অর্থনীতি
এনবিআরের নতুন চেয়ারম্যান আবদুর রহমান

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আবদুর রহমান খানকে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বুধবার (১৪ আগস্ট) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আলমগীর কবির সই করা প্রজ্ঞাপন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে আজই এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমেন সঙ্গে সরকারের সম্পাদিত চুক্তিপত্রের অনুচ্ছেদ-৭ অনুযায়ী সিনিয়র সচিব, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান পদে তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিল করা হলো।
এনবিআরের নতুন চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একাউন্টিং বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন এবং যুক্তরাজ্যের আলস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গভর্মেন্ট ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে পোস্ট গ্রাজুয়েশন সার্টিফিকেট কোর্স, পোস্ট গ্রাজুয়েশন ডিপ্লোমা ও মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। এছাড়াও তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল এন্ড আফ্রিকান স্টাডিজ থেকে পাবলিক ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট: ইন্টারন্যাশনাল পাবলিক সেক্টর অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড শীর্ষক মাস্টার্স পর্যায়ের শর্ট কোর্স সম্পন্ন করেন।
জানা যায়, বিসিএস ১৩-তম ব্যাচের এই কর্মকর্তা ১৯৯৪ সালের ২৫ এপ্রিল বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (কর) ক্যাডারে যোগদান করেন এবং মাঠ পর্যায়ের কর প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে কাজ করার অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। তিনি সহকারী কমিশনার (কর), উপ- কমিশনার (কর), যুগ্ম কমিশনার (কর), কর পরিদর্শন পরিদপ্তরের উপ-মহাপরিচালক, বিসিএস কর একাডেমির পরিচালক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রথম সচিব পদে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি সরকারের উপসচিব হিসেবে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে এবং উপসচিব, যুগ্মসচিব ও অতিরিক্ত সচিব হিসেবে অর্থ বিভাগে দায়িত্ব পালন করেছেন।
অর্থ বিভাগে কর্মরত থাকাকালীন তিনি বাজেট, বাস্তবায়ন, প্রশাসন এবং ট্রেজারি ও ঋণ ব্যবস্থাপনা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বাজেট বাস্তবায়নে তার মেধা ও প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের আর্থিক খাতে সংস্কার আনয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। এছাড়া সিভিল সার্ভিসের গন্ডির বাহিরে তিনি জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভাইজার এবং পূর্ব তিমুরে বিশ্বব্যাংকের কনসালটেন্ট হিসেবে পেট্রোলিয়াম ট্যাক্স নিয়ে কাজ করেছেন।
আবদুর রহমান খান ইনস্টিটিউট অব কস্ট এন্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের কাউন্সিল সদস্য, কোষাধ্যক্ষ, সচিব ও প্রেসিডেন্ট হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি পেশাদার অ্যাকাউন্ট্যান্টদের বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। বর্তমানে তিনি সাউথ এশিয়ান ফেডারেশন অব অ্যাকাউন্ট্যান্টসের নন-প্রফিট অর্গানাইজেশন এন্ড কো-অপারেটিভ কমিটির চেয়ারম্যান এবং কনফেডারেশন অব এশিয়া এন্ড প্যাসিফিক অ্যাকাউন্ট্যান্টসের পাবলিক সেক্টর অ্যাডভাইজরি গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া তিনি এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশের আজীবন সদস্য।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সাবেক এই সচিব দেশে-বিদেশে অনেক খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন মেয়াদে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিনি আইএমএফ সিঙ্গাপুর রিজিওনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (এসটিআই), অস্ট্রেলিয়ার দ্যা ল’ স্কুল অব ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটি, ন্যাশনাল ট্যাক্স কলেজ অব জাপান, অস্ট্রেলিয়ার ম্যাককুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাবলিক ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট, পাবলিক পলিসি ও অ্যাডমিনিস্টেশন, ট্যাক্স পলিসি ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
এমআই

অর্থনীতি
১৫ শতাংশ কমিয়ে বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ২০ শতাংশ

বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ কমিয়ে ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ হার যুক্তরাষ্ট্রের সময় অনুযায়ী শুক্রবার (১ আগস্ট) থেকে কার্যকর হবে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শুল্ক নিয়ে হোয়াইট হাউসের এক ঘোষণায় এই পরিমাণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তালিকায় বাংলাদেশ ছাড়াও আরও কয়েকটি দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করা হয়।
হোয়াইট হাউসের নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশ অন্য দেশগুলোর মধ্যে পাকিস্তানের ওপর ১৯ শতাংশ, আফগানিস্তানের ওপর ১৫ শতাংশ, ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ, ব্রাজিলের ওপর ১০ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার ওপর ১৯ শতাংশ, মালয়েশিয়ার ওপর ১৯ শতাংশ, মিয়ানমারের ওপর ৪০ শতাংশ, ফিলিপাইনের ওপর ১৯ শতাংশ, শ্রীলঙ্কার ওপর ২০ শতাংশ, ভিয়েতনামের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ওয়াশিংটন।
এর আগে, চলতি বছরের ২ এপ্রিল বাণিজ্য ঘাটতির কথা উল্লেখ করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর উচ্চহারে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তখন বাংলাদেশের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর বাংলাদেশের আরোপকৃত শুল্কের হার ৭৪ শতাংশ। এ জন্য বাংলাদেশের ওপর ওই পাল্টা শুল্ক আরোপ করা হয়। যা আজ ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল।
পরে ৯ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের ওপর ওই শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। এ সময় শুল্ক নিয়ে আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিভিন্ন দেশকে আলোচনার সুযোগ দেয় ওয়াশিংটন। যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক নিয়ে তৃতীয় দফার আলোচনা শুরু হয়েছে গত ২৯ জুলাই।
আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষে যার নেতৃত্বে ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) দপ্তরের সঙ্গে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী আলোচনা শেষে উভয়পক্ষ যৌথভাবে এ বিষয়ে ঘোষণা দেন।
অর্থনীতি
আগস্টের জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণ

আগস্ট মাসের জন্য জ্বালানি তেলের দাম অপরিবর্তিত রেখে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। যা কার্যকর হবে আগামী ১ আগস্ট থেকে।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) এক বিজ্ঞপ্তিতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, আগস্ট মাসের জন্য জ্বালানি তেলের বিদ্যমান দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। বৈশ্বিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যের হ্রাস-বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশে স্বয়ংক্রিয় প্রাইসিং ফর্মুলার আলোকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো ভোক্তাপর্যায়ে জ্বালানি তেলের সরবরাহ তুলনামূলক সাশ্রয়ী দামে নিশ্চিত করা।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগস্ট মাসে ডিজেল প্রতি লিটার ১০২ টাকা, কেরোসিন ১১৪ টাকা, অকটেন ১২২ টাকা এবং পেট্রোল ১১৮ টাকায় বিক্রি হবে।
বৃহস্পতিবার জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়। যা কার্যকর হবে ১ আগস্ট থেকে।
অর্থনীতি
বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা কমালো কেন্দ্রীয় ব্যাংক

২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রথমার্ধে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কিছুটা কম। এর আগের ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৮ শতাংশ। অপরদিকে, সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২০ দশমিক ৪ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে এ তথ্য জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সংবাদ সম্মেলনে ডেপুটি গভর্নর, নীতিনির্ধারক পরামর্শক, প্রধান অর্থনীতিবিদ, গবেষণা বিভাগের পরিচালক এবং মুখপাত্র ও সহকারী মুখপাত্ররা উপস্থিত ছিলেন।
গত জানুয়ারিতে ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৮ শতাংশ, তবে জুন শেষে অর্জিত হয়েছে মাত্র ৬ দশমিক ৪০ শতাংশ। এর আগের ডিসেম্বরেও প্রায় একই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও অর্জিত প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ।
সরকারি খাতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারিত হয়েছে ২০ শতাংশ। গত অর্থবছরে এ হার ছিল ১৯ দশমিক ৮০ শতাংশ, কিন্তু বাস্তবে অর্জন হয়েছে ১৫ দশমিক ২৫ শতাংশ।
মুদ্রা সরবরাহের দিক থেকেও সামান্য বাড়তি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ডিসেম্বর পর্যন্ত মুদ্রা সরবরাহের প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ ধরা হয়েছে, যা আগের ৮ দশমিক ৪০ শতাংশ থেকে সামান্য বেশি। তবে মে মাস পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী, বাজারে বাস্তব মুদ্রা সরবরাহ ছিল ৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ভাষ্য অনুযায়ী, ডলার কেনার মাধ্যমে বাজারে মুদ্রা সরবরাহ বেড়েছে। সেইসঙ্গে কিছু দুর্বল ব্যাংককে বিশেষ সহায়তা হিসেবে ঋণ দেওয়া হয়েছে, যার ফলে সামগ্রিক অর্থ সরবরাহ কিছুটা বেড়েছে।
অর্থনীতি
নীতি সুদহার ১০ শতাংশ বহাল রেখেই নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা

মূল্যস্ফীতির হার কমে এসে গত জুনে ৩৫ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে পৌঁছেছে। একই সময়ে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধিও কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৬ দশমিক ৪০ শতাংশে। এমন প্রেক্ষাপটে ব্যবসায়ীরা সুদহার কমিয়ে বিনিয়োগে উৎসাহ দিতে আহ্বান জানান। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক আপাতত প্রধান নীতি সুদহার (রেপো) অপরিবর্তিত অর্থাৎ ১০ শতাংশে বহাল রেখেছে। চলতি (২০২৫-২৬) অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে এ সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। সংবাদ সম্মেলনে ডেপুটি গভর্নর, নীতিনির্ধারক, পরামর্শক, প্রধান অর্থনীতিবিদ, গবেষণা বিভাগের পরিচালক এবং মুখপাত্র ও সহকারী মুখপাত্ররা উপস্থিত ছিলেন।
গভর্নর বলেন, যতক্ষণ না মূল্যস্ফীতির হার ৭ শতাংশের নিচে স্থায়ীভাবে নেমে আসে, ততদিন নীতি রেপো হার ১০ শতাংশ নির্ধারণ থাকবে। এছাড়া স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটির হার ১১ দশমিক ৫ শতাংশ এবং স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটির হার ৮ শতাংশ বজায় রাখা হবে।
চলতি মুদ্রানীতিতেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণই প্রধান অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে আগামী বছরের জুন নাগাদ গড় মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫০ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বশেষ ২০২৪ সালের ২২ অক্টোবর রেপো সুদহার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ১০ শতাংশে উন্নীত করে। রেপোর মাধ্যমে ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে সরকারি সিকিউরিটিজ বন্ধক রেখে স্বল্পমেয়াদি ঋণ নেয়।
নতুন মুদ্রানীতিতে স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটির হারও আগের মতো ১১ দশমিক ৫০ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। তবে, ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে অর্থ রাখলে যে সুদ পায়- সেই স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটির হার গত ১৫ জুলাই ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ৮ শতাংশে নামানো হয়।
অর্থনীতি
সাইবার হামলার আশঙ্কা, সতর্ক করলো বাংলাদেশ ব্যাংক

আসন্ন দিনগুলোতে দেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো, বিশেষ করে ব্যাংক ও আর্থিক খাতে সম্ভাব্য সাইবার হামলার আশঙ্কা রয়েছে বলে সতর্ক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরই মধ্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে একটি জরুরি নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটিডি) বিভাগ থেকে পাঠানো ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সাইবার হামলার মাধ্যমে ব্যাংক, স্বাস্থ্যসেবা, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে। এতে করে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো হুমকির মুখে পড়তে পারে।
প্রতিরোধে যা করতে বলা হয়েছে
বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশনায় সাইবার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে-
সার্ভার, ডেটাবেইস ও সিস্টেমসমূহে প্রয়োজনীয় সিকিউরিটি প্যাঁচ আপডেট করা, অপ্রয়োজনীয় পার্ট বন্ধ রাখা এবং ন্যূনতম অ্যাক্সেস সুবিধা নিশ্চিত করা, ডেটা ব্যাকআপ নিশ্চিত করা ও ৩-২-১ ব্যাকআপ কৌশল অনুসরণ, সমস্ত স্তরে (ট্রানজিট, রেস্ট ও প্রসেস) ডেটা এনক্রিপশন, গুরুত্বপূর্ণ সিস্টেমে মাল্টি-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন চালু, সন্দেহজনক কার্যক্রম যেমন lateral movement, DDoS, ও ডেটা চুরি শনাক্তে SIEM ও NIDS ব্যবহারের নির্দেশ, EDR (Endpoint Detection and Response) ও অন্যান্য সিকিউরিটি টুল ব্যবহারের পাশাপাশি থ্রেট সিগনেচার নিয়মিত আপডেট, সুনির্দিষ্ট Incident Response Plan প্রস্তুত রাখা।
এছাড়া সন্দেহজনক লগইন, অজানা ফাইল পরিবর্তন, রিমোট অ্যাকসেস ও প্রিভিলেজড অ্যাকাউন্টগুলো বিশেষভাবে নজরে রাখা, কোনো ধরনের Indicators of Compromise (IOCs) পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ ও বাংলাদেশ ব্যাংকে অবহিত করা, ২৪/৭ ভিত্তিতে সিকিউরিটি অপারেশনস সেন্টার মনিটরিং, উচ্চ পর্যায়ের রেজিলিয়েন্স নিশ্চিত করতে লোড ব্যাল্যান্সার, ফলোব্যাক প্ল্যান, বিজনেস কন্টিনিউইটি প্ল্যান ও ডিজাস্টার রিকভারি প্ল্যান বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, এই নির্দেশনা অনুসরণ করলে দেশের ব্যাংক ও আর্থিক খাত সম্ভাব্য সাইবার হুমকি থেকে নিজেদের রক্ষা করতে সক্ষম হবে। ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন ও দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পুনরায় অনুরোধ জানায় আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটি।