অর্থনীতি
রপ্তানি হিসাব নিয়ে ব্যাখ্যা দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক

দুই অর্থবছরের ২০ মাসের রপ্তানি হিসাব থেকে ২৩ বিলিয়ন ডলার উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ওপর দায় চাপিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সরকারকে দেওয়া এক চিঠিতে এই তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বড় এই ঘাটতির ফলে দেশের বিভিন্ন আর্থিক পরিসংখ্যান ওলট–পালট হয়ে পড়েছে। রপ্তানি কমে যাওয়ায় চলতি হিসাব উদ্বৃত্ত থেকে ঘাটতিতে পড়েছে। আর রপ্তানির বিপরীতে প্রত্যাবাসিত অর্থ আসার লক্ষ্য কমে যাওয়ায় আর্থিক হিসাব ঘাটতি থেকে উদ্বৃত্তে ফিরে গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই চিঠি সরকারের অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
ওই চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, এক সভায় এনবিআরের প্রতিনিধি সরবরাহকৃত রপ্তানির ডেটাসেটে একাধিকবার রপ্তানির হিসাব থাকার বিষয়টি ইতিমধ্যে তাদের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক রপ্তানি আয়ের তথ্য–উপাত্ত তফসিলি ব্যাংকগুলোর শাখা থেকে সংগ্রহ করে থাকে। ফলে সেই তথ্য–উপাত্তের সঙ্গে প্রকৃত রপ্তানির তেমন পার্থক্য থাকে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংগ্রহ এবং ইপিবি কর্তৃক প্রকাশিত রপ্তানিসংক্রান্ত তথ্যে পার্থক্য থাকার কারণগুলোকে চিহ্নিত করে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি বলেছে, একই রপ্তানি তথ্য এবং পণ্যের এইচএস কোড একাধিকবার ইনপুট দেওয়া হয়েছে। পণ্যের কাটিং, মেকিং এবং ট্রিমিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু তৈরির মাশুল পাওয়ার কথা, কিন্তু ইপিবি কাপড়সহ সব যন্ত্রাংশের হিসাব করেছে। ইপিবি অনেক সময় নমুনা পণ্যের দামও ইনপুট দিয়েছে, অথচ নমুনা পণ্যের কোনো দাম হিসাবে আসার কথা নয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল থেকে দেশের অভ্যন্তরে বিক্রয়কে রপ্তানি হিসবে এবং এসব পণ্য আবার বিদেশে রপ্তানির সময় হিসাব করা হয়েছে। সাধারণত পণ্য রপ্তানির সময় রপ্তানির প্রাথমিক ঋণপত্র মূল্য থেকে কিছুটা কম হয়ে থাকে, যা ইপিবি সমন্বয় করে না। এ ছাড়া স্টকলট, ডিসকাউন্ট এবং কমিশনের কারণে ক্ষয়ক্ষতি ইপিবি কর্তৃক সমন্বয় করা হয় না।
এই চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের সব ব্যাংক, ইপিবি, এনবিআরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে আমদানি ব্যয়, রপ্তানি আয়, অদৃশ্য ব্যয়, অদৃশ্য আয়, রেমিট্যান্সের তথ্য মাসিক ভিত্তিতে সংগ্রহ করে লেনদেন ভারসাম্যের বিবরণী প্রস্তুত করে থাকে। সাম্প্রতিক কালে রপ্তানির বিপরীতে প্রত্যাবাসিত অর্থ আসা কমে যাওয়ায় ট্রেড ক্রেডিট উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা মূলত রপ্তানি (শিপমেন্ট) ও প্রকৃত রপ্তানি আয়ের ব্যবধানের কারণে হয়ে থাকে।
চিঠিতে বলা হয়, আর্থিক হিসাবে প্রকৃত ট্রেড ক্রেডিট বলতে রপ্তানি (শিপমেন্ট) ও রপ্তানি আয়ের পার্থক্য এবং আমদানি (শিপমেন্ট) ও আমদানি ব্যয়ের পার্থক্যের যোগফল বোঝানো হয়ে থাকে।
এতে আরও বলা হয়, দেশের রপ্তানি (শিপমেন্ট) তথ্য–উপাত্ত এনবিআর প্রতি মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইপিবির কাছে পাঠায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দেশের রপ্তানি (শিপমেন্ট) তথ্য/উপাত্ত ইপিবি প্রকাশ করে থাকে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, সংশোধিত ডেটাসেট ব্যবহার করার কারণে লেনদেন ভারসাম্যের বিবরণীতে ট্রেড ক্রেডিটসহ চলতি হিসাব ও আর্থিক হিসাব সংশোধিত হয়েছে। তবে এর জন্য সার্বিক লেনদেন ভারসাম্যে কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। কারণ, চলতি হিসাবে থাকা উদ্ধৃত সংশোধিত হয়ে আর্থিক হিসাবে সমন্বয় হয়েছে।
এসএম

অর্থনীতি
বাজেট ঘোষণা আগামীকাল, সব তথ্য পাওয়া যাবে যেসব ওয়েবসাইটে

