জাতীয়
মে মাসের চেয়ে জুনে সড়কে প্রাণহানি বেড়েছে ৩৭ শতাংশ

মে মাসের তুলনায় জুনে প্রাণহানি বেড়েছে ৩৭ শতাংশ। জুন মাসে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৭২৬টি। এর মধ্যে নিহত ৬৪৪ এবং আহত কমপক্ষে ১ হাজার ৮২ জন বলে জানিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।
সোমবার (১৫ জুলাই) প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছে। সংগঠনটি ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এবং নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে জুন মাসের সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য ভিত্তিক এ প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
সংগঠনটি বলছে, মে মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৮৬ জন নিহত হয়েছিলেন। ওই মাসে প্রতিদিন গড়ে নিহত হয়েছিলেন ১৫.৬৭ জন। কিন্তু জুন মাসে প্রতিদিন গড়ে নিহত হয়েছেন ২১.৪৬ জন। সেই হিসাবে জুন মাসে প্রাণহানি বেড়েছে ৩৬.৯৪ শতাংশ।
গত জুন মাসে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ২৬৫টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ২২৭ জন, যা মোট নিহতের ৩৫.২৪ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৬.৫০ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ১২৮ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ১৯.৮৭ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ১০১ জন অর্থাৎ ১৫.৬৮ শতাংশ।
এই সময়ে ১১টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত, ৩ জন আহত এবং ৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ৩১টি রেল ট্র্যাক দুর্ঘটনায় ২৫ জন নিহত এবং ১৪ জন আহত হয়েছেন।
যানবাহনভিত্তিক নিহতের চিত্র: দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়- মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ২২৭ জন, বাসের যাত্রী ২৯ জন , ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান-ট্রাক্টর-ট্রলি আরোহী ৫১ জন, প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস-অ্যাম্বুলেন্স- জীপ আরোহী ৩৮ জন, থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-টেম্পু-লেগুনা) ১২৮ জন, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-করিমন-ভটভটি-আলমসাধু-মাহিন্দ্র) ২৬ জন এবং বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা আরোহী ১৭ জন নিহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান দেখা যায়, ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১৭২টি দুর্ঘটনায় ১৫৫ জন নিহত হয়েছেন। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ৪৫টি দুর্ঘটনায় ৩৮ জন নিহত হয়েছেন। রাজধানী ঢাকায় ৩৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৯ জন নিহত ও ৩৪ জন আহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণসমূহ চিহ্নিত করে সংগঠনটি। এগুলো হল, ১. ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন ২. বেপরোয়া গতি ৩. চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা ৪. বেতন-কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট না থাকা ৫. মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল ৬. তরুণ-যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো ৭. জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা ৮. দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ৯. বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি ১০. গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।
প্রতিবেদনে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সুপারিশ হিসেবে বলা হয়েছে ১. দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে ২. চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে ৩. বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে ৪. পরিবহন মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে ৫. মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা পার্শ্ব রাস্তা তৈরি করতে হবে ৬. পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে ৭. গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে ৮. রেল ও নৌ-পথ সংস্কার করে সড়ক পথের ওপর চাপ কমাতে হবে ৯. টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে ১০. সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

