অর্থনীতি
এনজিওর মাধ্যমে ঋণ বিতরণ বাড়ছে

দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর একটি বৃহৎ অংশ প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ সুবিধা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত। যাদের একমাত্র ভরসা বেসরকারি নানা সংস্থা। এনজিও পরিচালিত ক্ষুদ্রঋণ ও বিভিন্ন বেসরকারি আর্থিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তারা ঋণ পেয়ে থাকেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত এপ্রিলের শেষ প্রান্তিক পর্যায়ে সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ বিতরণ করেছে ক্ষুদ্রঋণ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান। যা তার আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে শূন্য দশমিক ১৯ শতাংশ বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল শেষে গ্রামীণ ব্যাংকসহ ১১টি ক্ষুদ্রঋণ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান মোট ১২ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। যা ২০২৩ সালের একই সময়ে (এপ্রিল-২০২৩) এসব প্রতিষ্ঠানের বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। সে হিসাবে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। বিতরণ করা ঋণের বেশিরভাগই দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে। একই সময়ে এসব প্রতিষ্ঠানের ঋণ আদায়ের পরিমাণ প্রায় ১৫ হাজার ৩০ কোটি টাকা।
বর্তমানে ক্ষুদ্রঋণ ও বিভিন্ন বেসরকারি আর্থিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের ৩ কোটি ৪১ লাখ গ্রাহক ১৩ হাজার ১৭৮টি শাখার মাধ্যমে ঋণ সেবা নিয়ে থাকেন। চলতি বছরের এপ্রিল শেষে সবচেয়ে বেশি ঋণ বিতরণ করেছে গ্রামীণ ব্যাংক, ব্র্যাক এবং এএসএ (আশা)। এই তিন প্রতিষ্ঠান মোট বিতরণ করা ঋণের ৭৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ বিতরণ করেছে।
দেশের মধ্যে কার্যক্রম চালানো শীর্ষ ১১ এনজিওর ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ১৭ হাজার ৩২৭ কোটি টাকা। যাদের বকেয়া ঋণের পরিমাণ ৬ হাজার ১২ কোটি টাকা। গত এপ্রিলে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা বিতরণ করেছে এনজিও প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক। একই সময়ে ব্র্যাকের ঋণ আদায়ের পরিমাণ ৬ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা। ব্র্যাকের বর্তমাণ ঋণের স্থিতি ৪১ হাজার ৩১৪ কোটি এবং বকেয়া ঋণ ১ হাজার ৮৪৩ কোটি টাকা।
এনজিও প্রতিষ্ঠান আশা গত এপ্রিলে ঋণ বিতরণ করেছে ৩ হাজার ৩৮২ কোটি টাকা। আলোচিত সময়ে প্রতিষ্ঠানটির আদায়কৃত ঋণের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৮৬২ কোটি টাকা, বকেয়া ঋণের পরিমাণ ২ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা। আশার ঋণের স্থিতির পরিমাণ ৩০ হাজার ৬১৮ কোটি টাকা। গ্রামীণ ব্যাংক এপ্রিলে বিতরণ করেছে ১ হাজার ৫১৭ কোটি টাকা। তাদের ঋণ আদায়ের পরিমাণ ১ হাজার ৫০৫ কোটি, বকেয়া ঋণ ৪২১ কোটি টাকা। গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণের স্থিতি ১৬ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা।
এছাড়া আলোচিত সময়ে ব্যুরো বাংলাদেশ ৮৬১ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। তাদের আদায়ের পরিমাণ ১ হাজার ১১১ কোটি, বকেয়া ঋণের পরিমাণ ৩৪১ কোটি টাকা এবং ঋণের স্থিতি ১০ হাজার ৫৮ কোটি টাকা। টিএমএসএস’র ঋণ বিতরণ ছিল ৬৯৬ কোটি, আদায় ৬৮৩ কোটি টাকা। এনজিও প্রতিষ্ঠান টিএমএসএস’র বকেয়া ঋণের পরিমাণ ৩৬৪ কোটি টাকা এবং বর্তমান ঋণের স্থিতি ৫ হাজার ৮১০ কোটি টাকা।

