জাতীয়
হলি আর্টিজান হামলার ৮ বছর আজ

দেশের ইতিহাসে অন্যতম নৃশংস ঘটনা হলো হলি আর্টিজানে সন্ত্রাসী হামলা। ২০১৬ সালের ১ জুলাই (শুক্রবার)। রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে খবর পাওয়া যায় রাজধানীর গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কের হোলি আর্টিজান বেকারিতে ‘সন্ত্রাসীদের সঙ্গে’ পুলিশের গোলাগুলি হচ্ছে। সশস্ত্র হামলাকারী এক রেস্টুরেন্টে ঢুকে বিদেশী নাগরিকসহ বেশ কয়েকজনকে জিম্মি করেছে। ভয়াবহ এ হামলায় নৃশংস হত্যাযজ্ঞ এবং প্রায় ১২ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস জিম্মি সংকটের ঘটনায় স্তম্ভিত করেছিল পুরো জাতিকে।
ওই দিনের হামলায় মোট ২২ জন নিহত হন। এর মধ্যে ২ পুলিশ কর্মকর্তা ও ১৭ বিদেশি নাগরিক ছিল। ওই দিন পুরো রাত স্পর্শকাতর বিবেচনায় কয়েকবার প্রস্তুতি নেয়া সত্ত্বেও অভিযান চালোনো থেকে বিরত থাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
হলি আর্টিজানে হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ফোর্সসহ প্রথমে পৌঁছান গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রিপন কুমার দাস।
মামলার এজাহারে ঘটনার বিবরণীতে তিনি উল্লেখ করেন, ঘটনার দিন গুলশান থানার রোড নম্বর-৭১ থেকে ৯২ এবং এর আশপাশ এলাকায় পেট্রোল ডিউটির দায়িত্বে ছিলেন তিনি। রাত আনুমানিক পৌনে ৯টার দিকে ওয়্যারলেসে ভেসে আসে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড বেকারিতে গুলির খবর। খবর পেয়েই ফোর্সসহ রাত আনুমানিক ৮টা ৫০ মিনিটে ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে পৌঁছান এসআই রিপন।
হলি আর্টিজানের কাছে উপস্থিত হয়ে তারা দেখতে পান, রেস্টুরেন্টের ভেতরে কতিপয় সন্ত্রাসীরা ‘আল্লাহ্ আকবর’ ধ্বনি দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণ ও বোমা নিক্ষেপ করছে।
পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ ও এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকে। আত্মরক্ষার্থে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালায়। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীদের নিক্ষিপ্ত গুলি ও গ্রেনেডের আঘাতে এসআই ফারুক হোসেন ও কনস্টেবল প্রদীপ চন্দ্র দাস ও আলমগীর হোসেন গুরুতর আহত হন। আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং এসআই রিপন কুমার দাস বিষয়টি তাৎক্ষণিক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন।
যার পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়াসহ ডিএমপির বিভিন্ন ইউনিটের অফিসার ও ফোর্স ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হয়। এরপর পুলিশসহ অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা হলি আর্টিজানের বেকারির চারপাশে কর্ডন করে ফেলে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সন্ত্রাসীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলে সন্ত্রাসীরা তাদের লক্ষ্য করে অনবরত গ্রেনেড ও গুলি করতে থাকে।
এ অবস্থায় রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে সন্ত্রাসীরা হলি আর্টিজানের বেকারির পশ্চিম দিকের বাড়ির সামনে অবস্থানরত পুলিশ অফিসার ও ফোর্সদের লক্ষ্য করে গ্রেনেড নিক্ষেপ ও গুলিবর্ষণ শুরু করে। এতে অন্তত ৩০-৩৫ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য আহত হন, কেউ কেউ মারাত্মক জখমপ্রাপ্ত হয়।
