অর্থনীতি
জাতীয় রপ্তানি পদক পাচ্ছে ৭৭ প্রতিষ্ঠান

দেশে বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অবদান রাখায় ২০২১-২২ অর্থবছরের রপ্তানি পদক পাচ্ছে ৭৭টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ৭৬টি প্রতিষ্ঠান জাতীয় রপ্তানি পদক এবং একটি প্রতিষ্ঠানকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রপ্তানি পদক দেবে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)।
শনিবার (১৩ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজারের টিসিবি অডিটোরিয়ামে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, জাতীয় রপ্তানি ট্রফি নীতিমালা-২০১৩ অনুসরণ করে প্রাথমিক ও চূড়ান্ত বাছাই কমিটির মাধ্যমে মোট ৩২টি খাতের রপ্তানিকারকদের মধ্য থেকে রপ্তানি আয়, আয়গত প্রবৃদ্ধি, নতুন পণ্যের সংযোজন, নতুন বাজারে প্রবেশ, কমপ্লায়েন্স প্রতিপালন ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে ট্রফি বিজয়ী প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করা হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী জানান, আগামীকাল রোববার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থেকে সম্মাননাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে পদক তুলে দেবেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস-চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
পুরস্কার পাচ্ছে যেসব প্রতিষ্ঠান-
২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য সর্বোচ্চ বিদেশি মুদ্রা অর্জনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি পাচ্ছে রিফাত গার্মেন্টস। তৈরি পোশাক (ওভেন) খাতের এই প্রতিষ্ঠানকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রপ্তানি পদক দেওয়া হচ্ছে।
তৈরি পোশাকের ওভেন খাত থেকে স্বর্ণপদক পাচ্ছে উইন্ডি অ্যাপারেলস, রৌপ্য পদক পাচ্ছে অ্যাপারেল গ্যালারি লিমিটেড ও ব্রোঞ্জ পদক পাচ্ছে মেসার্স চিটাগাং এশিয়ান অ্যাপারেলস।
তৈরি পোশাকে নিটওয়্যার খাত থেকে স্বর্ণপদক পাচ্ছে লিবার্টি নিটওয়্যার লিমিটেড, রৌপ্যপদক পাচ্ছে ডিভাইন ইন্টিমেটস লিমিটেড এবং ব্রোঞ্জ পদক পাচ্ছে ফ্ল্যামিংগো ফ্যাশনস লিমিটেড।
সুতা খাত থেকে স্বর্ণ পদক পাচ্ছে বাদশা টেক্সটাইলস লিমিটেড, রৌপ্য পদক পাচ্ছে স্কয়ার টেক্সটাইলস লিমিটেড এবং ব্রোঞ্জ পদক পাচ্ছে কামাল ইয়ার্ন লিমিটেড।
টেক্সটাইল ফেব্রিকস খাত থেকে স্বর্ণপদক পাচ্ছে নাইস ডেনিম মিলস লিমিটেড, রৌপ্যপদক পাচ্ছে হা-মীম ডেনিম লিমিটেড এবং ব্রোঞ্জ পদক পাচ্ছে ফোর এইচ ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং।
হোম ও স্পেশালাইজড টেক্সটাইল খাত থেকে স্বর্ণ পদক পাচ্ছে জাবের অ্যান্ড জোবায়ের ফেব্রিকস লিমিটেড, রৌপ্যপদক পাচ্ছে মমটেক্স এক্সপো লিমিটেড এবং ব্রোঞ্জ পদক পাচ্ছে এসিএস টেক্সটাইলস (বাংলাদেশ) লিমিটেড।