অর্থনীতি
এনবিআরের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আজ বৈঠক হবে না: অর্থ উপদেষ্টা

এনবিআরের আন্দোলনকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে আজ রোববার কোনো বৈঠক হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, কর্মকর্তারা শাটডাউন কর্মসূচি পালন করতে চাইলে করুক।
রোববার (২৯ জুন) দুপুরে অর্থ মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আজ এনবিআরের কর্মকর্তাদের আন্দোলনের বিষয় নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হবে।
আন্দোলনকারী এনবিআর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক না করার বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। আগামী ১ জুলাই তাঁদের সঙ্গে যে বৈঠক হওয়ার কথা, তা–ও হবে কি না, সে সিদ্ধান্ত পরে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা।
এদিকে আজ বেলা দুইটার দিকে এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, আজ বিকেল চারটায় অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করবেন এনবিআরের আন্দোলনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। অর্থ উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই বৈঠক হবে। এ জন্য আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট ক্যাডারের ২০ সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধি দলের সদস্য চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে নেতৃত্ব দেবেন এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার।
সব পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে রাজস্ব খাতে যৌক্তিক সংস্কারে টানা কয়েক দিন ধরে আন্দোলন করছেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গতকালের মতো আজ রোববারও কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি পালন করছেন তাঁরা। এনবিআর সংস্কার পরিষদের ব্যানারে এই আন্দোলন চলছে।
কাফি
অর্থনীতি
আরও কমল সোনার দাম

পাঁচ দিনের ব্যবধানে ফের দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানো হয়েছে। সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬২৪ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার ২৩৬ টাকা। স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে এ দাম কমানো হয়েছে।
রোববার (২৯ জুন) থেকে নতুন দাম কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
শনিবার (২৮ জুন) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে এই দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তীতে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে গত সাড়ে চার মাসে ২৪ বার স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়েছে। গত ০৫ জুন, ২২, ১৮, ১৫, ০৭, ০৯ মে, ২৩, ২২, ২০, ১৭, ১৩, ১১ এপ্রিল, ২৮, ২৬, ১৯, ১৭, ০৫ মার্চ ২, ৬, ১১, ১৮ ও ২১ ফেব্রুয়ারি এবং ১৬, ২৩ ও ৩০ জানুয়ারি স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়। তবে দেশের ইতিহাসে গত ২৪ এপ্রিল সব চেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৫ হাজার ৩৪২ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৭২ হাজার ৫৪৫ টাকা। যা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন উচ্চতায় উঠে স্বর্ণের দাম। এছাড়া গত ২৫ জুন, ১৬, ১৩ ১১, ০৯, ০৩ মে, ২৪, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ০২ ও ৯ মার্চ এবং ০৮, ১৪, ২৩ এপ্রিল স্বর্ণের দাম কমানো হয়।
নতুন মূল্য অনুযায়ী, সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬২৪ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার ২৩৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৪০৬ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৬২ হাজার ৫৯৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ১৩৫ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৩৯ হাজার ২৯১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৮৩১ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ১৫ হাজার ১৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এদিকে স্বর্ণের দাম কমানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৮৪৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার ২ হাজার ৭১৮ টাকা। এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৩৩৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার ১ হাজার ৭৫০ টাকা।
এর আগে গত ২৫ জুন সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৬৬৭ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৭২ হাজার ৮৬০ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৫৯৮ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৯৯৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৩৭৬ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৪১ হাজার ৪২৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ১৬৭ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ১৭ হাজার ১ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
গত ১৫ জুন সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ১৯৩ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৭৪ হাজার ৫২৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ১০০ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৮০৮ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৪২ হাজার ৮০২ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৫২৮ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৮ হাজার ১৬৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
গত ৫ জুন সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৪১৪ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৭২ হাজার ৩৩৫ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ২৯৮ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৪৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৯৭১ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৪০ হাজার ৯৯৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৬৯১ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৬ হাজার ৬৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এর আগে গত ২২ মে সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৮২৩ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৯২১ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬৯৪ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৬২ হাজার ১৯৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৩০৯ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৩৯ হাজার ২৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৯৭২ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৪ হাজার ৯৪৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
অর্থনীতি
এনবিআর আন্দোলনে স্থবির ব্যবসা-বাণিজ্য: দ্রুত হস্তক্ষেপের দাবি ব্যবসায়ীদের

