ধর্ম ও জীবন
নওমুসলিমের নতুন নাম রাখতে হয় যে কারণে
ইসলাম আল্লাহ তায়ালার কাছে একমাত্র মনোনীত ধর্ম। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বিন পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বিন মনোনীত করলাম।’ (সুরা মায়িদা, আয়াত : ৩)
হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নবী হিসেবে প্রেরণের পর থেকে প্রত্যেকের জন্য ইসলামকে ধর্ম হিসেবে মানা আবশ্যক। অনেকেই জন্মগতভাবে মুসলিম। কেউ কেউ ভিন্ন ধর্মাবলম্বী হয়ে জন্মগ্রহণ করেন, পরবর্তীতে ইসলামকে বুঝার ফলে ইসলাম গ্রহণ করে থাকেন। তাদেরকের নওমুসলিম বলা হয়।
নওমুসলিমরা ধর্ম পরিবর্তনের পর মুসলিমদের মতো সুন্দর সুন্দর অর্থবোধক নাম রেখে থাকেন। রাসূল সা. নিজেও সুন্দর ও অর্থবহ নাম রাখতে উৎসাহিত করেছেন।
হাদিস শরিফে পাওয়া যায় যে, কোনো সাহাবির নাম যদি মন্দ অর্থের হত, তাহলে রাসূল সা. তাদের নাম পরিবর্তন করে সুন্দর নাম রেখে দিতেন। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘সাঈদ ইবনে মুসাইয়্যাব (রহ.) হতে বর্ণিত। একবার তাঁর দাদা রাসূল (সা.)-এর কাছে আসলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমার নাম কী? তিনি উত্তর দিলেন, আমার নাম হাযন (হাযন অর্থ শক্তভূমি)। তিনি বললেন, না বরং তোমার নাম ‘সাহল’ (সাহল অর্থ, নরম জমিন)।
তিনি বললেন, আমার পিতা আমার যে নাম রেখে গিয়েছেন, তা আমি পাল্টাতে চাই না। ইবনে মুসাইয়্যাব বলেন, ফলে এরপর থেকে আমাদের বংশে দুঃখ কষ্টই লেগে আছে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬১৯৩)
তাই কোনো নওমুসলিম ইসলাম গ্রহণ করলে তার জন্য উচিত সুন্দর ও অর্থবোধক নাম গ্রহণ করা। তবে মুসলমান হলে নাম পরিবর্তন করতে হবে বিষয়টি এমন নয়।
আর কোনো নওমুসলিমের নামে যদি শিরক বা ইসলামী চেতনা বিরোধী কোনো শব্দ থাকে সেগুলো অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
জুমার দিনের গুনাহ মাফ হওয়ার ৮ আমল
ইসলামে জুমার দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পবিত্র কোরআনে জুমার দিন দ্রুত মসজিদে গমনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া হাদিসে গুরুত্বপূর্ণ আমলের কথা বর্ণিত হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা! জুমার দিন নামাজের আজান হলে তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং বেচাবিক্রি বন্ধ কোরো, তা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা বুঝো।
এরপর নামাজ শেষ হলে ভূপৃষ্ঠে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর অনুগ্রহ (জীবিকা) অনুসন্ধান করো এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করো, যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা : জুমা, আয়াত : ৯-১০) জুমার দিনের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো—
১. জুমার দিনের বিশেষ মর্যাদা
আবু লুবাবা বিন আবদুল মুনজির (রা.) থেকে বর্ণিত, হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) জুমার দিনের পাঁচটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেছেন। সেগুলো হলো—এক. আল্লাহ তাআলা এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করেছেন। দুই. আল্লাহ তাআলা এই দিনে আদম (আ.)-কে জমিনে অবতরণ করিয়েছেন।
তিন. এই দিনে আদম (আ.)-কে মৃত্যু দিয়েছেন। চার. এই দিনে এমন একটি সময় আছে, যখন বান্দা আল্লাহর কাছে যা কিছুই প্রার্থনা করবে তিনি তা দেবেন। যতক্ষণ সে হারাম কিছু প্রার্থনা করবে না। পাঁচ. এই দিনে কিয়ামত সংঘটিত হবে।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৮৯৫)
২. জুমার নামাজ আদায়
সালমান ফারসি থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, সাধ্যমতো পবিত্র হলো, তেল ব্যবহার করল, ঘর থেকে সুগন্ধি ব্যবহার করল, অতঃপর মসজিদে এলো, সেখানে দুজন মুসল্লির মধ্যে ফাঁক করে সামনে এগিয়ে যায় না, নির্দিষ্ট পরিমাণ নামাজ পড়ল, অতঃপর ইমাম কথা শুরু করলে চুপ থাকল; তাহলে আল্লাহ তাআলা তাঁর দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ মাফ করবেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮৮৩)
