আন্তর্জাতিক
ব্যাংক ডাকাতি থেকে মন্ত্রিসভা, গল্পকেও যেন হার মানালেন আফ্রিকার ক্রীড়ামন্ত্রী

পকেটে ফুটো পয়সাও ছিল না। তারপরও স্বপ্ন দেখতেন কোটিপতি হওয়ার। সেই স্বপ্নের ঘোরে কৈশোরেই লুট করে নেন একটি ব্যাংক। তার পর থেকেই দারিদ্র্যের কষাঘাত আর বঞ্চনার জীবন থেকে মুক্তির উচ্চাকাঙ্ক্ষা মাথায় জেঁকে বসে গ্যাটন ম্যাকেনজির।
খুব সহজে ও দ্রুত ওপরে ওঠার সিঁড়ি হিসেবে অপরাধজগৎকে বেছে নেন দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণভিত্তিক মিশ্র জাতিগোষ্ঠীর (কালারড) এই যুবক। ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন গ্যাংস্টার।
তবে একসময় সেই অপরাধের জগৎ থেকে বের হয়ে শুরু করেন ব্যবসা-বাণিজ্য। খনি থেকে শুরু করে নাইট ক্লাব—বিনিয়োগ করেন নানা খাতের ব্যবসায়। সেখানেও আসে সাফল্য। তবে তাঁর উচ্চাকাঙ্ক্ষা আর স্বপ্ন তাঁকে পৌঁছে দিয়েছে এর চেয়েও বড় উচ্চতায়।
একসময়ের অপরাধজগতের এই নেতা জীবনযুদ্ধের নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে জায়গা করে নিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার মন্ত্রিসভায়। নতুন সরকারের অধীন দায়িত্ব পেয়েছেন ক্রীড়া, কলা ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর।
ম্যাকেনজি অবশ্য রাজনীতিতে নাম লিখিয়েছেন অনেক আগেই। গড়েছেন একটি রাজনৈতিক দলও। মিশ্র জাতিগোষ্ঠীই দলটির সবচেয়ে বড় সমর্থক।
গত ২৯ মে অনুষ্ঠিত হয় দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় নির্বাচন। দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন সিরিল রামাফোসা। তবে তাঁর নেতৃত্বাধীন আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি) এবার নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়। এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠন করেন রামাফোসা। গত রোববার তাঁর মন্ত্রিসভায় নিয়োগ দেন ম্যাকেনজিকে।
মন্ত্রী হওয়ার পর ৫০ বছর বয়সী এই রাজনীতিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) নিজের একটি ছবি পোস্ট করেছেন। ছবিতে দেখা যায়, ফুটবল খেলার পোশাকে একজোড়া বুট হাতে বসে আছেন তিনি। যেন বুটজোড়া পায়ে দিয়েই মাঠে নেমে পড়বেন। ওই ছবির শিরোনামে ম্যাকেনজি লেখেন, ‘শুভকামনা জানিয়ে পাঠানো সব বার্তার জন্য ধন্যবাদ। আমি শিগগিরই উত্তর দেব। কাজে নেমে পড়তে হবে। তাই এখন নিজেকে প্রস্তুত করতে ব্যস্ত আছি।’
ম্যাকেনজি যেভাবে সব প্রতিকূল পরিস্থিতি উতরে সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছেন, তা দক্ষিণ আফ্রিকায় নজির সৃষ্টি করেছে। ১৬ বছর বয়সে পা দেওয়ার আগেই তিনি প্রথম ব্যাংক ডাকাতি করেন। এরপর পুরোদস্তুর গ্যাংস্টার বনে যান। সাত বছর কাটান কারাগারে। সেখান থেকে মুক্তি পাওয়ার পর শপথ নেন নিজেকে বদলে ফেলার। স্থানীয় একটি রেডিও স্টেশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জীবনসংগ্রামের গল্প তুলে ধরেন তিনি।
২০১৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকাভিত্তিক পাবলিক ব্রডকাস্টার এসএবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ম্যাকেনজি বলেন, ‘আমার পকেটে হয়তো ১২ র্যান্ড (দক্ষিণ আফ্রিকার মুদ্রা) ছিল। কিন্তু আমার মনের মধ্যে ছিল বিলিয়ন র্যান্ড। আর এই বিষয়ই মানুষ বোঝার চেষ্টা করে না। তারা যা নেই, তা নিয়েই ভাবে, তা পাওয়ার জন্য কী করতে হবে, সেদিকে মনোযোগ দেয় না।’
