জাতীয়
বাংলাদেশ সৃষ্টিতে ঢাবির অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে: প্রধানমন্ত্রী

দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কিত জ্ঞান-বিজ্ঞানের নিবিড় চর্চার পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও বাংলাদেশ সৃষ্টিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক বাণীতে এ কথা বলেন তিনি।
সোমবার (১ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন হচ্ছে জেনে সন্তোষ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, এ উপলক্ষে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের এ বছরের প্রতিপাদ্য-‘তরুণ প্রজন্মের দক্ষতা বৃদ্ধিতে উচ্চ শিক্ষা’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারত ভেঙে অত্র অঞ্চলে যে রাষ্ট্র ব্যবস্থার সৃষ্টি হয় সেই রাষ্ট্রটি বাংলা ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর নিরাপদ আবাসভূমি ছিল না-এ সত্যটি অনুধাবন করতে পেরেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের তৎকালীন তরুণ ছাত্র শেখ মুজিবুর রহমান। যিনি সবার আগে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলন গড়ে তুলতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন এবং কালক্রমে হয়ে উঠেছেন বাঙালি জাতির পিতা, ‘বঙ্গবন্ধু, বাঙালির ইতিহাসের মহানায়ক ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি।
সেই থেকে ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কিত জ্ঞান ও বিজ্ঞানের নিবিড় চর্চা এবং দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সক্রিয় ভূমিকা রাখার পাশাপাশি বাংলাদেশ নামক একটি জাতিরাষ্ট্র সৃষ্টিতে এ প্রতিষ্ঠানটির অনবদ্য অবদান চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
১৯৫২’র ভাষা-আন্দোলন, জাতির পিতা ঘোষিত ১৯৬৬’র ছয়-দফার ভিত্তিতে স্বায়ত্তশাসন আন্দোলন এবং তার (বঙ্গবন্ধু) আহ্বানে ১৯৭১’র মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং পরবর্তীকালে সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন, অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক সত্তার বিকাশ ও দেশের গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারীরা অগ্রভাগে থেকে অব্যাহতভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার দূরদর্শী নির্দেশনায় ১৯৭৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডিন্যান্স ঘোষণার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন গঠন করা হয়, যার মূল বার্তা ছিল- বিশ্ববিদ্যালয়ে চিন্তার স্বাধীনতা ও মুক্ত-বুদ্ধি চর্চার পরিবেশ সৃষ্টি করা।
আওয়ামী লীগ যখনই সরকার গঠন করে তখনই জাতির পিতার শিক্ষা দর্শনের আলোকে দেশের শিক্ষা খাতের উন্নয়ন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে ১২টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেকগুলো বিজ্ঞান ও গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করি। গবেষণা ও প্রযুক্তির জন্য অনুদান ১০০ কোটিতে উন্নীত করি। আমরা জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন, বঙ্গবন্ধু বৃত্তি এবং জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপের প্রবর্তন করি।
তিনি বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছরে আমরা দেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ ও গুণগত মান বৃদ্ধিতে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত আমরা ২৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং ৫৪টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছি। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০, বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার কৌশলী পরিকল্পনা: ২০১৮-২০৩০ সহ প্রয়োজনীয় নীতিমালা এবং কলেজ পর্যায়ের উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে ২০২৩-২০৩১ মেয়াদি ন্যাশনাল স্ট্রাটেজিক প্ল্যান প্রণয়ন করেছি। আমরা বিদেশ থেকে মাস্টার্স ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের জন্য প্রধানমন্ত্রী ফেলোশিপ প্রবর্তন করেছি।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মান নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল এ্যাক্ট-২০১৬ পাস করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধি, দেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ রিসার্চ এন্ড এডুকেশন নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হয়েছে। এর ফলে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিভিন্ন ফ্যাকাল্টির ছাত্র ও শিক্ষক আন্তর্জাতিক একাডেমিক কমিউনিটি এবং তথ্য ভান্ডারের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে।
