জাতীয়
আন্দোলনের নামে নাশকতাকারী আনসারদের চাকরিচ্যুতির প্রক্রিয়া শুরু

আন্দোলনের নামে যেসব আনসাররা নাশকতা করেছে তাদের বাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাদের স্থলে বিশ্রামে থাকা সদস্যদের দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে বলে জানা গেছে। আনসার বাহিনীর দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আনসার বাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, গত রবিবার আন্দোলনকারী আনসার সদস্যদের নিরস্ত্রীকরণ করার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সচিবালয়ে নাশকতার অভিযোগে অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একাধিক মামলাও হয়েছে। ধীরে ধীরে সবাইকে নিরস্ত্রীকরণ করা হবে।
এর আগে, দাবি আদায় করতে গিয়ে সচিবালয় ঘেরাও এবং পরে ছাত্র-জনতার সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে এখন আলোচনায় আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা। এরই মধ্যে আনসার বাহিনীকে বিলুপ্তের দাবিসহ তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে নানা ধরনের সমালোচনাও শুরু হয়েছে। আনসারের মারমুখী আচরণের কারণে প্রশ্ন উঠেছে, এই আন্দোলনের নেপথ্যে পতিত আওয়ামী লীগের কোনো ইন্ধন রয়েছে কি না?
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত রোববার আনসার বাহিনীর সদস্যরা যে ধরনের আচরণ করেছেন, এর দায় পুরো বাহিনীর নয়। যারা আন্দোলন করছেন, তারা পুরো বাহিনীরও প্রতিনিধিত্বও করেন না। আন্দোলনকারীরা আনসার বাহিনীর অস্থায়ী সদস্য, যারা বাহিনীতে ‘অঙ্গীভূত আনসার’ হিসেবে পরিচিত। গত রোববার আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, বিশৃঙ্খল আন্দোলনকারীরা অঙ্গীভূত আনসার, যাদের সঙ্গে ব্যাটালিয়ন আনসারের কোনো সম্পর্ক নেই। এ ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকার অনুরোধ জানাই।
আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর নানা স্তরের কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, বাহিনীতে এই অঙ্গীভূত আনসার সদস্য রয়েছে অন্তত ৭০ হাজার, যারা সবাই আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে থাকে। তবে প্রতি তিন বছর দায়িত্ব পালনের পর ৬ মাস করে তাদের ছুটিতে পাঠানো হয়। প্রয়োজনে তাদের আবার ডেকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। মূলত তারা স্থায়ীভাবে নিয়োগ বা চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে কর্মবিরতিসহ নানা আন্দোলন করে আসছিলেন।
কয়েকদিন ধরে অঙ্গীভূত এই আনসার সদস্যদের বড় একটা অংশ বিভিন্ন দায়িত্বপূর্ণ স্থানে কর্মবিরতি পালন করে আসছিলেন। তাদের অনেক দাবি যৌক্তিক বিবেচনায় তা যাচাই করে বাস্তবায়নের জন্য কমিটিও করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ। এরপর তাদের কর্মে যোগ দিতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু গত রোববার কয়েক হাজার অঙ্গীভূত সদস্য প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ের প্রতিটি ফটক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। দিনভর তাদের এই বিক্ষোভের কারণে কার্যত অচল হয়ে পড়ে সচিবালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম। অফিস সময় শেষ হলেও ভেতরে আটকা পড়েন উপদেষ্টাসহ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের দাবি আদায়ের আশ্বাস দেওয়া হলেও তারা অবরোধ না তুলে বরং মারমুখী হয়ে ওঠেন। এরপর রাত সাড়ে ৮টার দিকে ছাত্র-জনতা অবরোধকারী আনসার সদস্যদের সরিয়ে দিতে গেলে হামলা চালান আনসার সদস্যরা। এতে অর্ধশতাধিক ছাত্র আহত হন।
