানির বিষয়ে ড. ইউনূস বলেন, “যদিও আমরা বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল, তবুও যুক্তরাষ্ট্র থেকে তেল কেনার সুযোগ রয়েছে এবং সেটিও বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে।”
তবে কবে নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে বাণিজ্য আলোচনা শুরু হবে—সে বিষয়ে এখনো কোনও নির্দিষ্ট সময়সূচি ঠিক হয়নি বলে জানান তিনি। একইভাবে, শুল্ক কতটা কমানো সম্ভব হবে, তা নিশ্চিত নয়। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের হুমকিকে ‘হুমকি নয়, বরং একটি সম্ভাবনা’ হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ—বলেই মন্তব্য করেন ইউনূস।
এ সময় তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আদালত সাময়িকভাবে ট্রাম্পের শুল্ক কার্যকরের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে। আদালত মনে করে, বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা কংগ্রেসের; প্রেসিডেন্ট এককভাবে এ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না।
সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, সাবেক স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে দেশ থেকে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরেও ১১-১২ বিলিয়ন ডলার লুটপাটের ঘটনা শনাক্ত করা হয়েছে এবং অর্থ বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
তিনি জানান, এই অর্থ উদ্ধার করা সম্ভব হলে দুটি আলাদা তহবিল গঠন করা হবে, যেখান থেকে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে অর্থায়ন করা হবে। একইসঙ্গে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে উদ্যোক্তায় রূপান্তর করে তাদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে এই অর্থ ব্যবহার করা হবে।
সাম্প্রতিক সময়ে ড. ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগ করতে চান—এমন গুঞ্জন ছড়ায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিক্কেইকে তিনি বলেন, “আমি বাংলাদেশে এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেইনি। তাই এখন বিদেশে কিছু বললে সেটা আমার জন্য জটিলতা তৈরি করতে পারে।”
আন্তর্জাতিক
ট্রাম্পের শুল্কনীতি আটকে দিলো যুক্তরাষ্ট্রের আদালত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি বছরের এপ্রিলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর ব্যাপকহারে শুল্ক আরোপের যে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, সেটি আটকে দিয়েছে দেশটির এক আদালত। আদালতের এই রায়কে ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতির ওপর একটি বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
কোর্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড রায় দিয়েছে, যে জরুরি আইনের অজুহাত দেখিয়ে হোয়াইট হাউস এই শুল্ক আরোপ করেছে, সেই আইন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে একচেটিয়াভাবে বিশ্বের প্রায় সব দেশের পণ্যে শুল্ক বসানোর এখতিয়ার দেয় না।
ম্যানহাটন-ভিত্তিক এই আদালত আরও বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের একচেটিয়া ক্ষমতা কংগ্রেসের হাতে। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে রক্ষা করার জন্য প্রেসিডেন্টের হাতে যে ক্ষমতা, কংগ্রেসের ক্ষমতা তার চেয়ে বেশি।
একইসঙ্গে চীন, মেক্সিকো ও কানাডার ওপর ট্রাম্প প্রশাসন পৃথকভাবে যে শুল্ক আরোপ করেছিল, সেটিকেও স্থগিত করেছেন আদালত। তখন হোয়াইট হাউস বলেছিল, অগ্রহণযোগ্য মাদক প্রবাহ ও অবৈধ অভিবাসন ঠেকানোই এই শুল্ক আরোপের প্রধান কারণ।
এদিকে, আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধে কয়েক মিনিটের মধ্যেই আপিল করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
