আন্তর্জাতিক
ব্যাংক ডাকাতি থেকে মন্ত্রিসভা, গল্পকেও যেন হার মানালেন আফ্রিকার ক্রীড়ামন্ত্রী

পকেটে ফুটো পয়সাও ছিল না। তারপরও স্বপ্ন দেখতেন কোটিপতি হওয়ার। সেই স্বপ্নের ঘোরে কৈশোরেই লুট করে নেন একটি ব্যাংক। তার পর থেকেই দারিদ্র্যের কষাঘাত আর বঞ্চনার জীবন থেকে মুক্তির উচ্চাকাঙ্ক্ষা মাথায় জেঁকে বসে গ্যাটন ম্যাকেনজির।
খুব সহজে ও দ্রুত ওপরে ওঠার সিঁড়ি হিসেবে অপরাধজগৎকে বেছে নেন দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণভিত্তিক মিশ্র জাতিগোষ্ঠীর (কালারড) এই যুবক। ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন গ্যাংস্টার।
তবে একসময় সেই অপরাধের জগৎ থেকে বের হয়ে শুরু করেন ব্যবসা-বাণিজ্য। খনি থেকে শুরু করে নাইট ক্লাব—বিনিয়োগ করেন নানা খাতের ব্যবসায়। সেখানেও আসে সাফল্য। তবে তাঁর উচ্চাকাঙ্ক্ষা আর স্বপ্ন তাঁকে পৌঁছে দিয়েছে এর চেয়েও বড় উচ্চতায়।
একসময়ের অপরাধজগতের এই নেতা জীবনযুদ্ধের নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে জায়গা করে নিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার মন্ত্রিসভায়। নতুন সরকারের অধীন দায়িত্ব পেয়েছেন ক্রীড়া, কলা ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর।
ম্যাকেনজি অবশ্য রাজনীতিতে নাম লিখিয়েছেন অনেক আগেই। গড়েছেন একটি রাজনৈতিক দলও। মিশ্র জাতিগোষ্ঠীই দলটির সবচেয়ে বড় সমর্থক।
গত ২৯ মে অনুষ্ঠিত হয় দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় নির্বাচন। দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন সিরিল রামাফোসা। তবে তাঁর নেতৃত্বাধীন আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি) এবার নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়। এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠন করেন রামাফোসা। গত রোববার তাঁর মন্ত্রিসভায় নিয়োগ দেন ম্যাকেনজিকে।
মন্ত্রী হওয়ার পর ৫০ বছর বয়সী এই রাজনীতিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) নিজের একটি ছবি পোস্ট করেছেন। ছবিতে দেখা যায়, ফুটবল খেলার পোশাকে একজোড়া বুট হাতে বসে আছেন তিনি। যেন বুটজোড়া পায়ে দিয়েই মাঠে নেমে পড়বেন। ওই ছবির শিরোনামে ম্যাকেনজি লেখেন, ‘শুভকামনা জানিয়ে পাঠানো সব বার্তার জন্য ধন্যবাদ। আমি শিগগিরই উত্তর দেব। কাজে নেমে পড়তে হবে। তাই এখন নিজেকে প্রস্তুত করতে ব্যস্ত আছি।’
ম্যাকেনজি যেভাবে সব প্রতিকূল পরিস্থিতি উতরে সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছেন, তা দক্ষিণ আফ্রিকায় নজির সৃষ্টি করেছে। ১৬ বছর বয়সে পা দেওয়ার আগেই তিনি প্রথম ব্যাংক ডাকাতি করেন। এরপর পুরোদস্তুর গ্যাংস্টার বনে যান। সাত বছর কাটান কারাগারে। সেখান থেকে মুক্তি পাওয়ার পর শপথ নেন নিজেকে বদলে ফেলার। স্থানীয় একটি রেডিও স্টেশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জীবনসংগ্রামের গল্প তুলে ধরেন তিনি।
২০১৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকাভিত্তিক পাবলিক ব্রডকাস্টার এসএবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ম্যাকেনজি বলেন, ‘আমার পকেটে হয়তো ১২ র্যান্ড (দক্ষিণ আফ্রিকার মুদ্রা) ছিল। কিন্তু আমার মনের মধ্যে ছিল বিলিয়ন র্যান্ড। আর এই বিষয়ই মানুষ বোঝার চেষ্টা করে না। তারা যা নেই, তা নিয়েই ভাবে, তা পাওয়ার জন্য কী করতে হবে, সেদিকে মনোযোগ দেয় না।’
ম্যাকেনজির বক্তব্য এখন স্থানীয় মানুষের মধ্যে ব্যাপক প্রভাব সৃষ্টি করছে, দিচ্ছে অনুপ্রেরণা। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন জায়গায় বক্তব্য দেওয়ার জন্য ডাক পাচ্ছেন। তাঁর জীবনী নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন বই।
কারাগারে ম্যাকেনজির সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় ক্যানি কুনেন নামের এক কয়েদির। পরবর্তী সময়ে তাঁর সঙ্গে মিলে দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি নাইট ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন। জিম্বাবুয়েতে শুরু করেন খনির ব্যবসা। যৌথ উদ্যোগে আরও অনেক ব্যবসা রয়েছে তাঁদের।
দক্ষিণ আফ্রিকাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আইওএলের তথ্য অনুসারে, নাইট ক্লাবটি একপর্যায়ে বন্ধ হয়ে যায়। কেপটাউনে ম্যাকেনজির নামে নিবন্ধিত ক্লাবের একটি শাখার বিরুদ্ধে ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল না দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ক্লাবটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
তখন ম্যাকেনজি বলেছিলেন, ‘ক্লাব করা নিয়ে আমি আগ্রহী নই। অন্য প্রকল্প নিয়ে আমি ব্যস্ত। আমরা জার ব্র্যান্ডের (এই ব্র্যান্ডের অধীন ক্লাবটি পরিচালিত হতো) ইতি টেনেছি। এটি নিয়ে কোনো ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নেই।’
