জাতীয়
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১০ দিনে ৪৪ মামলা

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তাঁর দলের একাধিক মন্ত্রী, নেতা ও রাজনৈতিক মিত্রদের বিরুদ্ধে সারাদেশে হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা অব্যাহত আছে। বুধবার রাতে ও গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও পাঁচটি মামলার আবেদন করা হয়েছে। আসামির তালিকায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরেরও নাম রয়েছে। এ নিয়ে গত ১০ দিনে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ৪৪টি মামলা হলো।
এদিন ঢাকায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আশুলিয়া ও রমনা থানায় একটি হত্যা ও অন্যটি হত্যাচেষ্টার মামলা হয়েছে। বাদীপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত মামলা দুটির অভিযোগ এজাহার হিসেবে রেকর্ড করতে সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
সাভারের আশুলিয়ায় ৪ আগস্ট শাহাবুল ইসলাম শাওন নামে পোশাক ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে গতকাল শেখ হাসিনাসহ ৪৭ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে। ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আরিফা চৌধুরী হিমেলের আদালতে মামলার আবেদন করেন আইনজীবী হান্নান ভূঁইয়া। এ ছাড়া গত ২০ জুলাই যুবদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়নকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়। গতকাল ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে আহত রবিউলের স্ত্রী সুমি বেগম এ মামলা করেন।
ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য বলছে, ছাত্র আন্দোলনে গত ২১ জুলাই নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে কিশোর হুসাইনকে গুলি করে হত্যায় শেখ হাসিনাসহ ৩৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় বুধবার রাতে মামলাটি করেন হুসাইনের বাবা মানিক মিয়া। আড়াইহাজারে ৫ আগস্ট শফিকুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার মামলায় শেখ হাসিনাসহ ৪৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। বুধবার রাতে নিহতের স্ত্রী তাছলিমা আক্তার আড়াইহাজার থানায় এ মামলা করেন।
গত ১৯ জুলাই নরসিংদী সদর উপজেলার ভেলানগরে গুলিবিদ্ধ হন ব্যবসায়ী আজিজুল মিয়া। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২২ জুলাই তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা আলমাছ মিয়া বাদী হয়ে শেখ হাসিনাসহ ৮১ জনের নামে মামলা করেছেন। গতকাল নরসিংদীর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা-বিস্ফোরণসহ কয়েকটি অভিযোগে মামলাটি করেন তিনি।
সিলেটে ৪ আগস্ট হামলা-গুলিবর্ষণের ঘটনায় গতকাল হওয়া মামলায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনসহ ৬৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। খুলনায় ৫ আগস্ট হামলা ও মারধরের অভিযোগে সাবেক এমপি রশীদুজ্জামান মোড়লসহ ৯১ জনের বিরুদ্ধে বুধবার রাতে পাইকগাছা থানায় মামলা করেন এক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। ফরিদপুরে ৫ আগস্ট বাসচালক শামসু মোল্লা হত্যার ঘটনায় অন্তত ৪০০ জনকে আসামি করে বুধবার রাতে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন নিহতের স্ত্রী। টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ৪ আগস্ট কলেজছাত্র মো. ইমন নিহতের ঘটনায় সাবেক দুই মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, আহসানুল ইসলাম টিটুসহ ১৫৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গতকাল নিহত ইমনের ভাই মির্জাপুর থানায় এ মামলা করেন।
