অর্থনীতি
নাসডাক স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হতে চায় শপআপ

দেশের পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করা স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান শপআপ আগামী চার-পাঁচ বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নাসডাক স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি দেশের আট কোটি গ্রাহকের সঙ্গে তাদের ডিস্ট্রিবিউশন চ্যানেলের মাধ্যমে সংযুক্ত হওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব লক্ষ্যের কথা তুলে ধরেছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানে শপআপের ব্যবসায়িক অগ্রযাত্রার বিষয়টি তুলে ধরা হয়। শপআপের তিনটি ব্যবসায়িক ইউনিট রয়েছে। তাদের মোকামের মাধ্যমে তারা পণ্য উৎপাদকদের সঙ্গে খুচরা ব্যবসায়ীদের সংযুক্ত করছে। রেডেক্স ইউনিটের মাধ্যমে পণ্য পরিবহন সুবিধা দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। আর খুচরা ব্যবসায়ীদের আর্থিক সহযোগিতা দিতে তারা একটি আর্থিক সেবা চালুর বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। ২০১৯ সালে শপআপ প্রথমে তাদের কার্যক্রম শুরু করে। ২০২১ সালে তারা সবচেয়ে বেশি তহবিল সংগ্রহ করতে সমর্থ হয়। ২০২৩ সালে শপআপ পরিচালন মুনাফা করেছে এবং এ বছর শেষে তাদের মোকাম ইউনিট নিট মুনাফা করতে সক্ষম হবে।
অনুষ্ঠানে শপআপের প্রেসিডেন্ট মামুন রশীদ বলেন, ‘আমাদের কাজ হচ্ছে বড় উৎপাদকদের কাছ থেকে পণ্য এনে ছোট দোকানে পৌঁছে দেয়া। যাতে সময়মতো ও ন্যায্যমূল্যে গ্রাহকের কাছে পণ্য পৌঁছানো যায়। আমাদের যারা বিনিয়োগকারী রয়েছেন তারা চাইছেন আমরা যাতে ছোট দোকানদার যারা রয়েছেন তাদের অর্থায়ন করি যাতে করে তাদের পণ্য মজুদের সক্ষমতা আরো বাড়ানো যায়। গতকাল আমাদের বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী ডেকেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এক কোটি মানুষকে ৬ হাজার ৮০০ ডিস্ট্রিবিউটরের মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে বেশ কয়েকটি পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।’
এমআই

অর্থনীতি
অবাধ বাণিজ্য প্রসারে চীনের সঙ্গে দুই সমঝোতা স্মারক সই

অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও। উভয় দেশের মধ্যে দুটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে দ্বিপাক্ষিক এ বৈঠকে।
শনিবার (৩১ মে) বিকেলে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ ও চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে অবাধ বাণিজ্য প্রসারে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন ও ই-কমার্স বিষয়ে সহযোগিতা সংক্রান্ত দুটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে এ বৈঠকে। সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশের পক্ষে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ও চীনের পক্ষে সে দেশের বাণিজ্য মন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও সই করেন।
এ সময় চীনের বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছে কৃষিখাতে ড্রোন প্রযুক্তির সহায়তাও কামনা করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা জোরদার করতে এই সহায়তা কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যমে সার, বীজ বপন, কীটনাশক ছিটানো ও ফসল নিরীক্ষণে বিপ্লব আনা সম্ভব। চীনের অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তি বাংলাদেশের কৃষিখাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
চীনের বাণিজ্যমন্ত্রীও বাংলাদেশের সঙ্গে প্রযুক্তি ও বিনিয়োগ সহযোগিতা বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করে বলেন, কৃষি ও ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে প্রস্তুত চীন। বিশেষ করে স্মার্ট কৃষি ও ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে আমরা সহযোগিতা করতে পারি।
এরপর ফিশিং জাহাজ ও প্রযুক্তি সহায়তা কামনা করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রসীমা থাকলেও আধুনিক ফিশিং জাহাজ ও প্রযুক্তির অভাবে এই খাতের পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। সামুদ্রিক মৎস্য খাতের উন্নয়নে বাংলাদেশের জন্য অত্যাধুনিক ফিশিং জাহাজ ও মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ প্রযুক্তি প্রয়োজন। চীনের অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তিগত সহায়তা আমাদের এই খাতকে আরও শক্তিশালী করতে পারে।
এ ছাড়া চামড়াজাতশিল্প, হালকা প্রকৌশল, এগ্রি মেশিনারিজ ও অ্যাগ্রো টেকনোলজি, ফুড প্রসেসিং এবং ওষুধ শিল্পেও চীনা বিনিয়োগ প্রত্যাশা করেন তিনি।
এ সময় চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশের সঙ্গে মৎস্য ও সমুদ্রসম্পদ খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, চীন বাংলাদেশের মৎস্য খাত ও সমুদ্রসীমার সম্পদ আহরণে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে প্রস্তুত।
ওয়াং ওয়েনতাও আরও বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের কুটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি এরই মধ্যে পার হয়েছে। দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন; বিশেষ করে এ দেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে চীন সরকার বেশ কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, যার সুফল এ দেশের জনগণ ভোগ করছে।
আগামী দিনে চীন-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বৈঠকে চীনের প্রতিনিধিদলে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডাইরেক্টর জেনারেল অব আউটওয়ার্ড ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমিক কো অপারেশন, চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডাইরেক্টর জেনারেল অব দ্য ডিপার্টমেন্ট অব এশিয়ান অ্যাফেয়ার্স এবং বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে বাণিজ্য সচিব, শিল্প সচিব, কৃষি সচিব ও বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এদিন দুপুরে ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের বিশাল এক বহর নিয়ে ঢাকা সফরে আসেন চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও। ২০০ জনের বিশাল
এ প্রতিনিধিদলে ১০০ জন চীনা ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারী রয়েছেন।
অর্থনীতি
২০০ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলসহ চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী ঢাকায়

চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাওয়ের নেতৃত্বে দুইশ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল ঢাকা এসেছেন। এই সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
শনিবার (৩১ মে) প্রতিনিধিদলটি ঢাকায় পৌঁছালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশীরউদ্দীন তাদের স্বাগত জানান।
সফরের বিস্তারিত:
- ১ জুন (রবিবার): চীনা প্রতিনিধিদল বিডা (বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) আয়োজিত এক সেমিনারে যোগ দেবে। এই সেমিনারে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, এবং চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এই সম্মেলনকে ‘চীন-বাংলাদেশ বিনিয়োগ ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্মেলন’ হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে।
- ২ জুন (সোমবার): প্রতিনিধিদল জয়েন্ট ইকোনমিক কমিটির বৈঠকে অংশ নেবে এবং বাংলাদেশের কয়েকটি ইকোনমিক জোন পরিদর্শন করবে।
চীনা প্রতিনিধিদলের সদস্যরা ঢাকা সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশীরউদ্দীন এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই সফরে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বিষয়টি প্রাধান্য পাবে এবং বাংলাদেশে চীনা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এই সফরকে কেন্দ্র করে জানিয়েছেন, উভয় পক্ষ একটি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিনিময় অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজন করবে, যেখানে শত শত চীনা এবং বাংলাদেশি উদ্যোগ অংশগ্রহণ করবে এবং আরও সহযোগিতার সুযোগ খুঁজবে।
বিডা জানিয়েছে, এই সম্মেলনে প্রায় ১০০টি চাইনিজ প্রতিষ্ঠানের ২৫০ জন বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ী অংশ নেবেন। এর মধ্যে ফরচুন ৫০০-এর অন্তর্ভুক্ত ৬-৭টি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারাও থাকবেন। এছাড়া চীনের চারটি চেম্বার অব কমার্সের শীর্ষ প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। বাংলাদেশে এই প্রথম এত বৃহৎ সংখ্যক চীনা বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ী একযোগে সফরে এলেন।
উল্লেখ্য, প্রধান উপদেষ্টার সদ্য চীন সফর এবং এপ্রিলে অনুষ্ঠিত বিনিয়োগ সম্মেলনের প্রত্যক্ষ ফলাফল হিসেবে এই সম্মেলন আয়োজিত হচ্ছে। চীনা বিনিয়োগকারীদের ক্রমবর্ধমান আগ্রহ বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করছে।
অর্থনীতি
দুর্নীতির কারণে দেশের আর্থিক খাত ‘অত্যন্ত খারাপ’: আবদুল আউয়াল মিন্টু

