আন্তর্জাতিক
ব্যাংক ডাকাতি থেকে মন্ত্রিসভা, গল্পকেও যেন হার মানালেন আফ্রিকার ক্রীড়ামন্ত্রী
পকেটে ফুটো পয়সাও ছিল না। তারপরও স্বপ্ন দেখতেন কোটিপতি হওয়ার। সেই স্বপ্নের ঘোরে কৈশোরেই লুট করে নেন একটি ব্যাংক। তার পর থেকেই দারিদ্র্যের কষাঘাত আর বঞ্চনার জীবন থেকে মুক্তির উচ্চাকাঙ্ক্ষা মাথায় জেঁকে বসে গ্যাটন ম্যাকেনজির।
খুব সহজে ও দ্রুত ওপরে ওঠার সিঁড়ি হিসেবে অপরাধজগৎকে বেছে নেন দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণভিত্তিক মিশ্র জাতিগোষ্ঠীর (কালারড) এই যুবক। ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন গ্যাংস্টার।
তবে একসময় সেই অপরাধের জগৎ থেকে বের হয়ে শুরু করেন ব্যবসা-বাণিজ্য। খনি থেকে শুরু করে নাইট ক্লাব—বিনিয়োগ করেন নানা খাতের ব্যবসায়। সেখানেও আসে সাফল্য। তবে তাঁর উচ্চাকাঙ্ক্ষা আর স্বপ্ন তাঁকে পৌঁছে দিয়েছে এর চেয়েও বড় উচ্চতায়।
একসময়ের অপরাধজগতের এই নেতা জীবনযুদ্ধের নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে জায়গা করে নিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার মন্ত্রিসভায়। নতুন সরকারের অধীন দায়িত্ব পেয়েছেন ক্রীড়া, কলা ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর।
ম্যাকেনজি অবশ্য রাজনীতিতে নাম লিখিয়েছেন অনেক আগেই। গড়েছেন একটি রাজনৈতিক দলও। মিশ্র জাতিগোষ্ঠীই দলটির সবচেয়ে বড় সমর্থক।
গত ২৯ মে অনুষ্ঠিত হয় দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় নির্বাচন। দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন সিরিল রামাফোসা। তবে তাঁর নেতৃত্বাধীন আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি) এবার নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়। এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠন করেন রামাফোসা। গত রোববার তাঁর মন্ত্রিসভায় নিয়োগ দেন ম্যাকেনজিকে।
মন্ত্রী হওয়ার পর ৫০ বছর বয়সী এই রাজনীতিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) নিজের একটি ছবি পোস্ট করেছেন। ছবিতে দেখা যায়, ফুটবল খেলার পোশাকে একজোড়া বুট হাতে বসে আছেন তিনি। যেন বুটজোড়া পায়ে দিয়েই মাঠে নেমে পড়বেন। ওই ছবির শিরোনামে ম্যাকেনজি লেখেন, ‘শুভকামনা জানিয়ে পাঠানো সব বার্তার জন্য ধন্যবাদ। আমি শিগগিরই উত্তর দেব। কাজে নেমে পড়তে হবে। তাই এখন নিজেকে প্রস্তুত করতে ব্যস্ত আছি।’
ম্যাকেনজি যেভাবে সব প্রতিকূল পরিস্থিতি উতরে সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছেন, তা দক্ষিণ আফ্রিকায় নজির সৃষ্টি করেছে। ১৬ বছর বয়সে পা দেওয়ার আগেই তিনি প্রথম ব্যাংক ডাকাতি করেন। এরপর পুরোদস্তুর গ্যাংস্টার বনে যান। সাত বছর কাটান কারাগারে। সেখান থেকে মুক্তি পাওয়ার পর শপথ নেন নিজেকে বদলে ফেলার। স্থানীয় একটি রেডিও স্টেশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জীবনসংগ্রামের গল্প তুলে ধরেন তিনি।
