এগ্রিবিজনেস
পেঁয়াজ সংরক্ষণে গবেষণায় সাফল্য, কমবে দাম
মসলাজাতীয় ফসলের মধ্যে অন্যতম পেঁয়াজ। দেশে প্রতিবছর অসংখ্য পেঁয়াজ পচে যায়। এতে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে এবার এক গবেষণায় পেঁয়াজ সংরক্ষণে সাফল্য এসেছে।
গত কয়েক বছর ধরে পেঁয়াজ, রসুন, আলু, আম, কলা, পটোল, করলাসহ অন্যান্য পচনশীল ফসল সংরক্ষণে গামা রশ্মি (রেডিয়েশন) প্রয়োগের পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করছে ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) বিজ্ঞানীরা। এ গবেষণায় পেঁয়াজ সংরক্ষণে সাফল্য পাওয়া গেছে। গবেষক দলে ছিলেন বিনার মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. রফিকুল ইসলাম এবং একই বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. নাসরীন আখতার।
গবেষকরা জানান, মসলাজাতীয় ফসলের মধ্যে পেঁয়াজ অন্যতম। দেশে প্রতিবছর অসংখ্য পেঁয়াজ পচে যায়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। বাজারে পেঁয়াজ কম থাকলেই দাম বেড়ে যায়। এতে ক্রেতারা বেশি দামে কিনতে বাধ্য হন। এসব বিষয় চিন্তা করে ২০২০ সাল থেকে পোস্ট হারভেস্ট গবেষণাগারে বিভিন্ন ডোজ গামা রশ্মি প্রয়োগ করে পরীক্ষা চালায় বিনার উদ্যানতত্ত্ব বিভাগ। বিভিন্ন ফসল সংরক্ষণের জন্য গামা রেডিয়েশন ডোজ নির্দিষ্ট করা হয়।
পেঁয়াজের ক্ষেত্রে দেখা যায়, ১০০ গ্রাম ডোজ গামা রশ্মি প্রয়োগের ফলে পেঁয়াজের গাছ গজানো বন্ধ হয়েছে। এতে পেঁয়াজের ওজন হ্রাস ও পচন কম হচ্ছে। এর মাধ্যমে পেঁয়াজের গুণগত মান বজায় রেখে ঘরের তাপমাত্রায় প্রায় ৭-৯ মাস সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে। এতে বাংলাদেশে পেঁয়াজের আমদানি নির্ভরতা কমবে। একই সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় রোধ হবে এবং স্থিতিশীল থাকবে পেঁয়াজের বাজার।
এদিকে আরেকটি স্বস্তির বিষয় হচ্ছে ‘জায়েন্ট এগ্রো প্রসেসিং লিমিটেড’ সম্প্রতি ময়মনসিংহের ভালুকায় দেশের প্রথম বিশেষায়িত পেঁয়াজ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তুলেছে। এর মাধ্যমে অত্যাধুনিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে সারা বছর পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে পেঁয়াজের আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে ভোক্তাদের ধারাবাহিকভাবে ভালো মানের পেঁয়াজ যৌক্তিক দামে সরবরাহের লক্ষ্যে পেঁয়াজ সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
অনিয়ন ইমপেক্ট ক্লাস্টার প্রকল্প (২০২২-২৪) এর আওতায় পেঁয়াজ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ কেন্দ্রটি চালু করা হয়। নেদারল্যান্ডস সরকার ও বিভিন্ন বাংলাদেশি এবং নেদারল্যান্ডস ভিত্তিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে এই প্রকল্পের মাধ্যমে ভোক্তাদের জন্য ভালো মানের পেঁয়াজের ধারাবাহিক সরবরাহের পাশাপাশি চাষীদের কাছে মানসম্পন্ন পেঁয়াজ বীজ সরবরাহসহ পেঁয়াজ সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। পাশাপাশি প্রকল্পটি ভারতীয় পেঁয়াজের উপর নির্ভরতা কমিয়ে বাংলাদেশি পেঁয়াজে স্বনির্ভরতা অর্জনে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণে অবদান রাখবে।
জায়েন্ট এগ্রো প্রসেসিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান ফিরোজ এম হাসান জানান, পচনশীল বস্তু হওয়ায় প্রতি বছরই একটা নির্দিষ্ট সময়ে দেশব্যাপী পেঁয়াজের সংকট দেখা যায়। বিভিন্ন পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশে সংরক্ষণের অভাবেই নষ্ট হয় ৩০ ভাগ পেঁয়াজ। যার ফলে প্রান্তিক কৃষক ও ভোক্তা উভয়পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমরা এই পেঁয়াজ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে বছরব্যাপী ধারাবাহিকভাবে ভোক্তাদের ভালো মানের পেঁয়াজ যৌক্তিক দামে সরবরাহ করতে পারবো। পাশাপাশি কৃষকরাও পেঁয়াজের যৌক্তিক দাম পাবেন।
