অর্থনীতি
এসএমই ফাউন্ডেশনের নতুন এমডি আনোয়ার হোসেন
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এসএমই ফাউন্ডেশনের নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে যোগদান করেছেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব (গ্রেড-১) আনোয়ার হোসেন চৌধুরী।
সোমবার (০১ জুলাই) এসএমই ফাউন্ডেশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আনোয়ার হোসেন চৌধুরী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগ থেকে স্নাতক (সম্মান), স্নাতকোত্তর এবং নর্দান ইউনিভার্সিটি থেকে পাবলিক পলিসি অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
আনোয়ার হোসেন চৌধুরী ১৯৯৩ সালে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ১১তম ব্যাচের কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। প্রায় ৩১ বছরের দীর্ঘ সরকারি কর্মজীবনে তিনি মাঠ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন ছাড়াও জনপ্রশাসন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।
২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩-তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্রের (বিটাক) মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। বিটাকের মহাপরিচালক হিসেবে এসএমই ফাউন্ডেশনের পরিচালক পর্ষদের সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন আনোয়ার হোসেন।
সরকারি দায়িত্বের অংশ হিসেবে প্রশিক্ষণে অংশ নিতে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
আইএমএফের মিশন শুরু হচ্ছে ২৪ সেপ্টেম্বর
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মিশন ২৪ সেপ্টেম্বর শুরু হবে। যা চলবে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। সম্প্রতি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ঋণ কর্মসূচির আওতায় আরো অতিরিক্ত ৩ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। মূলত এ বিষয়টি মূল্যায়নের জন্যই আইএমএফের মিশন বাংলাদেশে আসছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্যানুসারে, আইএমএফের গবেষণা শাখার উন্নয়ন সামষ্টিক অর্থনীতি বিভাগের প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিওর নেতৃত্বে সংস্থাটির কর্মকর্তারা ২৪ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ সফর করবেন। এ সময়ে তারা অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করবেন। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর এটি আইএমএফের প্রথম মিশন। নতুন সরকারের নীতিকৌশল সম্পর্কে ধারণা নেয়ার পাশাপাশি মিশনের কর্মকর্তারা বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ঋণ কর্মসূচির আওতায় অতিরিক্ত যে ৩ বিলিয়ন ডলার চাওয়া হয়েছে সেটিও মূল্যায়ন করবেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, আইএমএফের বিদ্যমান ঋণ কর্মসূচির আওতায় ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে তিন কিস্তিতে ২২৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর নতুন করে সংস্থাটির কাছে আরো ৩ বিলিয়ন ডলার চাওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে কী ধরনের শর্ত ও সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হবে সেটি নিয়েই মূলত আলোচনা করবে আইএমএফের মিশন। পাশাপাশি নতুন সরকারের নীতিকৌশলও বোঝার চেষ্টা করবে তারা। আইএমএফের এ মিশন শেষ হওয়ার পর বিদ্যামান ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থছাড়ের আগে আরেকটি মিশন বাংলাদেশে আসবে। আগামী মাসে এ মিশন আসার কথা থাকলেও এটি পিছিয়ে নভেম্বরে চলে যেতে পারে বলে জানা গেছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ডিম, মুরগির নির্ধারিত মূল্য মানছে না ব্যবসায়ীরা