২০১৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকাভিত্তিক পাবলিক ব্রডকাস্টার এসএবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ম্যাকেনজি বলেন, ‘আমার পকেটে হয়তো ১২ র্যান্ড (দক্ষিণ আফ্রিকার মুদ্রা) ছিল। কিন্তু আমার মনের মধ্যে ছিল বিলিয়ন র্যান্ড। আর এই বিষয়ই মানুষ বোঝার চেষ্টা করে না। তারা যা নেই, তা নিয়েই ভাবে, তা পাওয়ার জন্য কী করতে হবে, সেদিকে মনোযোগ দেয় না।’
ম্যাকেনজির বক্তব্য এখন স্থানীয় মানুষের মধ্যে ব্যাপক প্রভাব সৃষ্টি করছে, দিচ্ছে অনুপ্রেরণা। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন জায়গায় বক্তব্য দেওয়ার জন্য ডাক পাচ্ছেন। তাঁর জীবনী নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন বই।
কারাগারে ম্যাকেনজির সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় ক্যানি কুনেন নামের এক কয়েদির। পরবর্তী সময়ে তাঁর সঙ্গে মিলে দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি নাইট ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন। জিম্বাবুয়েতে শুরু করেন খনির ব্যবসা। যৌথ উদ্যোগে আরও অনেক ব্যবসা রয়েছে তাঁদের।
দক্ষিণ আফ্রিকাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আইওএলের তথ্য অনুসারে, নাইট ক্লাবটি একপর্যায়ে বন্ধ হয়ে যায়। কেপটাউনে ম্যাকেনজির নামে নিবন্ধিত ক্লাবের একটি শাখার বিরুদ্ধে ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল না দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ক্লাবটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
তখন ম্যাকেনজি বলেছিলেন, ‘ক্লাব করা নিয়ে আমি আগ্রহী নই। অন্য প্রকল্প নিয়ে আমি ব্যস্ত। আমরা জার ব্র্যান্ডের (এই ব্র্যান্ডের অধীন ক্লাবটি পরিচালিত হতো) ইতি টেনেছি। এটি নিয়ে কোনো ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নেই।’
বর্তমানে রাজনীতিবিদ হিসেবেই বেশি পরিচিত ম্যাকেনজির। ২০১৩ সালে তিনি প্যাট্রিওটিক অ্যালায়েন্স নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। বন্ধু ক্যানি কুনেনকে দেন দলের নির্বাহীর দায়িত্ব।
এক দশকের বেশি সময় পর জাতীয় নির্বাচনে মোট ভোটের ২ শতাংশ নিজেদের পক্ষে আনতে সক্ষম হয়েছে দলটি। ওয়েস্টার্ন কেপের প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে ৮ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে নিজেদের ভালো অবস্থানের জানান দেয় দলটি।
রাজনৈতিক দলটির স্লোগান—‘ওনস বাইজা নি।’ আঞ্চলিক ভাষায় ব্যবহৃত এই কথার অর্থ, ‘আমরা ভয় পাই না।’ আফ্রিকার মোট জনসংখ্যার ৮ শতাংশ মিশ্র জাতিগোষ্ঠীর। সংসদে দলটি এই জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করছে।
নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর ম্যাকেনজি বলেন, ‘প্যাট্রিওটিক অ্যালায়েন্সের হাত ধরে প্রথমবারের মতো মিশ্র জাতিগোষ্ঠীর কেউ সংসদে জায়গা করে নিল। আমরাই একমাত্র দল, যেটি সংসদে সব বর্ণের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করবে।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষক কাগিসো পোই বলেন, সাহসী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে নির্বাচনী এলাকায় ম্যাকেনজির বেশ কদর আছে।
ম্যাকেনজি মন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকার শিশুদের নিয়ে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। খেলাধুলায় শিশুদের অংশগ্রহণ বাড়ানো গেলে মাদকাসক্তি ও অপরাধের হার কমে আসবে বলে মনে করছেন তিনি।
তবে ম্যাকেনজি চেয়েছিলেন পুলিশবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। তাঁর দাবি, জীবনের একটা সময় একটি অপরাধী চক্রের নেতা ছিলেন। তাই দক্ষিণ আফ্রিকায় অপরাধের উচ্চ হার কমাতে তিনিই সবচেয়ে ভালো কিছু করতে পারেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বিটকয়েনের দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ
একটি বিটকয়েনের দাম ১ লাখ ছুইছুই করছে। আজ শুক্রবার বিটকয়েনের দাম ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে ছাড়িয়েছে। এই দাম বিটকয়েনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বিটকয়েনের দাম বাড়তে থাকে। আর্থিক বাজারের প্রত্যাশা, ট্রাম্প প্রশাসন ক্রিপ্টোবান্ধব হবে। খবর রয়টার্সের
এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থাটি বলছে, চলতি বছর বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েনের দাম দিগুণের বেশি হয়েছে। গত ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর বিটকয়েনের দাম ২৫ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহের মধ্যে এটি বেড়েছে ৪৫ শতাংশের বেশি। আজ শুক্রবার একটি বিটকয়েন বিক্রি হয়েছে ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে।
মূল্যবৃদ্ধির দৌড়ে বিটকয়েন পাল্লা দিচ্ছে ইলন মাস্কের টেসলার সঙ্গে। ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে টেসলার শেয়ারের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। বিনিয়োগকারীরা মনে করেছেন, ট্রাম্পের বন্ধুরা এবং যেসব বিষয়ে তার আগ্রহ আছে, সেসব বিষয় তিনি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ভালো করবে।
সিডনির এটিএফএক্স গ্লোবালের প্রধান বাজার বিশ্লেষক নিক টুইডেল বলেন, ‘বিটকয়েনের দাম বাড়ছে ট্রাম্পের জন্যই। কারণ, তিনি এই শিল্পের খুবই সমর্থনকারী। এর মানে হলো, ক্রিপ্টোর মজুত ও মুদ্রা উভয়েইর চাহিদা আরও বাড়বে। নির্বাচনের ফল আসার পর বিটকয়েনের দাম প্রায় রেকর্ড পর্যায়ে ওঠার মানে হলো, এই মুদ্রার ওপরে কেবল খোলা আকাশ রয়েছে।’
গত ১০ নভেম্বর আগের সব রেকর্ড ভেঙ্গে ৮০,০০০ ডলারে পৌঁছে যায়। বিশেষজ্ঞরা রুশ বার্তা সংস্থা তাসকে বলেছেন, বর্তমান বৃদ্ধির পর্যায়ে থাকলে বিটকয়েনের দাম ৩ লাখ ডলারে পৌঁছানোও অবাক করার মতো কিছু হবে না।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারকারীদের মধ্যে জনপ্রিয়তার মাধ্যমে এর দাম ওঠা-নামা করে। ২০০৮ সালের নভেম্বরে সাতোশি নাকামোতো ছদ্মনামে বিটকয়েন কারেন্সি মার্কেটে প্রকাশ করা হয়।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
আদানির সঙ্গে ২৫০ কোটি ডলারের চুক্তি বাতিল!
