অর্থনীতি
কর অবকাশ সুবিধা পুনর্বহাল করে প্রজ্ঞাপন, আজ থেকে কার্যকর
![কর অবকাশ সুবিধা পুনর্বহাল করে প্রজ্ঞাপন, আজ থেকে কার্যকর মনোস্পুল পেপার](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2022/09/nbr.jpg)
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণে কর অবকাশ সুবিধা পুনর্বহাল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। গত বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) এই বাজেটে প্রণোদনা সুবিধা বহাল রেখে এনবিআর প্রজ্ঞাপন জারি করে। যা আজ সোমবার (১ জুলাই) থেকে কার্যকর হবে।
এর আগে, রবিবার (৩০ জুন) সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট পাস হয়েছে।
এর আগে ২৯ মে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগকারীদের কর অবকাশ (প্রণোদনা) সহ মোট ৮টি সুবিধা রহিত করেছিল। এখন সেটা পুনর্বহাল করা হয়েছে। আর সেই সাথে কোম্পানির ১০ বছরের জন্য লভ্যাংশ, মূলধনি আয়, টেকনিক্যাল নো-হাউ এবং কারিগরি সহায়তা ফির ওপর ১০ বছরের কর অব্যাহতি ছিল সেটাও পুনর্বহাল করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এস, আর, ও নং ২৪৪-আইন/আয়কর-৩৮/২০২৪ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আয়কর আইন-২০২৩ (২০২৩ সালের ১২ নং আইন), উক্ত আইনের ধারা ৭৬ এর উপ-ধারা (১) এ ক্ষমতাবলে শর্তসাপেক্ষে অর্থনৈতিক অঞ্চল আইন-২০১০ (২০১০ সালের ৪২ নং আইন) এর ধারা ৫ এর অধীনে অর্থনৈতিক অঞ্চলে পণ্য উৎপাদন বা সেবা প্রদানের জন্য কেবল অর্থনৈতিক অঞ্চলে পরিচালিত ব্যবসার মাধ্যমে অর্জিত আয়ের উপর ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরুর তারিখ হতে ১ম, ২য় ও ৩য় বছরের জন্য ১০০ শতাংশ, ৪র্থ বছরের জন্য ৮০ শতাংশ, ৫ম বছরের জন্য ৭০ শতাংশ, ৬ষ্ঠ বছরের জন্য ৬০ শতাংশ, ৭ম বছরের জন্য ৫০ শতাংশ, ৮ম বছরের জন্য ৪০ শতাংশ, ৯ম বছরের জন্য ৩০ শতাংশ এবং ১০ম বছরের জন্য ২০ শতাংশ হারে আয়কর হতে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
শর্তগুলো হলো:
১. কোম্পানি আইন-১৯৯৪ (১৯৯৪ সালের ১৮ নং আইন) এর অধীনে নিবন্ধিত নতুন কোম্পানি এবং কোম্পানির কোনো ইউনিট হতে পারবে না।
২. ব্যবসার পুনর্গঠন, মার্জার, ডিমার্জারের ফলশ্রুত কোম্পানি হতে পারবে না।
৩. ইতোপূর্বে পণ্য বা সেবা উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়েছে এ রকম কোনো মেশিন, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি অর্থনৈতিক অঞ্চলের কোনো শিল্প ইউনিট স্থাপনে ব্যবহার করা যাবে না।
৪ .অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাহিরে কোনো শিল্প ইউনিট পরিচালনা করতে পারবে না । সম্পূর্ণভাবে অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে থাকতে হবে।
৫. বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বা ট্রেডিং কোম্পানি হতে পারবে না।
৬ বোর্ডের নিকট অব্যাহতির উপযুক্ত শিল্প হিসেবে বিবেচিত হতে হবে।
৭. অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত যেসব প্রতিষ্ঠান ভোজ্য তেল, চিনি, আটা, ময়দাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি উৎপাদন এবং সিমেন্ট, লোহা ও লৌহজাতীয় পণ্য উৎপাদন করে আয় করে সেসব প্রতিষ্ঠান এই প্রজ্ঞাপনের সুবিধা পাবে না।
৮. প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু বছর হতে ১০ বছর পর্যন্ত হ্রাসকৃত কর সুবিধা ভোগ করতে পাবে।
৯. এই প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী অব্যাহতি পাওয়া কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান এই প্রজ্ঞাপনে বর্ণিত কোনো শর্ত বা শর্তাবলি পালনে ব্যর্থ হলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড তার অনুমোদন প্রত্যাহার করে নিবে।
১০. আয়কর আইনে-২০২৩ (২০২৩ সালের ১২ নং আইন) এর ধারা ৭৬ এর উপ-ধারা (৫) এবং (৬) সহ অন্যান্য বিধানাবলি পালন করতে হবে।
১১. কোনো আয়বর্ষে সরকারের কোনো কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রতিষ্ঠানটির উপর পরিবেশ সংশ্লিষ্ট আইন ভঙের দায়ে জরিমানা আরোপ করলে সংশ্লিষ্ট করবর্ষে প্রতিষ্ঠানটি এই প্রজ্ঞাপনে কর অব্যাহতি পারে না।
