ব্যাংক
অস্ত্রের মুখে যেভাবে দখল হয় ইসলামী ব্যাংক

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের আর্থিক দুর্নীতিতে জড়িতদের জন্য ইসলামী ব্যাংক ছিল লোভনীয় টার্গেট। বেসরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি ২০১৭ সালে যখন শেখ হাসিনার আশীর্বাদপুষ্ট একটি প্রভাবশালী ব্যবসায়ী গোষ্ঠী জোর করে দখলে নেয় তখন আমানতের দিক থেকে শীর্ষে ছিল এটি। এই ঘটনা বাংলাদেশের ব্যাংকিং ইতিহাসে ‘ডাকাতি’র একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি সকালে ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্সের (ডিজিএফআই) কয়েকজন সদস্য ইসলামী ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যান, একজন ভাইস চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে বাসা থেকে তুলে এনে একে একে এজেন্সির প্রধান দপ্তরে হাজির করে।
তাদেরকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়। এর কয়েক ঘণ্টা পরে, ঢাকার একটি হোটেলে সামরিক কর্মকর্তাদের নজরদারির মধ্যে ব্যাংকের বোর্ড মিটিংয়ে নতুন পরিচালনা পর্ষদ নিয়োগ করা হয়।
এই ঘটনার সাত বছর পর এস আলম গ্রুপের ইসলামী ব্যাংক দখল নিয়ে নীরবতা ভাঙলেন ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মান্নান।
শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে যা ছিল ব্যাংকিং খাতের সবচেয়ে নেতিবাচক ঘটনাগুলোর অন্যতম।
‘এটা খুবই হতাশাজনক যে একটি সরকারি নিরাপত্তা সংস্থাকে একটি বেসরকারি গোষ্ঠীর উদ্দেশ্য পূরণে ব্যবহার করা হয়েছিল। দুর্ভাগ্যবশত, কেন্দ্রীয় ব্যাংকও এর সঙ্গে জড়িত ছিল বলে মনে করছি,’ গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেন আবদুল মান্নান।
তিনি বলেন, ‘আমাকে ডিজিএফআই প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আকবর হোসেনের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি প্রথমে আমার প্রশংসা করেন, অর্থনীতি সম্পর্কে আমার পরামর্শ চান আর তারপরই আমাকে পদত্যাগ করতে বলেন।’
পদত্যাগ না করার কথা ভদ্রভাবে আমি তাকে জানাই, বলেন আব্দুল মান্নান।
মান্নান বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে আমার একটা আবেগের সম্পর্ক রয়েছে এবং পদত্যাগ করা আমার জন্য খুবই কঠিন ছিল। আমি ব্যাংকের প্রথম দিন থেকেই এর সঙ্গে জড়িত ছিলাম। বিশ্বের কোনো প্রতিষ্ঠানের এমডিকে এমন চাপের মুখোমুখি হতে হয়েছে কিনা আমার জানা নেই।’
মান্নানের কাছে ডিজিএফআই অফিস ‘নরকের মতো’ মনে হয়েছিল।
তিনি যখন বলেন যে তার জন্য পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন, তখন ডিজিএফআই প্রধান বলেছিলেন ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ’ চায় আবদুল মান্নান যেন ব্যাংক ছেড়ে চলে যান।
‘ডিজিএফআই অফিসের ভেতরে আমার এত খারাপ লাগছিল যে তারা কয়েকবার আমার রক্তচাপ মাপেন।’
২০১০ সাল থেকে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করা আব্দুল মান্নান অভিযোগ করে বলেন, জিম্মি করে তাকে অস্ত্রের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করতে সেদিন গভীর রাত পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের অনেক শীর্ষ কর্মকর্তা তাদের অফিসে অবস্থান করছিলেন। আর সবটাই হয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নর ফজলে কবিরের নজরদারিতে।
১৯৮৩ সালে গঠিত শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকটির মালিকানা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয় ২০০৬ সালে, যখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নেতা সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাইকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তার কাছ থেকে ইসলামী ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকের ৩২টি চেকবই পাওয়া যায়। সে সময় গণমাধ্যমে ইসলামী ব্যাংকটি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
