আন্তর্জাতিক
সম্পর্কে জড়ানো কিশোরীদের এক চতুর্থাংশ সহিংসতার শিকার: ডব্লিউএইচও
বিশ্বে সম্পর্কের মধ্যে থাকা এক চতুর্থাংশ কিশোরী সঙ্গীর শারীরিক অথবা যৌন সহিংসতা সহ্য করেছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটির নতুন এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে আসে। এতে বলা হয়েছে, এই ধরনের সহিংসতা কিশোরীদের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির কারণ হতে পারে। গবেষণায় কিশোরীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ঠেকাতে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
মঙ্গলবার ডব্লিউএইচওর এই গবেষণা প্রতিবেদন বিশ্বখ্যাত মেডিক্যাল সাময়িকী ল্যানসেটে প্রকাশ করা হয়েছে। ডব্লিউএইচওর এই গবেষণা প্রতিবেদন বিশ্বের ১৫৪টি দেশ ও অঞ্চলের ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী হাজার হাজার কিশোরীর ওপর জরিপের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে।
গবেষণায় দেখা যায়, জরিপে অংশ নেওয়া কিশোরীদের ২৪ শতাংশই অন্তত একবার সঙ্গীর সাথে অন্তরঙ্গ সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার সময় সহিংসতার শিকার হয়েছে। গত বছর এই সহিংসতার হার ছিল ১৬ শতাংশ। এক বছরে তা বেড়ে ২৪ শতাংশে পৌঁছেছে।
গবেষণা প্রতিবেদনের প্রধান লেখক ডা. লিনম্যারি সার্ডিনহা বলেন, অল্পবয়সী কিশোরীরা নিপীড়িত হচ্ছে এবং কারও সমর্থন পাচ্ছে না; এমন উদ্বেগের জায়গা থেকে গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি অত্যন্ত অবাক হয়েছি যে, কিশোরী মেয়েদের বিশাল একটি অংশ তাদের ২০তম জন্মদিনের আগেই সহিংসতার শিকার হচ্ছে। সার্ডিনহা বলেন, আমাদের যেখানে থাকার কথা ছিল, আমরা তার তুলনায় পিছিয়ে আছি।
২০০০ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে পরিচালিত সমীক্ষার ওপর ভিত্তি করে এই গবেষণা কাজটি সম্পন্ন করা হয়েছে। লিনম্যারি সার্ডিনহা বলেন, তখন থেকেই তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং এখনও আমরা সেসব যাচাই-বাছাই করে দেখছি। এতে কিশোরীদের সহিংসতার শিকার হওয়ার হারে সামান্য পতন হয়েছে।
সমীক্ষায় গণনা করা সহিংসতার ঘটনাগুলোর মধ্যে লাথি মারা অথবা মারধরের পাশাপাশি ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টার মতো অযাচিত যৌনতায় লিপ্ত হতে বাধ্য করার মতো বিষয়গুলোও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। দেশ ও অঞ্চলের ভিত্তিতে ভাগ করা তথ্যে দেখা যায়, অঞ্চল ভেদে সহিংসতা ও নারী অধিকারের মতো বিষয়গুলোও এতে ভূমিকা রেখেছে। যেখানে মেয়ে ও নারীদের শিক্ষার সুযোগ সীমিত এবং অসম উত্তরাধিকার আইন রয়েছে, সেখানে সহিংসতার উচ্চ মাত্রা দেখা গেছে।
গবেষণায় দেখা যায়, কিশোরীদের সহিংসতার শিকার হওয়ার হার সবচেয়ে বেশি আফ্রিকায়। এরপরই দ্বিতীয় স্থানে আছে ওশেনিয়া অঞ্চল। আফ্রিকার মহাদেশের দেশগুলোর মধ্যে পাপুয়া নিউগিনিতে ৪৯ শতাংশ এবং গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে ৪২ শতাংশ কিশোরী সঙ্গীর সাথে অন্তরঙ্গ সম্পর্কের সময় সহিংসতার শিকার হয়েছে। তবে এই হার সর্বনিম্ন ছিল ইউরোপে; যেখানে মাত্র ১০ শতাংশ কিশোরী তাদের সঙ্গীর কাছে সহিংসতার শিকার হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং গবেষণা বিভাগের পরিচালক ডা. প্যাসকেল অ্যালোটি বলেন, এত অল্প বয়সে কিশোরীদের সহিংসতার শিকার হওয়ার ঘটনা তাদের গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির কারণ হতে পারে। এটাকে জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসাবে আরও গুরুত্ব সহকারে নেওয়া দরকার।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বাশারের প্রধানমন্ত্রীর হাতেই থাকছে সিরিয়া সরকারের ভার
আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর না করা পর্যন্ত বাশার আল-আসাদের নিয়োগ দেওয়া প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জালালির দায়িত্বেই থাকবে সিরিয়ার সরকারের ভার।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদেন বলা হয়েছে,রাজধানী দামেস্ক দখলে নিয়েছে এইচটিএস। এর মধ্যেই পালিয়ে গেছেন বাশার আল–আসাদ। পরে এ নিয়ে বিদ্রোহীদের পক্ষে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে এইচটিএস প্রধান আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি বলেন, বিরোধীদের দামেস্কের কোনো প্রতিষ্ঠানের দখল নিতে নিষেধ করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর না করা পর্যন্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে থাকবে এর ভার। উৎসবের সময় গুলি চালানোও নিষিদ্ধ।
বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের মাধ্যমে নতুন সিরিয়ার সূচনা হলো বলে মন্তব্য করেন তিনি। বিবৃতিতে বলা হয়, নতুন সিরিয়া হবে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের স্থান, যেখানে ন্যায়বিচারের জয় হবে এবং সিরিয়ানদের মর্যাদা রক্ষা করা হবে।
বিদ্রোহীরা বিবৃতিতে বলেন, আমরা অন্ধকার অতীতের পাতা উল্টে দিয়ে ভবিষ্যতের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করি। ৫০ বছরের নিপীড়ন এবং ১৩ বছরের অপরাধ, অত্যাচার, বাস্তুচ্যুতি এবং দীর্ঘ সংগ্রামের পর, সব দখলদার বাহিনীর মোকাবিলা করে আমরা আজ ঘোষণা করছি, সেই অন্ধকার যুগের সমাপ্তি এবং শুরু। সিরিয়ার জন্য একটি নতুন যুগের শুরু হলো।
এদিকে বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জালালি বলেছেন, জনগণের দ্বারা নির্বাচিত যেকোনো নেতৃত্বকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি। তিনি জানান, তিনি তার বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন না এবং তিনি নিশ্চিত করতে চান যে, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
আল-জালালি বলেন, আমি সবাইকে যুক্তিযুক্তভাবে চিন্তা করার এবং দেশ নিয়ে চিন্তা করার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা বিরোধীদের দিকে আমাদের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছি যারা তাদের হাত বাড়িয়েছে। দৃঢ়ভাবে বলছি, তারা এই দেশের কারও ক্ষতি করবে না।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
অর্ধশতাব্দী ধরে আসাদ পরিবারের সিরিয়া শাসন
অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে সিরিয়া শাসন করেছে আল-আসাদ পরিবার। সামরিক কর্মকর্তা থেকে ১৯৭১ সালে দেশের প্রেসিডেন্ট হন হাফেজ আল-আসাদ। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সিরিয়া শাসন করেছিলেন। ২০০০ সালের জুনে মারা যান তিনি। তার কাছ থেকে সে বছরের জুলাইয়ে উত্তরাধিকার সূত্রে ক্ষমতা পান চিকিৎসাবিজ্ঞানের ছাত্র ও ছেলে বাশার আল-আসাদ।
একইসঙ্গে, বাথ পার্টির নেতা এবং সামরিক বাহিনীর প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন বাশার আল-আসাদ। এর ১১ বছর পর যখন সিরিয়ার জনগণ গণতন্ত্রের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে। বাশার আল-আসাদ কঠোর দমন-পীড়নের মাধ্যমে এর জবাব দেন। আরো বেশি সিরীয় জনগণ বিক্ষোভে যোগ দেয়। বাশার তখন তার বিরোধীদের ‘সন্ত্রাসী’ বলে অভিহিত করে দমন-পীড়ন আরো বাড়াতে থাকেন, যা শেষ পর্যন্ত গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়।
এরপরের বছরগুলোতে নিহত হন সিরিয়ার কয়েক লাখ মানুষ। বাশার আল-আসাদকে বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগেও অভিযুক্ত করা হয়। অনেকটা যুদ্ধের বাতাবরণেই তিনি সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে নির্বাচন আয়োজন করেছিলেন। তবে সেসব নির্বাচন অনেকের কাছেই অগণতান্ত্রিক বলে অগ্রহণযোগ্যই থেকে যায়।
যুদ্ধ কখনোই জিততে না পারলেও, বাশার আল-আসাদ তার অনুসারীদের সমর্থন এবং সংখ্যালঘু আলাওয়ি রাজনৈতিক দলের সহায়তায় সংকীর্ণভাবে ক্ষমতায় টিকে ছিলেন।
সিরিয়ায় ২০১১ সালে শুরু হওয়া আসাদ বিরোধী আন্দোলন মাঝে স্তিমিত হয়ে এলেও চলতি বছর গত নভেম্বরের শেষ দিকে বিদ্রোহীরা নতুন করে আক্রমণ শুরু করে। ফলশ্রুতিতে আলেপ্পো, হামা, হোমস জয়ের পর দ্রুতই রাজধানী দামেস্কের দিকে অগ্রসর হয় বিদ্রোহী এইচটিএস। তাদের আক্রমণ শুরু হওয়ার মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই বাশার আল-আসাদের পতন হয়েছে বলে ঘোষণা দেয় বিদ্রোহীরা।