অঙ্গীভূত আনসারের কাজ কী: খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অঙ্গীভূত আনসার সদস্যরা মূলত বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ‘বৈধ ভাড়াটে কর্মী’ হিসেবে নিরাপত্তা দায়িত্ব পালন করে থাকেন। অর্থাৎ কোনো প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার দায়িত্বে আনসার সদস্য প্রয়োজন হলে বাহিনীতে আবেদন করলে তাদের সেই দায়িত্বে পাঠানো হয়। সেক্ষেত্রে বাহিনীর অনুকূলে চুক্তি অনুযায়ী এই দায়িত্ব পালনের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান অর্থ পরিশোধ করে থাকে। তবে বাহিনী থেকে বেতন হয় এই সদস্যদের।
জানা গেছে, অঙ্গীভূত আনসাররা মোট ১৬ হাজার ৫০০ টাকা বেতনে চাকরি করেন। এ ছাড়া তাদের প্রতি মাসে রেশন হিসেবে ২৮ কেজি চাল, ২৮ কেজি গম, দুই কেজি ডাল, দুই কেজি চিনি ও দুই লিটার ভোজ্যতেল দেওয়া হয়। এই রেশন তুলতে তাদের কাছ থেকে ৫৯৮ টাকা জমা রাখা হয়। তবে ৬ মাসের বিশ্রামে গেলে তাদের কোনো বেতন বা রেশন দেওয়া হয় না। অঙ্গীভূত আনসারে যোগ দিতে বাহিনী থেকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে ন্যূনতম এসএসসি পাস প্রার্থী চাওয়া হলেও মাস্টার্স পাস প্রার্থীরাও আবেদন করে থাকেন।
আনসার বাহিনীর সূত্র জানায়, এই অঙ্গীভূত আনসার সদস্যরা সারা দেশে ৫ হাজার ৭০১টি সংস্থায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। এর মধ্যে বিমানবন্দর, রেলস্টেশন, শিল্পকারখানা, বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান, মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ব্যাংক, গ্যাস ও বিদ্যুৎকেন্দ্র, শপিংমল, গার্মেন্টস শিল্প, লঞ্চ ও সমুদ্রবন্দর, ট্রাফিক ও ইপিজেড রয়েছে। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনাতেও দায়িত্ব পালন করছেন এই আনসার সদস্যরা।
ব্যাটালিয়ন আনসার কারা: মূলত আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীতে ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্যরা স্থায়ী সদস্য। সরকারি বিধি অনুযায়ী তাদের নিয়োগ ও বেতন-ভাতা হয়। বাহিনীতে বতর্মানে কয়েকটি ব্যাটালিয়নে নারী-পুরুষ মিলে ১৫ হাজারের বেশি সদস্য রয়েছে।
আনসার বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, এই ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্যরা জাতীয় সংসদ ভবনে প্রবেশ গেট, ঢাকা ফাস্ট এলিভেডেট এক্সপ্রেসওয়ে, প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর, রামপুরা টিভি ভবন, রাষ্ট্রীয় তোষাখানা, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, কক্সবাজার ও ভাষাণচরে শরণার্থী ক্যাম্প, রামু বৌদ্ধমন্দির, মেট্রোরেল প্রকল্প, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প এলাকা, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল, মাতারবাড়ী তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, রামপাল বিদ্যুৎ-কেন্দ্রসহ ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
আনসার গার্ড ব্যাটালিয়ন বা এজিবি: আনসার বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, এজিবি মূলত আনসার বাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিশেষায়িত ইউনিট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। এই ইউনিটের সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও স্থাপনার নিরাপত্তা দায়িত্ব পালন করে থাকেন। বাহিনী সূত্র জানায়, বর্তমানে এজিবি সদস্যরা ঢাকায় ফিলিস্তিন দূতাবাস, মার্কিন দূতাবাস, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন, আইসিডিডিআর’বিতে বিদেশি ব্যক্তিদের নিরাপত্তা দেওয়া ছাড়াও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাহিনীর মহাপরিচালকের নির্দেশে আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা বিভিন্ন আভিযানিক ও দুর্যোগ মোকাবিলায় দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