অন্য হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এক জুমা থেকে পরবর্তী জুমা, এক রমজান থেকে পরবর্তী রমজান মধ্যবর্তী সময়ের পাপ মোচন করে; যদি সেই ব্যক্তি সব ধরনের কবিরা গুনাহ থেকে বিরত থাকে।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৩৩)
৩. জুমার দিন গোসল করা
জুমার দিন গোসল করা ও আগে আগে মসজিদে যাওয়া অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। আউস বিন আউস সাকাফি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন ভালো করে গোসল করল, দ্রুততর সময়ে মসজিদে গেল ও (ইমামের) কাছাকাছি বসে মনোযোগসহ (খুতবা) শুনল, তাঁর জন্য প্রতি কদমের বদলে এক বছরের রোজা ও নামাজের সওয়াব থাকবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪৫)
৪. মসজিদে প্রথমে প্রবেশ করা
জুমার দিন মসজিদে আগে প্রবেশ করা ও মনোযোগ দিয়ে খুতবা শোনার বিশেষ গুরুত্ব আছে।
রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, অতঃপর প্রথমে মসজিদে গেল সে যেন একটি উট কোরবানি করল। যে এরপর মসজিদে গেল, সে যেন একটি গরু কোরবানি করল। আর যে এরপর ঢুকল, সে যেন ছাগল কোরবানি করল, এরপর যে ঢুকল সে যেন মুরগি কোরবানি করল, আর যে এরপর ঢুকল সে ডিম সদকা করল। অতঃপর ইমাম খুতবার জন্য এলে ফেরেশতারা আলোচনা শোনা শুরু করে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮৪১)
৫. জুমার দিন দোয়া কবুল হয়
জুমার দিন একটি সময় আছে, যখন মানুষ আল্লাহর কাছে কোনো দোয়া করলে আল্লাহ তা কবুল করেন। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘জুমার দিন কোনো মুসলিম আল্লাহর কাছে ভালো কিছুর দোয়া করলে আল্লাহ তাকে তা দেন। তোমরা সময়টি আসরের পর অনুসন্ধান কোরো।’ (আবু দাউদ, হাদিস নম্বর : ১০৪৮)
জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিনের বারো ঘণ্টার মধ্যে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে যদি কোনো মুসলিম এ সময় আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করে, তাহলে মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাকে দান করেন। এই মুহূর্তটি তোমরা আছরের শেষ সময়ে অনুসন্ধান কোরো। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৮)
৬. সুরা কাহাফ পাঠ
জুমার অন্যতম আমল সুরা কাহাফ পাঠ করা। আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহাফ পড়বে তা দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ে তার জন্য আলোকিত হয়ে থাকবে। আর যে ব্যক্তি এই সুরার শেষ ১০ আয়াত পাঠ করবে অতঃপর দাজ্জাল বের হলে তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।’ (সহিহ তারগিব, হাদিস : ১৪৭৩, আল মুসতাদরাক : ২/৩৯৯)
৭. ইমামের কথা শোনা
সালমান ফারসি থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, সাধ্যমতো পবিত্র হলো, তেল ব্যবহার করল, ঘর থেকে সুগন্ধি ব্যবহার করল, অতঃপর মসজিদে এলো, সেখানে দুজন মুসল্লির মধ্যে ফাঁক করে সামনে এগিয়ে যায় না, নির্দিষ্ট পরিমাণ নামাজ পড়ল, অতঃপর ইমাম কথা শুরু করলে চুপ থাকল; তাহলে আল্লাহ তাআলা তাঁর দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ মাফ করেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮৮৩)
৮. দরুদ পাঠ
জুমার দিন নবীজি (সা.)-এর ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা কর্তব্য। আউস বিন আবি আউস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন সর্বোত্তম। এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেছেন। এই দিনে শিঙায় ফুঁ দেওয়া হবে এবং এই দিনে সবাইকে বেহুঁশ করা হবে। অতএব, তোমরা এই দিনে আমার ওপর বেশি পরিমাণ দরুদ পড়ো। কারণ জুমার দিনে তোমাদের দরুদ আমার কাছে পেশ করা হয়।’ সাহাবারা বললেন, আমাদের দরুদ আপনার কাছে কিভাবে পেশ করা হবে, অথচ আপনার দেহ একসময় নিঃশেষ হয়ে যাবে? তিনি বলেন, ‘আল্লাহ জমিনের জন্য আমার দেহের ভক্ষণ নিষিদ্ধ করেছেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৭)
