জাতীয়
বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে চায় চীন: শি জিনপিং
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রায় অব্যাহত ভাবে সহযোগিতা করে যাবে। বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে চাই আমরা। আজ বুধবার স্থানীয় সময় বিকেলে বেইজিংয়ের ‘গ্রেট হল অব দ্য পিপল’এ সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে চীনের এ আগ্রহের কথা জানান শি জিনপিং।
পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রায়, উন্নয়ন অগ্রগতিতে চীন অব্যাহত ভাবে সহযোগিতা করে যাবে। বাংলাদেশকে অনুদান, সুদমুক্ত ঋণ, কম সুদে ঋণ এবং বাণিজ্যিক ঋণ; এই চার ক্ষেত্রে চীন সহযোগিতা করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এ বিষয়ে দুই দেশের টেকনিক্যাল কমিটি যৌথ ভাবে কাজ করবে। শীঘ্রই চীন থেকে টেকনিক্যাল কমিটি বাংলাদেশে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়।
গত কয়েক দশকে চীনের অভূতপূর্ব উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই উন্নয়ন আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।
পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু টানেলসহ বিভিন্ন আইকনিক স্থাপনা নির্মাণ, বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন সহযোগিতার জন্য চীনের প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ দেন শেখ হাসিনা। চীনের বিনিয়োগকারীদের জন্য চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ৮০০ একর জমি বরাদ্দ দেওয়ার কথা উল্লেখ করে সেখানে, ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং আইটি কলেজগুলোতে চীনের উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের আহ্বান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তারা বাংলাদেশ থেকে আরও পণ্য আমদানি করবেন।
আমসহ অন্যান্য পণ্য আমদানির বিষয়ে আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত করেন শি জিনপিং।
আগামী বছর বাংলাদেশ ও চীনের কুটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি। এটিকে সামনে রেখে দুই দেশের কৌশলগত সম্পর্ক, বিদ্যমান গভীর সম্পর্ককে দ্বিতীয় পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন শি জিনপিং।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গভীরতর করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। চীনের প্রেসিডেন্ট দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময়, জনগণের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগ বাড়ানোর কথাও বলেন।
আওয়ামী লীগ ও চীনের কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীরতর করার ওপর গুরুত্বারোপ করে শি জিনপিং বলেন, সুশাসনের জন্য ভালো দল দরকার। রোহিঙ্গা ইস্যুটি প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তোলার আগেই শি জিনপিং এ বিষয়ে কথা বলেন বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীনের রাষ্ট্রপতি বলেন, আমি জানি বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। এটি বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীন বাংলাদেশকে সর্বত সহায়তা করবে।
মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে শি জিনপিং বলেন, মিয়ানমার সরকার এবং প্রয়োজনে আরাকান আর্মির সঙ্গেও তারা যোগাযোগ করে এই সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে চীন। ওয়ান চায়না নীতির পক্ষে বাংলাদেশের অবস্থানের প্রশংসা করেন শি জিনপিং।
শি জিনপিং বলেন, কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে চীন হস্তক্ষেপ করে না। আমরাও চাই না কারো অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য কেউ হস্তক্ষেপ করুক।
আন্তর্জাতিক ফোরামে চীন ও বাংলাদেশ একসঙ্গে কাজ করবে জানিয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, আন্তর্জাতিক ফোরামে আমরা একসঙ্গে কাজ করবো এবং বিশ্ব শান্তি এবং সমৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ এবং চীন একসঙ্গে কাজ করবে।
ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান।
কাফি

জাতীয়
৫ আগস্ট সব পক্ষের উপস্থিতিতে জুলাই ঘোষণাপত্র: প্রেস উইং

আগামী ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সব পক্ষের উপস্থিতিতে জুলাই ঘোষণাপত্র জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই ঘোষণাপত্রের খসড়া চূড়ান্ত করেছে। আগামী ৫ আগস্ট বিকেল ৫টায় গণঅভ্যুত্থানের সব পক্ষের উপস্থিতিতে জুলাই ঘোষণাপত্র জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত অবিলম্বে জানানো হবে।
জাতীয়
যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত এলেন ৩৯ বাংলাদেশি

যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে অবস্থানের অভিযোগে দেশটি থেকে ৩৯ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (২ আগস্ট) সকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক বিমানে তারা ঢাকার শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান।
এর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার ও কল্যাণ অনুবিভাগের এক বার্তায় জানানো হয়, মার্কিন সামরিক বাহিনীর বিমানে করে ৬১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
তবে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) একটি সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্র থেকে চার্টার্ড ফ্লাইটে অন্তত ৩০ জন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। এই দফায় ফেরত আসার সংখ্যা প্রথমে ৬০ জনের কথা বলা হলেও পরে ৩০ জন ফেরত আসছেন।
গত জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে অবৈধ অভিবাসীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো শুরু করে ট্রাম্প প্রশাসন। ভারত, ব্রাজিলসহ অনেক দেশের নাগরিকদের হাতকড়া পরিয়ে ফেরত পাঠানো হয়। তবে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র থেকে যেসব বাংলাদেশি নাগরিককে ফেরত পাঠানো হয়েছে, তাদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করেছে সে দেশের কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশি নাগরিকের কাউকে হাতকড়া পরানো হয়নি। ফেরত পাঠানোর আগের বিভিন্ন স্তরের আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মানবিক আচরণের বিষয়ে জোর দেওয়া হয়। সে অনুরোধে সাড়াও দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই দফায়ও যারা আসছেন তাদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করা হবে। বিভিন্ন সময় আরও ১১৮ বাংলাদেশি নাগরিককে ফেরত পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র।
প্রসঙ্গত, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের মতো দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অবৈধ হয়ে ধরা পড়া বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের নিজ নিজ দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে প্রতি মাসে কিছু মানুষকে ফিরতে হচ্ছে ঢাকায়। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে শুক্রবার (১ আগস্ট) কিছু বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
জাতীয়
৫ আগস্টের মধ্যে ঘোষিত হবে জুলাই ঘোষণাপত্র: উপদেষ্টা মাহফুজ

জুলাই ঘোষণাপত্র এখন বাস্তবতা বলে উল্লেখ করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি বলেছেন, ৫ আগস্টের মধ্যে ঘোষিত হবে ঘোষণাপত্র।
শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টায় ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এসব কথা জানান মাহফুজ আলম।
তিনি লিখেছেন, জুলাই ঘোষণাপত্র এখন বাস্তবতা। ৫ আগস্টের মধ্যেই ঘোষিত হবে ঘোষণাপত্র। ঘোষণাপত্র ইস্যুকে গণআকাঙ্ক্ষায় বাঁচিয়ে রেখে এটা বাস্তবায়নের পথ সুগম করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়, যার মূল ম্যান্ডেট হলো রাষ্ট্রের বিভিন্ন কাঠামোগত সংস্কার এবং জনগণের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা। এই প্রেক্ষাপটে জুলাই ঘোষণাপত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দলিল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই ঘোষণাপত্রের খসড়া চূড়ান্ত করেছে। খসড়ার একটি কপি প্রধান তিনটি রাজনৈতিক দল বিএনপি, জামায়াত ও জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) পাঠানো হয়েছে তাদের মতামত দেওয়ার জন্য।