ঘুষ দেয়া ও প্রতারণার মাধ্যমে কয়েকশ’ কোটি ডলারের সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাগিয়ে নেয়ায় অভিযুক্ত ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির বিরুদ্ধে সম্প্রতি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে নিউইয়র্কের একটি আদালত। এ নিয়ে বেশ বিপাকেই পড়েছেন তিনি। তবে এর মধ্যেই আরও এক দুঃসংবাদ পেলো আদানি গ্রুপ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে আলজাজিরা জানিয়েছে, আদানি শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে ২৫০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি অর্থের চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে আফ্রিকার দেশ কেনিয়া।
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দেশটির পার্লামেন্টে দেয়া এক ভাষণে, আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে হওয়া দুটি চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দেন।
এর মধ্যে একটি চুক্তির অর্থমূল্য প্রায় ২০০ কোটি মার্কিন ডলার। এই চুক্তির আওতায় দেশটির জোমো কেনিয়াত্তা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দ্বিতীয় রানওয়ে করার কথা ছিল আদানি গোষ্ঠীর। এছাড়া ৩০ বছর মেয়াদি ইজারার (লিজ) আওতায় বিমানবন্দরের যাত্রী টার্মিনাল উন্নত করার কথা ছিল।
এছাড়া আদানির সঙ্গে ৩০ বছর মেয়াদি ৭৩ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলারের সরকারি-বেসরকারি খাতের একটি অংশীদারত্ব (পিপিপি) চুক্তিও বাতিল করার কথা জানান রুটো।
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট জানান, তিনি পরিবহন এবং জ্বালানি ও পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে অবিলম্বে চুক্তি বাতিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
তদন্তকারী সংস্থা ও অংশীদার দেশগুলোর কাছ থেকে পাওয়া নতুন তথ্যের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
আদানির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
ভারতের অন্যতম শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। দেশটির সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ঘুষের প্রস্তাব ও তথ্য আড়াল করে অর্থ উত্তোলনের অভিযোগে এই পরোয়ানা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। খবর রয়টার্স, নিউইয়র্ক টাইমস ও আনন্দবাজার পত্রিকা।
একই অভিযোগে গৌতম আদানির ভাইপো সাগর আদানির বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রসিকিউটরদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আদানি ও অন্য সাতজন অভিযুক্ত ব্যক্তি ওই প্রকল্পের বিনিময়ে ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে রাজি হয়েছিলেন। এই প্রকল্প থেকে ২০ বছরে তাদের ২০০ কোটি ডলার ফায়দা হওয়ার কথা ছিল। প্রকল্পটি পেলে প্রতিষ্ঠানটি ভারতের বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ করতে পারে।
ঘুষ-কাণ্ডে নাম জড়িয়েছে গৌতমের ভাইপো সাগরেরও। এ ছাড়াও রয়েছেন- ‘আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেডে’র সিইও বিনীত জৈন, রঞ্জিত গুপ্ত, রুপেশ আগরওয়াল, অস্ট্রেলিয়া ও ফ্রান্সের নাগরিক সিরিল ক্যাবানেস, সৌরভ আগরওয়াল এবং দীপক মলহোত্র।
আদালতের নথির বরাতে রয়টার্স আরও বলছে, গৌতম আদানি ও সাগর আদানির বিরুদ্ধে একজন বিচারক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। প্রসিকিউটররা এই পরোয়ানা বিদেশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কাছে হস্তান্তর করার পরিকল্পনা করেছেন।
প্রসিকিউটররা জানান, আদানি ও আদানি গ্রিন এনার্জির আরেকজন নির্বাহী, সাবেক সিইও ভিনিত জৈন দুর্নীতির বিষয়টি গোপন করে ঋণদাতা ও বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৩০০ কোটি ডলারের বেশি ঋণ ও বন্ড সংগ্রহ করেন।
অভিযোগপত্র অনুযায়ী, কিছু ষড়যন্ত্রকারী ব্যক্তিগতভাবে গৌতম আদানিকে ‘নুমেরো উনো’ এবং ‘দ্য বিগ ম্যান’ সাংকেতিক নামে ডাকতেন। আর সাগর আদানি তার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ঘুষের সুনির্দিষ্ট তথ্য ট্র্যাক করতেন।
এদিকে নিউ ইয়র্কের ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্টের ইউএস অ্যাটর্নি অফিস থেকে জারি করা একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের প্রায় ২২৩৭ কোটির বেশি ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া এবং বিনিয়োগকারী ও ব্যাংকের কাছে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে আদানি এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে।
