শিল্প-বাণিজ্য
১১ মাসে রপ্তানি আয় ৪৪ বিলিয়ন ডলার
চলতি অর্থবছরে (২০২৩-২৪) জুলাই থেকে মে মাস পর্যন্ত তৈরি পোশাক খাত থেকে ৪৩ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
রবিবার (২৩ জুন) চট্টগ্রাম-১১ আসনের এমপি আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪৬.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের তৈরি পোশাক বিদেশে রপ্তানি রয়েছে। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ১০.২৭ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে (২০২৩-২৪) জুলাই থেকে মে মাসে তৈরি পোশাক খাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪৩.৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
ভোলা-৩ আসনের এমপি নুরুন্নবী চৌধুরীর এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী জানান, বিবিএমইএর তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে তৈরি পোশাক কারখানায় ৩৩ লাখ ১৭ হাজার ৩৯৭ জন শ্রমিক রয়েছে। এর মধ্যে ৫২.২৮ শতাংশ নারী শ্রমিক। অর্থাৎ নারী শ্রমিক ১৭ লাখ ৩৪ হাজার ৪৫৯ জন। বিকেএমইএর তথ্য অনুযায়ী নিট সেক্টরে ১৭ লাখ ২৫৫ শ্রমিক রয়েছে। যার ৬২ শতাংশ অর্থাৎ ১০ লাখ ৫৪ হাজার ১৫৭ জন নারী। সব মিলিয়ে দেশে তৈরি পোশাক খাতে মোট ৫০ লাখ ১৭ হাজার ৬৫২ জন শ্রমিক রয়েছে। যার ৫৫.৫৭ শতাংশ অর্থাৎ ২৭ লাখ ৮৮ হাজার ৬১৬ জন নারী শ্রমিক।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এর তথ্যের উদ্বৃতি দিয়ে প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০২২ শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী তৈরি পোশাক খাতে মোট লোকবল ৪৩ লাখ ১৬ হাজার। যার ৩৭.৫১ শতাংশ অর্থাৎ ১৬ লাখ ১৯ হাজার জন নারী শ্রমিক। গত এক যুগের মধ্যে ২০২২-২৩ অর্থবছরে সব থেকে বেশি মূল্যস্ফীতি হয়েছে।
সরকারি দলের মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০১১-১২ অর্থবছরে ৮.৬৯ শতাংশ, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ৮.৬৯ শতাংশ, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৬.৭৮ শতাংশ, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৭.৩৫ শতাংশ, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৬.৪১ শতাংশ, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৫.৯২ শতাংশ, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৫.৪৪ শতাংশ, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৫.৮৮ শতাংশ, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৫.৪৮ শতাংশ, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৫.৬৫ শতাংশ, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫.৫৬ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬.১৫ শতাংশ এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৯.০২ শতাংশ মূল্যস্ফীতি ছিল।
সংরক্ষিত আসনের শাম্মী আহমেদের প্রশ্নের জবাবে আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি ৭ হাজার ১৬০ দশমিক ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বর্তমানে তামাক ও মদ জাতীয় পণ্য ছাড়া সকল পণ্যে শুল্কমুক্তি সুবিধা লাভ করায় ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি লাঘব হচ্ছে এবং ভারতের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ভারতে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির পরিমাণ প্রথমবারের মতো দুই বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের মোট বাণিজ্য ঘাটতি ১৫ হাজার ২৩৯ দশমিক ৫৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ভোলা-৩ আসনের নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মে পর্যন্ত পণ্য খাতে রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ৫১ হাজার ৫৪২ দশমিক ৭০ মিলিয়ন ডলার। এ সময়ে সেবা খাতের রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ৫ হাজার ৮৩ দশমিক ৩৬ মিলিয়ন ডলার।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
দুর্গা পূজায় ছয়দিন বন্ধ থাকবে ভোমরা বন্দর
শারদীয় দুর্গা পূজা উপলক্ষে ছয় দিন বন্ধ থাকবে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। সরকারি ছুটির সঙ্গে মিল রেখে উভয় দেশের ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ৯ অক্টোবর থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত ভোমরা স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ভোমরা স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য মাকসুদ খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ উৎসব দুর্গা পূজা উপলক্ষে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য আগামী ৯ অক্টোবর থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ছয়দিন বন্ধ থাকবে। ১৫ অক্টোবর থেকে বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম পুনরায় শুরু হবে।
