চিত্র-বিচিত্র
বিশ্বজুড়ে জেন জেড’র আরো পাঁচটি আন্দোলন
জেনারেশন জেড বা জেন জেড সামাজিক ও রাজনৈতিক সচেতনতার ক্ষেত্রে সক্রিয় এবং সাহসী। বর্তমান বিশ্বে অনেক রাজনৈতিক আন্দোলন রয়েছে যেখানে জেন জেড-এর বড় ভূমিকা রয়েছে। এখানে জেন জেড দ্বারা উজ্জীবিত এবং তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে গড়ে ওঠা পাঁচটি উল্লেখযোগ্য আন্দোলন তুলে ধরা হলো:
ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার
ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার (বিএলএম) আন্দোলন ২০১৩ সালে শুরু হয়েছিল। তবে আন্দোলনটি ২০২০ সালে মিনিয়াপোলিসে জর্জ ফ্লয়েড হত্যার পর বিশেষভাবে জোরালো হয়ে ওঠে। যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ মানুষদের প্রতি বৈষম্য ও সহিংসতার প্রতিবাদে এই আন্দোলন শুরু হয়েছিল, এবং তা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। জেন জেড সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম, যেমন টিকটক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদিতে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনের বার্তা ছড়িয়ে দেয়। তারা বিভিন্ন ধরনের প্রভাবশালী পোস্ট, ভিডিও, এবং কনটেন্ট তৈরি করে সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করে। এই প্রজন্মের সদস্যরা বিভিন্ন মিছিল, বিক্ষোভ এবং প্রতিবাদে সরাসরি অংশগ্রহণ করে এবং অর্থসংগ্রহ ও অনলাইন প্রচারণার মাধ্যমে আন্দোলনকে সমর্থন জোগায়। বাংলাদেশের ক্রিকেট দলও খেলার আগে হাঁটু গেঁড়ে তাদের সমর্থন জানিয়েছেন। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশি অনেক বিটিএস ভক্ত এই আন্দোলনের জন্য ফান্ড পাঠিয়েছিল। ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনের ফলে বিশ্বজুড়ে ন্যায়বিচারের প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন দেশে পুলিশ ব্যবস্থার সংস্কার শুরু হয়েছে এবং বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।
স্কুল স্ট্রাইক ফর ক্লাইমেট
স্কুল স্ট্রাইক ফর ক্লাইমেট আন্দোলনটি গ্রেটা থানবার্গ নামক সুইডিশ কিশোরী দ্বারা শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। এটি মূলত জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে একটি বিশ্বব্যাপী আন্দোলন। এ আন্দোলনের মূল লক্ষ্য হলো বিশ্বনেতাদের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় তৎপর হওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করা। জেন জেড নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করছে এই আন্দোলনে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রতি শুক্রবার স্কুল বর্জন করে এবং স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিক্ষোভ ও সমাবেশের আয়োজন করে। জেন জেড জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য নিজেদের ভবিষ্যৎ রক্ষা করার চেষ্টা করছে। এই আন্দোলনের ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জলবায়ু পরিবর্তনকে গুরুত্ব দিয়ে নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। ২০১৯ সালে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে এ আন্দোলন গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে এবং জেন জেড জলবায়ু অ্যাক্টিভিস্টদের জন্য আরো অনেক মঞ্চ তৈরি হয়।
#মিটু
