আন্তর্জাতিক
রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য বাংলাদেশকে সহায়তা অব্যাহত রাখবে ইউনিসেফ

রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য বাংলাদেশকে সহায়তা অব্যাহত রাখবে জাতিসংঘের শিশু নিরাপত্তা ও অধিকার বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল এ কথা জানিয়েছেন।
সংস্থাটি বলেছে, মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার সাত বছর পরও রাখাইন প্রদেশে শিশুদের ওপর মারাত্মক হামলা অব্যাহত রয়েছে। রোববার (২৫ আগস্ট) নিজেদের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি একথা জানায়।
এতে বলা হয়, মিয়ানমারে সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে যাওয়ার সাত বছর পর দেশটির পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত রাখাইন প্রদেশে সংঘাত আরও তীব্রতর হয়েছে। ফলে রাখাইনের মংডু শহরে হতাহতের সংখ্যা ও বাস্তুচ্যুতি বেড়েছে এবং ক্রমবর্ধমান সংখ্যক মানুষ নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশে আশ্রয় খোঁজার চেষ্টা করছেন বলে খবর রয়েছে।
ইউনিসেফ এমন উদ্বেগজনক প্রতিবেদনও পেয়েছে যে- বেসামরিক ব্যক্তিরা, বিশেষ করে শিশু এবং পরিবারগুলোকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে বা তারা সংঘর্ষের ভেতরে আটকা পড়ছেন, যার ফলে মৃত্যু এবং গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটছে। রাখাইনে মানবিক সহায়তার প্রবেশ অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে। নিরাপদ পানি এবং স্বাস্থ্যসেবাসহ গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাগুলো হুমকির মুখে পড়েছে। গত জানুয়ারি থেকে বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগ এবং ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউটের কারণে এই ভোগান্তি আরও বেড়েছে। এই ধরনের পরিস্থিতি বেসামরিক কার্যক্রম এবং মানবিক কার্যক্রম উভয়কেই ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেছেন, মারাত্মক সহিংসতার সাত বছর পর হাজার হাজার পরিবারকে তাদের বাড়িঘর থেকে নিরাপত্তার সন্ধানে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। সহিংসতার নতুন এই প্রতিবেদন মিয়ানমারে শিশুদের জন্য অব্যাহত হুমকির বেদনাদায়ক কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, রাখাইনে এবং সারা দেশে, শিশু এবং পরিবারগুলো তাদের জীবন, জীবিকা এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে সংঘাতের মূল্য দিয়ে চলেছে। সংঘাতের পক্ষগুলোকে অবশ্যই শিশুদের সুরক্ষার জন্য তাদের দায়বদ্ধতা বজায় রাখতে হবে।
গত ৫ আগস্ট আর্টিলারি শেলিং এবং ড্রোন হামলায় নাফ নদীর তীরে জড়ো হওয়া উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী ও শিশুসহ প্রায় ১৮০ জন নিহত হয়। এটি দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশ এবং উত্তর-পশ্চিম মিয়ানমারের মধ্যে সীমান্ত এলাকা। হতাহত এসব মানুষ সংঘর্ষ থেকে বাঁচার চেষ্টা করেছিল। এছাড়া একইদিনে মংডু শহরের তিনটি ওয়ার্ড থেকে আনুমানিক ২০ হাজার লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে জানা গেছে।
এছাড়া গত ৬ এবং ১৯ আগস্ট পৃথক ঘটনায় নারী ও শিশুসহ বহু লোককে বহনকারী বেশ কয়েকটি নৌকা নাফ নদীতে ডুবে যায়। এতে হতাহতদের মধ্যে শিশুও ছিল। অন্যদিকে ২০২৩ সালের ১৩ নভেম্বর থেকে ক্রমবর্ধমান সংঘাতের ফলে রাখাইন প্রদেশ এবং চিন প্রদেশের পালেতওয়া শহরে আনুমানিক ৩ লাখ ২৭ হাজার লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
ইউনিসেফ বলছে, মিয়ানমারজুড়ে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া মানবিক সংকটের দ্রুত অবনতি ঘটছে। শিশুদের প্রতি গুরুতর অধিকার লঙ্ঘন, ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি এবং স্বাস্থ্য ও শিক্ষা পরিষেবা ব্যবস্থার প্রায় পতনসহ অবিরাম সহিংসতার সবচেয়ে ভারী বোঝা বহন করে চলেছে দেশটি। ক্রমবর্ধমান আক্রমণ এবং সংঘর্ষের ফলে আনুমানিক ৩৩ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, যাদের প্রায় ৪০ শতাংশই শিশু। বর্তমানে ৬০ লাখ শিশুসহ দেশটির রেকর্ড ১ কোটি ৮৬ লাখ লোকের মানবিক সহায়তার প্রয়োজন।