টেরিটাওয়েল খাত থেকে স্বর্ণ পদক পাচ্ছে নোমান টেরিটাওয়েল মিলস লিমিটেড এবং রৌপ্য পদক পাচ্ছে এসিএস টাওয়েল লিমিটেড।
হিমায়িত পণ্য খাত থেকে স্বর্ণ পদক পাচ্ছে ছবি ফিশ প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, রৌপ্যপদক পাচ্ছে প্রিয়াম ফিশ এক্সপোর্ট লিমিটেড এবং ব্রোঞ্জ পদক পাচ্ছে এমইউসি ফুডস লিমিটেড।
কাঁচাপাট খাত থেকে স্বর্ণপদক পাচ্ছে পপুলার জুট এক্সচেঞ্জ লিমিটেড, রৌপ্যপদক পাচ্ছে মেসার্স তানফিয়া জুট ট্রেডিং এবং ব্রোঞ্জ পদক পাচ্ছে মেসার্স ইন্টারন্যাশনাল জুট ট্রেডার্স।
পাটজাত দ্রব্য থেকে স্বর্ণপদক পাচ্ছে জনতা জুট মিলস এবং রৌপ্যপদক পাচ্ছে আকিজ জুট মিলস। চামড়াজাত পণ্য থেকে স্বর্ণপদক পাচ্ছে পিকার্ড বাংলাদেশ এবং রৌপ্যপদক পাচ্ছে এবিসি ফুটওয়্যার।
ফুটওয়্যার থেকে স্বর্ণপদক পাচ্ছে বে-ফুটওয়্যার, রৌপ্য পদক পাচ্ছে এডিসন ফুটওয়্যার এবং এফবি ফুটওয়্যার পাচ্ছে ব্রোঞ্জ পদক।
কৃষিপণ্য থেকে স্বর্ণপদক পাচ্ছে ইনডিগো করপোরেশন, রৌপ্যপদক পাচ্ছে মনসুর জেনারেল ট্রেডিং এবং ব্রোঞ্জ পদক পাচ্ছে সিএসএস ইন্টারন্যাশনাল।
কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ থেকে স্বর্ণপদক পাচ্ছে হবিগঞ্জ অ্যাগ্রো, রৌপ্যপদক পাচ্ছে প্রাণ অ্যাগ্রো এবং ব্রোঞ্জ পদক পাচ্ছে প্রাণ ফুডস লিমিটেড।
হস্তশিল্পজাত পণ্য খাত থেকে স্বর্ণপদক পাচ্ছে কারুপণ্য রংপুর, রৌপ্যপদক পাচ্ছে বিডি ক্রিয়েশন এবং ক্ল্যাসিকস হ্যান্ডমেড প্রোডাক্টস পাচ্ছে ব্রোঞ্জ পদক।
মেলামাইন খাত থেকে স্বর্ণপদক পাচ্ছে ডিউরেবল প্লাস্টিক, প্লাস্টিক পণ্য থেকে স্বর্ণপদক পাচ্ছে অলপ্লাস্ট, রৌপ্যপদক পেয়েছে আকিজ বায়াক্স ফিল্মস এবং ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছে বঙ্গ প্লাস্টিক ইন্টারন্যাশনাল।
সিরামিকের সামগ্রী খাত থেকে স্বর্ণ পদক পাচ্ছে শাইনপুকুর সিরামিকস, রৌপ্য পদক পাচ্ছে আর্টিসান সিরামিকস এবং ব্রোঞ্জ পদক পাচ্ছে প্রতীক সিরামিকস।
হালকা প্রকৌশল খাত থেকে স্বর্ণপদক পাচ্ছে এমঅ্যান্ডইউ সাইকেলস, রৌপ্যপদক পাচ্ছে মেঘনা বাংলাদেশ এবং ব্রোঞ্জ পদক পাচ্ছে রংপুর মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ।
ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক খাতে স্বর্ণপদক পাচ্ছে ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ এবং রৌপ্যপদক পাচ্ছে বিআরবি কেব্ল ইন্ডাস্ট্রিজ।
অন্যান্য শিল্পজাত পণ্য খাত থেকে স্বর্ণপদক পাচ্ছে মেরিন সেফটি সিস্টেম, রৌপ্যপদক পাচ্ছে মেসার্স এশিয়া মেটাল মেরিন সার্ভিস এবং ব্রোঞ্জ পদক পাচ্ছে তাসনিম কেব্লস।
ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য খাত থেকে স্বর্ণপদক পাচ্ছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যাল, রৌপ্যপদক পাচ্ছে ইনসেপটা ফার্মা এবং র স্কয়ার ফার্মা পাচ্ছে ব্রোঞ্জ পদক।
কম্পিউটার সফটওয়্যার থেকে স্বর্ণপদক পাচ্ছে সার্ভিস ইঞ্জিন লিমিটেড এবং গোল্ডেন হারভেস্ট ইনফোটেক পাচ্ছে রৌপ্যপদক।
