জাতীয়
নসরুল হামিদের বাসায় অভিযান চালিয়ে যা পাওয়া গেল

রাজধানীর বনানীতে সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর মালিকানাধীন ‘প্রিয়প্রাঙ্গণ’ ভবনে রাতভর অভিযান চালিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এসময় নগদ ২৭ লাখ ৯৬ হাজার টাকা ও ৫১০ লিরা (তুরস্কের মুদ্রা) জব্দ করা হয়।
মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে ভবনটিতে শুরু হওয়া অভিযান শেষ হয় ভোরের দিকে। এ সময় ভবনটি ঘিরে রাখেন সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা।
অভিযানের সময় যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম, সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও গণঅধিকার পরিষদ সভাপতি নুরুল হক নুর ছাড়াও ঢাকা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত ছিলেন।
অভিযানে প্রিয়প্রাঙ্গণ ভবনের লিফটের দুই তলায় হামিদ গ্রুপের অফিসে ফাইন্যান্স অ্যান্ড অ্যাকাউন্টসের রুমে বড় ভোল্টের পাশের টেবিলের ড্রয়ার থেকে ৩ লাখ ৮ হাজার ৭০০ টাকা জব্দ করা হয়। একই রুমে বামদিকে ফাইন্যান্স অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস রুমের দুটি ড্রয়ার থেকে ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ টাকা জব্দ করা হয়। এরপর ছয় তালায় অবস্থিত হামিদ গ্রুপের অফিস থেকে ২০ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
এছাড়া ওই অফিস থেকে ৫০ পাউন্ডের চারটি নোট যার একটি ছেড়া, তুরস্কের মুদ্রা ২০০ লিরার নোট একটি, ১০০ লিরার মোট দুটি, ৫০ লিরার নোট একটি, ২০ লিরার নোট একটি ১০ লিরার নোট চারটি। সর্বমোট ৫১০ লিরা জব্দ করা হয়।
এমআই

জাতীয়
মুরাদনগরে ভিডিও ছড়ানোর নেপথ্যে ছিল দুই ভাইয়ের দ্বন্দ্ব: র্যাব

কুমিল্লার মুরাদনগরে এক নারীকে ‘ধর্ষণ’ ও নির্যাতনের পর ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার নেপথ্যে রয়েছে ভিডিও ছড়ানোর মূল হোতা শাহ পরান ও তার ভাই ফজর আলীর বিরোধ। পূর্বশত্রুতার জেরে বড় ভাই ফজর আলীকে বিপদে ফেলে প্রতিশোধ নিতেই পুরো ঘটনা সাজিয়েছিলেন ছোট ভাই শাহ পরান।
শুক্রবার (৪ জুলাই) রাজধানীর কাওরান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) কুমিল্লার বুড়িচং থানার কাবিলা বাজার এলাকা থেকে শাহ পরানকে গ্রেফতার করে র্যাব-১১। তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাবের ভাষ্য অনুযায়ী, শাহ পরান গত ২৬ জুন সংঘটিত এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন। বড় ভাই ফজর আলীর হাতে আগে প্রকাশ্যে অপমানিত হওয়ায় প্রতিশোধ নিতে একটি মব গঠন করে এই নারকীয় ঘটনা ঘটান তিনি। পরে সেই মুহূর্তের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন জানান, বেশ কিছুদিন ধরে ওই নারীকে উত্যক্ত করে আসছিলেন ফজর আলী ও শাহ পরান। এ নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধের জেরে কয়েক মাস আগে গ্রাম্য সালিশে জনসম্মুখে শাহ পরানকে চড়-থাপ্পড় মারেন ফজর আলী। সেই অপমানের প্রতিশোধ নিতে সুযোগ খুঁজতে থাকেন শাহ পরান।
ঘটনার দিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে ফজর আলী ৫০ হাজার টাকা সুদের লেনদেনের অজুহাতে ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করেন। টের পেয়ে ইমো অ্যাপে মেসেজ দিয়ে অন্যদের ডেকে আনেন শাহ পরান। এর প্রায় ২০ মিনিট পর পূর্বপরিকল্পিতভাবে শাহ পরান ও তার সঙ্গে থাকা আবুল কালাম, অনিক, আরিফ, সুমন, রমজান এবং আরও আট থেকে দশজন অজ্ঞাত সহযোগী ওই ঘরে হানা দেন। তারা দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে ফজর আলীকে মারধর করেন এবং ভুক্তভোগী নারীকে নির্যাতন করেন। একপর্যায়ে ফজর আলীকেও তারা এই কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে বাধ্য করেন। এরপর নৃশংস ওইসব দৃশ্যের ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনার পর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরে পুলিশ ও র্যাব মিলে এ পর্যন্ত অভিযুক্ত ফজর আলীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, শাহ পরান প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের দায় স্বীকার করেছে। তাকে মুরাদনগর থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। বাকি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
গত ২৬ জুন রাতে মুরাদনগরের বাহেরচর গ্রামে ওই নারীকে ধর্ষণ ও নির্যাতন করা হয় এবং সেই ভিডিও ২৯ জুন সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। একই দিন ভুক্তভোগী বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেন।
জাতীয়
গোলাম মাওলা রনিকে নিয়ে প্রেস সচিবের বিস্ফোরক মন্তব্য

সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজনীতিবিদ গোলাম মাওলা রনি মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের প্রধান উৎস উঠেছেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
শুক্রবার (৪ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি।
শফিকুল আলম লিখেন, গোলাম মাওলা রনি এখন আমাদের টিভি টকশো ও ইউটিউব ভিডিওগুলোর মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তির অন্যতম প্রধান উৎস হয়ে উঠেছেন।
তিনি লিখেন, সম্প্রতি সময় টিভির এক টকশোতে রনি দাবি করেছেন যে, নূর হোসেন-স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের কিংবদন্তি শহীদ নাকি জনতার হাতে নিহত হয়েছেন। কিন্তু, আমরা সবাই জানি, ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর জেনারেল এরশাদের নিরাপত্তা বাহিনীই গুলি করে হত্যা করেছিল নূর হোসেনকে। রনি কি এখন ইতিহাস থেকে এরশাদের অপরাধ মুছে ফেলার দায়িত্ব নিয়েছেন?
টকশোতে গোলাম মাওলা রনির মিথ্যাচারে উপাস্থাপক কোনো প্রতিবাদ করেননি দাবি করে প্রেস সচিব বলেন, দুঃখজনক বিষয় হলো, সময় টিভির সেই অনুষ্ঠানে উপস্থাপক এই নির্লজ্জ মিথ্যাচারের কোনো প্রতিবাদও করেননি। যখন আপনি মিথ্যাবাদী ও বিভ্রান্তিকর কণ্ঠকে প্ল্যাটফর্ম দেন, তখন আপনি নিজেও সেই অপরাধের অংশীদার হয়ে ওঠেন।
জাতীয়
২০ বাংলাদেশি পাসপোর্টসহ ভারতীয় ট্রাকচালক আটক

বেনাপোল বন্দরে ২০টি বাংলাদেশি পাসপোর্টসহ বেচারাম প্রামাণিক (৪৩) নামে একজন ভারতীয় ট্রাকচালককে আটক করেছেন আনসার সদস্যরা। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বন্দরের কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল গেট থেকে তাকে আটক করা হয়।
সূত্র জানায়, সার্বিয়ার ভিসা লাগানো পাসপোর্টগুলো ভারত থেকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে আনছিলেন বেচারাম প্রামাণিক। সবগুলো পাসপোর্টে ২৪ জুন তারিখে সার্বিয়ার ভিসা লাগানো রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত কোনো দেশে ঢোকার জন্য তারা এ ভিসা লাগিয়ে ছিলেন।
বেনাপোল বন্দরের আনসার কমান্ডার হেলালউজ্জামান জানান, আগে থেকে তাদের কাছে গোপন সংবাদ ছিল, ভারত থেকে অবৈধভাবে এক ট্রাকচালককে দিয়ে বাংলাদেশি বেশ কিছু পাসপোর্ট পাঠানো হচ্ছে। পরে তারা বন্দরের ভেহিকেল টার্মিনাল গেটে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করে। একপর্যায়ে সন্দেহভাজন ওই ট্রাকচালক পেট্রাপোল বন্দরের কার্যক্রম শেষ করে বাংলাদেশে প্রবেশ করে বন্দর ভেহিকেল টার্মিনাল গেটে এলে তার কাছে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করা হয়।
এসময় ওই ব্যাগের মধ্যে ২০টি বাংলাদেশি পাসপোর্ট পাওয়া যায়। ওই পাসপোর্টের প্রত্যেকটিতে সার্বিয়ার ভিসা লাগানো রয়েছে। আটক ট্রাকচালককে পাসপোর্টসহ থানা পুলিশে সোপর্দ করার কার্যক্রম চলমান।
উদ্ধার পাসপোর্টগুলো হলো- চাঁদপুরের মনোহরগাজীর ছেলে মোজাম্মেল হোসেনের, নোয়াখালীর রফিউল্লার ছেলে ইমরান হোসেন, কিশোরগঞ্জের রিপন মিয়ার ছেলে অপূর্ব মিয়া, ঢাকার আব্দুল মাজিদের ছেলে ফয়সাল আহম্মেদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাজি আব্দুল মান্নানের ছেলে ইসহাক, সাতক্ষীরার খলিল গাজীর ছেলে হুমায়ন কবির, ঢাকার দানেশ আলীর ছেলে নাজমুল ইসলাম, গাজীপুরের আব্দুর রশিদের ছেলে আবুল হোসেন, মানিকগঞ্জের আবুল কাশেমের ছেলে শরিফুল ইসলাম, নোয়াখালীর আব্দুল মোতালেবের ছেলে আব্দুল কাদের, আলাউদ্দীনের ছেলে আব্দুল আজিজ, সাহেব উদ্দীনের ছেলে আব্দুর রহিম, অমল চন্দ্র দাসের ছেলে রুপম চন্দ্র দাস, সাতক্ষীরার রেজাউল ইসলামের ছেলে তানভির হাসান, নজরুল ইসলামের ছেলে আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেনের ছেলে পলাশ হোসেন, নুর মোহাম্মদ শেখের ছেলে জাকারিয়া, ইউনুছের ছেলে আবু সাঈদ, ফেনির মোরশেদ আলমের ছেলে আব্দুল করিম ও নরসিংদীর বাতেন মিয়ার ছেলে ফাইম মিয়ার।
জাতীয়
শহরে নিম্নআয়ের ৬৯ শতাংশ মানুষ টয়লেট ব্যবহার করে