তথ্য ও পরিসংখ্যান ছাড়াই ইসলামী ব্যাংককে সন্ত্রাসে অর্থায়নের সঙ্গে জড়িত করে অনেক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বলছিলেন একসময় ব্যাংকটির মুখপাত্র আবদুল মান্নান।
২০১১ সালে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু অভিযোগ করেন, ইসলামী ব্যাংক মুনাফার ৮ শতাংশ সন্ত্রাসে অর্থায়নে ব্যয় করেছে। এতে ব্যাংকটির আরও এক দফা সুনাম ক্ষুণ্ন হয়।
‘এটি ছিল একজন অত্যন্ত দায়িত্বশীল ব্যক্তির কাছ থেকে সবচেয়ে দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য এবং আমি মনে করি এই মন্তব্যের জন্য সরকারের তাকে বরখাস্ত করা উচিত ছিল।’
এম এ মান্নান বলেন, ‘মন্ত্রী তার ভুল বুঝতে পেরেছিলেন এবং আমি তার বাসায় গেলে তিনি আমাকে বলেন, এটা তার মুখ ফসকে বেরিয়ে গেছে।’
কিন্তু ততক্ষণে ক্ষতি যা হওয়ার তা হয়ে গেছে।
টুকুর এই অভিযোগ বিশ্ববাণিজ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সেবাদাতা ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংকের লেনদেন সক্ষমতাকে ‘মারাত্মকভাবে প্রভাবিত’ করে।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের ফাঁসির দাবিতে ২০১৩ সালে শাহবাগে আন্দোলনকারীরা আন্দোলন করলে ব্যাংকটির ওপর চাপ আবার তীব্র হয়।
বিক্ষোভ চলার মধ্যেই একজন অর্থনীতিবিদ অভিযোগ করেন, সন্ত্রাসে অর্থায়নের জন্য ব্যাংকটি থেকে ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বের করে নেওয়া হয়েছে।
তারা সবাই ইসলামী ব্যাংককে জামায়াতে ইসলামীর ব্যাংক হিসেবে আখ্যায়িত করে এবং এর অধিগ্রহণের কথা ছড়িয়ে পড়ে,’ বলেন মান্নান।
আব্দুল মান্নান বলেন, প্রকৃতপক্ষে ব্যাংকটির ৭০ শতাংশ শেয়ার ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকসহ (আইডিবি) বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে ছিল, ১৫ শতাংশ স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের হাতে, ৫ শতাংশ সরকারের হাতে এবং ১০ শতাংশ ছিল শেয়ার বাজারে।
তিনি বলেন, ২০০৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করা আতিউর রহমান ব্যাংকটিকে অধিগ্রহণ থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছিলেন।
‘এটি আমাদের জন্য একটা বড় সহায়তা ছিল,’ তিনি যোগ করেন।
২০১৬ সালে ব্যাংকটির মালিকানা আরও খারাপের দিকে যেতে শুরু করে যখন বিভিন্ন গোষ্ঠী ব্যাংকটি বন্ধ করে দেওয়া বা এটি অধিগ্রহণের জন্য সরকারের উপর চাপ তৈরি করে।
সরকারের নির্দেশে ব্যাংকটিতে চারজন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, যা ইঙ্গিত দেয় যে ব্যাংকটি দ্রুত অধিগ্রহণ করা হচ্ছে।
চার স্বতন্ত্র পরিচালক হলেন- ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক মহাপরিচালক শামীম মোহাম্মদ আফজাল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম, পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমদ চৌধুরী ও ইসলামী ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আজিজুল হক।
ইসলামী ব্যাংকের এস আলম গ্রুপের ‘পেছনের দরজা দিয়ে’ এসে দখল করার প্রাথমিক পর্যায়। যা থেকে সতর্ক হতে শুরু করে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা।
লন্ডনভিত্তিক ইকোনোমিস্ট ম্যাগাজিন ২০১৭ সালে এক প্রতিবেদনে জানায় বোর্ডরুম ক্যু’র বিষয়ে সৌদি আরব ও কুয়েতের শেয়ারহোল্ডারদের কিছুই জানানো হয়নি এবং এ নিয়ে তারা অভিযোগ জানিয়েছিলেন।
তাদের মধ্যে একটি ছিল জেদ্দা ভিত্তিক আইডিবি। তারা বলছে ২০১৭ এর জানুয়ারিতে মাত্র তিন দিনের নোটিশে বোর্ড মিটিং ডাকা হয়, যে কারণে তারা কাউকে পাঠাতে পারেনি। পরে আইডিবি ইসলামী ব্যাংকের সব শেয়ার বিক্রি করে দেয়।
