আইন-আদালত
ফাঁস হওয়া প্রশ্নে নিয়োগপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশে আইনি নোটিশ

আলোচিত সেই ফাঁস হওয়া প্রশ্নে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের তালিকা প্রকাশ করতে সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আজ রবিবার (১৪ জুলাই) ইমেইল ও ডাকযোগে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ছাড়াও বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান ও সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থা ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার এ নোটিশ পাঠান।
নোটিশে বলা হয়েছে, বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যায়, বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের সাবেক গাড়িচালক ও অন্যান্য কর্মচারী কর্তৃক গত কয়েক দশক ধরে বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে পরীক্ষার্থীদের নিকট সরবরাহ করা হয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় আবেদ আলীসহ কর্ম কমিশনের এ পর্যন্ত ১৭ জন কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে আবেদ আলী ছাড়াও অন্যান্য অসাধু কর্মচারীরা কীভাবে বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পরীক্ষার্থীদের কাছে টাকার বিনিময়ে বিতরণ করে প্রত্যেকে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন, তার বিবরণ দিয়েছেন। এমনকি পুলিশ গ্রেপ্তার আবেদ আলী ও কর্ম কমিশনের অন্যান্য কর্মচারীদের কাছ থেকে ফাঁসকৃত প্রশ্নপত্রে উত্তীর্ণ হয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের তালিকা প্রণয়ন করেছে।
এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরীক্ষা হচ্ছে বিসিএস। লক্ষ লক্ষ পরীক্ষার্থীদের লিখিত-মৌখিক বিভিন্ন স্তরে নিবিড়ভাবে যাচাই-বাছাই করে একজন যোগ্য প্রার্থীকে বেছে নেয়া হয়। আর এই পুরো প্রক্রিয়ার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন। কর্ম কমিশন পূর্ণ গোপনীয়তা বজায় রেখে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও এটি পরীক্ষা কেন্দ্রে সরবরাহ করার কথা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে কর্ম কমিশনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীর কারণে বিসিএস পরীক্ষা প্রশ্নপত্র নিয়মিত ফাঁস হচ্ছে। এর ফলে একদিকে যেমন অযোগ্য এবং অদক্ষ ব্যক্তিরা প্রজাতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ লাভের কারণে দেশে দুর্নীতি ও অনিয়ম বাড়ছে, একইসঙ্গে যোগ্য ও দক্ষ প্রার্থীর অভাবে সাধারণ জনগণ প্রজাতন্ত্রের কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই ফাঁসকৃত প্রশ্নে উত্তীর্ণ হয়ে বিভিন্ন সরকারি পদে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রতারক কর্মকর্তাদের তালিকা প্রণয়ন করে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে নোটিশে।
এতে আরও বলা হয়েছে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বিসিএস পরীক্ষায় প্রতারণার মাধ্যমে উত্তীর্ণ হয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে নিয়োগপ্রাপ্ত বিসিএস কর্মকর্তাদের নাম, ঠিকানা, বর্তমান পদবী উল্লেখপূর্বক তালিকা প্রণয়ন করে কর্ম কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ ছাড়াও নোটিশে এসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি এ পর্যন্ত বেতন-ভাতাদিসহ যাবতীয় গৃহীত আর্থিক সুবিধা ফেরত নিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধও জানানো হয়েছে।
কাফি

আইন-আদালত
বিচার বিভাগের জাতীয় সেমিনার রোববার, থাকবেন প্রধান উপদেষ্টা

সুপ্রিম কোর্টের আয়োজনে ‘বিচারিক স্বাধীনতা ও দক্ষতা’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনার আগামীকাল রোববার (২২ জুন) অনুষ্ঠিত হবে। রোববার বিকেল পৌনে ৫টায় রাজধানীর অভিজাত হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এতে সভাপতিত্ব করবেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখবেন ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফান লেলার। এরপর বিচার বিভাগ সংস্কারে প্রধান বিচারপতি ঘোষিত ‘রোডম্যাপ’র ওপর তথ্যচিত্র তুলে ধরা হবে।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখবেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
বক্তব্য রাখবেন বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।
কাফি
আইন-আদালত
আদালত অবমাননা মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত শুনানি আজ

জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হওয়া আদালত অবমাননা মামলার পূর্ণাঙ্গ শুনানি আজ। একই মামলায় আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত আছেন গোবিন্দগঞ্জের ছাত্রলীগ নেতা শাকিল আকন্দ বুলবুল ওরফে মো. শাকিল আলম (৪০)। ‘২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়েছি’ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ মামলার চূড়ান্ত শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এর আগে, গত ৩ জুন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগের বিষয়ে পরবর্তী শুনানি ও আদেশের জন্য আজ ১৯ জুন দিন ধার্য করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরও হাজির না হওয়ায় গত ৩ জুন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। আদালতে প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। পরে চিফ প্রসিকিউটর সাংবাদিকদের বলেন, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরও হাজির হয়ে বা আইনজীবীর মাধ্যমে কোনো ব্যাখ্যা দেননি শেখ হাসিনা। এখন আইন অনুযায়ী শাস্তি দিতে পারবেন ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনাল আইন অনুযায়ী অভিযোগ প্রমাণ হলে এক্ষেত্রে এক বছরের সাজা ও ৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।
গত ৩০ এপ্রিল এ-সংক্রান্ত শুনানিতে দুই আসামিকে ২৫ মে ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। ওই ধার্য তারিখে তারা হাজির হননি। এমনকি আইনজীবীর মাধ্যমেও ব্যাখ্যা দেননি। সেদিন ট্রাইব্যুনাল দুই আসামিকে সশরীর হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে জবাব দেওয়ার জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দিতে নির্দেশ দেন। পরদিন দুটি সংবাদপত্রে এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞপ্তিতে দুজনকে ৩ জুন ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়। ওইদিনও দুই আসামি হাজির হননি। পরে ওইদিন এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনালে আবার শুনানি হয়। পূর্ণাঙ্গ শুনানির জন্য ১৯ জুন তারিখ নির্ধারণ করেন ট্রাইব্যুনাল।
মূলত, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘটনায় দায়ের করা মামলা নিয়ে দেওয়া বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা ও ছাত্রলীগ নেতা শাকিল আলম বুলবুলের বিরুদ্ধে গত ৩০ এপ্রিল আদালত অবমাননার অভিযোগ দাখিল করেন চিফ প্রসিকিউটর। সেদিন ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গ্রহণ করে আগামী ১৫ মে’র মধ্যে অভিযুক্তদের জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু ওইদিন কোনো জবাব দাখিল না করায় তাদের গত ২৫ মে ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।
‘আমার বিরুদ্ধে ২২৭টি মামলা হয়েছে, তাই ২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’-এমন বক্তব্যের শেখ হাসিনা একটি অডিও ভাইরাল হয়। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ওই কথোপকথনের ফরেনসিক পরীক্ষা করে সত্যতা পায়। এরপরই আদালত অবমাননার আবেদন দাখিল করা হয় ট্রাইব্যুনালে।
আইন-আদালত
নাসার নজরুলের স্ত্রীর ফ্ল্যাট জব্দ, ৫৫ কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ

নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের স্ত্রী ও গ্রুপটির পরিচালক নাসরিন ইসলামের নামে থাকা দুইটি ফ্ল্যাট জব্দ ও ৫৫ কোম্পানির বিপুল শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (১৮ জুন) ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। ফ্ল্যাট দুইটি মহাখালী ডিওএইচএসে অবস্থিত, যার মূল্য ৪ কোটি টাকা বলে উল্লেখ করেছে দুদক।
এছাড়া ৫৫ টি কোম্পানিতে নাসরিন ইসলামের নামে থাকা বিপুল শেয়ার অবরুদ্ধ করা হয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) তানজির আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ শিহাব সালাম এসব সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধের আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, নাসরিনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুস ও দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ২০ কোটি ২৬ লাখ ৫৯ হাজার ৮৫০ টাকা মূল্যের সম্পদের মালিকানা অর্জন করে নিজ ভোগদখলে রাখার দায়ে মামলা করা হয়েছে।
তদন্তকালে বিভিন্ন সূত্র হতে জানা যায়, আসামি তার নামীয় স্থাবর, অস্থাবর সম্পদগুলো বিক্রি, স্থানান্তর করার চেষ্টা করছেন। এসব সম্পদ বিক্রি হয়ে গেলে রাষ্ট্রের সমূহ ক্ষতির কারণ রয়েছে। তাই অবিলম্বে এসব সম্পদ জব্দ ও ফ্রিজ করা আবশ্যক।
আইন-আদালত
হলি আর্টিজানে হামলার মামলায় হাইকোর্টের রায় প্রকাশ

রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে আলোচিত সন্ত্রাসী হামলা মামলায় বিচারিক আদালতের মৃত্যুদণ্ডাদেশ কমিয়ে সাতজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) ২২৯ পৃষ্ঠার এই রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার আসামিদের আপিল ও জেল আপিল এবং ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন) খারিজ করে ওই রায় দিয়েছিলেন।
আদালত রায়টি বাংলায় ঘোষণা করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন তৎকালীন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আরিফুল ইসলাম ও আমিমুল এহসান। আসামিপক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন এস এম শফিকুল ইসলাম।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হামলা চালিয়ে বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির (আত্মঘাতী) সদস্যরা। তাদের গুলিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। পরে কমান্ডো অভিযানে নিহত হন পাঁচ জঙ্গি।
এ ঘটনার মামলায় ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান একজনকে খালাস দিয়ে সাতজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন।
বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র্যাশ, আব্দুস সবুর খান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, হাদিসুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ও মামুনুর রশিদ। খালাস পেয়েছেন মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান।
ফৌজদারি মামলায় বিচারিক আদালত যখন আসামিদের মৃত্যুদণ্ড দেন তখন ওই দণ্ড কার্যকরের জন্য হাইকোর্টের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। এজন্য সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালত ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা মোতাবেক মামলার সব নথি হাইকোর্টে পাঠিয়ে দেন, যা ডেথ রেফারেন্স নামে পরিচিত।
নথি আসার পর হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সংশ্লিষ্ট মামলার পেপারবুক প্রস্তুত করে। এরপর বেঞ্চ নির্ধারণ হলে শুনানি শুরু হয়।
দেশের ইতিহাসে অন্যতম নৃশংস এ হামলায় ৯ ইতালীয়, ৭ জাপানি, এক ভারতীয়, এক বাংলাদেশি-আমেরিকান দ্বৈত নাগরিক ও দুজন বাংলাদেশিসহ মোট ২০ জনকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সন্ত্রাসীদের ছোড়া গ্রেনেডের আঘাতে প্রাণ হারান বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন আহমেদ ও সহকারী পুলিশ কমিশনার রবিউল ইসলাম।
হামলার পর জিম্মি অবস্থার অবসানে সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে নিহত হন পাঁচ জঙ্গি। তারা হলেন- মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ ওরফে মামুন, নিবরাস ইসলাম, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল।
এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের সময় নিহত হয়েছেন নব্য জেএমবির আরও ৮ সদস্য। তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল হাসনাত রেজা করিমও অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পান।
ওই ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন ওই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রিপন কুমার দাস। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবির মামলাটি তদন্ত করে ২০১৮ সালের ১ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।
কাফি
আইন-আদালত
এস আলমের ২০০ একর জমি জব্দের আদেশ

মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগের অনুসন্ধান চলমান থাকায় আলোচিত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ১৮০ কোটি ৬১ লাখ টাকা দলিলমূল্যের ২০০ দশমিক ২৬ একর জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার (১৭ জুন) ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত এ আদেশ দেন। দুদকের উপপরিচালক তাহসিন মুনাবিল হক এ জব্দের আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়েছে, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট সত্তা ও সত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং সংগঠনের অভিযোগটি অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য একটি যৌথ অনুসন্ধানী তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে।
অনুসন্ধানকালে দেখা যায়, মোহাম্মদ সাইফুল আলমের স্বার্থসংশ্লিষ্ট সত্তার ও সত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ নিয়ে তা আত্মসাৎ করে নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন।
অনুসন্ধানকালে বিভিন্ন সূত্র হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা স্থাবর সম্পত্তি অন্যত্র হস্তান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা করছেন। অনুসন্ধান নিষ্পত্তির আগে উক্ত স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর হয়ে গেলে পরবর্তীতে সেটি উদ্ধার করা দুরূহ হয়ে পরবে। তাই মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট সত্তা ও সত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির স্বার্থসংশ্লিষ্ট স্থাবর সম্পত্তিগুলো জরুরি ভিত্তিতে ক্রোক বা জব্দ করা প্রয়োজন।
গত ২৩ এপ্রিল তার ৪০৭ কোটি টাকা মূল্যের ১৫৯ একর জমি জব্দের আদেশ দেন আদালত। গত ১৭ এপ্রিল এস আলমের এক হাজার ৩৬০ টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেন আদালত। এসব হিসাবে দুই হাজার ৬১৯ কোটি সাত লাখ ১৬ হাজার টাকা রয়েছে। গত ১০ মার্চ এস আলমের এক হাজার ছয় বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেন আদালত।
গত ৯ এপ্রিল তার ৯০ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেওয়া হয়েছে। একইদিন আদালত তার ঘনিষ্ঠজনদের নামে থাকা ৩৭৪ টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তাদের আট হাজার ১৩৩ কোটি ৫৬ লাখ ৭২ হাজার টাকা মূল্যের শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দেন আদালত। গত ৩ ফেব্রুয়ারি ৩৬৮ কোটি ২৫ লাখ ৬৩ হাজার পাঁচশো টাকা মূল্যের ১৭৫ বিঘা সম্পদ জব্দের আদেশ দেন আদালত। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ৪৩৭ কোটি ৮৫ লাখ ২ হাজার ২৭৪ টি শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব শেয়ারের মূল্য ৫ হাজার ১০৯ কোটি টাকা।
গত ১৬ জানুয়ারি এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের ৩ হাজার ৫৬৩ কোটি ৮৪ লাখ ২১ হাজার টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন একই আদালত। গত ৭ অক্টোবর এস আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনসহ তার পরিবারের ১২ সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।
কাফি