বিনার উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. নাসরীন আখতার জানান, গামা রশ্মি প্রয়োগের ফলে পেঁয়াজের দুটি জাত ‘তাহেরপুরী’ ও ‘লালতীর কিং’-এ গাছ গজানো সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়েছে। এর ফলে পেয়াজ পঁচবে দেরিতে।
উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. রফিকুল ইসলাম বলেন, রান্নাবান্না করলে পেঁয়াজ লাগবেই। ফলে দাম বেড়ে যাওয়ার ভয়ে অনেক ক্রেতা বাজার থেকে বেশি পরিমাণ পেঁয়াজ কিনে ঘরে রেখে দেন। কিন্তু পচনের কারণে চটজলদি করেই রান্না করে খেতে হয়। এছাড়া ব্যবসায়ী ও কৃষকরাও পচনের কারনে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করতে পারছে না। এই পদ্ধতি অনুসরণ করে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যাবে। এতে কৃষক, ব্যবসায়ীসহ ক্রেতাও উপকৃত হবে।
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) মহাপরিচালক ড. আবুল কালাম আজাদ জানান, কৃষকদের কথা মাথায় রেখে বাণিজ্যিকভাবে রেডিয়েশন প্রয়োগ করার জন্য বিশ্বব্যাংকের পার্টনার প্রকল্পের আওতায় ১১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বিনা আঞ্চলিক গবেষণা কেন্দ্র ও গাজীপুরে গামা সেন্টার স্থাপন করার কাজ হাতে নেয়া হয়েছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ঢাকা সফর নিয়ে দিল্লিতে ব্রিফ করলেন বিক্রম মিশ্রি
ঢাকা সফর থেকে ফেরার দু’দিন পর ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে ব্রিফ করেছেন। বুধবার নয়াদিল্লির সংসদ ভবনের অ্যানেক্স বিল্ডিংয়ে আড়াই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা ব্রিফে দেশটির ২১ থেকে ২২ জন সংসদ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
ভারতীয় বার্তা সংস্থা ইন্দো-এশীয় নিউজ সার্ভিসের (আইএএনএস) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। সূত্রের বরাত দিয়ে আইএনএস বলেছে, পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি ব্রিফিংয়ে অংশ নেওয়া সংসদ সদস্যদের জানান, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে ঢাকার অন্তর্বর্তী সরকার।
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব দেশটির সংসদ সদস্যদের বলেন, ঢাকা সফরে অনুষ্ঠিত বৈঠকের সময় ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন প্রশাসন দিল্লির সঙ্গে স্বাক্ষরিত কোনও চুক্তি পর্যালোচনা করার কথা উল্লেখ করেনি।
অ্যানেক্স বিল্ডিংয়ে অংশ নেওয়া একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে আইএনএস বলেছে, ব্রিফ্রিংয়ের সময় পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রির কাছে ভারতের কয়েকজন সংসদ সদস্য শেখ হাসিনা কোন মর্যাদায় দেশটিতে অবস্থান করছেন, সেই সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন।
ব্রিফ থেকে বেরিয়ে দেশটির বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা ও সংসদের পররাষ্ট্রবিষয়ক স্থায়ী কমিটির প্রধান শশী থারুর সাংবাদিকদের বলেন, ‘চমৎকার’ ব্রিফিংয়ের সময় সচিবের কাছে অনেক বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল।
