জাতীয়
সালমান এফ রহমানের দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু

ব্যাংকিং খাতে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি আর লুটপাটের অভিযোগে বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দু-একদিনের মধ্যে অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ করে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কমিশন বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংস্থাটির একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন সালমান এফ রহমান। ‘দরবেশখ্যাত’ এই ব্যক্তির নামে গত ১৫ বছরে আর্থিক খাতে নজিরবিহীন দুর্নীতি, লুটপাট, জালিয়াতি ও টাকা পাচারের অভিযোগ রয়েছে। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ফেরত না দেওয়ার পাশাপাশি পণ্য রপ্তানি করে দেশে টাকা না আনার অভিযোগও রয়েছে তার মালিকানাধীন বেক্সিমকো গ্রুপের বিরুদ্ধে।
এভাবে নানা অনিয়ম করে হাজার হাজার কোটি টাকা আয় করেছেন সালমান এফ রহমান। তিনি কত টাকার মালিক তার প্রকৃত হিসাব কারো কাছে নেই।
২০০৬-২০০৭ সালে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ঋণখেলাপিসহ নানা অভিযোগে জেলে গিয়েছিলেন সালমান এফ রহমান। এরপর জেল থেকে বের হয়ে নাম জড়ান ২০১০-১১ সালের শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারিতে। এতকিছুর পরও তাকে স্পর্শ করার সাহস হয়নি কারও।
গত ১৫ বছরে আর্থিক খাতে নজিরবিহীন দুর্নীতি, লুটপাট, জালিয়াতি ও টাকা পাচারের অভিযোগ রয়েছে সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে। ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে তার প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে একটি ব্যাংক থেকেই নেওয়া হয়েছে ২২ হাজার কোটি টাকা। পণ্য রপ্তানি করে সেই অর্থ দেশে না আনার অভিযোগও রয়েছে তার প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে। বিশ্বস্ত সূত্র আর নির্ভরযোগ্য প্রমাণের ভিত্তিতে জানা গেছে- গেল ৩১ বছরে শেয়ারবাজারের প্রত্যেকটি বড় কেলেঙ্কারিতে সালমান এফ রহমান জড়িত। গেল ৩ বছরে তিনি দৃশ্যমানভাবেই বাজার থেকে নিয়েছেন ৬৬০০ কোটি টাকা। আর অদৃশ্যভাবে হাতিয়ে নিয়েছেন ২০ হাজার কোটি টাকা।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বেপরোয়া হয়ে ওঠেন সালমান এফ রহমান। শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক, ব্যবসায়ী নেতার পর ২০১৮ সালে এমপি ও টানা দুইবার প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হন তিনি। হাজারো ব্যবসায়ীকে পথে বসানো শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির এক অবিচ্ছেদ্য নাম সালমান এফ রহমান।
২০১০-১১ সালে শেয়ার বাজার ধসের পর এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল। কমিটির প্রধান ছিলেন খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। সেই রিপোর্টে পুঁজিবাজারে ফিক্সড প্রাইস, বুক-বিল্ডিং, রাইট শেয়ার, ডিরেক্ট লিস্টিং, সম্পদ পুনর্মূল্যায়ন, প্রেফারেন্স শেয়ারসহ সব ক্ষেত্রেই অনিয়ম হওয়ার এবং এর সঙ্গে সালমান এফ রহমানের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। তাই খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ সেই রিপোর্টে সালমান এফ রহমান থেকে পুজিবাজারকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।
এছাড়া সালমান এফ রহমান বিভিন্ন কোম্পানির প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন বলেও প্রমাণ পায় সেই কমিটি। অথচ এসব অনিয়মের সঙ্গে সালমান এফ রহমানসহ আরও কয়েকজনের নাম জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
২০০৬-০৭ সালের দিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুর্নীতিবিরোধী একটি টাস্কফোর্স করা হয়েছিল। টাস্কফোর্স বিভিন্ন দেশে অনুসন্ধান চালিয়ে তথ্য বের করেন যে, ১২২ জন রাজনৈতিক নেতা ও আমলা দুর্নীতির মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে ৪৫ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। মালয়েশিয়া, কানাডা, সুইজারল্যান্ড, ভারত, চীন, থাইল্যান্ড, দুবাই, অস্ট্রেলিয়া ও সিঙ্গাপুরসহ মোট ১৭টি দেশে এসব অর্থ পাচার করা হয়েছে। পাচার হওয়া ৪৫ হাজার কোটি টাকার মধ্যে এক হাজার কোটি টাকা সালমান এফ রহমানের। আমেরিকায় রিয়েল এস্টেট ব্যবসার নামে এসব টাকা পাচার করা হয়েছিল।