ওই মাসেই ক্ষমতা দখলের কাজ শেষ হলে দেশের অন্যতম প্রভাবশালী আমলা হিসেবে বিবেচিত আরাস্তু খানকে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এক বছরের কিছু বেশি সময় তিনি কাজ করতে পেরেছিলেন। তার আকস্মিক প্রস্থান অন্যান্য পরিচালক এবং কর্মচারীদের হতবাক করেছিল, একজন পরিচালক জানিয়েছিলেন যে আরও পরিবর্তন আসছে।
এস আলমের ‘বোর্ডরুম ক্যু’র আগে বাংলাদেশের ইসলামি ব্যাংকিং সম্পদের এক-তৃতীয়াংশই ছিল এই ব্যাংকটির কাছে। ১০ বিলিয়ন ডলারের ব্যালেন্স শিট থাকা এই প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমেই বাংলাদেশের রেমিট্যান্সের এক চতুর্থাংশেরও বেশি আসত। আর এ সবই এস আলমকে এই ব্যাংকের প্রতি আগ্রহী করে তোলে।
ইসলামী ব্যাংকে বিপুল সংখ্যক শেয়ার কিনতে চট্টগ্রামভিত্তিক এ গ্রুপটি নিজেদের লোক মাঠে নামায়।
‘আমরা বুঝতে পেরেছিলাম যে এস আলম গ্রুপ বেসরকারি খাতের বৃহত্তম ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নিতে চলেছে। এর আগে ইসলামী ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ শেয়ার কিনছে যেসব কোম্পানি, সেগুলো আমাদের পরিচিত ছিল না,’ বলেন মান্নান।
২০১৬ সাল থেকে ব্যাংকটির শ্রেণিকৃত ঋণ ১৯৩ শতাংশ বেড়ে ৬ হাজার ৯১৮ কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। পুঁজিবাজারে সবচেয়ে সম্পদশালী কোম্পানি হিসেবেও শীর্ষস্থান হারিয়েছে এটি।
ব্যাংকের নথি অনুসারে, পরিচালনা পর্ষদের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর মোহাম্মদ সাইফুল আলমের মালিকানাধীন চট্টগ্রামভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠান ও এর সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাংক থেকে ৭৪ হাজার ৯০০ কোটি টাকা ঋণ নেয়, যা চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংকের মোট বকেয়া ঋণের ৪৭ শতাংশ।

ব্যাংক
আজ থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত যেসব এলাকায় ব্যাংক খোলা

পশু ক্রয়-বিক্রয়ে আর্থিক লেনদেন নিশ্চিত করতে আজ থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত রাত ১০টা পর্যন্ত কিছু কিছু জায়গায় ব্যাংকের শাখা ও উপশাখা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ (বিআরপিডি) এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছ।
এতে বলা হয়, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধান ও ব্যবস্থাপনায় যথাক্রমে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে কোরবানির পশুর হাট পরিচালিত হবে। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন হাট হলো- উত্তরা দিয়াবাড়ি ১৬ ও ১৮ নং সেক্টর-সংলগ্ন বউ বাজার এলাকার খালি জায়গা, ভাটারা সুতিভোলা খাল সংলগ্ন খালি জায়গা (ভাটারা সুতিভোলা), ভাটুলিয়া সাহেব আলী মাদ্রাসা থেকে ১০নং সেক্টর রানাভোলা স্লুইসগেট পর্যন্ত এলাকা, খিলক্ষেত থানাধীন ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের মস্তুল চেকপোস্ট সংলগ্ন পশ্চিম পাড়া এলাকা, মোহাম্মদপুর বছিলাস্থিত ৪০ ফুট রাস্তা সংলগ্ন খালি জায়গা, মিরপুর গাবতলী গবাদি পশুর হাট, মিরপুর সেকশন-৬, ওয়ার্ড নং-৬ (ইস্টার্ন হাউজিং) এর খালি জায়গা, খিলক্ষেত বনরূপা আবাসিক এলাকা, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সংলগ্ন খালি জায়গা।
এ ছাড়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন হাটগুলো হলো- ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি কলেজের পূর্ব পাশ এলাকা, উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজারের মৈত্রী সংঘ ক্লাবসংলগ্ন আশপাশের এলাকা, পোস্তগোলা শ্মশানঘাটের পশ্চিম পার্শ্বে নদীর পাড় এলাকা, দনিয়া কলেজের পূর্ব পার্শ্বে ও সনটেক মহিলা মাদ্রাসার পূর্ব পশ্চিম এলাকা, সাদেক হোসেন খোকা মাঠের দক্ষিণ পার্শ্বের খালি জায়গা ও ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল, রহমতগঞ্জ ক্লাবসংলগ্ন এলাকা, শ্যামপুর কদমতলী ট্রাক স্ট্যান্ডসংলগ্ন এলাকা, কমলাপুর সাদেক হোসেন খোকা কমিউনিটি সেন্টারের পূর্ব পাশ এলাকা ও আমুলিয়া আলীগড় মডেল কলেজের উত্তর পূর্ব পাশ এলাকা। আর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতাধীন হাট হলো সাগরিকা।