ভিডিপি (গ্রাম প্রতিরক্ষা দল) সদস্য যারা: আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীতে দেশের প্রত্যেক গ্রামেই ভিডিপি বা গ্রাম প্রতিরক্ষা দল রয়েছে। মূলত পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর নারী-পুরুষদের নানা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মমুখী করা হয় বাহিনীর পক্ষ থেকে। বাহিনীতে এ ধরনের সদস্য রয়েছে ৬২ লাখের বেশি। জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনকেন্দ্রে এবং দুর্গাপূজাসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে এই ভিডিপি সদস্যরা দায়িত্ব পালন করে থাকেন।

জাতীয়
সীমানা পুনর্নির্ধারণে ৫ অঞ্চলের শুনানি আজ

সীমানা পুনর্নির্ধারণের শেষ দিন আজ। এদিন রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর ও সিলেট অঞ্চলের দাবি-আপত্তির শুনানি করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বুধবার (২৭ আগস্ট) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে সকাল ১০টায় এ শুনানি শুরু হবে।
এদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত পঞ্চগড়-১, ২, রংপুর-১, কুড়িগ্রাম-৪, সিরাজগঞ্জ-২, ৫, ৬, পাবনা-১; আড়াইটা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত টাঙ্গাইল-৬, জামালপুর-২, কিশোরগঞ্জ-১, সিলেট-১, ফরিদপুর- ১, ৪, মাদারীপুর-২, ৩, শরীয়তপুর-২ ও ৩ আসনের শুনানি হবে।
গত ১০ আগস্ট পর্যন্ত মোট ৮৩টি আসনের সীমানা নিয়ে এক হাজার ৭৬০টি দাবি আপত্তি জমা পড়ে ইসিতে। এগুলোর দাবি আপত্তি নিষ্পত্তিতে গত রোববার থেকে শুনানি শুরু করেছে ইসি। যা শেষ হচ্ছে আজ।
শুনানি শেষে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরবেন বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, গত রোববার ২৩ আগস্ট থেকে শুরু হয়েছে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের শুনানি। যা আজ শেষ হচ্ছে। এরপর শুনানি পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত সীমানা তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন।
জাতীয়
রাজধানীর সব বাস চলবে একক ব্যবস্থায়: প্রেস উইং

ঢাকায় চলাচলকারী সব বাস একক একটি ব্যবস্থার অধীনে চলবে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দিনগত রাতে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে একটি বিবৃতিতে এ বিষয়ে জানানো হয়।
সেখানে বলা হয়, ঢাকার বাস পরিবহন দীর্ঘদিন ধরে কোনো নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই চলছে। এর ফলে যাত্রীরা প্রতিদিন জ্যাম, দুর্ঘটনা, ভাড়ায় প্রতারণা ও নানা ভোগান্তির শিকার হন। যেসব যাত্রী তরুণ এবং শারীরিকভাবে সক্ষম, তারা কোনোরকমে বাসে উঠতে পারেন, কিন্তু নারী, শিশু এবং বয়স্কদের জন্য এটি অনেক কঠিন হয়।
ঢাকার যানজটের একটি বড় কারণ অকার্যকর রুটে চলা বাস। এ কারণে বছরে প্রায় ৩৭ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে এবং প্রতিদিন ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে।
প্রেস উইং জানায়, সব বাস একক একটি ব্যবস্থার অধীনে চলবে। কোম্পানিগুলোকে নির্ধারিত রুট ও স্টপেজ মেনে চলতে হবে। এর ফলে রুট শৃঙ্খলা ও ভালোভাবে পরিচালিত বাস সার্ভিসের মাধ্যমে সার্বিক যানজট, ভাড়ায় প্রতারণা এবং বিশৃঙ্খলা কমবে।
যাত্রীদের জন্য নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্য বাড়বে, এবং গণপরিবহন হবে আরও কার্যকর।
আরও জানানো হয়, রাজধানীতে বাসে চলাচলের সময় যাত্রীদের আর বাসে উঠতে লড়াই করতে হবে না বা ভাড়ায় প্রতারণার শিকার হতে হবে না। ঢাকার লাখ লাখ মানুষের জন্য বাসযাত্রা হবে সহজ, দ্রুত এবং স্বাচ্ছন্দ্যময়।
জাতীয়
প্রাথমিকের দুই শ্রেণির জন্য ১৮৭ কোটি টাকার বই ছাপাবে সরকার

আগামী ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক স্তরের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির জন্য প্রায় ৩ কোটি ৬৩ লাখ পাঠ্যপুস্তক সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ (কাগজসহ), বাঁধাই ও সরবরাহে ১৮৭ কোটি ১১ লাখ ৭ হাজার ২০৮ টাকা ব্যয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