তিনি বলেন, প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা প্রসারের মাধ্যমে দেশপ্রেমে উজ্জীবিত ও চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সুবিধা আহরণে সক্ষম প্রজন্ম গড়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার উন্নয়নে নানা উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। আমরা শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসিক সংকট নিরসনে হল ও ভবন নির্মাণ করেছি।
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে শিক্ষা, গবেষণার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে নতুন নতুন বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও গবেষণা কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩টি অনুষদ, ১৩টি ইনস্টিটিউট, ৮৪টি বিভাগ, ৫৮টি ব্যুরো ও গবেষণা কেন্দ্র, ছাত্র-ছাত্রীদের ১৯টি আবাসিক হল, ৪টি হোস্টেল এবং ১৮৮টি উপাদানকল্প কলেজ ও ইনস্টিটিউট রয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৪৪ হাজার ৮৯৫ জন এবং পাঠদান ও গবেষণায় নিয়োজিত রয়েছেন প্রায় ১ হাজার ৯৮১ জন শিক্ষক।
শেখ হাসিনা বলেন, অধিকতর উন্নত গবেষণার মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভবিষ্যতে যেকোনো সংকট উত্তরণে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে এবং দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষা-গবেষণা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তিসহ জ্ঞানের সব শাখায় এগিয়ে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেশপ্রেম, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে তাদের অর্জিত জ্ঞান, মেধা-মনন ও সৃজনশীলতা প্রয়োগ করে ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ তথা তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিজ নিজ অবস্থান থেকে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

জাতীয়
জাইকার কাছে বনভূমিকে ন্যাচার লার্নিং হাবে রূপান্তরের প্রস্তাব পরিবেশ উপদেষ্টার

জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) কাছে দেশের বন সংলগ্ন রিসোর্স সেন্টারগুলোকে ‘ন্যাচার লার্নিং হাব’ এ রূপান্তরের প্রস্তাব দিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় তিনি জাইকার প্রতিনিধি দলকে এ প্রস্তাব দেন। সভায় জাপানি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)-এর নির্বাহী সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মিয়াজাকি কাতসুরা।
বৈঠকে উপদেষ্টা জাইকার সহযোগিতায় বাংলাদেশ ফরেস্ট ইন্ডাস্ট্রিজ ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন (বিএফআইডিসি)-কে আধুনিকায়ন করে পরিবেশবান্ধব আসবাবপত্র উৎপাদন ও নতুন বাজারে প্রবেশের দিকেও গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি, সাফারি পার্কগুলোকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণ এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে বন পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থাকে জোরদার করে অবৈধ কাঠ আহরণ প্রতিরোধেরও আহ্বান জানান। পরিবেশ উপদেষ্টা নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা তুলে ধরে বলেন, সরকারি দপ্তরে সৌরবিদ্যুৎ সংযোগ নিশ্চিত করতে কাজ চলছে।
বৈঠকে পরিবেশ উপদেষ্টা জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড এবং নবগঠিত ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ’ প্ল্যাটফর্মের কথাও উল্লেখ করেন, যার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক জলবায়ু অর্থায়ন কার্যকরভাবে পরিচালিত হবে। পাশাপাশি তিনি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে একটি পৃথক ট্রাস্ট গঠনের প্রস্তাব দিয়ে জাপানের সহযোগিতা কামনা করেন।