জাতীয়
শাহ সিমেন্টকে কালো তালিকাভুক্ত করার দাবি টিআইবির

ধলেশ্বরী ও শীতলক্ষ্যা নদীর মোহনায় পরিবেশ সংরক্ষণ ও নদী রক্ষা সংক্রান্ত আইন লঙ্ঘন করে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ এবং নির্বিকারে নদী দখলের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
আজ রবিবার (১ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগ জানায় সংস্থাটি। এ ঘটনায় অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানকে দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহির প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে কালো তালিকাভুক্ত করে নদী দুটি দখলমুক্ত করার দাবি জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি জানায়, মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার মীরেরশরাই মৌজায় শাহ সিমেন্ট কোম্পানি প্রায় ২৪ একর নদীর জমি বালু ও মাটি ফেলে ভরাট করেছে। এতে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়েছে এবং নদীর শ্রেণি পরিবর্তন হয়েছে। দখল করা জমিতে গড়ে ওঠা স্থাপনা ধলেশ্বরী ও শীতলক্ষ্যার পানিপ্রবাহে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে।
এছাড়া কারখানার তরল ও কঠিন বর্জ্য নদীতে ফেলার ফলে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ক্লিংকার ধুলো বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে নদীতে গিয়ে মিশে পরিবেশ দূষণ করছে। মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসন এবং জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন (এনআরসিসি) ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠানটি ‘দখলদার’ হিসেবে চিহ্নিত করলেও এখন পর্যন্ত নদী রক্ষায় সরকার কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।
টিআইবি জানায়, শাহ সিমেন্ট শুধু জবাবদিহিহীনভাবে নদীখেকো ব্যবসায় লিপ্ত রয়েছে তাই নয়, জনগণের অর্থে পরিচালিত বিভিন্ন প্রকল্পে নির্বিকারভাবে ঠিকাদার হিসেবে মুনাফা করে যাচ্ছে।
বিষয়টির কঠোর সমালোচনা করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নদী দখল করে দুটি নদী ধ্বংসের এই কার্যক্রম কোনো যুক্তিতেই মেনে নেওয়ার সুযোগ নেই। এ ধরনের কার্যক্রম কেবল নদীর নাব্য ধ্বংস করছে না, বরং দেশের পরিবেশগত ভারসাম্য ও নদীনির্ভর জনজীবনকেও চরম ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। নদীর স্বাভাবিক গঠন নষ্ট করে বন্যা, নদীভাঙন, পানিসংকট ও জলপ্রবাহজনিত সমস্যা বহুগুণে বাড়াচ্ছে। যার প্রভাব দেশের অর্থনীতি ও মানুষের জীবনমানের ওপর পড়ছে।
তিনি বলেন, ২০১৯ সালে হাইকোর্টের যুগান্তকারী রায়ে বাংলাদেশের মধ্যে এবং বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত সব নদ-নদীকে আইনি সত্তা (জুরিসটিক পারসন/লিগ্যাল পারসন) বা জীবন্ত সত্তা (লিভিং এনটিটি) হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এর অর্থ হলো, নদী হত্যা যে কোনো ব্যক্তি হত্যার শামিল। এমন বাস্তবতায়ও এই নদীখেকো প্রতিষ্ঠানটি বালু ও মাটি ফেলে মোহনায় জমি ভরাট করছে, যা স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত করে নদীকেই মেরে ফেলছে। আমরা মনে করি, নদীখেকো এই প্রতিষ্ঠান কোনোভাবেই রাষ্ট্র তথা সরকারের সঙ্গে কোনো ব্যবসায়িক সম্পর্ক করার অধিকার রাখে না। শাহ সিমেন্টকে দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহির আওতায় আনার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে সব ধরনের সরকারি কার্যাদেশ, লাইসেন্স ও আর্থিক প্রণোদনা থেকে বঞ্চিত রাখতে অবিলম্বে কালো তালিকাভুক্তির আহ্বান জানাই আমরা।
অন্য সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, শাহ সিমেন্টের সঙ্গে সব ব্যবসায়িক সম্পর্ক বাতিল করে এ প্রতিষ্ঠানকে ব্যবসায়িক বয়কটের দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন সৃষ্টি হয়েছে, সেখানে এই দখলদারত্বের কোনো স্থান নেই।
তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠানটি যেভাবে বালু ও মাটি ফেলে মোহনা ভরাট করে জমি দখল করেছে তা পোর্ট অ্যাক্ট ১৯০৮, পোর্ট রুলস ১৯৬৬ এবং উচ্চ আদালতের আদেশের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর, বিআইডব্লিউটিএ এবং জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের প্রতি শাহ সিমেন্টসহ অন্য দখলদারদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাই। একই সঙ্গে, বারবার নদী ‘দখলদার’ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পরও প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার পেছনে কারা দায়ী, তাদের চিহ্নিত করে জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
কাফি
জাতীয়
সেন্টমার্টিনে প্রচুর নেতিবাচক পরিবর্তন দেখছি