ঢাকার ধামরাইয়ে ৫ আগস্ট কলেজছাত্র আফিকুল ইসলাম সাদকে গুলি করে হত্যার মামলায় সাবেক এমপি ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বেনজীর আহমদসহ ৮২ জনকে আসামি করা হয়েছে। বুধবার রাতে ধামরাই থানায় মামলাটি করেন নিহতের নানা। মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকসহ ৫৫ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১-এ গতকাল মামলা করেন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আবদুর রহমান। এ ছাড়া ৪ আগস্ট সিরাজগঞ্জে তিন যুবদল নেতাকর্মী হত্যার অভিযোগে সাবেক দুই এমপিসহ ৯১৩ জনের বিরুদ্ধে তিনটি পৃথক মামলা হয়েছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয়
অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করছি, করে যাব: সেনাপ্রধান

সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করছি। সহযোগিতা করে যাব। তবে তিনি কিছুটা হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, কী সংস্কার হচ্ছে, কিভাবে হচ্ছে, এ বিষয়ে তার কিছু জানা নেই। এমনকি এ বিষয়ে তার সঙ্গে কোনো পরামর্শ বা আলোচনা করা হয়নি।
বুধবার (২১ মে) ঢাকা সেনানিবাসের সেনা প্রাঙ্গণে অফিসার্স অ্যাড্রেসে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান তার বাহিনীর সদস্যদের কাছে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, সার্বভৌমত্বের জন্য ক্ষতিকর এমন কোনো কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কখনো যুক্ত হবে না। কাউকে তা করতেও দেওয়া হবে না। তিনি সব পর্যায়ের সেনাসদস্যকে নিরপেক্ষ থাকার এবং ভবিষ্যতে নির্বাচনী দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালনের নির্দেশ দেন।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে ওই অনুষ্ঠানে নির্বাচন ছাড়াও মানবিক করিডর, বন্দর, সংস্কারসহ সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে। সেনাপ্রধান জাতীয় নির্বাচন আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই হওয়া উচিত বলে জানান।
সেনাপ্রধান বলেন, সার্বিকভাবে দেশে একটি অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং এই পরিস্থিতির আরও অবনতি হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী, বেসামরিক প্রশাসনসহ সব সংস্থা প্রত্যাশা অনুসারে পুনর্গঠিত হতে পারছে না। মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডরসংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান বলেন, এটি ক্রিস্টাল ক্লিয়ার না। বিষয়টি স্পর্শকাতর, ঝুঁকিপূর্ণ ও অসম্ভব।
তিনি বলেন, মানবিক করিডর বিষয়ে সিদ্ধান্ত একটি নির্বাচিত সরকার থেকেই আসতে হবে এবং তা বৈধ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই হতে হবে। এখানে জাতীয় স্বার্থ দেখতে হবে, যা করার জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করেই করতে হবে। যা-ই করা হোক না কেন, পলিটিক্যাল কনসেনসাসের (রাজনৈতিক ঐকমত্য) মাধ্যমে সেটা হতে হবে।
সেনাপ্রধান বলেন, আগস্ট থেকে সেনাবাহিনীর ধারাবাহিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও কিছু মহল তাকে ও সেনাবাহিনীকে অন্যায্যভাবে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে।
‘মব ভায়োলেন্স’ বা উচ্ছৃঙ্খল জনতার সংঘবদ্ধ বিশৃঙ্খলা বা আক্রমণের বিরুদ্ধেও কঠোর বার্তা দেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
বুধবারের অফিসার্স অ্যড্রেসে সেনাপ্রধানের বক্তব্য সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়ায় বেশি। বিশিষ্টজনদের অনেকেরই ধারণা, সেনাপ্রধান সঠিক কথাই বলেছেন।
সামিরক বিশেষজ্ঞ মে. জে. (অব.) ড. মো. নাঈম আশফাক চৌধুরী সংস্কার এবং রাষ্ট্রের নিরাপত্তাগত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সশস্ত্র বাহিনীকে অন্ধকারে রাখা সম্পর্কে বলেন, সবাইকে একটি লক্ষ্যে কাজ করা দরকার। তা হচ্ছে জাতীয় স্বার্থ রক্ষা। নিজ নিজ অবস্থানে থেকে যার যে দায়িত্ব সে দায়িত্ব পালন করতে হবে। যার যে দায়িত্ব তাকে সেই দায়িত্ব পালন করতে দিতে হবে। কাউকে অবজ্ঞা করা উচিত না। দেশের অগ্রগতি চাইলে সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে সবাইকে নিয়েই কাজ করা উচিত।