মিয়াজাকি কাতসুরা বাংলাদেশের আত্মনির্ভরশীল উন্নয়ন প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানিয়ে জাইকার পক্ষ থেকে ‘জিরো দারিদ্র্য’ ও ‘জিরো বেকারত্ব’-এর বৈশ্বিক লক্ষ্যের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন। তিনি ‘ক্লিন ঢাকা’ প্রকল্পসহ পরিবেশ খাতে জাইকার দীর্ঘমেয়াদি ভূমিকা এবং অভিযোজন কার্যক্রমে তথ্যভিত্তিক পরিকল্পনা, জ্ঞান বিনিময়, জ্বালানি রূপান্তর ও বেসরকারি বিনিয়োগের ওপর চারটি মূল সহায়তা ক্ষেত্র তুলে ধরেন।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ ও অতিরিক্ত সচিব মো. খায়রুল হাসান, প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসেন চৌধুরী এবং জাইকার দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের মহাপরিচালক ইয়ামাদা তেতসুয়া, বাংলাদেশ অফিসের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুচি তোমোহিদে ও সিনিয়র রিপ্রেজেন্টেটিভ মিউরা মারি।
জাতীয়
ড. ইউনূস-রুবিওর ফোনালাপে শিগগিরই নির্বাচন করার আলোচনা

সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। সেই ফোনালাপে শিগগিরই বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা এসেছে।
ইউনূস-রুবিও’র ফোনালাপ নিয়ে বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তৌহিদ হোসেন জানান, তারা খুব চমৎকার পরিবেশে কথা বলেছে। তখন আমি সামনে বসা ছিলাম। সেখানে সংস্কার কার্যক্রমে তাদের সমর্থনের কথা বলেছে এবং কথায় উঠে এসেছে যথা শিগগিরই সম্ভব নির্বাচন করা হোক।
তিনি বলেন, মিশন চালুর বিষয়ে চার দফা খসড়া আদান-প্রদান করা হয়েছে। বর্তমানে চুক্তির খসড়াটি বিবেচনা করছে জাতিসংঘ। এরপর কোনও পরিবর্তন না হলে দুপক্ষ এটি সই করবে। তিন বছরের জন্য অফিস খোলার বিষয়ে দুপক্ষ সম্মত। তিন বছর পরে নবায়ন না হলে অফিস থাকবে না।
খসড়া কত দিনের মধ্যে চূড়ান্ত হতে পারে— জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, এ ধরনের কোনও টাইমফ্রেম নেই। এরই মধ্যে দুপক্ষের চারবার খসড়া চালাচালি হয়েছে। এরপর আমরা সেটিকে পরিবর্তন করেছি। তারা আবার কিছু পরিবর্তনের কথা বলেছে। কাছাকাছি যাওয়ার পরে অন্যান্য যে প্রক্রিয়া আছে, সেটি শুরু করেছি। তবে সেই পর্যায়ে তাদের দেওয়া কিছু পরিবর্তন আছে এবং অনেকটা আমরা সম্মত হয়েছি। বাকি পরিবর্তনগুলো যদি তারা গ্রহণ করে এবং বলে যে আবার পরিবর্তন কর, তবে আমরা দেখব সেটি পরিবর্তন করা যাবে কিনা।
শিগগিরই নির্বাচন করার বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন কিনা, প্রশ্ন রাখা হয় উপদেষ্টার কাছে। জবাবে তিনি বিষয়টি স্পষ্ট করেননি। তিনি বলেন, দু’পক্ষের কথা হচ্ছিল আন্তরিক পরিবেশে। তার মধ্যে এ কথাগুলো উঠে এসেছে। নির্বাচন সম্পর্কে তারা জানতে চেয়েছে এবং সংস্কার কার্যক্রমের ব্যাপারে সমর্থনের কথা বলেছে। তখন তাদের জানানো হয়েছে, যথা শিগগিরই সম্ভব নির্বাচন করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আলোচনা নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আজকে ওয়াশিংটনে বৈঠক হবে। বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখানে গেছেন। আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সেখানে আছেন। কাজেই আমরা আশা করব যে একটি সমাধানে আমরা দুপক্ষ পৌঁছাতে পারব এবং বাণিজ্যে তেমন প্রভাব পড়বে না।
মানবিক করিডর নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা— জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, না, এ ধরণের কোনো কথা হয়নি।
গত সোমবার ইউনূস-রুবিও ফোনালাপে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক গভীর করতে অভিন্ন অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। সেই সঙ্গে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিতেও অভিন্ন অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এই ফোনালাপ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, প্রায় ১৫ মিনিটব্যাপী ফোনালাপ ছিল উষ্ণ, সৌহার্দ্যপূর্ণ ও গঠনমূলক, যা দুই দেশের মধ্যকার দৃঢ় দ্বিপক্ষীয় সম্প্রীতির প্রতিফলন। আলোচনার সময় উভয় নেতা পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন, যার মধ্যে ছিল বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য আলোচনা, চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া, গণতান্ত্রিক উত্তরণের রূপরেখা, আসন্ন সাধারণ নির্বাচন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সহায়তা।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও বাংলাদেশের সংস্কার কর্মসূচি এবং আগামী বছরের শুরুতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্যোগকে সমর্থন জানান। তিনি উল্লেখ করেন যে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য এবং রেমিট্যান্সের শীর্ষ উৎস। এর পরিপ্রেক্ষিতে উভয় নেতা শিগগিরই শুল্ক বিষয়ে আলোচনা চূড়ান্ত হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন, যা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের প্রসার ঘটাবে।