মঙ্গলবার (২৬ অগস্ট) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বিদেশ থেকে এ বৈঠকে ভার্চুয়ালি যোগদান করেন অর্থ উপদেষ্টা।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে বৈঠকে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রাথমিক স্তরের (চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির) ৯৮টি লটের মধ্যে ৯৪টি লটের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ (কাগজসহ), বাঁধাই ও সরবরাহের ক্রয় প্রস্তাব নিয়ে আসা হয়। উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করে অনুমোদন দিয়েছে।
প্রস্তাব অনুযায়ী, ১৮৭ কোটি ১১ লাখ ৭ হাজার ২০৮ টাকা ব্যয়ে ৯৪টি লটের মোট ৩ কোটি ৬২ লাখ ৯১ হাজার ২০৭ কপি পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ করা হবে।
সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকের পাশাপাশি অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে ২০২৬ সালের বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক দরপত্রের মাধ্যমে মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের জন্য পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা ২০০৮ এর বিধি ৮৩ (১) (ক) প্রয়োগ করে ক্রয় প্রক্রিয়ার সময় কমানোর নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, গত ১২ আগস্ট অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে আগামী ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক স্তরের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে ৪ কোটি ৪ লাখ ৪২ হাজার ৪৯১টি পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ (কাগজসহ), বাঁধাই ও সরবরাহের সিদ্ধান্ত হয়। এতে ২০০ কোটি ৯১ লাখ ৭৮ হাজার ৪৮০ টাকা ব্যয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়।
জাতীয়
সাদাপাথর লুটের নেতাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে: ডিসি সারওয়ার

পাথর উত্তোলনে কয়েক হাজার লোকজন জড়িত ছিল। তবে যারা সাদাপাথর লুটপাটে নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম।
লুট করা সাদাপাথর ফেরত দেওয়ার সময়সীমা শেষ হওয়ার পর মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে সাদাপাথর পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে সাদাপাথর ফেরত দিতে মঙ্গলবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন সিলেটের নতুন জেলা প্রশাসক।
সারওয়ার আলম বলেন, পাথর পুনঃস্থাপনের পাশাপাশি আইনি কার্যক্রমও চলবে। যারা পাথর লুট করেছে তাদের অবশ্যই গ্রেপ্তার করা হবে। তবে যারা নিরীহ ও নিরপরাধ তারা যাতে হয়রানির শিকার না হয়, সেদিকেও নজর রাখা হচ্ছে। আগে অপরাধীদের নাম প্রকাশ করা হলে তারা পালিয়ে যাবে। অবশ্যই প্রকৃত দোষীরা আইনের আওতায় আসবে।
ইতোমধ্যে ২৬ লাখ ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ৬ লাখ ঘনফুট পাথর স্বেচ্ছায় জমা দিয়েছেন লোকজন। অবশিষ্ট প্রায় ১৯ লাখ ঘনফুট পাথর অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করার কথা জানান তিনি।
সাদাপাথর পুনঃস্থাপন প্রসঙ্গে সারওয়ার আলম বলেন, এটা অনেক কঠিন কাজ। এখন পর্যন্ত ১১ লাখ ঘনফুট পাথর প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে বাকি পাথরগুলো পুনঃস্থাপন করা হবে।
তিনি জানান, এ কাজে প্রতিদিন ৫০০ শ্রমিক, ৪০০ নৌকা, ৩০০-এর অধিক ট্রাক কাজ করছে। সব পাথর পুনঃস্থাপন করা গেলে সাদাপাথরের সৌন্দর্য অনেকটা ফিরে আসবে। তবে প্রাকৃতিকভাবে যেরকম পাথর বিছানো থাকে, ঠিক সেরকম তো পুনঃস্থাপন করা সম্ভব হবে না, তবুও আমরা চেষ্টা করছি।