জাতীয়
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ ইইউ প্রতিনিধি দলের

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধি দল। নানা চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও গণতন্ত্র রক্ষায় বাংলাদেশ সঠিক পথে এগোচ্ছে বলে মন্তব্য তাদের।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকে এই মন্তব্য করেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মানবাধিকার উপকমিটির চেয়ারম্যান মুনির সাতুরি নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দল।
বৈঠকে মানবাধিকার রক্ষা, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ শক্তিশালীকরণ ও ২০২৬ সালের নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এ সময় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে ইইউর কার্যকর ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। জবাবে ইইউ প্রতিনিধি দল সরকারের সংস্কার পদক্ষেপ, উন্মুক্ততা ও জনগণের ভোটাধিকার রক্ষার প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানান।
রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখায় বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধিরা। আজ কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন শেষে তারা ১৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন।
জাতীয়
অনেক কাজ করেছি, যা দেশের ইতিহাসে হয়নি: আইন উপদেষ্টা

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অল্প সময়ে লিগ্যাল এইডের বাইরেও অনেক কাজ করেছি, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনোদিন হয়নি।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিলেটের একটি অভিজাত হোটেলের হলরুমে ‘জারিকৃত আইনগত সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫: মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বাধ্যতামূলক বিধান’ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, বিরোধ নিস্পত্তিতে আপনাকে লিগ্যাল এইডে যেতে হবে। সেখানে যদি সন্তুষ্ট হতে না পারেন, তাহলে ভোক্তভোগী বিচারিক আদালতে যাবেন। এটা আমরা করেছি এক নম্বর পরিবর্তন।
লিগ্যাল এইডের মামলায় ১১ ধরনের আইন সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে আমরা চেকের মামলাও সুনির্দিষ্ট করে দিয়েছি। তৃতীয় পরিবর্তন হলো, আগে লিগ্যাল এইডে একজন সিনিয়র সহকারী জজ ছিলেন। এখন সেখানে তার সঙ্গে আরেকজন সিনিয়র জজ থাকবেন এবং ডিস্ট্রিক্ট সেশনের অবসরপ্রাপ্ত একজন থাকবেন।
তিনি আরও বলেন, আইনগত সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারির মাধ্যমে মামলাপূর্ব বাধ্যতামূলক মধ্যস্থতার যে বিধান কার্যকর হচ্ছে, তাতে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ন্যায়বিচার পাওয়ার অভাবনীয় সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, আমরা সিভিল ও ক্রিমিনাল আদালত পৃথক করেছি, যাতে মামলার নিষ্পত্তি দ্রুতগামী হয়। যা এর আগে কোনোদিন কেউ করেনি। আগে বিচারিক পদ সৃজনের ক্ষমতা পলিটিক্যাল মন্ত্রীদের হাতে ছিল, এটা আমরা চিফ জাস্টিস অফিসারের হাতে দিয়ে গেছি। সেই ফাইল আমরা নিজ হাতে গিয়ে সাইন করে নিয়ে এসেছি। পিয়নের মতো করে নিজে ফাইল নিয়ে গিয়ে সাইন করিয়েছি। আমরা যা যা করেছি, কোনোদিনই বাংলাদেশে এর আগে হয়নি।
আসিফ নজরুল বলেন, সোস্যাল মিডিয়ায় প্রায়ই দেখবেন, অনেকে বলছেন আপনারা কি করছেন? আমি বুঝতে পারি না, এর আনসারটা কী? আমি তো ফুটবল প্লেয়ার নই বা কোনো মঞ্চ নাটকের অভিনেতা নই। আমি যেটা করবো, সেটা আপনারা দেখতে পারবেন এবং দেখতে হবে কাজের মধ্যে দিয়ে। এই যে লিগ্যাল এইডের কাজ করলাম। এর বাইরে আমরা অনেক কাজ করেছি, যা বাংলাদেশে ইতিহাসে কোনোদিন হয়নি।
তিনি বলেন, লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে মানুষজন যে সল্যুশন পায়, সেটার জন্য ১০০ জনের মধ্যে ৯০ জন আর কোর্টে যায় না। সেখানে মামলা নিষ্পত্তি হয়। অথচ প্রচলিত আদালতে যখন মামলা হয়, বিচারিক আদালতে মামলা হওয়ার পরও কেউ উচ্চ আদালতে যায় আপিল করার জন্য। লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে মানুষজন কম সময়ে কম খরচে বিচার পায়, অনেক কম ভোগান্তি হয়, অনেক বেশি মানুষ বিচার পায়।
