অর্থনীতি
২১ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৯১ কোটি ডলার

চলতি মাসের প্রথম ২১ দিনে দেশে এসেছে ১৯১ কোটি ৪৩ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ৯ কোটি ১২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স।
রবিবার (২৩ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়, চলতি জুন মাসের প্রথম ২১ দিনে দেশে এসেছে ১৯১ কোটি ৪৩ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। আর গত মে, এপ্রিল, মার্চ, ফেব্রুয়ারি ও জানুয়ারির প্রথম ২১ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল যথাক্রমে ১৫৬ কোটি ৬৬ লাখ, ১৩৫ কোটি ৮৭ লাখ, ১৩৫ কোটি ৩ লাখ, ১৫০ কোটি ৩৬ লাখ ও ১৪২ কোটি ৫৯ লাখ মার্কিন ডলার। সে হিসাবে চলতি মাসে অনেক বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ধর্মীয় উৎসবগুলোকে সামনে রেখে দেশের অভিবাসী কর্মীরা সাধারণত বেশি অর্থ পাঠান। চলতি মাসের শুরু থেকেই কোরবানি ঈদকে কেন্দ্র করে দেশে আত্মীয়-স্বজনদের কাছে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাঠিয়েছেন তারা। ফলে বেড়েছে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ। এ ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি মাসে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স আসতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক জানান, ঈদকে কেন্দ্র করে প্রবাসীরা বিপুল পরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। পাশপাশি বাড়তি প্রণোদনা পাওয়ায় বৈধ পথে বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। এছাড়া ডলার রেটও প্রভাব ফেলছে প্রবাসী আয়ে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে বিপুল পরিমাণ রেমিট্যান্স আসার সম্ভাবনা রয়েছে জুনে।
এর আগে গত বছরের ২২ অক্টোবর থেকে বৈধ চ্যানেলে ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় দেশে পাঠালে প্রতি ১০০ টাকায় প্রণোদনার সঙ্গে প্রবাসীদের বাড়তি আরও আড়াই শতাংশ অর্থ বেশি অর্থ প্রদানের নির্দেশনা কার্যকর করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সরকারের দেয়া আড়াই শতাংশ প্রণোদনার পাশাপাশি অতিরিক্ত আরও আড়াই শতাংশ অর্থ বেশি দিয়ে রেমিট্যান্স কিনতে পারবে ব্যাংকগুলো।
এদিকে জুনের ২১ দিনে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪৪ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। এছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ৫ কোটি ২৪ লাখ ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৪১ কোটি ৫৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার ও বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪৮ লাখ ৭০ ডলার রেমিট্যান্স।
বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানায়, জুনের ১৫ থেকে ২১ তারিখ পর্যন্ত দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২৬ কোটি ৭৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার। গত ৮ থেকে ১৪ জুন দেশে এসেছে ৯২ কোটি ৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স। আর জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছিলেন ৭২ কোটি ৬২ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
এর আগে গত মে মাসে দেশে এসেছে চলতি অর্থবছরের সর্বোচ্চ ২২৫ কোটি ৩৮ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। আর এপ্রিল, মার্চ, ফেব্রুয়ারি ও জানুয়ারিতে দেশে যথাক্রমে রেমিট্যান্স এসেছিল ২০৪ কোটি ৩০ লাখ ৬০ হাজার, ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ ৫০ হাজার, ২১৬ কোটি ৬০ লাখ ও ২১০ কোটি ৯ লাখ ৫০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স।

অর্থনীতি
পাচারকৃত ৪০ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তির সন্ধান পেয়েছে এনবিআর

