জাতীয়
অন্তর্বর্তী সরকারের ৪ নারী উপদেষ্টার দায়িত্বে যেসব মন্ত্রণালয়

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে ড. ইউনূস ও ১৩ উপদেষ্টা শপথ নিয়েছেন। শুক্রবার (৯ আগস্ট) মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে উপদেষ্টাদের দপ্তর বণ্টনের বিষয়টি জানানো হয়েছে।
নবগঠিত অন্তর্বর্তী সরকারে আছেন চারজন নারী। তারা হলেন- সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, শারমীন এস মুরশিদ, ফরিদা আখতার ও নুরজাহান বেগম। মোট ১৭ জনের মধ্যে সরকারে থাকা এই চার নারী উপদেষ্টা পেয়েছেন চার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান (পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়)
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান পেয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৩ সালে আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আইজেনহাওয়ার ফেলোশিপ সম্পন্ন করেন। তিনি ফ্রেন্ডস অব আর্থ ইন্টারন্যাশনাল এবং আইইউসিএনের নির্বাহী সদস্য।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান পরিবেশবিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টির স্বীকৃতি হিসেবে ২০০৭ সালে জাতীয় পরিবেশ পদক, ২০১২ সালে র্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার এবং প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ২০০৯ সালে ‘পরিবেশের নোবেল’ খ্যাত গোল্ডম্যান এনভায়রনমেন্টাল প্রাইজে ভূষিত হন তিনি। ২০০৯ সালে টাইম সাময়িকী তাঁকে হিরোজ অব এনভায়রনমেন্ট খেতাবে ভূষিত করে।
ফরিদা আখতার (মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়)
সরকারি সংস্থা উবিনীগের (উন্নয়ন বিকল্পের নীতি নির্ধারণী গবেষণা) নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আখতার পেয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে পড়াশোনা করেছেন। তার জন্ম চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ থানার হারলা গ্রামে। বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র মানুষের অবস্থা জানা এবং পরিবর্তনের জন্য নীতিনির্ধারণী গবেষণা ও লেখালেখিই তার কাজের প্রধান জায়গা।
বর্তমানে তিনি উবিনীগের (উন্নয়ন বিকল্পের নীতি নির্ধারণী গবেষণা) নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে ‘নারী ও গাছ’, ‘কৈজুরী গ্রামের নারী’ ও ‘গাছের কথা’। তিনি নারী উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, কৃষি, মৎস্য সম্পদ, তাঁত শিল্প, গার্মেন্টস শিল্প ও শ্রমিক, জনসংখ্যা এবং উন্নয়নমূলক বিষয়ে নিবিড়ভাবে দীর্ঘ প্রায় তিন দশক ধরে কাজ করছেন।
শারমিন মুরশিদ (সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়)
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পেয়েছেন ব্রতীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন এস মুরশিদ। তিনি বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি হাসিনা সরকারের সময় নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার ও নানা অনিয়ম নিয়ে কথা বলেন। দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে তার মতামত ও পরামর্শ গুরুত্বসহকারে প্রচার করা হয়। সর্বশেষ ৭ জানুয়ারি ২০২৪-এর নির্বাচন বিষয়ে আমেরিকার একটি গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি এই নির্বাচনকে নির্বাচন বলি না।’ বিষয়টি ব্যাপক আলোচিত হয়।
নূরজাহান বেগম (স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়)
নূরজাহান বেগম পেয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। তিনি নোবেল বিজয়ী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, যে দায়িত্ব তিনি পেয়েছিলেন ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছ থেকে। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেছেন।
তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের প্রকল্প শুরুর সময় থেকে অধ্যাপক ইউনূসের প্রথম সারির সহযোগীদের একজন ছিলেন। তিনি বিভিন্ন দেশে মাইক্রো-ক্রেডিট প্রোগ্রামের পরামর্শদাতা, প্রশিক্ষক এবং মূল্যায়নকারী হিসাবে কাজ করেছেন এবং বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়, সম্মেলন এবং সেমিনারে বক্তৃতা দিয়েছেন। তিনি গ্রামীণ ফাউন্ডেশন, যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি সংস্থার বোর্ডেও দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ২০০৭ সালে লস অ্যাঞ্জেলেসে অনুষ্ঠিত ফরচুন মোস্ট পাওয়ারফুল উইমেন সামিটে অংশগ্রহণ করেন এবং স্পেনের ভ্যালেন্সিয়ায় অনুষ্ঠিত ফাউন্ডেশন ফর জাস্টিস পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতি নিযুক্ত হন ২০০৭ সালে।
