বিনোদন
‘ভিডিওটা প্রধানমন্ত্রী দেখবে, তারপর তুমি আপলোড করবা’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের পক্ষে ছিলেন দেশের বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় তরুণ সংগীতশিল্পী তাসরিফ খান। কখনো পরোক্ষভাবে আবার কখনো প্রত্যক্ষভাবেই শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সমর্থন জুগিয়েছেন তিনি।
যে কারণে বিভিন্ন মহলের চাপের মুখে পড়তে হয়েছিল এই গায়ককে। সম্প্রতি এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তাসরিফ জানিয়েছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাকে। এমনকি রড দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয় কুড়েঘর ব্যান্ডের ড্রামার শান্তকে।
যেসব ঘটনার পরে নিজ বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন তাসরিফ। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) রাতে এক ফেসবুক পোস্টে সেই লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন তিনি।
‘কিছু নির্মম ইতিহাস টাইমলাইনে থাকুক’ শিরোনামে সেই পোস্টটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘২৩ জুলাই রাত রাত ১টার কথা বলছি। একজন সিনিয়র ইনফ্লুয়েন্সার কল দিয়ে বললেন, ‘তাসরিফ, তোর বাসার নিচে নাম, চা খাইতে আসতেছি, গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা আছে।’
৫ জুলাই থেকে ছাত্রদের পক্ষে বিভিন্ন পোস্ট করা, কবিতা লিখতে থাকা এবং ‘রাজার রাজ্যে সবাই গোলাম’ গানটা ফেসবুকে চলতে থাকায় সরকারি গুণ্ডা বাহিনীর থ্রেটে আমি তখন বাসার বাইরে অবস্থান করছিলাম। ওই সিনিয়র ইনফ্লুয়েন্সারের কথায় বিশ্বাস করে আমি তখন বাসার সামনে আসি উনার সঙ্গে দেখা করতে। গাড়ি থেকে ৬-৭ জনের মতো নেমে আসে। ইনফ্লুয়েন্সার সাহেব আমাকে একটু সাইডে নিয়ে আস্তে করে বুঝিয়ে বলেন, ‘সাথে যারা আছে তারা একটা এজেন্সির লোক এবং আইন প্রয়োগ সংস্থার বাহিনীর কয়েকজনও আছে এখানে।’
আমি তখন উনার কাছে জানতে চাই যে, উনারা কেন এসেছেন, কী চাচ্ছেন মূলত! উনি তখন বুঝায়ে বলেন, ‘সরকারি একটা কাজ আছে, এই সরকার আরও ৭-৮ বছর ক্ষমতায় থাকব। আমরা ঠিকমতো বাঁচতে চাইলে সরকারের পক্ষে কাজ করতে হইব, এর বাইরে কোনো রাস্তা নাই।’
এই কথা বলে উনি (ইনফ্লুয়েন্সার) আবার আমাকে গাড়ির কাছে নিয়ে যান। সেই ৬-৭ জনের মধ্য থেকে একজন আমাকে বলে, ‘তাসরিফ, তোমাকে আমরা চিনি। আমরা তোমাকে একটা স্ক্রিপ্ট দিতেছি, ছোট্ট একটা ভিডিও করতে হবে। এই ভিডিওটা আমাদের কালকের মধ্যে লাগবে। পরশু সরাসরি প্রধানমন্ত্রী এই ভিডিওটা দেখবেন এবং তারপর তুমি আপলোড করবা।’
সেই ইনফ্লুয়েন্সার তাদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে আমাকে বলেন, ‘দেখ তাসরিফ, পিএমের চোখে পড়ার এটাই সুবর্ণ সুযোগ, ভিডিওটা ভালো করে কর, সরকার যতদিন আছে সুবিধা পাবি।’ কথা শেষ করার আগেই উনি পকেট থেকে এক লাখ টাকার তিনটা বান্ডেল, মোট তিন লাখ টাকা আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলেন, ‘এইটা সামান্য ছোট একটা গিফট! টাকা যত চাস, তত দেওয়া হবে, ভিডিওটা সুন্দর কইরা কর।’
ঠিক এই সময় আমার ফোনে আমার ব্যান্ডের ড্রামার শান্তর নম্বর থেকে একটা কল আসে। ফোন রিসিভ করতেই শান্ত আমাকে কাঁদতে কাঁদতে বলে, ‘তাসরিফ! পাঁচ-ছয়জন পুলিশ এবং সিভিল ড্রেসের কয়েকজন মিলে আমাকে রোল দিয়া সারা শরীরে মারছে!’