তিনি আরও বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশি ও বিদেশি অনেকে চায় সার্বিক সংকট থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ যেন না হয়। এ ধরনের একটি অপচেষ্টা চলছে। সেই অপচেষ্টা যেন কোনোভাবেই সফল হতে না পারে সেভাবেই সবার কাজ করা দরকার।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বীর আহমেদ বলেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সময় সেনাপ্রধানের দূরদর্শী ইতিবাচক ভূমিকা অবিস্মরণীয়। সার্বিক বিষয় চিন্তা করে তার নেতৃত্বে সেনাবাহিনী জনগণের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল। এখনও দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ নানা বিপর্যয় মোকাবেলায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। একইসঙ্গে নৌ ও বিমান বাহিনীও প্রশংসা পাচ্ছে। কিন্তু এই সশস্ত্র বাহিনীকে অন্ধকারে রেখে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের ক্ষেত্রে স্পর্শকাতর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার উদ্যোগ অবিবেচনাপ্রসূত। এ ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার বিচক্ষণতার পরিচয় দেয়নি। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার দায়িত্ব যাদের ওপর ন্যস্ত, তাদের মতামত না নিয়ে মানবিক করিডর বা ত্রাণ সহায়তা দিতে যাওয়ার উদ্যোগ যুক্তিযুক্ত না। এ ক্ষেত্রে সেনাপ্রধান যে কনসার্ন ব্যক্ত করেছেন, তা যথার্থ। রাষ্ট্রের সংস্কারে সশস্ত্র বাহিনীকে যুক্ত করা যেত। কারণ সশস্ত্র বাহিনীরও সংস্কার প্রয়োজন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
নির্বাচন নয়, সংস্কার ও বিচারেও আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ”—রিজওয়ানা হাসান

পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। এই সময়সীমার বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
শুক্রবার (২৩ মে) রাজধানীর একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা এরইমধ্যে পরিষ্কারভাবে বলেছেন, নির্বাচন হবে ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে। আমাদের পক্ষ থেকে এই সময়সীমার একদিন এদিক-সেদিক হওয়ার সুযোগ নেই। কাজেই এ নিয়ে কোনো বিভ্রান্তি ছড়ানোর অবকাশ নেই।”
ড. ইউনূসের পদত্যাগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “কিছু দায়িত্বের সঙ্গে সময়গত সম্পর্ক থাকতে পারে। যদি এ বিষয়ে কিছু বলার থাকে, সেটা আপনারা প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকেই শুনবেন। আমি নির্বাচন কিংবা দায়িত্ব পালনের প্রসঙ্গেও আগেই বলেছি—উনি যা বলছেন, সেটাই আমাদের অবস্থান।”
চাপের প্রসঙ্গে রিজওয়ানা হাসান বলেন, “সবচেয়ে বড় চাপ হলো পারফর্ম করতে পারছি কি না—এই প্রত্যাশা। এর বাইরের কোনো চাপ আমাদের নেই।”
তিনি আরও বলেন, “ঢাকায় এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়া যাচ্ছে না, রাস্তাঘাট বন্ধ থাকে। কেন এমন হচ্ছে? এসব সমস্যার সমাধান হতে পারে আলোচনার মাধ্যমে। আমাদের মূল চাপ হচ্ছে নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণ করা।”
তিনি স্পষ্ট করেন, “আমরা যদি দায়িত্ব পালন করতে পারি, তাহলে আমাদের দায়িত্বে থাকা যৌক্তিক। যদি না পারি, তবে আমাদের যার যার জায়গায় ফিরে যাওয়া উচিত। দায়িত্বে থাকা তখন আর প্রাসঙ্গিক থাকবে না।”
‘আপনারা দায়িত্ব পালন করতে পারছেন কি?’— এমন প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, “বহু প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে অনেকদূর এগিয়েছি। সংস্কার কমিশনগুলোর প্রতিবেদন এসেছে, রাজনৈতিক ঐক্য গড়ার উদ্যোগ শুরু হয়েছে, সব রাজনৈতিক দল তাতে অংশ নিচ্ছে। এটাও আমাদের সফলতা। নির্বাচন সময়সীমার মধ্যে হবে—এটাও একটা অগ্রগতি।”
তিনি আরও জানান, “বিচার ট্রাইব্যুনাল আগে একটি ছিল, এখন দুটি হয়েছে। আগামীকাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার কার্যক্রম শুরু হবে। এসব কাজ যেন সুষ্ঠুভাবে এগোয়, তা নিশ্চিত করতে চাই। প্রতিবন্ধকতা ছাড়া এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান বরাবরই ছিল।”
তিনি বলেন, “গতকালের বৈঠকে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। আমাদের মূল দায়িত্ব তিনটি—সংস্কার, বিচার, এবং নির্বাচন। শুধু নির্বাচন নয়, আমরা এই তিনটি গুরুতর দায়িত্ব পালনের জন্যই এসেছি।”