তবে আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ দায়ের এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি আদানি গ্রুপ।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্রে গৌতম আদানির বিরুদ্ধে ঘুস-জালিয়াতির অভিযোগ
ভারতের অন্যতম শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে আদালতে ঘুষ-জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে। বুধবার নিউইয়র্কের একটি আদালতে ২৫ কোটি মার্কিন ডলারের ঘুষকাণ্ডে জড়িত এবং বিষয়টি গোপন রেখে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার থেকে অর্থও সংগ্রহের অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, আদানি এবং তার শীর্ষ কর্মকর্তারা ভারতের সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে লাভজনক চুক্তি করেছেন। এই চুক্তিগুলো থেকে ২০ বছরে ২০০ কোটি ডলারের বেশি মুনাফা অর্জনের আশা করা হয়েছে।
এমনকি আদানি গ্রুপ ৩০০ কোটি ডলারের ঋণ এবং বন্ডও সংগ্রহ করেছে, যার মধ্যে কয়েকটি মার্কিন প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
মার্কিন অ্যাটর্নি ব্রিয়ন পিস বলেন, আমাদের আর্থিক বাজারের সততা রক্ষার জন্য আমরা আন্তর্জাতিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছি।
অভিযোগ করা হয়েছে, ঘুষকাণ্ড এগিয়ে নিতে গৌতম আদানি নিজেই একাধিকবার সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
কর্মী সংকটে অতিরিক্ত দুই লাখ ভিসা দেবে জার্মানি
ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জার্মানিতে কর্মী সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। ফলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিছুটা স্থবির হয়ে পড়েছে দেশটির অর্থনীতি। দীর্ঘদিন ধরে চলমান জনবল সংকট কাটাতে এবার আগ্রাসী পদক্ষেপ নিচ্ছে বার্লিন। যার ফলে ইউরোপের দুয়ারে প্রবেশের সুযোগ পেতে পারেন লাখ লাখ অভিবাসনপ্রত্যাশী। যেখানে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য ইউরোপের অন্যান্য দেশে কঠোর সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, ঠিক তখনই এসব সুযোগ দিল জার্মানি।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কর্মী সংকট কাটাতে চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই অতিরিক্ত ২ লাখ দক্ষ কর্মী ভিসা প্রদান করবে দেশটি। জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেজার জানান, দক্ষ তরুণরা জার্মানিতে আরও সহজে তাদের প্রশিক্ষণ ও পড়াশোনা শেষ করত পারবে। দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা খুব দ্রুত এবং সহজেই জার্মানিতে তাদের কাজ খুঁজে নিতে পারবে।
২০২৩ সালে ১ লক্ষ ৭৭ হাজার পেশাদার ভিসা ইস্যু করেছিল জার্মানি, চলতি বছর এই ভিসার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে ১০ শতাংশ। দীর্ঘমেয়াদি সংকট সমাধানে ভিসাসংক্রান্ত নিয়মকানুন শিথিল করার অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে জার্মানিতে বিভিন্ন চাকরিতে ১৩ লাখ ৪০ হাজার পদ খালি রয়েছে। এই কর্মী ঘাটতি না থাকলে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চলতি বছর আরও বেশি হতে পারতো বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। গত পাঁচ বছরে জার্মানিতে ১৬ লাখ চাকরি সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে ৮৯ শতাংশ চাকরি পেয়েছেন বিদেশিরা।
ভাষার দক্ষতা, পেশাগত অভিজ্ঞতা এবং কম বয়সের ভিত্তিতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পয়েন্ট সিস্টেমে এক বছরের ভিসা দেবে জার্মানি। এজন্য ‘অপরচুনিটি কার্ড’ চালু করেছে দেশটি৷ এই কার্ডের কারণে পেশাজীবী ও বিশ্ববিদ্যালয় পাস করা শিক্ষার্থীদের জার্মানিতে পড়ালেখা ও চাকরি খোঁজার সুযোগ বেড়েছে। সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশের মানুষরাও সরাসরি জার্মানিতে যেতে পারবেন এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে কাজ করতে পারবেন।
দক্ষ কর্মী ভিসার পাশাপাশি শিক্ষার্থী ভিসার সংখ্যা বাড়ানোরও উদ্যোগ নিয়েছে জার্মান সরকার। আগামী ২০২৫ সালে ২০ শতাংশ বাড়ানো হবে শিক্ষার্থী ভিসার পরিমাণ। ভবিষ্যতে তা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হবে।
এমআই