আন্তর্জাতিক
ভাগ্য বা ঈশ্বর আমাকে রক্ষা করেছেন: ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আমার মৃত্যু হতে পারত। পেনসিলভানিয়ায় শনিবার রাতে এক সমাবেশে হত্যাচেষ্টার পর দেওয়া প্রথম সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেছেন। নিউইয়র্ক পোস্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি মনে করেন ‘ভাগ্য বা ঈশ্বর’ তাকে রক্ষা করেছেন। সোমবার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছে।
সাক্ষাৎকারে হত্যার চেষ্টাকে ‘একটি পরাবাস্তব অভিজ্ঞতা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী।
উইসকনসিনের শহর মিলওয়াকিতে রিপাবলিকান পার্টির জাতীয় সম্মেলনে যোগ দিতে যাওয়ার পথে উড়োজাহাজে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘আমার এখানে থাকার কথা নয়, আমার মরে যাওয়ার কথা ছিল।’
ডান কানে ব্যান্ডেজ বাঁধা ৭৮ বছরের ট্রাম্প হামলার শিকার হওয়ার মুহূর্তটিকে স্মরণ করে বলেন, ‘এটি একটি পরাবাস্তব অভিজ্ঞতা।’ তিনি জানান, চিকিৎসকরা তাকে বলেছেন, তার ফিরে আসা ‘একটি অলৌকিক ঘটনা’।
নিউইয়র্ক পোস্টকে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘যখন গুলির ঘটনা ঘটে তখন আমি বক্তব্যের লিখিত অংশ দেখার জন্য পোডিয়ামের দিকে ঝুঁকেছিলাম। মূলত এই কারণেই আমি বেঁচে গেছি বলে আমার ধারণা।’
সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প তাকে রক্ষা ও বন্দুকধারী থমাস ক্রুকসকে হত্যার জন্য সিক্রেট সার্ভিসের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মীরা দুর্দান্ত কাজ করেছেন।’
সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ভাইরাল হওয়া একটি ছবি নিয়েও কথা বলেন। সেই ছবিতে দেখা যায়, রক্তাক্ত মুখমণ্ডল নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প তার মুষ্টি উঁচিয়ে ধরে বলছেন, ‘ফাইট, ফাইট, ফাইট।’
সেই ছবি প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ‘অনেক লোক বলছেন, এই ছবিটি তাদের জীবনে দেখা সেরা ছবি। তারা ঠিক বলেছেন। তবে এই ধরনের ছবি পাওয়ার জন্য প্রাণও দেওয়া লাগতে পারে, কিন্তু আমি মরিনি।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘অনেক লোক বলছেন, ভাগ্য বা ঈশ্বরের সহায়তায় আজ আমি এখানে উপস্থিত হতে পেরেছি।’
তিনি জানান, রিপাবলিকান পার্টির সম্মেলনের জন্য বাইডেনের ভয়ংকর প্রশাসনের বিরুদ্ধে তিনি খুব কড়া ভাষায় তার বক্তব্য তৈরি করেছিলেন। কিন্তু হামলার ঘটনার পর তা আবার লিখেছেন। আগেরটি ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন। কারণ, তিনি দেশকে ঐক্যবদ্ধ করতে চান।
এ সময় তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, এই ঘটনা তার নীতি বা দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করবে কি না? জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি আমাদের দেশকে একত্রিত করার চেষ্টা করতে চাই। কিন্তু আমি জানি না, এটি সম্ভব কি না। মানুষ খুবই বিভক্ত।’
রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটের দিকে পেনসিলভানিয়ায় একটি নির্বাচনি সমাবেশে অতর্কিত হামলার শিকার হয়েছিলেন। হামলাকারীর গুলিতে ট্রাম্পের ডান কানের ওপরের অংশ ফুটো হয়ে যায়। ট্রাম্পের মঞ্চ থেকে প্রায় ১৩০ গজ দূরের একটি ছাদ থেকে হামলাকারী তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক
মধ্যপ্রাচ্যের ছয় দেশকে হুমকি ইরানের, যুদ্ধের শঙ্কা

মধ্যপ্রাচ্যের ছয়টি দেশকে কঠোর কঠোর ভাষায় সতর্ক করেছে ইরান। সতর্ক বার্তায় বলা হয়, এসব দেশ যদি মার্কিন সামরিক অভিযানে সহায়তা করে—বিশেষ করে নিজেদের আকাশসীমা বা ভূখণ্ড ব্যবহারের অনুমতি দেয় তাহলে তাদেরকে ‘গুরুতর পরিণতি’ ভোগ করতে হবে। খবর রয়টার্সের।
দেশগুলো হচ্ছে- ইরাক, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), কাতার, তুরস্ক এবং বাহরাইন।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ সাইয়েদ আলী খামেনি দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি সামরিক অভিযানের হুমকি দেওয়ার পর এই প্রতিক্রিয়া এসেছে।
