অর্থনীতি
সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ শতাধিক প্রভাবশালীর ব্যাংক হিসাব জব্দ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের ক্ষমতার অবসান ঘটেছে। সরকার পতনের পর এখন ওই আমলের মন্ত্রী-এমপিসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দুর্নীতি, অর্থপাচার ও ঋণ কেলেঙ্কারির বিভিন্ন খবর বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। এমন পরিস্থিতিতে আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাব তলব ও জব্দ করছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
ইতোমধ্যে সদ্য বিগত সরকারের এমন শতাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব জব্দ ও স্থগিত হয়েছে। সাবেক মন্ত্রী-এমপি থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সংস্থার শীর্ষ ব্যক্তি, সাবেক সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের নাম রয়েছে এ তালিকায়।
সবশেষ এ তালিকায় যুক্ত হয়েছে ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিএবি ও এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার ও তার স্ত্রী নাছরিন ইসলাম, পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান, আর্থিক খাতের আলোচিত নাম চৌধুরী নাফিজ সরাফাত ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান ও তাদের স্ত্রী-সন্তানদের নাম। গত ২৫ আগস্ট তাদের সবার ব্যক্তিগত এবং স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব ও লেনদেন স্থগিত করা হয়েছে।
এর দুদিন আগে, গত ২৩ আগস্ট বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সদ্য পদত্যাগ করা সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং দিনাজপুর-৬ (হাকিমপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শিবলী সাদিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের স্ত্রী-সন্তানদের ব্যক্তিগত এবং স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব ও লেনদেন স্থগিত করা হয়েছে।
তার আগের দিন, ২২ আগস্ট সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল (লোটাস), তার স্ত্রী কাশ্মিরি কামাল ও মেয়ে নাফিসা কামাল এবং সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, তার স্ত্রী আইরিন মালবিকা মুনশি ও মেয়ে তানিয়া অনন্যা মুনশি এবং তৃষা মুনশির ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়। এছাড়াও এদিন দেশের ব্যাংকিং খাতের মাফিয়াখ্যাত শিল্পগ্রুপ এস আলম গ্রুপের স্বত্বাধিকারী এস আলম ও তার পরিবারের ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের নামে-বেনামে কত টাকা ঋণ আছে, তা জানতে ২২ আগস্ট ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ বাংক।
গত ২০ আগস্ট বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সদ্য পদত্যাগ করা চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ও তার ছেলে জুহায়ের সারার ইসলাম, মার্চেন্ট ব্যাংকারদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সাবেক সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান, শেয়ারবাজারের আলোচিত কারসাজিকারক মো. আবুল খায়ের, শেয়ারবাজারের আলোচিত ব্যক্তি জাভেদ এ মতিন, সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানি সিডব্লিউটির এমডি মনিজা চৌধুরীসহ আট ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়। একই সঙ্গে তাদের মালিকানাধীন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের লেনদেনও স্থগিত করা হয়। এ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিগত সরকারের আমলে দেশের পুঁজিবাজার অস্থির করার পেছনে জড়িত ছিলেন তারা।
একইদিন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের ৯১ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সকল হিসাব তলব করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এদিন আলোচিত সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু এবং ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম সেলিম ওসমান, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের ব্যাংক হিসাবও জব্দ করা হয়েছে।
সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার চিঠি দেওয়া হয় গত ১৯ আগস্ট। ওই চিঠিতে জাহিদ মালেক তার মেয়ে সিন্থিয়া মালেক, ছেলে রাহাত মালেকের নাম, জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তাদের মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করতে বলা হয়।
একইদিন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান লিয়াকত সিকদারের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। একই সঙ্গে তার স্ত্রী মাহমুদা আলী সিকদার এবং তাদের মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কম্পিউটার ওয়ার্ল্ড বিডির ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করা হয়।
১৯ আগস্ট জব্দ করা হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন ও তার ছেলে শেখ সারহান নাসের তন্ময়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্টও। একই সঙ্গে তাদের মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করা হয়েছে।
সাবেক শিক্ষা ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি, তার স্বামী তৌফীক নাওয়াজ এবং বড় ভাই ডা. জে আর ওয়াদুদ টিপুর ব্যাংক অ্যাকাউন্টও জব্দ করা হয় এদিন। পাশাপাশি তাদের মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়। এদিন সেনাবাহিনীর চাকরিচ্যুত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানের স্ত্রী-সন্তান এবং তাদের মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টও জব্দ করা হয়।
গত ১৮ আগস্ট ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার সাবেক ডিবি প্রধান আলোচিত হারুন অর রশিদ এবং তার স্ত্রী, সন্তান ও তাদের মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করা হয়।
ঝালকাঠি-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু তার সন্তান এবং তাদের মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবও স্থগিত করা হয় একইদিন।
পিরোজপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন মহারাজ ও নাটোর-২ (সদর ও নলডাঙ্গা) আসনের শফিকুল ইসলাম শিমুলের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয় ১৫ আগস্ট। একইসঙ্গে তাদের স্ত্রী, সন্তান এবং মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত রাখতে বলা হয়।
গত ১৪ আগস্ট সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও আরও সাবেক তিন সংসদ সদস্য ও তাদের স্ত্রী, সন্তান এবং তাদের মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করে বিএফআইইউ। ওই তিন সাবেক সংসদ সদস্যরা হলেন- আওয়ামী লীগ নেতা জামালপুর-৩ (মাদারগঞ্জ-মেলান্দহ) আসনের মির্জা আজম, সিরাজগঞ্জ-২ (সদর ও কামারখন্দ) আসনের জান্নাত আরা হেনরী এবং ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনের সাবেক এমপি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল।
গত ১৩ আগস্ট সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, তার স্ত্রী আরিফা জেসমিন কনিকাসহ তার সন্তান এবং তাদের মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়।
একইদিন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও তার স্ত্রী সন্তানদের ব্যক্তিগত ও তাদের মালিকানাধীন সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার নির্দেশ দেয় বিএফআইইউ। আর্থিক সংস্থাটির পক্ষ থেকে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে আসাদুজ্জামান খান, তার স্ত্রী লুৎফুল তাহমিনা খান, ছেলে সাফি মুদ্দাসির খান এবং মেয়ে সাফিয়া তাসনিম খানের নামে থাকা সব ধরনের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্ট বন্ধ থাকবে।
আগের দিন, ১২ আগস্ট সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত ও তার স্ত্রীর নামে থাকা ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেয় বিএফআইইউ। একইসঙ্গে তাদের হিসাবের সব তথ্য চেয়েছে সংস্থাটি।
এমআই