#মিটু আন্দোলনটি ২০০৬ সালে তারানা বার্কের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল। কিন্তু এটি ২০১৭ সালে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ওঠে যখন বিভিন্ন হলিউড তারকা যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন হার্ভে ওয়েইনস্টিনের বিরুদ্ধে। এই আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য হলো যৌন হয়রানি এবং নির্যাতনের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং ভুক্তভোগীদের কথা বলার সুযোগ করে দেওয়া।
জেন জেড এই আন্দোলনে তাদের আওয়াজ তুলে ধরে সামাজিক মিডিয়ার মাধ্যমে। তারা #MeToo হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছে এবং অন্যান্য ভুক্তভোগীদের সমর্থন জানিয়েছে। তারা বিভিন্ন কর্মসূচি ও সেমিনারের মাধ্যমে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করেছে। #মিটু আন্দোলনের ফলে অনেক দেশ এবং প্রতিষ্ঠান যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। কর্মক্ষেত্রে এবং অন্যান্য স্থানে নীতিমালা সংস্কার করা হয়েছে এবং যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। জেন জেড জেনারেশনের প্রতিবাদে বাংলাদেশে জেন ওয়াইতেও এই আন্দোলনের ঢেউ লাগে।
হংকং বিক্ষোভ
হংকংয়ের রাজনৈতিক বিক্ষোভগুলো ২০১৯ সালে শুরু হয়েছিল, যখন সরকার একটি বিল প্রস্তাব করেছিল যা চীনের মূল ভূখণ্ডে বন্দীদের প্রত্যার্পণের অনুমতি দিত। হংকংয়ের মানুষ বিশ্বাস করে যে, এই বিল তাদের স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের উপর আঘাত। হংকং বিক্ষোভে জেন জেড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তারা বিভিন্ন ধরনের বিক্ষোভ, মিছিল এবং সমাবেশে অংশগ্রহণ করেছে। তারা প্রযুক্তি এবং সামাজিক মিডিয়ার সাহায্যে বিক্ষোভের পরিকল্পনা করে এবং সরকারের নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা বাড়ানোর জন্য কাজ করে। এই বিক্ষোভের কারণে হংকং সরকার প্রত্যার্পণ বিল প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছিল। যদিও পরিস্থিতি এখনও পুরোপুরি সমাধান হয়নি। তবে এই আন্দোলন হংকংয়ের রাজনৈতিক চেতনা এবং নাগরিক স্বাধীনতার উপর একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে।
মার্চ ফর আওয়ার লাইভ
মার্চ ফর আওয়ার লাইভস আন্দোলনটি ২০১৮ সালে ফ্লোরিডার পার্কল্যান্ডে মারজোরি স্টোনম্যান ডগলাস হাই স্কুলে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ গুলির ঘটনার পর শুরু হয়েছিল। এই আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য হলো যুক্তরাষ্ট্রে গুলির ব্যবহারের আইন কঠোর করা এবং স্কুলসহ সর্বত্র নিরাপত্তা বাড়ানো। জেন জেড-এর নেতৃত্বে এই আন্দোলন বিশেষভাবে উজ্জীবিত হয়েছিল। এই প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা নিজেদের সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন রকম প্রতিবাদ, মিছিল এবং সমাবেশের আয়োজন করে। সামাজিক মিডিয়ার মাধ্যমে তারা তাদের দাবি এবং বক্তব্য তুলে ধরে এবং রাজনৈতিক নেতাদের উপর চাপ সৃষ্টি করে। এই আন্দোলনের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকের ব্যবহারের আইন কঠোর করার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাবনা আনা হয়েছে এবং স্কুল নিরাপত্তার বিষয়ে নতুন নীতিমালা গ্রহণ করা হয়েছে।
নিরাপদ সড়ক আন্দোলন
