অর্থনীতি
এস আলমের ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার হস্তান্তর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে গভর্নরকে চিঠি
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে ব্যাংক লুটপাটের মূল নায়ক ছিল বিতর্কিত-সমালোচিত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ। কোম্পানিটি গত সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের ঘনিষ্ঠতা এবং রাজনৈতিক ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে নামে-বেনামে ইসলামী ব্যাংকের ৮২ শতাংশ শেয়ার দখল করেছে। অবৈধ উপায়ে দখল করা এসব শেয়ার হস্তান্তরের ওপর নিষেধাজ্ঞার দাবি তুলে এবার গভর্নরকে চিঠি দিয়েছে ব্যাংকটির প্রাক্তন দুই শীর্ষ কর্মকর্তা।
গত ১৫ আগস্ট ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোস্তফা আনোয়ার এবং সাবেক পরিচালক শহীদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি চিঠি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন গভর্নর বরাবার পাঠানো হয়েছে। এতে গভর্নরের কাছে তিনটি দাবির উপস্থাপনের পাশাপাশি ইসলামী ব্যাংকের বিগত দিনের অনিয়ম ও সার্বিক অবস্থা তুলে ধরা হয়। বাংলাদেশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
চিঠিতে তিনটি দাবির কথা উল্লেখ করে বলা হয়, গত কয়েকবছরে এস আলম গ্রুপ নামে বেনামে এবং জোরপূর্বক ক্রয়ের মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংকের ৮২ শতাংশ শেয়ার দখল করেছে। এসব শেয়ার যেন অন্য কোথাও হস্তান্তর করতে না পারে সে ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ইসলামী ব্যাংকের সম্পদ লুটপাটের প্রকৃত চিত্র যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে অবিলম্বে উপস্থাপন করতে হবে। পাশাপাশি এস আলমের নিয়োগকৃত পরিচালনা পর্ষদ বাতিল ঘোষণা করে ২০১৩ সালের মতো সৎ, দক্ষ, যোগ্য ও সক্ষম পেশাদার মানুষের মাধ্যমে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করতে হবে।
জানা যায়, ১৯৮৩ সালের ৩০ মার্চ দেশের এবং দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক হিসেবে কাজ শুরু করে ইসলামী ব্যাংক পিএলসি। যেখানে শুরু থেকেই বিদেশি বিনিয়োগের হার ছিল লক্ষ্যনীয়। প্রতিষ্ঠানকালীন সময়ে ব্যাংকটির মোট মূলধনের সাড়ে ২৮ শতাংশ দেশের বিভিন্ন ব্যক্তি, সংস্থা এবং বাকি সাড়ে ৭১ শতাংশে ছিল বিদেশি উদ্যোক্তাদের অবদান। এতে ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকসহ বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিবর্গও উদ্যোক্তা হিসেবে বিনিয়োগ করেছিল। তবে ব্যাংকটি এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে আসার পর বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ছাড়তে বাধ্য করা হয়।
সূত্র বলছে, ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে ইসলামী ব্যাংকের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনার নিয়ন্ত্রণ নেয় এস আলম গ্রুপ। সেসময় ৭টি অস্তিত্বহীন শেল কোম্পানির মাধ্যমে ব্যাংকের ১৪ শতাংশ শেয়ার ধারণ করে চট্টগ্রামভিত্তিক এ কোম্পানি। পরের বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালে রাজনৈতিক সহযোগিতায় ব্যাংকটিকে দখল করে বসে এস আলম গ্রুপ। ব্যাংক দখলের সময়েও ইসলামী ব্যাংকে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের ৫২ শতাংশ শেয়ার ছিল। তবে পর্ষদে বসে এস আলম গ্রুপের অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারি সিদ্ধান্তে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ব্যাংকের শেয়ার ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।
সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংক নিয়ন্ত্রণে নিলে দেশি ও বিদেশি শেয়ারধারীরা একে একে ব্যাংকটি ছেড়ে চলে যেতে থাকেন। ২০১৭ সালের এপ্রিলে সব শেয়ার বিক্রি করে দেয় স্থানীয় উদ্যোক্তা ইবনে সিনা ট্রাস্ট। এরপর ওই বছরের মে মাসে কিছু শেয়ার বিক্রি করে দেয় আইডিবি। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে ব্যাংকটির শেয়ার ছেড়ে দেয় কুয়েত ফাইন্যান্স হাউস। গত বছরের জুনে শেয়ার ও পরিচালক পদ ছাড়ে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে শেয়ার ও পরিচালক পদ ছাড়ে সৌদি আরবের আরবসাস ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিস্ট এজেন্সি। এর কয়েক মাস পর গত বছরের অক্টোবরে ৩ কোটি ৩৮ লাখ ৪৮ হাজার ৬২৫টি শেয়ার বিক্রি করে দেয় আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থা ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইডিবি)। এমনকি চলতি বছরের জুনের শেষ দিকে হাতে থাকা ৩৪ লাখ শেয়ার বিক্রি করে দেয় ব্যাংকটির আরেক উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার।
জানা যায়, এস আলম গ্রুপ ব্যাংকটি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার আগে বিদেশীদের হাতে থাকা ব্যাংকটির অর্ধেকের বেশি শেয়ারের পরিমাণ বর্তমানে ১৩ শতাংশে নেমে এসেছে। পাশাপাশি ২০১৬ সালে ১৪ শতাংশ শেয়ার ধারণ করা এস আলম গ্রুপ বর্তমানে ৮২ শতাংশ শেয়ারের মালিক। নামে বেনামে কেনা এসব শেয়ারের মাধ্যমে নিজেদের একচ্ছত্র আধিপত্য খাটিয়ে ইসলামী ব্যাংককে শূন্যের কোটায় নামিয়ে এনেছে চট্টগ্রামভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠান।
ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর থেকে জামায়াত-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানই দীর্ঘ সময় ব্যাংকটি পরিচালনায় যুক্ত ছিল। তাতে গত ৩০ বছরে ব্যাংকটির দেশব্যাপী সুনাম, সুখ্যাতি ও আস্থা বৃদ্ধির পাশাপাশি ডিপোজিট, এক্সপোর্ট, ইমপোর্ট, রেমিট্যান্সও বেড়েছে। এমনকি আইনকানুন পরিপালন, গ্রাহককে উত্তম সেবা দেওয়া ও আর্থিক সূচকে অন্য সব ব্যাংককে ছাড়িয়ে গিয়েছিল এই ব্যাংক। কিন্তু এস আলম গ্রুপের কর্তৃত্বে নিয়ম বহির্ভূত ঋণ বিতরণ, অর্থ পাচার, লুটের কারণে ব্যাংকটি তারল্য সংকটে ভুগছে। পাশাপাশি দীর্ঘসময় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ধার করে চলতে হয়েছে। দেশের শীর্ষ বেসরকারি ব্যাংকে এমন লুটপাট চালাতে এস আলমকে সাহায্য করেছে তাদের নিয়োগকৃত কর্মকর্তারা।
সূত্র বলছে, ২০১৬ সালে ইসলামী ব্যাংকে কর্মকর্তা ছিল ১৩ হাজার ৫৬৯ জন। ২০২৩ সালে তা বিশ হাজার ৮০৯ জনে এসে দাঁড়িয়েছে। ব্যাংক দখল করার বিগত বছরগুলো প্রায় ৯ হাজার কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে এস আলম গ্রুপ। নির্দিষ্ট পলিসি, সার্কুলার, লিখিত পরীক্ষা, ভাইভা ছাড়াই নিয়োগ পাওয়া এসব কর্মকর্তার বেশির ভাগই সাইফুল আলমের নিজের এলাকা পটিয়া উপজেলার। স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে ব্যাংকে যুক্ত করানো এসব কর্মকর্তাদের মাধ্যমে এস আলম গ্রুপ প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে। এছাড়া বিভিন্ন উপায়ে ব্যাংক থেকে পাচার করা হয়েছে কোটি কোটি বৈদেশিক মুদ্রা।
অবৈধ ঋণ বিতরণ, অর্থপাচার এবং অর্থ সংকটে ভোগা ইসলামী ব্যাংকের ওপর আস্থা হারিয়েছে আমানতকারীরা। গত এক বছরে ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের আমানত তুলে নেওয়া হয়েছে। একইসাথে দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং ইসলামী ব্যাংকের সংঘর্ষের ঘটনায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। তাতে সরকার পতনের শুরুর কয়েকদিন শেয়ার দর বাড়লেও আবার নিম্নমুখী হয়েছে ব্যাংকটির গতি।
ডিএসই সূত্রে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট ৩২ দশমিক ৬০ পয়সা শেয়ার দরে লেনদেন শেষ করে ইসলামী ব্যাংক। তবে সরকার পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় শেয়ারবাজারের উত্থানের সময়ে ইসলামী ব্যাংকেরও শেয়ারদর বাড়তে থাকে। গত ১২ আগস্ট লেনদেন শেষে ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারদর ছিল ৪৪ টাকা ৬০ পয়সা। তবে এরপর কমতে থাকে ব্যাংকটির শেয়ারদর। আজ শেয়ারের দাম ২ টাকা ১০ পয়সা কমায় ব্যাংকটি দরপতনের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান নিয়েছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রাজউক কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দেওয়ার নির্দেশ
কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে রাজউকের পরিচালক (প্রশাসন) মমিন উদ্দিন একটি অফিস আদেশ জারি করে কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দিতে নির্দেশনা দিয়েছেন।