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের অপসারণ এবং রাজস্ব খাতের সংস্কারের দাবিতে কর্মকর্তাদের চলমান আন্দোলনে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে এসেছে। এ অবস্থায় শীর্ষ ব্যবসায়ী ও রপ্তানিকারক সংগঠনগুলো দ্রুত এই সংকট নিরসনে সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করেছে।
শনিবার (২৮ জুন) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সংগঠনগুলোর মধ্যে ছিল বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ), মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই), বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ), বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিকেএমইএ), ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) এবং বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন (বিইএফ)।
বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান জানান, এনবিআরের অচলাবস্থায় দৈনিক আড়াই হাজার থেকে ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ক্ষতির মুখে পড়ছে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, তুলনামূলক ছোট কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী বলেন, দেশের আমদানি-রপ্তানি ব্যবসা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। পোর্টে ও বিমানবন্দরে আমদানি ও রপ্তানিযোগ্য পণ্য পড়ে থাকায় বৃষ্টি-রোদে নষ্ট হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে ব্যবসায়ী নেতারা কোনো রকম শর্ত ছাড়া আন্দোলনকারীদের কাজে যোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এবং সংকট কাটাতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়কে এগিয়ে আসার তাগিদ দিয়েছেন।
এমসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি নাসিম মঞ্জুর বলেন, “কোনো সমস্যা টেবিলে বসে সমাধান করা যায় না— সেটা আমরা বিশ্বাস করি না। বসতে হবে, কথা শুনতে হবে, কিছু ছাড় দিতে হবে। কিন্তু এনবিআরের সংস্কার হতে হবে।” তবে, দাবির প্রেক্ষিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে অপসারণের বিপক্ষে অবস্থানের কথা জানানো হয় এই যৌথ সংবাদ সম্মেলন থেকে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আইসিসিবি সভাপতি মাহবুবুর রহমান, বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ, এলএফএমইএবি সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, মেট্রো চেম্বার সভাপতি কামরান টি রহমান, বিসিএমইএ সভাপতি মঈনুল ইসলাম, বিকেএমইএ নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, ট্রান্সকম লিমিটেডের গ্রুপ সিইও সিমিন রহমান এবং ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান।
অর্থনীতি
ব্যাংকিং খাত বর্তমানে সংকটময় মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে: ডিসিসিআই সভাপতি