সে সময় চারদিকে ঘিরে থাকা র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-পুলিশসহ অন্য বাহিনীর সদস্যরা দৌড়ে নিরাপদ দূরত্বে যান। আহতদের সবাইকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১১টা ২০ মিনিটে বনানী থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাহউদ্দিন খান মৃত্যুবরণ করেন। এর কিছুক্ষণ পরই ডিবির সহকারী কমিশনার (এসি) মো. রবিউল করিমের মৃত্যু হয়।
পরিস্থিতির ভয়াবহতা বিবেচনা করে রাতেই সিদ্ধান্ত হয় পরের দিন ২ জুলাই ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ পরিচালনা করা হবে। এ অভিযানের মধ্য দিয়েই জিম্মিদশার অবসান ঘটান যৌথ সেনা, নৌ, পুলিশ, র্যাব এবং বিজিবির সমন্বয়ে যৌথ কমান্ডো দল। নিহত হয় ৬ জঙ্গি, আহত অবস্থায় ধরা পড়ে একজন।
রাত দেড়টায় ইসলামিক স্টেট জঙ্গি গোষ্ঠী তাদের বার্তা সংস্থা বলে পরিচিত ‘আমাক’ এ হামলার দায় স্বীকার করে ২০জন নিহত হবার কথা জানায়। আইএস এর পক্ষ থেকে হামলাকারীদের মধ্যে পাঁচজনকে তাদের ‘সৈনিক’ বলে দাবি করে, হামলার দায় নেয় তারা।
২০১৬ সালের ২ জুলাই ভোর ৭টা ৩৫ মিনিটে গুলশানের হোলি আর্টিজান রেস্টুরেন্ট অভিযানের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয় যৌথ কমান্ডো দল। ৭টা ৪৫ মিনিটে কমান্ডো বাহিনী অভিযান শুরু করে। অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত দলের সদস্যরা রেস্টুরেন্টের ভেতরে প্রবেশ করে। এসময় গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। সকাল সোয়া ৮টায় রেস্টুরেন্ট থেকে প্রথম দফায় নারী ও শিশুসহ ৬ জনকে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। পাশের একটি ভবন থেকে একজন বিদেশী নাগরিক তার মোবাইল ফোনে সেটি ধারণ করেন। ৮টা ৫৫ মিনিটে ভবনের নিয়ন্ত্রণ নেয় অভিযানকারীরা। গোয়েন্দা দল ভবনের ভেতর বিস্ফোরকের জন্য তল্লাশি শুরু করে। কিছুক্ষণ পরই আলামত সংগ্রহের কাজ শুরু করে গোয়েন্দারা। ৯টা ১৫ মিনিটে অভিযান শেষ হয়। কমান্ডো অভিযানের মধ্য দিয়ে ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে প্রায় ১২ ঘণ্টার রক্তাক্ত জিম্মি সংকটের অবসান হয়।
সকাল ১০টায় ৪ জন বিদেশীসহ ১৩ জন জীবিত উদ্ধারের খবর জানানো হয়। রেস্টুরেন্টের ভেতরে অজ্ঞাত পাঁচজনের মৃতদেহ পাবার কথা পুলিশ জানায়। ১১টা ৫০ মিনিটে অভিযানে জঙ্গিদের ৫ জন নিহত হয় বলে নিশ্চিত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অভিযানে নিহত জঙ্গিরা হলেন- মীর সামিহ মোবাশ্বের (১৯), রোহান ইমতিয়াজ (২০), নিরবাস ইসলাম (২০), খায়রুল ইসলাম পায়েল (২২), শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল ওরফে বিকাশ (২৬)।
পরে জিম্মি থাকাবস্থায় সন্ত্রাসী কর্তৃক নৃশংসভাবে নিহত হওয়া ২০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে নয়জন ইতালির নাগরিক, সাতজন জাপানের, একজন ভারতের ও তিনজন বাংলাদেশি।
উদ্ধার জিম্মিদের বয়ান অনুযায়ী তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, জঙ্গিরা হামলার প্রথম ২০ মিনিটেই নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালায়। তারা দেশি-বিদেশিদের গুলি করে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে-গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে। হত্যার পর ছবি তুলে অ্যাপের মাধ্যমে বাইরে অবস্থানরত নব্য জেএমবির নেতা তামিম চৌধুরী ও মারজানের কাছে পাঠায় তারা। জঙ্গিরা এতটাই নিষ্ঠুর ছিল যে, লাশের সারি মেঝেতে রেখেই খাবার খায়।

জাতীয়
ছয় মাসে ৯ লাখ এনআইডি আবেদন নিষ্পত্তি: ইসি সচিব