২০১৮ সালে বাংলাদেশে নিরাপদ সড়কের দাবিতে ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট ২০১৮ পর্যন্ত সংঘটিত আন্দোলনের কথা আমাদের এখনও মনে আছে। যা পরবর্তীতে গণবিক্ষোভে রূপ নিয়েছিল। ঢাকায় ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে দ্রুতগতির দুই বাসের সংঘর্ষে রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী রাজীব ও দিয়া নিহত হয় ও ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়। এই সড়ক দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নিহত দুই কলেজ শিক্ষার্থীর সহপাঠীদের মাধ্যমে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ পরবর্তীতে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। কোটা আন্দোলনের মতো এখানেও ৯ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামে। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন ও অবরোধ করতে চাইলেও দুর্ঘটনার পরদিন থেকেই পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়ার চেষ্টা করে; পুলিশের পাশাপাশি ছাত্রলীগ ও সরকার-সমর্থক বলে অভিযুক্ত যুবকেরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ছাত্রছাত্রী ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা করে। সরকার প্রচুরসংখ্যক আন্দোলনকারীকে এবং আন্দোলন সম্পর্কে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেয়ায় আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে গ্রেপ্তার করে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ আন্দোলনকারীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে এবং ছাত্রছাত্রীদের ওপর সরকারের দমনপীড়নমূলক ব্যবস্থা দেশে ও বহির্বিশ্বে তীব্রভাবে নিন্দিত হয়। ৬ আগস্ট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তৃতীয় মন্ত্রিসভা একটি খসড়া ট্রাফিক আইন অনুমোদন করে, যে আইনে ইচ্ছাকৃতভাবে গাড়ি চালিয়ে মানুষ হত্যায় মৃত্যুদণ্ড এবং বেপরোয়াভাবে চালিয়ে কারো মৃত্যু ঘটালে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
চিত্র-বিচিত্র
বিশ্ব চিঠি দিবস আজ
চিঠি লেখেননি এমন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া মুশকিল। কেউ লিখেছেন পরিক্ষার খাতায় আবার কেউবা লিখেছেন প্রিয় মানুষকে। তবে বর্তমান সময়ে ইংরেজ কথাকার সমারসেট মমের একটি উক্তি মনে পড়ে। তিনি বলেছেন, ‘বর্তমানের বাস্তবতায় সেটাই সত্যি। চিঠি লেখা আসলেই এক হারিয়ে যাওয়া শিল্প।’
শেষ কবে চিঠি লিখেছেন বা পেয়েছেন? এ প্রশ্নের উত্তর হয়তো অনেকেই দিতে পারবে না। প্রযুক্তির কল্যাণেই চিঠি লেখার শিল্প প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
ঘোড়ার ডাক প্রচলনের আগে কীভাবে চিঠি আদান-প্রদান হতো, তা নিয়ে দ্বিমত থাকলেও আজকাল দাপ্তরিক কাজের নথি বা আবেদনপত্র ছাড়া কেউ ডাকঘরে যে যায় না, সেটা সবারই জানা।
অথচ অনেক দশক আগেও দূরে থাকা আপনজনের সঙ্গে যোগাযোগের একটি মাধ্যমই ছিল চিঠি। শুধু দূরে নয়, খুব কাছের মানুষকেও মুখে বলতে না পারা কথাগুলোও সযত্নে সাজিয়ে জানাতেন চিঠিতে। এক একটি চিঠিতে নানান গল্প ও ইতিহাস বহন করত।
তবে বর্তমানে ই-মেইলে আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের খুদে বার্তার ভিড়ে কাগজের চিঠি হারিয়ে গেছে। ছোট ছোট বাক্যে, কাটছাঁটকৃত শব্দে বিন্যস্ত এই যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ভাষাবিজ্ঞানীরা নাম দিয়েছেন ‘টেক্সটস্পিক’। কারও সঙ্গে কথা বলা প্রয়োজন হলেই, চট করে বাংলা-ইংরেজি মিশিয়ে ইনবক্সে পাঠানো যায়।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
