জাতীয়
দেশের ৮ জেলা বন্যাকবলিত, আরও বিস্তৃত হওয়ার শঙ্কা

ভারী বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলে দেশের আট জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। আজ বুধবার বিকেলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, দেশের সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ফেনী, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও খাগড়াছড়ি জেলা বন্যাকবলিত হয়েছে। এ ছাড়া বন্যা আরও নতুন নতুন অঞ্চলে বিস্তৃত হতে পারে।
আলী রেজা বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ আছে। নগদ অর্থ, চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। ছাত্র সমন্বয়ক, স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় বন্যা মোকাবিলায় কাজ চলছে।
এদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ফেণী ও চট্টগ্রাম জেলার মুহুরী ও হালদা নদীর পানি সমতল বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে এবং নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।
এ ছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টায় পূর্বাঞ্চলের কুমিল্লা জেলার গোমতী নদীর পানি সমতল বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে এবং সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে। একই সময়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মনু, খোয়াই, ধলাই নদীর পানি সমতল বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে এবং নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।
আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে এ সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার প্রধান নদীসমূহের পানি সমতল কতিপয় পয়েন্টে সময় বিশেষে বৃদ্ধি পেতে পারে।
একই সময়ে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে এ অঞ্চলের মুহুরী, ফেনী, হালদা, সাঙ্গু, মাতামুহুরি ও গোমতী ইত্যাদি নদীসমূহের পানি সমতল সামগ্রিকভাবে স্থিতিশীল থাকতে পারে।
কাফি

জাতীয়
অবশ্যই বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার তদন্ত করা হবে: প্রধান উপদেষ্টা

উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনার তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, এরা আমাদের সবারই সন্তান। হঠাৎ করে চিরদিনের জন্য চলে গেল। আমরা অবশ্যই এই ঘটনার তদন্ত করব। আর যারা আহত- আমরা তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করছি। সবাই তাদের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছে।
সোমবার (২১ জুলাই) বিমান দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে দেশবাসীর উদ্দেশে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
হাসপাতালে ভিড় না করার অনুরোধ জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, হাসপাতালে সকলে ছুটে আসছে। আমরা সবার কাছে অনুরোধ করছি হাসপাতালে ভিড় করবেন না। কারণ যারা আহত তাদের জন্য এটা ভালো না। তাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধের শক্তি নেই। আমরা ভিড় করলে, আমাদের শরীর থেকে কি রোগ তাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে এটা বলা মুশকিল। কাজেই দূরে থেকে দোয়া করেন সবাই।
বিমান বিধ্বস্তের এই ঘটনাকে ‘অবিশ্বাস্য’ আখ্যা দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমার বলার কোনো ভাষা নেই। কিভাবে শুরু করব? সেটাও বুঝতে পারছি না। আমার মতো সারাদেশের লোক আজকে হতবাক। এ রকম একটা কান্ড ঘটতে পারে। আমরা কেউ কল্পনা করিনি। কারো ধারণার মধ্যে ছিল না। কিন্তু এই অবিশ্বাস্য ঘটনা আমাদেরকে হঠাৎ করে গ্রহণ করতে হয়েছে।
বহু শিশুর মৃত্যুতে সারা জাতি বাকরুদ্ধ মন্তব্য করে আবেগঘন ওই ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে কচি শিশুদের ওপরে পড়ল। আগুনে পুড়ে শিশুরা মারা গেল। মা-বাপদের আমরা কি জবাব দেব? কি বলবো তাদেরকে? আমরা নিজেদেরকে তো জবাব দিতে পারছি না। অজানা শিশুদের মুখ বারবার চোখে ভেসে উঠছে। সারা জাতি বাকরুদ্ধ ও শোকাহত বললে খুব কম বলা হবে। এই দুর্ঘটনার রেশ এখনো কাটেনি। এখনো লাশ আসছে হাসপাতালে। এখনো হাসপাতালে মারা যাচ্ছে। মা-বাপ এখনো খোঁজ নিচ্ছে আমার সন্তান কোথায়? তাকে আর কোনদিন চেনা যাবে কিনা? যাদের লাশ দেখছি তার মধ্যে আমার সন্তান আছে কিনা। পৃথক করার তো কোন উপায় নেই।
শিশুদেরকে স্মরণ করে অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, আমরা অবশ্যই এই ঘটনার তদন্ত করব। তদন্ত হবে, কিন্তু এই নিস্পাপ শিশুগুলো আর ফিরে আসবে না।
হতাহত শিশুদের পরিবারের সঙ্গে পুরো দেশবাসী আছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘শিশুদের বাবা মা আত্মীয়স্বজন সবার কাছে আমাদের সহানুভূতি জানাচ্ছি। বাংলাদেশের যত সন্তান আছে সবাই আপনাদের সন্তান। আপনারা নিজেদের মনকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করুন। আমরা সবাই আপনাদের সঙ্গে আছি। জাতির সমস্ত লোক আপনাদের সঙ্গে আছে।’
আগামীকাল জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করা হয়েছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমরা নিহত শিশুদের জন্য শোক দিবস ঘোষণা করেছি। আগামীকাল শোক দিবসে আমরা সবাই মিলে তাদের কথা স্মরণ করব। তাদের আত্মার শান্তি কামনা করব। আজ থেকে সবাই তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করব। আল্লাহ আপনাদেরকে শান্তি দিন। নিহত শিশুদের জন্য দেশবাসী আমরা সবাই দোয়া করছি। আল্লাহ এই শিশুদেরকে জান্নাতবাসী করুক।
জাতীয়
উত্তরায় বিমান বিধ্বস্ত: নিহত বেড়ে ২৭, চিকিৎসাধীন ৭৮