এ পরিস্থিতিতে ইরান সামরিক প্রস্তুতি জোরদার করেছে এবং নিজেদের প্রতিরক্ষামূলক অবস্থান দৃঢ় করেছে। এতে করে পুরো উপসাগরীয় অঞ্চলজুড়ে উত্তেজনা বেড়ে গেছে এবং যুদ্ধের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
আরব উপসাগরীয় দেশগুলো এখন এক জটিল পরিস্থিতিতে পড়েছে। একদিকে তারা যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র, অপরদিকে মার্কিন হামলায় সহায়তা দিলে ইরানের প্রতিশোধের ঝুঁকিও আছে। এই অঞ্চল বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সরবরাহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তাই এখানকার প্রতিটি সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিকভাবে প্রভাব ফেলতে পারে।
এদিকে ট্রাম্প প্রশাসনের সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেও ইরান জানিয়েছে, তারা ওমানের মধ্যস্থতায় পরোক্ষ সংলাপ চালিয়ে যেতে চায়। এক ইরানি কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, পরোক্ষ আলোচনায় আমরা জানতে পারব যুক্তরাষ্ট্র আদৌ একটি রাজনৈতিক সমাধানে আগ্রহী কি না। যুক্তরাষ্ট্র যদি আন্তরিকতা দেখায়, তাহলে শিগগিরই এ ধরনের সংলাপ শুরু হতে পারে।
এ আলোচনায় ইরানের প্রতিনিধি হিসেবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বা তার উপমন্ত্রী মজিদ তাখত-রাভানচির নাম বিবেচনায় আনা হতে পারে। তবে ওই কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেন, এই পথ সহজ হবে না, বরং তা হতে পারে জটিল ও অনিশ্চিত।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
গাজা থেকে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হামাসের

ইসরায়েলে প্রায় ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে হামাস। এতে বেশকিছু যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তিনজন আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। এর মধ্যে বেশিরভাগই সফলভাবে প্রতিরোধ করা হয়েছে বলেও জানায় দখলদার বাহিনীটি। খবর-আল জাজিরা।
ইসরায়েলি সংবামাধ্যম হারেৎজ এর প্রতিবেদনের বরাতে আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রের টুকরো আশকেলন এবং গ্যান ইয়াভনে পড়েছে, যার ফলে কিছু যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তিনজন সামান্য আহত হয়েছেন।
বর্তমানে ক্ষেপণাস্ত্রের বিস্তার এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
এদিকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নির্বিচার হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার ইসরায়েল। সঙ্গে সেখানে এক মাস ধরে পূর্ণ অবরোধ আরোপ করে রেখেছে দখলদাররা। এতে সেখানকার পরিস্থিতি ‘দমবন্ধকর’ হয়ে পড়েছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় অভিযান শুরু করে আইডিএফ। গত দেড় বছরে উপত্যকায় মোট নিহত ও আহতের সংখ্যা পৌঁছেছে যথাক্রমে ৫০ হাজার ৬০৯ জন এবং ১ লাখ ১৫ হাজার ৬৩ জনে। এই নিহত এবং আহতদের ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।
জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী অন্যান্য দেশগুলোর চাপে বাধ্য হয়ে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরায়েল। কিন্তু বিরতির দু’মাস শেষ হওয়ার আগেই গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে আইডিএফ। দ্বিতীয় দফার এ অভিযানে গত ১৫ দিনে গাজায় নিহত হয়েছেন ১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি।
ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে ধর্মঘটের ডাক
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ফিলিস্তিনের ন্যাশনাল অ্যান্ড ইসলামিক ফোর্সেস নামের একটি গোষ্ঠী। সোমবার পুরো ফিলিস্তিনের পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে এই ধর্মঘট পালনের আহ্বান জানিয়েছে গোষ্ঠীটি।
