জাতীয়
আসিফ ও নাহিদ পেলেন যেসব মন্ত্রণালয়
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের মধ্যে মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বণ্টন করা হয়েছে। এর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম দুই সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলামকে দেয়া হয়েছে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে দেয়া হয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে শুক্রবার (৯ আগস্ট) মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এই সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বঙ্গভবনে ড. ইউনূসসহ ১৪ উপদেষ্টাকে শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বাকি তিন উপদেষ্টা ঢাকার বাইরে থাকায় শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
শপথ নেয়া অন্যান্যের মধ্যে জায়গা করে নেয়া আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মো. নাহিদ ইসলাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম দুই সমন্বয়ক। তারা দু’জনই ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন।
উইকিপিডিয়ার তথ্য বলছে, আসিফ মাহমুদ এবং নাহিদ ইসলাম দুজনেরই জন্ম ১৯৯৮ সালে। অর্থাৎ তাদের বয়স ২৬ বছরের আশপাশে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এত কম বয়সে আর কেউ কোনো সরকারের উপদেষ্টা হতে পারেননি।
শুধু তাই নয়, এভাবে ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে কারো অন্তর্বর্তীকালীন কিংবা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনেরও নজির নেই।
উইকিপিডিয়ার তথ্যমতে, নাহিদ ইসলামের ডাকনাম ফাহিম। জন্ম ঢাকায়। বাবা শিক্ষক। মা গৃহিণী। তার ছোট এক ভাই রয়েছে। সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করছেন নাহিদ।
আর আসিফ মাহমুদের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার আকুবপুর ইউনিয়নের আকুবপুর গ্রামে। বাবা মো. বিল্লাল হোসেন। মা রোকসানা বেগম। আদমজী ক্যান্টমেন্ট কলেজে মানবিক বিভাগে পড়াশুনা করা আসিফ মাহমুদ কলেজটির বিএনসিসি ক্লাবের প্লাটুন সার্জেন্ট ছিলেন। কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগে পড়ছেন।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক এবং নাহিদ সদস্য সচিব। গত বছরের ৪ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি নামে ছাত্র সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ করা হয়। তখন এই সংগঠনের ঘোষণা দেন ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে কাজ করছে সরকার: আইজিপি
অন্তবর্তী সরকার পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করে একটি নিরপেক্ষ সংস্থায় উন্নীত করতে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইজিপি বাহারুল আলম।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমিতে ৪০তম সাব-ইন্সপেক্টর ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন আইজিপি।
পুলিশ মহাপরিদর্শক সাব-ইন্সপেক্টরদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপরাধ দমন, জনগণের নিরাপত্তা ও সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা পুলিশের প্রধান কাজ। পাশাপাশি প্রবাসীদের জানমালের নিরাপত্তায়ও গুরুত্ব দিতে হবে।’ পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুনদের সৃজনশীল প্রতিভার প্রতি আস্থা রাখতে চান বলে জানান আইজিপি।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯ টায় কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন আইজিপি বাহারুল আলম। নবীন সাব-ইন্সপেক্টরদের অভিবাদন গ্রহণ করেন।