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী আজ। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর জন্ম ও মৃত্যুর পূণ্যময় দিন। ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল তথা আজকের এই দিনে তিনি আরবের মক্কা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। ৬৩ বছর বয়সে একইদিনে তিনি ইন্তেকাল করেন। মুসলিম উম্মাহর কাছে দিনটি পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) নামে পরিচিত।
মহানবী হযরত মুহম্মদ (সা.) এর জন্মের আগে গোটা আরব অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। তখন আরবের মানুষ মহান আল্লাহকে ভুলে নানা অপকর্মে লিপ্ত ছিল। আরবের সর্বত্র অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। ওই যুগকে বলা হতো ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত’র যুগ। মানুষ হানাহানি ও কাটাকাটিতে লিপ্ত থাকার পাশাপাশি মূর্তিপূজা করত। এই অন্ধকার যুগ থেকে মানবকুলের মুক্তিসহ তাদের আলোর পথ দেখাতে মহান আল্লাহ তাআলা রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে দুনিয়ায় প্রেরণ করেন।
মহানবী (সা.) অতি অল্প বয়সেই আল্লাহর প্রেমে অনুরক্ত হয়ে পড়েন এবং প্রায়ই তিনি হেরা পর্বতের গুহায় ধ্যানমগ্ন থাকতেন। ২৫ বছর বয়সে মহানবী বিবি খাদিজার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। মাত্র ৪০ বছর বয়সে তিনি নব্যুয়ত লাভ বা মহান রাব্বুর আলামিনের নৈকট্য লাভ করেন।
পবিত্র কোরআন শরীফে বর্ণিত আছে, ‘মহানবীকে সৃষ্টি না করলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পৃথিবীই সৃষ্টি করতেন না’। এসব কারণে এবং তৎকালীন আরব জাহানের বাস্তবতায় এ দিনের (পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর) গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক বেশি। বাংলাদেশসহ বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায় এ দিনটি ঈদে মিলাদুন্নবী হিসেবে পালন করে থাকে।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সরকারি ছুটি। দিনটি উপলক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন। যথাযথ মর্যাদায় ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মহানবী (সা.) এর ওপর আলোচনা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল। এ উপলক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন উপলক্ষ্যে দেশের সব হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশুসদন, বৃদ্ধ নিবাস, মাদকাসক্তি নিরাময়কেন্দ্রে উন্নত খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বাদ মাগরিব বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব গেইটে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে দিবসটির অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করবেন।
অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে ওয়াজ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, সেমিনার, ইসলামি সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, আরবি খুতবা লিখন প্রতিযোগিতা, ক্বিরাত মাহফিল, হামদ-নাত, স্বরচিত কবিতা পাঠের মাহফিল, ইসলামী ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনী, ইসলামী বইমেলা, বিশেষ স্মরণিকা ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সব বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, ৫৪টি ইসলামিক মিশন ও আটটি ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
জাতীয় সংগীত পরিবর্তন নিয়ে ভাবা হচ্ছে না: ধর্ম উপদেষ্টা
জাতীয় সংগীত পরিবর্তন নিয়ে ভাবা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাজশাহী ফাউন্ডেশন পরিদর্শন ও সুধী সমাবেশ যোগদান শেষে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।
