শিল্প-বাণিজ্য
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম রাজস্ব আদায়
দেশের একমাত্র চতুর্দেশীয় স্থলবন্দর বাংলাবান্ধায় গত কয়েক বছর ধরে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে রাজস্ব আদায় হলেও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা কম আদায় হয়েছে। রাজস্ব আদায় কম হওয়ার কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত বছর ডলার সংকটের কারণে নতুন এলসি না করতে পারায় আমদানি কমে গেছে। তাই গত বছরের রাজস্ব আদায়ের চেয়ে এবার কম আদায়ের রেকর্ড হয়েছে।
কাস্টমস সূত্র জানায়, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৯২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। কিন্তু রাজস্ব আদায় হয়েছে ৭৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা কম আদায় হয়েছে। বিগত অর্থ বছরের রাজস্ব আদায়ের রেকর্ডগুলো দেখা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকা বেশি আদায় হয়েছিল। সে অর্থ বছরে আদায় হয়েছিল ৬৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।
তার আগে ২০২১-২২ অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। আদায় হয়েছিল ৬৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। ওই অর্থ বছরে বেশি আদায় হয় ২২ কেটি ৪৩ লাখ টাকা। ২০২১-২২ অর্থ বছরের জুন মাসে আদায় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২ কোটি ৪২ লাখ টাকা। আদায় হয় ১৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। বিগত বছরের জুন মাসের তুলনায় বেশি আদায় হয়েছে ১৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
এছাড়া ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় গেল ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বন্দরটি দিয়ে প্রায় দুই লাখ মেট্রিক টন পাথরসহ বিভিন্ন মালামাল লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কম আমদানি হয়েছে।
বর্তমানে এই বন্দর দিয়ে আমদানি করা পণ্যের মধ্যে প্রায় ৯৮ শতাংশ পাথর। এছাড়া মেশিনারিজ, প্লাস্টিক দানা, ভুট্টা, অয়েল কেক (খৈল), আদা, গম, চাল, ফল ইত্যাদি ও নেপাল ও ভুটান থেকে উৎপাদিত ও বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত পণ্য আমদানি করা হচ্ছে। একইভাবে দেশ থেকে পাট ও পাটজাত পণ্য, আলু, ব্যাটারি, কোমল পানীয়, গার্মেন্ট সামগ্রী, ক্যাপ, হ্যাঙ্গার, সাবান, বিস্কুট, চানাচুর, জুস, কাচ, পার্টস, কটনব্যাগ, ওষুধ, মোটর সাইকেলসহ বিভিন্ন দ্রব্য রপ্তানি হচ্ছে।
রাজস্ব কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে জানা যায়, বন্দরটিতে আমদানি করা পণ্যের মধ্যে প্রায় ৯৮ শতাংশই পাথর। সড়ক পথে পাথর আমদানির একমাত্র ভরসার স্থলবন্দর এটি। গেল এক বছর ধরে ডলার সংকটে নতুন এলসি না পাওয়ায় বন্দরটিতে দেখা দিয়েছে নানা সংকট। সীমিত পরিসরে হচ্ছে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। ডলার সংকটের কারণে আমদানি কম হওয়ায় রাজস্ব আদায়ে কম রেকর্ড বলে মনে করছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ, বন্দরের ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকরা।
আমদানিকারকদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, গেল এক বছর ধরে ডলারের মৃল্যবৃদ্ধিসহ নানা সংকটে পাথর আমদানি কার্যক্রম চালাতে পারছেন না তারা। চাহিদা অনুযায়ী নতুন এলসি করতে না পারায় বর্তমানে পুরাতন এলসিতে পাথর আমদানি হচ্ছে এ বন্দরটি দিয়ে। নানা সমস্যা নিয়ে খুঁড়িয়ে-খুঁড়িয়ে চলা এ বন্দরটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন সিঅ্যান্ডএফসহ ব্যবসায়ীরা।