ম্যাকেনজির বক্তব্য এখন স্থানীয় মানুষের মধ্যে ব্যাপক প্রভাব সৃষ্টি করছে, দিচ্ছে অনুপ্রেরণা। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন জায়গায় বক্তব্য দেওয়ার জন্য ডাক পাচ্ছেন। তাঁর জীবনী নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন বই।
কারাগারে ম্যাকেনজির সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় ক্যানি কুনেন নামের এক কয়েদির। পরবর্তী সময়ে তাঁর সঙ্গে মিলে দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি নাইট ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন। জিম্বাবুয়েতে শুরু করেন খনির ব্যবসা। যৌথ উদ্যোগে আরও অনেক ব্যবসা রয়েছে তাঁদের।
দক্ষিণ আফ্রিকাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আইওএলের তথ্য অনুসারে, নাইট ক্লাবটি একপর্যায়ে বন্ধ হয়ে যায়। কেপটাউনে ম্যাকেনজির নামে নিবন্ধিত ক্লাবের একটি শাখার বিরুদ্ধে ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল না দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ক্লাবটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
তখন ম্যাকেনজি বলেছিলেন, ‘ক্লাব করা নিয়ে আমি আগ্রহী নই। অন্য প্রকল্প নিয়ে আমি ব্যস্ত। আমরা জার ব্র্যান্ডের (এই ব্র্যান্ডের অধীন ক্লাবটি পরিচালিত হতো) ইতি টেনেছি। এটি নিয়ে কোনো ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নেই।’
বর্তমানে রাজনীতিবিদ হিসেবেই বেশি পরিচিত ম্যাকেনজির। ২০১৩ সালে তিনি প্যাট্রিওটিক অ্যালায়েন্স নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। বন্ধু ক্যানি কুনেনকে দেন দলের নির্বাহীর দায়িত্ব।
এক দশকের বেশি সময় পর জাতীয় নির্বাচনে মোট ভোটের ২ শতাংশ নিজেদের পক্ষে আনতে সক্ষম হয়েছে দলটি। ওয়েস্টার্ন কেপের প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে ৮ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে নিজেদের ভালো অবস্থানের জানান দেয় দলটি।
রাজনৈতিক দলটির স্লোগান—‘ওনস বাইজা নি।’ আঞ্চলিক ভাষায় ব্যবহৃত এই কথার অর্থ, ‘আমরা ভয় পাই না।’ আফ্রিকার মোট জনসংখ্যার ৮ শতাংশ মিশ্র জাতিগোষ্ঠীর। সংসদে দলটি এই জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করছে।
নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর ম্যাকেনজি বলেন, ‘প্যাট্রিওটিক অ্যালায়েন্সের হাত ধরে প্রথমবারের মতো মিশ্র জাতিগোষ্ঠীর কেউ সংসদে জায়গা করে নিল। আমরাই একমাত্র দল, যেটি সংসদে সব বর্ণের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করবে।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষক কাগিসো পোই বলেন, সাহসী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে নির্বাচনী এলাকায় ম্যাকেনজির বেশ কদর আছে।
ম্যাকেনজি মন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকার শিশুদের নিয়ে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। খেলাধুলায় শিশুদের অংশগ্রহণ বাড়ানো গেলে মাদকাসক্তি ও অপরাধের হার কমে আসবে বলে মনে করছেন তিনি।
তবে ম্যাকেনজি চেয়েছিলেন পুলিশবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। তাঁর দাবি, জীবনের একটা সময় একটি অপরাধী চক্রের নেতা ছিলেন। তাই দক্ষিণ আফ্রিকায় অপরাধের উচ্চ হার কমাতে তিনিই সবচেয়ে ভালো কিছু করতে পারেন।
এমআই

আন্তর্জাতিক
মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ বাংলাদেশি নিহত

মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় তিন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো দুইজন। শুক্রবার (১ আগস্ট) সন্ধ্যায় দেশটির পূর্ব উপকূল মহাসড়কের কেএম এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
শনিবার (২ আগস্ট) মালয়েশিয়ার দ্যা স্ট্যার নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
কুয়ান্তানের ভারপ্রাপ্ত জেলা পুলিশ প্রধান সুপারিনটেনডেন্ট মো. আদলি মাত দাউদ জানান, কুয়ান্তান থেকে কুয়ালালামপুরগামী একটি মাল্টিপারপাস যানবাহন (এমপিভি) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক থেকে ছিটকে পড়লে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতদের মধ্যে রয়েছেন—চালক মো. সাব্বির হাসান (৩০), এবং যাত্রী মো. জাহিদ হাসান (২১) ও আব্দুল্লাহ (২৪)। দুর্ঘটনাস্থলেই তারা প্রাণ হারান।
আহতরা হলেন—মো. হাবিব বিশ্বাস (৪৫) ও মনিরাম চন্দ্র বসু (৪০)। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ কর্মকর্তা আদলি মাত দাউদ আরো জানান, দুর্ঘটনায় ব্যবহৃত গাড়ির চালকের বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে।
নিহত বাংলাদেশিদের গ্রামের বাড়ি কোন জেলায় তা এখনও জানা যায়নি। নিহতদের মরদেহ কুয়ান্তানের তেঙ্কু আম্পুয়ান আফজান হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে এ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সংগঠনটি।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারিত্বের অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যে দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের লক্ষ্যে চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে তিনদিনব্যাপী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
ফ্রান্স ও সৌদি আরবের নেতৃত্বে ওই সম্মেলনের দ্বিতীয়দিন মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) এক যৌথ ঘোষণাপত্র জারি করা হয়।
এতে ১৭টি দেশ ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছে। যার মধ্যে কাতার, সৌদি আরব ও মিশরের পাশাপাশি যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, কানাডা ও আরও কয়েকটি পশ্চিমা দেশ রয়েছে।
ঘোষণাপত্রে হামাসকে গাজা শাসন থেকে সরে দাঁড়াতে এবং অস্ত্র পরিত্যাগ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে গাজায় ত্রাণ নিতে আসা মানুষের ওপর ইসরায়েলের বর্বরতা থামছেই না। প্রতিটি খাবার বহনকারী ট্রাক যেন হয়ে উঠছে মৃত্যুফাঁদ। খাবার নিতে এসে গুলিতে নিহত হচ্ছে শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বয়স্করাও। ত্রাণ নিতে গিয়ে গুলিতে প্রাণ হারানোর মধ্যে বেশিরভাগই শিশু। একেকটি ট্রাক ঘিরে পরিকল্পিতভাবে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা হয় বলে মনে করে চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত সংস্থাগুলো।
এই পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনিদের সহায়তার কথা বললেও, গাজা সফরে এসে কোনো জাতিসংঘ প্রতিনিধির সঙ্গেই সাক্ষাৎ করেননি মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ। বরং বিতর্কিত ত্রাণকেন্দ্র গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন পরিদর্শন করেছেন তিনি। জাতিসংঘ বারবার এই সংস্থার বিরুদ্ধে অযোগ্যতা ও নিরাপত্তা সংকট তৈরির অভিযোগ তুলেছে।