শান্তর কথা শুনে আমার হাত-পা একরকম কাঁপতে থাকে। আমি বোঝার চেষ্টা করি, এই মাইর খাওয়াটা কি আমাকে এদিকে রাজি করানোর জন্য ভয় দেখানো? নাকি কেবলমাত্র একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা? শান্তর লাইন কেটে যায়।
আমি আমার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পরিচয় দেওয়া তাদেরকে বলি, ‘ভাই, এইমাত্র কয়েকজন মিলে আমার ভাই, আমার ব্যান্ডের ড্রামার শান্তকে প্রচুর মারছে!’ ওরা জাস্ট আমাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলে, ‘আরেহ! দেশের যে অবস্থা, এটা এখন কিছু করা যাবে না। ওরে বলো বাসায় চলে যাইতে।’
আমার তখন মাথায় আসে, এখন যদি আমি ওদেরকে টাকা ফিরিয়ে দিই অথবা কাজ করতে অস্বীকৃতি জানাই, তবে তারা আমাকে চাইলেই গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে ভিডিও করে জোরপূর্বক আপলোড করাতে পারে। আমি তাই মাথা ঠাণ্ডা করে ওদেরকে বলি ঠিক আছে আমি দেখতেছি কী করতে পারি, কালকের মধ্যে জানাচ্ছি। ওরা আমাকে তখনও একরকম থ্রেট দিয়ে বলে, ‘ভাই জানাচ্ছির সুযোগ নাই! সিচুয়েশন তো বুঝেনই। ভিডিও কালকেই লাগবে।’ সাথে ওই ইনফ্লুয়েন্সারও আমাকে বলে, ‘তাসরিফ, ভিডিওটা তো পিএম দেখবে সো বুইঝা-শুইনা সুন্দর কইরা করিস।’
ওদের সাথে কথা শেষ করে আমি বাসায় ফেরত যাই। বাসায় সবাইকে সব সিচুয়েশন জানিয়ে আমি আমার ম্যানেজার আয়মান সাবিতকে ফোন দিয়ে বলি, ‘আয়মান, আমি বাসা ছেড়ে দিচ্ছি, এই এই ঘটনা ঘটছে। আমি তোকে নম্বর দিচ্ছি, তুই ওই এজেন্সিকে আমার বাসা থেকে তিন লাখ টাকা নিয়ে ওদেরকে দিয়ে দিবি কালকেই। আমি আপাতত বাসা ছেড়ে চলে যাচ্ছি, কারণ আমি বাসায় থাকলে ওরা আমাকে তুলে নিয়ে যাবে।’
ওই সময় আমার মনের অবস্থা আমি জানি। আমার বাসার অবস্থা, ডায়াবেটিসের রোগী আমার আম্মুর অবস্থা, আব্বুর টেনশন, গুম হয়ে যাওয়ার চিন্তা এবং দেশের সাথে বেইমানি করতে ওরা আমাকে বাধ্য করতে চাচ্ছে। সব কিছুই আমার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। সাথে বারবার আমার কানে বাজছে শান্তর ওই কান্না ভরা আর্তনাদ।
কষ্টের ব্যাপার কী জানেন? এই ঘটনার ঘণ্টাখানেক আগে শান্ত আমাকে ফোন দিয়ে বলছিল, ‘খান, আমার বাসায় আম্মা নাই। এদিকে কারফিউ চলছে, দুপুরের খাওয়া হয় নাই, একটা দোকানও খোলা নাই আমার প্রচণ্ড ক্ষুধা লাগছে, কী করব?’ আমি শান্তকে বলছিলাম, ‘এক বড় ভাই ফোন দিয়েছে, আমার বাসার সামনে যাওয়া লাগছে, তো তুমি আমার বাসায় চইলা আসো, দুই ভাই একসাথে খাব।’
ছেলেটা চেয়েছিল আমার বাসায় এসে ভাত খাইতে অথচ তাকে রাস্তায় বেধড়কভাবে মাইর খাইতে হইল। মার খাওয়ার পরে ফোনকলে ও আমাকে এটাও বলছিল যে, ‘খান! সবাই আমারে একসাথে রোল দিয়ে মারতেছিল আর একজন বন্দুক তাক করে চিল্লায়ে বলছিল, চুপচাপ মাইর খা অমুকের পোলা নাইলে গুলি কইরা মাইরা ফালামু, লাশ খুঁজে পাইব না তোর পরিবার!’