ইপিজেডভুক্ত শতভাগ বাংলাদেশি মালিকানাধীন তৈরি পোশাক শিল্প (নিট ও ওভেন) থেকে স্বর্ণপদক পাচ্ছে ইউনিভার্সেল জিনস, রৌপ্যপদক পাচ্ছে প্যাসিফিক জিনস এবং ব্রোঞ্জ পদক পাচ্ছে শামা ডেনিমস।
ইপিজেডভুক্ত শতভাগ বাংলাদেশি মালিকানাধীন অন্যান্য পণ্য ও সেবা খাত থেকে স্বর্ণপদক পাচ্ছে স্টার প্যাকেজিং অ্যান্ড অ্যাকসেসরিজ, রৌপ্য পদক পাচ্ছে পদ্মা স্পিনিং অ্যান্ড কম্পোজিট এবং ব্রোঞ্জ পদক পাচ্ছে ফারদিন অ্যাকসেসরিজ।
প্যাকেজিং ও অ্যাকসেসরিজ খাত থেকে স্বর্ণপদক পাচ্ছে এমঅ্যান্ডইউ প্যাকেজিং, রৌপ্যপদক পাচ্ছে মনট্রিমস লিমিটেড ও ব্রোঞ্জ পদক পাচ্ছে মেসার্স ইউনিগ্লোরি পেপার অ্যান্ড প্যাকেজিং।
অন্যান্য প্রাথমিক পণ্য থেকে স্বর্ণপদক পাচ্ছে হেয়ার স্টাইল ফ্যাক্টরি, রৌপ্যপদক পাচ্ছে রায় ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল এবং ব্রোঞ্জ পদক পাচ্ছে ইকো ফ্রেশ ইন্টারন্যাশনাল।
সেবা খাত থেকে স্বর্ণপদক পাচ্ছে মেসার্স এক্সপো ফ্রেইট লিমিটেড ও রৌপ্যপদক পাচ্ছে মীর টেলিকম লিমিটেড।
নারী উদ্যোক্তা বা রপ্তানিকারকদের জন্য সংরক্ষিত খাত থেকে স্বর্ণপদক পাচ্ছে পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস, রৌপ্যপদক পাচ্ছে বি-কন নিটওয়্যার ও ব্রোঞ্জ পদক পাচ্ছে ইব্রাহিম নিট গার্মেন্টস।

অর্থনীতি
হালাল পণ্যের বাজার বিকাশে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে: শিল্প সচিব

শিল্প মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) হালাল পণ্যের বাজার বিকাশে সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন শিল্প সচিব মো. ওবায়দুর রহমান।
শনিবার (৫ জুলাই) বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) আয়োজিত “হালাল পণ্যের বাজার, হালাল পণ্য উৎপাদনে অনুসরণীয় পদ্ধতি এবং হালাল সার্টিফিকেট সংগ্রহ পদ্ধতি” বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি এ কথা বলেন। বিসিআই বোর্ডরুমে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
বিসিআই এর সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ)-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন (বিসিসি) এর সাবেক পরিচালক মো. খালেদ আবু নাছের, হালাল সার্টিফিকেশন, বিএসটিআই এর উপ-পরিচালক (সিএম) এস এম আবু সাঈদ, এবং বিএসটিআইয়ের সিএম উইং সহকারী পরিচালক (সিএম) মোছা. রেবেকা সুলতানা। কর্মশালাটি পরিচালনা করেন বিসিআই এর সেক্রেটারি জেনারেল ড. মো. হেলাল উদ্দিন। এতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সেক্টরের ২২ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।
