জাতীয়
ড. ইউনূসের নেতৃত্বে হবে ১৭ জনের সরকার

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদস্য সংখ্যা হবে ১৭ জন। বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের আনতে সচিবালয় থেকে তাদের বাড়িতে গাড়ি পাঠানো শুরু হয়েছে। সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে উপসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তারা গাড়ির সঙ্গে যাচ্ছেন। গাড়িতে থাকা অবস্থায় তাদের নাম জানানো হবে। ড. মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে এ উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হচ্ছে।
এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, হাসান আরিফ ও তৌহিদ হোসেনের নাম জানা গেছে।
এর আগে দুপুর ২টা ১০ মিনিটে ইউনূসকে বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজ ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানবন্দরের এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানান তিনি।
তিনি বলেন, সারা বাংলাদেশ একটা বড় পরিবার। এই পরিবারে আমরা একসঙ্গে চলতে চাই। আমাদের সঙ্গে দ্বিধাদ্বন্দ্ব যা আছে সরিয়ে ফেলতে চাই। যারা বিপথে গেছে তাদের পথে আনতে চাই। যাতে করে একসঙ্গে কাজ করতে পারি।
জানা যায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধান হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় থাকবেন। তার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা। ভেতরে আসবাবপত্র নতুনভাবে বসানো হচ্ছে। এই কাজগুলো করছে গণপূর্ত অধিদফতর (পিডব্লিউডি)।
তবে যমুনা ভবনের সামনে এখনো নিরাপত্তা বেষ্টনী বসানো হয়নি। সেনাবাহিনী, আনসারসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে এক-এগারোর পট পরিবর্তনের পর সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমেদ যমুনায় ছিলেন।
এর আগে, ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি হাবিবুর রহমান এবং ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা লতিফুর রহমান তাদের দায়িত্বের দিনগুলো রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যুমনাতেই ছিলেন।

জাতীয়
যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই: বাণিজ্য উপদেষ্টা

বাংলাদেশের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
বাণিজ্য উপদেষ্টার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে লেখেন, বাণিজ্য উপদেষ্টা তার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘বাংলাদেশের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় আমরা প্রতিযোগিতামূলক অবস্থায় থাকব। যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে আমরা ২০ শতাংশের নিচে প্রত্যাশা করেছিলাম।’
তিনি আরও লেখেন, ‘বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় দফার শুল্ক আলোচনা শেষ হওয়ার পর হোয়াইট হাউস থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বাংলাদেশের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এর আগে এই শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল ৩৭ শতাংশ। পরে কমিয়ে ৩৫ শতাংশ করা হয়। আজ চূড়ান্ত আলোচনা শেষে শুল্ক ২০ শতাংশের ঘোষণা এলো।’
‘ভারত ২৫ শতাংশ, শ্রীলংকা ২০ শতাংশ, ভিয়েতনাম ২০ শতাংশ, কম্বোডিয়া ১৯ শতাংশ, পাকিস্তান ১৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।’
কাফি
জাতীয়
ইসির আরও ৫২ কর্মকর্তা বদলি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে কর্মকর্তাদের গণহারে বদলি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চলতি মাসের শেষার্ধে মোট ১৭৪ জন কর্মকর্তাকে বদলি করেছে ইসি। সবশেষ বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ শহীদুর রহমান ৫২ কর্মকর্তার বদলি সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেন।
এর আগে ২৭ জুলাই এক প্রজ্ঞাপনে ৭১ জন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে বদলি করে ইসি। তারও আগে প্রথম ধাপে ১৫ জুলাই ৫১ জন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছিল।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ২৭ জুলাইয়ের প্রজ্ঞাপনের উপজেলা কর্মকর্তার ১৬ নম্বর ক্রমিকের শেখ বদরুদ্দীন উপজেলা নির্বাচন অফিস, টুঙ্গীপাড়া, গোপালগঞ্জ, ৪৪ নম্বর ক্রমিকের মো. আলী হোসেন উপজেলা নির্বাচন অফিস, জলঢাকা, নীলফামারী, ৫১ নম্বর ক্রমিকের মোহাম্মদ ওসমান গণি, উপজেলা নির্বাচন অফিস, বরুড়া, কুমিল্লা, ৫৩ নম্বর ক্রমিকের মো. আবুল বাশার, উপজেলা নির্বাচন অফিস, কুলাউড়া, মৌলভীবাজার, ৬৩ নম্বর ক্রমিকের মেহরাজুল হাসান, উপজেলা নির্বাচন অফিস, তাড়াশ, সিরাজগঞ্জ এবং ৫ নম্বর ক্রমিকের মোশাররফ হোসেন, সহকারী পরিচালক, নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, ঢাকা এর বদলির সংশ্লিষ্ট অংশটুকু স্থগিত করা হলো।
ইসি জানায়, বৃহস্পতিবার বদলি করা কর্মকর্তারা আগামী ৬ আগস্টের মধ্যে বর্তমান কর্মস্থল থেকে অবমুক্ত হবেন। অন্যথায় আগামী ৭ আগস্ট তাৎক্ষণিক অবমুক্ত মর্মে গণ্য হবেন। জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো।
জাতীয়
১০০ আসনে হবে সংসদের উচ্চকক্ষ, পিআর পদ্ধতিতে সদস্য মনোনয়ন