গত ছয় মাসে ৯ লাখের মতো এনআইডি সংশোধনের আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়েছে। বর্তমানে ৭৬ হাজারের মতো আবেদন অনিষ্পন্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
বুধবার (২ জুলাই) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এক ব্রিফিংয়ে ‘এনআইডি সংশোধন সংক্রান্ত ক্র্যাশ প্রোগ্রামের’ অগ্রগতি তুলে ধরেন তিনি। এসময় জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন নিয়ে নাগরিকদের দুর্ভোগ কমেছে বলে দাবি করেছেন নির্বাচন কমিশন সচিব।
নির্বাচন কমিশন সচিব বলেন, প্রতি মাসে নাগরিকদের এনআইডি সংশোধন নিয়ে আবেদনও কমে আসছে। ভোগান্তির মাত্রাও কমে এসেছে। আশা করি আগামীতে এনআইডি সেবা নিয়ে আর হয়রানির অভিযোগ থাকবে না।
সচিব জানান, চলতি বছরের শুরুতে ১ জানুয়ারিতে এনআইডি সংশোধনের অনিষ্পন্ন আবেদন ছিল ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৮০৬টি, ৩০ জুন পর্যন্ত ছয় মাসে নতুন আবেদন পড়ে ৬ লাখ ৫ হাজার ৫২০টি। সব মিলিয়ে ৯ লাখ ৮৪ হাজার ৩৫৬টি আবেদনের মধ্যে ‘ক্র্যাশ প্রোগ্রামে’ নিষ্পন্ন করা হয়েছে ৯ লাখ ৭ হাজার ৬৬২টি। প্রতি মাসে আগে যেখানে গড়ে এক লাখ করে আবেদন পড়ত, এখন তা কমে এসে প্রায় ৮০ হাজারে নেমেছে। বর্তমানে অনিষ্পন্ন আবেদন রয়েছে ৭৬ হাজার ৬৯৪টি।
তিনি আরও জানান, এনআইডি সংশোধনকে ঘিরে বরাবরই নাগরিকদের নানা ধরনের হয়রানি ও দুর্ভোগের অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু বর্তমান ইসির উদ্যোগে তা ধীরে ধীরে কমে আসছে। এনআইডি আবেদনের ক্ষেত্রে সংশোধনের মাত্রা দেখে চারটি ক্যাটাগরি করে দিয়েছে ইসি সচিবালয়। সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় তথ্যাদিপূরণ, দলিলাদি যথাযথ কিনা যাচাই, শুনানি করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংশোধন করে দেওয়া হয়। ২০২০ সাল থেকে ৫৪ লাখ ৭৬ হাজার ১১টি আবেদন হয়েছে। সেক্ষেত্রে চার ক্যাগাটরিতে আবেদন নিষ্পন্ন হয়েছে ৫৩ লাখ ৯৯ হাজার ৪২০টি।
আখতার আহমেদ বলেন, আমার মনে হয়, নাগরিক সেবার ক্ষেত্রে মানুষের ভোগান্তির মাত্রাটা কমেছে। ছয় মাসে তুলনামূলক আবেদনের সংখ্যাও কমেছে। আগামী কয়েক মাসে তা সন্তোষজনক পর্যায়ে আসবে এবং হয়রানি অভিযোগগুলো আর হয়ত থাকবে না।
এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, নানা কারণে এনআইডি লক করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে এনআইডির অপব্যবহার রোধে তা করা হয়। তেমনি আমার টাও নাকি এনআইডি লক করা আছে। কারোর ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে তথ্য না নেওয়াই ভালো।
জাতীয়
আশুলিয়ায় ৬ লাশ পোড়ানো: ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আশুলিয়ায় ছয়জনকে হত্যার পর লাশ পোড়ানোর মামলায় ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেছে প্রসিকিউশন। বুধবার (২ জুলাই) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারের কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। প্রসিকিউটর সাইমুম রেজা তালুকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, গত ২৪ জুন জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আশুলিয়ায় ছয়জনকে হত্যার পর লাশ পোড়ানোর মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের জন্য ২ জুলাই নির্ধারণ করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের সদস্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন সাইমুম রেজা তালুকদার। এ সময় আদালতে অভিযোগ গঠনের জন্য এক সপ্তাহ সময় চাওয়া হয়। পরে শুনানি শেষে নতুন দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।