ভারত ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান মাকসুদ খান।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দুই মাসে রাজস্ব ঘাটতি ১৫ হাজার কোটি টাকা
জুলাই ও আগস্টে সরকারবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে সরকারের রাজস্ব আয়ে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪২ হাজার ১০৬ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় ১৫ হাজার ৬৯ কোটি টাকা কম।
২০২৩-২৪ অর্থ বছরের একই সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৪৭ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ শতাংশ। রাজস্ব বোর্ড সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা ধরা হয়েছে। যার মধ্যে আয়কর ১ লাখ ৭৭ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকা, মূসক ১ লাখ ৭৭ হাজার ৬০০ কোটি টাকা ও শুল্ক রয়েছে ১ লাখ ২৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।
অর্থবছরের প্রথম ২ মাসে শুল্ক আদায়ের লক্ষ্য মাত্রা ছিল ১৭ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ১৪ হাজার ৪৮৫ কোটি টাকা। কম আদায় হয়েছে ২ হাজার ৯০৪ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় শুল্কে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ শতাংশ, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ১৬ হাজার ৭৪ কোটি টাকার শুল্ক আদায় হয়েছিল।
এছাড়া, আদায়ের লক্ষ্য মাত্রা ছিল ২১ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ১৬ হাজার ২৮ কোটি টাকা। কম আদায় হয়েছে ৫ হাজার ১২২ কোটি টাকা।
গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় মূসকে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২ শতাংশ, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ১৮ হাজার ২৬২ কোটি টাকার মূসক আদায় হয়েছিল।
আদায়ের লক্ষ্য মাত্রা ছিল ১৮ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ১১ হাজার ৫৯৩ কোটি টাকা। কম আদায় হয়েছে ৭ হাজার ৪১ কোটি টাকা।
গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয়করে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ শতাংশ, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ১৩ হাজার ২২৪ কোটি টাকার আয়কর আদায় হয়েছিল।
সম্প্রতি অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, বিগত সরকারের বেঁধে দেওয়া রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অন্তর্বর্তী সরকার কাটছাঁট করবে না।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিগত সরকারের প্রকৃত তথ্য ‘ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখানোর’ প্রবণতা থেকে অন্তর্বর্তী সরকার বের হয়ে এসেছে। ফলে রাজস্ব আদায় কিছুটা কম হলেও এখন প্রকৃত চিত্র পাওয়া যাচ্ছে। জুলাই আগস্টে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও শিল্প কারখানায় হামলার কারণে রাজস্ব আদায়ে ভাটা পড়েছে।
জানতে চাইলে সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, বিগত অর্থবছরের ন্যায় চলতি অর্থবছরের রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করার অবস্থা দেখছিনা। আগামীর কথা চিন্তা করে কর ফাঁকিরোধে ব্যাপক সংস্কার করতে হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি মেনে নিয়েছে মালিক পক্ষ: শ্রম সচিব
পোশাক শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি মালিক পক্ষ মেনে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সম্প্রতি দেশে চলমান শ্রমিক অসন্তোষের প্রেক্ষিতে শ্রমিকপক্ষ এবং মালিকপক্ষের যৌথ বিবৃতি প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সচিব বলেন, পোশাক কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ চলছে। এ অসন্তোষ নিরসণে ১৮দফা দাবিতে শ্রমিক-মালিক ঐক্যমতে পৌঁছেছে। বিগত সরকারের আমলে শ্রমিকদের দাবিকে দমিয়ে রাখা হয়েছে। ধীরে ধীরে সব ন্যায্য দাবি পূরণ করা হবে।
আর তৈরি পোশাক শিল্পে অসন্তোষ বাদ দিয়ে শ্রমিকদের কাজে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা। তারা বলেন, শ্রমিকদের দাবি মেনে নেয়া হয়েছে। তাদের কাজে ফেরার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
এর আগে পোশাক শিল্পে সাম্প্রতিক অস্থিরতা নিরসনের লক্ষ্যে ৪ জন উপদেষ্টার সমন্বয়ে সভা করা হয়। পরবর্তীতে শ্রমিক নেতা ও পোশাক শিল্পের মালিকপক্ষের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করা হয়। ফলশ্রুতিতে শ্রমিকদের নিম্নবর্ণিত দাবীর বিষয়গুলো ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয়। আলোচনার মাধ্যমে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো হলো-
শ্রমিক ও মালিক পক্ষের ৩ জন করে প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত অতিরিক্ত সচিবের (শ্রম) নেতৃত্বে একটি কমিটি নিম্নতম মজুরির বিধি-বিধান পর্যালোচনা করে নিম্নতম মজুরি বোর্ড বরাবর একটি সুপারিশ প্রদান করবে। অক্টোবর মাসের মধ্যে সকল কারখানায় সরকার ঘোষিত নিম্নতম মজুরি বাস্তবায়ন করতে হবে।
শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিৎ করার জন্য বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮) পুনরায় সংশোধনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সকল স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে ডিসেম্বরের মধ্যে সংশোধন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে।
শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকের সার্ভিস বেনিফিট প্রদান করা হবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ শ্রম আইন এর ২৭ ধারাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হবে। আগামী অক্টোবরের মধ্যে শ্রমিকের সকল বকেয়া মজুরি বিনা ব্যর্থতায় প্রদান করতে হবে। অন্যথায় শ্রম আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিজিএমইএভুক্ত সকল কারখানায় শ্রমিকের বিদ্যমান হাজিরা বোনাস হিসেবে অতিরিক্ত ২২৫ টাকা ও রাত ৮টার পর বিদ্যমান টিফিন বিলের সঙ্গে ১০ টাকা এবং বিদ্যমান নাইট বিলের সাথে ১০ টাকা বাড়ানো হবে।
কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ডের বিষয়ে পর্যালোচানার জন্য কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের মাধ্যমে শ্রমিক ও মালিক উভয়পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বাংলাদেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট সম্পন্ন অন্যান্য দেশের উত্তম চর্চার আদলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নিম্নতম মজুরি পুনঃনির্ধারণ কমিটি বর্তমান মূল্যস্ফীতি বিবেচনা করে শ্রম আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে করণীয় বিষয়ে নভেম্বরের মধ্যে একটি সুপারিশ প্রদান করবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
পরিবেশবান্ধব সনদ পেলো তিনটি পোশাক ও সুতা তৈরির কারখানা
দেশে পরিবেশবান্ধব (গ্রিন) তৈরি পোশাক ও বস্ত্র কারখানার সংখ্যা বেড়ে ২২৯টিতে দাঁড়িয়েছে। এ তালিকায় নতুন করে স্থান করে নেয়া কারখানাগুলো হলো- নারায়ণগঞ্জের অনন্ত হুয়াজিং লিমিটেড, গাজীপুরের সেপাল গার্মেন্টস লিমিটেড ও চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ইউনিটেক্স স্পিনিং লিমিটেড (দ্বিতীয় ইউনিট)।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি) থেকে পরিবেশবান্ধবের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত নারায়ণগঞ্জের অনন্ত হুয়াজিং ৬৩ নম্বর নিয়ে গোল্ড সনদ ও গাজীপুরের সেপাল গার্মেন্টস ৮৫ নম্বর নিয়ে লিড প্লাটিনাম সনদ অর্জন করেছে। সীতাকুণ্ডের ইউনিটেক্স স্পিনিং (দ্বিতীয় ইউনিট) ৮৩ নম্বর নিয়ে প্লাটিনাম সনদ পেয়েছে।
তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ আজ শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে। সংগঠনটি বলেছে, বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ১০০ পরিবেশবান্ধব কারখানার ৬১টি বাংলাদেশে অবস্থিত।
বিজিএমইএর তথ্য অনুযায়ী, তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতে বর্তমানে লিড সনদ পাওয়া পরিবেশবান্ধব কারখানা বেড়ে হয়েছে ২২৯টি। এর মধ্যে ৯১টিই লিড প্লাটিনাম সনদধারী। এ ছাড়া ১২৪টি গোল্ড, ১০টি সিলভার ও ৪টি কারখানা সার্টিফাইড সনদ পেয়েছে।
সর্বশেষ গত ১৬ আগস্ট দুটি রফতানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানা পরিবেশবান্ধব সনদ পায়। কারখানাগুলো হলো—আশুলিয়ার সাদাতিয়া সোয়েটার্স ও গাজীপুরের এক্সিকিউটিভ গ্রিনটেক্স লিমিটেড। এর মধ্যে সাদাতিয়া সোয়েটার্স ৯১ নম্বর নিয়ে লিড প্লাটিনাম সনদ ও এক্সিকিউটিভ গ্রিনটেক্স ৬৯ নম্বর নিয়ে লিড গোল্ড সনদ অর্জন করে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