এমআই

জাতীয়
স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পাবে পাহাড়ের ১০০ স্কুল

পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের ই-লার্নিং ও আধুনিক শিক্ষার সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে আগামী ছয় মাসের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১০০ বিদ্যালয়ে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সংযোগ চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, এই উদ্যোগ শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত এক বিপ্লব হবে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকার শিক্ষার্থীরা অনলাইনে শহরের অভিজ্ঞ শিক্ষকদের ক্লাসে অংশ নিতে পারবে। এতে শিক্ষার মানে সমতা নিশ্চিত হবে। এই উদ্যোগ পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিতে দক্ষ করে তুলবে, যা তাদের উচ্চশিক্ষা ও কর্মজীবনে সহায়ক হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে জাতিগত জনগোষ্ঠীর মানসম্পন্ন শিক্ষার নিশ্চয়তা সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, ‘আমার মূল চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামে মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা। অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে আমাদের প্রতিযোগিতা করতে হবে। আমরা সবসময় কোটা পাবো না। প্রতিযোগিতা করতে হলে কিছু ভালো স্কুল-কলেজ গড়ে তুলতে হবে।’
তিনি বলেন, আমার প্রধান চিন্তা স্যাটেলাইট শিক্ষাব্যবস্থা। এ জন্য উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে হোস্টেল নির্মাণ করতে হবে। সরকার পার্বত্য অঞ্চলে প্রকৌশল কলেজ, একটি নার্সিং কলেজ, হোস্টেল, অনাথালয় এবং ছাত্রাবাস নির্মাণের পরিকল্পনাও করছে বলে জানান উপদেষ্টা।
পার্বত্য এলাকার জনগণকে আত্মনির্ভরশীল করে তুলতে সরকার তিন বছর মেয়াদি বাঁশ চাষ পরিকল্পনা এবং আরও পশুপালন ও মৎস্য প্রকল্প হাতে নিয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, পার্বত্য জেলার অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান চালিকাশক্তি হবে বাঁশ চাষ। আমরা বাঁশের উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়িয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তি গড়ে তুলতে চাই এবং এ অঞ্চলের পানি সংকট কমাতে চাই।
তিনি আরো বলেন, আমরা প্রকৃতি ও পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রেখেই পাহাড়ি অঞ্চল উন্নয়ন করতে চাই। পরিবেশ রক্ষায় বাঁশ একটি অত্যন্ত কার্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে কাজু বাদাম, কফি ও ভুট্টার চাষেরও উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, পার্বত্য জেলাগুলোর উন্নয়নে সরকার সক্রিয়ভাবে কাজ করছে, যার লক্ষ্য হচ্ছে অর্থনৈতিক আত্মনির্ভরতা গড়ে তোলা এবং এলাকার সব সম্প্রদায়ের অধিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করা। এই সরকার সকল নাগরিকের অধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সবার অর্থনৈতিক আত্মনির্ভরতা অর্জনে আমরা নানা উদ্যোগ নিচ্ছি। পাশাপাশি আমরা এটা নিশ্চিত করতে চাই , পার্বত্য চট্টগ্রামে কেউ যেন বঞ্চিত না হয়।
বর্তমান সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখেই দেশকে এগিয়ে নিতে চায় উল্লেখ করে সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, এই সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে সকল সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষা এবং একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তোলা। সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়নের সকল দুয়ার উন্মুক্ত করেছে। পাহাড়ি জনগণ কৃষিখাতে পিছিয়ে আছে। আমরা চাই, পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় উৎপাদিত কফি ও কাজু বাদামের উৎপাদন সারাদেশে এবং আন্তর্জাতিকভাবে ছড়িয়ে দিতে।