অর্থনীতি
ব্যাংকখাতে উদ্বৃত্ত তারল্য ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা

জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ব্যাংক খাতে তারল্য সংকট নিয়ে নানা আলোচনার জন্ম হলেও জুন শেষে চিত্র ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জুন মাস শেষে ব্যাংক খাতে উদ্বৃত্ত তারল্য দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার ৭৬৭ কোটি টাকা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জুন পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে মোট তারল্যের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫ লাখ ৭০ হাজার ৬১১ কোটি টাকা। আর ন্যূনতম প্রয়োজনীয় তারল্য ছিল ৩ লাখ ৪ হাজার ৮৪৪ কোটি টাকা। এর মানে, ব্যাংক খাতে নিট উদ্বৃত্ত রয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় তারল্য বেড়েছে প্রায় ৯৭ হাজার কোটি টাকা।
সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের চিত্র
সরকারি ব্যাংকগুলোর উদ্বৃত্ত তারল্য ৮৮ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা। বেসরকারি ব্যাংকের উদ্বৃত্ত ১ লাখ ৪৩ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা। বিদেশি ব্যাংকগুলোর উদ্বৃত্ত ৩৩ হাজার ৯৭ কোটি টাকা। তবে ইসলামী ব্যাংকগুলোতে ঘাটতি রয়েছে ৪৩৩ কোটি টাকা। বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোতেও রয়েছে ৬২ কোটি টাকার ঘাটতি।
রেকর্ড রেমিট্যান্স ও রিজার্ভ
২০২৪-২৫ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছে রেকর্ড ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার। শুধু জুন মাসেই এসেছে ২ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি। রিজার্ভও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলারে, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২৬ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার।
ব্যাংক এশিয়ার সাবেক এমডি আরফান আলী বলেন, সরকার পরিবর্তনের পর বিভিন্ন সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হলেও বিনিয়োগ কমেছে। উচ্চ সুদের কারণে ব্যবসায়ীরা ঋণ নিতে দ্বিধায় ছিলেন। এতে ব্যাংকে তারল্য বেড়েছে।
অর্থনীতিবিদ ও চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ রিসার্চ ফেলো এম হেলাল আহমেদ জনি বলেন, রেকর্ড রেমিট্যান্স ও বৈদেশিক ঋণ প্রবাহে রিজার্ভ বেড়েছে। হুন্ডি কমে যাওয়ায় ডলার চাপও কমেছে। সবমিলিয়ে এটি অর্থনীতির জন্য ভালো বার্তা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে তারা ৫০৩ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে। জুনে প্রতি ডলারের সর্বোচ্চ দর ছিল ১২২ টাকা ৭৭ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ১১৮ টাকা।
এছাড়া, সঞ্চয়পত্রে মে পর্যন্ত বিক্রয়ের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৬৮৬ কোটি টাকা। সরকার এই সময়কালে নিট ঋণ নিয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৮৭৬ কোটি টাকা, আগের বছরের তুলনায় তা বেড়েছে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা।
অর্থনীতি
২১ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২০ হাজার ৬০৬ কোটি টাকা

চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ের প্রথম ২১ দিনে ১৬৯ কোটি ৬০ লাখ (প্রায় ১ দশমিক ৭০ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বাংলাদেশি টাকায় এর পরিমাণ (এক ডলার ১২১ টাকা ৫০ পয়সা ধরে) প্রায় ২০ হাজার ৬০৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান।
বাংলাদেশ ব্যাংকে তথ্য অনুযায়ী, জুলাইয়ের প্রথম ২১ দিনে ১৬৯ কোটি ৬০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। যা গত বছরের একই সময়ে (২০২৪ সালের জুলাইয়ের ২১ দিন) তুলনায় ২৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার বা প্রায় ৩ হাজার ২৩২ কোটি টাকার বেশি। গত বছর এসেছিল ১৪৩ কোটি ডলার।
গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শেষ মাস জুনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে পাঠিয়েছেন প্রায় প্রায় ২৮১ কোটি ৮০ লাখ (২.৮২ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স। দেশীয় মুদ্রায়র এর পরিমাণ প্রায় ৩৪ হাজার ৪০৪ কোটি টাকার বেশি। আর প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ৯ কোটি ৪০ লাখ ডলার ১১৪৭ কোটি টাকা। এটি একক মাস হিসেবে তৃতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। গত মাস মে’তে দেশে এসেছে ২ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার, যা ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। তার আগে মার্চ মাসে সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল।
অন্যদিকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে জুন পর্যন্ত পুরো সময়ে মোট ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার, আগস্টে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ ডলার, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার, নভেম্বরে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার, মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার, এপ্রিলে ২৭৫ কোটি ডলার, মে মাসে ২৯৭ কোটি ডলার এবং সবশেষ জুন মাসে ২৮২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল।
কাফি
অর্থনীতি
ফের বাড়ল সোনার দাম

দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনায় ১ হাজার ৫০ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার ৬০১ টাকা।
স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে। আগামীকাল বুধবার (২৩ জুলাই) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
কাফি
অর্থনীতি
সব দেনা শোধ, সারের ঘাটতি হবে না: উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর

নভেম্বর পর্যন্ত সারের ঘাটতি হবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার এসে সব দেনা শোধ করেছে। নভেম্বর পর্যন্ত সারের মজুত রয়েছে।
সোমবার (২১ জুলাই) সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
কৃষি উপদেষ্টা বলেন, দেশে সারের ঘাটতি নেই। সরকারেরও কোনো বকেয়া নেই। অন্তর্বর্তী সরকার এসে সব দেনা শোধ করেছে। নভেম্বর পর্যন্ত সারের মজুত রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে কোনো সংকট দেখা যাবে না।
তিনি বলেন, সারের লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে যোগ্যদের বিবেচনায় নেওয়া হবে। এখন থেকে রাজনৈতিক বিবেচনায় কোনো ডিলারশিপ দেওয়া হবে না। এ ক্ষেত্রে নীতিমালা মানা হবে। নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে। ডিলাররাই যেন সারের ডিলারশিপ পায়, সেটা নিশ্চিত করা হবে।
উপদেষ্টা বলেন, আগে যারা সারের লাইসেন্স নিয়ে ঝামেলা করেছে, তাদের বাদ দেওয়া হচ্ছে। নতুন করে সারের লাইসেন্স দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে যোগ্যদের বিবেচনায় নেওয়া হবে।
সারাদেশে ১০০ মিনি কোল্ডস্টোরেজ স্থাপনের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, আগামী মৌসুমের আগেই হয়তো এগুলো চালু হবে। এ ছাড়া ওএমএসের মাধ্যমে আলু দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে। এতে করে কৃষক আলুর ভালো দাম পাবেন।
অর্থনীতি
ওএমএসের মাধ্যমে আলু বিক্রির চিন্তা করছে সরকার

কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে ওএমএসের (খোলা বাজারে বিক্রি) মাধ্যমে আলু বিক্রির চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সোমবার (২১ জুলাই) সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা একথা জানান।
তিনি বলেন, গতবার যে দামে আলু কিনেছেন… এবার কিন্তু কৃষক আলুর দাম পাচ্ছে না। আমরা চেষ্টা করছি কৃষক যাতে আলুর দাম পায়, এজন্য ওএমএসের মাধ্যমে যাতে আলুটা দেওয়া যায় এজন্য আমরা চেষ্টা করতেছি। ওএমএসের মাধ্যমে যাতে আলুটা দেওয়া যায়। কৃষক যদি পণ্যের দাম না পায় পরবর্তী সময় কিন্তু তারা এটি উৎপাদনের দিকে যাবে না। এজন্য চেষ্টা করতে হবে কৃষক যাতে ন্যায্য দামটা পায়।
উপদেষ্টা বলেন, গতবার যে পরিমাণ পেঁয়াজের দাম ছিল। এবার কিন্তু কৃষক অনেক বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন করেছে। পেঁয়াজ উৎপাদন বেশি করায় এবার পেঁয়াজ আমদানি না করেও কিন্তু বাজারটা মোটামুটি স্থিতিশীল আছে। এগুলো কিন্তু কৃষকেরই অবদান।