সরকারের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, আগস্টের ৫ তারিখের মধ্যে যে কোনো দিন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এটি প্রকাশ করবেন।
যেকোনও ধরনের বিতর্ক এড়াতে অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে প্রণীত, খসড়া ঘোষণাপত্রে ২৬ দফা রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে জুলাই অভ্যুত্থান হয়েছে। প্রথম খসড়ায় বলা হয়েছিল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে অভ্যুত্থান হয়েছে।
ঘোষণাপত্রে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতা আসার পর টানা তিন মেয়াদের ১৫ বছরের শাসনামলে বিএনপি, জামায়াতসহ বিরোধী দলগুলোর সংগ্রামকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, বিএনপির মতামতের ভিত্তিতে ৭৫-এর ৭ নভেম্বরের সিপাহী বিপ্লব, ১৯৭৯ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সরকারের করা সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
জাতীয়
বাণিজ্য উপদেষ্টা নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন: জ্বালানি উপদেষ্টা

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্টা শুল্ক কমানোর আলোচনায় বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আজ শুক্রবার এক পোস্টে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, দেশের অভ্যন্তরীণ পণ্যমূল্য স্থিতিশীলতা বজায় রাখা থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সফল শুল্ক আলোচনায় তিনি (বাণিজ্য উপদেষ্টা) নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন, সমালোচকদের হতাশ করে।
যুক্তরাষ্ট্র যেসব দেশ থেকে পণ্য আমদানি করে, সেসব দেশের ওপর গত ২ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক বা রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ আরোপ করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্বের ৫৭টি দেশের ওপর বিভিন্ন হারে বাড়তি পাল্টা শুল্ক বসানো হয়। তখন বাংলাদেশের পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক ছিল ৩৭ শতাংশ। তিন মাসের জন্য এ সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ৮ জুলাই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের জন্য পাল্টা শুল্ক হবে ৩৫ শতাংশ, যা কার্যকর হবে ১ আগস্ট থেকে।
যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের আরোপ করা পাল্টা শুল্ক কমাতে ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) কর্মকর্তাদের সঙ্গে চূড়ান্ত আলোচনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক নির্বাহী আদেশে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন। একই আদেশে দেশে আরও কয়েক ডজন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক বসান তিনি।
শুল্ক হার কমানোর ঘোষণার পর ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে তা জানান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। এর দুই ঘণ্টা পর বাণিজ্য উপদেষ্টাকে নিয়ে ইংরেজিতে আরেকটি পোস্ট দেন এই উপদেষ্টা। বাণিজ্য উপদেষ্টাকে নিয়ে তাঁর পোস্টটি তুলে ধরা হলো:
শেখ বশিরউদ্দীন—আমাদের অসাধারণ বাণিজ্য উপদেষ্টা
আমি প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে শেখ বশিরউদ্দীনসহ কয়েকজনের সঙ্গে দেখা করার দায়িত্ব পাই, সম্ভাব্য বাণিজ্য উপদেষ্টা পদে। ফোনে তাঁকে ধরি ভোলায়, তখন তিনি একটি ব্যবসায়িক সফরে ছিলেন। পরে আমরা দেখা করি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে, আমার অফিসে।