শান্ত এই কথাটা বলতে বলতে কাঁদতেছিল যে, ‘আমাকে ছাত্র বইলা বইলা ওরা মারছে আর বারবার বলতেছিল যে এই অমুকের পোলা ছাত্র! ওরে মার!’ ওই রাতে আমি বাসা থেকে পালিয়ে যাই।
আমি জানি কয়েকটা পোস্ট, কবিতা লেখা আর ‘রাজার রাজ্যে সবাই গোলাম’-এর মতো কিছু গান করা ছাড়া দেশের জন্য তেমন কিছুই করতে পারি নাই। আমি জানি, আমি আবু সাঈদের মতো পথে গিয়ে বুক পেতে দিতে পারি নাই। হয়তোবা এতটুকু সাহস আমার তখন হয় নাই। তবে, আল্লাহ জানেন আর আমি জানি, আমি টাকার কাছে বিক্রি হয় নাই আর দেশের সাথে বেইমানি করি নাই।
এই পোস্ট, পোস্টে শান্তর ছবিগুলো এবং ওদের নির্মমতার কথাগুলো আমি লিখে পোস্ট করছি এই কারণে, যেন ভবিষ্যতে কখনও এই স্বৈরাচারের প্রতি আমার ঘৃণা এতটুকু পরিমাণও কমে না যায়।’

বিনোদন
করোনায় মারা গেলেন জনপ্রিয় অভিনেতা কেনেথ কলি

ফের বিনোদন অঙ্গনে শোকের ছায়া। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন যুক্তরাজ্য চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা কেনেথ কলি। গত ৩০ জুন অ্যাশফোর্ডে নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
অভিনেতার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন তার এজেন্ট জুলিয়ান ওউয়েন। তিনি জানান, অভিনেতা কেনেথ কলি সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। এরপর হঠাৎ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সবাইকে ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন।
অভিনেতার এজেন্ট ওউয়েন বলেন, একটি সড়ক দুর্ঘটনায় আহাত হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর দ্রুত তিনি কোভিডে সংক্রমিত হন। যা পরে নিউমোনিয়ায় রূপ নেয়। করোনা ও নিউমোনিয়ায় কারণে মৃত্যুবরণ করেন কলি।
১৯৭০ সালে টেলিভিশন অভিনয়ের মাধ্যমে শোবিজ অঙ্গনে পা রাখা কেনেথ ১৯৮০ সালের ‘স্টার ওয়ার্স’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত পান। ১৯৮৩ সালের ‘রিটার্ন অফ দ্য জেডি’ সিনেমায় অ্যাডমিরাল পিয়েট চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তারকা খ্যাতি পান।
দীর্ঘ ছয় দশকের অভিনয়জীবনে কেনেথ কোলি একাধারে ব্রিটিশ চলচ্চিত্র, টেলিভিশন ও মঞ্চে অভিনয় করে গেছেন। ‘দ্য জোকার’, ‘পারফরমেন্স’, ‘দ্য মিউজিক লাভারস’, ‘ফাইয়ার ফক্স’,‘এ সামার স্টোরি’, ‘দ্য রেইনবো’, ‘দ্য লাস্ট আইসল্যান্ড’, ‘স্যাডো রান’-এর মতো জনপ্রিয় সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। অভিনয়ের পাশাপাশি ২০০৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘গ্রিটিংস’ সিনেমাটি পরিচালনা করেন।
বিনোদন
হিরো আলমের আত্মহত্যার চেষ্টা

আলোচিত-সমালোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। বগুড়ার ধুনট উপজেলায় বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ঘুমের ওষুধ সেবন করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে জানা গেছে।
শুক্রবার (২৭ জুন) দুপুর ১২টায় অচেতন অবস্থায় ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন তার বন্ধু। তবে চিকিৎসক বলেছেন হিরো আলম শঙ্কামুক্ত রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হিরো আলম বগুড়া থেকে বৃহস্পতিবার রাত ৩টায় উপজেলার যমুনা নদীর তীরে ভান্ডারবাড়ি গ্রামে তার বন্ধু নাট্যকর জাহিদ হাসান সাগরের বাড়ি বেড়াতে আসেন। রাতে দুই বন্ধুর মধ্যে রিয়া মনিকে নিয়ে অনেক আলাপ আলোচনা হয়। তারপর দুই বন্ধু পৃথক বিছানায় ঘুমিয়ে পড়েন। এরপর শুক্রবার বেলা ১১টায় হিরো আলমকে ঘুম থেকে ডেকে তুলতে পারেননি তার বন্ধু। এ সময় হিরো আলমের বালিশের পাশে ঘুমের ওষুধ পড়ে থাকতে দেখেন। তখন তার বন্ধু জাহিদ হাসান সাগর তাকে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন।