চিত্র-বিচিত্র
শরতের প্রথম দিন আজ
ঋতুরাণী শরতের প্রথম দিন আজ। ভাদ্র ও আশ্বিন মাস নিয়ে ঋতু পরিক্রমার তৃতীয় ঋতু শরৎ গঠিত। খ্রিষ্টীয় পঞ্জিকা অনুযায়ী আগস্টের মাঝামাঝি থেকে অক্টোবরের মাঝামাঝি পর্যন্ত শরৎকাল স্থায়ী হয়।
আষাঢ়-শ্রাবণের বৃষ্টিমুখর দিন শেষে শুরু হয় শরৎ। প্রকৃতি হয়ে ওঠে শুভ্র ও সবুজ। ঘাসের বনে বাতাসে দোলে সাদা কাশফুল। এমন মোহনীয় সৌন্দর্যের জন্যই শরৎকে ঋতুরানী বলা হয়। শরতের রূপের প্রেমে পড়ে নাই এমন হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না।
অনেক কবি-সাহিত্যিক শরৎ নিয়ে সাহিত্য রচনা করেছেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার লেখায় শরৎকে এভাবে উপস্থাপন করেছেন– ‘আমরা বেঁধেছি কাশের গুচ্ছ, আমরা গেঁথেছি শেফালিমালা–/নবীন ধানের মঞ্জরী দিয়ে সাজিয়ে এনেছি ডালা।/এসো গো শারদলক্ষ্মী, তোমার শুভ্র মেঘের রথে,/ এসো নির্মল নীলপথে…’। কবি বিনয় মজুমদার তার কবিতায় লিখেছেন– ‘শরতের দ্বিপ্রহরে সুধীর সমীর-পরে জল-ঝরা শাদা শাদা মেঘ উড়ে যায়; ভাবি, একদৃষ্টে চেয়ে, যদি ঊর্ধ্ব পথ বেয়ে শুভ্র অনাসক্ত প্রাণ অভ্র ভেদি ধায়!’
এছাড়াও শরৎ মানে গাছে গাছে পাকা তাল। সেই তাল দিয়ে তৈরি হয় পিঠা-পায়েস। সঙ্গে ক্ষেতে আমন ধানের বেড়ে ওঠা চারা। শরতের রাতে জ্যোৎস্নার বিমোহিত রূপও অভাবনীয়।
শরৎকালেই অনুষ্ঠিত হয় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয়া দুর্গাপূজা। তাই শারদীয় আনন্দে এ সময় যেমন চারপাশ মুখর থাকে, তেমনি বিজয়া দশমীতে প্রাণ হয়ে ওঠে ব্যথাতুর।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
চিত্র-বিচিত্র
প্রটোকল থাকা সত্ত্বেও জ্যামে বসে থাকলেন ড. ইউনূস
চিরাচরিত প্রথা ভেঙে ভিভিআইপি প্রটোকল নিয়ে জ্যামের মধ্যেই বসে রইলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ঢাকার সড়কে অন্যান্য গণপরিবহনের সঙ্গেই চলেছে তার গাড়ি বহর। ব্যস্ত সড়কে যানজটের কারণে কয়েক মিনিট বসেছিলেন তিনি। তখন তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রোটোকলে নিয়োজিত থাকা সদস্যরা যানজটের মধ্যে গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়ান।
এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
জানা গেছে, রোববার ড. ইউনূসের গাড়িবহন রাজধানীর মতিঝিলের হ্যান্ডবল স্টেডিয়াম সংলগ্ন বক চত্বর এলাকা থাকা অবস্থায় ভিডিওটি করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে প্রধান উপদেষ্টা লেখা ড. ইউনূসের গাড়ি ঘিরে রেখেছেন স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) সদস্যরা।
এ সময় চারপাশের উৎসুক জনতাকে লক্ষ্য করে বলতে শোনা যায়, আপনারা সবাই রাস্তার ধারেই দাঁড়িয়ে থাকুন। নিরাপদ দূরত্বে থাকুন। রাস্তা থেকে দূরে দাঁড়ান। কোনো গাড়ি ভেতরে ঢোকাবেন না। বাম পাশের রিকশা ডান পাশের লেনে ঢোকাবেন না। কেউ রাস্তা ক্রস করার চেষ্টা করবেন না।
বাংলাদেশের প্রশাসনিক নিরাপত্তা প্রটোকল বিধি অনুসারে, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর চলাচলের সময় সড়কের এক পাশ খালি করে চলাচলের বিধান রয়েছে। তাদের চলাচলের ১৫ মিনিট আগে থেকেই নির্দিষ্ট সড়কটির একপাশ ফাঁকা করে সেখানে জনসাধারণের চলাচল বন্ধ করে রাখার নিয়ম অনুসরণ করা হয়।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
চিত্র-বিচিত্র
শাড়ি পরে ট্রাফিকের দায়িত্বে কে এই শিক্ষার্থী?