সপ্তাহ ব্যবধানে ফের অস্থির হয়ে ওঠেছে রাজধানীর নিত্যপণ্যের বাজার। বাজারে ফার্মের মুরগির ডিম এবং ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। সম্প্রতি সরকারিভাবে ডিম ও মুরগির যে দাম বেঁধে দেওয়া হয়েছে, তার চেয়েও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে এসব পণ্য।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায় সরকার নির্ধারিত দাম কার্যকর হয়নি।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির সর্বোচ্চ ১৮০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও তা বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকায়। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকায়।
এদিকে খুচরা পর্যায়ে প্রতি ডজন ডিমের সর্বোচ্চ দাম ১৪২ টাকা ৪৪ পয়সা হওয়ার কথা হলেও বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ডজন প্রতি ১৫৫ টাকায়।
এ ছাড়া দাম বেড়ে গেছে মাছ, মাংস ও শাক-সবজিসহ প্রায় প্রতিটি পণ্যের। এতে বিপাকে ভোক্তারা। তাদের মতে, শুধু সরকার পরিবর্তন হলেই চলবে না, অতিমুনাফা করার মানসিকতাও পরিবর্তন করতে হবে ব্যবসায়ীদের।
ব্যবসায়ীরা জানান, সম্প্রতি বৃষ্টি ও বন্যার কারণে ফসল, মাছ ও মুরগির খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে বাজারে কমে গেছে পণ্যের সরবরাহ। তাছাড়া সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় দাম কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী।
জানা গেছে, উৎপাদনকারী থেকে খুচরা ব্যবসায়ী কেউই মানছেন না বেঁধে দেওয়া দাম। বরং আমিষ জাতীয় খাদ্যপণ্য দুটি আগের চেয়ে বাড়তি দমে কিনতে হচ্ছে ভোক্তাদের।
এদিকে, দর বাড়ার ব্যাপারে খোঁড়া যুক্তি দেখিয়ে একপক্ষ দোষ চাপাচ্ছেন আরেক পক্ষের ওপর। পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, দর নির্ধারণের আগে সরকার কোনো পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেনি। উৎপাদন না বাড়িয়ে দর নির্ধারণ করলে তা বাস্তবায়ন হবে না।
আর খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজারে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে, যে কারণে বেঁধে দেওয়া দামের মধ্যে তারা বিক্রি করতে পারছেন না।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ঋণ-আমানত দুটোই বেড়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে
তারল্য সংকটের মধ্যে দিয়ে চলা ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) খাতে এক বছরের ব্যবধানে আমানতের পাশাপাশি ঋণের স্থিতি বেড়েছে। গত জুন শেষে এ খাতে তিন লাখ ৭৯ হাজার ৭৩৭টি হিসেবে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার ১১৬ কোটি টাকা।
এ অংক আগের বছরের চেয়ে ৪৩৩ কোটি টাকা বা দশমিক ৯৫ শতাংশ বেশি। গত মার্চ প্রান্তিক শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে আমানতের পরিমাণ ছিলো ৪৪ হাজার ৩০৪ কোটি টাকা। সে হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে এ খাতে আমানত বেড়েছে ৮১২ কোটি টাকা বা ১ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুন শেষে এ খাতে ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৭৪ হাজার ৯১৮ কোটি টাকা। এর আগের বছরের একই সময়ে যা ছিলো ৭২ হাজার ৪৩৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ ঋণ স্থিতি বেড়েছে ২ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা বা ৩ দশমিক ৩০ শতাংশ।
প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের জুনের চেয়ে চলতি বছরের জুন শেষে স্থায়ী আমানতের পরিমাণ বেড়েছে ৪৫৭ কোটি টাকা বা ১ দশমিক ০৪ শতাংশ। ২০২৪ সালের জুন শেষে স্থায়ী আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৩ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা।
মোট আমানতের মধ্যে ৪১ হাজার ৭৩৫ কোটি টাকা বা ৯২ দশমিক ৫০ শতাংশই ঢাকা বিভাগের। আর সর্বনিম্ন ৬৯ কোটি টাকার আমানত রয়েছে বরিশাল বিভাগে, যা মোট আমানতের শূন্য দশমিক ১৫ শতাংশ।
আমানতের মত ঋণের সিংহভাগও ঢাকা বিভাগে। গত জুন শেষে মোট ঋণের মধ্যে ৬২ হাজার ৫০৩ কোটি টাকা বা ৮৩ দশমিক ৪২ শতাংশ ঢাকা বিভাগেই দেওয়া হয়েছে।
সবচেয়ে কম ঋণ স্থিতিও বরিশাল বিভাগে, ৩৯০ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের শূন্য দশমিক ৫২ শতাংশ।
বর্তমানে সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ৩৫টি ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মোট ৩০৮টি শাখা রয়েছে, যার ২৮৭টি শহর এলাকায়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বিদেশ থেকে এমডির পদত্যাগ, ইউসিবির আর্থিক চিত্র যাচাইয়ে ৭ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান
সরকার পরিবর্তনের পর ১৫ দিনের ছুটি নিয়ে দেশের বাইরে যান ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ কাদরী। তবে ছুটি শেষ হলেও দেশে না ফিরে গত ১১ সেপ্টেম্বর তিনি বিদেশ থেকে ই-মেইলে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। এদিকে ইউসিবির প্রকৃত আর্থিক চিত্র যাচাই করে দেখতে সাতটি প্রতিষ্ঠানকে নিরীক্ষার দায়িত্ব দিয়েছে পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদ। আগামী অক্টোবরে এই নিরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, ইউসিবির চেয়ারম্যান ছিলেন সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদের স্ত্রী রুখমিলা জামান চৌধুরী। বিদেশে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিপুল সম্পদ থাকার খবর ও শেয়ারধারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির পর এই ব্যাংকের পর্ষদে পরিবর্তন আনে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। সাইফুজ্জামান ২০১৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের ভূমিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তবে বিদেশে বিপুল সম্পদ থাকার কারণে চলতি বছরের শুরুতে গঠিত নতুন আওয়ামী লীগ সরকারে সাইফুজ্জামানকে মন্ত্রী করা হয়নি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ইউসিবি সূত্রে জানা গেছে, সরকার পরিবর্তনের পর গত ১৪ আগস্ট এই ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আরিফ কাদরী ১৫ দিনের ছুটি নিয়ে বিদেশে যান। এর অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। বিদেশে থেকেই তিনি ছুটি বাড়িয়ে নেন। ১০ সেপ্টেম্বর ছুটি শেষ হওয়ার পরদিন তিনি বিদেশ থেকে ই–মেইলে পদত্যাগপত্র পাঠান। এরপর ব্যাংকটির অতিরিক্ত এমডি সৈয়দ ফরিদুল ইসলামকে চলতি দায়িত্বে এমডি করা হয়। এরই মধ্যে পরিচালনা পর্ষদ এনসিসি ব্যাংকের সাবেক এমডি মোহাম্মদ মামদুদুর রশীদকে এমডি পদে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। মামদুদুর রশীদ একসময় ইউসিবির অতিরিক্ত এমডি ছিলেন।
এদিকে ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর থেকে ব্যাংকটির ডিএমডি আলমগীর কবির অফিস করছেন না। তিনি সম্পর্কে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ভাই হন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, আরিফ কাদরীর পদত্যাগ ও মোহাম্মদ মামদুদুর রশীদের নিয়োগ এখন অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। তবে বিদেশ থেকে পদত্যাগপত্র দেওয়ায় আরিফ কাদরীর পদত্যাগ বিনা প্রশ্নে অনুমোদন হবে, নাকি তাঁকে জবাবদিহি করতে হবে, সে ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি।
এবিষয়ে ইউসিবির অতিরিক্ত এমডি ও কোম্পানি সচিব এ টি এম তাহমিদুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, এমডি পদত্যাগ করেছেন। তা বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে।
ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, যেসব ব্যাংকে বড় ধরনের অনিয়ম হয়েছে, সেগুলোর সাবেক পরিচালক ও শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিদেশ যাত্রা আটকে না দিলে অনিয়মের প্রকৃত তথ্য উদ্ঘাটন করে বিচার করা কঠিন হয়ে পড়বে। এ ব্যাপারে এখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ইউসিবিকে সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ ও তাঁর পরিবারের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন ব্যাংকটির শেয়ারধারীরা। তখন তাঁরা বিভিন্ন ধরনের ফেস্টুন প্রদর্শন করে সাইফুজ্জামানের বিরুদ্ধে ‘বিদেশে অর্থ পাচার’ ও ব্যাংকে নানা অনিয়ম করার অভিযোগ তোলেন। বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো এক চিঠিতে ব্যাংকটির কিছু শেয়ারধারী জানান, কাগজপত্রে স্ত্রী রুখমিলা জামান ইউসিবির চেয়ারপারসন হলেও বাস্তবে স্বামী সাইফুজ্জামান চৌধুরীই এ দায়িত্ব পালন করতেন। তাঁর স্বেচ্ছাচারিতা ও লুটপাটের কারণেই ব্যাংকটি আজ দেউলিয়া হওয়ার পথে। ওই চিঠিতে আরও অভিযোগ করা হয়, যুক্তরাজ্যে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ১ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে, যা এই ‘ব্যাংকের আমানতকারীদের টাকা লুট করে পরিশোধ করা হয়েছে।