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট আগামীকাল সোমবার (২ জুন) ঘোষণা করতে যাচ্ছে। নতুন বছরের বাজেট ঘোষণা করবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। চলতি বাজেটের থেকে আগামী বাজেট ছোট হচ্ছে। ২০২৫–২৬ অর্থবছর সরকারি ব্যয় ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাজেট বক্তৃতা সমাপ্তির পরপরই এ সংক্রান্ত সব তথ্য অর্থ বিভাগের ওয়েবসাইটে দেখা যাবে।
বিকেল ৪টায় ধারণ করা বাজেট বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে প্রচার করা হবে। সংসদ না থাকায় ধারণকৃত জাতীয় বাজেট বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশন থেকে ফিড নিয়ে অন্য সব বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ও বেতারে একই সময়ে প্রচারের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
নতুন বছরের বাজেট ঘোষণা করবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। পরে তা উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাশ হবে।
প্রস্তাবিত এই বাজেট পাস হলে এটি হবে দেশের ৫৪তম, অন্তবর্তীকালীন সরকার ও অর্থ উপদেষ্টার প্রথম বাজেট। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এক ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে চলতি বাজেটের চেয়েও ছোট বাজেট দিতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী ২০২৫–২৬ অর্থবছর সরকারি ব্যয় ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা চলতি বাজেটের চেয়ে ৭ হাজার কোটি টাকা কম।
এসএম
অর্থনীতি
নতুন ডিজাইনের ৩ নোট বাজারে আসছে আজ

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সই করা নতুন নকশা ও সিরিজের ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোট রবিবার (১ জুন) প্রথমবারের মতো বাজারে আসছে। প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্য অফিসগুলো থেকে এই নোটগুলো ইস্যু করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক ‘বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য’- শীর্ষক নতুন ডিজাইন ও সিরিজের সব মূল্যমানের (১০০০, ৫০০, ২০০, ১০০, ৫০, ২০, ১০, ৫ ও ২ টাকা) নতুন নোট মুদ্রণের কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সই করা নতুন ডিজাইন ও সিরিজের ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোট আজ রোববার (১ জুন) প্রথমবারের মতো বাজারে দেওয়া হবে। বর্ণিত নোটসমূহ ওই তারিখে প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যান্য অফিস থেকে ইস্যু করা হবে।
এসব মূল্যমানের নতুন নোটের পাশাপাশি বর্তমানে প্রচলিত সব কাগুজে নোট এবং ধাতব মুদ্রাও যথারীতি চালু থাকবে। এছাড়া, মুদ্রা সংগ্রাহকদের চাহিদার বিষয়টি বিবেচনা করে নিয়মিত নোটের পাশাপাশি ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকা মূল্যমানের নমুনা নোট (যা বিনিময়যোগ্য নয়) মুদ্রণ করা হয়েছে; যা টাকা জাদুঘর, মিরপুর থেকে নির্ধারিত মূল্যে সংগ্রহ করা যাবে।
‘বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য’- শীর্ষক নতুন ডিজাইন ও সিরিজের ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোটের ডিজাইন ও নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ-
১০০০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোটের ডিজাইন:
১০০০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬০ মি.মি.×৭০ মি.মি.। নোটটি ১০০ ভাগ কটন কাগজে মুদ্রিত এবং নোটে জলছাপ হিসেবে ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর মুখ’, ‘১০০০’ এবং ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ রয়েছে। নোটটিতে বেগুনি রঙের আধিক্য রয়েছে।
নোটের সম্মুখভাগে বামপাশে জাতীয় স্মৃতিসৌধ, সাভার এর ছবি ও মাঝখানে ‘প্রতিশ্রুত বাক্য’ ও মূল্যমান (এক হাজার টাকা) মুদ্রিত রয়েছে। নোটের মাঝখানের ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলার ছবি মুদ্রিত রয়েছে। এছাড়া, নোটের ওপরে বামদিকে নোটের মূল্যমান ‘১০০০’, ডানকোণে ‘১০০০’ ও নিচে ডানকোণে ‘৳১০০০’ মুদ্রিত রয়েছে। নোটের পেছনভাগের ডিজাইন হিসেবে জাতীয় সংসদ ভবন, ঢাকা এর ছবি মুদ্রিত রয়েছে। নোটের ওপরে বামকোণে মূল্যমান ‘১০০০’ ও ডানকোণে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ এবং নিচে ডানকোণ এবং বামকোণে মূল্যমান ‘১০০০’ মুদ্রিত রয়েছে। এছাড়া, নোটের ডানপাশে উলম্বভাবে ‘১০০০’ মুদ্রিত রয়েছে।