সরকারের পদত্যাগের পর রাজধানীর সড়কে ছিল না কোনো ট্রাফিক পুলিশ। এ সময় সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে কাজ করতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। তারা পুরো ট্রাফিকের দায়িত্ব নিয়ে রাজধানীকে যানজট থেকে রক্ষা করেছেন। শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করতে দেখা গেছে পথচারী, যাত্রীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষকে।
এর মধ্যে শাড়ি পরে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে দেখা গেছে এক শিক্ষার্থীকে। বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) তার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই তাকে নিয়ে শুরু হয় আলোচনা। রাতারাতি ভাইরাল হয় সেই ভিডিও।
ভিডিওতে দেখা যায়, রোডের মাঝখানে দাঁড়িয়ে গাড়ির লেন ঠিক রাখতে ব্যস্ত এক শিক্ষার্থী। এ ছাড়াও রাস্তায় সিগন্যালের পাশাপাশি তারা ফুটপাতে হাঁটা, নির্দিষ্ট স্থান থেকে গাড়িতে ওঠানামা ও গণপরিবহনগুলো নির্দিষ্ট স্থান থামার নির্দেশনা দিচ্ছেন। নিয়ম মেনে চলতে মানুষ ও গাড়িচালকদের বাধ্য করছেন। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি তিনি মানুষকে নিয়ম-শৃঙ্খলা শেখাচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শাড়ি পরা ওই শিক্ষার্থীর নাম আবিদা নওমী। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী।
শাড়ি পরে সড়কে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনের বিষয়ে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, শাড়ি পরে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকে ভিন্নভাবে দেখার সুযোগ নেই। শাড়ি বাঙালি নারীর ভূষণ। একটি মেয়ে যেভাবে সালোয়ার-কামিজ পরে সব কাজ করতে পারেন, একইভাবে একই কাজ শাড়ি পরেও করতে পারেন। আমাদের মায়েরা বেশির ভাগ সময় শাড়ি পরেন।
তিনি আরও বলেন, সহিংস পরিস্থিতির জেরে পুলিশ সদস্যরা বিভিন্ন দাবি জানিয়ে কর্মবিরতিতে গেছেন। ফলে দেশের ট্রাফিক ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। তাই নিজের এলাকার সড়কের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে শিক্ষার্থীদের নিয়ে পথে নেমেছেন তারা।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
চিত্র-বিচিত্র
শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পালালেন রাফসান
শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে টিএসসি থেকে পালালেন আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর ‘রাফসান দ্য ছোটভাই’। শনিবার (৩ আগস্ট) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তন (টিএসসি) থেকে তাকে পালিয়ে যেতে দেখা যায়।
সরেজমিন দেখা গেছে, রাফসান দ্য ছোটভাই তার নিজ গাড়িতে করে এলে বিক্ষোভকারী ছাত্ররা তাকে ঘিরে ধরে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে থাকেন। পরে বাধ্য হয়ে দ্রুত গাড়িতে উঠে স্থান ত্যাগ করেন তিনি। এসময় আন্দোলনকারীরা তার গাড়িতে হামলা করতে গেলেও কয়েকজন শিক্ষার্থীর সহায়তায় তিনি স্থান ত্যাগ করেন।
আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী বলেন, সে এতদিন পর অ্যাটেনশন নিতে এসেছে। আমরা তার কাছে কৈফিয়ত চেয়েছি এতদিন পর কি করতে এসেছেন?
এদিকে দুপুর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহীদ মিনার এলাকায় একত্রিত হয় শিক্ষার্থীরা। মুহুর্মুহু স্লোগানে প্রকম্পিত করে তোলে রাজপথ। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শহীদ মিনার এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে।
এমআই