জাতীয়
জাপানে শিক্ষাবৃত্তি ও বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান

বাংলাদেশে বিনিয়োগ, মৎস্য খাত, রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা এবং শিক্ষা ও খেলাধুলাসহ যুব উন্নয়নের মতো ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও জোরদার করতে জাপানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এর পাশাপাশি তিনি দেশটিতে বাংলাদেশি তরুণদের শিক্ষাবৃত্তি ও কর্মী নিয়োগ বাড়ানোরও আহ্বান জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) এক্সিকিউটিভ সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মিয়াজাকি কাটসুরার সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এ আহ্বান জানান।
মিয়াজাকি কাটসুরার সঙ্গে বৈঠককালে ড. ইউনূস বলেন, জাপান সবসময় বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু। আমি সম্প্রতি আপনার দেশ সফর করেছি। আমি ও আমার প্রতিনিধিদল যে আন্তরিকতা ও আতিথেয়তা পেয়েছি, তাতে আমি গভীরভাবে মুগ্ধ।
মিয়াজাকি বলেন, বাংলাদেশ এশিয়ায় জাপানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।
তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় জাপানের অব্যাহত সহায়তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং জুলাইয়ের (গণঅভ্যুত্থানে) নিহত ও আহতদের জন্য গভীর শোক প্রকাশ করেন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা মাতারবাড়ি প্রকল্পের গুরুত্ব তুলে ধরে একে দেশের ভবিষ্যতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে অভিহিত করেন এবং বাংলাদেশের সামুদ্রিক সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, আমি জাপানে জাইকা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনায় বলেছিলাম আমরা সমুদ্রভিত্তিক অর্থনীতিতে রূপান্তর হতে চাই।
ড. ইউনূস বাংলাদেশের তরুণদের জন্য জাপানে শিক্ষাবৃত্তি বাড়ানোর পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানোরও অনুরোধ জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অনেক তরুণ জাপানে কাজ করতে যেতে চায়। সমস্যা হলো ভাষা। আমরা প্রস্তাব দিয়েছি- জাপানি শিক্ষকরা এখানে আসুক, অথবা দূরশিক্ষণের মাধ্যমে আমাদের মানুষকে জাপানি ভাষা ও কর্মক্ষেত্রের আচরণ শেখানো হোক।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবস্থার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এটি একটি দুঃখজনক পরিস্থিতি। হাজার হাজার তরুণ শরণার্থী শিবিরে বেড়ে উঠছে কোনো আশা ছাড়াই। তারা হতাশ হচ্ছে, রাগান্বিত হচ্ছে।
জবাবে মিয়াজাকি বলেন, বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণে প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং জাইকা বিচার বিভাগ, সরকারি প্রশাসন, স্থানীয় সরকার ও স্বাস্থ্য খাতের সংস্কারে সহায়তা দিচ্ছে।
তিনি জানান, জাইকা বাংলাদেশ-কেন্দ্রিক একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে, যার মাধ্যমে স্থানীয় সরকার, কোম্পানি এবং উভয় দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় উন্নতমানের তথ্যপ্রযুক্তি ও মানবসম্পদ গড়ে তোলা হবে।
যুব উন্নয়ন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা খেলাধুলায় বাংলাদেশের নারীদের সাফল্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমাদের মেয়েরা সর্বত্র জয় পাচ্ছে। গতকাল তারা আবারও জিতেছে এবং ফাইনালে পৌঁছেছে। আমরা হোস্টেল সুবিধা বাড়াচ্ছি, তবে তাদের স্বাস্থ্য ও প্রশিক্ষণের জন্য সাহায্য প্রয়োজন।
মিয়াজাকি এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়ে জানান, জাপান এরইমধ্যে অনেক দেশে স্কুল প্রকল্পে স্বেচ্ছাসেবক পাঠাচ্ছে এবং বাংলাদেশের নারী খেলাধুলায় সহযোগিতার বিষয়টি বিবেচনা করবে।
বৈঠকের শেষদিকে ড. ইউনূস সম্প্রতি সই হওয়া ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ ও অনুদান চুক্তির জন্য জাপানকে ধন্যবাদ জানান, যা অর্থনৈতিক সংস্কার, রেলপথ নির্মাণ ও মানবসম্পদ উন্নয়নের কাজে ব্যবহৃত হবে। একইসঙ্গে তিনি বার্ষিক জাপানি ওডিএ সহায়তা ৩০০ বিলিয়ন ইয়েন থেকে বাড়িয়ে ৪৫০ বিলিয়ন ইয়েনে উন্নীত করার অনুরোধ জানান, যাতে আরও উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যায়।