তিনি জানান, রাজউকের ৯ম গ্রেডে ও তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদের এবং অবশিষ্ট গ্রেড ১০ থেকে অন্য গ্রেডের কর্মকর্তাদের সম্পদ বিবরণী আগামী ৩০ নভেম্বর মধ্যে চেয়ারম্যান দপ্তরে দাখিল করতে হবে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বিটকয়েনের দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ
একটি বিটকয়েনের দাম ১ লাখ ছুইছুই করছে। আজ শুক্রবার বিটকয়েনের দাম ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে ছাড়িয়েছে। এই দাম বিটকয়েনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বিটকয়েনের দাম বাড়তে থাকে। আর্থিক বাজারের প্রত্যাশা, ট্রাম্প প্রশাসন ক্রিপ্টোবান্ধব হবে। খবর রয়টার্সের
এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থাটি বলছে, চলতি বছর বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েনের দাম দিগুণের বেশি হয়েছে। গত ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর বিটকয়েনের দাম ২৫ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহের মধ্যে এটি বেড়েছে ৪৫ শতাংশের বেশি। আজ শুক্রবার একটি বিটকয়েন বিক্রি হয়েছে ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে।
মূল্যবৃদ্ধির দৌড়ে বিটকয়েন পাল্লা দিচ্ছে ইলন মাস্কের টেসলার সঙ্গে। ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে টেসলার শেয়ারের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। বিনিয়োগকারীরা মনে করেছেন, ট্রাম্পের বন্ধুরা এবং যেসব বিষয়ে তার আগ্রহ আছে, সেসব বিষয় তিনি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ভালো করবে।
সিডনির এটিএফএক্স গ্লোবালের প্রধান বাজার বিশ্লেষক নিক টুইডেল বলেন, ‘বিটকয়েনের দাম বাড়ছে ট্রাম্পের জন্যই। কারণ, তিনি এই শিল্পের খুবই সমর্থনকারী। এর মানে হলো, ক্রিপ্টোর মজুত ও মুদ্রা উভয়েইর চাহিদা আরও বাড়বে। নির্বাচনের ফল আসার পর বিটকয়েনের দাম প্রায় রেকর্ড পর্যায়ে ওঠার মানে হলো, এই মুদ্রার ওপরে কেবল খোলা আকাশ রয়েছে।’
গত ১০ নভেম্বর আগের সব রেকর্ড ভেঙ্গে ৮০,০০০ ডলারে পৌঁছে যায়। বিশেষজ্ঞরা রুশ বার্তা সংস্থা তাসকে বলেছেন, বর্তমান বৃদ্ধির পর্যায়ে থাকলে বিটকয়েনের দাম ৩ লাখ ডলারে পৌঁছানোও অবাক করার মতো কিছু হবে না।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারকারীদের মধ্যে জনপ্রিয়তার মাধ্যমে এর দাম ওঠা-নামা করে। ২০০৮ সালের নভেম্বরে সাতোশি নাকামোতো ছদ্মনামে বিটকয়েন কারেন্সি মার্কেটে প্রকাশ করা হয়।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ব্যাংকে কলমানি সুদহার ১০ শতাংশ ছাড়ালো
ব্যাংক খাতে কলমানি সুদহার সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে। সপ্তাহের শেষ দিনে গতকাল বৃহস্পতিবার কলমানি বাজারে এক দিনের জন্য ধার নেওয়া টাকার গড় সুদহার উঠেছে ১০ দশমিক ০৯ শতাংশে। ১৩ নভেম্বর থেকে এই সুদহার ১০ শতাংশ বা তার ওপরে রয়েছে। কলমানি বাজারে সুদহার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এর আগে সাম্প্রতিক সময়ে কলমানি বাজারে এক দিনের জন্য টাকা ধারের ক্ষেত্রে সুদহার ১০ শতাংশের ওপরে ওঠেনি। আবার চার দিন ও সাত দিনের জন্য টাকা ধারের ক্ষেত্রে এই সুদহার আরও বেশি। গতকাল চার দিনের ধারের ক্ষেত্রে গড় সুদহার ছিল সোয়া ১২ শতাংশ। আর সাত দিনের ধারের ক্ষেত্রে এই সুদহার ছিল ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। তবে কলমানিতে বিভিন্ন মেয়াদে ধারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি টাকা লেনদেন হয় এক দিনের ধার হিসেবে।