ড. খালিদ হোসেন বলেন, জাতীয় সংগীত পরিবর্তন নিয়ে ভাবা হচ্ছে না। বিতর্ক সৃষ্টি করে এমন কিছু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার করবে না। বর্তমানে আমরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে সব থেকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি। এই মুহূর্তে আমরা এমন কোনো কাজ করতে চাই না যেটি নিয়ে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি হতে পারে। সবাইকে নিয়ে আমরা একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে চাই।
ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলার প্রসঙ্গে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, মসজিদ, মন্দির, মাজারে হামলা গর্হিত কাজ, ধর্মীয় উপাসনালয়ে যারা হামলা চালায় তারা মানবতার শত্রু, অপরাধী। প্রচলিত আইনে তাদের বিচার করা হবে। এছাড়াও দুর্গাপূজার নিরাপত্তায় স্থানীয় সাধারণ জনগণের পাশাপাশি মাদ্রাসার ছাত্রদের পূজার সঙ্গে সম্পৃক্ত করে মন্দির পাহারা দেওয়া হবে। যেন কোনো ধরনের হামলা বা নাশকতা না হয়। মাদ্রাসার ছাত্ররা কোনো ধরনের জঙ্গিবাদের সঙ্গে ছিল না। এটা আগের সরকারের ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ওপর হিন্দু মহাসভার হামলার আশঙ্কার খবরে ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চাই। আমাদের ক্রিকেট দলের উপর ভারতে হামলার (আশঙ্কার) খবর শুনছি। যেহেতু বিসিবি আছে, তারা এবিষয়ে করণীয় ঠিক করবে। পট পরিবর্তনের পর কিছু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে যেমন হামলা হয়েছে, তেমনি মুসলমানদের বাড়িতেও হয়েছে। এটাকে ভিন্নভাবে দেখার সুযোগ নেই। এ সরকার সবার সরকার, সবার নিরাপত্তা নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
জুমার দিনের গুরুত্বপূর্ণ ৬ আমল
মুসলিমদের কাছে জুমার দিন পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ। হাদিসে এই দিনটিকে সাপ্তাহিক ঈদের দিন বলা হয়েছে। এ বিষয়ে রাসুল (সা.) বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ এ দিনটিকে মুসলমানদের জন্য ঈদের দিনরূপে নির্ধারণ করেছেন। তাই যে ব্যক্তি জুমার নামাজ আদায় করতে আসবে সে যেন গোসল করে এবং সুগন্ধি থাকলে তা শরীরে লাগায়। মিসওয়াক করাও তোমাদের কর্তব্য। (সুনানে ইবনে মাজা)
জুমার দিনে বিশেষ ৬ আমল
জুমার নামাজ
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এক জুমা থেকে পরবর্তী জুমা, এক রমজান থেকে পরবর্তী রমজান মধ্যবর্তী সময়ের পাপ মোচন করে; যদি সেই ব্যক্তি সব ধরনের কবিরা গুনাহ থেকে বিরত থাকে। (মুসলিম হাদিস ২৩৩)
হজরত সালমান ফারসি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল সা. বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, সাধ্যমতো পবিত্র হলো, তেল ব্যবহার করল, ঘর থেকে সুগন্ধি ব্যবহার করল, অতঃপর মসজিদে এলো, সেখানে দুজন মুসল্লির মধ্যে ফাঁক করে সামনে এগিয়ে যায় না, নির্দিষ্ট পরিমাণ নামাজ পড়ল, অতঃপর ইমাম কথা শুরু করলে চুপ থাকল; তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ মাফ করবেন। (বোখারি, হাদিস ৮৮৩)
জুমার দিন গোসল করা
জুমার দিন গোসল করার অনেক ফজিলত রয়েছে। গোসল করে সবার আগে মসজিদে যাওয়া সওয়াবের। হজরত আউস বিন আউস সাকাফি রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন ভালো করে গোসল করল, দ্রুততর সময়ে মসজিদে গেল ও (ইমামের) কাছাকাছি বসে মনোযোগসহ (খুতবা) শুনল, তার জন্য প্রতি কদমের বদলে এক বছরের রোজা ও নামাজের সওয়াব থাকবে। (আবু দাউদ, হাদিস ৩৪৫)
মসজিদে সবার আগে যাওয়া