২০২৩ সালে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের জন্য একাডেমিতে যোগ দেন ব্যাচের মোট ৮২১ জন এসআই। পরবর্তীতে বিভিন্ন অপরাধের দায়ে ২২ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এরপর মাঠে ও ক্লাসে বিশৃঙ্খলার অভিযোগে ৫ আগস্টের পর চারধাপে বাদপড়েন ৩২১ জন এসআই।
ব্যাচেটির অবশিষ্ট ৪৮০ জন সাব-ইন্সপেক্টর ৮টি কন্টিনজেন্টে ভাগ হয়ে কুচকাওয়াজে অংশ নেয়। এবার বেস্ট একাডেমিক হন ক্যাডেট বদিউজ্জামান, ইনফিল্ডে বেস্ট হন নজরুল ইসলাম ও সব বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেন ক্যডেট আরিফুল ইসলাম। সকলের হাতে পুরস্কার তুলে দেন আইজিপি।
গত ২৬ নভেম্বর ৪০ তম এসআইদের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তা অনিবার্য কারণে বাতিল করা হয়েছিল।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মাসুদুর রহমানস ভূঁঞা, রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আলমগীর রহমান ও রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: রিজওয়ানা হাসান
সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত চারটি কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনের আলোকে সরকার আগামী এক মাসের মধ্যে সংস্কারের একটা রোডম্যাপ প্রকাশ করবে বলে জানিয়েছেন রিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে চার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা জানান তিনি।
তিনি বলেন, জমা হওয়া প্রতিবেদনগুলোর সারমর্ম আজই জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এর মধ্যে সরকার কতটা সংস্কার করবে, আগামী এক মাসের মধ্যে তার একটা রোডম্যাপ দেওয়া হবে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, যে রিপোর্টগুলো আমাদের কাছে এসেছে, সেই কমিশনের প্রধানেরা স্বাধীনভাবে কাজ করেছেন। এখন কমিশন প্রধানরা সেই রিপোর্টগুলো নিয়ে বসবে। বসে এখান থেকে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে, কোথায় কোথাও তাদের প্রাধান্য দেওয়া উচিত, তারা ঠিক করবে। আগামীকাল ছয়টি কমিশনের কাজের সময় আরও একমাস বাড়িয়ে দেব।
তিনি বলেন, সংস্কারের যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তার কনটেক্সটা যেন আমরা ভুলে না যাই। কনটেক্সটাটা হচ্ছে একটা গণঅভ্যুত্থান। এখন যদি আমাদের একটা আইনি কাঠামো ধরে বলা হয়, সংবিধানের এই অনুচ্ছেদে এটা আছে, আপনাকে এভাবে করতে হবে। তাহলে গণঅভ্যুত্থানের যে চেতনা, যে আকাঙ্ক্ষা, সেটা এনডোর্স করা আমাদের জন্য খুব দুরুহ হয়ে পড়ে। গণঅভ্যুত্থানকেই আমরা হৃদয়ে ধারণ করেছি।
সংস্কারের জন্য সব রাজনৈতিক দল তাদের মতামত দিয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আজ কমিশনগুলো যে রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে সব রাজনৈতিক দলের লিখিত বক্তব্যের প্রতিফলন ঘটেছে। এখানেই শেষ নয়, এটা নিয়ে আলোচনার আরও কয়েকটি পেজ (ধাপ) রয়েছে।
এ সময় ব্রিফিংয়ে উপস্থিত আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, আমাদের কর্ম পরিকল্পনার চারটা ধাপ ছিল। একটা হচ্ছে কমিশনগুলো তাদের রিপোর্ট প্রণয়ন করবে, সুপারিশ দেবে। দ্বিতীয় হচ্ছে, কমিশনের প্রস্তাবের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য আলোচনা হবে। ঐকমত্যের ভিত্তিতে আমরা প্রয়োজনীয় আইন এবং নীতি প্রণয়ের কাজ শুরু করব। আমাদের প্রত্যাশা আছে আমরা পুরো কাজটা সম্পূর্ণ করে যেতে পারবো। নির্ভর করছে রাজনৈতিক দলগুলো কতটুকু সংস্কার করতে পারে।