কলমানি হচ্ছে সরকারি–বেসরকারি ব্যাংকগুলোর নিজেদের মধ্যে টাকা ধার দেওয়া–নেওয়ার একটি ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থায় যেসব ব্যাংকের হাতে নগদ টাকার সংকট থাকে তারা তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটাতে যেসব ব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত তারল্য বা অর্থ থাকে তাদের কাছ থেকে টাকা ধার করে। এ জন্য সুদ দিতে হয়। সুদহার নির্ধারিত হয় চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতে। ব্যাংকগুলো নিজেদের মধ্যে টাকা ধার দেওয়া–নেওয়া করলেও দিন শেষে লেনদেন ও সুদের তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক কলমানি বাজারের প্রতিদিনের লেনদেন ও সুদের তথ্য প্রকাশ করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে ২০১৬ সাল থেকে কলমানি বাজারের তথ্য রয়েছে। সেই তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৬ সালের পর গতকালই প্রথম কলমানিতে এক দিনের ধারের ক্ষেত্রে গড় সুদহার ১০ দশমিক ০৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এদিন এক দিনের জন্য কলমানিতে ১ হাজার ১৩১ কোটি টাকা লেনদেন হয়, যার সর্বোচ্চ সুদহার ছিল ১১ শতাংশ। আর সর্বনিম্ন সুদহার ছিল ৯ দশমিক ৯০ শতাংশ। এক দিনের ধারের ক্ষেত্রে কলমানিতে গড় সুদহার প্রথম ১০ শতাংশে উন্নীত হয় ১৩ নভেম্বর। ওই দিন এই বাজারে এক দিনের জন্য ৩ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল।
ব্যাংকাররা বলছেন, বর্তমানে কিছু ব্যাংক তীব্র তারল্যসংকটে রয়েছে। এসব ব্যাংকের সংকট এতটাই প্রকট যে গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী টাকাও ফেরত দিতে পারছে না। আবার সরকারি ট্রেজারি বিল–বন্ডের সুদহার বেড়ে যাওয়ায় অনেক ব্যাংক বেশি লাভের আশায় কলমানির বদলে বিল–বন্ডে অর্থ বিনিয়োগ করছে। ফলে কলমানিতে টাকা ধার দেওয়া বা এই বাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া ব্যাংকের সংখ্যা কমে গেছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
নন-লাইফ বিমা কোম্পানির সমস্যা নিরসনে বিআইএ’র সভা
দেশের নন-লাইফ বিমা খাতের কোম্পানিগুলোর সমস্যা নিরসনে করণীয় ঠিক করতে মতবিনিময় সভা করেছে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন (বিআইএ)। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাজধানীর নয়া পল্টনে অ্যাসোসিয়েশনের কনফারেস রুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বিভিন্ন নন-লাইফ বিমা কোম্পানির ৪২ জন মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বিআইএ’র নন-লাইফ টেকনিক্যাল সাব-কমিটির আহ্বায়ক ও রুপালী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির উপদেষ্টা পি কে রায়।
অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নাসির উদ্দিন আহমেদ (পাভেল) ও প্রথম ভাইস-প্রেসিডেন্ট হোসেন আখতার সভায় বিশেষভাবে উপস্থিত ছিলেন। নির্বাহী কমিটির সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সৈদয় বদরুল আলম, সৈয়দ শাহরিয়ার আহসান, মো. ইমাম শাহীন।
সভায় মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তারা দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে নন-লাইফ বিমা কোম্পানির সমস্যাসমূহ চিহ্নিত করেন এবং এসব সমস্যা নিরসনের জন্য নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করেন। বিআইএ’র প্রেসিডেন্ট, প্রথম ভাইস-প্রেসিডেন্ট ও নির্বাহী কমিটির সদস্যরা মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের মতামতের ভিত্তিতে পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
মুডিসের রেটিংয়ে সঠিক চিত্র উঠে আসেনি দাবি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের
ঋণমান নির্ণয়কারী মার্কিন এজেন্সি মুডিস রেটিংয়ে বাংলাদেশের আর্থ-রাজনৈতিক অবস্থার সঠিক চিত্র উঠে আসেনি বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি ঋণমান কমানোর মাত্র দুদিনের মাথায় ছটি বেসরকারি ব্যাংকের ঋণমান কমানোর পর বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাতে এমন দাবি করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এতে বলা হয়, দেশের অর্থনীতি ও রাজনীতি একটি বড় রূপান্তরের মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। সরকার এরই মধ্যে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড হাতে নিয়েছে। এর ইতিবাচক ফল পেতে আরও সময় লাগবে। দেশি-বিদেশি অংশীদারদের সমর্থন অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের গতি বাড়াবে।
এর আগে, গত বুধবার (২১ নভেম্বর) ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের ঋণমান কমিয়ে দিয়েছে মুডিস।
একই সময়ে মুডিস ছটি ব্যাংকের এলটি ডিপোজিট বা দীর্ঘমেয়াদি আমানতের রেটিং পূর্বাভাস পরিবর্তন করে স্থিতিশীল থেকে নেতিবাচক করেছে।
এমআই