তিনি বলেন, আমরা পাহাড়ি জনগণ আর পিছিয়ে থাকতে চাই না। আমরা দেশের মূল স্রোতের সঙ্গে একীভূত হতে চাই। সমাজে সকলে যেন ভূমিকা রাখে, তা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের সমাজ, ধর্ম ও রাষ্ট্র সম্পর্কে ভাবতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এক্ষেত্রে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকবে হবে।
সুপ্রদীপ চাকমা আরও বলেন, কাপ্তাই হ্রদের সম্ভাবনাকে যথাযথভাবে কাজে লাগানো উচিত। তিনি রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদকে সোনার সঙ্গে তুলনা করে বলেন, এই জলাশয় থেকে মাছ আহরণের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব।
উপদেষ্টা অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, বর্তমান সরকার আমাদের সবদিক থেকে সহায়তা দিতে প্রস্তুত। প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে এবং সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতায় আমরা একটি সমৃদ্ধ ও ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে চাই। এই সরকার সকল নাগরিকের কল্যাণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সরকার পার্বত্য এলাকার শিক্ষার্থীদের জন্য একটি উন্নত ও সহায়ক ক্রীড়া পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। বাসস
জাতীয়
চট্টগ্রামে ভেঙে পড়া সেতু পরিদর্শনে শিল্প উপদেষ্টা

চট্টগ্রাম শহরের বায়েজিদ বোস্তামি সড়কের স্টার শিপ এলাকায় শীতল ঝর্ণা খালের ওপর ধসে পড়া সেতুটি শুক্রবার ( ৮ জুলাই) সকালে পরিদর্শন করেছেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
এ সময় শিল্প উপদেষ্টা জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধিকে পথচারী ও স্থানীয় জনসাধারণের সর্বোচ্চ সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করে দ্রুত সেতুটির নির্মাণের নির্দেশ দেন।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয় ৷
পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, গণপূর্ত অধিদপ্তর ও সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
জাতীয়
আবারও আলোচনায় বসবে ঐকমত্য কমিশন: আলী রীয়াজ

জুলাই সনদের বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত ও বাস্তবায়নের পদ্ধতি নির্ধারণের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবারও আলোচনায় বসবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
তিনি বলেন, ঐকমত্যের ভিত্তিতে রচিত এবং প্রত্যাশিত স্বাক্ষরিত সনদের বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করা ও বাস্তবায়নের পদ্ধতি কী হবে তা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা দরকার। সেই লক্ষ্যে কমিশন এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আগামী সপ্তাহে আলোচনা করবে।
আলী রীয়াজ বলেন, আশা করা যায় যে, এই প্রক্রিয়ায় স্বল্প সময়ের মধ্যেই একটি উপযুক্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে গত দুই পর্বের আলোচনায় কাঙ্ক্ষিত জাতীয় সনদ প্রণয়নের লক্ষ্যে তাৎপর্য সংখ্যক সুপারিশ বা সংস্কার ব্যাপারে জাতীয় ঐকমত্য সম্ভব হয়েছে।
প্রথম পর্বের সংলাপে ১৬৫টি প্রস্তাবের মধ্যে ৬২টি রাজনৈতিক ঐকমত্য অর্জিত হয়েছে। যার কিছু কিছু সরকার এরই মধ্যে বাস্তবায়ন করেছে (অধ্যাদেশ, নীতি ও নির্বাহী সিদ্ধান্তে মাধ্যমে)। দ্বিতীয় পর্বের সংলাপে গুরুত্বপূর্ণ ২০টি সাংবিধানিক ইস্যূতে আলোচনা হয়। সেখানে ১১টি বিষয়ে সবদলের সমর্থনে জাতীয় ঐকমত্য এবং বাকী ৯টি বিষয়ে অধিকাংশ দলের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে, তাতে কোনো কোনো দলের ভিন্নমত উল্লেখ থাকবে। প্রথম পর্যায়ের আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলোর বিরূপ মনোভাবের কারণ ২৫টি বিষয়ে আলোচনা হয়নি।
জাতীয়
সাংবাদিক তুহিন হত্যার নেপথ্যের কারণ জানালো পুলিশ

গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যার নেপথ্যে মোবাইলে ভিডিও ধারণের বিষয়টিকে দায়ী করেছে পুলিশ। তাদের দাবি চাঁদাবাজি নয়, বাদশা নামের এক ব্যক্তির ওপর হামলার ঘটনা ভিডিও ধারণ করায় খুন হন তুহিন।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ উত্তর) মো. রবিউল ইসলাম এ দাবি করেন।
অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার বলেন, আমরা সাংবাদিক তুহিনকে কুপিয়ে হত্যার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে যাই। ঘটনাস্থলে তুহিনকে মৃত অবস্থায় পাই। আমাদের তদন্তের প্রয়োজনে আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করি।
সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে আমরা দেখতে পাই, একজন নারী রাস্তায় একজন পুরুষের সঙ্গে কোনো একটা বিষয় নিয়ে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে যান। সে সময় একজন পুরুষ, একজন নারীকে আঘাত করেন।
আঘাতের সঙ্গে সঙ্গে ওই নারীর পূর্ব পরিচিত ৪-৫ জন চাপাতিসহ এসে ওই পুরুষকে আঘাত করেন। একপর্যায়ে ওই পুরুষকে আর সিসি ক্যামেরায় পাওয়া যায়নি। পারে আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, ওই পুরুষ জয়দেবপুর সদর হাসপাতালে আছেন। তার নাম বাদশা মিয়া।
মো. রবিউল ইসলাম বলেন, আমরা তার মাধ্যমে এবং স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারি, ওই ঘটনাটি সাংবাদিক তুহিন তার মোবাইল ফোনে ধারণ করেন। পরে এই ঘাতকরা তুহিনকে চার্জ করেন। তিনি এই ভিডিও কেন করেছে তা জানতে চান এবং এটা ডিলিট করার জন্য বলেন। এরপর তুহিন যখন ডিলিট করতে রাজি হননি, কিংবা ভিডিওর বিষয়টি অস্বীকার করেন, তখন ওই অবস্থাতেই তার ওপর হামলা চালানো হয়। এতে তার মৃত্যু হয়।
মূলত একজন নারীকে কেন্দ্র করে প্রথমে একটি হামলার ঘটনা এবং পরে একটি হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এখন পর্যন্ত আমাদের তদন্তে এর বাইরে অন্য কিছু উঠে আসেনি বলে যোগ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাতে গাজীপুরের চৌরাস্তা এলাকার মসজিদ মার্কেটের সামনে আসাদুজ্জামান তুহিন নামে এক সংবাদকর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
জাতীয়
এআইয়ের অপব্যবহার রোধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ হবে: ইসি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আচরণবিধিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের অপব্যবহার রোধে কঠোরভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ (অব.)। একই সঙ্গে পোস্টাল ব্যালটের বিষয়ে প্রাথমিক কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কমিশন সভা শেষে তিনি এসব কথা জানান।
ইসি সানাউল্লাহ বলেন, এআইয়ের অপব্যবহারের ব্যাপারে আমরা কঠোরভাবে এখানে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছি। এখানে প্রবলেমটা হচ্ছে মিসইনফরমেশন, ডিসইনফরমেশন, ম্যালইনফরমেশন। এগুলো প্রতিহত করার জন্য আমরা আচরণবিধিটি ইনক্লুড করেছি।
তিনি জানান, আচরণবিধিটা শুধু প্রার্থী এবং দলের জন্য। কিন্তু এআই ব্যবহার তো তাদের বাইরেও অনেকে করবে। শুধু তো রাজনৈতিক দল আর প্রার্থীরা করবে না। দেশ থেকে করবে, দেশের বাইরে থেকে করবে।
এবিষয়টি দেখার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, সেগুলো প্রতিহত করার জন্য আমরা একটা কমিটি ফর্ম করেছি। এরই মধ্যে তারা কাজ করছেন।
সানাউল্লাহ আরও বলেন, আমাদের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হচ্ছে কোনোভাবে যেন আমরা ওই চেষ্টা করবো যতটুকু সম্ভব যে ব্যান্ডউইথ না কমিয়ে কোনো ধরনের সেবাকে আপনার বিঘ্ন না ঘটিয়ে যেন আমরা নির্বাচনটা করতে পারি। একান্তই বাধ্য না হলে নির্বাচন কমিশনের প্রাথমিকভাবে এখনো পর্যন্ত কোনো ইচ্ছা নেই যে কোনো সেবা বা কোনো প্ল্যাটফর্মকে লিমিট করার।
নির্বাচনকে সামনে রেখে কোনো ধরনের ড্রোন ব্যবহার করা যাবে না বলে জানিয়েছেন আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
তিনি বলেন, ড্রোন এবং কোয়ার্ডকপ্টার এ ধরনের কোনো কিছু কোনো প্রার্থী বা তার এজেন্ট বা অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারবেন না। নির্বাচন কমিশনের ব্যবহার করার কোনো প্রয়োজনীয়তা যদি আসে তখন আমরা আলোচনা করবো। গণমাধ্যমও পারবে না।
নির্বাচনে সিসি ক্যামেরার ব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা নিয়েও আমরা কাজ করছি। এটা নিয়ে অলরেডি আমরা তিন-চারটা মিটিং করেছি। একদিনের জন্য আউটসোর্স করে ভাড়ায়ও পাওয়া যায় না। আবার কেনাও যৌক্তিক নয়। ৪৫ হাজার কেন্দ্রে হিসাব করে দেখেন কতগুলো সিসি ক্যামেরা লাগবে। এটা কিনে আপনি রাখবেন কীভাবে এবং এটা জাস্টিফাই করবেন কীভাবে, অনেকগুলো প্রস্তাব এসেছে।