পূর্বপরিচয় না থাকলেও আমরা এক ঘণ্টা খোলামেলা কথা বলি। আমার অফিস থেকে যে নাশতা দেওয়া হয়েছিল, তিনি বিনয়ের সঙ্গে সেটি নেননি! তবে আমি তাঁর মধ্যে যে বিষয়গুলো সবচেয়ে বেশি পছন্দ করি, তা হলো দেশপ্রেম, যুক্তিহীন কোনো কিছু সহ্য না করার দৃঢ় মনোভাব, আর অনেক তথ্য একসঙ্গে গুছিয়ে বিশ্লেষণ করার অসাধারণ দক্ষতা। আমি আমার এই অনুভূতিগুলো প্রধান উপদেষ্টাকে জানাই।
আল্লাহর রহমতে, দেশ ও জাতির জন্যই বলা যায়, প্রধান উপদেষ্টা তাঁকে (শেখ বশিরউদ্দীন) দায়িত্ব দেন। আর তিনিও তা গ্রহণ করেন।
দেশের অভ্যন্তরীণ পণ্যমূল্য স্থিতিশীলতা বজায় রাখা থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সফল শুল্ক আলোচনায় তিনি (বাণিজ্য উপদেষ্টা) নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন, সমালোচকদের হতাশ করে।
আল্লাহ তাঁকে (বাণিজ্য উপদেষ্টা) হায়াতে তাইয়্যেবা দান করুন, যাতে তিনি দেশকে সেবা দিতে পারেন—হোক তা সরকারে বা বেসরকারি খাতে।
জাতীয়
মুরাদনগরে এক উপদেষ্টার ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টির অপচেষ্টা

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ অভিযোগ করেছেন, কুমিল্লার মুরাদনগরে একটি মহল ত্রাসের রাজত্ব কায়েমের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি দাবি করেন, এই পরিস্থিতির জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কিছু সদস্য এবং ক্ষমতাসীন দলের ঘনিষ্ঠ এক উপদেষ্টা দায়ী।
সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কায়কোবাদ বলেন, আমি একটি দলের রাজনীতি করি, তাই বিচারাধীন বিষয়ে মন্তব্য না করাই উচিত। তবে মুরাদনগরে যেসব ঘটনা ঘটছে, তা উদ্বেগজনক এবং এর পেছনে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, এই ঘটনার জন্যে আমি দায়ী করব পুলিশ প্রশাসনকে। কারণ তারা মুরাদনগরে গেছে আসিফ মাহমুদের তদবিরে। আসিফ মাহমুদ সাহেব উনাদেরকে তদবির করে নিয়ে গেছেন মুরাদনগরে।
কায়কোবাদ দাবি করেন, মুরাদনগরে প্রশাসনিক পদে রদবদল এনে কিছু লোকজনকে পুনরায় সক্রিয় করা হয়েছে, যারা আগে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। এসপি ও ওসি বদলির পর পরিস্থিতির নাটকীয় পরিবর্তন ঘটেছে। সেইসঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের ছত্রচ্ছায়ায় থাকা কিছু দুষ্কৃতিকারী আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে, যোগ করেন তিনি।
আসিফ মাহমুদ নামের ওই উপদেষ্টাকে ঘিরেই অভিযোগের তীর ছোড়েন কায়কোবাদ। তার ভাষায়, এই তরুণ উপদেষ্টা দলে যোগ না দিলেও দলের হয়ে কাজ করছেন এবং তার প্রভাবেই প্রশাসন পক্ষপাত দেখাচ্ছে। সরকারি সাহায্য বণ্টন থেকে শুরু করে এলাকায় সন্ত্রাস কায়েম—সবকিছুতেই তাদের হাত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মুরাদনগরে তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে—এটা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও বর্বরোচিত। অথচ মূল অভিযুক্তদের এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি, অথচ আমাদের ৭০-৮০ বছরের নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় জেলে পাঠানো হচ্ছে।
কায়কোবাদ তদন্তের দাবিতে বলেন, এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। সৎ ও সাহসী তদন্ত কর্মকর্তার অধীনে তদন্ত ছাড়া সত্য উন্মোচিত হবে না।
তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগে কিছু সন্ত্রাসী গ্রুপ আছে, যারা এখনো তৎপর। তারাই দলকে বিতর্কিত করেছে। সাধারণ আওয়ামী লীগ কর্মীরা ভিন্ন। কিন্তু এই সন্ত্রাসীদের উৎসাহ দেওয়ার ফলেই তারা আজ এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করছে।
নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে কায়কোবাদ বলেন, ৯১-৯৬ সালের মধ্যে আমাকে হত্যাচেষ্টা করা হয়েছিল। এখন সেই চক্রই আবার সক্রিয় হয়ে আমাকে দমন করার চেষ্টা করছে। কিন্তু আল্লাহর রহমতে আমি এখনও রাজনীতি করছি এবং জনগণের পাশে আছি।
শেষে তিনি বলেন,এই অন্যায় ও অবিচারের বিচার একদিন হবেই। যারা নিরপরাধ নেতাকর্মীদের জেলখানায় পাঠিয়েছে, তাদের বিচার হবে এই দুনিয়াতেই অথবা হাশরের ময়দানে। আল্লাহর উপর আমার সম্পূর্ণ ভরসা।