সেন্টমার্টিনে প্রচুর নেতিবাচক পরিবর্তন দেখছি বলে মন্তব্য করেছে এক ব্যক্তি।
সম্প্রতি এক সেমিনার শেষে তিনি একথা বলেন।
জাতীয়
ভারতীয় গণমাধ্যমে মিথ্যা সংবাদ, প্রতিবাদ জানালো সেনাবাহিনী

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ‘মিলিটারি অপারেশনস জোন’ ঘোষণা নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম নর্থইস্ট নিউজের মিথ্যা সংবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
রোববার (১ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এ তথ্য জানায়।
আইএসপিআর জানায়, ভারতীয় গণমাধ্যম নর্থইস্ট নিউজ কর্তৃক প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ টু ডিক্লেয়ার কক্সবাজার টু বান্দরবান এরিয়া অ্যাজ আ মিলিটারি অপারেশন্স জোন’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এই ধরনের সংবাদ ভারতীয় কিছু গণমাধ্যমের পরিকল্পিত অপচেষ্টার অংশ, যার উদ্দেশ্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করা এবং সশস্ত্র বাহিনীর ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করা।
প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ‘সন্ত্রাসী বা বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীকে সমর্থন দিচ্ছে’— এই ধরনের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যা একেবারে ভিত্তিহীন, অসত্য এবং এক ধরনের বিদ্বেষপূর্ণ অপপ্রচার। প্রমাণবিহীন এই ধরনের কল্পনাপ্রসূত সংবাদ একটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ, যা জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানো এবং বিভেদ উসকে দেওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে।
আইএসপিআর আরও জানায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবসময় সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব বজায় রেখে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা এবং সংবিধান রক্ষার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। জাতীয় স্বার্থে সেনাবাহিনী কখনোই আপস করেনি, আর ভবিষ্যতেও করবে না।
এ ধরনের বানোয়াট প্রতিবেদনকে সাংবাদিকতা বলা যায় না; এটি একটি সুপরিকল্পিত ও ধারাবাহিক কুৎসা রচনার অংশ। বাংলাদেশ সবসময় ঐক্যবদ্ধ থেকেছে এবং দেশের জনগণ ও ভূখণ্ড রক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বদা প্রস্তুত ও দৃঢ়ভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ।
কাফি
জাতীয়
আদালতের নির্দেশনা পেলে জামায়াতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত: ইসি সচিব

আদালতের নির্দেশনা কমিশনে পৌঁছালে জামায়াতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব আখতার আহমেদ।
আজ রবিবার রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বাতিল ঘোষণা করেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ এ রায় দেন।
পরে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, আদালতের নির্দেশনা ইসিতে পৌঁছালে জামায়াতের নিবন্ধনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামীকে সাময়িক নিবন্ধন দেওয়া হয়। পরের বছর বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, জাকের পার্টির তৎকালীন মহাসচিব মুন্সি আবদুল লতিফ, সম্মিলিত ইসলামী জোটের প্রেসিডেন্ট মাওলানা জিয়াউল হাসানসহ ২৫ জন জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন।
রিটে জামায়াতের তৎকালীন আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, নির্বাচন কমিশনসহ চারজনকে বিবাদী করা হয়। তারা জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের আর্জি জানান।
এ রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক (পরে প্রধান বিচারপতি) ও বিচারপতি মো. আবদুল হাইয়ের (বর্তমানে অবসর) হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি রুল জারি করেন। নিবন্ধন নিয়ে রুল জারির পর ওই বছরের ডিসেম্বরে একবার, ২০১০ সালের জুলাই ও নভেম্বরে দু’বার এবং ২০১২ সালের অক্টোবর ও নভেম্বরে দু’বার তারা গঠনতন্ত্র সংশোধন করে নির্বাচন কমিশনে জমা দেয় জামায়াত। এসব সংশোধনীতে দলের নাম ‘জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ’ পরিবর্তন করে ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’ করা হয়।
২০১৩ সালের ১২ জুন ওই রুলের শুনানি শেষ হয়। একই বছরের ১ আগস্ট জামায়াতকে দেওয়া নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে অবৈধ বলে রায় দেন বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন (বর্তমানে অবসর), বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম (পরে আপিল বিভাগের বিচারপতি পদ থেকে পদত্যাগ করেন) ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল-হকের (১৯ নভেম্বর পদত্যাগ করেন) সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর (লার্জার) বেঞ্চ।
সে সময় সংক্ষিপ্ত রায়ে আদালত বলেন, এ নিবন্ধন দেওয়া আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত। একইসঙ্গে আদালত জামায়াতে ইসলামীকে আপিল করারও অনুমোদন দিয়ে দেন।
তবে এ রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে জামায়াতের করা আবেদন একই বছরের ৫ আগস্ট খারিজ করে দেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী। পরে একই বছরের ২ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে জামায়াতে ইসলামী আপিল করে। ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর জামায়াতের আপিল খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।
এরপর ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে টানা চতুর্থ মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে। তবে গত বছর জুলাই মাস থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা কোটা প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। এ আন্দোলনে গণহত্যার অভিযোগে ছাত্র-জনতা সরকার পতনের দাবি তোলে। এর মধ্যে ১ আগস্ট সরকার অঙ্গসংগঠনসহ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধের আবেদন বাতিলের উদ্যোগ নেয়।
কাফি
জাতীয়
নির্ধারিত হাসিলের বাইরে অতিরিক্ত অর্থ আদায় নয়: ডিএমপি কমিশনার