১৯৯৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর নেপালের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য কার্যক্রম শুরুর মধ্য দিয়ে চালু হয় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর। পরে ২০১১ সালের ২২ জানুয়ারিতে ভারতের সঙ্গেও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট চালুর মধ্য দিয়ে এ বন্দর দিয়ে শুরু হয় ভারতে যাত্রী পারাপার। ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ভুটানের সঙ্গে শুরু হয় পণ্য আমদানি-রপ্তানি। বন্দরের কার্যক্রম ব্যবস্থাপনায় ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ২৫ বছরের জন্য বেসরকারি পোর্ট অপারেটর হিসেবে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর লিমিটেডকে নিযুক্ত করেছে।
বাংলাবান্ধা সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম জানান, ডলার সংকট, এলসি জটিলতাসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে উল্লেখযোগ্য হারে পণ্য আমদানি কমে রাজস্ব আদায় কমে গেছে। বছর জুড়ে ডলার সংকট, এলসি জটিলতা ও পণ্য আমদানি ধীরগতি সমস্যা না থাকলে এটি হতো না। এ বন্দরে বিগত কয়েক অর্থ বছর ধরে দ্বিগুণ রাজস্ব আদায় হয়ে আসছে।
বাংলাবান্ধা ল্যান্ডপোর্ট লিমিটেডের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ গণমাধ্যমকে বলেন, রাজস্ব আদায় কমে যাওয়ার কারণ হচ্ছে ডলার সংকটের কারণে আমদানি কমে গিয়েছিল। গেল বছর ডলার সংকটের কারণে জুলাই-আগস্ট পাথর আমদানি ছিল। এ কারণে রাজস্ব আদায় কমতে পারে। বর্তমানে আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ আগের চেয়ে কিছুটা কম হচ্ছে। আগের মত সব পণ্য আমদানি-রপ্তানি হলে আবারো প্রাণ ফিরে পাবে বন্দরটি।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বিটকয়েনের দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ
একটি বিটকয়েনের দাম ১ লাখ ছুইছুই করছে। আজ শুক্রবার বিটকয়েনের দাম ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে ছাড়িয়েছে। এই দাম বিটকয়েনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বিটকয়েনের দাম বাড়তে থাকে। আর্থিক বাজারের প্রত্যাশা, ট্রাম্প প্রশাসন ক্রিপ্টোবান্ধব হবে। খবর রয়টার্সের
এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থাটি বলছে, চলতি বছর বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েনের দাম দিগুণের বেশি হয়েছে। গত ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর বিটকয়েনের দাম ২৫ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহের মধ্যে এটি বেড়েছে ৪৫ শতাংশের বেশি। আজ শুক্রবার একটি বিটকয়েন বিক্রি হয়েছে ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে।
মূল্যবৃদ্ধির দৌড়ে বিটকয়েন পাল্লা দিচ্ছে ইলন মাস্কের টেসলার সঙ্গে। ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে টেসলার শেয়ারের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। বিনিয়োগকারীরা মনে করেছেন, ট্রাম্পের বন্ধুরা এবং যেসব বিষয়ে তার আগ্রহ আছে, সেসব বিষয় তিনি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ভালো করবে।
সিডনির এটিএফএক্স গ্লোবালের প্রধান বাজার বিশ্লেষক নিক টুইডেল বলেন, ‘বিটকয়েনের দাম বাড়ছে ট্রাম্পের জন্যই। কারণ, তিনি এই শিল্পের খুবই সমর্থনকারী। এর মানে হলো, ক্রিপ্টোর মজুত ও মুদ্রা উভয়েইর চাহিদা আরও বাড়বে। নির্বাচনের ফল আসার পর বিটকয়েনের দাম প্রায় রেকর্ড পর্যায়ে ওঠার মানে হলো, এই মুদ্রার ওপরে কেবল খোলা আকাশ রয়েছে।’
গত ১০ নভেম্বর আগের সব রেকর্ড ভেঙ্গে ৮০,০০০ ডলারে পৌঁছে যায়। বিশেষজ্ঞরা রুশ বার্তা সংস্থা তাসকে বলেছেন, বর্তমান বৃদ্ধির পর্যায়ে থাকলে বিটকয়েনের দাম ৩ লাখ ডলারে পৌঁছানোও অবাক করার মতো কিছু হবে না।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারকারীদের মধ্যে জনপ্রিয়তার মাধ্যমে এর দাম ওঠা-নামা করে। ২০০৮ সালের নভেম্বরে সাতোশি নাকামোতো ছদ্মনামে বিটকয়েন কারেন্সি মার্কেটে প্রকাশ করা হয়।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
আদানির সঙ্গে ২৫০ কোটি ডলারের চুক্তি বাতিল!