শশী থারুর বলেন, বাংলাদেশের বিষয়ে আমাদের চমৎকার ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকালই পররাষ্ট্রসচিব বাংলাদেশ থেকে ফিরে এসেছেন। সফরের বিষয়ে তিনি আমাদের একেবারে পুঙ্খানুপুঙ্খ ব্রিফ করেছেন। কিন্তু আমি এই বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবো না। তবে ২১-২২ জন সংসদ সদস্য সফরের বিষয়ে পররাষ্ট্রসচিবকে গুরুত্বপূর্ণ সব প্রশ্ন করেছেন। এ সময় তার কাছে অনেক বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। পররাষ্ট্রসচিবও বিস্তারিত ও সোজাসাপ্টা জবাব দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা যেকোনও ক্ষেত্রে এই ধরনের বিষয়ে সংসদে রিপোর্ট করি। কারণ এটি একটি সংসদীয় কমিটির আনুষ্ঠানিক বিষয়; যার জন্য প্রতিবেদন প্রয়োজন। তিরুবনন্তপুরমের এই সংসদ সদস্য বলেন, আপাতত আমাদের আলোচনা চলতে থাকবে এবং এর একটি খুব ভালো সূচনা হয়েছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতা থেকে উৎখাত হওয়ার পর নয়াদিল্লি ও ঢাকার মধ্যে প্রথম শীর্ষ পর্যায়ের কূটনৈতিক যোগাযোগের অংশ হিসেবে চলতি সপ্তাহে ঢাকা সফর করেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব। সফরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পাশাপাশি ঢাকায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও পররাষ্ট্রসচিব জসীম উদ্দিনের সঙ্গেও বৈঠক করেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
আফগানিস্তানে মন্ত্রণালয়ের ভেতর বিস্ফোরণে মন্ত্রী নিহত
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন দেশটির শরণার্থীবিষয়ক মন্ত্রী খলিল উর-রহমান হাক্কানি। কাবুলে শরণার্থীবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নিজ কার্যালয়ে বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন তিনি।
বুধবার কাবুলে শরণার্থীবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে বিস্ফোরণে মন্ত্রীর প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটেছে বলে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন হাক্কানির ভাতিজা আনাস হাক্কানি।
নাম প্রকাশে অস্বীকৃতি জানিয়ে দেশটির সরকারি এক কর্মকর্তা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, কাবুলে শরণার্থীবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে দুর্ভাগ্যজনক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে মন্ত্রী খলিল উর-রহমান হাক্কানিসহ তার কয়েকজন সহকর্মী নিহত হয়েছেন।
আফগানিস্তানে তালেবানের দুই দশকের বিদ্রোহের সময় সবচেয়ে সহিংস কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ব্যাপক পরিচিত দেশটির সশস্ত্র সংগঠন হাক্কানি নেটওয়ার্ক। মন্ত্রী খলিল উর-রহমান হাক্কানির ভাই জালালউদ্দিন হাক্কানি এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
বিস্ফোরণে নিহত খলিল উর-রহমান হাক্কানি দেশটির তালেবান নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজুদ্দিন হাক্কানির চাচা।
২০২১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো নেতৃত্বাধীন বাহিনীর সৈন্যদের আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এরপর দেশটির ক্ষমতায় আসে সশস্ত্র ইসলামপন্থী গোষ্ঠী তালেবান। আফগানিস্তানের এই গোষ্ঠী ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশটিতে সহিংসতা হ্রাস পেয়েছে।
তবে দেশটিতে মধ্যপ্রাচ্য-ভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) অনুসারী ইসলামিক স্টেট খোরাসান (আইএস-কে) সক্রিয় রয়েছে। এই গোষ্ঠীর সদস্যরা প্রায়ই আফগানিস্তানের বেসামরিক নাগরিক, বিদেশি এবং তালেবান কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে বন্দুক ও বোমা হামলা চালিয়ে আসছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে হামলা, শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ আহ্বান জানান তিনি।
সম্প্রতি ভারত ও বাংলাদেশ উভয়েই ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের একটি কূটনৈতিক মিশনে সহিংস হামলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এ বিষয় ও বাংলাদেশ নিয়ে ক্রমবর্ধমান আক্রমণাত্মক বক্তব্য-বিবৃতি সম্পর্কে ওয়াশিংটানের কী কোনও মন্তব্য আছে?
সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মিলার বলেন, সব পক্ষ তাদের মতবিরোধ শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করবে, সেটাই আমরা দেখতে চাই।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই দুদেশের সম্পর্ক হিমশীতল অবস্থায় পৌঁছেছে। সবশেষ ইসকন নেতা চিন্ময় দাসকে গ্রেপ্তারের পর পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়। গত ২ ডিসেম্বর ত্রিপুরার আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনাও ঘটে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
পালানোর পথে আসাদের প্লেন বিধ্বস্তের গুজব
ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। কিন্তু ‘সিরিয়ান এয়ার ৯২১৮ ফ্লাইটটি’ উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই অদৃশ্য হয়ে যাওয়ায় অনেকে বলছেন বিদ্রোহীদের গুলিতে প্লেনটি বিধ্বস্ত হয়েছে। তবে কোনো আন্তর্জাতিক বা স্থানীয় গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে এতথ্য নিশ্চিত বা যাচাই করতে পারেনি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, সিরিয়ার বিদ্রোহীরা যখন রাজধানী দামেস্কে প্রবেশ করছেন, সে সময় দামেস্ক বিমানবন্দর থেকে একটি ইলিউশিন৭৫ উড়োজাহাজ আকাশে উড়াল দেয়।
‘সিরিয়ান এয়ার ৯২১৮ ফ্লাইটটি’ দামেস্ক থেকে উড়াল দেওয়া সর্বশেষ ফ্লাইট বলে জানিয়েছে ফ্লাইটরাডার ২৪। ফ্লাইটরাডার ২৪–এর তথ্যানুযায়ী, দামেস্ক থেকে ছাড়া ইলিউশিন৭৫ উড়োজাহাজটি প্রথমে সিরিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলের দিকে উড়ে যায়। কিন্তু সেখান থেকে পরে ইউ–টার্ন নিয়ে উড়ে যেতে শুরু করে এবং কয়েক মিনিট পর সেটি মানচিত্র থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়। অদৃশ্য হওয়ার সময় উড়োজাহাজটি হোমসের ওপর ছিল বলে আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে।
ওই উড়োজাহাজে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ছিলেন কি না, রয়টার্স তা নিশ্চিত হতে পারেনি। তবে সিরিয়ার সেনাবাহিনীর দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছিলেন, রোববার স্থানীয় সময় ভোরে উড়োজাহাজে দামেস্ক ছেড়েছেন আসাদ। তখন তারা বলেছিলেন, আসাদের গন্তব্যে কোথায়, তা তারা জানেন না।
দামেস্ক বিমানবন্দর এখন বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে। বিদ্রোহীদের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে আসাদ সিরিয়া ছেড়ে গেছেন বলে জানানো হয়েছে।
বিদ্রোহীরা বিমানবন্দর নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার ঠিক আগে বাশার আল-আসাদকে বহনকারী উড়োজাহাজটি উড্ডয়ন করে। সূত্রের বরাতে হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্রোহীদের গুলিতে আসাদের প্লেন বিধ্বস্ত হয়েছে। তবে স্বাধীনভাবে হিন্দুস্তান টাইমস খবরটির সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত বেশকিছু ভিডিওতে একটি প্লেন বিধ্বস্ত হয়ে আগুনে পুড়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখা গেছে। এটি আসাদকে বহনকারী প্লেন বলে দাবি করা হচ্ছে। তবে এই দাবিগুলো কোনো আন্তর্জাতিক বা স্থানীয় সংবাদমাধ্যম স্বাধীনভাবে নিশ্চিত বা যাচাই করতে পারেনি।
এর আগে, বিদ্রোহীরা উত্তর সিরিয়ার বড় অংশ দখল করার পরপরই বাশার আল-আসাদের পরিবার রাশিয়ায় পালিয়ে যায়। ক্রেমলিনের একটি সূত্র ব্লুমবার্গকে এই তথ্য নিশ্চিত করে। তারা জানায় আসাদকে রক্ষা করার কোনো পরিকল্পনা মস্কোর নেই। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভ্লাদিমির পুতিন আসাদের সৈন্যদের পিছু হটার ঘটনায় বিরক্ত।