এছাড়া ২০১৭ সালে হামলা ও সহিংসতা থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে শরণার্থী হয়েছেন লাখ লাখ রোহিঙ্গা। আগে থেকেই বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের সঙ্গে একত্রে বাস্তুচ্যুত এসব মানুষের সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। এর সাত বছর পরে প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশু বিশ্বের বৃহত্তম এই শরণার্থী শিবিরে বেড়ে উঠছে, তাদের মধ্যে অনেকেরই শরণার্থী হিসাবে জন্ম হয়েছে। শরণার্থী সম্প্রদায় সম্পূর্ণরূপে মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভর করে এবং অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ ক্যাম্পে অস্থায়ী আশ্রয়ে তারা বাস করে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এবং অংশীদারদের সাথে কাজ করার মাধ্যমে ইউনিসেফ পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা প্রদান করার পাশাপাশি ডায়রিয়া নিরাময় কেন্দ্র স্থাপন করেছে, শিশু এবং গর্ভবতী নারীদের জন্য স্বাস্থ্য ও পুষ্টি পরিষেবা প্রদান করছে। সেইসাথে মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদান ও সুরক্ষা এবং সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের সহায়তায়ও কাজ করছে ইউনিসেফ।
ক্যাথরিন রাসেল বলেন, শরণার্থী জনসংখ্যা- বিশেষ করে শিশুদের জন্য বাংলাদেশের অব্যাহত সহায়তা প্রশংসনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ। গত ১২ মাস ধরে, আমরা শিবিরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং শিশু অধিকার লঙ্ঘনের রিপোর্ট নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমরা বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারকে সহায়তা করতে প্রস্তুত আছি, যাতে এই শিশুরা সুরক্ষিত থাকে এবং গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাগুলো পেতে পারে।
অন্যদিকে মিয়ানমারে সংঘাতে লিপ্ত সকল পক্ষকে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের অধীনে বেসামরিক নাগরিকদের, বিশেষ করে শিশুদের সুরক্ষা এবং তাদের নিরাপত্তা ও মঙ্গল নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ।

আন্তর্জাতিক
পুতুলকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া অফিসের ‘বিতর্কিত’ আঞ্চলিক পরিচালক ও ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠিয়েছে সংস্থাটি।
চার মাস আগে দুর্নীতি দমন সংস্থা দুদক তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং জালিয়াতির অভিযোগ এনে দুটি মামলা করে। এরপরই তাকে ছুটিতে পাঠাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। গতকাল শুক্রবার (১১ জুলাই) থেকে এটি কার্যকর হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিচালক ডাক্তার টেড্রোস আধানম ঘেব্রেয়েসাস স্টাফদের একটি ছোট ইমেইল বার্তায় জানিয়েছেন, সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে ১১ জুলাই থেকে ছুটিতে পাঠানো হবে। তার জায়গায় আঞ্চলিক অফিসের দায়িত্ব পালন করবেন সংস্থার সহকারী মহাপরিচালক ডাক্তার ক্যাথরিনা বোহমি। তিনি ১৫ জুলাই নয়াদিল্লিতে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক অফিসের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন পুতুল। তবে তার এ নিয়োগ নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক ছিল। অভিযোগ আছে, তার মা শেখ হাসিনা তাকে এই পদে নির্বাচিত করতে অবৈধ প্রভাব খাটিয়েছেন।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানায় হেলথ পলিসি ওয়াচ।
এদিকে দুদক পুতুলের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে মামলা দায়ের করে। সংস্থাটি অভিযোগ করে, আঞ্চলিক পরিচালক হওয়ার সময় পুতুল তার শিক্ষাগত রেকর্ড নিয়ে মিথ্যা তথ্য প্রদান করেন। এছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পদ বাগিয়ে নিতে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজে সম্মানসূচক পদ থাকার দাবি করেন।
এছাড়া ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের সূচনা ফাউন্ডেশনের নামে ২ দশমিক ৮ মিলিয়ন ডলার বিভিন্ন ব্যাংক থেকে হাতিয়ে নেন বলেও অভিযোগ করেছে দুদক।
বাংলাদেশে মামলা হওয়ার পর আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে তার কার্যক্রম চালানোর ক্ষমতা হ্রাস পায়।
আন্তর্জাতিক
ইউক্রেনকে অস্ত্র দেবে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া নিয়ে বড় ঘোষণা দেবেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করবে ন্যাটোর মাধ্যমে এবং তিনি সোমবার রাশিয়া নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দেবেন।
ট্রাম্প সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি হতাশা প্রকাশ করেছেন ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে অগ্রগতির ঘাটতির কারণে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের পর থেকেই এই যুদ্ধ চলছে।
এনবিসি নিউজকে ট্রাম্প বলেন, আমি সোমবার রাশিয়া নিয়ে একটি বড় ঘোষণা দিতে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা অস্ত্র ন্যাটোতে পাঠাচ্ছি এবং ন্যাটো সেই অস্ত্রের সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধ করবে। তারপর ন্যাটো সেগুলো ইউক্রেনকে দেবে। তিনি ব্যাখ্যা করেন, যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র সরবরাহ করবে, কিন্তু সেই খরচ ন্যাটো বহন করবে।
তিনি ইউক্রেনকে সরাসরি মার্কিন অস্ত্র পাঠাবেন প্রেসিডেনশিয়াল ড্রডাউন অথরিটি ব্যবহার করে। এর মাধ্যমে প্রেসিডেন্টদের নিজস্ব অস্ত্র মজুত থেকে জরুরি ভিত্তিতে মিত্র দেশকে সহায়তা দেওয়ার সুযোগ দেয়।
দুই সূত্র জানায়, এই প্যাকেজের মূল্য হতে পারে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার এবং এতে থাকতে পারে প্রতিরক্ষামূলক প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ও আক্রমণাত্মক মাঝারি পাল্লার রকেট।
এই পদক্ষেপের আগে ট্রাম্প প্রশাসন শুধু সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অনুমোদিত অস্ত্রই পাঠিয়েছে ইউক্রেনে। তবে এখন নিজ ক্ষমতা অনুযায়ী সরাসরি অস্ত্র সহায়তা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প এর আগে ইউক্রেনে অর্থ ও অস্ত্র সহায়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, কিন্তু সাম্প্রতিক বক্তব্যে তিনি কিয়েভের প্রতি সমর্থনও জানিয়েছেন এবং রাশিয়ার নেতৃত্বের ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
আন্তর্জাতিক
দুই মাসে ৬৩শ প্রবাসীকে ফেরত পাঠালো কুয়েত

কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৫ সালের মে ও জুন মাসে প্রায় ৬ হাজার ৩০০ প্রবাসীকে আবাসিক ও শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দেশ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বলা হয়েছে, আবাসিক এবং শ্রম আইনের কঠোর বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে এই বহিষ্কারের প্রক্রিয়া পরিচালিত হচ্ছে। অভিযুক্তদের অনেকে বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগের মাধ্যমে এবং কিছু ক্ষেত্রে আদালতের রায় অনুযায়ী বহিষ্কৃত হয়েছেন।
দেশটির বহিষ্কার ও আটক বিভাগ জানায়, মানবিক সেবা ও প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান নিশ্চিত করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বহিষ্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, কুয়েতের বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে বসবাসকারী বা কর্মরত প্রবাসীদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অভিযানে আটক ব্যক্তিদের নিয়ম অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে এই অভিযান জোরদার করা হয়েছে, যা দেশটির শ্রমবাজার নিয়ন্ত্রণ এবং অভিবাসন আইন বাস্তবায়নের বৃহৎ পরিকল্পনার অংশ।
আন্তর্জাতিক
আরও ৭ দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প

বিশ্বের আরও ৭টি দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একথা জানিয়েছেন। শ্রীলঙ্কা ও ফিলিপাইনসহ এই ৭টি দেশের ওপর মার্কিন শুল্ক কার্যকর হবে আগামী ১ আগস্ট থেকে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, আগামী ১ আগস্ট থেকে ৭টি দেশের পণ্যের ওপর ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র আমদানি শুল্ক আরোপ করবে বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার ঘোষণা করেছেন।
এর মধ্যে ফিলিপাইনের ওপর ২০ শতাংশ, ব্রুনেই ও মলদোভার ওপর ২৫ শতাংশ এবং শ্রীলঙ্কা, ইরাক, আলজেরিয়া ও লিবিয়ার ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