রোববার এক বিবৃতিতে গোষ্ঠীটি বলেছে, ন্যাশনাল অ্যান্ড ইসলামিক ফোর্সেস বিশ্বজুড়ে ধর্মঘট সফল করতে সবার প্রতি আহ্বান জানায়। একই সঙ্গে প্রতিরোধের কণ্ঠস্বর জোরাল ও ইসরায়েলি বাহিনীর সংঘটিত ভয়াবহ গণহত্যা ও অপরাধকে তুলে ধরার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে গোষ্ঠীটি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
আবারও মিথ্যাচারের অভিযোগ টিউলিপের বিরুদ্ধে

ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ সামনে আসছে। এবার খোদ যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার রেকর্ড সামনে এসেছে। এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর যে হলফনামা দিতে হয় তাতে বাংলাদেশে নিজের মালিকানায় থাকা ফ্ল্যাট নিয়ে ওই প্রতারণার আশ্রয় নেন টিউলিপ।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক। শেখ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশের দুর্নীতির সঙ্গে তার জড়িত থাকার প্রমাণ সামনে আসে। এতে দলের ভেতরে বাইরে চাপে পড়েন টিউলিপ। শেষমেশ বাধ্য হয়ে লেবার মন্ত্রিসভার ইকোনমিক সেক্রেটারি টু দি ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।
ওই পদে তার কাজ ছিল যুক্তরাজ্যের অর্থবাজারের ভেতরের দুর্নীতি সামাল দেওয়া। কিন্তু মন্ত্রী নিজেই দুর্নীতিগ্রস্ত হওয়ায় দেশ-বিদেশে কোণঠাসা হয়ে পড়েন টিউলিপ; পদত্যাগের পরও এর প্রভাব বিদ্যমান। সে সঙ্গে শেখ পরিবারের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসতে থাকে। সেসব তদন্তে নামে দুদক। প্রাথমিকভাবে যার প্রায় সব কটিরই বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পায় সংস্থাটি। এখনও তদন্ত চলমান।
ব্রিটিশ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমও টিউলিপকে নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেসব প্রতিবেদনে বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতির সঙ্গে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের যোগসূত্র স্পষ্ট।
ডেইলি মেইল শনিবার (৫ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে জানায়, সাবেক নগরমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক তার জন্মভূমি বাংলাদেশে একটি ফ্ল্যাটের মালিকানা নিয়ে পার্লামেন্টকে বিভ্রান্ত করেছেন কি না তা নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন।
বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুরোধে রাজধানী ঢাকার ৬ লাখ পাউন্ড মূল্যের অ্যাপার্টমেন্টটি জব্দ করেছে সরকার। এ নিয়ে লেবার এমপির বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
৪২ বছর বয়সী টিউলিপ সিদ্দিক কোনো অন্যায় করেননি দাবি করে মেইলকে বলেন, ২০০২ সালে তার বাবা-মায়ের কাছ থেকে উপহার হিসেবে ফ্ল্যাটটি পেয়েছিলেন। ২০১৫ সালের মে মাসে সংসদে নির্বাচিত হওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ‘আইনসম্মত এবং বৈধভাবে’ সেটি তার বোন আজমিনাকে (৩৪) হস্তান্তর করেন।
ওয়েস্টমিনস্টারের নিবন্ধন বহিতে বলা হয়েছে, তিনি ২০১৫ সালের জুন মাসেও পরিবারের একজন সদস্যের সঙ্গে সম্পত্তিটির সহমালিকানাধীন ছিলেন। পরের মাসের মধ্যেই মালিকানা হস্তান্তর করেন।
কিন্তু গত সপ্তাহে ঢাকা সাবরেজিস্ট্রি অফিসে মেইল কর্তৃক অনুসন্ধানে দেখা যায়, টিউলিপ এখনও ফ্ল্যাটটির মালিক; যেমনটি দুদকের অভিযোগও বলা হয়েছে। এটি কার মালিকানাধীন, এখন সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশের আদালত ।
গত মাসে দুদক জানিয়েছে, টিউলিপ ২০১৫ সালে হেবার মাধ্যমে ফ্ল্যাটের মালিকানা আজমিনার কাছে হস্তান্তর করার চেষ্টা করেছিলেন। হেবা একটি ইসলামিক দলিল, যা ভালোবাসার বশবর্তী হয়ে পরিবারের সদস্যের কাছে সম্পত্তি হস্তান্তরের অনুমতি দেয়।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশি আইন অনুসারে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে সম্পত্তির মালিকানা পরিবর্তন না করা পর্যন্ত সম্পত্তি হস্তান্তর বৈধ বলে বিবেচিত হয় না।
দুদক দাবি করেছে, হেবা করার যে দাবি করা হচ্ছে তাও জাল। কারণ, যে ব্যারিস্টারের মাধ্যমে এটি করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে তিনি এতে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, তার স্বাক্ষর জাল করে দলিল করার করা হয়েছে।
তবে টিউলিপ সিদ্দিকের আইনজীবীরা বলেছেন, হেবার আইনটি সঠিকভাবে কার্যকর করা হয়েছে। তার প্রতিনিধিরা দুদকের অভিযোগগুলো মিথ্যা এবং বিরক্তিকর বলে অভিহিত করেন।
গত আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। তারপর থেকে তার পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, জমি বরাদ্দ ও আর্থিক অনিয়মের একের পর এক অভিযোগ উঠেছে। দুদকের দাবি, পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পে প্রায় ৬০ কাঠা (এক একর) সরকারি জমি শেখ হাসিনা, তার সন্তান ও নিকটাত্মীয়দের নামে অবৈধভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
টিউলিপের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে যে, ঢাকায় তার অন্য একটি সম্পত্তি থাকার কারণে জমি বরাদ্দের ক্ষেত্রে তিনি অযোগ্য ছিলেন। তবে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা নিয়মকানুনের ফাঁকফোকর ব্যবহার করে এই মূল্যবান জমি বরাদ্দ নেন। এ জন্য তারা পাবলিক লটারি এবং যোগ্যতার মানদণ্ড এড়িয়ে গেছেন, যা মূলত সরকারি কর্মচারীদের জন্য নির্ধারিত ছিল।
এদিকে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে প্রচার চালাচ্ছেন ব্রিটেনের সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক। দেশটির ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ এ কাজ চাতুরতার সঙ্গে সম্পন্ন করতে নিয়োগ করেছেন আইনজীবী। সেই আইনজীবীদের তরফে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদককে) একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। এমন তথ্য মার্চের শেষ দিকেই জানিয়েছিল ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। এপ্রিলের শুরুতে আইনজীবী নিয়োগের বিষয়টি প্রকাশ্যে স্বীকার করেন টিউলিপ। এরপর থেকে টিউলিপের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে বক্তব্য দিচ্ছেন তার আইনজীবীরা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বাংলাদেশসহ ১৩ দেশের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা সৌদির

আসন্ন হজ মৌসুমকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশসহ ১৩ দেশের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সৌদি আরব। খবর পাকিস্তান অবজারভারের।
জানা গেছে, সৌদি হজ মৌসুমের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। ব্যস্ত এ মৌসুমে হজযাত্রীদের আগমন নিয়ন্ত্রণ এবং ধর্মীয় কর্তব্য পালনের সুষ্ঠু সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য সৌদি আরবের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা স্থায়ীভাবে প্রযোজ্য নয়; বরং জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত বহাল থাকতে পারে।
তালিকাভুক্ত দেশগুলোর ভ্রমণকারীদের জন্য ভিসা প্রদান সাময়িকভাবে স্থগিত থাকবে। এই স্থগিতাদেশ ওমরাহ, ব্যবসায়িক এবং পারিবারিক ভিসাসহ বিভিন্ন ভিসা অন্তর্ভুক্ত। তবে যাদের ওমরাহ ভিসা আছে তারা ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত সৌদি আরবে প্রবেশ করতে পারবেন। এই তারিখের পরে কোনো ওমরাহ ভিসাধারী সৌদি আরবে প্রবেশ করতে পারবেন না।
বাংলাদেশ ছাড়াও তালিকায় থাকা অন্যান্য দেশগুলো হলো- পাকিস্তান, মিশর, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইরাক, নাইজেরিয়া, জর্ডান, আলজেরিয়া, সুদান, ইথিওপিয়া, তিউনিসিয়া ও ইয়েমেন।
সূত্রগুলো আরও জানিয়েছে, এই অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পাঁচ বছরের জন্য সৌদি আরবে প্রবেশ এবং অবস্থানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে। এ ছাড়া ব্যক্তির অপরাধ বিবেচনায় তাকে আজীবনের জন্য সৌদিতে অবাঞ্ছিত ঘোষণার আশঙ্কাও রয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