১ জুলাই আইনগত সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি করা হয়। এটি বাস্তবায়নের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে এই অধ্যাদেশের তফসিলভুক্ত বিষয়গুলোতে (যেমন, পারিবারিক বিরোধ, নিতা-মাতার ভরণপোষণ, বাড়ি ভাড়া, যৌতুক ইত্যাদি) ১২টি জেলায় মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বাধ্যতামূলক বিধান আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে।
অধ্যাদেশের ধারা ১ এর উপ-ধারায় (২) দেওয়া ক্ষমতাবলে পাইলট প্রকল্প হিসেবে সিলেট, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, ফরিদপুর, ময়মনসিংহ, রংপুর, দিনাজপুর, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, কুমিল্লা, নোয়াখালী, রাঙামাটি জেলায় বৃহস্পতিবার থেকে এই কার্যক্রম শুরু হচ্ছে।
এর আগে আসিফ নজরুল নৌকায় রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট পরিদর্শন করেন।
জাতীয়
লিবিয়া থেকে আজ দেশে ফিরছেন আরও ১৭৬ বাংলাদেশি

ত্রিপলীর তাজুরা ডিটেনশন সেন্টার থেকে বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ১৭৬ জন বাংলাদেশিকে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম)-এর সহায়তায় দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। প্রত্যাবাসিতরা আজ বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
বুধবার ত্রিপোলীর বাংলাদেশ দূতাবাস এই তথ্য জানিয়েছে।
দূতাবাস জানায়, বাংলাদেশ দূতাবাস, লিবিয়া বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে আটক বাংলাদেশি নাগরিকদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও আইওএম-এর সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতায় ১৭ সেপ্টেম্বর ত্রিপলীর তাজুরা ডিটেনশন সেন্টার থেকে ১৭৬ জন বাংলাদেশিকে আইওএম-এর সহায়তায় দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যাবাসিতরা ১৮ সেপ্টেম্বর আনুমানিক সকাল ৮টায় লিবিয়ার বুরাক এয়ারলাইন্সের (ফ্লাইট নম্বর UZ222) মাধ্যমে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মুহাম্মদ খায়রুল বাশার এর নেতৃত্বে দূতাবাসের একটি প্রতিনিধি দল লিবিয়ার অভিবাসন অধিদপ্তরের অভ্যর্থনা কেন্দ্রে উপস্থিত থেকে প্রত্যাবাসিতদের বিদায় জানান।
রাষ্ট্রদূত অবৈধ অভিবাসনের বিভিন্ন নেতিবাচক দিক তুলে ধরে তাদের ভবিষ্যতে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, অবৈধ অভিবাসনের ফলে ব্যক্তির আর্থিক ও শারীরিক ক্ষতির পাশাপাশি পরিবার ও সমাজও দুর্ভোগের শিকার হয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড দেশের ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুণ্ণ করে।
জাতীয়
২২ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে অংশ নিতে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই অধিবেশনে তিনি বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
তিনি জানান, এবারের অধিবেশনে রোহিঙ্গা সংকট, গণতন্ত্রের পথে বাংলাদেশের যাত্রা, জলবায়ু পরিবর্তন ও শান্তিরক্ষা কার্যক্রমসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে শক্ত অবস্থান তুলে ধরবে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, এবারের অধিবেশনের মূল প্রতিপাদ্য হলো ‘Better Together: 80 years and more for peace, development and human rights’। বিশ্বজুড়ে চলা সংঘাত, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় সমন্বিত বৈশ্বিক পদক্ষেপের গুরুত্ব এই প্রতিপাদ্যে প্রতিফলিত হয়েছে।
৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতির নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হবে ‘মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলন’ রোহিঙ্গা ইস্যুকে ঘিরে এমন উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক এবারই প্রথম।
উপদেষ্টা জানান, প্রধান উপদেষ্টার উদ্যোগে এ বৈঠক আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং কক্সবাজারে সম্প্রতি অংশীদারদের সংলাপও সেই প্রস্তুতির অংশ। ২৫ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা বিশ্ব যুব কর্মসূচির ৩০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নেবেন।
তিনি জানান, গত বছরের গণঅভ্যুত্থান ও চলমান সংস্কারে তরুণ সমাজ যে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে, তা এই মঞ্চে তুলে ধরা হবে।