নোটটিতে মোট ১৩ ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংযোজন করা হয়েছে। নোটটির সম্মুখভাগে বামপাশে ৫ মি.মি. চওড়া নিরাপত্তা সুতা সংযোজন করা হয়েছে যাতে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ এবং ‘১০০০ টাকা’ খচিত রয়েছে। নোটটি নাড়াচাড়া করলে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ অংশের নিরাপত্তা সুতার রং লাল হতে সবুজ রংয়ে পরিবর্তিত হয় এবং ‘১০০০ টাকা’ অংশে একটি উজ্জ্বল রংধনু বার ওপর থেকে নিচে উঠানামা করে।
এছাড়া, নোটের ডানদিকের কোণায় মুদ্রিত মূল্যমান ‘১০০০’ রং পরিবর্তনশীল উন্নতমানের নিরাপত্তা কালি (ওভিএমআই) দ্বারা মুদ্রিত। যাতে নোটটি নাড়াচাড়া করলে এর রং ম্যাজেন্টা থেকে সবুজ রংয়ে পরিবর্তিত হয় এবং মূল্যমানের ভেতরে কোনাকুনিভাবে মুদ্রিত ‘১০০০’ লেখাটি দৃশ্যমান হয়। পাশাপাশি, নোটের সম্মুখভাগের পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলা দ্বারা মুদ্রিত যা ইউভি ডিটেক্টর মেশিন দ্বারা দৃষ্টিগোচর হয়।
৫০ টাকা মূল্যমানের নোট:
৫০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩০ মি.মি.×৬০ মি.মি.। নোটটি ১০০ ভাগ কটন কাগজে মুদ্রিত এবং নোটে জলছাপ হিসেবে ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর মুখ’, ‘৫০’ এবং ‘বাংলাদেশ ব্যাংককের মনোগ্রাম’ রয়েছে। নোটটিতে গাঢ় বাদামি রঙের আধিক্য রয়েছে।
ব্যাংক নোটটির সম্মুখভাগের বামপাশে আহসান মঞ্জিল, ঢাকা- লেখাটি উভয় পাশে মাইক্রোপ্রিন্ট হিসেবে ইংরেজিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং পেছনভাগের বামদিকের ওপরে ‘৫০’ ও নিচে ‘৫০’ লেখা ব্যাকগ্রাউন্ডে মাইক্রোপ্রিন্ট হিসেবে যথাক্রমে “50 TAKA’ এবং BANGLADESHBANK’ মুদ্রিত রয়েছে।
২০ টাকা মূল্যমানের নোট:
২০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১২৭ মি.মি.×৬০ মি.মি.। নোটটি ১০০ ভাগ কটন কাগজে মুদ্রিত এবং নোটে জলছাপ হিসেবে ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর মুখ’, ‘২০’ এবং ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ রয়েছে। নোটটিতে সবুজ রঙের আধিক্য রয়েছে।
ব্যাংক নোটটির সম্মুখভাগের বামপাশে ঐতিহাসিক স্থাপনা কান্তজিউ মন্দির, দিনাজপুরের ছবি এবং নোটের মাঝখানে ‘প্রতিশ্রুত বাক্য’ ও মূল্যমান (বিশ টাকা) মুদ্রিত রয়েছে। নোটের মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলা’র ছবি মুদ্রিত রয়েছে। এছাড়া, নোটের ওপরে বামদিকে মূল্যমান ‘২০’, ডানকোণে ‘২০’ ও নিচে ডানকোণে ‘৳২০’ মুদ্রিত রয়েছে।
অর্থনীতি
বিজিএমইএ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল ফোরাম, সভাপতি হচ্ছেন বাবু

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের সংগঠন বিজিএমইএর (বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন) ২০২৫-২৭ মেয়াদের নির্বাচনে ফোরাম জোট বেশি সংখ্যক পদের জয় পেয়েছে।
ঢাকায় পরিচালকের ২৬টি পদের মধ্যে ২৫ তাদের প্রার্থী জয়ী হয়েছে। আর চট্টগ্রামে পরিচালকের ৯টি পদের মধ্যে তারা ৬টি পদে জয় পেয়েছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সবমিলেয়ে ৩৫টি পদের বিপরীতে ৩১ জন ফোরাম প্যানেলের প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। এ ছাড়া সম্মিলিত পরিষদের ঢাকায় একজন ও চট্টগ্রামে রয়েছেন ৩ জন জয়ী হয়েছেন। সে হিসেবে সম্মিলিত পরিষদের মোট ৪ জন জয়ী হয়েছেন।
আগামী ২ জুন নির্বাচিত পরিচালকরা নিজেদের মধ্য থেকে সভাপতি ও সহ সভাপতি নির্বাচন করবেন।
এবারের নির্বাচনে প্যানেল লিডার হিসেবে ফোরাম জোটের নেতৃত্ব দিয়েছেন রাইজিং ফ্যাশনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ হাসান খান (বাবু)। ফোরাম সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ায় বিজিএমইএর পরবর্তী সভাপতি হচ্ছেন তিনি।