এই তথ্যগুলো ট্রাম্প তার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যাল–এ প্রকাশিত চিঠির মাধ্যমে জানিয়েছেন। সেসব চিঠি মূলত তিনি সংশ্লিষ্ট দেশের নেতাদের উদ্দেশে পাঠিয়েছেন। তিনি লেখেন, আমরা আপনাদের সঙ্গে অগ্রসর হতে চাই, তবে সেটা হবে কেবল আরও ভারসাম্যপূর্ণ ও ন্যায্য বাণিজ্যের ভিত্তিতে।
ট্রাম্প আরও বলেন, এসব শুল্ক হার এখনো যথেষ্ট নয় যাতে ওই দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি পুরোপুরি দূর করা যায়।
তিনি সতর্ক করে বলেন, যেসব পণ্য অন্য দেশের হয়ে অন্য মাধ্যমে পাঠিয়ে শুল্ক এড়ানোর চেষ্টা করা হবে, সেগুলোর ওপরও উচ্চ শুল্ক বসানো হবে। পাশাপাশি যদি কোনো দেশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করে, তবে যুক্তরাষ্ট্র তার জবাবে ওই দেশের পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করবে।
ট্রাম্পের ভাষায়, দীর্ঘদিন ধরে শুল্ক ও অশুল্ক নীতির মাধ্যমে এবং নানা বাণিজ্যিক বাধার কারণে আমাদের বিপক্ষে যে অস্থিতিশীল বাণিজ্য ঘাটতি তৈরি হয়েছে, তা শুধরাতেই এই পদক্ষেপ প্রয়োজন।
এর আগে ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন, তিনি সপ্তাহের শুরু থেকে বিভিন্ন দেশের প্রতি নতুন শুল্ক হার সংক্রান্ত চিঠি পাঠাবেন। আগেই জানানো হয়েছিল, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক বসানো হবে ১ আগস্ট থেকে।
পরে আরও ১২টি দেশের ওপর শুল্ক ঘোষণা করেন তিনি। সোমবার ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন, যাতে এই নতুন শুল্ক নীতিগুলো ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করা হয়।
আন্তর্জাতিক
সৌদিতে বাড়ি কেনার সুযোগ পাচ্ছেন প্রবাসীরা

সৌদি আরবে বসবাসরত প্রবাসীরা ২০২৬ সাল থেকে দেশটির নির্দিষ্ট অঞ্চলে সম্পত্তি কিনতে পারবেন। সৌদি সরকার সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি নতুন আইন পাস করেছে। এর আওতায় বিদেশি ব্যক্তি ও কোম্পানিগুলোকে সৌদির নির্দিষ্ট এলাকায় সম্পত্তি কেনার অনুমতি দেওয়া হবে।
কোথায় বাড়ি কেনা যাবে?
প্রথম ধাপে যেসব এলাকায় বিদেশিদের সম্পত্তি কেনা অনুমোদিত হবে, তার মধ্যে রয়েছে:
> রিয়াদ
> জেদ্দা
>আরও কিছু নির্ধারিত অঞ্চল, যেগুলোর নাম পরে ঘোষণা করা হবে।
তবে মক্কা ও মদিনায় সম্পত্তি কেনার ক্ষেত্রে বিশেষ বিধিনিষেধ থাকবে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক গুরুত্বের কারণে। এসব অঞ্চলে বাড়ি কিনতে হলে বিশেষ অনুমোদন লাগবে।
আইন কবে কার্যকর হবে?
এই নতুন আইন ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। এর আগে সৌদি সরকার ‘ইস্তিতা’ নামে একটি পরামর্শমূলক ওয়েবসাইটে ১৮০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ নিয়মকানুন ও অনুমোদিত এলাকার তালিকা প্রকাশ করবে, যেখানে জনমত গ্রহণ করা হবে।
কারা কিনতে পারবে?
> বিদেশি ব্যক্তি ও কোম্পানিগুলো এই আইনের আওতায় সম্পত্তি কিনতে পারবে।
> বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য এই উদ্যোগকে দেশের অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যকরণের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
কেন এমন সিদ্ধান্ত?
সৌদি আরবের ভিশন ২০৩০–এর অংশ এই পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে দেশটি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ; আবাসন ও বাণিজ্যিক ভবনের জোগান বাড়ানো; রিয়াদ, জেদ্দা ও নিওম-এর মতো প্রকল্পগুলোকে সহায়তা দেওয়া এবং সৌদি নাগরিকদের স্বার্থ সংরক্ষণের পাশাপাশি বিদেশিদের জন্য বিনিয়োগ সহজ করা লক্ষ্য পূরণ করতে চায়।
এখন কী করবেন প্রবাসীরা?
> সরকারি নিয়ম ও অনুমোদিত এলাকা সম্পর্কে তথ্য জানার জন্য ‘ইস্তিতা’ প্ল্যাটফর্মে নজর রাখুন।
> ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ বিস্তারিত নিয়ম প্রকাশিত হবে।
> যেসব ডেভেলপার নতুন এলাকায় প্রকল্প শুরু করবে, তাদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করুন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দুবাই, আবু ধাবি, দোহার মতো শহরগুলো আগে থেকেই বিদেশিদের জন্য নির্দিষ্ট এলাকায় সম্পত্তি কেনার সুযোগ দিয়েছে এবং এতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক বিনিয়োগ এসেছে। সৌদি আরবও যদি একই পথ অনুসরণ করে, তাহলে রিয়াদ ও জেদ্দা হয়ে উঠতে পারে মধ্যপ্রাচ্যের নতুন বিনিয়োগ হটস্পট।