এদিকে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের ব্যাপারে রিজওয়ানা হাসান বলেন, কাউকে টার্গেট করে বিচার হচ্ছে না। স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিচার হচ্ছে। আমরা যেহেতু কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করিনি, কাজেই রাজনীতিতে কোন দল কোন অবস্থানে কীভাবে থাকবে, সেই সিদ্ধান্ত সেই রাজনৈতিক দল নেবে। এটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর নির্ভর করছে না।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
শামীম ওসমান ও নানক পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ও তার পরিবার এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সাড়ে ৪০০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে এই দুই পরিবারের বিরুদ্ধে পৃথক পৃথক মামলাগুলো দায়ের করা হয়।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
অপরাধে জড়িত সব কর্মকর্তাকে ধরা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অপরাধ কার্যক্রম ও বিতর্কিত ভূমিকায় জড়িত পুলিশসহ সরকারি কর্মকর্তাদের ধরা হবে। এরই মধ্যে ছাগল মতিউরকে কিন্তু আজকে ধরা হয়েছে। আস্তে আস্তে বের করে সবাইকে ধরা হবে।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় আনসার ও ভিডিপি সদর দপ্তর পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
বিতর্কিত ভূমিকার পরও অনেক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বরং বদলি পদোন্নতি পদায়ন করা হয়েছে। অথচ যারা ট্রেনিং শেষ করেছেন তাদের অনেককে নিয়োগ দেওয়া হয়নি, এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘যেসব পুলিশ কর্মকর্তার ভূমিকা ছিল, ফুটেজ আছে তাদেরকে কিন্তু ধরা হচ্ছে। চেষ্টা চলছে। প্রতিদিন ২ থেকে ১ জন করে ধরা পড়ছেন। যেমন আজকে মতিউর, ছাগল মতিউরকে ধরা হয়েছে। তাকেও এতদিন ধরা যায়নি। অন্যদেরও ধরা হবে, আইনের আওতায় আনা হবে। সব তো একদিনে ধরা যায় না, অনেকে তো লুকিয়ে আছে, তাদের খুঁজে খুঁজে একে একে সবাইকে ধরা হবে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘ইনকোয়ারির পর যাদের বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ধরা তো হচ্ছে। দেখেন ধরা হয়েছে, ধরার পর আবার এক ওসি পালিয়েও গেছে।’
এ রকম বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তা-সদস্যদের তালিকা গণমাধ্যমে আছে। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা তালিকাটি পুলিশ সদর দপ্তরে জমা দেওয়ার অনুরোধ জানান।
পাশাপাশি সাংবাদিকদের ধন্যবাদ দিয়ে তিনি বলেন, ‘পার্শ্ববর্তী দেশের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে আপনারা সঠিক স্বচ্ছ সাংবাদিকতা করেছেন।’
তবে এ সময় অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা আরও বাড়ানোর অনুরোধ জানান তিনি।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
ইসিকে এক সপ্তাহের আল্টিমেটাম এনআইডি বঞ্চিত পর্দানশিন নারীদের
গত ১৬ বছর ধরে পর্দানশিন নারীদের নাগরিকত্ব আটকে রেখেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এজন্য আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে আল্টিমেটাম দিয়েছে মহিলা আনজুমান।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সামনে পর্দানশিন নারীদের এনআইডি বঞ্চিত করে মানবাধিকার হরণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করে মহিলা আনজুমান। সেই সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) একটি স্মারকলিপিও দিয়েছেন তারা।