আমেরিকা অবশ্য প্রকাশ্যে সিরিয়া নিয়ে মন্তব্য করতে চায়নি। তবে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, সিরিয়ার পরিস্থিতি খুব খারাপ। ওরা আমাদের বন্ধু নয়। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে আমেরিকার কিছু করার নেই। এটা আমাদের যুদ্ধ নয়। ওখানে যা হচ্ছে, হোক। আমরা এর মধ্যে নাক গলাব না।
উল্লেখ্য, সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছিল ২০১১ সালে। ১৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে প্রথম থেকেই বিদ্রোহীদের মদদ দিয়েছে আমেরিকা। আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে একাধিকবার নাগরিকদের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে। ২০১৩ সালে ঘৌটার হামলায় ৩০০ জনেরও বেশি সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এদের মধ্যে ছিল বহু শিশু। ২০১৭ সালের হামলাতেও মৃত্যু হয় শতাধিক সিরিয়ান নাগরিকের। জাতিসংঘের একাধিক দল সিরিয়ায় গিয়ে নাগরিকদের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগের প্রমাণ পেয়েছে বলে দাবি।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
৫০ বছর পর সিরিয়ার সীমানায় ঢুকেছে ইসরায়েলি ট্যাংক
আসাদ সরকারের পতনের মধ্যে সিরিয়ার মাটিতে সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের কয়েকটি ট্যাংক সিরিয়া সীমান্তের বেড়া অতিক্রম করেছে। ১৯৭৪ সালের পর এই প্রথম তারা সিরিয়া সীমান্ত অতিক্রম করল। খবর আল-জাজিরা।
ইসরায়েলি সংবাদ শাধ্যম মারিভের মতে, সিরিয়ার সশস্ত্র বাহিনী বা বেসামরিক নাগরিকদের আনুগত্য নির্বিশেষে, ইসরায়েলি অবস্থানের কাছাকাছি আসা থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রবাসী বিষয়ক মন্ত্রী আমিচাই চিকলি বলেছেন, সিরিয়ার সঙ্গে দখলকৃত গোলান মালভূমিতে হারমন পর্বতে ইসরায়েলকে অবশ্যই ১৯৭৪ সালের যুদ্ধবিরতি লাইনের ভিত্তিতে একটি নতুন প্রতিরক্ষা লাইন স্থাপন করতে হবে।
উল্লেখ্য, ইসরায়েল ১৯৬৭ সালে সিরিয়ার গোলান মালভূমির বেশিরভাগ অংশ দখল করে, ১৯৮১ সালে এটিকে সংযুক্ত করে।
এদিকে সিরিয়ার স্থানীয় সূত্রের বরাতে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম দ্য ইসরায়েল টাইমস জানিয়েছে, ইসরায়েলি ট্যাঙ্কগুলো দক্ষিণ-পশ্চিম সিরিয়ার কুনেইত্রা শহরের কাছে বাফার জোনে প্রবেশ করেছে এবং গুলি চালিয়েছে। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) এই বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।
ইসরায়েলি মিডিয়ার অন্যান্য প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসাদের শাসনের পতনের পর বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সম্ভাব্য হুমকির কারণে সীমান্ত এলাকায় কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হচ্ছে। এর মধ্যে স্কুল বন্ধ রাখা এবং সীমান্তবর্তী চারটি ড্রুজ গ্রামের জন্য বিশেষ বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
গোলান মালভূমি সংলগ্ন এলাকাগুলোকে সংরক্ষিত সামরিক এলাকা হিসেবে ঘোষণা করার পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে সাধারণ নাগরিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। এ ছাড়াও, এই এলাকায় চেকপয়েন্ট স্থাপন এবং যান চলাচল সীমাবদ্ধ করা হচ্ছে।
কাফি