অর্থনীতি
যেসব পরিবর্তন এনে অর্থবিল পাশ
কালো টাকা সাদা করার সুযোগ, এমপিদের জন্য শুল্কমুক্ত গাড়ি কেনার সুবিধা বহাল ও ধনীদের সর্বোচ্চ করহার ৩০ শতাংশ থেকে সরে আসাসহ বেশকিছু পরিবর্তন করে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য অর্থ বিল জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে।
শনিবার (২৯ জুন) স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে কণ্ঠভোটে পাস হয় বিলটি।
বিলটি পাসের আগে বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য সংশোধনী আনেন। এরমধ্যে কিছু সংশোধনী অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী গ্রহণ করেন। অন্যগুলো তিনি গ্রহণ করেননি। পরে সেগুলো কণ্ঠভোটে অনুমোদন করেন সংসদ সদস্যরা।
অর্থবিলে প্রস্তাবিত বাজেটে দেওয়া বেশ কিছু সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়েছে। যার মধ্য রয়েছে—
কালো টাকা সাদা করার সুযোগ
২০২০-২১ অর্থবছরে ১০ শতাংশ কর পরিশোধ সাপেক্ষে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছিল সরকার। চার বছর পর এবার আবারও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হলো। অর্থবিলে ওই সুযোগ রাখা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, দেশের প্রচলিত আইনে যাই থাক না কেন কোনো করদাতা স্থাবর সম্পত্তি যেমন- ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট ও ভূমির জন্য নির্দিষ্ট করহারে এবং নগদসহ অন্যান্য পরিসম্পদের ওপর ১৫ শতাংশ কর পরিশোধ করলে কোনো কর্তৃপক্ষ কোনো প্রকার প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারবে না। এর ফলে আগামীকাল ১ জুলাই থেকে ১৫ শতাংশ কর প্রদানের মাধ্যমে ব্যক্তি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যাচাই-বাছাই ছাড়াই কালো টাকা সাদা করতে পারবেন।
এমপিদের জন্য শুল্কমুক্ত গাড়ি কেনার সুবিধা বহাল
বর্তমানে সংসদ সদস্যরা শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানি করতে পারেন। বৈষম্য হ্রাসে এবারের বাজেটে এই সুবিধা বাতিল করে এমপিদের গাড়ি আমদানিতে শুল্ক ও ভ্যাট আরোপ করার প্রস্তাব করা হয়েছিল। গত ৬ জুন প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, সংসদ সদস্যদের গাড়ি আমদানিতে সব প্রকার শুল্ক কর অব্যাহতি বিদ্যমান রয়েছে। কর অব্যাহতি সুবিধা কিছুটা হ্রাস করে কেবল আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ এবং মূসক (মূল্য সংযোজন কর) ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করে অন্যান্য সব শুল্ক-করাদির অব্যাহতি সুবিধা বহাল রাখার প্রস্তাব করছি। এজন্য বিদ্যমান প্রজ্ঞাপন বাতিল করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করার সুপারিশ করছি। কিন্তু আইনগত জটিলতা ও এমপিদের দাবির মুখে ওই প্রস্তাব থেকে সরে এসেছে সরকার। সংসদে পাস হওয়া অর্থবিল ২০২৪ অনুযায়ী, আগের মতোই শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানি করতে পারবেন সংসদ সদস্যরা।
ধনীদের সর্বোচ্চ করহার ২৫ শতাংশই থাকছে
ব্যক্তি পর্যায়ে সর্বোচ্চ করহার ৩০ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছিল প্রস্তাবিত বাজেটে। শেষ পর্যন্ত সেখান থেকে সরে এসে আগের মতো ২৫ শতাংশেই অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
কেবল ব্যক্তিগত একাধিক গাড়ি থাকলেই সারচার্জ
প্রস্তাবিত বাজেটে নতুন কোম্পানির কাজে ব্যবহৃত একাধিক গাড়ির পরিবেশ সারচার্জ তুলে দিলেও শুধু ব্যক্তিগত গাড়িতে বহাল রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে ১৫০০ সিসি বা ৭৫ কিলোওয়াট পর্যন্ত প্রতিটি মোটরগাড়ির জন্য পরিবেশ সারচার্জের হার ২৫ হাজার টাকা, ১৫০০ সিসি বা ৭৫ কিলোওয়াটের অধিক কিন্তু ২০০০ সিসি বা ১০০ কিলোওয়াটের অধিক নয় এমন প্রতিটি মোটরগাড়ির জন্য ৫০ হাজার, ২০০০ সিসি বা ১০০ কিলোওয়াটের অধিক কিন্তু ২৫০০ সিসি বা ১২৫ কিলোওয়াটের অধিক নয় এমন প্রতিটি মোটরগাড়ির জন্য ৭৫ হাজার, ২৫০০ সিসি বা ১২৫ কিলোওয়াটের অধিক কিন্তু ৩০০০ সিসি বা ১৫০ কিলোওয়াটের অধিক নয় এমন প্রতিটি মোটরগাড়ির জন্য দেড় লাখ টাকা, ৩০০০ সিসি বা ১৫০ কিলোওয়াটের অধিক কিন্তু ৩৫০০ সিসি বা ১৭৫ কিলোওয়াটের অধিক নয় এমন প্রতিটি মোটরগাড়ির জন্য দুই লাখ টাকা এবং এর চেয়েও বেশি সিসি বা কিলোওয়াট হলে অর্থাৎ সাড়ে তিন হাজার সিসি বা ১৭৫ কিলোওয়াটের অধিক প্রতিটি মোটরগাড়ির জন্য সাড়ে তিন লাখ টাকা সারচার্জ দিতে হবে।
সর্বজনীন পেনশনে করমুক্ত
সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় পেনশন বাবদ যে কোনো আয় এবং পেনশন স্কিমে প্রদত্ত যে কোনো পরিমাণ চাঁদা করের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে অর্থবিলে। তবে কোম্পানি, তহবিল ও ট্রাস্ট কর্তৃক অর্জিত মূলধনি আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ কর বসছে। এর আগে প্রস্তাবিত বাজেটে শুধু ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই বিধান রাখা হয়েছিল।
কমিউনিটি সেন্টার ভাড়ায় কর শুধু সিটিতে
অর্থবিলে সারাদেশে কমিউনিটি সেন্টার ভাড়ার ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করা হয়। এ প্রস্তাব সংশোধন করে শুধু সিটি করপোরেশনের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ ছাড়া কোম্পানির মতো তহবিল ও ট্রাস্টের মূলধনি আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ গেইন ট্যাক্স বসানো হয়েছে।
বিলে অর্থনৈতিক অঞ্চল কর অবকাশ সুবিধা বহাল
অর্থনৈতিক অঞ্চল, হাইটেক পার্কে মূলধনি যন্ত্র আমদানি শুল্কমুক্তই থাকছে। অর্থমন্ত্রী আগামী অর্থবছরের বাজেটে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে ১ শতাংশ শুল্কারোপের প্রস্তাব করেছিলেন। রপ্তানি ও কর্মসংস্থান বাড়ানোর চেষ্টার অংশ হিসেবে সরকার দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে। এগুলোতে বিনিয়োগে কর অবকাশ সুবিধার কথা জানিয়েছিল সরকার। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দাবির মুখে অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে মূলধনী যন্ত্রপাতির ওপর ১ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের প্রস্তাব থেকে সরে এসেছে সরকার।
গত ৬ জুন জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী। সুখী সমৃদ্ধ উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার শিরোনামে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। যা চলতি অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা বেশি। এতে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৬ দশমিক ৭৫ ভাগ এবং মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
মোবাইল টাওয়ারের জন্য ব্যাটারি তৈরি করবে ওয়ালটন-হুয়াওয়ে
মোবাইল নেটওয়ার্ক সাইটগুলোর জন্য স্থানীয়ভাবে লিথিয়াম ব্যাটারি তৈরি করতে দেশীয় ইলেকট্রনিক্স নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি চীনা প্রযুক্তি-জায়ান্ট হুয়াওয়ের সঙ্গে একটি প্রযুক্তিগত সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। প্রাথমিকভাবে ৫০০ কোটি টাকা মূল্যের অভ্যন্তরীণ বাজার ধরার পরিকল্পনা রয়েছে ওয়ালটনের।
ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের চিফ বিজনেস অফিসার তৌহিদুর রহমান রাদ জানান, কোম্পানিটি ভবিষ্যতে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবস্থা, বৈদ্যুতিক যানবাহন এবং ইলেকট্রনিক গ্যাজেটে সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছে।
বর্তমানে ৯টি মোবাইল টাওয়ার অপারেটর সারাদেশে ৪৫ হাজার মোবাইল নেটওয়ার্ক টাওয়ার বা বেস ট্রান্সসিভার স্টেশন (বিটিএস) পরিচালনা করে। এসব অপারেটর বছরে ৪৮ ভোল্ট ১০০ অ্যাম্পিয়ার-আওয়ারের প্রায় ৫০ হাজার ইউনিটের সমতুল্য লিথিয়াম ব্যাটারি কেনে।
ওয়ালটনের নতুন প্ল্যান্টে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে উৎপাদন শুরুর কথা রয়েছে। এটির বার্ষিক সক্ষমতা হবে ৮০ হাজার ইউনিট, যা আগামী পাঁচ বছর টেলিকম শিল্পের চাহিদা মেটাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সময় বিটিএস-এর পরিষেবা বজায় রাখতে পাওয়ার স্টোরেজ প্রয়োজন হয়। তাই সৌর শক্তি এবং এফিশিয়েন্ট লিথিয়াম ব্যাটারির ব্যবহারের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে কোম্পানিগুলোর। এক্ষেত্রে ক্রমশ জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে কম কার্যক্ষম লেড-অ্যাসিড ব্যাটারি।
তৌহিদুর রহমান জানান, বিটিএস-এর জন্য ব্যবহৃত ব্যাটারির ৩০ শতাংশ ইতোমধ্যেই লিথিয়াম ব্যাটারি দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। আগামী দুই বছরের মধ্যে এটি ৫০ শতাংশে বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
হুয়াওয়ে বাংলাদেশের সিইও প্যান জুনফেং বলেন, টেলিকম বিটিএসের জন্য ইন্টেলিজেন্ট ব্যাটারিসহ হুয়াওয়ের উন্নত প্রযুক্তি ১৭০টি দেশে ৩৪০টি টেলিকম অপারেটর ব্যবহার করে, যা বৈশ্বিক টেলিকম এনার্জি প্রযুক্তি বাজারের এক-তৃতীয়াংশ।
ওয়ালটন ডিজি-টেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম মঞ্জুরুল আলম অভি বলেন, হুয়াওয়ের সঙ্গে অংশীদারিত্ব লিথিয়াম ব্যাটারি শিল্পকে যেমন এগিয়ে নিয়ে যাবে, তেমনি একটি সবুজ দেশ গঠনে অবদান রাখবে।
তিনি এ উদ্যোগকে ব্যবসায়িক সুযোগের চেয়ে বেশি বলে বর্ণনা করেছেন। কারণ এটি লেড-অ্যাসিড ব্যাটারির ব্যবহার পর্যায়ক্রমে বন্ধ করার মাধ্যমে পরিবেশগত টেকসইতার প্রতি ওয়ালটনের অঙ্গীকারকে সমর্থন করে।
তৌহিদুর বলেন, হুয়াওয়ের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে ওয়ালটন এই সপহিস্টিকেটেড বাজারে প্রবেশ করতে পারবে। তিনি আরও জানান, সৌর শক্তি সিস্টেমের জন্য লেড-অ্যাসিড ব্যাটারি থেকে লিথিয়ামে রূপান্তরে বিশেষ অসুবিধা হবে না।
বর্তমানে দেশীয়ভাবে কোষ [সেল] উৎপাদনে সীমাবদ্ধতার কারণে কোষ ছাড়া লিথিয়াম ব্যাটারির বাকি সব উপাদান স্থানীয়ভাবে তৈরি করার পরিকল্পনা করেছে ওয়ালটন ডিজি-টেক। একটি সেল ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট স্থাপনের সম্ভাব্যতার জন্য কোম্পানিটি প্রাথমিকভাবে ১৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। ভবিষ্যতে এ বিনিয়োগে আরও ১০০ কোটি টাকা যোগ হতে পারে।
কোম্পানির চেয়ারম্যান এসএম রেজাউল আলম বলেন, স্থানীয় নির্মাতাদের সুরক্ষা দিতে আমদানি করা কাঁচামালের জন্য শুল্ক ছাড় প্রয়োজন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘বর্তমানে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি বিপ্লবের নতুন যুগের সূচনা হচ্ছে। সৌর ফটোভোলটাইক এবং বায়ু শক্তির মতো নবায়নযোগ্য শক্তি-উৎস প্রথাগত জীবাশ্ম জ্বালানির স্থান দখল করছে। লিথিয়াম প্রযুক্তির মতো শক্তি সঞ্চয় প্রযুক্তি ভবিষ্যতের উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
একটি বিটিএস-এর জন্য দুটি লেড-অ্যাসিড ব্যাটারির প্রয়োজন হয়। যেগুলোর একসঙ্গে খরচ বেশি। এছাড়া লিথিয়াম ব্যাটারি কমপক্ষে তিনগুণ বেশি টেকসই এবং লেড-অ্যাসিড ব্যাটারির তুলনায় ৫০ শতাংম কম কার্বন নিঃসরণ করে বলে জানান তৌহিদুর রহমান।
স্থানীয় কোম্পানি বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড চট্টগ্রামে একটি বৈদ্যুতিক যান ও লিথিয়াম ব্যাটারি উৎপাদন কারখানা তৈরি করেছে। এ বছরের শেষের দিকে এটির উৎপাদন শুরু করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
তবে সরকার এখনও পরিবেশবান্ধব যানবাহন বা এনার্জি স্টোরেজ ব্যবস্থার স্থানীয়ভাবে উৎপাদনের ক্ষেত্রে কোনো প্রণোদনা দিচ্ছে না।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ছুটির দিনেও গাজীপুরে চালু ৩০ শতাংশ কারখানা
গাজীপুরের প্রায় ৩০ শতাংশ কারখানা শুক্রবার ছুটির দিনেও চালু রাখা হয়েছে। কয়েক দিন ধরে চলা শ্রমিক বিক্ষোভের কারণে যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে নিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে মালিকপক্ষ।
পুলিশ ও সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় আজ সকাল থেকেই শুরু হয় কারখানাগুলোর উৎপাদন কার্যক্রম। বিকেল সাড়ে ৫টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোথাও কোনো শ্রমিক বিক্ষোভ বা বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায়নি।
বিভিন্ন দাবিতে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলছে শ্রমিক অসন্তোষ। এতে একধরনের অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি হয় শিল্পনগর গাজীপুরে। দাবি আদায়ে কারখানায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে। ঝামেলা এড়াতে কোনো কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা, আবার কোনো কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এতে কারখানাগুলোর উৎপাদন কমে দাঁড়ায় শূন্যের কোঠায়। দেখা দিয়েছে আর্থিক সংকট। সেই সংকট কাটিয়ে নিতে আজ খোলা রাখা হয়েছে অনেক কারখানা।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারওয়ার আলম বলেন, মূলত আজ পোশাকশ্রমিকদের ছুটির দিন। কিন্তু গত কয়েক দিনের বিক্ষোভে যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে নিতেই মালিকপক্ষের লোকজন কারখানা চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আজ পুরো জেলায় মোট কারখানার প্রায় ৩০ ভাগ চালু রয়েছে। তবে যে আটটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল, সেগুলো আজও বন্ধই আছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বেড়েই চলেছে চালের দাম, স্থিতিশীল সবজি
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে চাল, ডালসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়লেও সরকার পতনের পর থেকে সে চিত্র বদলে যেতে থাকে। এরমধ্যে দেখা দেয় ভয়াবহ বন্যা। বাজারে আবারও বেড়ে যায় জিনিসপত্রের দাম। বর্তমানে সবজির বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও বাড়তি চাল, মাছ, মুরগি ও ডিমের দাম।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজি ছাড়া সবকিছুর দামই বাড়তি।
জানা যায়, খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি চালের দাম বেড়েছে ২ টাকা। ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে কেজি প্রতি অন্তত ১০টাকা। ডিমের হালিতে খুচরা পর্যায়ে বেড়েছে ৪ টাকা পর্যন্ত। মাছের বাজারেও একই চিত্র। পাঙাশ থেকে শুরু করে রুই, কাতলা, বোয়াল, ইলিশসহ সব ধরনের মাছের দামই বাড়তি।
তবে কিছুটা কমেছে গরুর মাংসের দাম। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৩০ থেকে ৭৫০ টাকায়। যা সপ্তাহ দুয়েক আগেও ছিল ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা।
এদিকে সবজির বাজারে এসে কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছেন ক্রেতারা। সরকার পতনের পর থেকে বেশিরভাগ সবজির দাম নাগালে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা। বাজারে পটল থেকে শুরু করে বেগুন, চিচিঙ্গা, লাউ, কাঁকরোল, করলা, বরবটি, আলুসহ বিভিন্ন ধরনের শাকসবজির আগের তুলনায় অনেকটাই কমেছে। বলা চলে এক মাসের ব্যবধানে অনেক সবজির দাম অর্ধেকে নেমে এসেছে।
বাজার দর নিয়ে কথা হয় একাধিক ক্রেতার সঙ্গে। তারা বলেন, সরকার পতনের পর কিছু কিছু পণ্যের দাম কিছুটা কমলেও এখন আবার ধীরে ধীরে মাছ-মুরগি-ডিম সবকিছুর দাম বাড়ছে। এই মুহূর্তে সবার চাওয়া, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ। তবেই নিম্নআয়ের মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারবে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
যাত্রী সংকটে অর্ধেকে নেমেছে ভারতগামী ফ্লাইট
বাংলাদেশ থেকে ভারতে ফ্লাইট পরিচালনাকারী প্রতিটি এয়ারলাইন্স যাত্রী সংকটে ভুগছে। এয়ারলাইন্সগুলো বলছে, ভারত সীমিত আকারে ভিসা কার্যক্রম পরিচালনা করায় যাত্রী সংকট দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে ভিসা থাকা সত্ত্বেও বিমানবন্দরে হয়রানি বা আটকের ভয়ে অনেকে ভারতমুখী হচ্ছেন না।
এয়ারলাইন্সগুলোর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকা থেকে চেন্নাই, কলকাতা ও দিল্লি রুটে ধারণক্ষমতার ৫০ শতাংশ যাত্রীও পাওয়া যাচ্ছে না।
কলকাতা রুটের ভাড়া এয়ারলাইন্সভেদে সাড়ে ১২ থেকে ১৮ হাজার টাকা। জানা গেছে, যাত্রী সংকট এতটাই যে একটি বেসরকারি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট মাত্র ১২ জন যাত্রী নিয়ে কলকাতায় গিয়েছে।
বাংলাদেশ থেকে বর্তমানে ভারতের বিভিন্ন রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স, নভোএয়ার, ভারতের ভিস্তারা এয়ারলাইন্স, এয়ার ইন্ডিয়া ও ইন্ডিগো। সংস্থাগুলো ঢাকা থেকে কলকাতা, দিল্লি, চেন্নাই ও মুম্বাই রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরপর ভিসা কার্যক্রম বন্ধ রাখে ভারত। এরপর সীমিত আকারে ভিসা কার্যক্রম চালু করে। তাই যাত্রী সংকটে রয়েছে এয়ারলাইন্সগুলো।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স আগে কলকাতা রুটে সপ্তাহে ১৪টি ফ্লাইট পরিচালনা করত। বর্তমানে এ সংখ্যা সাত- এ ঠেকেছে। এ ছাড়া কমেছে চেন্নাই ও দিল্লি রুটের ফ্লাইট সংখ্যাও।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ঢাকা থেকে কলকাতা, চেন্নাই ও দিল্লি রুটে ধারণক্ষমতার ৪০ থেকে ৪৮ শতাংশ যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে। বাকি সিটগুলো ফাঁকা যাচ্ছে।
কলকাতা রুটে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে সপ্তাহে ২১টি ফ্লাইট পরিচালনা করত। বর্তমানে তারা ছয়টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। চেন্নাই রুটে সপ্তাহে ১১টি ফ্লাইট থেকে কমিয়ে পাঁচ-এ নামানো হয়েছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
হিলিতে কমেছে আলু-পেঁয়াজের দাম
দিনাজপুরের হিলিতে এক সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে আলু ও সব ধরনের পেঁয়াজের দাম। কেজি প্রতি ৪ থেকে ৫ টাকা কমেছে আলুর দাম। বর্তমানে বড় জাতের আলু ৪ টাকা কমে ৪৬ টাকা এবং ছোট জাতের আলু ৫ টাকা কমে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে কমেছে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম। দেশি পেঁয়াজ কেজি প্রতি ২০ টাকা কমে ১১০ টাকায় এবং ভারতীয় পেঁয়াজ কেজি প্রতি ১০ টাকা কমে ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। শুল্ক কমানোর কারণে দাম কমেছে বলছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। দাম কমাতে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ ক্রেতাদের মাঝে।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হিলি বাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া যায়।
হিলি বাজারে পেঁয়াজ ও আলু কিনতে আসা আশরাফুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক দিনের তুলনায় হিলির বাজারে আলু এবং পেঁয়াজের দাম একটু কমেছে। তবে এই ভাবে কমলে আমরা সাধারণ ক্রেতারা সুবিধা পাবো না। কারণ কিছু কিছু ব্যবসায়ী একলাফে ৪০ থেকে ৫০ টাকা বৃদ্ধি করে ৫ থেকে ১০ টাকা কমিয়ে দেয়। এতে করে আমরা সাধারণ ক্রেতারা সমস্যায় পড়ি। আমরা চাই বর্তমান সরকার নিত্যপণ্যের বিষয়ে একটু কঠোর নজরদারি দিবেন। যদি আলু ২০ টাকা এবং পেঁয়াজ ৩০ টাকার মধ্যে থাকতো তাহলে সাধারণ মানুষ একটু ভালোভাবে বাঁচতে পারতো।
হিলি বাজারের আলু ও পেঁয়াজ বিক্রেতা রাশেদুজ্জামান রাশেদ বলেন, এক সপ্তাহের ব্যবধানে হিলিতে আলু এবং পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। আমরা কম দামে কিনে কম দামে বিক্রি করছি। বর্তমানে বড় জাতের আলু ৪ টাকা কমে ৪৬ টাকা এবং ছোট জাতের আলু ৫ টাকা কমে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে কমেছে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম। দেশি পেঁয়াজ কেজি প্রতি ২০ টাকা কমে ১১০ টাকায় এবং ভারতীয় পেঁয়াজ কেজি প্রতি ১০ টাকা কমে ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ভারত থেকে যদি আমদানি অব্যাহত থাকে তাহলে এই সব নিত্যপণ্যের দাম আরও কমে যাবে।
হিলি কাস্টমসের তথ্যমতে, গত সপ্তাহে ভারতীয় ৩৩ ট্রাকে প্রায় ১ হাজার মেট্রিকটন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে।
এমআই