শনিবার (৩১ মে) ঢাকায় ও চট্টগ্রামে সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ১৫ মিনিট বাড়িয়ে বিকেল সোয়া ৫টায় ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরপরই ভোট গণনা শুরু হয়।
বিজিএমইএর ৩৫টি পরিচালক পদে নির্বাচনকেন্দ্রিক তিন জোট– ফোরাম, সম্মিলিত পরিষদ ও ঐক্য পরিষদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। তবে ভোটে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদের মধ্যে। এই দুই প্যানেল ঢাকা ও চট্টগ্রামে সব পদে প্রার্থী দিয়েছে। অন্যদিকে ঐক্য পরিষদের প্রার্থী মাত্র ছয়জন। অর্থাৎ ৩৫টি পরিচালক পদের বিপরীতে ৭৬ জন প্রার্থী লড়াই করেন।
বিজিএমইএর ২০২৫-২৭ মেয়াদের নির্বাচনে ভোটার ছিল মোট ১ হাজার ৮৬৪ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ১ হাজার ৫৬১ ও চট্টগ্রামে ৩০৩ জন ভোটার।
ঢাকা ও চট্টগ্রামে মোট ভোট দিয়েছেন ১৬৩১ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ভোট দিয়েছেন ১৩৭৭ জন ভোটার, যা মোট ভোটারের ৮৮ দশমিক ২১ শতাংশ। অপরদিকে চট্টগ্রামে ভোট দিয়েছেন মোট ২৫৪ জন, যা সেখানকার মোট ভোটারের ৮৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ।
বিজিএমইএ নির্বাচনী বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইকবাল।
অর্থনীতি
অবাধ বাণিজ্য প্রসারে চীনের সঙ্গে দুই সমঝোতা স্মারক সই

অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও। উভয় দেশের মধ্যে দুটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে দ্বিপাক্ষিক এ বৈঠকে।
শনিবার (৩১ মে) বিকেলে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ ও চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে অবাধ বাণিজ্য প্রসারে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন ও ই-কমার্স বিষয়ে সহযোগিতা সংক্রান্ত দুটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে এ বৈঠকে। সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশের পক্ষে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ও চীনের পক্ষে সে দেশের বাণিজ্য মন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও সই করেন।
এ সময় চীনের বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছে কৃষিখাতে ড্রোন প্রযুক্তির সহায়তাও কামনা করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা জোরদার করতে এই সহায়তা কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যমে সার, বীজ বপন, কীটনাশক ছিটানো ও ফসল নিরীক্ষণে বিপ্লব আনা সম্ভব। চীনের অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তি বাংলাদেশের কৃষিখাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
চীনের বাণিজ্যমন্ত্রীও বাংলাদেশের সঙ্গে প্রযুক্তি ও বিনিয়োগ সহযোগিতা বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করে বলেন, কৃষি ও ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে প্রস্তুত চীন। বিশেষ করে স্মার্ট কৃষি ও ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে আমরা সহযোগিতা করতে পারি।
এরপর ফিশিং জাহাজ ও প্রযুক্তি সহায়তা কামনা করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রসীমা থাকলেও আধুনিক ফিশিং জাহাজ ও প্রযুক্তির অভাবে এই খাতের পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। সামুদ্রিক মৎস্য খাতের উন্নয়নে বাংলাদেশের জন্য অত্যাধুনিক ফিশিং জাহাজ ও মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ প্রযুক্তি প্রয়োজন। চীনের অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তিগত সহায়তা আমাদের এই খাতকে আরও শক্তিশালী করতে পারে।
এ ছাড়া চামড়াজাতশিল্প, হালকা প্রকৌশল, এগ্রি মেশিনারিজ ও অ্যাগ্রো টেকনোলজি, ফুড প্রসেসিং এবং ওষুধ শিল্পেও চীনা বিনিয়োগ প্রত্যাশা করেন তিনি।
এ সময় চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশের সঙ্গে মৎস্য ও সমুদ্রসম্পদ খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, চীন বাংলাদেশের মৎস্য খাত ও সমুদ্রসীমার সম্পদ আহরণে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে প্রস্তুত।