১২. ২০৩৫ সালের ৩০ জুনের মধ্যে কোনো প্রতিষ্ঠান ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করতে ব্যর্থ হলে এই প্রজ্ঞাপনের অধীন কোনো প্রকার অব্যাহতি সুবিধা পাবে না।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এস, আর, ও নং ১০৪-আইন/আয়কর/২০২০ (২৫ মার্চ, ২০২০) ও এস, আর, ও নং ১৫৯-আইন/আয়কর-৩৪/২০২৪ (২৯ মে, ২০২৪) এতদ্বারা রহিত করা হলো। প্রজ্ঞাপনের অধীন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত হবে বা হয়েছে সেই সব প্রতিষ্ঠানকে অনুচ্ছেদ ১ এর শর্ত (ক) তে উল্লিখিত শর্ত কার্যকর হবে না।
(ক) বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল আইন-২০১০ (২০১০ সালের ৪২ নং আইন) এর ধারা ৫ এর অধীন ঘোষিত অর্থনৈতিক অঞ্চলে স্থাপিত কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান বা কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানের ইউনিট যারা ৩০ জুন ২০২৪ এর মধ্যে ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করেছে।
খ) বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল আইন-২০১০ (২০১০ সালের ৪২ নং আইন) এর ধারা ৫ এর অধীন ঘোষিত অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্প বা শিল্প ইউনিট স্থাপনের উদ্দেশ্যে যারা ৩০ জুন ২০২৪ এর মধ্যে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের সহিত চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, এস, আর, ও নং ২৪৫-আইন/আয়কর-৩৯/২০২৪ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, আয়কর আইন-২০২৩ (২০২৩ সালের ১২ নং আইন), আইনে উল্লিখিত ধারার ৭৬ এর উপ-ধারা (১) এ ক্ষমতাবলে শর্তসাপেক্ষে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ আইন-২০১০ (২০১০ সালের ৮নং আইন) এর ধারা ২২ এর বিধান অনুযায়ী হাই-টেক পার্কে পণ্য উৎপাদন বা সেবা প্রদান করে অর্জিত আয়ের উপর ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরুর ১ম, ২য়, ৩য়, ৪র্থ, ৫ম, ৬ষ্ঠ ও ৭ম বছররের জন্য ১০০% এবং ৮ম, ৯ম ও ১০ম বছরের জন্য ৭০% হারে আয়কর হতে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
শর্তগুলো হলো:
১. কোম্পানি আইন-১৯৯৪ (১৯৯৪ সালের ১৮ নং আইন) এর অধীন নিবন্ধিত নতুন কোম্পানি হবে।
২. ব্যবসার পুনর্গঠন, মার্জার, ডিমার্জার এর ফলশ্রুত কোম্পানি হতে পারবে না।
৩. ইতোপূর্বে পণ্য বা সেবা উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়েছে এ রকম কোনো মেশিন, যন্ত্রপাতি, ইত্যাদি অর্থনৈতিক অঞ্চলের কোনো শিল্প ইউনিট স্থাপনে ব্যবহার করা যাবে না।
৪. হাই-টেক পার্কের বাহিরে কোনো শিল্প ইউনিট পরিচালনা করতে পারবে না।
৫. বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বা ট্রেডিং কোম্পানি হতে পারবে না।
৬. বোর্ডের নিকট হাই-টেক শিল্প হিসেবে বিবেচিত হতে হবে।
৭.আয়কর আইন-২০২৩ (২০২৩ সালের ১২ নং আইন) এর ধারা ৭৬ এর উপ-ধারা (৫) এবং (৬) সহ অন্যান্য বিধানাবলি পালন করতে হবে।
৮) প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরুর বছর থেকে ১০ বছর পর্যন্ত এই হ্রাসকৃত করহারের সুবিধা পাবে।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
![](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2023/02/Logo_OS_250_72.webp)
অর্থনীতি
আয়ুর্বেদিক-হোমিওপ্যাথিক ওষুধশিল্পের উন্নয়নে নীতিমালা দাবি
![আয়ুর্বেদিক-হোমিওপ্যাথিক ওষুধশিল্পের উন্নয়নে নীতিমালা দাবি মনোস্পুল পেপার](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2024/07/FBCCI.jpg)
আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথিক ওষুধশিল্পের বিকাশ, উন্নয়ন এবং রপ্তানি সম্ভাবনা কাজে লাগাতে সরকারের নীতি সহায়তা চেয়েছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা। এসময় তারা দেশে আয়ুর্বেদিক এবং হোমিওপ্যাথিক ওষুধ তৈরির উপকরণ ও কাঁচামাল সহজলভ্য করা, বিলুপ্ত প্রায় ঔষধি গাছ সংরক্ষণ এবং ভেষজ বনায়ন গড়ে তোলার দাবি জানান। পাশাপাশি হারবাল পণ্যের ব্র্যান্ডিং, পণ্য উন্নয়ন, মান নিয়ন্ত্রণসহ প্রযুক্তির প্রয়োগ ও গবেষণায় সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগের আহ্বান জানান।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) মতিঝিলে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়ুর্বেদিক এবং হোমিওপ্যাথিক ওষুধশিল্প বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় এ আহ্বান জানান ব্যবসায়ী নেতারা।
সভায় সভাপতিত্ব করেন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ হারবাল প্রোডাক্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. আলমগীর মতি। কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এফবিসিসিআই পরিচারক এবং ইউনিভার্সেল টেকনোলজি বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়্যারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী।
প্রধান অতিথি হিসেবে সভায় ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম। তিনি বলেন, আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথিক খাতের বাণিজ্যিক এবং রপ্তানি সম্ভাবনা কাজে লাগাতে এফবিসিসিআই নীতিগত সহায়তা দেবে। এ খাতের প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করে তার সমাধানে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা করার আশ্বাস দেন তিনি। এজন্য আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথিক শিল্পের উদ্যোক্তাদের কাছে যৌক্তিক প্রস্তাবনা আহ্বান করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, হারবাল ওষুধ, খাদ্যদ্রব্য এবং কসমেটিকস শিল্পে শতভাগ স্থানীয় ভ্যালু অ্যাডিশনের সুযোগ রয়েছে। সারাবিশ্বেই হারবাল এবং হালাল পণ্যের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এই বাজার ধরতে হলে উদ্যোক্তাদের প্রযুক্তি ও গবেষণায় বিনিয়োগে মনযোগী হতে হবে। এ সময় আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথিক শিল্পের টেকসই উন্নয়নে সব অংশীজনকে সঙ্গে নিয়ে দ্রুত একটি কৌশলপত্র তৈরির উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথিক ওষুধশিল্পের মেডিকেল রেকর্ড এবং ডেটা কালেকশনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ প্রীতি চক্রবর্তী। হারবাল পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণেও এ খাতের উদ্যোক্তাদের দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আয়ুর্বেদিক শিল্পের অবকাঠামো, হিমাগার ও সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নয়ন এবং সরকারি উদ্যোগে সারা দেশে ঔষধি বনায়ন গড়ে তোলার ওপর আলোকপাত করেন কমিটির চেয়ারম্যান ডা. আলমগীর মতি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
চট্টগ্রাম কাস্টমসের সাড়ে ৬৮ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়
![চট্টগ্রাম কাস্টমসের সাড়ে ৬৮ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় মনোস্পুল পেপার](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2022/08/chittagong-customs-1.jpg)
বৈশ্বিক অর্থনীতিতে নানা সংকটের মাঝেও গত অর্থবছরে (২০২৩-২০২৪) রেকর্ড রাজস্ব আদায় করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস। সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে ৬৮ হাজার ৫৬২ কোটি ৭২ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে।
২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের তুলনায় রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৯ দশমিক ৪২ শতাংশ। তবে কাস্টমসের মোট রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ কম প্রবৃদ্ধি হয়েছে। টাকার হিসেবে ৯ হাজার ৫৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা কম রাজস্ব আদায় হয়েছে।