ডিএমপি কমিশনার শেখ মোহাম্মদ সাজ্জাদ আলী বলেছেন, হাটে পশু কেনা-বেচায় সরকার নির্ধারিত হাসিলের বাইরে ইজারাদাররা অতিরিক্ত কোনো অর্থ আদায় করতে পারবেন না।
তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পশুবাহী কোনো যানবাহনকে হাটে জোরপূর্বক প্রবেশ করানো যাবে না। পশুর হাট অবশ্যই সিটি করপোরেশন নির্ধারিত চৌহদ্দির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
রোববার (১ জুন) সকালে ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সের সম্মেলন কক্ষে ঈদুল আজহা উপলক্ষে পশুর হাটের নিরাপত্তা এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত এক সমন্বয় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ মোহাম্মদ সাজ্জাদ আলী বলেন, যত্রতত্র কোরবানির পশু লোড-আনলোড করা যাবে না। রাস্তায় যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটালে বা জোরপূর্বক ব্যাপারীদের পশু বিক্রয়ে বাধ্য করলে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। হাট থেকে কেনা কোরবানির পশু পরিবহনে যেন কেউ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে না পারে সেজন্য তিনি প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন।
সভায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সরওয়ার বলেন, যে কোনো ধরনের সমস্যায় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে অভিযোগ জানাবেন। ঘটনার প্রমাণ রাখবেন, ভিডিও করে রাখবেন। রাস্তার শৃঙ্খলার দায়িত্বে নিয়োজিত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণ করবেন না। অযাচিত ও অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো আচরণ করলে বা রাস্তা ব্লক করে পশুর হাট বসালে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সমন্বয় সভায় অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, হাটের চৌহদ্দির মধ্যে পশুর বাজার সীমিত রাখতে হবে। কোনো অবস্থাতেই রাস্তায় হাট বসিয়ে জনভোগান্তি সৃষ্টি করা যাবে না। বাজারে পশুর সংকট মর্মে গুজব ছড়িয়ে বা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে কোরবানির পশুর বাজারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সমন্বয় সভায় বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি, পুলিশের বিভিন্ন বিশেষায়িত ইউনিটের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ ব্যাংক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, ডিপিডিসি, ডেসকো, ঢাকা জেলা প্রশাসন, সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন সেবাদানকারী সংস্থা, লবণ ব্যবসায়ী সমিতি, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি এবং ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন পশুর হাটের ইজারাপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
সমন্বয় সভার শুরুতে ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অপারেশনস্) মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে পশুর হাট কেন্দ্রিক সার্বিক নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। এরপর সভায় উপস্থিত বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি এবং ঢাকা মহানগরীর পশুর হাটের ইজারাপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন এবং তাদের মূল্যবান মতামত, পরামর্শ ও সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
এছাড়াও সমন্বয় সভায় ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সরওয়ার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস্, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) হাসান মো. শওকত আলী, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. মাসুদ করিম, যুগ্ম পুলিশ কমিশনাররা, উপ-পুলিশ কমিশনারসহ বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তারা এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
কাফি