পুঁজিবাজার
এনআরবিসি ব্যাংকের পর্ষদ ভাঙার দাবিতে ৯ দপ্তরে চিঠি

বেসরকারি এনআরবি কমার্শিয়াল (এনআরবিসি) ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল ও এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান আদনান ইমামের বিরুদ্ধে সংগবদ্ধ ব্যাংক লুটেরা চক্রের মাধ্যমে ব্যাংকের ৭ হাজার ৭০০ কোটি টাকারও বেশি লুটপাট ও পাঁচারের অভিযোগ তুলেছে ব্যাংকটির কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। সেই সঙ্গে ব্যাংকের এই লুটেরা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার দাবিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ ৯ দপ্তরে চিঠি দিয়েছেন ব্যাংকটির উদ্যোক্তা পরিচালক, পরিচালক, সাধারণ বিনিয়োগকারী ও সর্বস্তরের বৈষম্য ও নিপীড়নবিরোধী কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।
গত রবিবার (১৮ আগস্ট) তাঁরা এ সংক্রান্ত চিঠি বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, অর্থ উপদেষ্টা, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, তথ্য উপদেষ্টা, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং মন্ত্রীপরিষদ সচিব বরাবর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঠিয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, দেশের ব্যাংকিং সেক্টরের চরম অনিয়ম, দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনা ও দুঃশাসনের চরম নজির স্থাপন করেছে এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসি। যার জন্য দায়ী ব্যাংকের একক কর্তৃত্ববাদী চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল ও তার সকল অপকর্মের দোসর এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান আদনান ইমাম।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের বর্তমান কুখ্যাত চেয়ারম্যান আওয়ামী দালাল, তথাকথিত বঙ্গবন্ধু পরিষদ-রাশিয়ার সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী ডোনার, ছাত্রলীগ সন্ত্রাসী বাহিনীর অর্থায়নকারী, ব্যাংক লুটেরা, সংগবদ্ধ ব্যাংক লুটেরা চক্রের মাধ্যমে ব্যাংকের ৭ হাজার ৭০০ কোটি টাকারও বেশি লুটপাট ও পাচারকারী পারভেজ তমাল ও তার লুটেরা সিন্ডিকেটের অন্যতম সহযোগী এক্সিকিউটিভ কমিটির লুটেরা চেয়ারম্যান আদনান ইমাম। তারা সদ্য সাবেক আওয়ামীলীগ সরকারের উচ্চমহলের আনুকল্য গ্রহণের মাধ্যমে ব্যাংকের অভ্যন্তরে ২০১৮ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ঋণ জালিয়াতি, কমিশন বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য, শেয়ার কারসাজি, মানিলন্ডারিং, নামে-বেনামে ভুয়া কোম্পানি সৃষ্টি করে ব্যাংকের টাকা তছরুপ ও বিদেশে পাঁচারকারী, ব্যাংকে টর্চার সেল খুলে নিরীহ কর্মকর্তাদের নির্যাতন, গ্রাহকের কোম্পানী দখলসহ বিবিধ আর্থিক দুর্নীতির অভয়ারন্য তৈরি করেছেন। তাদের এই লুটতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে ব্যাংকের সিনিয়র ম্যাজেনমেন্ট ও কতিপয় শাখা ব্যবস্থাপকের যোগসাজশে সংঘবদ্ধ আর্থিক দুর্নীতি চক্র বা অর্গানাইজড ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে।
এছাড়াও, চিঠিতে পারভেজ তমাল ও আদনান ইমামের সীমাহীন দুর্নীতি, মানিলন্ডারিং, নিয়োগ বাণিজ্য, কমিশন বাণিজ্য, শেয়ার কারসাজি, স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যাংক কোম্পানী আইন ১৯৯১, বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ সংশ্লিষ্ট সিকিউরিটিজ ল’ ও দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবিলম্বে এই দুর্নীতিগ্রস্থ, অবৈধ বোর্ড ভেঙ্গে দেওয়ার দাবি করেন তারা।