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এখন পর্যন্ত নিহত ২৭ জনের মধ্যে ২৫ জন শিশু বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকালে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।
নিহত বাকি দুইজনের মধ্যে একজন পাইলট, অপরজন শিক্ষিকা বলে জানান তিনি।
চিকিৎসার সব রকমের প্রস্তুতি আমাদের আছে জানিয়ে অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, দুর্ঘটনায় আহত হয়ে এখন পর্যন্ত ৭৮ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছে। তাদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বার্ন ইউনিটে দুইজন ভেন্টিলেশনে আছে বলেও জানান তিনি।
জাতীয়
উত্তরায় বিমান দুর্ঘটনা: পালিত হচ্ছে রাষ্ট্রীয় শোক

ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল ক্যাম্পাসে প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় আজ মঙ্গলবার (২২ জুলাই) একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হচ্ছে।
সোমবার (২১ জুলাই) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এর আগে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে রাষ্ট্রীয় শোক পালনের কথা জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে একটি বিদ্যালয়ে পতিত হওয়ার ফলে কোমলমতি শিশুসহ অনেক মানুষের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকার গভীরভাবে শোকাহত। এই পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালন করা হবে।
এ উপলক্ষ্যে আজ বাংলাদেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে বলেও জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
প্রজ্ঞাপনে আরও জানানো হয়, নিহতদের মাগফেরাত এবং আহতদের সুস্থতা কামনায় মঙ্গলবার দেশের সব মসজিদে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হবে। অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানেও বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।
গতকাল সোমবার দুপুর ১টার পর রাজধানীর উত্তরায় দুর্ঘটনায় পড়ে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান। বিমানটি উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে গিয়ে পড়ে এবং বিধ্বস্ত হয়। সঙ্গে সঙ্গে বিমান ও স্কুল ভবনটিতে আগুন ধরে যায়। যে ভবনে এটি বিধ্বস্ত হয় সেখানে বহু স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থী ছিল। যাদের বেশিরভাগই হতাহত হয়েছে।
দুর্ঘটনার পরপর উদ্ধার অভিযান শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। উত্তরাসহ আশপাশের ৮টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং হতাহতদের উদ্ধার করা শুরু করে। পরে উদ্ধার অভিযানে যোগ দেয় বিজিবি ও সেনাবাহিনী। বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারে করে হতাহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়।
মর্মান্তিক এ বিমান দুর্ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৭ জনে। এবং বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন শতাধিক।
জাতীয়
সাত জনের মরদেহ শনাক্তে লাগবে ডিএনএ টেস্ট