বাংলাদেশ চিরকাল জাপানের বন্ধুত্ব ও অবদান মনে রাখবে বলে মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা।
জাতীয়
আশুরা-তাজিয়া মিছিল ঘিরে থাকবে কঠোর নিরাপত্তা বলয়: ডিএমপি

পবিত্র আশুরা উদযাপন ও তাজিয়া মিছিলকে কেন্দ্র করে ব্যাপক নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। তাজিয়া মিছিলে দা, ছোরা, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি, লাঠি, ব্যাগ, সুটকেস বা সন্দেহজনক কোনো প্যাকেট নিয়ে অংশ নেওয়া যাবে না। এই মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা আতশবাজি বা পটকা ব্যবহার করতে পারবেন না।
একই সঙ্গে ইমামবাড়া ও মিছিল আয়োজনকারীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে ডিএমপি থেকে বলা হয়েছে, আশুরার নানা অনুষ্ঠান ও তাজিয়া মিছিলে নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মী বা স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত করে যেন পুলিশি নিরাপত্তা জোরদারে সহযোগিতা করা হয়। পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিভ্রাটে বিকল্প হিসেবে জেনারেটর রাখার পরামর্শও দিয়েছে ডিএমপি।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বেলা ১১টায় রাজধানীর লালবাগে হোসেনি দালান ইমামবাড়ায় পবিত্র আশুরা উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির ভারপ্রাপ্ত কমিশনার মো. সরওয়ার।
তিনি বলেন, হোসেনি দালান ইমামবাড়া, বড়কাটারা, মোহাম্মদপুর বিহারি ক্যাম্প, শিয়া মসজিদ, বিবিকা রওজা, মিরপুর পল্লবী বিহারি ক্যাম্পসহ যেসব স্থানে পবিত্র আশুরা পালিত হয় সেসব স্থানে পর্যাপ্ত পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
মো. সরওয়ার বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে সকল বিভাগ কর্তৃক শিয়া ধর্মাবলম্বীসহ সকল ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমন্বয় সভা করা হয়েছে। ইমামবাড়ার আশপাশে সংশ্লিষ্ট এলাকায় চেকপোস্ট কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। ইমামবাড়ার সাথে সাথে আশপাশে পার্শ্ববর্তী উঁচুভবন থেকে ইতোমধ্যে সাদা পোশাক ও ইউনিফর্মে পুলিশ উপস্থিত থেকে সার্বক্ষণিক নজরদারিসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা পালন করছে।
তিনি বলেন, ইমামবাড়া থেকে অনুষ্ঠান শুরুর আগে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের ডগস্কোয়াড দ্বারা সুইপিং করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ইমামবাড়া সিসিটিভি ক্যামেরা দ্বারা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ, পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মনিটরিং বাড়ানো হয়েছে। সকল অনুষ্ঠানস্থলের প্রবেশমুখে আর্চওয়ে গেট স্থাপন, হ্যান্ডমেটাল ডিটেক্টর দ্বারা তল্লাশির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তল্লাশির মধ্য দিয়ে আগত সকলকে অনুষ্ঠানে অংশ নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, নারীদের তল্লাশির জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক নারী পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। অনুষ্ঠানসমূহের স্থির ও ভিডিও চিত্র ধারণের ব্যবস্থা থাকবে। ইউনিফর্ম পরিহিত পুলিশের পাশাপাশি আমাদের সাদা পোশাক পরিহিত পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন।
তাজিয়া ও শোক মিছিলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা
১ মহররম (২৭ জুন) থেকে শোক মিছিল ঢাকা শহরে ডিএমপি নিরাপত্তা ব্যবস্থা দিচ্ছে এবং দেবে। যেসব রাস্তায় শোক মিছিল বা তাজিয়া মিছিল হবে সেসব রাস্তায় পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকবে। রাস্তার পার্শ্ববর্তী উঁচুভবনে পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। তাজিয়া মিছিলের সামনে পেছনে ও মাঝখানে পুলিশের স্পেশাল টিম মোতায়েন থাকবে। গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাসমূহ সিসিটিভি ক্যামেরা দ্বারা নজরদারি করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হবে।
তাজিয়া মিছিল চলাকালে যথাযথ ট্রাফিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বড় মিছিল শুরুর আগে সংশ্লিষ্ট এলাকা সুইপিং করা হবে। ফুটপাতে কোনো দোকান থাকলে সরিয়ে নেওয়া হবে।
অস্থায়ী কারবালা ধানমন্ডি লেকে থাকবে বিশেষজ্ঞ দল