এ বিষয়ে হিরো আলমের বন্ধু জাহিদ হাসান সাগর বলেন, দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিরো আলম রাতে আমার বাড়িতে বেড়াতে এসে রিয়া মনিকে নিয়ে অনেক হতাশার কথা বলেন। হিরো আলম জানান, যেখানে যান সেখানে লোকজন তাকে বিরক্ত করেন। নানান প্রশ্ন করেন। একটু নিরিবিলি সময় কাটানোর জন্য আমার বাড়িতে এসেছেন। আমার ধারণা রিয়ামনিকে না পাওয়ার হতাশা থেকেই সে ঘুমের ওষুধ সেবন করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। আমি তাকে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসেছি।
ধুনট উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. মনিরুজ্জামান বলেন, ঘুমের ওষুধ সেবন করে হিরো আলম অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে এসেছেন। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দিয়ে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। কিন্তু তার লোকজন এখান থেকে তাকে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন না। তবে হিরো আলম শঙ্কামুক্ত আছেন।
বিনোদন
অভিনেতা সমু চৌধুরী মানসিক ভারসাম্যহীন নন, মাজারভক্ত: চিকিৎসক

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের মুখী শাহ্ মিসকিন মাজারের কাছে অভিনেতা সমু চৌধুরীকে শুধু গামছা পরে শুয়ে থাকতে দেখা যায়। তার এই ছবি দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অনেকে তাকে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ বলে ভুল ধারণা করেন। তবে, চিকিৎসকদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ আছেন এবং তিনি কোনো মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভুগছেন না। মূলত, তিনি একজন মাজারভক্ত এবং ধ্যানের উদ্দেশ্যে মাজারে এসেছিলেন।
উদ্ধার ও চিকিৎসকদের বক্তব্য:
ছবি ভাইরাল হওয়ার পর দ্রুত সমু চৌধুরীকে নিকটস্থ পাগলা থানার মাধ্যমে উদ্ধার করা হয়। গফরগাঁও উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন বৃহস্পতিবার (১২ জুন) রাতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ডা. জামাল উদ্দিন জানান, “সমু চৌধুরী দেশের একজন বিশিষ্ট অভিনয়শিল্পী। হঠাৎ করে মশাখালি ইউনিয়নের জয়নাল আবেদীন মাজারে তাকে অস্বাভাবিক হিসেবে দেখতে পায় স্থানীয় জনতা। পরে গণমাধ্যমের সংবাদে বিষয়টি ভাইরাল হলে আমাদের নজরে আসে। উপজেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে আমিসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি টিম তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করি।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা সেখানে উপস্থিত হয়ে সমু চৌধুরীর সাথে দীর্ঘ এক ঘণ্টা কথা বলি। এ সময় তাকে বেশ সুস্থ সাবলীল মনে হয়েছে। তিনি অতীতের কথা মনে করতে পারছেন। তাকে দেখে মোটেও পাগল বা মানসিক ভারসাম্যহীন মনে হয়নি। আমাদের সামনে তিনি তার পরিবারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেছেন।”
মাজারভক্ত হিসেবে পরিচিতি:
স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরও জানান, অভিনেতা সমু চৌধুরী একজন মাজারভক্ত মানুষ। তিনি নিজেই চিকিৎসকদের নিশ্চিত করেছেন যে, তিনি এর আগেও একাধিকবার এই মাজারে এসেছেন এবং এই এলাকার রাস্তাঘাটও তিনি ভালো করে চেনেন। তার বাড়ি যশোর জেলায় এবং তিনি পরিবারসহ ঢাকায় থাকেন। গতকাল সোহরাওয়ার্দী এলাকা থেকে তিনি এই মাজারের উদ্দেশে রওনা দেন। কাজের ফাঁকে ফাঁকে তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানের মাজার ভ্রমণ করেন। মাজারে এসে এই অভিনেতা প্রশান্তি পান এবং মূলত ধ্যান করার জন্যই তিনি মাঝে মাঝে মাজারে আসেন।
পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ ও বর্তমান অবস্থান:
ডা. মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন জানান, পরিবারের লোকদের সাথে কথা হয়েছে এবং তারা ঢাকা থেকে রওনা দিয়েছেন। বর্তমানে সমু চৌধুরী মাজারেই অবস্থান করছেন। পরিবারের সদস্যরা এলে তিনি তাদের সাথে ঢাকায় ফিরে যাবেন বলে জানিয়েছেন। ডাক্তার এবং স্থানীয় প্রশাসনের সামনে তিনি তার জীবনের অনেক স্মৃতিচারণ করেছেন এবং কবিতা আবৃত্তিসহ তার বিভিন্ন অভিনয়শিল্পও দেখিয়েছেন। তিনি পরিবারের সকলের সাথে তাদের সামনে ফোনে কথা বলেছেন, যা প্রমাণ করে তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন নন।
পাগলা থানার বক্তব্য:
পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফেরদৌস আলম জানান, “অভিনেতা সমু চৌধুরী একজন সুস্থ-সবল মানুষ। মাজারে মাজারে ঘুরে বেড়ানোই তার নেশা। বুধবার রাতে এই মাজারে এসে তিনি ধ্যানে লিপ্ত ছিলেন। যেহেতু এক কাপড়ে তিনি ঢাকা থেকে এখানে এসেছেন, সকালবেলা গোসল করার পর তার কোনো কাপড় ছিল না। ফলে গামছা পড়ে তিনি একটি গাছের নিচে শুয়ে ছিলেন। এই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে গণমাধ্যম এবং ফেসবুকে তাকে নিয়ে ভুল সংবাদ প্রচারিত হয়।”
তিনি আরও জানান, তার পরিবারের লোকজন তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য রওনা হয়েছে। প্রশাসন এবং চিকিৎসকদের উপস্থিতিতে তাকে ভালো পরিবেশে থাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তিনি জানিয়েছেন আপাতত মাজারেই অবস্থান করবেন এবং পরিবারের সদস্যরা এলে ঢাকায় ফিরে যাবেন।
বিনোদন
আমি গুরুতর অসুস্থ, চিকিৎসকের নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছি: ফারিয়া

ঢালিউডের আলোচিত অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ে রাজধানীর ভাটারা থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন। গত রোববার (১৮ মে) শেখ হাসিনার মতো দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ড যাওয়ার সময় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয় অভিনেত্রীকে। ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ভাটারা থানায় হস্তান্তর করে। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান।
জামিনের মুক্তির পর পর্দার হাসিনা সামাজিক মাধ্যমেও কয়েক দিন নীরবতা পালন করেন। শেষে আজ শুক্রবার (২৩ মে) দুপুর দেড়টার দিকে সামাজিক মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে অভিনেত্রী লিখেছেন— আমি জানি, আপনারা অনেকেই আমার খোঁজখবর, সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য বারবার চেষ্টা করছেন। আপনাদের ভালোবাসা ও উদ্বেগ আমাকে সত্যিই ছুঁয়ে যাচ্ছে।
নুসরাত ফারিয়া বলেন, তবে অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাতে হচ্ছে- বর্তমানে আমি গুরুতর অসুস্থতায় ভুগছি এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছি। চিকিৎসার অংশ হিসেবে এখন কিছু সময়ের জন্য বাইরের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে—ফোন ব্যবহারের ওপরও রয়েছে কড়াকড়ি নিষেধাজ্ঞা বলে জানান অভিনেত্রী।
তিনি বলেন, এ পরিস্থিতিতে কারও সঙ্গে কথা বলতে না পারার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আশা করি, আপনারা বিষয়টি বুঝবেন।
নুসরাত বলেন, আমি বিশ্বাস করি, এই কঠিন সময়টা দ্রুতই পেরিয়ে আবার সুস্থভাবে আপনাদের মাঝে ফিরে আসতে পারব।
অভিনেত্রী বলেন, গত কয়েক দিন ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে দুঃসহ ও সংবেদনশীল সময়। মানসিক ও শারীরিকভাবে অনেকটাই ভেঙে পড়েছিলাম। কিন্তু আপনাদের ভালোবাসা, সমর্থন ও সাহচর্য আমাকে এগিয়ে চলার শক্তি দিয়েছে।
কৃতজ্ঞতা জানিয়ে নুসরাত বলেন, আপনাদের সবার প্রতি—আপামর জনসাধারণের প্রতি আমি হৃদয়ের গভীর থেকে কৃতজ্ঞ।
সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানিয়ে অভিনেত্রী বলেন, বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই— সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের বন্ধুদের, যাদের মানবিকতা ও ইতিবাচক ভূমিকাটি এই সময়ে আমার জন্য ছিল অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ও অনুপ্রেরণাদায়ক। আপনারা পাশে না থাকলে হয়তো এত দ্রুত নিজের ভেতরের সাহস খুঁজে পেতাম না। আমি আজীবন মনে রাখব এই ভালোবাসা ও নিরন্তর সহমর্মিতার কথা। সবার প্রতি রইল আন্তরিক ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা। খুব শিগগিরই আবার দেখা হবে বলে জানান নুসরাত ফারিয়া।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত বছরের ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত ভারতেই অবস্থান করছেন স্বৈরাচার আওয়ামী নেত্রী। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দেশ পরিচালনা হচ্ছে।
সেই আন্দোলন চলাকালীন রাজধানীর ভাটারা থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা থাকায় গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল ঢালিউড অভিনেত্রী পর্দার হাসিনা নুসরাত ফারিয়ার বিরুদ্ধে। ওই মামলায় তাকে আটক করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সরকারের সংশ্লিষ্ট ২৮৩ জন ও অজ্ঞাতনামা তিন-চারশজনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলাটি করেছেন এনামুল হক। মামলায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের অর্থ জোগানদাতা হিসেবে আসামি করা হয় অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে।
এ ছাড়া ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ সিনেমায় শেখ হাসিনার চরিত্রে অভিনয় করে আলোচনা ও সমালোচনা দুই-ই যোগ করেন ক্যারিয়ারে। এটি তার জীবনে সিনেমাপ্রেমীদের বিভক্তি গড়ে দেয়। শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীনির্ভর সিনেমা ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ ২০২৩ সালের ১৩ অক্টোবর দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। এ সিনেমাটি পরিচালনা করেন ভারতের খ্যাতিমান পরিচালক শ্যাম বেনেগাল। এ সিনেমায় শেখ মুজিবুর রহমানের চরিত্রে অভিনয় করেন চিত্রনায়ক আরিফিন শুভ। ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের চরিত্রে নুসরাত ইমরোজ তিশা এবং শেখ হাসিনা চরিত্রে অভিনয় করেন নুসরাত ফারিয়া।
শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর পর্দার শেখ হাসিনাও দেশ ছাড়ছিলেন। তবে হাসিনা ভারতে আশ্রয় নিলেও নুসরাত ফারিয়ার গন্তব্য ছিল থাইল্যান্ডে।
বিনোদন
নারী নির্যাতনের অভিযোগে গায়ক নোবেল গ্রেপ্তার

নারী নির্যাতনের মামলায় গায়ক মাইনুল আহসান নোবেলকে গ্রেপ্তার করেছে ডেমরা থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার (২০ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
ডেমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, সোমবার (১৯ মে) রাতে রাজধানীর ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার এলাকা থেকে নোবেলকে আটক করা হয়। আজ তাকে আদালতে হাজির করা হবে।
রিমান্ড সংক্রান্ত প্রশ্নে ওসি বলেন, আপাতত রিমান্ডের আবেদন করা হচ্ছে না, তবে পরে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক নারীকে মারধর করে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছেন নোবেল। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর ভুক্তভোগী নারী থানায় অভিযোগ করেন। তিনি ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী। বর্তমানে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসা ও সহায়তার জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, গত সাত মাস ধরে নোবেল ওই নারীকে ধর্ষণ করে আসছিলেন।
এসএম