আদালতের এই রায়ের পর হোয়াইট হাউসের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি কুশ দেশাই এক বিবৃতিতে বলেন, “কোনও জাতীয় জরুরি অবস্থা কীভাবে যথাযথভাবে মোকাবিলা করা হবে, তা নির্ধারণ করা অনির্বাচিত বিচারকদের কাজ নয়।”
তিনি আরও বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমেরিকাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। আর ট্রাম্প প্রশাসন প্রতিটি নির্বাহী ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে সমস্ত সংকট মোকাবিলা ও আমেরিকান মহত্ব পুনরুদ্ধারের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
মূলত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পণ্য আমদানিকারক পাঁচটি ক্ষুদ্র ব্যবসার পক্ষে মামলাটি দায়ের করেছিল রাজনৈতিক সংস্থা লিবার্টি জাস্টিস সেন্টার। যে দেশগুলো থেকে তারা পণ্য আমদানি করে, ওই দেশগুলোর পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
এই মামলাই হলো ডোনাল্ড ট্রাম্পের তথাকথিত “লিবারেশন ডে” ট্যারিফের বিরুদ্ধে প্রথম বড় ধরনের কোনো আইনি চ্যালেঞ্জ। এই মামলাটি ছাড়াও ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্য নীতির বিরুদ্ধে আরও ছয়টি মামলা চলছে। আর এগুলো করেছে ১৩টি মার্কিন অঙ্গরাজ্য এবং আরও অনেক ছোট ব্যবসায়ী গোষ্ঠী।
সর্বশেষ রায়ে তিন বিচারকের প্যানেল থেকে বলা হয়েছে, ট্যারিফ বা শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তকে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৯৭৭ সালের “ইন্টারন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ইকোনমিক পাওয়ারস অ্যাক্ট” (আইইইপিএ)-এর দোহাই দিলেও ওই আইন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে একচেটিয়াভাবে এই ধরনের বিস্তৃত ট্যারিফ আরোপের ক্ষমতা দেয় না।
বিচারকরা লিখেছেন, “আইইইপিএ আইনে শুল্ক আরোপের বিষয়ে প্রেসিডেন্টকে যে ক্ষমতা দেওয়া আছে, ডোলান্ড ট্রাম্প আরোপিত ‘বিশ্বব্যাপী ও প্রতিশোধমূলক শুল্ক আদেশগুলো’ সেই ক্ষ্মতার পরিধিকে ছাড়িয়ে গেছে। ‘ট্রাফিকিং ট্যারিফ’ ব্যর্থ, কারণ এগুলো আদেশে উল্লিখিত হুমকির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।”
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের এপ্রিলের ২ তারিখে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। আর সেই ট্যারিফ ঘোষণার পর থেকে বিশ্ববাজারে টালমাটাল পরিস্থিতি দেখা দেয়। যদিও এরপর ওই ঘোষণা পুনর্বিবেচনা করা হয় এবং কিছু শর্ত তুলে নিয়ে অন্যান্য দেশের সাথে দর কষাকষিও করে হোয়াইট হাউস।
কাফি
আন্তর্জাতিক
বিশ্ববাজারে হঠাৎ দাম বাড়লো জ্বালানি তেলের

চাহিদা বাড়তে থাকায় আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ আসার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তেলের বাজারে। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থাটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তে মার্কিন আদালতের স্থগিতাদেশের ফলে বৈশ্বিক বাণিজ্যে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত মিলেছে, যা জ্বালানির চাহিদা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। পাশাপাশি নজরে আছে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের প্রবাহ সীমিত করতে সম্ভাব্য নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও আসন্ন ওপেক প্লাসের বৈঠকে উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্তও।
বৃহস্পতিবার ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৮১ সেন্ট বা ১ দশমিক ২৫ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি দাঁড়িয়েছে ৬৫ ডলার ৭১ সেন্টে। আর মার্কিন ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুডের দাম ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ বা ৮৩ সেন্ট বেড়ে প্রতি ব্যারেল হয়েছে ৬২ ডলার ৬২ সেন্ট।