শিল্প সচিব মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, হালাল পণ্যের বাজার বিশ্বব্যাপী দ্রুত বর্ধনশীল একটি খাত। শুধু মুসলিম নয়, অমুসলিম ভোক্তারাও স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তার কারণে হালাল পণ্যের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এটি শুধু খাদ্য নয়, বরং প্রসাধনী, ওষুধ, পোশাক, পর্যটনসহ বহু খাতে বিস্তৃত। বিশ্বে বৃহত্তম হালাল ভোক্তা দেশগুলো হলো ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, পাকিস্তান, তুরস্ক। ইউরোপেও এর চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। হালাল পণ্যের বৃহত্তম রপ্তানিকারক দেশ হচ্ছে ব্রাজিল, অস্ট্রেলিয়া, থাইল্যান্ড।
তিনি আরও বলেন, মুসলিম প্রধান বাংলাদেশের হালাল পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে একটি ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশ এই বাজারে বিশাল সম্ভাবনা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। শুধুমাত্র পরিকল্পিত উদ্যোগ, মানসম্পন্ন উৎপাদন ও সঠিক বিপণনের মাধ্যমে আমরা এই বিশ্ববাজারে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান নিতে পারি। হালাল পণ্য হতে পারে বাংলাদেশের পরবর্তী রপ্তানিযোগ্য সোনালী খাত।
সভাপতির বক্তব্যে আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) বলেন, বিসিআই নিয়মিতভাবে দেশের শিল্পায়ন, বৈদেশিক বাণিজ্য এবং অন্যান্য শিল্প ও ব্যবসা বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ আইন ও নীতিমালা বিষয়ে ওরিয়েন্টেশন/প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজন করে আসছে, আর তারই ধারাবাহিকতায় হালাল পণ্য নিয়ে আজকের এই কর্মশালা। বর্তমান প্রেক্ষাপটে হালাল পণ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এখন আর হালাল পণ্য খাদ্য পণ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; আমাদের নিত্য ব্যবহার্য সব পণ্য হালাল হতে পারে যেমন, পোশাক, কলম, চশমা ইত্যাদি।
তিনি উল্লেখ করেন, হালাল পণ্যের চাহিদা বিশ্বে প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেখানে তৈরি পোশাকের বিশ্ব বাজার ১.৮ ট্রিলিয়ন ডলার, সেখানে হালাল পণ্যের বাজার ৩.৩ ট্রিলিয়ন ডলার, যা প্রতি বছর ১০ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ হালাল পণ্য রপ্তানি করছে মাত্র ৮৪৩.০৩ মিলিয়ন ডলার, যার বেশিরভাগই কৃষিভিত্তিক পণ্য। তিনি বলেন, “আমরা দেখতে পাচ্ছি আমাদের একটা বড় সম্ভাবনা রয়েছে হালাল পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে, আমাদের সেটা কাজে লাগানোর জন্য সকলে মিলে কাজ করতে হবে।”
অর্থনীতি
সঞ্চয়পত্রের মুনাফা বাড়ালে কেউ ব্যাংকে টাকা রাখবে না: অর্থ উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, সঞ্চয়পত্রের মুনাফা হার বাড়িয়ে দিলে সবাই সঞ্চয়পত্র কিনবে, ব্যাংকে টাকা রাখবে না। ব্যাংকেও তো তারল্যের ব্যাপার আছে। ব্যালেন্স করে দেখতে হবে। সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে দিলে ব্যাংক কোত্থেকে টাকা পাবে?