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু মন্তব্য করেছেন যে, বিগত ১৫ বছরের দুর্নীতি এবং চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেশের আর্থিক খাত ‘অত্যন্ত খারাপ’ অবস্থায় রয়েছে। শনিবার (৩১ মে) রাজধানীতে ‘বাজেট ভাবনা ২০২৫-২৬’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, “বাংলাদেশের আর্থিক খাতের দুটি সমস্যা—একটি হলো ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ, যারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে, রাজনৈতিক সহায়তায় গত ১৫ বছর ধরে লুটপাট চালিয়েছে—এটা নিঃসন্দেহে আমরা বলতে পারি। আর দ্বিতীয়টি হলো, আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ এখন একদম আইসিইউতে আছে।” তিনি আরও বলেন, “যদি বিনিয়োগ আইসিইউতে থাকে, তাহলে যে বিনিয়োগকারী, সে তো বিনিয়োগ ফেরত নিতে পারছে না।”
আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, “একটি হলো ব্যাংকের নিজস্ব অনিয়ম, নিজস্ব দুর্নীতি; আরেকটি হলো সাধারণ নিয়মে অর্থনীতির সমস্যা। সে সমস্যার কারণে যে ঋণ নিয়েছে, সে এখন ঋণটা পরিশোধ করতে পারছে না। এই সবগুলোর সমন্বয়ে আসলেই কিন্তু বাংলাদেশের আর্থিক খাত অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় আছে। যে যা-ই বলুক।”
সব জায়গায় এখনো বৈষম্য বিদ্যমান রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের কোন ক্ষেত্রে বৈষম্য নেই? আয়ের বৈষম্য, সামাজিক বৈষম্য, সম্পদের বৈষম্য, রাজনৈতিক বৈষম্য—সবই বাংলাদেশে দিন দিন বেশি হচ্ছে। সরকারের কার্যক্রম বাংলাদেশে প্রতিনিয়তই প্রতিটি ক্ষেত্রে একটা বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। আমাদের এগুলো শনাক্ত করতে হবে।”
একটি ভালো বাজেটের প্রত্যাশা করে তিনি বলেন, “ভালো বাজেট বলতে আমরা ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধিতে সাহায্য চাই, অর্থনৈতিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি চাই, স্থানীয় শিল্পের উৎপাদন বৃদ্ধি চাই, উৎপাদন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করতে চাই।”
অর্থনীতি
আয়করে অর্ধশতাধিক পরিবর্তন: পুঁজিবাজার বিকাশেও প্রস্তাব