এর আগে, বুধবার বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপ করা শুল্ক স্থগিত করেছেন দেশটির আদালত। আদেশে বলা হয়েছে, বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করে নিজের ক্ষমতার সীমা অতিক্রম করেছেন ট্রাম্প।
মূলত, আদালতে দায়েরকৃত দুটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেওয়া হয়েছে। একটি মামলা করেছিল লিবার্টি জাস্টিস সেন্টার নামের একটি আইনি সংস্থা। ট্রাম্পের শুল্কের নিশানা হওয়া দেশগুলো থেকে পণ্য আমদানি করে-এমন পাঁচটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মামলাটি করেছিল তারা। অপর মামলাটি করা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের ১৩টি অঙ্গরাজ্যের পক্ষ থেকে।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আদালতের তিনজন বিচারকের একটি প্যানেল আদেশে বলেন, কংগ্রেসকে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করার বিশেষ ক্ষমতা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির সুরক্ষার জন্য প্রেসিডেন্টের জরুরি ক্ষমতার মাধ্যমে তা বাতিল করা যায় না।
অবশ্য, আদালতের আদেশের পর এর বিরুদ্ধে আপিলের একটি নোটিশ দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে রয়টার্সের কাছে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি হোয়াইট হাউস।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যেহেতু ট্রাম্প প্রশাসন এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা বলেছে, তাই এই স্বস্তি হয়তো সাময়িক হতে পারে। ব্রিসবেনের সিটি ইনডেক্সের বিশ্লেষক ম্যাট সিম্পসন বলেন, বিনিয়োগকারীরা এমন এক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা থেকে কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছেন, যেটাকে তারা অপছন্দ করলেও সবসময় গুরুত্ব দিয়ে দেখে থাকেন।
এদিকে, অপরিশোধিত তেলের সরবরাহ দিক থেকে রাশিয়ান তেলের উপর সম্ভাব্য নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। একই সময়ে পেট্রোলিয়াম রপ্তানিকারক দেশগুলোর জোট ও তাদের মিত্ররা আগামী শনিবার জুলাই মাসের জন্য তেল উৎপাদন আরও বাড়ানোর বিষয়ে একমত হতে পারে।
আন্তর্জাতিক
সৌদিতে ঈদুল আজহার তারিখ ঘোষণা

সৌদি আরবের তামির অঞ্চলে জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে আগামী শুক্রবার (৬ জুন) দেশটিতে উদযাপিত হবে ঈদুল আজহা। মঙ্গলবার (২৭ মে) সৌদি কর্তৃপক্ষের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ।
সৌদি সুপ্রিম কোর্টের ঘোষণা অনুযায়ী, ইসলামী বর্ষপঞ্জির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাস জিলহজ শুরু হচ্ছে বুধবার (২৮ মে) থেকে। এই তারিখ অনুযায়ী আরাফাহ দিবস হবে ৫ জুন (বৃহস্পতিবার) এবং এর পরদিন ৬ জুন (শুক্রবার) উদযাপিত হবে ঈদুল আজহা।
সৌদি আরবের আগেই বেশ কিছু দেশ ঈদের তারিখ ঘোষণা করে।
ব্রুনাই
ব্রুনাইয়ের চাঁদ দেখা কমিটি ঘোষণা করেছে যে, ২৮ মে (বুধবার) হবে জিলকদ মাসের শেষ দিন। কারণ ২৭ মে চাঁদ দেখা যায়নি। সে হিসেবে ২৯ মে (বৃহস্পতিবার) থেকে জিলহজ মাস শুরু হবে এবং ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে ৭ জুন, শনিবার।
মালয়েশিয়া
মালয়েশিয়াও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২৮ মে হবে জিলকদর শেষ দিন, ২৯ মে থেকে জিলহজ শুরু হবে। সে অনুযায়ী, ঈদুল আজহা পড়বে ৭ জুন।
ইন্দোনেশিয়া
গালফ নিউজের খবরে বলা হয়েছে, ইন্দোনেশিয়া ২৮ মে (বুধবার) থেকে জিলহজ গণনা শুরু করবে এবং ঈদুল আজহা উদযাপন করবে ৬ জুন (শুক্রবার)।
ওমান
ওমান সরকার জানিয়েছে, আগামী ২৮ মে (বুধবার) থেকে জিলহজ মাস শুরু হবে। সেই অনুযায়ী দেশটিতে ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে ৬ জুন (শুক্রবার)।