টিকটককে আরো ৭৫ দিন সময় দিলেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ওপর ঝুলে থাকা নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের সময়সীমা আবারও ৭৫ দিনের জন্য পিছিয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) এ সম্পর্কিত একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করার মাধ্যমে দেশটিতে টিকটককে দ্বিতীয়বারের মতো লাইফলাইন প্রদান করলেন তিনি।
অন্যথায় আজই (৫ এপ্রিল) দেশটিতে নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হতো চীনের বাইটড্যান্সের মালিকানাধীন স্বল্পদৈর্ঘ্যের ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপটি। খবর বিবিসির।
গতকাল শুক্রবার (৪ এপ্রিল) ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ লিখেছেন, “আমরা চাই না টিকটক অন্ধকারে চলে যাক। টিকটক এবং চীনকে নিয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর আশা করছি।”
যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ১৭ কোটিরও বেশি গ্রাহক রয়েছে। কিন্তু এর চীনভিত্তিক মালিকানা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছেন মার্কিন আইনপ্রণেতারা। টিকটকের মাধ্যমে চীন সরকার মার্কিন জনগণের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি করতে পারে, এই আশঙ্কা ব্যক্ত করেছে মার্কিন প্রশাসন। যদিও বাইটড্যান্স ও চীন এই অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে।
গত বছরের এপ্রিলে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সরকার প্রণীত আইনে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে টিকটক। জো বাইডেন সরকারের আইন অনুযায়ী, বাইটড্যান্সকে টিকটকের যুক্তরাষ্ট্র অংশের ব্যবসার নিয়ন্ত্রণমূলক মালিকানা চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারির মধ্যে ছেড়ে দিতে হবে কোনো মার্কিন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে। অন্যথায় দেশটিতে টিকটককে নিষিদ্ধ করা হবে।
তবে, জানুয়ারিতে নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড দায়িত্ব নেওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করে টিকটকের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর ৭৫ দিন পিছিয়ে দেন। ফলে সাময়িকভাবে নিষেধাজ্ঞা এড়াতে সক্ষম হয় টিকটক। ৭৫ দিনের সেই সময়সীমা আজ (৫ এপ্রিল) শেষ হওয়ার কথা ছিল।
গতকাল শুক্রবার ট্রাম্পের নতুন নির্বাহী আদেশের ফলে আরো ৭৫ দিন সময় পেল টিকটক। সে হিসেবে এবার ১৯ জুনের মধ্যে বাইটড্যান্সকে টিকটিক ইস্যুতে চুক্তি সম্পাদন করতে হবে।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে বাইটড্যান্স জানিয়েছে, তারা ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এখনো কোনো চুক্তি সম্পন্ন হয়নি।
কোম্পানির এক মুখপাত্র বলেছেন, “কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখনো নিষ্পত্তি করা বাকি এবং যেকোনো চুক্তি চীনা আইনের অধীনে অনুমোদন নিতে হবে।”
বিবিসি প্রতিবেদন বলছে, গত বুধবার টিকটক কেনার একটি চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। তবে একই দিনে ট্রাম্প চীনের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা করার পর চুক্তিটি ভেঙে যায়।
চুক্তির সঙ্গে পরিচিত একটি সূত্র সিবিএস নিউজকে জানিয়েছে, বাইটড্যান্সের প্রতিনিধিরা হোয়াইট হাউজের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তারা জানিয়েছেন যে, শুল্কের বিষয়ে আলোচনা না হলে চুক্তিটির অনুমোদন দেবে না চীন।
ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত চীনা দূতাবাস এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা বাজার অর্থনীতির মৌলিক নীতি লঙ্ঘনকারী অনুশীলনের বিরোধিতা করে।
যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৫৪ শতাংশ মোট শুল্কের সম্মুখীন হয়েছে চীন এবং ৩৪ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে। টিকটক বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষর হলে শুল্ক কমানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প।