ধানমন্ডি লেকে অস্থায়ী কারবালায়, ডুবুরি দল ও ফায়ার সার্ভিস কর্মী ও মেডিকেল টিম প্রয়োজনীয় সরঞ্জামসহ উপস্থিত থাকবেন। বোমা, বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ দল, সিআইডির ক্রাইম সিন টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকবেন।
নিষিদ্ধ সংগঠন-সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা
নিষিদ্ধ সংগঠন বা অন্য সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব প্রতিরোধে সাইবার ক্রাইম ইউনিট মনিটরিং করবে। এই নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিষয়ে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সেবা সংস্থার সঙ্গে প্রয়োজনীয় সমন্বয় করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শব্দদূষণরোধে ঢোল-মাইক ব্যবহারে নিরুৎসাহ পুলিশের
শব্দদূষণ করে এমন উচ্চশব্দ সৃষ্টিকারী ঢোল, মাইক ব্যবহার করে নগরবাসীর ভোগান্তি তৈরি করা যাবে না। সুশৃঙ্খলভাবে মিছিলে অংশ নিতে হবে। তাজিয়া মিছিল শেষে স্ব-স্ব গন্তব্যে ফিরে যেতে হবে সুশৃঙ্খলভাবে। অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে সেজন্য সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। দুই বা ততোধিক হলে গ্যাপ রেখে মিছিলে অংশ নিতে হবে। লোডশেডিং হতে পারে, সেজন্য বিকল্প হিসেবে জেনারেটরের ব্যবস্থা রাখলে ভালো হয়। সন্দেহজনক কিছু মনে হলে ৯৯৯-এ জানানো বা ডিএমপিকে জানাতে পারেন।
ট্রাফিক ব্যবস্থা
ট্রাফিক ব্যবস্থা সম্পর্কে তিনি ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মো. সরওয়ার বলেন, হোসেনি দালান ইমামবাড়া থেকে তাজিয়া মিছিল শুরু হয়ে নীলক্ষেত, মিরপুর রোড, ঢাকা কলেজ, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, ধানমন্ডি আবাসিক লেক, চার নম্বর গেট, সাত মসজিদ হয়ে ধানমন্ডি লেকে অস্থায়ী কারবালা মিলিত হবে। এই অস্থায়ী কারবালা লেকে অনেকগুলো মিছিল মিলিত হবে। সেজন্য এসব এলাকায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। রোড ডাইভারশন করা হবে অন্যান্য রাস্তায় যান চলাচল করতে পারবে।
সাধারণ নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তাজিয়ার মিছিল চলাকালে সংশ্লিষ্ট রাস্তা পরিহার করে অন্য রাস্তায় চলাচল করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্), এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ১০ মহররমের অনেক গুরুত্ব। আগামী ৫ জুলাই উল্টো রথযাত্রা আছে। ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে উল্টো গিয়ে স্বামীবাগে ইস্কন মন্দিরে গিয়ে শেষ হবে। সেজন্যও থাকবে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
জাতীয়
এভাবে অগ্রসর হলে এ মাসেই জুলাই সনদ ঘোষণা সম্ভব: আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা ইতিবাচকভাবে অগ্রসর হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, এভাবে অগ্রগতি বজায় থাকলে জুলাই মাসের মধ্যেই ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণা করা সম্ভব হবে।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভার শুরুতে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি বলেন, কোন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আমরা এই পর্যন্ত এসেছি, সেটি যেন আমাদের প্রেরণা হয়ে কাজ করে, সেদিকে লক্ষ্য রাখা উচিত। আমরা যদি একমত হতে পারি, সেটা হবে একটি ইতিবাচক অর্জন।
অনেক বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা হলেও পরে সেগুলো আর আলোচনায় আসছে না জানিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, আমরা দলীয়ভাবে সেসব আলোচনার সুযোগ দিচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সাফল্য নিয়ে দিনটি শেষ করা।
এখনো প্রায় ২০টির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা প্রয়োজন। আজকের আলোচনায় রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শন, বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ এবং জরুরি অবস্থা জারির বিষয়গুলো কমিশনের প্রস্তাবনার আলোকে আলোচনা হবে এবং সিদ্ধান্ত আসতে পারে পারে বলেও জানান তিনি।
এছাড়া এখন পর্যন্ত যেসব বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি, সেগুলো আবার আলোচনার সুযোগ রাখবে কমিশন। এর আগে বুধবারের বৈঠকের পর কমিশনের সহ-সভাপতি জানিয়েছিলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল ও নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ নিয়ে সব রাজনৈতিক দল ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে।
কাফি