আসন্ন বাজেটে আয়কর খাতে অর্ধশতাধিক পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে কর বাড়ছে, আবার কিছু ক্ষেত্রে কমছে। ব্যক্তির করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানো এবং পাঁচ শতাংশ করের স্ল্যাব তুলে দেওয়ার মতো পরিবর্তন আনা হচ্ছে। করদাতার ওপর চাপ কমানো এবং পুঁজিবাজারের বিকাশেও বেশ কিছু ইতিবাচক প্রস্তাব থাকছে।
ব্যবসা ও বিনিয়োগের জন্য ক্ষতিকর বলে বিবেচিত কর আইনের বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ও খাত সংশ্লিষ্টরা প্রাক-বাজেট আলোচনায় আপত্তি তুলেছিলেন। সেই আপত্তিগুলো বিবেচনায় নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বাজেটে বেশ কিছু ইতিবাচক প্রস্তাব করবেন বলে জানা গেছে। পাশাপাশি কর আদায় বাড়ানোর জন্যও কিছু প্রস্তাব থাকবে।
ব্যক্তিগত আয়করে পরিবর্তন: ব্যক্তির করমুক্ত আয়ের সীমা ২৫ হাজার টাকা বাড়িয়ে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, জুলাই যোদ্ধাদের করমুক্ত আয়ের সীমা হচ্ছে ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা। ব্যক্তির কর নির্ধারণেও পরিবর্তন আসছে: ৫ শতাংশের কর স্ল্যাব বাতিল হচ্ছে, ফলে করের হার হবে আয়ের ১০ থেকে ৩০ শতাংশ। অঞ্চলভেদে ন্যূনতম করের বিধান বাতিল করে সারা দেশে সবার জন্য ন্যূনতম আয়কর ৫ হাজার টাকা করা হচ্ছে। নতুন করদাতাদের উৎসাহ দিতে ন্যূনতম কর ১ হাজার টাকা করা হবে।
পুঁজিবাজারের জন্য প্রস্তাবনা: শেয়ারবাজার সংক্রান্ত বেশ কিছু প্রস্তাব থাকছে বাজেটে, যা বাজারকে টেকসই ও গতিশীল করতে সাহায্য করবে। মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর কর সাড়ে ৩৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ২৭ শতাংশ করা হচ্ছে। তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর্পোরেট কর ২২.৫ শতাংশই থাকছে, তবে এর কঠোর শর্ত শিথিল করা হচ্ছে। এই সুবিধা পেতে হলে শুধু আয় ব্যাংকের মাধ্যমে হতে হবে। এছাড়া ব্রোকারেজ হাউজের উৎসে কর কমিয়ে ০.০৩ শতাংশ করা হচ্ছে।
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন:
- কোম্পানি ও করদাতাদের দাবি মেনে নিয়ে অতিরিক্ত কর পরের বছরগুলোতে সমন্বয় করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
- কৃষি আয় ৫ লাখ টাকার বেশি হলে কর আরোপ করা হবে।
- বেসরকারি চাকরিজীবীদের করমুক্ত ব্যয় ৫০ হাজার টাকা বাড়ছে এবং পারকুইজিট সীমা দ্বিগুণ হচ্ছে।
- বাবা-মা, স্বামী-স্ত্রীর পাশাপাশি আপন ভাই-বোনের মধ্যে দানও করমুক্ত হচ্ছে।
উৎসে কর ও আমদানি শুল্কে পরিবর্তন:
- ঠিকাদারের উৎসে কর ২ শতাংশ কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হচ্ছে।
- কৃষিপণ্য সরবরাহে উৎসে কর অর্ধেক হচ্ছে।
- জমি বিক্রিতে ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স ৫ শতাংশ কমিয়ে ১৩ শতাংশ করা হচ্ছে।
- তবে, ১৫২টি পণ্য আমদানিতে ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর আরোপ করা হচ্ছে।
- ইন্টারনেট সেবার উৎসে কর কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হচ্ছে এবং সিগারেট কোম্পানির উৎসে কর বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হচ্ছে।
- মোবাইল অপারেটরদের টার্নওভার কর কমিয়ে দেড় শতাংশ করা হচ্ছে।
- রিসাইকেল শিল্প, গ্যাস বিতরণ, তেল পরিশোধনাগার, বিদ্যুৎ কেনায় উৎসে কর কমানো হচ্ছে।
কর অব্যাহতি ও রিটার্ন সংক্রান্ত পরিবর্তন:
- মৎস্য ও পোল্ট্রি খাতের কর অব্যাহতি বাতিল করা হচ্ছে, তবে প্রান্তিক খামারিদের উৎসাহ দিতে এ খাতের ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করমুক্ত থাকবে।
- সরকারি কিছু প্রতিষ্ঠানকে রিটার্ন দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে।
- উৎসে করের রিটার্ন প্রতিমাসের পরিবর্তে তিন মাস পরপর দিতে হবে।
- ক্রেডিট কার্ড পাওয়াসহ ১২টি সেবা পেতে রিটার্ন জমার প্রমাণ দেখানোর শর্ত শিথিল করা হচ্ছে; কর নিবন্ধন থাকলেই মিলবে এসব সেবা।
অর্থনীতি
বিজিএমইএ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু

তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদের বহুল আলোচিত নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ শনিবার (৩১ মে) সকাল ৮টা থেকে ঢাকার র্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেল ও চট্টগ্রামের র্যাডিসন ব্লু বে ভিউ হোটেল কেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে, চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
নির্বাচনে ফোরামের প্যানেল লিডার হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন রাইজিং ফ্যাশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাহমুদ হাসান খান। এর আগে তিনি সংগঠনের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
অন্যদিকে, সম্মিলিত পরিষদের নেতৃত্বে রয়েছেন চৈতি গ্রুপের এমডি মো. আবুল কালাম। তিনি আগে সংগঠনের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
এই নির্বাচনে ৩৫টি পরিচালক পদে লড়াইয়ে নেমেছে তিনটি জোট—ফোরাম, সম্মিলিত পরিষদ ও ঐক্য পরিষদ। প্রতিদ্বন্দ্বিতা জমবে ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদের মধ্যে। কারণ তারা দুই কেন্দ্রেই পূর্ণ প্রার্থী দিয়েছে। ঐক্য পরিষদ মনোনয়ন দিয়েছে মাত্র ছয়টি পদে। সব মিলিয়ে এবার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৬ জন।
নির্বাচনে মোট ভোটার এক হাজার ৮৬৪ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ভোট দেবেন এক হাজার ৫৬১ জন এবং চট্টগ্রামে ৩০৩ জন। আগেরবার ভোটার ছিলেন দুই হাজার ৪৯৬ জন।