বর্তমানে রাজনীতিবিদ হিসেবেই বেশি পরিচিত ম্যাকেনজির। ২০১৩ সালে তিনি প্যাট্রিওটিক অ্যালায়েন্স নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। বন্ধু ক্যানি কুনেনকে দেন দলের নির্বাহীর দায়িত্ব।
এক দশকের বেশি সময় পর জাতীয় নির্বাচনে মোট ভোটের ২ শতাংশ নিজেদের পক্ষে আনতে সক্ষম হয়েছে দলটি। ওয়েস্টার্ন কেপের প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে ৮ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে নিজেদের ভালো অবস্থানের জানান দেয় দলটি।
রাজনৈতিক দলটির স্লোগান—‘ওনস বাইজা নি।’ আঞ্চলিক ভাষায় ব্যবহৃত এই কথার অর্থ, ‘আমরা ভয় পাই না।’ আফ্রিকার মোট জনসংখ্যার ৮ শতাংশ মিশ্র জাতিগোষ্ঠীর। সংসদে দলটি এই জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করছে।
নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর ম্যাকেনজি বলেন, ‘প্যাট্রিওটিক অ্যালায়েন্সের হাত ধরে প্রথমবারের মতো মিশ্র জাতিগোষ্ঠীর কেউ সংসদে জায়গা করে নিল। আমরাই একমাত্র দল, যেটি সংসদে সব বর্ণের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করবে।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষক কাগিসো পোই বলেন, সাহসী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে নির্বাচনী এলাকায় ম্যাকেনজির বেশ কদর আছে।
ম্যাকেনজি মন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকার শিশুদের নিয়ে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। খেলাধুলায় শিশুদের অংশগ্রহণ বাড়ানো গেলে মাদকাসক্তি ও অপরাধের হার কমে আসবে বলে মনে করছেন তিনি।
তবে ম্যাকেনজি চেয়েছিলেন পুলিশবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। তাঁর দাবি, জীবনের একটা সময় একটি অপরাধী চক্রের নেতা ছিলেন। তাই দক্ষিণ আফ্রিকায় অপরাধের উচ্চ হার কমাতে তিনিই সবচেয়ে ভালো কিছু করতে পারেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক
৬ শতাধিক বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র

গত ১৯ জানুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণের পর গত প্রায় ৩ মাসে দেশের ১০০’র বেশি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত ৬ শতাধিক বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে তার নেতৃত্বাধীন প্রশাসন।
এই শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ গত বছর গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন। এছাড়া ছোটোখাটো কিংবা ধর্তব্যের মধ্যে পড়ে না- এমন অপরাধেও বাতিল হয়েছে অনেক বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা।
যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা সংক্রান্ত অনলাইন সংবাদ পোর্টাল ইনসাইড হায়ার ইডি’র বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে ব্রিটেনের দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, গণপরিবহনে টিকিট না কেটে ওঠা কিংবা সড়কে নির্ধারিত গতিসীমার চেয়ে জোরে গাড়ি চলানোর মতো অপরাধেও ভিসা বাতিলের ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত ৩ শতাধিক বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। অতি সম্প্রতি দক্ষিণ আমেরিকার দেশ গায়ানায় সফরে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ‘উন্মাদ’ আখ্যা দেন তিনি।
সেই সঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, সম্ভবত এ পর্যন্ত ৩ শতাধিক (শিক্ষার্থী) ভিসা বাতিল হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও হবে। আমরা প্রতিদিনই এটি করছি। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে উন্মাদমুক্ত করতে চাই।
যে শতাধিক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভিসা বাতিল হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে ইনসাইড হায়ার ইডি। সেসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই পদক্ষেপ নেওয়ার আগে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। এমনকি এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এ সংক্রান্ত কোনো নথি পাননি তারা।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিবাসীদের প্রতি সহৃদয় নন। ২০১৭ সালে প্রথম যেবার তিনি ক্ষমতাসীন হয়েছিলেন, তখন থেকেই অভিবাসীদের প্রতি অনমনীয় মনোভাবের জন্য পরিচিতি পান তিনি।
ট্রাম্পের এই দফায় ক্ষমতা গ্রহণের পর ফের অভিবাসীদের প্রতি কঠোর নীতি নিয়েছে তার নেতৃত্বাধীন প্রশাসন। ইতোমধ্যে হাজার হাজার নথিবিহীন অভিবাসীদের তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এমনকি তার পূর্বসূরী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সময় যারা বসবাসের অনুমতি পেয়েছিলেন, তাদের মধ্যে অন্তত ১০ লাখ জনকে নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার আদেশ দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