শনিবার (৫ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, খারাপ ব্যাংকগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংক পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে। ইসলামী ব্যাংক এর একটি উদাহরণ। এ ব্যাংকে আস্থা ফিরে আসছে। অন্য ব্যাংকগুলোর জন্য ব্যাংক রেজুলেশন অ্যাক্ট করা হয়েছে। এটার প্রথম শর্ত হলো যারা ব্যাংকে টাকা জমা দিয়েছে, তাদের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। কারও টাকা মার যাবে না। একটু সময় লাগতে পারবে না। কারণ টাকা নিয়ে চলে গেছে অনেকে। পৃথিবীর কোনো দেশে এরকম ঘটনা ঘটেনি।
এনবিআরে চলমান অস্থিরতা প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সমস্যা সমাধানে তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। আলোচনার মাধ্যমে যা যা করা লাগবে আমরা করবো। পাঁচ সদস্যের একটি শক্তিশালী কমিটিও করে দেওয়া হয়েছে।
এসময় উপদেষ্টার সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম, নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজীব চৌধুরী, নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিয়াস বসাক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কাফি
অর্থনীতি
চাল-সবজির বাজার চড়া, কমেছে ডিম-মুরগির দাম

কোরবানির ঈদের পর থেকে বেড়েই চলেছে চালের দাম। এরপর সবজির দামও বেড়েছে গেলো সপ্তাহ থেকে। সব মিলিয়ে চড়া দামে চাল আর সবজি কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। এদিকে, মুরগি ও ডিমের বাজারদর কিছুটা কম। এতে ক্রেতারা স্বস্তিতে থাকলেও খামারিদের জন্য লোকসান হচ্ছে।
শুক্রবার (৪ জুলাই) রাজধানীর মালিবাগ, শান্তিনগর ও সেগুনবাগিচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দেশের প্রত্যন্ত এলাকার মোকামগুলোতেই চালের দাম বেড়েছে। সেখানে চালকল মালিকরা ঈদের পর কারবার চাঙা হওয়ার সঙ্গে দাম বাড়িয়েছেন, যে কারণে চালের দাম বেশি এখন। ঈদের পর প্রতি বস্তা চালের দাম সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
যে কারণে ঈদের আগের চেয়ে এখন প্রতিকেজি চাল মানভেদে ২ থেকে ৮ টাকা টাকা বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। এখন খুচরায় প্রতি কেজি মোটা চাল (বিআর-২৮, পারিজা) মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬৫ টাকা দরে। সরু চালের মধ্যে জিরাশাইলের কেজি ৭৪ থেকে ৮০ টাকা এবং মিনিকেট ৭৬ থেকে ৮৪ টাকা। কাটারিভোগ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৬ টাকা কেজিতে।
মালিবাগের চাল বিক্রেতা আল্লাহর দান স্টোরের আবুল হোসেন বলেন, নাজিরশাইল ছাড়া পাইজাম, বিআর-২৮, মিনিকেটের দাম কেজিপ্রতি ৮ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আগে ৬৮ টাকা কেজি দরে পাইকারিতে যে মিনিকেট চাল কিনতাম, গতকাল কিনেছি ৭৬ টাকা কেজি দরে।
এদিকে, ছোট বাজারে ও পাড়ার মুদি দোকানে দাম আরেকটু বেশি। রামপুরা বাজারের চাল বিক্রেতা জুবায়ের আলী বলেন, ঈদের পর থেকে দোকান খুলে যে চালই অর্ডার দিচ্ছি, তারই দাম বস্তাপ্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেশি। দিনাজপুর, নওগাঁ, কুষ্টিয়া সব মোকামে চালের দাম বাড়ছে।
ঢাকার বাজারে ঈদের পর থেকে নিম্নমুখী ছিল মুরগির দাম। কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সোনালি মুরগির দাম কেজিপ্রতি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
অন্যদিকে প্রতি ডজন ডিমের দাম নেমেছে ১২০ টাকায়। বড় বড় বাজারে কিনলে ১১৫ টাকায়ও কেনা যাচ্ছে। তবে এ দাম ডিম উৎপাদনকারীর জন্য লোকসানের বলে জানিয়েছেন খুচরা বিক্রেতারা। বিপুল হোসেন নামের একজন বিক্রেতা বলেন, অন্তত ১৪০ টাকা ডজন ডিমের দাম হলে খামারিদের কিছু লাভ হয়, এবার দাম খুব কমে তাদের লোকসান হচ্ছে।
এদিকে এরমধ্যে মুদি পণ্যগুলো দাম তেমন হেরফের হয়নি। তেল, চিনি, ডাল, আটা, ময়দা, সুজি আগের দামে কেনা যাচ্ছে। কম দামে কেনা যাচ্ছে পেঁয়াজ, আলু, আদা, রসুনসহ অন্য নিত্যপণ্যও।
তবে বেড়েছে প্রায় অন্যান্য সব ধরনের সবজির দাম। সেগুনবাগিচায় সবজি বিক্রেতা তাকদির হোসেন বলেন, প্রায় সব ধরনের সবজির দাম গত সপ্তাহের চেয়ে ১০ থেকে ২০ টাকা কেজিপ্রতি বেড়েছে।
কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এখন বরবটি, কাকরোল, উস্তা কেজিপ্রতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পেঁপে, পটোল, ঢ্যাঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। আর ঝিঙা, চিচিঙার কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে চাইছেন বিক্রেতারা। তবে বড় বাজার, আবার ভ্রাম্যমাণ দোকানে দাম কিছুটা কম।
অর্থনীতি