রাস্তায় আন্দোলন ও দাবিদাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই নানা দাবি নিয়ে মানুষ রাস্তায় বসছে, ঢাকা শহর অচল হয়ে পড়ছে। এ অবস্থার সমাধান আমরা করতে পারছি কি না—সেটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা বলেছি, ক্ষমতায় নয়, দায়িত্বে আছি। এই দায়িত্ব তখনই যথাযথভাবে পালন সম্ভব, যদি আমরা সবার সহযোগিতা পাই। প্রত্যাশা আর বাস্তব দায়িত্ব পালনের মধ্যে ফারাক আছে।”
এমএস
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন না: বিশেষ সহকারী

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করবেন না বলে জানিয়েছেন তার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
ড. ইউনূসের ‘ক্ষমতা প্রয়োজন নেই’ উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘কিন্তু বাংলাদেশের জন্য, বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ ডেমোক্রেটিক ট্রাঞ্জিশনের জন্য ড. ইউনূস স্যারের দরকার আছে।’
শুক্রবার (২৩ মে) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ কথা জানান।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করতে পারেন- এমন খবরে বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যায় তার সঙ্গে দেখা করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এর একদিন পরই প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন না বলে জানালেন বিশেষ সহকারী।
স্ট্যাটাসে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, ক্যাবিনেটকে আরও গতিশীল হতে হবে। সরকারকে আরও বেশি ফাংশনাল হতে হবে। উপদেষ্টাদের আরও বেশি কাজ করতে হবে। দৃশ্যমান অগ্রগতি জনতার সামনে উপস্থাপন করতে হবে। এ ব্যাপারে কোনো দ্বিমত থাকতে পারে না। আমাদের দেখাতে হবে যে, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তীতে জনতার সম্মতিতে ক্ষমতায় এসে প্রফেসর (ড. ইউনূস) সাফল্য দেখিয়েছেন। বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সম্মান আছে, এটি রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।
তিনি বলেন, আমি মনে করি, সরকারকে এখন থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আরও নিবিড়ভাবে আলোচনায় বসতে হবে, নিয়মিত বসে এবং বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মতামত চাইতে হবে। কোনো ধরনের বিচ্ছিন্নতা কাম্য নয়।
সেনাপ্রধানের সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, পাশাপাশি সেনাবাহিনীও রাজনীতিতে নাক গলাতে পারবে না। আজকের দুনিয়ায় কোনো সভ্য দেশের সেনাবাহিনী রাজনীতি করে না। তাই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের বক্তব্যে সেনাপ্রধান জুরিশডিকশনাল কারেক্টনেস রক্ষা করতে পারেননি। তবে সেনাবাহিনীকে প্রাপ্য সম্মান দেখাতে হবে, আস্থায় রাখতে হবে। সেনাবাহিনী প্রশ্নে হুট করে কিছু করা যাবে না, হঠকারী কিছু করা যাবে না। তেমনই, ইনক্লুসিভনেসের নাম করে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনও চাওয়া যাবে না। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আমাদের গর্ব এবং আস্থার জায়গা- সেটা কেউ ভঙ্গ করবে না।
তিনি বলেন, দরকারি প্রস্তুতি শেষ করে নির্বাচন এপ্রিল-মে’র কোনো সময়ে অনুষ্ঠিত হবে বলেই আশা করি। তবে এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত। এসময়ে সব যৌক্তিক সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে, করতে হবে জুলাই সনদ। তবে ডিসেম্বর থেকে জুনে দেওয়া রোডম্যাপ মতে নির্বাচনের এক্সাক্ট ডেট ঘোষণার এখতিয়ার শুধুমাত্র স্যারের (ড. ইউনূসের)। স্যারের এখতিয়ার অন্য কেউ হাইজ্যাক করতে পারবে না। স্যারকে যখন আনা হয়েছে, তখন বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে স্যার বলেছেন, আমার কথা শুনতে হবে।