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংসদের উচ্চকক্ষের কাঠামো চূড়ান্ত করেছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, উচ্চকক্ষ হবে ১০০ আসনের এবং সদস্যরা জাতীয় নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে (পিআর পদ্ধতিতে) মনোনীত হবেন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দ্বিতীয় ধাপের ২৩তম দিনের আলোচনায় এই সিদ্ধান্ত হয়। কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, আলোচনার চূড়ান্ত সনদ দ্রুত প্রস্তুত করে দলগুলোর হাতে তুলে দেওয়া হবে।
উচ্চকক্ষের বিল সংক্রান্ত ক্ষমতা সীমিত থাকবে। অর্থবিল ছাড়া সব বিল নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষে উপস্থাপন করতে হবে। উচ্চকক্ষ কোনো বিল স্থায়ীভাবে আটকে রাখতে পারবে না; এক মাসের বেশি আটকে রাখলে সেটিকে অনুমোদিত গণ্য করা হবে।
কমিশনের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, উচ্চকক্ষ বিল পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করবে এবং অনুমোদন বা প্রত্যাখ্যানের সুপারিশসহ নিম্নকক্ষে পাঠাবে। নিম্নকক্ষ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
এই সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছে বিএনপি ও তাদের মিত্র জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ১২ দলীয় জোট, এনডিএম ও এলডিপি। তারা উচ্চকক্ষের সদস্য নির্বাচনে ভোট নয়, নিম্নকক্ষে প্রাপ্ত আসনের ভিত্তিতে মনোনয়ন চায়। অন্যদিকে, সিপিবি, বাসদ ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম উচ্চকক্ষের বিরোধিতা করেছে।
আজকের বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, সিপিবি, গণসংহতি আন্দোলনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐকমত্য কমিশন) মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও আইয়ুব মিয়া।
জাতীয়
কিছুদিনের মধ্যেই নির্বাচনের ঘোষণা আসবে: আইন উপদেষ্টা

আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, নির্বাচনের সময় নিয়ে কিছুদিনের মধ্যে ঘোষণা শুনবেন।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকেলে আইন মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন উপদেষ্টা।
এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ভোট দিতে সবাই পারবেন। আমাদের হেন উদ্যোগ নেই, যা নেওয়া হচ্ছে না। ভোটাধিকারের কথা বলছেন? ক্লাসে যখন যেতাম। জিজ্ঞেস করতাম ছাত্রদের- তোমাদের মধ্যে কে কে ভোট দিয়েছো? তারা হাসাহাসি শুরু করত। কেউ কেউ বলতো স্যার ভোট দিয়েছি, তবে দশ বারোটা। ৯০ শতাংশ বলতো তারা ভোট দেয়নি। যা হোক আমাদের সেই দুঃখ ঘুচবে। আমরা ১৮ বছর ধরে ভোট দিতে পারিনি।
কবে আগামী নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হবে— জানতে চাইলে আইন উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনের সময় তো… জাস্ট ওয়েট করেন, কিছুদিনের মধ্যে ঘোষণা শুনবেন।
আরেক প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই- এর সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করি। ২০০৮-এর নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ আছে। আপনারা যারা সাংবাদিকরা আছেন, কাজ করেন, অনেক ভয়াবহ তথ্য পাবেন ২০০৮-এর নির্বাচন নিয়ে।
উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনী কার্যক্রম নির্বাচন কমিশন দেখবে। আমি শুধু আমাদের সরকারের নিয়তের কথা আপনাদেরকে বলতে পারি। আমাদের নিয়ত আছে বাংলাদেশের ইতিহাসে বেস্ট ইলেকশন দেওয়ার, এটা স্যার (প্রধান উপদেষ্টা) আমাদের সবসময় বলেন।
জাতীয়
দেশের চামড়াশিল্প নিয়ে আমরা অপরাধ করেছি: প্রধান উপদেষ্টা

দেশের সম্ভাবনাময় চামড়াশিল্পের যথাযথ মূল্যায়ন না করায় এটিকে “অপরাধ” হিসেবে অভিহিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, “এই শিল্প দিয়ে আমাদের অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সেটা হয়নি।”
বুধবার (৩০ জুলাই) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আয়োজিত স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের প্রস্তুতি বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের পর্যালোচনাসভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
সভায় তিনি চামড়াশিল্পের সংকট নিরসনে একটি পৃথক বৈঠকের আয়োজনের নির্দেশ দেন। বলেন, দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে অব্যবহৃত শিল্প সম্ভাবনাগুলোর পুনর্মূল্যায়ন জরুরি।
প্রেস উইং জানিয়েছে, বৈঠকে ১৬টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে ৪টি বাস্তবায়নে কাজ করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), ৩টি শিল্প মন্ত্রণালয়, ২টি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, ৩টি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ৪টি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়।
এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান জানান, ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো বাস্তবায়নের কাজ এগোচ্ছে, যেখানে ইতোমধ্যে ১৯টি সংস্থা যুক্ত হয়েছে। এছাড়া ট্যারিফ পলিসি ২০২৩ বাস্তবায়ন নিয়েও অগ্রগতি হয়েছে।
সভায় ট্যানারি ভিলেজের ইটিপি পূর্ণমাত্রায় চালু, গজারিয়ায় এপিআই পার্ক বাস্তবায়ন, এবং ২০২২ সালের শিল্প নীতি হালনাগাদ সম্পর্কেও আলোচনা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের নিজেদের স্বার্থেই এসব উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। যেসব আইন-নীতিমালা বাস্তবে কোনো কাজে আসছে না, সেগুলো পরিবর্তন করে সামনে এগোতে হবে।”
তিনি আগামী দুই মাসের মধ্যে এলডিসি উত্তরণ বিষয়ে পরবর্তী বৈঠক আয়োজনের নির্দেশও দেন।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানসহ বিভিন্ন উপদেষ্টা, সচিব ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর উপস্থিত ছিলেন।
কাফি