এর আগে, গত ১০ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর বরাবর শেয়ার কারসাজি-ব্যাংক লুটের কারিগর এনআরবিসি ব্যাংকের তমাল-আদনানের বিরুদ্ধে এসব তথ্য তুলে ধরে এক চিঠি পাঠায় ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাতাদের কয়েকজন।
চিঠিতে বলা হয়, শেয়ার কারসাজি, গ্রাহকের কোম্পানি দখল, ব্যাংকিং কার্যক্রমে স্বজনপ্রীতি, চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তা নিয়োগ, কমিশন বানিজ্য, কর্মকর্তা নিয়োগে অনিয়মেরও অভিযোগ রয়েছে। ব্যাংকটির পছন্দের কর্মকর্তাদের অস্বাভাবিক ইনক্রিমেন্ট, পদোন্নতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। লুটতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে ব্যাংকের সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট ও একাধিক শাখা ব্যবস্থাপকের যোগসাজশে সংঘবদ্ধ আর্থিক দুর্নীতি চক্র গড়ে তুলেছেন তারা। এমনকি এর সঙ্গে সাবেক গর্ভনর আব্দুর রউফ তালুকদারের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন।
জানা গেছে, এখনো এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল ও আদনান ইমাম বহাল তবিয়তেই রয়েছেন। তাদের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে বিশেষ পরিদর্শন প্রতিবেদন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রেশন ও কাস্টমার সার্ভিসেস ডিভিশন (এফআইসিএসডি)। তদন্ত প্রতিবেদনে পরিচালকদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ব্যাংকের চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তা নিয়োগসহ নানান অনিয়ম পাওয়া গেছে। এর মধ্যে- নিয়ম বহির্ভূত ঋণ প্রদান, ঋণ বিতরণে কমিশন বানিজ্য, শেয়ার কারসাজি, অবৈধভাবে গ্রাহকের কোম্পানি দখল, কর্মকর্তা নিয়োগে অনিয়ম, চেয়ারম্যানের অবৈধভাবে দুটি কার্যালয় ব্যবহার, পছন্দের কর্মকর্তাদের অস্বাভাবিক ইনক্রিমেন্ট, পদোন্নতিসহ নানান অনিয়মের সত্যতা উঠে এসেছে। এছাড়া পরিদর্শন প্রতিবেদনে ব্যাংকের পর্ষদের সদস্যদের উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে ব্যাংকের আয় হ্রাসসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আউটসোর্সিং নীতিমালা লঙ্ঘনের পাশাপাশি ব্যাংকের নিজস্ব প্রকিউরমেন্ট অ্যান্ড এক্সপেন্ডিচার ম্যানেজমেন্ট পলিসির গুরুতর লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ধরা হয়। এছাড়া পরিচালকেরা ব্যাংকের কর্মকর্তাকে ডেপুটেশনে নিজেদের মালিকানাধীন এনআরবিসি ম্যানেজমেন্টের সিইওর দায়িত্ব পালন করে সুস্পষ্ট ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট’ সৃষ্টি করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, বাংলাদেশ ব্যাংক ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিভিন্ন সময়ে পরিচালিত পরিদর্শন ও বিশেষ তদন্ত রিপোর্টেও এনআরবিসি ব্যাংকের শীর্ষ এই দুই কর্তার বিরুদ্ধে অর্থপাচারসহ এসব অনিয়ম ও লুটতরাজের সত্যতা পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও পারভেজ তমাল ও আদনান ইমামের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। গুঞ্জন রয়েছে, আওয়ামীলীগ সরকারের উচ্চমহলের একাধিক সদস্যের সহযোগিতায় তারা অবাধে এসব অপকর্ম চালিয়ে গেছেন। ব্যাংকের এই লুটপাটের ঘটনায় বেশ আতঙ্কে রয়েছেন শেয়ারধারী ও আমানতকারীরা।
সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত এনআরবিসি ব্যাংকের ৪০তম পর্ষদ সভায় পরিচালকদের ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার ও ব্যাংক দখলের উদ্দেশ্যে অস্ত্রসহ বহিরাগত নিয়ে মিটিংয়ে প্রবেশ করে প্রথম আলোচনায় আসেন তারা। এরপর শুরু হয় ব্যাংক থেকে নিজেদের প্রতিষ্ঠানের নামে অবৈধ ঋণ বিতরণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালাকে তোয়াক্কা না করে নিজেদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান অর্নিতা এগ্রোর নামে ৩ কোটি, পূবালী কন্সেন্ট্রেশনের নামে ৯ কোটি, এনইএস ট্রেডিং এর নামে ১৯ কোটি ও লান্তা সার্ভিসেসের নামে ৩ কোটিসহ মোট ৬৪ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করে তারা।
সূত্র মতে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুসারে কোন ব্যক্তি একত্রে ব্যাংক ও ব্যবস্থাপনা পর্ষদের শীর্ষে পদে থাকতে পারবেন না। কিন্তু পারভেজ তমাল নিয়মকে পাত্তা না দিয়ে একইসাথে এনআরবিসি ব্যাংকের ও এনআরবিসি ম্যানেজমেন্টের চেয়ারম্যান ছিলেন। চেয়ারম্যান থাকাকালীন গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ অনুষ্ঠিত ব্যাংকের ৭৮তম বোর্ড সভায় এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের অনুকূলে ৬০ কোটি টাকার কম্পোজিট ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি অনুমোদন করা হয়। যার মধ্যে ২০ কোটি টাকার অমনিবাস ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি ও ৪০ কোটি টাকার লিজ ফাইন্যান্স ফ্যাসিলিটি অন্তর্ভুক্ত ছিলো। এভাবে ঋণ অনুমোদন ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালার পরিপন্থী ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এছাড়াও, তাদের দুজনের মালিকাধীন এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিতে ব্যাংকের নিয়মিত কর্মকর্তা ল্যাফটেন্যান্ট কমান্ডার (অবঃ) ফরহাদ সরকারকে ডেপুটেশনে নিয়োগ দেয়া হয়। পাশাপাশি ব্যাংকের অর্থ খরচ করে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় ১৪ দিনের বিশেষ প্রশিক্ষন দেওয়ার নামে বিদেশ ভ্রমণে নেওয়া হয়। যা ব্যাংকের স্বার্থবিরোধী কাজ।
এদিকে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ব্যাংকের গ্রাহকের কোম্পানি দখল করার অভিযোগ উঠেছে তমাল-আদনান সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। নিজেদের পদপদবীর অপব্যবহার, প্রভাব খাটানোর মাধ্যমে ইক্সোরা এ্যাপারেলস লিমিটেড নামের একটি রপ্তানীমুখী সোয়েটার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান দখল করেছে তারা। এই কোম্পানির নাম ভাঙিয়ে শতকোটি টাকার ঋণ জালিয়তি ও বৈদেশিক মুদ্রা পাচারের প্রমান পাওয়া গেছে। যার মামলা বর্তমানে দুদকে চলমান রয়েছে। শুধু ইক্সোরা নয়, পলিগন ফ্যাশন, রিল্যাক্স ফ্যাশন, ইনসাইড নিট কম্পোজিট, সাফি নিট, ফাইভ এফ এ্যাপারেলস, ব্লেসিংস নিটওয়্যার ও সিলভার এ্যাপারেলসসহ প্রায় ১৫টি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ২ হাজার কোটি টাকার অবৈধ ঋণ অনুমোদন, ঋণ জালিয়াতি এবং এর আড়ালে বৈদেশিক মুদ্রা পাচারে তমাল ও আদনান প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায়, শেয়ারবাজারের কারসাজিতেও বেশ সরব তমাল ও আদনান। এসব কাজে পরিবারের সদস্যদেরও ব্যবহার করতেন তারা। এছাড়াও এনআরবিসি ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখায় পরিচালিত পারভেজ তমালের মায়ের ব্যাংক হিসাব উম্মে বিলকিস (হিসাব নংঃ ০১০১৩১১০০০০৫৫২৫), পারভেজ তমালের ভাইয়ের ব্যাংক হিসাব সৈয়দ শাব্বির আহমেদ (হিসাব নংঃ ০১০১৩১১০০০০৫৭৩৬), সৈয়দ শাব্বিরের স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব আসমা রশীদ (হিসাব নংঃ ০১০১৩১১০০০০৫৫৩০), পারভেজ তমালের ছোট ভাইয়ের ব্যাংক হিসাব সৈয়দ শোয়েব (হিসাব নংঃ ০১০১৩১১০০০০৫৫২৬), আসিফ ইকবালের পিতার ব্যাংক হিসাব আব্দুর রশীদ (হিসাব নংঃ ০১০১৩১১০০০০৫৫৬৭), আসিফ ইকবালের মায়ের একাউন্ট মাকসুদা বেগম (হিসাব নংঃ ০১০১৩১১০০০০৫৫৬৪), আসিফ ইকবালের স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব তাকিয়া নিশি (হিসাব নংঃ ০১০১৩১১০০০০৫৫৩৩), আসিফ ইকবালের বোনের ব্যাংক হিসাব নাঈমা সুলতানা (হিসাব নংঃ ০১০১৩১১০০০০৫৫৬৬) এবং (হিসাব নংঃ ০১০১৩১১০০০০৫৫২২) তমাল ও আদনানের মাধ্যমেই পরিচালিত হয়। উল্লেখিত নামের অজ্ঞাতে খোলা এসব ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে তারা শেয়ার কারসাজি ও অর্থপাচার করেছেন। এসবের সঙ্গে ব্যাংকের কর্মকর্তা জাফর ইকবাল হাওলাদার, জমির উদ্দিন ও কামরুল হাসানও জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।
সূত্র বলছে, ২০১৬ সালের নভেম্বরে অর্থপাচারের অপরাধে এবিএম আব্দুল মান্নানের ৪ কোটি ৭০ লাখ ১ হাজার ৮৮৬টি শেয়ার বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করা হয়। এসব শেয়ারের মধ্যে গত বছরের ৩১ অক্টোবর পারভেজ তমালের ব্যবসায়িক পার্টনার শফিকুল আলম ৬৫ লাখ ৭২ হাজার ৯৯২টি, আদনান ইমামের স্ত্রী নাদিয়া মোমিন ইমাম ৩৮ লাখ ৪৫ হাজার ৯০৪টি এবং মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল আহসানের মেয়ে রেহনুমা আহসান ১ কোটি ৪৫ লাখ ৮০ হাজার ৬১৫টি শেয়ার ব্লক মার্কেট থেকে অবৈধভাবে নিজেদের নামে কিনে নেন। অবৈধ এসব শেয়ার হস্তান্তরে ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল, এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান আদনান ইমাম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম আউলিয়া ও কোম্পানী সচিব ও সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের ভগ্নিপতি আহসান হাবিব জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের ভগ্নিপতি মেজর (অবঃ) আহসান হাবিবকে এনআরবিসি ব্যাংকে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। ব্যাংকিং পেশায় অভিজ্ঞতাহীন এই সেনা কর্মকর্তাকে নিয়োগের ৭ মাস পরেই ব্যাংকটির কোম্পানি সচিবের মত গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়। এমনকি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের একবছর পূর্ণ হওয়ার আগেই বিশেষ বিবেচনায় তার চাকরি স্থায়ী করা হয়। একই সঙ্গে তাকে সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। মূলত গভর্নরকে বশীকরণের মাধ্যমে তমাল-আদনান চক্রের সব অপকর্ম ধামাচাপা দেওয়াই এই নিয়োগের একমাত্র উদ্দেশ্য বলে অভিযোগ উঠেছে। গভর্নরের ব্যক্তি স্বার্থ সংশ্লিষ্টতার কারণে এনআরবিসি ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি এবং গুরুতর অনিয়মের প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় বাংকের এফআইসিএডির পর্ষদ ভাঙ্গার সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হয়নি।
জানা যায়, এনআরবিসি ব্যাংকের ঋণ অনিয়মে পদে পদে জড়িত ছিলেন ব্যাংক ও ব্যবস্থাপনার এই দুই চেয়ারম্যান। পারভেজ তমালের ব্যবসায়িক অংশীদার শফিকুল আলমের মালিকানাধীন রিলায়েবল বিল্ডার্সের অনুকূলে এনআরবিসি ব্যাংকের হাতিরপুল শাখার গ্রাহক হিসেবে মাত্র ৩ কোটি টাকা জামানতের বিপরীতে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন দেয় এই চক্রটি। যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ অনুমোদনের নীতিমালা পুরোপুরি লঙ্ঘন করা হয়েছে। এছাড়া একই শাখা থেকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ফরচুন সুজকে ২০০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়। বিনিয়োগের নাম করে নেওয়া এ ঋণের মাধ্যমে বিপিএলে ক্রিকেট টিম ক্রয় করেছে ফরচুন বরিশাল। সেখানে আবার বেনামে শেয়ার ধারণ করেছে পারভেজ তমাল। এর মাধ্যমে শেয়ার কারসাজি এবং রপ্তানি বাণিজ্যের আড়ালে অর্থপাচার করেছে এনআরবিসির বর্তমান চেয়ারম্যান।