শুক্রবারে জুমার নামাজের জন্য মসজিদে আগে প্রবেশ করার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে প্রথমে মসজিদে গেল সে যেন একটি উট কোরবানি করল। যে এরপর মসজিদে গেল, সে যেন একটি গরু কোরবানি করল। আর যে এরপর ঢুকল, সে যেন ছাগল কোরবানি করল…। (বোখারি, হাদিস ৮৪১) জুমার দিন দোয়া কবুল হয় জুমার দিন একটি সময় আছে, যখন মানুষ আল্লাহর কাছে কোনো দোয়া করলে আল্লাহ তা কবুল করেন। হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, জুমার দিন কোনো মুসলিম আল্লাহর কাছে ভালো কিছুর দোয়া করলে আল্লাহ তাকে তা দেন। তোমরা সময়টি আছরের পর অনুসন্ধান করো। (আবু দাউদ ১০৪৮)
হজরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত অন্য আরেকটি হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, জুমার দিনের বারো ঘণ্টার মধ্যে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে যদি কোনো মুসলিম এ সময় আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করে, তাহলে মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাকে দান করেন। এই মুহূর্তটি তোমরা আছরের শেষ সময়ে অনুসন্ধান করো। (আবু দাউদ ১০৪৮)
সুরা কাহাফের ফজিলত
জুমার অন্যতম আমল সুরা কাহাফ পাঠ করা। হজরত আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহাফ পড়বে তা দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ে তার জন্য আলোকিত হয়ে থাকবে। আর যে ব্যক্তি এই সুরার শেষ ১০ আয়াত পাঠ করবে অতঃপর দাজ্জাল বের হলে তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। যে ব্যক্তি অজুর পর এই দোয়া পড়বে তার নাম একটি চিঠিতে লেখা হবে। অতঃপর তাতে সিল দেওয়া হবে, যা কিয়ামত পর্যন্ত আর ভাঙা হবে না। (তারগিব ১৪৭৩, আল মুসতাদরাক ২/৩৯৯)
দরুদ শরিফের ফজিলত
জুমার দিন রাসুল (সা.)-এর ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা অনেক সাওয়াব। হজরত আউস বিন আবি আউস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমাদের দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন সর্বোত্তম। এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেছেন। এই দিনে শিঙায় ফুঁ দেওয়া হবে এবং এই দিনে সবাইকে বেহুঁশ করা হবে। অতএব, তোমরা এই দিনে আমার ওপর বেশি পরিমাণ দরুদ পড়। কারণ জুমার দিনে তোমাদের দরুদ আমার কাছে পেশ করা হয়। (আবু দাউদ ১০৪৭)
জুমার দিনের আমল
হাদিসগুলো পর্যালোচনা করলে বোঝা যায়, জুমার দিনের কিছু কাজে সাওয়াব মিলে। যেমন, নখ কাটা, গায়ের অবাঞ্ছিত লোম পরিষ্কার করা, উত্তমরূপে গোসল করা, উত্তম পোশাক পরিধান করা, সুগন্ধি ব্যবহার করবে, যদি তার নিকট থাকে। তারপর জুমার নামাজে আসে এবং অন্য মুসল্লিদের গায়ের ওপর দিয়ে টপকে সামনের দিকে না যায়। নির্ধারিত নামাজ আদায় করে। তারপর ইমাম খুতবার জন্য বের হওয়ার পর থেকে সালাম পর্যন্ত চুপ করে থাকে। তাহলে তার এই আমল পূর্ববর্তী জুমার দিন থেকে পরের জুমা পর্যন্ত সব সগিরা গুনাহের জন্য কাফ্ফারা হবে (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪৩)।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
বন্যাদুর্গতদের ত্রাণ-পুনর্বাসনের হিসাব দিলেন আহমাদুল্লাহ
বন্যাদুর্গতদের ত্রাণ ও পুনর্বাসনের প্রথম ধাপের খরচের হিসাব প্রকাশ করেছেন সামাজিক সাহায্য সংস্থা আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ নিয়ে একটি পোস্ট দেন তিনি।
এতে তিনি লেখেন, ‘বন্যাদুর্গতদের জন্য ত্রাণ ও পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে খাদ্যসহ নানাবিধ ত্রাণসামগ্রী ক্রয়ের কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে; বিতরণও হয়েছে অর্ধেকের বেশি। এসবের বিস্তারিত হিসাব এখানে দেয়া হলো।
তবে প্রদেত্ত হিসাবে পুনর্বাসনের হিসাব অন্তর্ভুক্ত নেই বলে জানান তিনি। আহমাদুল্লাহ বলেন, শেষ হওয়ার পর পুনর্বাসনের হিসাব দেয়া হবে ইনশাআল্লাহ।
শনিবার থেকে শুরু হবে পুনর্বাসনের যাচাই-বাছাই পর্ব। এ কার্যক্রম চলবে কয়েক মাস ধরে। পুনর্বাসনের প্রতিটি ধাপ শেষে এর বিস্তারিত হিসাব দেয়া হবে ইনশাআল্লাহ। আর বছর শেষে অডিট তো থাকছেই।
আনন্দের বিষয় হলো, ‘আমাদের ত্রাণ কার্যক্রমের ব্যবস্থাপনা খরচ এক শতাংশেরও কম। সেবামূলক কাজের ইতিহাসে যা আমাদের জানামতে এক বিরল ঘটনা।’
এমআই