গত ২৭ আগস্ট ইউসিবির পর্ষদ ভেঙে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন চেয়ারম্যান করা হয় ব্যাংকটির উদ্যোক্তা প্রতিনিধি শরীফ জহীরকে। পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান শেয়ারধারী মো. তানভীর খান। স্বতন্ত্র পরিচালক করা হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. সাজ্জাদ হোসেন, অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ডিএমডি মো. ইউসুফ আলী ও হিসাববিদ ওবায়দুর রহমানকে।
ইউসিবির নতুন পরিচালনা পর্ষদ প্রতিষ্ঠানটির ঋণ, বিনিয়োগ, কেনাকাটা, মানবসম্পদসহ সব ধরনের কার্যক্রম খতিয়ে দেখতে নিরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেয়। এ জন্য সাতটি নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান এখন ব্যাংকটিতে নিরীক্ষা চালাচ্ছে। এতে ব্যাংকের প্রকৃত আর্থিক চিত্র বেরিয়ে আসবে বলে পর্ষদ ও কর্মকর্তারা আশা করছেন।
এদিকে, কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সম্প্রচারমাধ্যম আল-জাজিরার এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ শুধু যুক্তরাজ্যেই ৩৬০টি বাড়ির মালিক। এর বেশির ভাগই বার্কলি গ্রুপের মতো এই খাতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কেনা। বাড়িগুলোর বর্তমান বাজারমূল্য ৩২ কোটি মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এই অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ হাজার ৮২৪ কোটি টাকার বেশি (প্রতি ডলার ১১৯ টাকা ৫০ পয়সা ধরে)। এর বাইরে যুক্তরাষ্ট্র আর দুবাইয়েও তাঁর সম্পদ রয়েছে। গত বুধবার রাতে ‘দ্য মিনিস্টার্স মিলিয়নস’ শিরোনামে ওই অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে আল-জাজিরা। অনুসন্ধান করেছে আল-জাজিরার অনুসন্ধানী দল ‘আই ইউনিট’।
আল–জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান লন্ডনের বাইরে দুবাইয়ে ২০২০ সালের মধ্যে অন্তত ৫৪টি সম্পদের মালিক হন। যুক্তরাষ্ট্রেও তাঁর সম্পদ আছে। সেখানে তিনি ৯টি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছেন। এর মধ্যে ৫টি ম্যানহাটানসহ নিউইয়র্কের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় এবং ৪টি নদীর ওপারে নিউ জার্সিতে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সাইফুজ্জামান চৌধুরী দেশের বাইরে এত বিপুল পরিমাণ সম্পদ গড়ে তোলার তথ্য তাঁর নির্বাচনী হলফনামা ও ট্যাক্স ফাইল তথা আয়কর নথিতে গোপন করেছেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সরকারি ৬ ব্যাংকের এমডিকে অপসারণ
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ছয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) একসঙ্গে অপসারণ করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
অপসারণ করা ব্যাংক এমডিরা হলেন সোনালী ব্যাংকের এমডি মো. আফজাল করিম, জনতা ব্যাংকের এমডি মো. আবদুল জব্বার, অগ্রণী ব্যাংকের এমডি মো. মুরশেদুল কবীর, রূপালী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, বেসিক ব্যাংকের এমডি মো. আনিসুর রহমান ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (বিডিবিএল) এমডি মো. হাবিবুর রহমান গাজী। ছয়টি ব্যাংকের চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে এমডির সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি বাতিলের বিষয়টি জানানো হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের চিঠি প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর এমডি নিয়োগ দেয়া হয় চুক্তিভিত্তিক। আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে পাঠানো চিঠিতে চুক্তির অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিলের বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবে নতুন এমডির বিষয়ে চিঠিতে কিছু বলা হয়নি।
এসএম