তৌহিদ হোসেন বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ২৬ সেপ্টেম্বর সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশের পক্ষে ভাষণ দেবেন। সেখানে তিনি গণতন্ত্রের পথে বাংলাদেশের যাত্রা, চলমান সংস্কার, শান্তিরক্ষা কার্যক্রম, রোহিঙ্গা সংকট, জলবায়ু ন্যায়বিচার, টেকসই উন্নয়ন, অভিবাসন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ নিয়ে বক্তব্য রাখবেন। ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতের স্থায়ী সমাধানের বিষয়টিও তাঁর আলোচনায় থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সফরকালে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাতের কথা রয়েছে। এছাড়া সময়সূচি অনুযায়ী আরও কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হতে পারে।
অন্যদিকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা কমনওয়েলথ, ওআইসি, জি-৭৭, বিমস্টেকসহ বিভিন্ন সাইডলাইন বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সরকারের প্রধান লক্ষ্য হলো জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া এবং সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা। এবারের অধিবেশন বিশ্বমঞ্চে সেই অগ্রযাত্রা তুলে ধরার সুযোগ দেবে।
জাতীয়
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান হবে আলোচনার টেবিলেই: সালাহউদ্দিন

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে বিএনপি আলোচনার টেবিলে সমাধানের ব্যাপারে আশাবাদী বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
তিনি বলেন, যদি আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান আসে, তাহলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে। আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুবিধা নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে অনেকবার ভোগ করেছে এবং এমন পরিণতি আমরা আবার চাই না।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় এক বছর ধরে চলা অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতে সাংবিধানিক নিয়মেই এই সরকার গঠিত হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সের ভিত্তিতে যে মতামত দিয়েছে, তা কি অকার্যকর হয়ে গেছে? কিন্তু এখন পর্যন্ত এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্টে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। তাই এই বিষয়ে প্রশ্ন তোলা অনেকটা রাজনৈতিক বক্তব্যের মতো, যার কোনো আইনি ভিত্তি নেই।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, যদি কোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি করা হয়, তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হবে না, এমন নিশ্চয়তা নেই। আমরা এমন একটি খারাপ নজির জাতির সামনে স্থাপন করতে পারি না। তবে আমরা সমাধান চাই এবং সে কারণেই কিছু বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে, যা বিবেচনায় নেওয়ার জন্য সবারকে আহ্বান জানাবো।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, রাজনৈতিক দলের আন্দোলন করার অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি নিয়ে আন্দোলন করে জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যায় না। দিনের শেষে জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে। পিআর পদ্ধতি নির্ধারণের জন্য একটি আলোচনা প্রক্রিয়ার প্রয়োজন, এবং আমরা সেই আলোচনায় আছি।
তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতিতে প্রায়শই একটি অনিশ্চিত সরকার ব্যবস্থা এবং ঝুলন্ত পার্লামেন্ট তৈরি হয়। এতে কোনো দলই সরকার গঠনের জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় না। এর ফলে রাষ্ট্রের এবং জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা সম্ভব হয় না। তিনি পার্শ্ববর্তী একটি দেশের উদাহরণ দিয়ে বলেন, আমরা এমন একটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের অঙ্গীকার করতে পারি না।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রহীন অবস্থা থেকে গণতন্ত্রকে উদ্ধার করেছে।
তিনি আরও বলেন, আগামী পার্লামেন্টে কিছু মৌলিক বিষয় সংশোধন করা হবে, যেগুলোতে আমরা ইতোমধ্যে সম্মত হয়েছি। ঐকমত্য কমিশনের সনদের মধ্যে সেই বিষয়গুলো পরিবর্তনে অবশ্যই রেফারেন্ডাম নিতে হবে।