মার্কিন পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করলো চীন

চীন-যুক্তরাষ্ট্র শুল্কযুদ্ধ অব্যাহত হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দফায় দফায় শুল্কবৃদ্ধির বিপরীতে পাল্টা জবাব দিয়ে চলেছে চীন। তারই ধারাবাহিকতায় এবার মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করেছে বেইজিং।
গত সপ্তাহে ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা বেশিরভাগ পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ ন্যূনতম শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ওইদিন চীনের ওপর নতুন করে ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন তিনি যা পূর্বে আরোপিত ২০ শতাংশের সঙ্গে যোগ হয়ে ৫৪ শতাংশে দাঁড়ায়।
ট্রাম্পের ঘোষণার পরদিন বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) চীন এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রকে শুল্ক আরোপের পদক্ষেপ বাতিল করার আহ্বান জানায় এবং পরদিন শুক্রবার (৪ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা সব পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে।
গত বুধবার (৯ এপ্রিল) বিশ্বের ৭৫টিরও বেশি দেশের ওপর আরোপ করা নতুন শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করার ঘোষণা দেন ট্রাম্প। তবে চীনের ওপর আরোপিত শুল্ক স্থগিত করেননি। বরং নতুন করে শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করেন তিনি।
পরদিন বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউস নিশ্চিত করে, এর সঙ্গে আরও ২০ শতাংশ শুল্ক যুক্ত হয়েছে। যার ফলে মোট শুল্কের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৪৫ শতাংশে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
লিবিয়া থেকে ফিরলেন আরও ১৬৭ বাংলাদেশি

অবৈধভাবে উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ায় গিয়ে আটক, বিপদগ্রস্ত ও পাচারের শিকার ১৬৭ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ত্রিপলিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার সহযোগিতায় লিবিয়ার বেনগাজি ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চল হতে দেশে ফিরতে ইচ্ছুক ১৬ জন এবং গানফুদা ডিটেনশন সেন্টার থেকে ১৫১ জনসহ মোট ১৬৭ জন অনিয়মিত বাংলাদেশি নাগরিক বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ভোর পাঁচটায় বুরাক এয়ারের চার্টার্ড ফ্লাইট যোগে দেশে ফিরেছেন।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
এ সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার কর্মকর্তারা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাদের অভ্যর্থনা জানান।
এই ফ্লাইটে প্রত্যাবাসিতদের অধিকাংশই সমুদ্রপথে অবৈধভাবে ইউরোপ গমনের উদ্দেশে মানবপাচারকারীদের প্ররোচনায় ও সহযোগিতায় লিবিয়ায় অনুপ্রবেশ করেন। তাদের অধিকাংশই লিবিয়ায় বিভিন্ন সময়ে অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন।
ভয়ংকর পথ পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে আর কেউ যেন লিবিয়ায় না যায়, সে বিষয়ে সচেতন হওয়ার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ সময় সবাইকে অনুরোধ করেন। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার পক্ষ থেকে প্রত্যাবাসনকৃতদের প্রত্যেককে ছয় হাজার টাকা, খাদ্যসমগ্রী, চিকিৎসা সেবা এবং প্রয়োজনে অস্থায়ী বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়।
লিবিয়ার বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে আটক বাংলাদেশিদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, ত্রিপলিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
অপুষ্টিতে ভুগছে গাজার ৬০ হাজার শিশু: জাতিসংঘ

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় মানবিক পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, বর্তমানে সেখানে ৬০ হাজারের বেশি শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে।
এছাড়া বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য পানি সরবরাহের ঘাটতি সম্পর্কেও সতর্কতা উচ্চারণ করেছে সংস্থাটি। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