এ সব হাটে অধিক সংখ্যক ক্রেতা ও ব্যবসায়ীর সমাগম এবং বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থের লেনদেন সংঘটিত হওয়ায় ক্রেতা ও ব্যবসায়ী উভয়ের আর্থিক লেনদেনের নিরাপত্তা বিধান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোরবানির পশুর হাট সংলগ্ন বা নিকটবর্তী ব্যাংক শাখা বা উপশাখা এবং সংশ্লিষ্ট পশুর হাটে স্থাপিত অস্থায়ী বুথ ব্যবহার করে কোরবানির পশুর ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা যেন তাদের পশু ক্রয়-বিক্রির অর্থ সহজে লেনদেন করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে ব্যাংকিং সহায়তা প্রদান জরুরি।
এ পরিস্থিতিতে আগামী ৩ জুন থেকে ঈদুল আজহার আগের দিন পর্যন্ত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কোরবানির পশুর হাটের কাছাকাছি ব্যাংক শাখা বা উপশাখা স্বীয় বিবেচনায় নির্বাচন করে বিশেষ ব্যবস্থায় খোলা রাখতে হবে। সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত স্বাভাবিক ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রাখতে হবে।
পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করে কোরবানির পশুর হাটে স্বীয় বিবেচনায় অস্থায়ী বুথ স্থাপনের মাধ্যমে অর্থ জমা নেওয়া, উত্তোলন ও নতুন হিসাব খোলার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট ব্যাংক শাখা, উপশাখা ও বুথগুলোতে অতিরিক্ত সময়ে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে বিশেষ ভাতা দিতে হবে।
ব্যাংক
ঈদের আগে রাত ১০টা পর্যন্ত যেসব জায়গায় খোলা থাকবে ব্যাংক

ঈদের আগে চার দিন রাত ১০টা পর্যন্ত কিছু কিছু জায়গায় ব্যাংকের শাখা ও উপশাখা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ (বিআরপিডি) এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছ।
এতে বলা হয়, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধান ও ব্যবস্থাপনায় যথাক্রমে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে কোরবানির পশুর হাট পরিচালিত হবে। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন হাট হলো- উত্তরা দিয়াবাড়ি ১৬ ও ১৮ নং সেক্টর-সংলগ্ন বউ বাজার এলাকার খালি জায়গা, ভাটারা সুতিভোলা খাল সংলগ্ন খালি জায়গা (ভাটারা সুতিভোলা), ভাটুলিয়া সাহেব আলী মাদ্রাসা থেকে ১০নং সেক্টর রানাভোলা স্লুইসগেট পর্যন্ত এলাকা, খিলক্ষেত থানাধীন ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের মস্তুল চেকপোস্ট সংলগ্ন পশ্চিম পাড়া এলাকা, মোহাম্মদপুর বছিলাস্থিত ৪০ ফুট রাস্তা সংলগ্ন খালি জায়গা, মিরপুর গাবতলী গবাদি পশুর হাট, মিরপুর সেকশন-৬, ওয়ার্ড নং-৬ (ইস্টার্ন হাউজিং) এর খালি জায়গা, খিলক্ষেত বনরূপা আবাসিক এলাকা, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সংলগ্ন খালি জায়গা।
এ ছাড়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন হাটগুলো হলো- ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি কলেজের পূর্ব পাশ এলাকা, উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজারের মৈত্রী সংঘ ক্লাবসংলগ্ন আশপাশের এলাকা, পোস্তগোলা শ্মশানঘাটের পশ্চিম পার্শ্বে নদীর পাড় এলাকা, দনিয়া কলেজের পূর্ব পার্শ্বে ও সনটেক মহিলা মাদ্রাসার পূর্ব পশ্চিম এলাকা, সাদেক হোসেন খোকা মাঠের দক্ষিণ পার্শ্বের খালি জায়গা ও ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল, রহমতগঞ্জ ক্লাবসংলগ্ন এলাকা, শ্যামপুর কদমতলী ট্রাক স্ট্যান্ডসংলগ্ন এলাকা, কমলাপুর সাদেক হোসেন খোকা কমিউনিটি সেন্টারের পূর্ব পাশ এলাকা ও আমুলিয়া আলীগড় মডেল কলেজের উত্তর পূর্ব পাশ এলাকা। আর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতাধীন হাট হলো সাগরিকা।