বিশেষ সহকারী আরও বলেন, জুলাই-আগস্ট’২৫ এ আমরা জাতীয়ভাবে দুই মাস জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তির উদযাপন করবো, ইনশাল্লাহ্। এবং আগস্টের মধ্যেই স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার বিচারের প্রথম রায়টি আলোর মুখ দেখতে পাবে বলেও আশা প্রকাশ করি। ইনশাআল্লাহ্ আমরা হারবো না, আমাদের হারানো যাবে না। ইনকিলাব জিন্দাবাদ। প্রফেসর ইউনূস জিন্দাবাদ। বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
গুজবে কান দেবেন না, বিভ্রান্ত হবেন না: সেনাবাহিনী

জনগণকে গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
শুক্রবার (২৩ মে) দুপুরে ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সচেতনতামূলক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে লেখা এক পোস্টে এ আহ্বান জানায় বাহিনী।
সেনাবাহিনী বলছে, সম্প্রতি একটি স্বার্থান্বেষী মহল বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর লোগো ব্যবহার করে একটি ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, যার মাধ্যমে সাধারণ জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনী ও জনগণের মধ্যে বিভেদ তৈরীর অপচেষ্টা চলছে।
গুজবে কান দেবেন না, বিভ্রান্ত হবেন না। সত্যতা যাচাই করুন, সচেতন থাকুন।
এ পোস্টের সঙ্গে ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিটির ছবিও জুড়ে দেওয়া হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
সৌদি পৌঁছেছেন ৫৪ হাজার ৪৯৭ হজযাত্রী

বাংলাদেশ থেকে শুক্রবার দিবাগত রাত ২টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত ৫৪ হাজার ৪৯৭ হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। এখন পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি মোট ১৪১টি ফ্লাইটে তারা সৌদিতে পৌঁছান। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার ৫৮৩ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪৯ হাজার ৯১৪ হজযাত্রী রয়েছেন। এখন পর্যন্ত ৮৬ হাজার ৮৭০টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৩ মে) হজ সম্পর্কিত সবশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এয়ারলাইন্স, সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ হজ অফিস ঢাকা এবং সৌদি আরব সূত্রে এ তথ্য জানিয়েছে হেল্প ডেস্ক।
হেল্প ডেস্কের তথ্য মতে, ১৪১টি ফ্লাইটের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ৭৩টি, সৌদি এয়ারলাইন্সের ৪৭টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স ২১টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে।
চলতি বছর হজ করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৮ পুরুষ ও একজন নারী। এরা হলেন— জামালপুর বকশীগঞ্জের হাফেজ উদ্দিন (৭৩), রাজবাড়ীর খলিলুর রহমান, কিশোরগঞ্জের মো. ফরিদুজ্জামান, পঞ্চগড়ের আল হামিদা বানু, ঢাকার মোহাম্মদপুরের মো. শাহজাহান কবীর, নীলফামারির ফয়েজ উদ্দীন (৭২), চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার অহিদুর রহমান (৭২), গাজীপুর সদরের জয়নাল হোসেন (৬০) ও চাঁদপুর মতলবের আব্দুল হান্নান মোল্লা (৬৩)।
এখন সৌদি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৭৪ জন। এছাড়া বর্তমানে সৌদি সরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ভর্তি আছেন ২৬ হজযাত্রী।
গত ২৯ এপ্রিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রথম ডেডিকেটেড ফ্লাইট ৩৯৮ জন হজযাত্রী নিয়ে সৌদির উদ্দেশে যাত্রা করে। এর মধ্য দিয়েই চলতি বছরের হজের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। শেষ হবে ৩১ মে।
চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনা হজ করতে যাবেন ৫ হাজার ২০০ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৮১ হাজার ৯০০ জন।
সৌদি আরবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৫ জুন হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী হজ এজেন্সির সংখ্যা ৭০টি। হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে ২৯ এপ্রিল। শেষ হজ ফ্লাইট ৩১ মে। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট ১০ জুন, আর শেষ ফিরতি ফ্লাইট ১০ জুলাই।