গত পাঁচ বছরে শহরাঞ্চলের সুনির্দিষ্ট কিছু এলাকায় নিম্নআয়ের মানুষের মধ্যে স্যানিটারি টয়লেট ব্যবহারের হার ১০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬৯ শতাংশে পৌঁছেছে। পাশাপাশি নিরাপদ পানির প্রাপ্যতা এবং মাতৃ স্বাস্থ্যসেবাসহ আরও কিছু ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।
এ সময়কালে এসব এলাকায় নিরাপদ পানি ব্যবহার ৫১ শতাংশ থেকে বেড়ে ৮০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। নারীদের মধ্যে স্যানিটারি প্যাড ব্যবহারের হার ৫৩ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৯০ শতাংশ এবং অন্তত চারবার প্রসবপূর্ব সেবা গ্রহণের হার ৪৫ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭১ শতাংশে। প্রসব-পরবর্তী সেবা নেওয়ার হার ২১ শতাংশ থেকে ৪৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এছাড়া ৯৪ শতাংশ পরিবার বর্তমানে তাদের খাবার পানি ঢেকে রাখে এবং এই এলাকাগুলোতে মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম ৫৪ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৮৫ শতাংশ।
বুধবার (২ জুলাই) ঢাকার ব্র্যাক সেন্টারে ব্র্যাক আয়োজিত এক কর্মশালায় এসব তথ্য জানানো হয়। যেখানে ব্র্যাকের পাঁচ বছর মেয়াদি ‘স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেবার জন্য সমন্বিত পুনর্বাসন কর্মসূচি’-এর তথ্য-উপাত্ত এবং নীতিগত সুপারিশগুলো উপস্থাপন করা হয়।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এবং সৈয়দপুর পৌরসভায় অবস্থিত নিম্নআয়ের নগর বসতিগুলোতে বাস্তবায়িত এই কর্মসূচিটি অর্থায়ন করে কিং আবদুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজ প্রোগ্রাম এবং ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইএসডিবি)।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পারস্পরিক অংশিদারত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য ও ওয়াশ এমন একটি খাত যেখানে ১ ডলার বিনিয়োগে ৪.৩ ডলার ফেরত পাওয়া সম্ভব। তিনি প্রকল্পটিতে বৈচিত্র্য আনা বা ভিন্ন কোনো দিক তুলে ধরার প্রস্তাব দেন যা সিটি করপোরেশনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুফল বয়ে আনবে এবং তা নগরবাসীর জীবনমান উন্নয়নেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
সমাপনী বক্তব্যে ব্র্যাকের জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচি, নগর উন্নয়ন কর্মসূচি ও দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির পরিচালক ড. মো. লিয়াকত আলী বলেন, এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য ছিল সাশ্রয়ী মূল্যে পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। তবে এতে মাতৃসেবা, প্রসবপূর্ব ও পরবর্তী সেবা, মাসিক স্বাস্থ্যবিধি, স্যানিটেশন এবং আচরণগত পরিবর্তনের মতো খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লক্ষ্য করা গেছে। এই অর্জনগুলো ভবিষ্যতের নতুন উদ্যোগ গ্রহণ এবং চলমান কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করার ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর মো. আরিফ শহীদ স্বাস্থ্যখাতকে অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার হিসেবে রেখে কমিউনিটির অংশগ্রহণসহ যৌথ অর্থায়নের কাজ করার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। প্রকল্প বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি আগামীতেও এমন আরও উদ্যোগ নেওয়ার আশা প্রকাশ করেন।
ব্র্যাক স্বাস্থ্য কর্মসূচির সহযোগী পরিচালক ডা. শায়লা ইসলাম প্রসব-পরবর্তী সেবা ও যক্ষ্মা রোগ ব্যবস্থাপনায় অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবার মধ্যে সমন্বিতভাবে কাজের বিষয়টিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষণ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। এসব কার্যক্রমের সমন্বয়ের জন্য স্থানীয় সরকার বা সিটি করপোরেশনের নেতৃত্বের গুরুত্ব তুলে ধরে ডা. শায়লা ইসলাম বলেন, স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করে দীর্ঘমেয়াদে আচরণগত পরিবর্তন আনা সম্ভব।
জনস্বাস্থ্য নীতি, পরিকল্পনা ও গবেষণা বিশেষজ্ঞ এবং ভালো অ্যাভান্ট-গার্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাক্তার নাজনীন আখতার জাতীয় নগর স্বাস্থ্য ও ওয়াশ পরিস্থিতি নিয়ে একটি বিশদ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
ঢাকা ও সৈয়দপুরের কমিউনিটি প্রতিনিধিরাও কর্মশালায় অংশ নেন। তারা বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান নগর বস্তিগুলোর স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অংশীদারত্বমূলক আলোচনা ও সম্মিলিত উদ্যোগের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের জোন ২-এর জোনাল এক্সিকিউটিভ অফিসার মো. জিয়াউর রহমান, জোন ৫-এর জোনাল এক্সিকিউটিভ অফিসার এ এন এম বদরুদ্দোজা ও প্রধান সমাজ কল্যাণ ও বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন-উল-হাসান এবং সৈয়দপুর পৌরসভার বর্তমান প্রশাসক মো. নুর-ই-আলম সিদ্দিকী।
জাতীয়
জাইকার কাছে বনভূমিকে ন্যাচার লার্নিং হাবে রূপান্তরের প্রস্তাব পরিবেশ উপদেষ্টার

জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) কাছে দেশের বন সংলগ্ন রিসোর্স সেন্টারগুলোকে ‘ন্যাচার লার্নিং হাব’ এ রূপান্তরের প্রস্তাব দিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় তিনি জাইকার প্রতিনিধি দলকে এ প্রস্তাব দেন। সভায় জাপানি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)-এর নির্বাহী সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মিয়াজাকি কাতসুরা।
বৈঠকে উপদেষ্টা জাইকার সহযোগিতায় বাংলাদেশ ফরেস্ট ইন্ডাস্ট্রিজ ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন (বিএফআইডিসি)-কে আধুনিকায়ন করে পরিবেশবান্ধব আসবাবপত্র উৎপাদন ও নতুন বাজারে প্রবেশের দিকেও গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি, সাফারি পার্কগুলোকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণ এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে বন পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থাকে জোরদার করে অবৈধ কাঠ আহরণ প্রতিরোধেরও আহ্বান জানান। পরিবেশ উপদেষ্টা নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা তুলে ধরে বলেন, সরকারি দপ্তরে সৌরবিদ্যুৎ সংযোগ নিশ্চিত করতে কাজ চলছে।
বৈঠকে পরিবেশ উপদেষ্টা জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড এবং নবগঠিত ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ’ প্ল্যাটফর্মের কথাও উল্লেখ করেন, যার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক জলবায়ু অর্থায়ন কার্যকরভাবে পরিচালিত হবে। পাশাপাশি তিনি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে একটি পৃথক ট্রাস্ট গঠনের প্রস্তাব দিয়ে জাপানের সহযোগিতা কামনা করেন।
মিয়াজাকি কাতসুরা বাংলাদেশের আত্মনির্ভরশীল উন্নয়ন প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানিয়ে জাইকার পক্ষ থেকে ‘জিরো দারিদ্র্য’ ও ‘জিরো বেকারত্ব’-এর বৈশ্বিক লক্ষ্যের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন। তিনি ‘ক্লিন ঢাকা’ প্রকল্পসহ পরিবেশ খাতে জাইকার দীর্ঘমেয়াদি ভূমিকা এবং অভিযোজন কার্যক্রমে তথ্যভিত্তিক পরিকল্পনা, জ্ঞান বিনিময়, জ্বালানি রূপান্তর ও বেসরকারি বিনিয়োগের ওপর চারটি মূল সহায়তা ক্ষেত্র তুলে ধরেন।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ ও অতিরিক্ত সচিব মো. খায়রুল হাসান, প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসেন চৌধুরী এবং জাইকার দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের মহাপরিচালক ইয়ামাদা তেতসুয়া, বাংলাদেশ অফিসের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুচি তোমোহিদে ও সিনিয়র রিপ্রেজেন্টেটিভ মিউরা মারি।