বিকডার নতুন সভাপতি কেডিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান খলিলুর

বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপোস অ্যাসোসিয়েশনের (বিকডা) নতুন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন কেডিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান। বিকডার সাধারণ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আগে তিনি সংগঠনের সহ-সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
খলিলুর রহমান দেশের অন্যতম বৃহৎ বেসরকারি ডিপো কেডিএস লজিস্টিকস লিমিটেডের চেয়ারম্যান এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
বুধবার (৩ জুলাই) বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিকডার মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার বিপ্লব। তিনি বলেন, সংগঠনের সাধারণ সভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের উপস্থিতিতেই খলিলুর রহমান সভাপতির দায়িত্ব নেন।
বিকডা সূত্রে জানা যায়, বিকডার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন নুরুল কাইয়ুম খান। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি গত ১৫ জুন পদত্যাগ করেন। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই টানা ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি বিকডার নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। এছাড়া বিকডার পূর্ববর্তী সংগঠন প্রাইভেট ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো-ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (পিকডা) সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
অর্থনীতি
আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ৩৫.৩১ শতাংশ ঋণই এখন খেলাপি

ব্যাংক–বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দুরবস্থা কাটছে না। উপরন্তু দিন দিন খেলাপি ঋণ বাড়ছে।বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য বলছে, ২০২৫ সালের মার্চ শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিতরণ করা ঋণের ৩৫ দশমিক ৩১ শতাংশই খেলাপি হয়ে গেছে। টাকার অঙ্কে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ২৭ হাজার ১৮৯ কোটি টাকা, যা তিন মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ২ হাজার ১০০ কোটি এবং বছরে বেড়েছে ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
খাত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘদিনের অবলোপন, পুনঃতফসিল আর রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে খেলাপির প্রকৃত চিত্র আড়াল রাখা হয়েছিল। তবে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর নজরদারিতে চেপে রাখা খেলাপি ঋণ এখন প্রকাশ পাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মার্চ শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ঋণের মোট স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৭৬ হাজার ৯৮৭ কোটি টাকায়। এর মধ্যে ২৭ হাজার ১৮৯ কোটি টাকা ঋণ খেলাপি হয়েছে, যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ৩৫ দশমিক ৩১ শতাংশ।
এর আগে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে এই খাতের ঋণ স্থিতি ছিল ৭৫ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা, যার মধ্যে খেলাপি ছিল ২৫ হাজার ৮৯ কোটি টাকা বা ৩৩ দশমিক ২৫ শতাংশ। অর্থাৎ তিন মাসের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ২ হাজার ১০০ কোটি টাকা।
গত বছরের একই সময়ের তুলনায়ও ঋণ খেলাপি উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ২০২৪ সালের মার্চে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ঋণের স্থিতি ছিল ৭৪ হাজার ৩৮৯ কোটি টাকা, যার মধ্যে খেলাপি ছিল ২৩ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
পিপলস লিজিং, বিআইএফসি, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, ফারইস্ট ফাইন্যান্সসহ একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে খেলাপির হার সর্বাধিক। ফলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক তারল্য ও ভাবমূর্তি সংকটে পড়েছে।
এদিকে মার্চ পর্যন্ত দেশের ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণও বেড়ে ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা বিতরণকৃত ঋণের প্রায় ২৪ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আসল পরিস্থিতি সামলাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের এখন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া উপায় নেই।