বছরের পর বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের গভীর ক্ষত এখনো দৃশ্যমান দেশটিতে। তাই সিরিয়া এখনো মতাদর্শগত কারণে অনেকাংশেই বিভক্ত। গত চার বছর ধরে চলা অচলাবস্থা এবং স্থিতিশীল অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মাত্র দেড় সপ্তাহ আগে বিদ্রোহীদের কঠোর আঘাতে ভেঙে পড়তে শুরু করে বাশারের প্রতিরোধব্যুহ। বিদ্রোহীদের হঠাৎ আঘাতে আসাদ বাহিনী প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছে।
আরব নেতাদের মধ্যে একঘরে থাকার অবস্থান থেকে বাশার বেরিয়ে এলেও গৃহযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে সিরিয়ার জনগণের জন্য একটি কার্যকর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার কোনো পরিকল্পনা বা বাস্তবায়ন কিছুই হয়নি তার আমলে। বরং ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার দিকে তার কেন্দ্রীভূত মনোযোগে পুঞ্জিভূত হয়েছে জনগণের ক্ষোভ। যার বহিঃপ্রকাশ দেখা যাচ্ছে আলেপ্পো বা দামেস্কের রাজপথে জনগণের উল্লাসে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
সিরিয়া থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করছে হিজবুল্লাহ
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ পালিয়ে গেছেন। এই খবর জানার পর আসাদের মিত্র-ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ সিরিয়ার কয়েকটি এলাকা থেকে তার সৈন্য প্রত্যাহার করছে। গোষ্ঠীটির ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে যে, হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা হোমস ও দামেস্ক শহর থেকে সরে যাচ্ছে।
অন্যদিকে, রয়টার্স বলেছে দলটি লেবাননের সীমান্তের কাছে পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর কুসাইর থেকেও পিছু হটেছে।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আর আসাদ পালিয়ে যাওয়ার পর বিদ্রোহী যোদ্ধারা প্রায় বিনা বাধায় রাজধানী দামেস্কে ঢুকে পড়েন। এরপরই মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটির রাজধানীতে রাস্তায় নেমে এসেছেন হাজার হাজার মানুষ।
তারা উল্লাস প্রকাশের পাশাপাশি ‘স্বাধীনতা’ নিয়ে বিভিন্ন স্লোগানও দিচ্ছেন। অন্যদিকে দামেস্কের বিমানবন্দরে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, বাশার আল-আসাদ ২০০০ সাল থেকে সিরিয়ার ক্ষমতায় রয়েছেন। এর আগে তার বাবা হাফেজ আল-আসাদ ২৯ বছর দেশটি শাসন করেছিলেন।
তবে ২০১১ সালে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই সময় বিক্ষোভকারীদের দমনে কঠোর পন্থা অবলম্বন করেন তিনি। এরপর বিক্ষোভকারীরা সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করেন। এতে করে দেশটিতে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ।
যদিও ২০১৫ সালে বাশার আল আসাদকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে রাশিয়া। সে বছর সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল লক্ষ্য করে ব্যাপক বিমান হামলা চালায় তারা। এরপর বিদ্রোহীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে লেবাননের শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ দুর্বল হয়ে যাওয়ায় এবং ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার ব্যস্ত থাকার সুযোগে বিদ্রোহীরা আবারও তৎপর হয়ে উঠে। এরই একপর্যায়ে সম্প্রতি বিদ্রোহীরা হামলা শুরু করে এবং এই হামলার মুখে নাটকীয়ভাবে দামেস্ক ছেড়ে পালালেন প্রেসিডেন্ট আসাদ।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বাশার আল আসাদের পতনে যা বললেন কাবার ইমাম
অবশেষে র্দীঘ দিনের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটেছে সিরিয়ায়। বাশার আল আসাদের পতন পর উল্লাসে মেতে উঠেছেন সিরিয়ার সাধারণ জনগণ। সশস্ত্র যোদ্ধাদের হাতে ইতোমধ্যে পতন ঘটেছে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কসহ দেশটির গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর। দেশটির সরকারি রেডিও ও টেলিভিশন ভবন দখল করে নিয়েছেন সশস্ত্র যোদ্ধারা। একইসঙ্গে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সিরীয় সেনাদের সরিয়ে নেওয়ার পর সেই স্থাপনাও দখলে নিয়েছেন তারা।