এ সব হাটে অধিক সংখ্যক ক্রেতা ও ব্যবসায়ীর সমাগম এবং বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থের লেনদেন সংঘটিত হওয়ায় ক্রেতা ও ব্যবসায়ী উভয়ের আর্থিক লেনদেনের নিরাপত্তা বিধান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোরবানির পশুর হাট সংলগ্ন বা নিকটবর্তী ব্যাংক শাখা বা উপশাখা এবং সংশ্লিষ্ট পশুর হাটে স্থাপিত অস্থায়ী বুথ ব্যবহার করে কোরবানির পশুর ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা যেন তাদের পশু ক্রয়-বিক্রির অর্থ সহজে লেনদেন করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে ব্যাংকিং সহায়তা প্রদান জরুরি।
এ পরিস্থিতিতে আগামী ৩ জুন থেকে ঈদুল আজহার আগের দিন পর্যন্ত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কোরবানির পশুর হাটের কাছাকাছি ব্যাংক শাখা বা উপশাখা স্বীয় বিবেচনায় নির্বাচন করে বিশেষ ব্যবস্থায় খোলা রাখতে হবে। সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত স্বাভাবিক ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রাখতে হবে।
পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করে কোরবানির পশুর হাটে স্বীয় বিবেচনায় অস্থায়ী বুথ স্থাপনের মাধ্যমে অর্থ জমা নেওয়া, উত্তোলন ও নতুন হিসাব খোলার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট ব্যাংক শাখা, উপশাখা ও বুথগুলোতে অতিরিক্ত সময়ে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে বিশেষ ভাতা দিতে হবে।
ব্যাংক
অনলাইন জুয়া রোধে ব্যাংকগুলোকে ‘এআই’ ব্যবহারের নির্দেশ

দেশে অনলাইন জুয়ার প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় সমাজে অবক্ষয় এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের আশঙ্কাজনক চিত্র দেখা দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে এসব কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আনতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বুধবার (২৮ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্ট একটি নির্দেশনা জারি করে জানায়, দেশের সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে অনলাইন জুয়া সংক্রান্ত লেনদেনের ওপর নজরদারি বাড়াতে হবে। কোনও মার্চেন্ট বা গ্রাহক অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত কি না, তা নিয়মিতভাবে তদারকি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির সহায়তা নেওয়ার কথা জানিয়েছে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা।
এছাড়া, যদি কোনো গ্রাহক বা মার্চেন্ট অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত বলে সন্দেহ হয়, তাহলে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে এবং তাৎক্ষণিকভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক আরও বলেছে, অনলাইন জুয়ার ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে গ্রাহকদের সচেতন করতে হবে। একইসঙ্গে যে-সব মার্চেন্ট নির্দিষ্ট কোনো এলাকায় ব্যবসার তথ্য দিয়ে ব্যাংকে নিবন্ধন করেছেন, তারা সেই এলাকাতেই ব্যবসা পরিচালনা করছেন কি না, তা নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে সম্প্রতি প্রণীত ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অনুসরণ করারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনাটি অবিলম্বে কার্যকর করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে তা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ব্যাংক
ব্র্যাক ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত এমডি তারেক রেফাত উল্লাহ

ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম আর এফ হোসেন পদত্যাগ করেছেন। এমতাবস্থায় ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও হেড অব করপোরেট অ্যান্ড ইনস্টিটিউশনাল ব্যাংকিং তারেক রেফাত উল্লাহ খানকে ভারপ্রাপ্ত এমডি ও সিইওর দায়িত্ব দিয়েছে পরিচালনা পর্ষদ।
মঙ্গলবার (২৭ মে) তিনি পরিচালনা পর্ষদের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন, যা গ্রহণ করেছে পর্ষদ। তার পদত্যাগপত্র বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। ব্যাংকটির জনসংযোগ বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এদিকে, ব্যবস্থাপনা পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও হেড অব করপোরেট অ্যান্ড ইনস্টিটিউশনাল ব্যাংকিং তারেক রেফাত উল্লাহ খানকে ভারপ্রাপ্ত এমডি ও সিইওর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সেলিম আর এফ হোসেন প্রায় একদশক ধরে ব্র্যাক ব্যাংকের নেতৃত্বে ছিলেন। তার সময়ে ব্যাংকটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করে। নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত তারেক রেফাত উল্লাহ খান ব্যাংকটির দীর্ঘদিনের কর্মকর্তা এবং করপোরেট ব্যাংকিং খাতে অভিজ্ঞ।
এসএম
ব্যাংক
ঈদের ছুটিতে বিশেষ এলাকায় ব্যাংক খোলা ৩ দিন

ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে আগামী ৫ জুন থেকে ১৪ জুন টানা ১০ দিন ছুটি থাকবে। এসময় বন্ধ থাকবে ব্যাংকও। তবে তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের বেতন-বোনাসসহ অন্যান্য ভাতা পরিশোধ ও রপ্তানি বিল বিক্রয়ের সুবিধার্থে পোশাকশিল্প এলাকায় ৫, ১১ ও ১২ জুন সীমিত পরিসরে ব্যাংক খোলা রাখতে বলা হয়েছে। ওই তিন দিন সংশ্লিষ্ট শাখাগুলোতে লেনদেন চলবে নির্ধারিত সময়ে।
রবিবার ( ২৫ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অব সাইট সুপারভিশন থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, শিল্পে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন, বোনাস ও অন্যান্য ভাতাদি পরিশোধের সুবিধার্থে আগামী ৫ জুন (বৃহস্পতিবার) সীমিত পরিসরে ব্যাংকের শাখা খোলা থাকবে। শিল্পঘন ঢাকা মহানগরী, আশুলিয়া, টঙ্গী, গাজীপুর, সাভার, ভালুকা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে অবস্থিত পোশাক শিল্পের লেনদেনে সংশ্লিষ্ট এলাকার বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখাগুলোতে লেনদেন হবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এবং ব্যাংক খোলা থাকবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। বাকি সময় ব্যাংকের লেনদেন পরবর্তী আনুষঙ্গিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
এছাড়া ওষুধ শিল্প খাতসহ আমদানি ও রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান বা গ্রাহকদের গুরুত্বপূর্ণ ও বৈদেশিক লেনদেন সম্পাদনের লক্ষ্যে ১১ জুন ও ১২ জুন বুধবার এবং বৃহস্পতিবার সরকারি ছুটির দিন ঢাকা, চট্টগ্রাম ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক এলাকার অথরাইজড ডিলার (এডি) শাখা সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে। এ দু’দিন বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখাগুলোতে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত লেনদেন হবে এবং লেনদেন পরবর্তী আনুষঙ্গিক কার্যক্রম পরিচালিত ব্যাংক খোলা থাকবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
নির্দেশনায় বলা হয়, ছুটির দিনে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বিধি মোতাবেক ভাতাদি প্রাপ্য হবেন।
ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে জনস্বার্থে এ নির্দেশনা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।