মহিলা আনজুমানের আহ্বায়ক শারমিন ইয়াসমিন বলেন, মুসলমানদের মানবাধিকার থাকতে নেই। গত ১৬ বছর যাবত ইসির কতিপয় স্বৈরাচারী কর্মকর্তা শুধু মুখছবির অজুহাতে পর্দানশিন নারীদের নাগরিকত্ব আটকে রেখেছেন, যা এক প্রকার মানবতাবিরোধী অপরাধ। এতে পর্দানশিন নারীরা মৌলিক ও নাগরিক অধিকার বঞ্চিত হয়ে নিদারুণ কষ্ট করছেন। যে বা যারা গত ১৬ বছর যাবত পর্দানশিন নারীদের মানবাধিকার হরণ করেছেন, আমরা তাদের বিচার চাই।
মহিলা আনজুমানের সদস্যরা তাদের ধর্মীয় অধিকার এবং প্রাইভেসির অধিকার অক্ষুণ্ন রেখে এনআইডির দাবি জানান এবং আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দাবি না মানলে দেশব্যাপী ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মাঠে নামবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন।
শারমিন ইয়াসমিন বলেন, একজন নারী ছবি তুললে দুটি গুনাহ হয়। একটি ছবি তোলার গুনাহ, অন্যটি বেপর্দা হওয়ার গুনাহ। আমরা পর্দানশিন নারীরা সেই গুনাহ থেকে বাঁচতে চাই। ইসি কর্মকর্তারা আমাদের নাগরিকত্ব আটকে রেখে সে গুনাহ করতে বাধ্য করতে পারে না। আমি আমার চেহারা কাউকে দেখাব না, এটা আমার গোপনীয়তা বা প্রাইভেসির অধিকার। অর্থাৎ পর্দানশিন নারীদের আজকের এ দাবি শুধু ধর্মীয় অধিকারের মধ্যে পড়ে না, প্রাইভেসির অধিকারের মধ্যেও পড়ে। ফলে দুই দিক থেকেই পর্দানশিন নারীদের দাবি মানবাধিকার ও সাংবিধানিক অধিকারের অন্তর্ভুক্ত।
তিনি আরও বলেন, এনআইডি ছাড়া পর্দানশিন নারীরা মৌলিক ও নাগরিক অধিকার হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অনেক পর্দানশিন নারী অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন। কিন্তু এনআইডি ছাড়া ওয়ারিশসূত্রে প্রাপ্ত জমি বিক্রি করতে পারছেন না। অথচ সম্পত্তি বিক্রি করতে পারলে তিনি চিকিৎসার খরচ বহন করতে পারতেন। অনেক পর্দানশিন নারীর দুর্ঘটনায় বাড়িঘর আগুনে পুড়ে গেছে। এনআইডির ছাড়া ত্রাণ নিতে পারছেন না। অনেক বিধবা বা তালাকপ্রাপ্ত পর্দানশিন নারী এনআইডির অভাবে বাসা ভাড়া করতে পারছেন না। বাচ্চাদের স্কুলে ভর্তি করাতে পারছেন না। পর্দার সঙ্গে কোনো চাকরি করে জীবন নির্বাহ করতে পারছেন না। গত ১৬ বছর যাবত পর্দানশিন নারীদের সাবেক ইসি কর্মকর্তারা যে কষ্ট দিয়েছেন তা বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না।
শারমিন ইয়াসমিন বলেন, গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য ছিল বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা। গত ১৬ বছর শুধু পরিপূর্ণ পর্দা করার কারণে নারীদের সঙ্গে যে বৈষম্য হয়েছে, আমরা এ বৈষম্যের পরিসমাপ্তি চাই। অবিলম্বে পর্দানশিন নারীদের ধর্মীয় ও প্রাইভেসির অধিকার অক্ষুণ্ন রেখে এনআইডি দেওয়া হোক। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন ২০১০ এবং ২০২৩-এ পরিচয় শনাক্তে চেহারার ছবির কথা উল্লেখ নেই। এমনকি বায়োমেট্রিক যাচাইয়ে ফেসিয়াল রিকগনিশনকেও বাধ্যতামূলক করা হয়নি। কিন্তু তারপরও স্বৈরাচারী মনোভাব থেকে পর্দানশিন নারীদের নাগরিকত্ব বঞ্চিত করে রেখেছিলেন সাবেক ইসি কর্মকর্তারা।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে দেওয়া স্মারকলিপিতে তিনটি দাবি জানিয়েছে মহিলা আনজুমান– বিগত ১৬ বছর যাবত পর্দানশিন নারীদের মানবাধিকার হরণ করা ইসি কর্মকর্তাদের বিচার করা হোক; পর্দানশিন নারীদের ধর্মীয় ও প্রাইভেসির অধিকার অক্ষুণ্ন রেখেই এনআইডি প্রদান করা হোক; পর্দানশিন নারীদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়ায় মহিলা অফিস সহকারী বাধ্যতামূলক করা হোক।