অন্যদিকে গাজায় হামলা বন্ধে কোনো সমাধানে পৌঁছানো যাচ্ছে না বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন ইসরায়েলের সেনাপ্রধান ইয়াল জামির।
তিনি বলেন, কয়েকদিনের মধ্যেই বোঝা যাবে যুদ্ধবিরতি হবে কিনা। একই সঙ্গে তিনি গাজায় ‘ভুয়া দুর্ভিক্ষ প্রচার’ চলছে বলেও দাবি করেন।
আন্তর্জাতিক
ভারতের ভিসা প্রসেসিং ফি বাড়ছে

ভিসা প্রক্রিয়াকরণ ফি বাড়াচ্ছে ভারত। নতুন ফি নির্ধারন করা হয়েছে ১ হাজার ৫০০ টাকা। এই বর্ধিত ভিসা ফি আগামী ১০ আগস্ট থেকে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার (আইভ্যাক)। এর আগে ভারতের ভিসার জন্য আবেদন ফি ছিল ৮০০ টাকা।
আইভ্যাক এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বিগত বছরগুলোতে উপকরণ ও পরিচালন ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে, বাংলাদেশে ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রে (আইভিএসি) জমা দেওয়া আবেদনের জন্য ভিসা প্রসেসিং ফি আগামী ১০ আগস্ট থেকে থেকে সংশোধন করে ১ হাজার ৫০০ টাকা করা হবে। এই প্রসেসিং ফি ভিসা আবেদন পরিচালনার সুবিধার্থে আইভিএসি কর্তৃক আরোপিত একটি সার্ভিস চার্জ।
আইভ্যাক আরও জানায়, ২০১৮ সালের পর ভিসা প্রসেসিং ফি এই প্রথম সংশোধন করা হলো এবং সেবার মান ও অবকাঠামোগত উন্নতি অব্যাহত রাখতে এটি প্রয়োজনীয়। বিদ্যমান নীতি অনুসারে, ভারত সরকার বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য কোনও ভিসা ফি নেয় না এবং সমস্ত বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভারতীয় ভিসা বিনামূল্যেই থাকবে।
আন্তর্জাতিক
১০১ বছর বয়সেও রোগমুক্ত জীবনযাপন করছেন তুরস্কের এই নারী

কোনো রোগ বা স্বাস্থ্য সমস্যা ছাড়াই দিব্যি জীবনযাপন করছেন দক্ষিণ তুরস্কের ১০১ বছর বয়সের এক নারী। তার নাম আয়শে উগুর। ছোটবেলা থেকেই প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ার দিকে মনোযোগ দিয়েছেন তিনি। তৈরি করা বা প্রক্রিয়াজাত খাবার নয় বরং সময়মতো ঘুমাতে যাওয়া ও সকালে তাড়াতাড়ি জেগে ওঠার অভ্যাস অনুসরণ করেছেন এই নারী।
জানা গেছে, আয়শে উগুর তার খাদ্যাভ্যাসের ওপর খুব গুরুত্ব আরোপ করেন এবং কৃত্রিম ও প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে কঠোরভাবে বিরত থাকেন। এছাড়া দুধ, মধু, গুড়, জ্যাম, ডিম, মাখন ও দইয়ের মতো প্রাকৃতিক খাদ্য দিয়ে নিজেকে পুষ্ট রাখেন। ১০১ বছর বয়সেও তিনি দাবি করেন যে তার কোনো রোগ নেই। তিনি নিজেই বাসায় খাবার প্রস্তুত করেন; নিজেই দই তৈরি করেন এবং প্রচুর শাকসবজি ও ফলমূল খান।
তিনি বলেন, “আমি সকালের নাস্তা করি। যেটা খেতে ইচ্ছা করে, সেটাই তৈরি করি। দুপুর পর্যন্ত বাসা থেকে বের হই না, কিন্তু তারপর বাইরে ছায়ায় বসি কারণ আবহাওয়া খুব গরম। আমি গরম সইতে পারি না। আমি সবসময় প্রাকৃতিকভাবে খেয়েছি। যেসব ফলমূল ও সবজি খাই, তা আমার নিজের বাগান থেকেই আসে।”
শৈশব ও যৌবনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আয়শে উগুর বলেন, “আগের দিনগুলো এখনকার চেয়ে ভালো ছিল। আমাদের ছোট খামার ও মুরগি ছিল। আমরা নিজেরাই আমাদের পণ্যের জোগান দিতাম। কিন্তু এখন সেসব দিনের অনেক কিছু আর অবশিষ্ট নেই।”