কী পরিমাণ পাথর লুট হয়েছিল, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে আমার ধারণা আরও অন্তত ৩০ শতাংশ লুট হওয়া পাথর উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এগুলো ভেঙে ফেলা হয়েছে বা অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
লুটের ঘটনায় জেলা প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রিপোর্ট সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটিও কাজ করছে। তাদের রিপোর্ট দেওয়ার পর দুটি প্রতিবেদন নিয়ে একসঙ্গে কাজ করা হবে।
কাফি
জাতীয়
জুলাই শহীদ পরিবারে অনুদানের টাকা বণ্টনে নতুন বিধিমালা

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের এককালীন অনুদান ও মাসিক ভাতা বণ্টন নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনে নতুন বিধিমালা জারি করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। নতুন বিধি অনুযায়ী, আর্থিক সহায়তা শহীদদের স্বামী বা স্ত্রী, সন্তান এবং বাবা-মায়ের মধ্যে সমান তিন ভাগে বণ্টন করা হবে।
সরকারি সহায়তা নিয়ে শহীদ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে প্রায়শই দ্বন্দ্ব ও ঝামেলা তৈরি হওয়ায় সরকার এই পদক্ষেপ নিয়েছে। এই সমস্যা সমাধানে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাইযোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন বিধিমালা, ২০২৫’ জারি করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সহায়তার অর্থ নিয়ে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেওয়ায় কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছিল। প্রাথমিকভাবে ধর্মীয় উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী অর্থ বণ্টন শুরু হলেও তা নিয়ে আপত্তি ওঠে। কারণ, অনুদান বা ভাতা উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত সম্পদ নয়। এ কারণে একটি সুনির্দিষ্ট বিধিমালা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহতদের ‘জুলাই শহীদ’ এবং আহতদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে সরকার। শহীদ পরিবারকে সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে ৩০ লাখ টাকা এককালীন অনুদান দেওয়া হচ্ছে এবং মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাতা পাওয়ার কথা রয়েছে। এ পর্যন্ত ৮৪৪ জন শহীদের গেজেট প্রকাশিত হয়েছে।
বিধিমালা অনুযায়ী, আর্থিক সহায়তা তিন ভাগে ভাগ হবে— এক-তৃতীয়াংশ শহীদের স্বামী বা স্ত্রী, এক-তৃতীয়াংশ সন্তান এবং বাকি এক-তৃতীয়াংশ বাবা-মা পাবেন। যদি কোনো একজন না থাকেন, তবে তার অংশ বাকিদের মধ্যে সমানভাবে ভাগ হবে। অবিবাহিত শহীদের ক্ষেত্রে তার সহায়তার অর্থ বাবা-মায়ের মধ্যে সমানভাবে বণ্টিত হবে।
এছাড়াও বিধিমালায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে:
ভাতার অবসান: শহীদ পরিবারের কোনো সদস্য মারা গেলে বা শহীদের স্বামী বা স্ত্রী পুনরায় বিবাহ করলে মাসিক ভাতার অংশের অবসান ঘটবে।
আহত জুলাই যোদ্ধাদের সুযোগ-সুবিধা: অভ্যুত্থানের সময় আহত কোনো জুলাই যোদ্ধা যদি পরবর্তীতে মারা যান, তবে তাকেও শহীদ হিসেবে গণ্য করা হবে এবং তার পরিবার শহীদ পরিবারের সব সুবিধা পাবে।
পুনর্বাসন ও প্রশিক্ষণ: জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর শহীদ পরিবারের সদস্য ও জুলাই যোদ্ধাদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ এবং সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার উদ্যোগ নেবে।
বিরোধ নিষ্পত্তি: আর্থিক সহায়তা বা পুনর্বাসন নিয়ে কোনো বিরোধ দেখা দিলে তা নিষ্পত্তির জন্য একটি সালিশ বোর্ড গঠন করা হবে। বোর্ডের সিদ্ধান্ত নিয়ে আপিল করার সুযোগও থাকবে, যেখানে মহাপরিচালকের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে।
চিকিৎসা সহায়তা: আহত জুলাই যোদ্ধারা সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পাবেন।