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত বর্তমানে এক সংকটময় মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে। তিনি বলেন, ব্যাংক খাতের খেলাপির কারণে আর্থিক স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগের ওপর বড় ঝুঁকি তৈরি করছে। এর ফলে ঋণপ্রাপ্তি কঠিন হয়ে গেছে এবং এসএমই খাতসহ উৎপাদনমুখী ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়ছেন বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকিন আহমেদ।
শনিবার (২৮ জুন) রাজধানীর ডিসিসিআই অডিটরিয়ামে ‘বর্তমান ব্যাংকিং খাতের চ্যালেঞ্জ: ঋণগ্রহীতাদের দৃষ্টিকোণ’ শীর্ষক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক (মুদ্রানীতি বিভাগ) ড. মো. এজাজুল ইসলাম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রিভারস্টোন ক্যাপিটাল লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী ও ডিসিসিআই-এর সাবেক সভাপতি মো. আশরাফ আহমেদ।
তাসকিন আহমেদ বলেন, দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ এবছরের জুন পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। এটি মোট ঋণের ২৪ শতাংশের বেশি। যা আর্থিক স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগের ওপর বড় ঝুঁকি তৈরি করছে। এর ফলে ঋণপ্রাপ্তি কঠিন হয়ে গেছে, এসএমই খাতসহ উৎপাদনমুখী ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়ছেন এবং বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ৭.৫৭ শতাংশে নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপরে থাকায় নীতি সুদহার ও তারল্য সংকুচিত হয়েছে, ফলে মূলধনের খরচ বেড়েছে। এতে করে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
এ অবস্থায় তিনি কয়েকটি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: ঋণগ্রহীতাদের পুনর্বাসনমূলক উদ্যোগ গ্রহণ, উৎপাদনমুখী খাতে (যেমন এসএমই, কৃষি, সবুজ শিল্প) সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা, সেক্টরভিত্তিক প্রণোদনা এবং গ্যারান্টি স্কিম, ঋণের শর্ত শিথিল করে দীর্ঘ মেয়াদে পরিশোধের সুযোগ দেওয়া, ঋণ শ্রেণিকরণ সময়সীমা ৬ মাস বাড়ানো এবং ইচ্ছাকৃত ও অনিচ্ছাকৃত খেলাপি আলাদা করে চিহ্নিত করা।
ঢাকা চেম্বার সভাপতি বলেন, ব্যাংকিং খাতের সংস্কার শুধু ঝুঁকির দিক থেকে নয়, ঋণগ্রহীতাদের কথাও মাথায় রেখে করতে হবে। নইলে বিনিয়োগ, উদ্ভাবন ও প্রতিযোগিতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
সেমিনারে বিভিন্ন খাতের বিশেষজ্ঞ, ব্যবসায়ী নেতা ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
কাফি
অর্থনীতি
এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে সতর্কতা

অনুমতি ছাড়া অনুপস্থিত, অফিস ত্যাগ কিংবা দেরিতে অফিসে উপস্থিত হলে সরকারি বিধি অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সতর্কতা জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। শনিবার (২৮ জুন) এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা আল আমিন শেখ সই করা এক সংবাদ বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এনবিআর দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং রাজস্ব আদায়ের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে মাঠপর্যায়ের দপ্তরে স্বাভাবিক সেবা বিঘ্নিত হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। চলমান এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সেবা প্রাপ্তিতে জনসাধারণ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকারি কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য বিধি অনুযায়ী কোনো কর্মকর্তা বিনা অনুমতিতে কর্মে অনুপস্থিত, দেরিতে উপস্থিত অথবা অননুমোদিতভাবে অফিস ত্যাগ করলে তা শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
সংবাদ বিবৃতিতে বলা হয়, অর্থ বছরের শেষ তিনটি কর্মদিবসে ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রপ্তানি এবং রাজস্ব আদায়ের কার্যক্রম সচল রাখতে কাস্টমস হাউস, কর কমিশনারেট, কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটসহ এনবিআরের অধীন সব দপ্তরের কমিশনারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে—তারা যেন তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন সব দপ্তরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করেন।
এছাড়া, অফিস চলাকালীন কোনো কর্মকর্তা জরুরি প্রয়োজনবশত অফিস ত্যাগ করলে দপ্তর প্রধানের অনুমতি গ্রহণ করে অফিস ত্যাগ রেজিস্টারে যথাযথ এন্ট্রি করতে হবে।
এনবিআর সতর্ক করে বলেছে, যদি কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী অনুমতি ছাড়া অনুপস্থিত থাকেন, অফিস ত্যাগ করেন কিংবা দেরিতে অফিসে উপস্থিত হন, তাহলে সরকারি বিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ নির্দেশনার মাধ্যমে এনবিআর দাপ্তরিক শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং জনগণকে নিরবচ্ছিন্ন সেবা প্রদান নিশ্চিত করতে চায় বলে জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ কর্তৃক ঘোষিত ২৮ জুন থেকে ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সকল দপ্তরে লাগাতার কমপ্লিট শাটডাউন এবং সারা দেশের ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তর থেকে এনবিআর অভিমুখে ‘শান্তিপূর্ণ মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি রয়েছে আজ।