বার্তাসংস্থাটি জানিয়েছে, গাজা উপত্যকায় ৬০ হাজারেরও বেশি শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে এবং এই অঞ্চলে মানবিক পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হচ্ছে বলে বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ জানিয়েছে।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয়-বিষয়ক কার্যালয় (ওসিএইচএ)-এর উদ্ধৃতি দিয়ে জাতিসংঘের মুখপাত্র ফারহান হক গাজায় “গুরুত্বপূর্ণ পণ্য ও সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার জন্য ক্রসিংগুলো পুনরায় চালু করার প্রয়োজনীয়তার” ওপর জোর দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, জরুরি সহায়তা পৌঁছাতে সীমান্তগুলো খুলে দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। তিনি জানান, “যেসব কমিউনিটি কিচেন খাবার ও জ্বালানি সরবরাহ করছিল, সেগুলোর রসদ দ্রুত ফুরিয়ে আসছে।”
ফারহান হক আরও জানান, বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য পানির সরবরাহও দ্রুত কমে আসছে। তিনি বলেন, পর্যাপ্ত পানি, সাফাই সরঞ্জাম ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশের অভাবে জনস্বাস্থ্যের ওপর গুরুতর প্রভাব পড়ছে। গত মার্চ মাসে গাজার এক-তৃতীয়াংশ পরিবারে উকুনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিক জানতে চান নিরস্ত্র জরুরি কর্মীদের ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করা হলে তা কি যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে কিনা। জবাবে জাতিসংঘের এই মুখপাত্র বলেন, বিষয়টি যুদ্ধাপরাধের সংজ্ঞায় পড়ে, তবে তদন্ত চলায় তিনি সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে চান না।
তিনি জানান, মানবিক সহায়তাকারীদের ওপর হামলা আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন এবং এ বিষয়ে দায়ীদের জবাবদিহি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
এদিকে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমস সম্প্রতি একটি ভিডিও প্রকাশ করে যেখানে দেখা যায়, ইসরায়েলি বাহিনী গত ২৩ মার্চ গাজার দক্ষিণে ১৫ জন জরুরি কর্মীকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করে। ভিডিওটি উদ্ধার করা হয় নিহত এক প্যারামেডিকের মোবাইল থেকে, যাকে গণকবরে পাওয়া গিয়েছিল।
ইসরায়েল দাবি করেছিল, ওই যানগুলো “সন্দেহজনকভাবে” এগিয়ে আসছিল, কিন্তু ভিডিওতে তার বিপরীত তথ্য উঠে এসেছে।
প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৮ জন ছিল রেড ক্রিসেন্ট কর্মী, ৫ জন সিভিল ডিফেন্স কর্মী ও একজন জাতিসংঘকর্মী। এছাড়া আরও একজনের মরদেহ পরে উদ্ধার করা হয়।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বড় অংশ নারী ও শিশু।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
চীনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের সর্বমোট শুল্ক ১৪৫ শতাংশ: হোয়াইট হাউজ

যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা চীনা পণ্যের ওপর মোট শুল্ক এখন ১৪৫ শতাংশ। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে হোয়াইট হাউজ।
বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন, তিনি চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করছেন। তবে তার প্রশাসনের সাম্প্রতিক ব্যাখ্যায় জানা যায়, এই ১২৫ শতাংশের সঙ্গে আগে থেকে আরোপিত ২০ শতাংশ শুল্কও যুক্ত থাকছে। ফলে মোট শুল্ক দাঁড়াচ্ছে ১৪৫ শতাংশে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই অতিরিক্ত শুল্কের প্রভাব পড়তে পারে বহুল ব্যবহৃত প্রযুক্তিপণ্যের ওপর। গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রির জন্য তৈরি প্রায় ৮০ শতাংশ অ্যাপল পণ্যই উৎপাদিত হয় চীনে।
এর ফলে, যদি শুল্কজনিত খরচ ভোক্তার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয় তাহলে একটি আইফোনের দামই কয়েকশ ডলার পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে।
শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, ডলারের মূল্য ওঠানামার কারণে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপসহ অন্য দেশগুলোতেও আইফোনের দাম বেড়ে যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের একতরফা শুল্ক বৃদ্ধিকে ‘গুন্ডামি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে চীন। সেই সঙ্গে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগও দায়ের করেছে বেইজিং।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ একটি ভুলের ওপর আরেকটি ভুল, যা যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা দমনমূলক আচরণকেই প্রতিফলিত করে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেন, আমরা পেছাবো না। চীন উসকানিকে ভয় পাই না। তিনি কোরিয়ান যুদ্ধের সময় চীনা নেতা মাও সেতুংয়ের একটি ভিডিও শেয়ার করেন, যেখানে বলা হয়, এই যুদ্ধ যত দীর্ঘই হোক, আমরা কখনো আত্মসমর্পণ করবো না।