কাস্টমস কর্তারা বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন ও ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধসহ বৈশ্বিক অর্থনীতিতে অস্থিরতা বিরাজ করছে। ডলার সংকটে কারণে অনেক ব্যবসায়ী প্রত্যাশা মতো ব্যাংকে ঋণপত্র (এলসি) খুলতে পারেনি। এছাড়া সরকারও বিভিন্ন বিলাসী পণ্য আমদানিতে উচ্চ শুল্ক আরোপ করেছে। যার প্রভাবে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আয় করতে পারেনি কাস্টমস। নানা সংকটের মাঝেও রাজস্ব আদায় বেড়েছে তা ইতিবাচক।
চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩–২০২৪ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৭৭ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা। আদায় হয় ৬৮ হাজার ৫৬২ কোটি ৭২ লাখ টাকা।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম কাস্টমসে ২০২০–২০২১ অর্থবছরের প্রথমবারের মতো ৫১ হাজার কোটি রাজস্ব আদায় হয়। পরের অর্থবছরের ২০২১–২০২২ অর্থবছরের আদায় হয় ৫৯ কোটি টাকা এবং ২০২২–২০২৩ অর্থবছরে ৬১ হাজার ৪৬৪ কোটি ৭২ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপ–কমিশনার মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমসে সমাপ্ত অর্থবছরে ৬৮ হাজার ৫৬২ কোটি ৭২ লাখ রাজস্ব আদায় হয়েছে। তবে আমাদের রাজস্ব আদায় আরও কিছু বাড়বে। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানের আদায়ে হিসাব এখনো সন্নিবেশিত করা হয়নি। সেটি যোগ হলে প্রায় ৬৯ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হতে পারে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এক বছরে রিজার্ভ থেকে বিক্রি ১৩ বিলিয়ন ডলার
![এক বছরে রিজার্ভ থেকে বিক্রি ১৩ বিলিয়ন ডলার মনোস্পুল পেপার](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2023/09/dollar-1.jpg)
আমদানির দায় পরিশোধে সহায়তা দিতে গত অর্থবছরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গেল ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাজারে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিক্রির পরিমাণ ১২ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন বা ১ হাজার ২৬৯ কোটি ডলার। স্থানীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ৫২ হাজার কোটি টাকা। এ নিয়ে গত তিন অর্থবছরে বাংলাদেশ বিক্রি করেছে প্রায় ৩৪ বিলিয়ন ডলার।
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ বাজারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার বিক্রি। গ্রস রিজার্ভ এখন ২১ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার। তিন বছর আগে যা ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ওপরে ছিল। আর নিট রিজার্ভ ১৬ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। কিছু বৈদেশিক ঋণের অর্থ যোগ হওয়ায় গত কয়েক দিনে রিজার্ভ কিছুটা বেড়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আমদানি কমানো, অন্যদিকে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধির ফলে বহির্বিশ্বের সঙ্গে লেনদেনে দেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত রয়েছে। তবে বিদেশি ঋণ ও বিনিয়োগ কমা এবং আগের ঋণ পরিশোধের চাপের কারণে আর্থিক হিসাবে বড় ঘাটতি রয়েছে। সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যের ওপর যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এ কারণে ডলার সংকটের তেমন উন্নতি হয়নি। ব্যাংকগুলোর সংকট সামাল দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে প্রচুর ডলার বিক্রি করছে। বেশির ভাগ ডলার দেওয়া হয়েছে সরকারি খাতের জ্বালানি, সার ও খাদ্য আমদানির দায় মেটাতে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিক্রি করেছিল ১ হাজার ৩৫৮ কোটি ডলার। তার আগের অর্থবছরে বিক্রি করে ৭৬২ কোটি ডলার। ২০২১ সালের আগস্টের আগ পর্যন্ত ডলারের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি ছিল। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে পরিমাণ ডলার বিক্রি করে, তার চেয়ে বাজার থেকে কিনতে হয়েছে বেশি। ফলে ওই সময় রিজার্ভ দ্রুত বাড়ে। ২০২০-২১ অর্থবছরে বাজারে ২৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার বিক্রির বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিনেছিল ৭৯৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, করোনার মধ্যে মানুষের চলাচল সীমিত থাকায় হুন্ডি কমে রেমিট্যান্স অনেক বেড়েছিল। ওই সময়ে বৈশ্বিক চাহিদা কম থাকায় সুদহার তলানিতে নামে। তখন বাংলাদেশ বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণ আরও বাড়ানোর নীতি নেয়। এতে করে রিজার্ভ দ্রুত বাড়ে। এখন সেই দায় পরিশোধে চাপে পড়েছে দেশ। আবার ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ের ৮৪ থেকে ৮৫ টাকার ডলার এখন ১১৮ থেকে ১২০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। একদিকে সুদহার বৃদ্ধি, আরেকদিকে ডলারের দর বেড়ে যাওয়ায় ব্যাপক চাপ তৈরি হয়েছে।
চলমান সংকটের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে রেমিট্যান্স বৃদ্ধি ও আইএমএফসহ বিভিন্ন বিদেশি সংস্থার ঋণ। গত বৃহস্পতিবার আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের ১১৫ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। আবার আইডিবি, বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন সংস্থা থেকে পাওয়া গেছে আরও ৯০ কোটি ডলার। গত জুন মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে মোট ২৫৪ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় দেশে এসেছে। গত ৪৭ মাসের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। সব মিলিয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট ২ হাজার ৩৯১ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। আগের অর্থবছরের তুলনায় যা ২৩০ কোটি ডলার বা ১০ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেশি। সব মিলিয়ে রিজার্ভের সামান্য উন্নতি হয়েছে।
রিজার্ভ আসলে কত
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের এখন তিনটি হিসাব করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আইএমএফের ঋণের শর্ত মেনে গত বছরের জুলাই থেকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পদ্ধতি বিপিএম৬ ম্যানুয়াল অনুযায়ী রিজার্ভের হিসাব প্রকাশ করতে হচ্ছে। সে অনুযায়ী জুন শেষে গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার। আর নিট রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার। আগের পদ্ধতি অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের জুন শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব গণনা পদ্ধতি অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ৩১ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। এর মানে এক বছরে রিজার্ভ কমেছে আরও ৪ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার। ওই সময় বিপিএম৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২৪ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। সে অনুযায়ী কমেছে ২ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার। দেশের ইতিহাসে ২০২১ সালের আগস্টে রিজার্ভ উঠেছিল সর্বোচ্চ ৪৮ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলার।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ফিনটেক সেক্টরে বিনিয়োগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি প্রতিমন্ত্রীর আহ্বান
![ফিনটেক সেক্টরে বিনিয়োগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি প্রতিমন্ত্রীর আহ্বান মনোস্পুল পেপার](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2024/06/Wasika-Ayesha-Khan.jpg)
বাংলাদেশে ফিন্যান্সিয়াল টেকনোলজি (ফিনটেক) সেক্টরে বিনিয়োগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান। তিনি বলেছেন, সরকার বেসরকারি খাতের সহযোগী হয়ে দেশের উন্নয়নে কাজ করছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল ও ব্যবসায়িক পরিবেশ ভালো। এজন্য বাংলাদেশে ব্যবসা করা সহজ।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) ঢাকায় ওয়েস্টিন হোটেলে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ আয়োজিত ড্রাইভিং ফিন্যানসিয়াল ইনক্লুশন ফর স্মার্ট বাংলাদেশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং উন্নয়ন সহযোগী। বাংলাদেশের বৃহত্তম রপ্তানি ও বৈদেশিক বিনিয়োগের ও উৎস যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন কোম্পানি, মাস্টারকার্ড এবং ভিসা বাংলাদেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং ক্যাশলেস সোসাইটি তৈরিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে।
অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল পেমেন্টকে উৎসাহিত করতে সরকার বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ক্যাশলেস লেনদেন ২০২৫ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ এবং ২০৩১ সালের মধ্যে শতভাগ অর্জনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২৬ সালের মধ্যে শতভাগ মানুষকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় আনার লক্ষ্য নিয়ে জাতীয় আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কৌশল ২০২১-২০২৬ বাস্তবায়ন করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে চলতি অর্থবছরের বাজেটে এ কার্যক্রমের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
এক ব্যবসায়ীর প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন,‘ব্যাংকের সুদহার বাজারভিত্তিক করা হচ্ছে এবং মুদ্রা বিনিময় হার পদ্ধতিতেও পরিবর্তনটা আনা হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে এর ইতিবাচক ফল পেতে শুরু করেছি। জুন মাসে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স এসেছে।’
তিনি বলেন, সুদহার যখন নয়-ছয় ছিল সেসময় আমরা খেলাপি হওয়ার মতো অনেক ঘটনা দেখেছি। ব্যবসার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অর্থায়ন সরবরাহে বাজারভিত্তিক সুদহার কেমন হয়, সেটা দেখার জন্য আরও কিছুটা সময় দেওয়ার প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, অ্যামচ্যামের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য, আমচামের নির্বাহী পরিচালক, দূতাবাস এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, এবং অন্যান্য ব্যবসায়ী সংস্থার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রপ্তানি উন্নয়নে ইপিবির বড় ভূমিকা আছে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
![রপ্তানি উন্নয়নে ইপিবির বড় ভূমিকা আছে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী মনোস্পুল পেপার](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2024/05/Ahsanul-Islam-2.jpg)
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) দায়িত্বশীল ভূমিকায় দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের উন্নতি হচ্ছে। দেশের ৬৩ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি একটা সময় অবিশ্বাস্য ছিল। সরকারের লক্ষ্য পরের ৩ অর্থবছরে রপ্তানি ১১০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা। সে লক্ষ্য পূরণে পরিবর্তন ও সহযোগিতা লাগবে। রপ্তানির সংখ্যার তুলনায় কীভাবে স্থানীয় রিসোর্স ব্যবহার করা যায়, কত বেশি কর্মসংস্থান করা যায় সেদিকে লক্ষ্য দিতে হবে।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর টিসিবি ভবনের রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর কনফারেন্স রুমে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর পরিচালনা পর্ষদের ১৪৬তম সভায় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু আরও বলেন, আগামীতে পণ্যের সেক্টর করে আলাদা করে মেলা করতে হবে। মেলায় দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে, এতে করে মেলার উদ্দেশ্য পূরণ হবে। আগামী সেপ্টেম্বরে পূজার সময়ে কলকাতায় দেশীয় শাড়ির মেলা করা হবে।
এ সময় পর্ষদের সদস্য হিসেবে হামিম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম, ডিসিসিআইয়ের সভাপতি আশরাফ আহমেদ, এমসিসিআইয়ের সভাপতি কামরান টি রহমান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এমআই