এর আগে যোদ্ধারা প্রায় বিনা বাধায় রাজধানী দামেস্কে ঢুকে পড়েন। এরপরই বিমানে করে অজানা গন্তব্যের উদ্দেশ্যে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ।
বাশার আল আসাদের পতন, সিরিয়ার জনগণের বিজয় উল্লাসকে স্বাগত জানিয়েছেন মুসলিম বিশ্বের তীর্থস্থান কাবা শরীফের ইমাম শায়খ ইয়াসির আদ-দাওসারী। তিনি সিরিয়াসহ পৃথিবীর সব দেশের নিপীড়িত জনগণের জন্য দোয়া ও শুভকামনা জানিয়েছেন।
তার নামে পরিচালিত ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজ থেকে পোস্ট করে বলা হয়েছে, হে আমাদের সিরিয়ান বন্ধুরা, আপনাদের অভিনন্দন। অভিনন্দন পৃথিবীর প্রত্যেক নিপীড়িত জনতার প্রতি। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার, যিনি প্রত্যেক মজলুমের অন্তর প্রশান্ত করেছেন।
প্রসঙ্গত, বাশার আল-আসাদ ২০০০ সাল থেকে সিরিয়ার ক্ষমতায় ছিলেন। এর আগে তার বাবা হাফেজ আল-আসাদ ২৯ বছর দেশটি শাসন করেছিলেন।
তবে ২০১১ সালে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই সময় বিক্ষোভকারীদের দমনে কঠোর পন্থা অবলম্বন করেন তিনি। এরপর বিক্ষোভকারীরা সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করেন। এতে করে দেশটিতে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ।
যদিও ২০১৫ সালে বাশার আল আসাদকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে রাশিয়া। সে বছর সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল লক্ষ্য করে ব্যাপক বিমান হামলা চালায় তারা। এরপর বিদ্রোহীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে লেবাননের শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ দুর্বল হয়ে যাওয়ায় এবং ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার ব্যস্ত থাকার সুযোগে যোদ্ধারা আবারও তৎপর হয়ে উঠে। এরই একপর্যায়ে সম্প্রতি তারা হামলা শুরু করে এবং এই হামলার মুখে নাটকীয়ভাবে দামেস্ক ছেড়ে পালালেন স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট আসাদ।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
পালালেন প্রেসিডেন্ট বাশার, দামেস্কে ঢুকে পড়েছে বিদ্রোহীরা
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক ছেড়ে পালিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ। রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের কাছে এমনটাই জানিয়েছেন দেশটির সেনাবাহিনীর দুই সিনিয়র কর্মকর্তা। তবে দামেস্ক ছাড়লেও তিনি কোথায় গেছেন, সেটা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
এদিকে বিদ্রোহী যোদ্ধারা আজ সকালে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হোমস শহর দখল নিয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছে। শহরটি দখলের পর উদযাপনও করেছে।
শহর থেকে আসাদ বাহিনীর সেনা প্রত্যাহারের পর হাজার হাজার বাসিন্দা রাস্তায় নেমে আসেন। তারা ‘আসাদ পালিয়ে গেছেন, হোমস মুক্ত’ এবং ‘সিরিয়া দীর্ঘজীবী হোক বলে স্লোগান দেন।
লন্ডনভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলেছে, “দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একটি ব্যক্তিগত উড়োজাহাজ ছেড়ে গেছে। সেটায় বাশার আল-আসাদ থাকতে পারেন। ওই উড়োজাহাজটি উড্ডয়নের পর বিমানবন্দর থেকে সরকারি সেনাদের সরিয়ে নেওয়া হয়।”
এদিকে প্রায় ২ হাজার সিরিয়ান সেনা সীমান্ত পার হয়ে ইরাকে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ইরাকের সীমান্তবর্তী সিরিয়ার আল-কায়িম শহরের মেয়র। আর অন্যদিকে দামেস্কের সেদনায়ায় বড় একটি কারাগার থেকে বহু বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে বিদ্রোহীরা।
বিদ্রোহী কমান্ডার হাসান আবদুল ঘানি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে বলেছেন, “হোমস শহর ‘পূর্ণাঙ্গ স্বাধীন’ করা হয়েছে। দামেস্কের সেদনায়া কারাগার থেকে সাড়ে ৩ হাজারের বেশি বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।”
গত ২৭ নভেম্বর সিরিয়ার বিদ্রোহীরা আলেপ্পো দখল অভিযান শুরু করে। অপ্রতিরোধ্য গতিতে তারা মাত্র ১২ দিনে দামেস্ক পৌঁছে গেছে। দ্রুত গতির এই অভিযানে বিদ্রোহীরা দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ, তার মিত্র এবং বাকি বিশ্বকে হতবাক করেছে।
কাফি