ঘুষ দেয়া ও প্রতারণার মাধ্যমে কয়েকশ’ কোটি ডলারের সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাগিয়ে নেয়ায় অভিযুক্ত ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির বিরুদ্ধে সম্প্রতি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে নিউইয়র্কের একটি আদালত। এ নিয়ে বেশ বিপাকেই পড়েছেন তিনি। তবে এর মধ্যেই আরও এক দুঃসংবাদ পেলো আদানি গ্রুপ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে আলজাজিরা জানিয়েছে, আদানি শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে ২৫০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি অর্থের চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে আফ্রিকার দেশ কেনিয়া।
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দেশটির পার্লামেন্টে দেয়া এক ভাষণে, আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে হওয়া দুটি চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দেন।
এর মধ্যে একটি চুক্তির অর্থমূল্য প্রায় ২০০ কোটি মার্কিন ডলার। এই চুক্তির আওতায় দেশটির জোমো কেনিয়াত্তা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দ্বিতীয় রানওয়ে করার কথা ছিল আদানি গোষ্ঠীর। এছাড়া ৩০ বছর মেয়াদি ইজারার (লিজ) আওতায় বিমানবন্দরের যাত্রী টার্মিনাল উন্নত করার কথা ছিল।
এছাড়া আদানির সঙ্গে ৩০ বছর মেয়াদি ৭৩ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলারের সরকারি-বেসরকারি খাতের একটি অংশীদারত্ব (পিপিপি) চুক্তিও বাতিল করার কথা জানান রুটো।
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট জানান, তিনি পরিবহন এবং জ্বালানি ও পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে অবিলম্বে চুক্তি বাতিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
তদন্তকারী সংস্থা ও অংশীদার দেশগুলোর কাছ থেকে পাওয়া নতুন তথ্যের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
হিলি বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আসবে ৯১ হাজার টন চাল
দেশের বাজারে চালের দাম স্বাভাবিক রাখতে চাল আমদানির অনুমতির পাশাপাশি আমদানিতে পুরোপুরি শুল্ক প্রত্যাহার করে নিয়েছে সরকার। এরপর থেকে আমদানি প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা। এরইমধ্যে চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। আমদানিকৃত চাল ডিসেম্বরের ১২ তারিখের মধ্যে বাজারজাত করতে হবে বলেও নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এদিকে হিলি স্থলবন্দরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৩ আমদানিকারক ৯১ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি পেয়েছেন। এসব চাল আগামী সপ্তাহে বাজারে আসতে পারে বলে জানান আমদানিকারকরা।
শুক্রবার হিলি বাজারে গেলে জানা যায়, আটাশ জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকা কেজি দরে, যা ছিল ৫৬ টাকা। অন্যদিকে সম্পা কাটারি চাল কেজিতে ৩ টাকা বেড়ে ৬৮ এবং ২ টাকা বেড়ে স্বর্ণা-৫ জাতের চাল ৪৮ টাকা আর জিরাশাইল ৬৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আমদানি শুরু হলে দামে কিছুটা প্রভাব পড়বে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক নুর ইসলাম বলেন, সরকার অনুমতি দেওয়ার পর ব্যবসায়ীরা চাল আমদানির প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। তবে চাল আমদানিতে যে সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে তা খুবই কম। কারণ ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে বাজারজাত করতে হবে। এছাড়া এবার আরও কিছু নির্দেশনা দেওয়া আছে, যে প্যাকেটে চাল আমদানি করা হবে সেই প্যাকেটেই বাজারে বিক্রি করতে হবে এবং প্রতিদিনের আমদানি, বিক্রি ও মজুতের তথ্য স্থানীয় খাদ্য অফিসে জমা দিতে হবে।
হিলি স্থলবন্দরের উপ-সহকারী উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধে কর্মকর্তা ইউসুফ আলী বলেন, চাল আমদানির জন্য ইমপোর্ট পারমিট এখনো কেউ পাননি। ইমপোর্ট পারমিট পেলে আমদানিকারকরা চাল আমদানি করতে পারবেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
একদিনে হিলি দিয়ে এলো ১৮শ মেট্রিক টন আলু, কমেছে দাম
দেশের বাজারে আলুর দাম স্বাভাবিক রাখতে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে বেড়েছে আলু আমদানি। প্রতিদিন ৩০-৩৫ ট্রাক আলু আমদানি হলেও বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) একদিনেই ৭১ ট্রাকে এক হাজার আটশ ১৮ মেট্রিক টন আলু আমদানি হয়েছে।