শুল্ক সুবিধা পেয়েও চীনে বাড়েনি বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি
সম্প্রতি বাংলাদেশ ও অন্যান্য স্বল্পোন্নত (এলডিসি) দেশকে শতভাগ শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা দেওয়ার কথা জানিয়েছে চীন। যদিও ২০২০ সালের জুলাই থেকে ট্যারিফ লাইনের আওতায় ৯৭ শতাংশ বাংলাদেশি পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা কার্যকর করে চীন সরকার। এরপরও দেশটিতে আশানুরূপ বাড়েনি বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি। এ অবস্থায় চীনে রপ্তানি বাড়াতে রপ্তানিপণ্যের বহুমুখীকরণ প্রয়োজন বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
চীন বিশ্বের দ্বিতীয় অর্থনৈতিক পরাশক্তি ও শীর্ষ রপ্তানিকারক। দেশটি বাংলাদেশের বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। বাংলাদেশ থেকে চীনে রপ্তানি হওয়া পণ্যের মধ্যে প্রায় ৯৮ শতাংশ পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধা পায়। এরপরও রয়েছে দুই দেশের মধ্যে বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চীনে পণ্য রপ্তানি আশানুরূপ না বাড়ার কারণ খুজেঁ বের করা দরকার। দেশটিতে রপ্তানি বাড়াতে ও বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে বাড়াতে হবে বিপণন দক্ষতা।
চীন সরকার ২০২০ সালের জুলাই থেকে ট্যারিফ লাইনের আওতায় ৯৭ শতাংশ বাংলাদেশি পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা কার্যকর করে। পরবর্তীতে ২০২২ সালে আরও ১ শতাংশ বৃদ্ধি করে ৯৮ শতাংশ করা হয়। ট্যারিফ লাইনে ৮ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি পণ্য দেশটিতে শুল্ক সুবিধা পাচ্ছে। তারপরও গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশটিতে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি হয়েছে মাত্র ৬৭ কোটি ডলারের।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্রসচিব মো. জসিম উদ্দিন জানান, চীনের রাষ্ট্রদূত আমাদের যেটি জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সিনো-আফ্রিকান যে শীর্ষ সম্মেলন হয়েছে সেখানে একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে (এলডিসি) শতভাগ শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা দেবে চীন।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, চীনের বাজারে বিক্রি করার মতো বাংলাদেশের রপ্তানিযোগ্য পণ্যের অভাব রয়েছে। এছাড়া রয়েছে মার্কেটিং বা বিপণনব্যবস্থার দুর্বলতা। ইউরোপে যুদ্ধ ও আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের বিষয় বিবেচনায় চীন অভ্যন্তরীণ বাজারে মনোনিবেশ করেছে। তৈরি পোশাক উৎপাদনে তারা নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেছে। বাংলাদেশের শীর্ষ রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক দিয়ে চীনা বাজার ধরা কঠিন। দেশটিতে রপ্তানি বাড়াতে প্রয়োজন রপ্তানি বহুমুখীকরণ।
বাংলাদেশ চারকোল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনরে সহ-সভাপতি এ কে আজাদ গণমাধ্যমকে বলেন, এত সুবিধা পেয়েও চীনে কেন রপ্তানি বাড়ছে না সেটার কারণ অনুসন্ধান করা দরকার। হয়তো আমাদের অ্যাপ্রোচ ঠিক নেই। অর্থ্যাৎ আমাদের ব্যবসায়ীরা চীনের ব্যবসায়ীরদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না। চীনের বাজারে ঠিকমতো বিপণন করতে পারছি না। ভাষা ও বিপণন দক্ষতায় সমস্যা আছে।
তিনি আরও বলেন, চীনের বাজারে রপ্তানি করার মতো পণ্য আমাদের খুব কম। কারণ তারাই প্রায় সব পণ্যের কাঁচামাল প্রস্তুত করে। চীনে বাংলাদেশি চামড়ার প্রচুর চাহিদা আছে। বাংলাদেশ থেকে তারা কমদামে প্রচুর চামড়া নিয়ে যায়। কমপ্লায়েন্সের কারণে চামড়ার প্রকৃত দাম পাওয়া যাচ্ছে না।
রপ্তানির পাশাপাশি বিভিন্ন দেশ থেকে চীন প্রচুর আমদানিও করে জানিয়ে এ কে আজাদ বলেন, তারা নিজেদের প্রয়োজন মেটাতে ও পণ্য বানাতে সমগ্র পৃথিবী থেকে পণ্য নেয়। আমরা পণ্যের গুণ-মান বাজায় রাখতে পারছি না, আবার তাদের বাজারেও পৌঁছাতে পারছি না।
বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন মৃধা বলেন, চীনের যেসব পণ্য প্রয়োজন সেগুলো আমরা তৈরি করতে পারছি না। চীনে বাংলাদেশি কৃষিজাত পণ্য ও হিমায়িত মাছের চাহিদা আছে। আমরা তাদের মান মেনে চলতে পারলে এসব পণ্যের রপ্তানি বাড়বে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কৃষিজাত পণ্য ছাড়াও পরিশোধিত তামা, পলিমার, প্রসাধনী, ইলেকট্রনিক সার্কিট, অপরিশোধিত তেল, ফোন সিস্টেম ডিভাইস, পেট্রোলিয়াম গ্যাস, তামার তার ও ডেটা প্রসেসিং মেশিনের চাহিদা রয়েছে চীনে।