প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আশুলিয়ায় ছয় লাশ পোড়ানোর মামলার তদন্ত প্রতিবেদন গত ১৯ জুন জমা দিয়েছে তদন্ত সংস্থা। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের জন্য আমরা এক সপ্তাহ সময় চেয়েছি। এ ঘটনায় ১৬ জনের সম্পৃক্ততা মিলেছে তদন্ত প্রতিবেদনে। এর মধ্যে সাতজন গ্রেপ্তার রয়েছেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন- ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, ঢাকা জেলা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলাম, তৎকালীন ওসি এএফএম সায়েদ, ডিবি পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক ও কনস্টেবল মুকুল।
গত বছরের ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান ছয় তরুণ। এরপর পুলিশ ভ্যানে তাদের লাশ তুলে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। নৃশংস এ ঘটনার সময় একজন জীবিত ছিলেন। কিন্তু তাকেও বাঁচতে দেননি তারা। পেট্রোল ঢেলে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়। এ ঘটনায় ১১ সেপ্টেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা করা হয়।
কাফি
জাতীয়
ঢাকায় সৌদি আরবের নতুন রাষ্ট্রদূতের যোগদান

বাংলাদেশে সৌদি আরবের নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে ড. আব্দুল্লাহ জাফর এইচ বিন আবিয়াহকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (০১ জুলাই) সৌদি এয়ার লাইন্সের নিয়মিত ফ্লাইটে বাংলাদেশে পৌঁছান তিনি।
সূত্র জানায়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রটোকল অনুবিভাগ এবং ঢাকাস্থ সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তারা বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান।
চলতি বছর এপ্রিলে ঢাকা ছেড়ে যান সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান। তার স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন ড. আব্দুল্লাহ জাফর এইচ বিন আবিয়াহ। দ্রুততম সময়ের মধ্যে পরিচয়পত্র পেশ করে ঢাকা মিশন শুরু করবেন এ কূটনীতিক।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানে উচ্চতর ডিগ্রিধারী ড. আব্দুল্লাহ জাফরকে সৌদি ফরেন সার্ভিসে চীন ও কোরিয়ার সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই কূটনীতিক ২০০৫ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত ব্রাজিলের ব্রাসিলিয়াতে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৭ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত আমেরিকার দক্ষিণাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ সিটি হাউস্টনের সৌদি কনস্যুলেট সামলেছেন। তিনি সেখানে কনসাল জেনারেলের দায়িত্বে ছিলেন।
২০১৩ সালে তিনি সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ আফ্রিকা ডেস্কের পরিচালক ছিলেন। সেখান থেকে তাকে কোরিয়ায় সৌদি দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন হিসেবে পাঠানো হয়। ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি সিউলে দায়িত্ব পালন করেন। ড. আব্দুল্লাহ জাফর কোরিয়া থেকে যান জেনেভায়। তিনি সেখানে দায়িত্ব পালন করেন ২০২১ সাল পর্যন্ত। জেনেভা থেকে তাকে পাঠানো হয় চীনে। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ শহর গুয়াংজুতে সৌদি কনসাল জেনারেলের দায়িত্বে ছিলেন।
কাফি
জাতীয়