এদিকে এসকেএস ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে নিয়ম বর্হিভূত উপশাখা স্থাপন ও নীতি লঙ্ঘন করে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ করছে পারভেজ তমাল ও তার সহযোগী রাসেল আহমেদ লিটন। এসব ঋণ থেকে তমাল বড় অঙ্কের কমিশন পেয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এসকেএস ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যৌথভাবে ১৩১টি পার্টনারশিপ উপশাখাসহ প্রায় ৮০০ শাখা-উপশাখা চালু করা হয়। এসব শাখা-উপশাখার ডেকোরেশন ও আসবাবপত্র ক্রয়ের ক্ষেত্রে তমাল-আদনানের বেনামী প্রতিষ্ঠান লানতা সার্ভিসেস, টিএসএন ট্রেড এন্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড এবং এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির মাধ্যমে ওপেন টেন্ডার ও কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। ফলে তাদের ইচ্ছে মতো অর্থ ব্যয় করে ব্যাংকের খরচ বাড়ালেও দরপত্রে নিজেদের কোম্পানির সংশ্লিষ্টতা থাকায় মূলত লাভবান হয়েছে পারভেজ তমাল ও আদনান ইমাম।
সূত্র মতে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এসকেএস ফাউন্ডেশনের সাথে যৌথভাবে ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকার মাইক্রো ক্রেডিট ঋণ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া কোম্পানিটির ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য রিসোর্ট, হাসপাতাল, স্কুল ও কলেজ স্থাপনের নামে নির্দিষ্ট জামানত ছাড়াই দুই শতকোটি টাকার ঋণ দিয়েছে এনআরবিসি ব্যাংক। স্বার্থহাসিল ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে প্রায়ই নিজের ক্ষমতা ব্যবহার করে বড় অঙ্কের ঋণ অনুমোদন করেছেন তমাল-আদনান চক্র। এছাড়া ২০২২ সালের এপ্রিলে ট্রেইনি অফিসার নিয়োগেও এই চক্রের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতি ও নিয়োগ অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।
এসএম

পুঁজিবাজার
হতাশ চার্টার্ড লাইফের বিনিয়োগকারীরা, জালিয়াতির অভিযোগ

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের কোম্পানি চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স পিএলসির বিরুদ্ধে ঠকানোর অভিযোগ তুলেছে প্রতিষ্ঠানটির সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। প্রাতিষ্ঠানটি গত ৩১ ডিসেম্বর,২০২৪ সমাপ্ত বছরের আর্থিক প্রতিবেদনে গোঁজামিল দিয়ে লোকসান দেখিয়ে ‘নো ডিভিডেন্ড’ ঘোষণা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হিসাববছরের প্রথম তিন প্রান্তিকেই বিমা কোম্পানিটির আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় লাইফ ফান্ড বা জীবনবিমা তহবিলের আকার বাড়লেও বছর শেষে শেয়ারপ্রতি লোকসান ও নতুন বছরের প্রথম প্রান্তিকে আবারও মুনাফা বিনিয়োগকারীদের মনে সন্দেহ ও বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। এটিকে লভ্যাংশ না দেওয়ার জন্য জালিয়াতি ও বিনিয়োগকারীদের ঠকানো হয়েছে বলে দাবি করে নিয়ন্ত্রক সংস্থার তদন্ত চেয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, বীমা খাতের কোম্পানি চার্টার্ড লাইফের সমাপ্ত ২০২৪ হিসাববছরের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রান্তিকে লাইফ ফান্ডের আকার উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। আবার চলতি ২০২৫ হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকেও কোম্পানিটির আয় বেড়েছে। অথচ এরমধ্যে ২০২৪ হিসাববছরের শেষ প্রান্তিক বা বছর শেষে শেয়ারপ্রতি ১১ পয়সা লোকসান দেখানো হয়েছে। যার ফলে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এটিকে লভ্যাংশ না দেওয়ার জন্য জালিয়াতি ও বিনিয়োগকারীদের ঠকানো হয়েছে বলে দাবি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের।
সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বলছে, আমাদের ঠকানো হয়েছে। বছরের প্রথম ৯ মাসে ব্যয়ের তুলনায় অধিক আয় হয়েছে। জীবনবিমা তহবিলের আকার বেড়েছে। কিন্ত বছর শেষে ইপিএস লোকসান দেখানো হয়েছে লভ্যাংশ না দেওয়ার জন্য। এমন জালিয়াতি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য হতাশার। নিয়ন্ত্রক সংস্থার উচিৎ বিষয়টি তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেলে কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।
এবিষয়ে চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স পিএলসির কোম্পানি সচিব জিএম রাশেদ এসিএস অর্থসংবাদকে বলেন, জীবনবিমা তহবিলের আকার ক্রমেই বাড়তে থাকে এ স্বাভাবিক, তবে সেই হিসাবে ইপিএস হিসাব করা হয় না। বছরে একবারই ইপিএস হিসাব করা হয় সেটি এক্সপেরিয়েন্স ভ্যালুয়েশনের মাধ্যমে। সেই অনুযায়ী গত বছরের সাথে তুলনা করে এ বছরে লোকসান হয়েছে।
এবিষয়ে সোমবার (৩০ জুন) রাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম অর্থসংবাদকে বলেন, কমিশন থেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখে কোনো ধরনের জালিয়াতির প্রমাণ মিললে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বিএসইসি।
কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন সূত্রে, সমাপ্ত ৩১ ডিসেম্বর,২০২৪ হিসাববছরে শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ১১ পয়সা। যা গত বছরের একই সময়ে আয় ছিলো ১৬ পয়সা। এ সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৮ টাকা ৯৪ পয়সায়। লভ্যাংশ না দেয়ার সিদ্ধান্ত শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতিক্রমে অনুমোদনের জন্য কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ২৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে। রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ২৪ জুলাই।
এরআগে, হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিক (জানুয়ারি’২৪-মার্চ’২৪) শেষে কোম্পানিটির জীবন বীমা তহবিল ছিলো ৫৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা, আগের হিসাববছরের একই সময় শেষে যা ছিল ৫০ কোটি ২৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির জীবন বীমা তহবিলের আকার বেড়েছে ৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। আর দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির জীবন বীমা তহবিলের আকার বাড়ে ৯ কোটি ১০ লাখ টাকা। এছাড়া, তৃতীয় প্রান্তিক শেষে জীবন বীমা তহবিলের আকার বাড়ে ১১ কোটি ০৪ লাখ টাকা। সব প্রান্তিকে আয় বাড়লেও বছর শেষে শেয়ারপ্রতি ১১ পয়সা লোকসানে কোম্পানিটি।
এদিকে, সব প্রান্তিকে আয় বাড়লেও বছর শেষে লোকসান দেখানো প্রতিষ্ঠানটির নতুন বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি’২৫’-মার্চ’২৫) আবারও আয় বেড়েছে। গত ৩১ মার্চ শেষে কোম্পানিটির জীবন বীমা তহবিলের আকার দাড়িয়েছে ৬৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, আগের হিসাববছরের একই সময় শেষে যা ছিল ৫৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা। সে হিসাবে বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির জীবন বীমা তহবিলের আকার বেড়েছে ৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।
কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ২৫০ কোটি টাকা। বর্তমানে পরিশোধিত মূলধন ৩৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ৩৭ কোটি ৫০ লাখ। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ উদ্যোক্তা-পরিচালক, ১০ দশমিক ১৬ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও বাকি ২৯ দশমিক ৮৪ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) আজ সোমবার কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ ৫২ টাকায় লেনদেন হয়েছে। গত এক বছরে শেয়ারটির দর ২৭ টাকা থেকে ৫৫ টাকা ৬০ পয়সার মধ্যে উঠা-নামা করেছে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ৬ জুলাই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৮৩০তম কমিশন সভায় কোম্পানিটির আইপিও অনুমোদন দেয়া হয়। আইপিওর মাধ্যমে প্রতিটি ১০ টাকা মূল্যের ১ কোটি ৫০ লাখ শেয়ার ইস্যু করে পুঁজিবাজার থেকে ১৫ কোটি উত্তোলন করেছে চাটার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স। উত্তোলিত অর্থ সরকারি ট্রেজারি বন্ড, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ও ইস্যু ব্যবস্থাপনা খরচ খাতে ব্যয় করবে কোম্পানিটি। উল্লেখ্য, কোম্পানিটিকে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের আইন পরিপালনের স্বার্থে পাবলিক ইস্যু রুলস ২০১৫-এর ৩(২)(পি) বিধি পরিপালনের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর থেকে স্টক এক্সচেঞ্জে কোম্পানিটির শেয়ারের লেনদেন শুরু হয়।
এসএম
পুঁজিবাজার
শেয়ারপ্রতি সাড়ে ৫২ টাকা লভ্যাংশ দেবে বার্জার পেইন্টস

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিবিধ খাতের কোম্পানির বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড সর্বশেষ হিসাববছরের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটি আলোচিত বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদেরকে ৫২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেবে। অর্থাৎ প্রতি শেয়ারের বিপরীতে কোম্পানির শেয়ারহোল্ডাররা ৫২ টাকা ৫০ পয়সা লভ্যাংশ পাবেন।
আজ সোমবার (৩০ জুন) অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচারলনা পরিষদের বৈঠকে গত ৩১ মার্চ,২০২৫ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর লভ্যাংশ সংক্রান্ত এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত বছর কোম্পানিট ৫০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, সর্বশেষ বছরে সমন্বিতভাবে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৭২ টাকা ৬৬ পয়সা। আগের বছর কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস ছিল ৬৯ টাকা ৯২ পয়সা।
সর্বশেষ বছরে সমন্বিতভাবে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ক্যাশফ্লো ছিল ৫৮ টাকা ৯৪ পয়সা, যা আগের বছর ১৩৯ টাকা ৬৪ পয়সা ছিল।
গত ৩১ মার্চ,২০২৫ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ৩৩৩ টাকা ৪২ পয়সা।
আগামী ২৫ আগস্ট, সোমবার সকাল ১০টায় ডিজিটাল প্ল্যাটফরমে কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৪ জুলাই।
এসএম
পুঁজিবাজার
মঙ্গলবার ব্যাংক হলিডে, বন্ধ থাকবে পুঁজিবাজার

