জাতীয়
দেশ ছাড়ার আগে শেষ ৪ ঘণ্টায় যা করেছেন হাসিনা
৫ আগষ্ট সকাল ১০টা। রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত হন গণভবনে। বৈঠকে বসেন সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। বৈঠকে বিভিন্ন বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের চাপ দেন আন্দোলনকারীদের ওপর আরও বল প্রয়োগ করতে। তবে শীর্ষ কর্মকর্তারা জানান, পরিস্থিতি একেবারেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে। কিন্তু, এ কথা মানতে রাজি নন শেখ হাসিনা।
এ সময় নিরাপত্তা বাহিনী কেন পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না, সেটার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এরপর কর্মকর্তারা তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর তাদের অনুরোধে দ্রুততম সময়ে পদত্যাগ করে সামরিক হেলিকপ্টারে করে গোপনে বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের কাছ থেকে শেখ হাসিনার ক্ষমতা ছাড়ার শেষ চার ঘণ্টার একটা বিবরণ পাওয়া যায়।
গত রোববার শেখ হাসিনা দলীয় কর্মীদের মাঠে নামার নির্দেশ দিলে দিনভর সারা দেশে ব্যাপক সংঘাত ও প্রাণহানি ঘটে। এত প্রানহানির পরও ছাত্র-জনতার আন্দোলন সামাল দিতে পারেননি তিনি।
যদিও এ পরিস্থিতি উপলব্ধি করতে পেরে রোববার রাতেই শেখ হাসিনাকে তার একজন উপদেষ্টাসহ কয়েকজন নেতা বোঝানোর চেষ্টা করেন। তারা সেনাবাহিনীর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের পরামর্শ দেন বলে জানা গেছে। তবে তিনি তা মানতে চাননি, বরং সোমবার (গতকাল) থেকে কারফিউ আরও কড়াকড়ি করতে বলেন। ভোর থেকে কারফিউ কড়াকড়ি করার উদ্যোগ নেওয়া হলেও সকাল ৯টার পর থেকে বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীরা কারফিউ ভেঙে নামতে শুরু করেন। ১০টা নাগাদ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে জমায়েত বড় হতে থাকে।
বিভিন্ন বাহিনীর উচ্চপর্যায়ের সূত্র বলছে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিন বাহিনীর প্রধান ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে ডাকা হয়। নিরাপত্তা বাহিনী কেন পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না, সেটার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আন্দোলনকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাঁজোয়া যানে উঠে লাল রং দিচ্ছে, সামরিক যানে পর্যন্ত উঠে পড়ছেন, এরপরও কেন তারা কঠোর হচ্ছে না, সেটা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। একইসঙ্গে বিশ্বাস করে এই কর্মকর্তাদের শীর্ষ পদে বসিয়েছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
একপর্যায়ে শেখ হাসিনা আইজিপিকে দেখিয়ে বলেন, তারা (পুলিশ) তো ভালো করছে। তখন আইজিপি জানান, পরিস্থিতি যে পর্যায়ে গেছে, তাতে পুলিশের পক্ষেও আর বেশি সময় এ রকম কঠোর অবস্থান ধরে রাখা সম্ভব নয়।
ওই সময়ে শীর্ষ কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়, বলপ্রয়োগ করে এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে না। কিন্তু, শেখ হাসিনা সেটা মানতে চাচ্ছিলেন না। তখন কর্মকর্তারা শেখ রেহানার সঙ্গে আরেক কক্ষে আলোচনা করেন। তাকে পরিস্থিতি জানিয়ে শেখ হাসিনাকে বোঝাতে অনুরোধ করেন। শেখ রেহানা এরপর বড় বোন শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করেন। কিন্তু তিনি ক্ষমতা ধরে রাখতে অনড় থাকেন। একপর্যায়ে বিদেশে থাকা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গেও ফোনে কথা বলেন একজন শীর্ষ কর্মকর্তা। এরপর জয় তার মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। তারপর শেখ হাসিনা পদত্যাগে রাজি হন। তখন তিনি একটা ভাষণ রেকর্ড করতে চান জাতির উদ্দেশে প্রচারের জন্য। ততক্ষণে গোয়েন্দা তথ্য আসে, বিপুল ছাত্র-জনতা শাহবাগ ও উত্তরা থেকে গণভবন অভিমুখে রওনা হয়েছে। দূরত্ব বিবেচনায় ৪৫ মিনিটের মধ্যে শাহবাগ থেকে গণভবনে আন্দোলনকারীরা চলে আসতে পারে বলে অনুমান করা হয়। ভাষণ রেকর্ড করতে দিলে গণভবন থেকে বের হওয়ার সময় না-ও পাওয়া যেতে পারে। এই বিবেচনায় শেখ হাসিনাকে ভাষণ রেকর্ডের সময় না দিয়ে ৪৫ মিনিট সময় বেঁধে দেওয়া হয়।
এরপর ছোট বোন রেহানাকে নিয়ে তেজগাঁওয়ের পুরোনো বিমানবন্দরে হেলিপ্যাডে আসেন শেখ হাসিনা। সেখানে তাদের কয়েকটি লাগেজ ওঠানো হয়। তারপর তারা বঙ্গভবনে যান। সেখানে পদত্যাগের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বেলা আড়াইটার দিকে সামরিক হেলিকপ্টারে করে ছোট বোনসহ ভারতের উদ্দেশে উড্ডয়ন করেন শেখ হাসিনা।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর রহমান গ্রেপ্তার
পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল (১৯ সেপ্টেম্বর) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার রবিউল হোসেন ভূঁইয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে আটটি হত্যা মামলার রয়েছে। তবে কোনটতাতে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে, তা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি।
মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও গ্রেপ্তারকৃতদের হেফাজতে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।
মশিউর ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) গুলশান বিভাগ এবং লালবাগ বিভাগের সাবেক উপ-কমিশনার ছিলেন।
ডিবি সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিমানবন্দর দিয়ে দেশ ছেড়ে পালানোর সময় তাকে আটক করা হয়।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান গ্রেপ্তার
আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সুনামগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
একাদাশ জাতীয় সংসদে তিনি অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।
এম এ মান্নান কর্মজীবনে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক, এনজিও ব্যুারোর মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।
সরকারি চাকরি থেকে অবসরের পর ২০০৫ সালে সুনামগঞ্জ-৩ আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে অংশগ্রহণ করে পরাজিত হন। পরবর্তীতে ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদে এমপি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এবং ২০১৮ সালের একাদশ সংসদে শেখ হাসিনা সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রীর দায়িত্ব পান।
বৈষম্যবিরাধী ছাত্র আন্দোলনের তীব্র গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে তিনিও অন্যান্য নেতাদের মতো আত্মগোপনে চলে যান। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
প্রধান উপদেষ্টার সহকারী প্রেস সচিব হলেন দুই সাংবাদিক
দুই সাংবাদিককে প্রধান উপদেষ্টার সহকারী প্রেস সচিব নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন- দ্যা ডেইলি স্টারের সাব এডিটর/রিপোর্টার সুচিস্মিতা তিথি এবং ভিজুয়াল সাংবাদিক/রিপোর্টার নাইম আলী।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এতে জানানো হয়, এ দুইজন সাংবাদিককে প্রধান উপদেষ্টার সহকারী প্রেস সচিব পদে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সঙ্গে কর্মসম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে যোগদানের তারিখ থেকে প্রধান উপদেষ্টার মেয়াদকাল অথবা তার সন্তুষ্টি সাপেক্ষে (যেটি আগে ঘটে) জাতীয় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ করা হলো।
বেতনস্কেল ২০১৫ এর গ্রেড-৯ ভুক্ত ২২ হাজার থেকে ৫৩ হাজার ৬০ টাকা স্কেলের সর্বোচ্চ ধাপ ৫৩ হাজার ৬০ টাকা নির্ধারিত বেতনে তাদেরকে এ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
অন্তর্বর্তী সরকার অধ্যাদেশ চূড়ান্ত অনুমোদন
‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪’ এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আইন ও বিচার বিভাগ এ খসড়াটি উপস্থাপন করে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক ব্যাপক দমন-পীড়ন ও গণহত্যা চালানোর ফলে পুরো দেশে দল-মত নির্বিশেষে ছাত্র-জনতা উত্তাল গণবিক্ষোভ করে। আন্দোলনের এক পর্যায়ে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচারের দাবিতে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে ঐক্যবদ্ধ ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী গত ৫ আগস্ট রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করেন।’
‘রাষ্ট্রপতি গত ৬ আগস্ট দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাংবিধানিক সংকট মোকাবিলা, জনস্বার্থ ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা রক্ষা, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সচল রাখা এবং রাষ্ট্রের নির্বাহী কার্য পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন বিষয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের মতামত চান।’
‘সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে দেওয়া উপদেষ্টামূলক এখতিয়ার প্রয়োগ করে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ৮ আগস্ট মতামত প্রদান করেছেন যে, রাষ্ট্রের সাংবিধানিক শূন্যতা পূরণে জরুরি প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের নির্বাহী কার্যপরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা এবং অন্য উপদেষ্টা নিযুক্ত করতে পারবেন। রাষ্ট্রপতি এভাবে নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টা এবং অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করাতে পারবেন’ বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, ‘বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ডকট্রিন অব নেসেসিটি অনুসারে সাংবিধানিক সংকট মোকাবিলায় সর্বস্তরের জনগণের ঐকান্তিক ইচ্ছা ও পরম অভিপ্রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে, গণঅভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতার প্রতিনিধিদের প্রস্তাবের ভিত্তিতে এবং ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের রাষ্ট্র সংস্কার আকাঙ্ক্ষা পূরণের ও রাষ্ট্রের নির্বাহী কার্যপরিচালনার জন্য রাষ্ট্রপতি ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করেন।’
গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্ষমতা ও দায়িত্ব, প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টাদের পদমর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা, পদত্যাগ এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ে বিধান করা জরুরি। এই প্রেক্ষাপটে ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪’ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির বিরুদ্ধে ওরিয়ন গ্রুপের মানহানির মামলা
মানহানিকর এবং মিথ্যা প্রতিবেদন প্রচার করার অভিযোগে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে ওরিয়ন গ্রুপ। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকার চতুর্থ যুগ্ম জেলা জজ আদালতে ৫০০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়ে এ মামলা দায়ের করা হয়।
মামলায় ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের পক্ষে এর প্রধান সম্পাদক ও প্রধান নির্বাহী মো. শামসুর রহমান এবং টেলিভিশনটির সংবাদকর্মী আব্দুল্লাহ রাফিকে বিবাদী করা হয়েছে।
ওরিয়ন গ্রুপের আইনজীবী আরিফুর রহমান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে এর গ্রহণযোগ্যতার ওপর শুনানির জন্য আগামী ১০ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন।
ওরিয়ন গ্রুপের এক বিবৃতি অনুযায়ী, গত ১৩ সেপ্টেম্বর চ্যানেলটি বার বার একটি বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন সম্প্রচার করে। ওই প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয় যে সাতটি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরকারকে কোনো বিদ্যুৎ না দিয়েও ওরিয়ন গ্রুপ সরকারি অর্থ আত্মসাৎ ও বিদেশে অর্থ পাচার করেছে এবং ব্যবসায় রাজনৈতিক যোগাযোগ ব্যবহার করেছে।
বিবৃতিতে এ অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে তা প্রত্যাখ্যান করছে গ্রুপটি। এটি বলছে, এ কোম্পানি সবসময় জাতীয় নিয়মনীতি পুরোপুরি মেনে চলেছে এবং বাংলাদেশের আরও শতাধিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীর মতো একই বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) করেছে ওরিয়ন। দেশের বিদ্যুৎ চাহিদার প্রতি প্রতিশ্রুতি বজায় রেখে ২০১১ সাল থেকে ওরিয়ন তাদের ছয়টি অত্যাধুনিক, সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব এবং সম্পূর্ণরূপে চালু বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে ১৬.৯ বিলিয়ন কিলোওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে।
আরও বলা হয়, ওরিয়ন বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের জন্য নেওয়া ঋণের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে এবং এ টাকা বিদেশে পাচার করেছে বলে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ওরিয়ন গ্রুপ নিশ্চিত করছে যে কোম্পানির নিজস্ব অর্থায়নে এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণের সমন্বয়ে সমস্ত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনার অর্থায়ন করা হয়েছে। কোনো টাকা বিদেশে পাচার হয়নি। ব্যবসায়িক কার্যক্রমের জন্য প্রায়ই ঋণের প্রয়োজন হয় এবং ওরিয়ন ধারাবাহিকভাবে তার সব ঋণ সময়মতো পরিশোধ করেছে।
রাজনৈতিক অংশীদারত্বের মাধ্যমে ব্যবসায়িক কার্যক্রমে প্রভাব খাটানো এবং অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন দাবি করে বিবৃতিতে ওরিয়ন গ্রুপ বলেছে, অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ ওরিয়ন দ্ব্যর্থহীনভাবে অস্বীকার করছে। ওরিয়নের সমস্ত বিনিয়োগ ও অর্থ বাংলাদেশেই রয়েছে, বিদেশে কোনো অর্থ পাচার হয়নি।
ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভিতে প্রচারিত মিথ্যা প্রতিবেদনের কারণে ওরিয়ন গ্রুপের সুনাম ও ব্যবসার উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে ৫০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করেছে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে ওরিয়ন গ্রুপ।
আরও বলা হয়েছে, যে মিথ্যা দাবি ও মানহানিকর সংবাদ প্রচার করা হয়েছে, তা শুধু বিভ্রান্তিকরই নয়, দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার লঙ্ঘনও। যাচাই না করে প্রমাণ ছাড়া এসব প্রতিবেদন প্রকাশের উদ্দেশ্য ইচ্ছাকৃতভাবে ওরিয়ন গ্রুপের সুনাম নষ্ট করা। এর পরিপ্রেক্ষিতে সত্য প্রতিষ্ঠা এবং মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে ওরিয়ন গ্রুপ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে।
এছাড়া দুবাই ও চীনের দুটি বিদেশি কোম্পানি ওরিয়ন গ্রুপের মালিকানাধীন হওয়ার যে অভিযোগ আনা হয়েছে, বিবৃতিতে সেটিও মিথ্যা বলে জানিয়েছে গ্রুপটি। এটি বলেছে, এই কোম্পানিগুলোর সঙ্গে ওরিয়নের অংশীদারত্ব বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য বিডিং প্রক্রিয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কোম্পানি দুটির কোনোটিই ওরিয়নের চেয়ারম্যান বা কোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির মালিকানাধীন নয়।