এদিকে আমদানি বাড়ায় হিলির বাজারে কেজিতে দুই থেকে তিনি টাকা দাম কমেছে।
হিলি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কাটিনাল ৫০, সাটল আলু ৫৫, বিলেতি ৬৫, গ্যানোলা ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। যা গত দুদিন আগের চেয়ে কিছুটা কম।
হিলি বন্দর সূত্র জানায়, আলুর দাম সহনীয় পর্যায়ে ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ৫ সেপ্টেম্বর থেকে আলু আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশ ও নিয়ন্ত্রণ শুল্ক প্রত্যাহার করে নেয় সরকার। বন্দর দিয়ে ডায়মন্ড ও কাটিনাল আলু আমদানি হচ্ছে।
আলু ব্যবসায়ী আলম হোসেন বলেন, গেল সপ্তাহের সোমবার বন্দরে প্রতিকেজি আলু ৪৮-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। হঠাৎ করে মঙ্গল ও বুধবার সেই আলু বন্দরে বিক্রি হয় ৫৭-৫৮ টাকায়। তবে বৃহস্পতিবার রেকর্ড পরিমাণ আলু আমদানি হওয়ায় শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সকালে কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা কমে বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়।
হিলি স্থলবন্দরের পাইকারি ব্যবসায়ী রাসেল বলেন, আলু আমদানি যেভাবে হচ্ছে দাম সেভাবে কমছে না। হুটহাট করে দাম উঠানামা করায় আলু কিনতে সমস্যা হচ্ছে। আমরা এ বন্দর থেকে আলু কিনে দেশের বিভিন্ন মোকামে পাঠায়। দাম যত কম হবে তত ভালো।
হিলি বন্দরের আমদানিকারক নুর ইসলাম বলেন, দেশের বাজারে দাম স্বাভাবিক রাখতে আমদানিকারকরা ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ আলু আমদানি করছে। যাতে দেশে আলুর দাম কমছে। শুক্রবার বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে তাই বাজারে সরবরাহ ঠিক রাখতে গতকাল বৃহস্পতিবার রেকর্ড পরিমাণ আলু আমদানি হয়েছে। আলু আমদানি বাড়লে দাম আরও কমবে।
হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা শফিউল ইসলাম বলেন, আমদানিকারকরা যাতে আলু আমদানি করে দ্রুত বাজারজাত করতে পারে সেজন্য কাস্টমসের সব প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে ব্যবসায়ীদের সবধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির জন্য প্রতিশ্রুতিশীল বাজার
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন বলেছেন, অষ্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির জন্য একটি প্রতিশ্রুতিশীল বাজার। বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতা সম্প্রসারিত করার এবং অংশীদারিত্ব জোরদার করার বিশাল সুযোগ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি হেড অব মিশন ক্লিনটন পবকের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর উত্তরার বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে পারস্পরিক স্বার্থ এবং বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে বিরাজমান বাণিজ্যের সুযোগগুলো কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়। একইসঙ্গে বাংলাদেশ থেকে অস্ট্রেলিয়ার বাজারে পোশাক রপ্তানি বাড়াতেও সম্ভাব্য সহযোগিতার কথা বলা হয়।
এ সময় আনোয়ার হোসেন বলেন, এলডিসি-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের জন্য অস্ট্রেলিয়ার শুল্কমুক্ত বাজারে প্রবেশাধিকার অব্যাহত রয়েছে। সেজন্য আমরা অস্ট্রেলিয়ার সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ। পোশাক শিল্পে সার্কুলারিটি গ্রহণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের এগিয়ে থাকার সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা অস্ট্রেলিয়ার বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশের টেক্সটাইল শিল্পে বর্জ্য রিসাইক্লিং ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানাই।
বৈঠকে বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি হেড অব মিশন ক্লিনটন পবকে বলেন, আগামী বছরের মাঝামাঝিতে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে ‘অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ বিজনেস ফোরাম’ শীর্ষক একটি ইভেন্ট আয়োজিত হচ্ছে। যেখানে বাংলাদেশের পোশাক প্রস্তুতকারকরা নিজ নিজ পণ্য উপস্থাপন করা সুযোগ পাবেন। অস্ট্রেলিয়া হাইকমিশন এই ইভেন্ট আয়োজনে বিজিএমইএ থেকে সহযোগিতা চান।
পরে বিজিএমইএ প্রশাসক আনোয়ার হোসেন এ ব্যাপারে বিজিএমইএ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।