ওয়াং ওয়েনতাও আরও বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের কুটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি এরই মধ্যে পার হয়েছে। দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন; বিশেষ করে এ দেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে চীন সরকার বেশ কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, যার সুফল এ দেশের জনগণ ভোগ করছে।
আগামী দিনে চীন-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বৈঠকে চীনের প্রতিনিধিদলে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডাইরেক্টর জেনারেল অব আউটওয়ার্ড ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমিক কো অপারেশন, চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডাইরেক্টর জেনারেল অব দ্য ডিপার্টমেন্ট অব এশিয়ান অ্যাফেয়ার্স এবং বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে বাণিজ্য সচিব, শিল্প সচিব, কৃষি সচিব ও বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এদিন দুপুরে ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের বিশাল এক বহর নিয়ে ঢাকা সফরে আসেন চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও। ২০০ জনের বিশাল
এ প্রতিনিধিদলে ১০০ জন চীনা ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারী রয়েছেন।
অর্থনীতি
২০০ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলসহ চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী ঢাকায়

চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাওয়ের নেতৃত্বে দুইশ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল ঢাকা এসেছেন। এই সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
শনিবার (৩১ মে) প্রতিনিধিদলটি ঢাকায় পৌঁছালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশীরউদ্দীন তাদের স্বাগত জানান।
সফরের বিস্তারিত:
- ১ জুন (রবিবার): চীনা প্রতিনিধিদল বিডা (বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) আয়োজিত এক সেমিনারে যোগ দেবে। এই সেমিনারে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, এবং চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এই সম্মেলনকে ‘চীন-বাংলাদেশ বিনিয়োগ ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্মেলন’ হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে।
- ২ জুন (সোমবার): প্রতিনিধিদল জয়েন্ট ইকোনমিক কমিটির বৈঠকে অংশ নেবে এবং বাংলাদেশের কয়েকটি ইকোনমিক জোন পরিদর্শন করবে।
চীনা প্রতিনিধিদলের সদস্যরা ঢাকা সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশীরউদ্দীন এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই সফরে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বিষয়টি প্রাধান্য পাবে এবং বাংলাদেশে চীনা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এই সফরকে কেন্দ্র করে জানিয়েছেন, উভয় পক্ষ একটি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিনিময় অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজন করবে, যেখানে শত শত চীনা এবং বাংলাদেশি উদ্যোগ অংশগ্রহণ করবে এবং আরও সহযোগিতার সুযোগ খুঁজবে।
বিডা জানিয়েছে, এই সম্মেলনে প্রায় ১০০টি চাইনিজ প্রতিষ্ঠানের ২৫০ জন বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ী অংশ নেবেন। এর মধ্যে ফরচুন ৫০০-এর অন্তর্ভুক্ত ৬-৭টি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারাও থাকবেন। এছাড়া চীনের চারটি চেম্বার অব কমার্সের শীর্ষ প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। বাংলাদেশে এই প্রথম এত বৃহৎ সংখ্যক চীনা বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ী একযোগে সফরে এলেন।
উল্লেখ্য, প্রধান উপদেষ্টার সদ্য চীন সফর এবং এপ্রিলে অনুষ্ঠিত বিনিয়োগ সম্মেলনের প্রত্যক্ষ ফলাফল হিসেবে এই সম্মেলন আয়োজিত হচ্ছে। চীনা বিনিয়োগকারীদের ক্রমবর্ধমান আগ্রহ বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করছে।