বৃহস্পতিবার ১১ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়

ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ জেলার ডিএনডি খাল খনন প্রকল্পের আওতায় ঢাকা অংশের ৯টি খালে বিদ্যমান গ্যাস পাইপলাইন স্থানান্তর কাজের জন্য বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দেশের বিভিন্ন স্থানে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে।
বুধবার (২ জুলাই) এক বার্তায় তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানিয়েছে।
তিতাস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত মোট ১১ ঘণ্টা টেংরা, বাহির টেংরা, হাজীনগর, আমতলা, বড়ভাঙ্গা, কোদালদোয়া, সানাড়পাড়, নিমাইকাশারি, নামা শ্যামপুর, জিয়া সরণী, জাপানি বাজার, তিতাস গ্যাস সড়ক, ছাপড়া মসজিদ, রূপসী বাংলা হাসপাতাল, শনির আখড়া, আরএস টাওয়ার সংলগ্ন এলাকা, গোবিন্দপুর, মাতুয়াইল, মৃধাবাড়ী, কাজলা, ভাঙ্গা ব্রীজ, ডেমরা, স্টাফ কোয়ার্টার, আমুলিয়া, পাইটি, জহির স্টীল, শাহরিয়ার স্টীল, ধার্মিক পাড়া ও কাউন্সিল এলাকায় বিদ্যমান সব শ্রেণির গ্রাহকের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে।
এছাড়া, এর আশপাশের এলাকায় গ্যাসের স্বল্পচাপ বিরাজ করতে পারে। গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য কর্তৃপক্ষ আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
কাফি
জাতীয়
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার বরখাস্ত

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার জাকির হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকার। মঙ্গলবার (১ জুলাই) এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ। এতে সই করেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতাধীন কর্মকর্তা জাকির হোসেন ২১ ও ২৮ জুন তারিখে কর্মস্থলে উপস্থিত হননি। অথচ এর আগে ১৮ জুন ২০২৫ তারিখে এনবিআরের এক আদেশে ২৮ জুনের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করে সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তাকে কর্মস্থলে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তিনি সে নির্দেশ অমান্য করায় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি চাকরি (শৃঙ্খলা) বিধিমালা, ২০১৮-এর ধারা ৩৯(১) অনুযায়ী তাঁকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
সরকার পরিবর্তন, আন্দোলন, বিক্ষোভ, গণঅভ্যুত্থান, দুর্ভিক্ষ, করোনা মহামারিসহ সব সংকটে দেশের ৯০ শতাংশ আমদানি-রপ্তানির প্রাণকেন্দ্র চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস কোনোদিন বন্ধ হয়নি। তবে শনিবার চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস কমিশনার জাকির হোসেন কাস্টমস হাউসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ঢাকায় এনবিআরের চলমান আন্দোলনে পাঠিয়ে দেন। তিনি নিজেও চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের সব কার্যক্রম বন্ধ করে ঢাকায় আন্দোলনে অংশ নেন বলে এনবিআর সূত্রে জানা যায়।
এনবিআরের সংস্কারের অংশ হিসেবে সংস্থাটিকে দুই ভাগ করার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ গত দুই মাসব্যাপী আন্দোলন অব্যাহত রাখে। এই সময়ে তারা কলমবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি এমনকি শাটডাউনের মতো কর্মসূচিতে চলে যান। সর্বশেষ সরকার হার্ডলাইনে গেলে রোববার রাতে তারা সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়।
কাফি