সারাদেশে আগামীকাল মঙ্গলবার (১ জুলাই) ব্যাংক হলিডে পালিত হবে। এ উপলক্ষে দেশের সব ব্যাংকে সাধারণ লেনদেন বন্ধ থাকবে। একই কারণে বন্ধ থাকবে দেশের দুই পুঁজিবাজার ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই ও সিএসই) লেনদেন কার্যক্রমও।
ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, পুঁজিবাজারের প্রায় সব লেনদেন ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। ফলে ব্যাংক বন্ধ থাকলে স্বাভাবিকভাবেই পুঁজিবাজারের কার্যক্রমও বন্ধ রাখা হয়। বুধবার (২ জুলাই) পুঁজিবাজারের লেনদেন যথা নিয়মে চলবে।
তবে, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সব ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও নির্দিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ শাখা সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে, যেখানে শুধু প্রশাসনিক ও হিসাব সংক্রান্ত কাজ চলবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, প্রতি বছরের ১ জুলাই ব্যাংকখাতে ‘অর্ধবার্ষিক সমাপনী হিসাব’ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। এ দিনটিকে অর্ধবছরের আর্থিক হিসাব-নিকাশের জন্য নির্ধারিত সময় হিসেবে ধরা হয়। এ সময় ব্যাংক কর্মকর্তারা প্রতিটি শাখা থেকে হিসাব একত্র করে একটি অর্ধবার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বার্ষিক ছুটির ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ১ জুলাই এবং ৩১ ডিসেম্বরকে ব্যাংক হলিডে হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে, যা বাৎসরিক হিসাব চূড়ান্তকরণের জন্য পালন করা হয়।
এই দুটি তারিখে—একটি অর্থবছরের শুরু এবং অপরটি বর্ষপূর্তির দিন—দেশের সকল তফসিলি ব্যাংক গ্রাহকসংশ্লিষ্ট সব ধরনের লেনদেন বন্ধ রাখে। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে কোনো ধরনের লেনদেন বা গ্রাহকসেবা কার্যক্রম চলবে না। তবে এটিএমের মাধ্যমে সীমিত সেবা চালু থাকবে।
পুঁজিবাজার
মেঘনা সিমেন্টের ক্রেডিট রেটিং সম্পন্ন

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মেঘনা সিমেন্ট মিলস পিএলসির ক্রেডিট রেটিং সম্পন্ন করা হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, কোম্পানিটির ক্রেডিট রেটিং নির্ণয় করেছে দ্য বাংলাদেশ রেটিং এজেন্সি লিমিটেড। কোম্পানিটির দীর্ঘমেয়াদে ‘বিবিবি-’ এবং স্বল্প মেয়াদে ‘এসটি-৪’রেটিং হয়েছে।
কোম্পানির ৩০ জুন,২০২৪ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত ও ৩১ মার্চ,২০২৫ অর্থবছরের সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিক পর্যন্ত অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদেন এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্যের ভিত্তিতে এ রেটিং নির্ণয় করা হয়েছে।
এসএম
পুঁজিবাজার
ব্লক মার্কেটে ২০ কোটি টাকার লেনদেন

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে ৩৬টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মোট ২০ কোটি ০৬ লাখ ৭০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
সোমবার (৩০ জুন) ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে লাভেলো। এদিন কোম্পানিটির ৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
এরপর লেনদেন হয়েছে মিডল্যান্ড ব্যাংক ১ কোটি ৬৩ লাখ টাকার।
অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে-বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকার, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ ১ কোটি ১৭ লাখ টাকার এবং এস ই এম এল লেকার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড ১ কোটি ১৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
কাফি