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। এদের মধ্যে ৭ জন শিশুর লাশ শনাক্ত এখনও করা যায়নি। এসব লাশের পরিচয় শনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষা করতে হবে।
সোমবার (২১ জুলাই) রাতে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা) অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান।।
তিনি বলেন, যে ১৭ জন নিহত হওয়ার তথ্য পেয়েছি, তারা সবাই শিশু। এর মধ্যে ৭ জনের লাশ শনাক্ত করা যায়নি। তাদের পরিচয় শনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষা লাগবে।
তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র ইনফেকশনের কারণে অনেকে মারা যেতে পারে। তাই হাসপাতালের ভেতরে সবাই প্রবেশ না করার অনুরোধ করছি। হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের মধ্যে প্রাথমিক মূল্যায়নে ২৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এ সময় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন বলেন, আগামীকাল রক্তের প্রয়োজন হবে। তাই আজ আর কারও কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে না।
সায়েদুর রহমান ১৭ জন নিহতের কথা বললেও দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত পাইলটসহ ২০ জনের প্রাণহানি ও ১৭১ জন আহতের তথ্য জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ (আইএসপিআর)
বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া আহতদের সংখ্যাও জানিয়েছে আইএসপিআর।
১. কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল: আহত ৮ জন, নিহত নেই
২. জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট: আহত ৭০ জন, নিহত ২
৩. ঢাকা মেডিকেল: আহত: ৩, নিহত ১
৪. সিএমএইচ-ঢাকা: আহত ১৭, নিহত ১২
৫. কুর্মিটোলা জেনারেল হসপিটাল: আহত ১, নিহত ২
৬. লুবনা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টার, উত্তরা: আহত:-১১ নিহত: ২
৭. উত্তরা আধুনিক হসপিটাল: আহত ৬০, নিহত ১
৮. উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতাল: আহত: ১, নিহত নেই।
এই ৮ হাসপাতালে মোট আহত হয়ে চিকিৎসাধীন ১৭১ জন।
কাফি
জাতীয়
নিহতের মা-বাবাকে আমরা কী জবাব দেব: প্রধান উপদেষ্টা

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনায় শোক জানিয়ে ভিডিওবার্তা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, ‘প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে শিশুদের ওপর পড়ল। আগুনে পুড়ে মারা গেল, তাদের মা-বাবাদের আমরা কী জবাব দেব?’
সোমবার (২১ জুলাই) রাত ৯টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তার এ ভিডিওবার্তাটি পোস্ট করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমার বলার কোনো ভাষা নেই। কীভাবে শুরু করব? সেটাও বুঝতে পারছি না। আমার মতো সারা দেশের লোক আজকে হতবাক। ’
‘এ রকম একটা কাণ্ড ঘটতে পারে। আমরা কেউ কল্পনা করিনি। কারোরই ধারণার মধ্যে ছিল না। কিন্তু এই অবিশ্বাস্য জিনিস আমাদের হঠাৎ করে গ্রহণ করতে হয়েছে। ’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে কচি শিশুদের ওপরে পড়ল। আগুনে পুড়ে মারা গেল, মা-বাবাদের আমরা কী জবাব দেব? কী বলব তাদের? আমরা নিজেদের তো জবাব দিতে পারছি না। অজানা শিশুদের মুখ সবার চোখে ভেসে উঠছে। ’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘সারা জাতি হতভম্ব, শোকাহত। শোকাহত বললে খুব কম বলা হবে। এই দুর্ঘটনার রেশ এখনো কাটেনি, এখনো লাশ আসছে হাসপাতালে, এখনো হাসপাতালে মারা যাচ্ছে, মা-বাবা এখনো খোঁজ নিচ্ছেন সন্তান কোথায়। ’
‘তাকে আর কোনো দিন চেনা যাবে কি না? যাদের লাশ দেখছি, তার মধ্যে আমার সন্তান আছে কি না। পৃথক করার তো কোনো উপায় নেই। এরা আমাদের সবারই সন্তান। হঠাৎ করে চিরদিনের জন্য চলে গেল। ’
নিহতদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার চিকিৎসার ব্যবস্থা করছে। আমরা অবশ্যই তদন্ত করব। আমরা সবাই আপনাদের পাশে আছি। ’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনারা হাসপাতালে ভিড় করবেন না। যারা আহত তাদের জন্য এটা ভালো না। তাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধের শক্তি নেই। আমরা ভিড় করলে তাদের মধ্যে কী রোগ ছড়িয়ে পড়বে, তা বলা মুশকিল। কাজেই দূরে থেকে দোয়া করুন সবাই। ’
আইএসপিআরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিধ্বস্ত হওয়া প্রশিক্ষণ বিমানের পাইলটসহ ২০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১৭১ জন।
কাফি