নিজের উৎপাদিত পণ্যের পাশাপাশি তিনি স্থানীয় পণ্যও গ্রহণ করেন এবং পুষ্টির ব্যাপারে সবসময় সচেতন থাকেন। তিনি বলেন, “আমার কাছে সবসময় মধু ও গুড় থাকে। আমি মাংস ভেজে ফ্রিজে রেখে দেই; যখন দরকার হয়, বের করে খাই। আমি নিজেই জ্যাম তৈরি করি। আমার বাসায় সবসময় ভাজা ও সেদ্ধ মাংস থাকে। আলহামদুলিল্লাহ, আমার যা কিছু দরকার, সবই আছে। আমার কোনো রোগ নেই। আমার ডায়াবেটিস নেই, কোলেস্টেরল নেই, উচ্চ রক্তচাপ নেই। আমি যা খাই তা আমার কোনো ক্ষতি করে না। আমার ঘুম নিয়মিত। যতটা পারি, ডিম, দুধ ও দই খাই। আমি ভালোভাবে নিজেকে পরিচালনা করছি। আমি যা পারি, তাই খাই।”
আয়শে উগুর আরও বলেন, তিনি কখনোই তার নামাজ বাদ দেন না এবং রমজানে রোজা পালন করেন। তিনি বলেন, “আমি সবসময় তাসবিহ ব্যবহার করি ও দোয়া করি। আমি কখনো ইবাদত বাদ দিই না। ঘুমানোর আগে ও ঘুম থেকে উঠেই আমি দোয়া করি।”
তিনি তার সন্তান ও নাতি-নাতনিদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে পারিবারিক সম্পর্ক, একতা ও সৌহার্দ্যের গুরুত্বের কথা বলেন।
তার ছোট ছেলে, ৫৫ বছর বয়সী নিসান উগুর বলেন, “আমরা প্রতি সপ্তাহে মায়ের কাছে যাই। কখনো তাকে একা রাখি না। তার যেকোনো প্রয়োজন আমরা পূরণ করি। তিনি যা দরকার বলেন, আমরা কিনে আনি। আমি প্রতি সপ্তাহে গ্রামে যাই মাকে দেখতে। তিনি এখন ১০১ বছর বয়সী। আমি বিশ্বাস করি, তিনি এই বয়সে পৌঁছেছেন কারণ তিনি সবসময় প্রাকৃতিক ও অর্গানিক খাবার খেয়েছেন।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের পরিবারের সবচেয়ে বড় সদস্যের বয়স ৭৫ বছর, আর আমি সবচেয়ে ছোট – ৫৫ বছর বয়সী। আমার মা সবসময় প্রাকৃতিক খাবার খেয়েছেন। তিনি সব সময় স্বাস্থ্য নিয়ে সতর্ক ছিলেন। বর্তমানে তার কোনো অসুস্থতা নেই। তার ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল বা উচ্চ রক্তচাপ নেই।”
আন্তর্জাতিক
ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্কের সঙ্গে জরিমানা বসালেন ট্রাম্প

ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা বারবার বললেও এবার কড়া বাণিজ্যিক পদক্ষেপ নিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ১ আগস্ট থেকে ভারতের রপ্তানি পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এর সঙ্গে অতিরিক্ত ‘জরিমানা’ বসানো হবে বলেও জানিয়েছেন ট্রাম্প, যদিও এ বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি তিনি।
ট্রাম্প বুধবার (৩০ জুলাই) তার নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে এই সিদ্ধান্ত জানান। তিনি লেখেন, ভারত আমাদের বন্ধু হলেও, তাদের শুল্কহার বিশ্বের সর্বোচ্চের মধ্যে একটি এবং তারা সবচেয়ে জটিল ও বিরক্তিকর অমুদ্রিত বাণিজ্য বাধাগুলো তৈরি করে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ভারত বহু বছর ধরে তাদের সামরিক সরঞ্জামের বড় অংশ এবং জ্বালানি রাশিয়া থেকে কিনছে-এমন এক সময়ে, যখন ‘বিশ্ব চায় রাশিয়া ইউক্রেনে হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করুক।’
ট্রাম্প বলেন, ভারত বিশ্বের মধ্যে অন্যতম বেশি শুল্ক আরোপকারী দেশ, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সঙ্গে তুলনামূলকভাবে কম ব্যবসা করেছে। তাই ১ আগস্ট থেকে ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে এবং রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সামরিক ও জ্বালানি বাণিজ্যের জন্য অতিরিক্ত জরিমানাও কার্যকর হবে।
চলতি বছরের এপ্রিলে প্রথমবার ভারতের ওপর উচ্চ শুল্কারোপের ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু আলোচনার সুযোগ দিতে সেটি কিছুটা কমিয়ে দেওয়া হয়। তবে আলোচনায় অগ্রগতি না হওয়ায় এবার পূর্ণহারে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।