বাংলাদেশ থেকে অর্থপাচার করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গড়া প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান পেয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)। চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত পাঁচটি দেশের সাতটি শহরে অনুসন্ধান চালিয়ে এই তথ্য পাওয়া গেছে বলে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে জানিয়েছেন সিআইসির মহাপরিচালক আহসান হাবিব।
রোববার (১৭ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান ও সিআইসি মহাপরিচালক প্রধান উপদেষ্টার সামনে এসব তথ্য তুলে ধরেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বার্তায় বিষয়টি জানানো হয়েছে।
এসময় জানানো হয়, নয়টি দেশে ৩৫২টি পাসপোর্টের সন্ধান পাওয়া গেছে যেগুলো টাকার বিনিময়ে অর্জন করেছে কিছু বাংলাদেশি। দেশগুলো হচ্ছে— অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুডা, অস্ট্রিয়া, ডমেনিকা, গ্রেনেডা, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, নর্থ মেসিডোনিয়া, মালটা, সেন্ট লুসিয়া এবং তুরস্ক।
আহসান হাবিব বলেন, দেশে বসেই বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রাথমিক প্রস্তুতি শেষে সিআইসির গোয়েন্দারা দেশগুলোতে সরেজমিনে পরিদর্শন করে বিস্তারিত তথ্য তুলে নিয়ে আসেন।
আরও অনুসন্ধান চলমান আছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে অর্থপাচার করে গড়ে তোলা ৩৪৬টি সম্পত্তির সন্ধান মিলেছে। এটি আমাদের অনুসন্ধানের আংশিক চিত্র।
তিনি বলেন, এসব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে বাংলাদেশের অনুকূলে নিয়ে আসার জন্য এবং অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সাজা নিশ্চিত করতে কাজ করছে সিআইসি।
তিনি জানান, ছয়টিরও বেশি আন্তর্জাতিক সংস্থা এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশকে সহযোগিতা করছে।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা যা পেয়েছি এটি টিপ অব দ্য আইসবার্গ। আমাদের কাছে এখনো প্রচুর তথ্য রয়েছে যা উন্মোচনে আরও সময় প্রয়োজন।
এই অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা শেখ হাসিনার আমলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডাটবেজ নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ায় নিজেদের লোক বসিয়ে বহু তথ্য গায়েব করে দিয়েছে জানিয়ে আহসান হাবিব বলেন, আশার বিষয় হচ্ছে মুছে দেওয়া তথ্য উদ্ধারে দক্ষতা অর্জন করেছে সিআইসি।
বিস্তারিত জানার পর প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে দুদক, সিআইসি ও পুলিশের সিআইডিসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
তিনি বলেন, এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ দেশের সম্পদ লুট করে বিদেশে সম্পত্তি তৈরি করতে না পারে।
সিআইসিকে অনুসন্ধান কাজ চলমান রাখার নির্দেশনা দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যতদূর সম্ভব গভীরে যেতে হবে এবং সম্ভাব্য আরও দেশে অনুসন্ধান বিস্তৃত করতে হবে। যাতে দেশের সম্পদ দেশে ফিরিয়ে আনতে সম্ভাব্য সব পদক্ষেপে সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।
দেশের অর্থনৈতিক খাতের এই লুটপাটকে ভয়াবহ দেশদ্রোহিতা হিসেবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর দেশ বিনির্মাণ করতে হলে অবশ্যই এই লুটেরাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
তিনি বলেন, দেশের সম্পদকে কীভাবে লুটপাট করেছে কিছু মানুষ তা জাতির সামনে প্রকাশ করতে হবে। সেজন্য সবগুলো সংস্থাকে জোটবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
কাফি
অর্থনীতি
আগস্টের ১৭ দিনে রেমিট্যান্স এলো সাড়ে ১৯ হাজার কোটি টাকা

আগস্ট মাসের ১৭ দিনেই বাংলাদেশে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি (১৬১ কোটি ৯০ হাজার ডলার) রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এসেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ১৯ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, আগস্টের ১৭ দিনে ১৬১ কোটি ৯০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৪৯ কোটি ৩৩ লাখ ডলার। বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে এক ব্যাংকের (কৃষি ব্যাংক) মাধ্যমে এসেছে ১৫ কোটি ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৯৬ কোটি ২৭ লাখ ৬০ হাজার ডলার। এছাড়া বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৩১ লাখ ৩০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স।
এর আগে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে এসেছে ২৪৭ কোটি ৭৯ লাখ ১০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩০ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। তবে ওই মাসে ৮টি ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি। এর মধ্যে রয়েছে— রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল) ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব)। বেসরকারি খাতে কমিউনিটি ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংক এবং বিদেশি ব্যাংকের মধ্যে হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান ও স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।
এর আগে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মার্চ মাসে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল, যা ছিল বছরের রেকর্ড পরিমাণ। আর পুরো অর্থবছর (২০২৪-২৫) জুড়ে প্রবাসী আয় এসেছে ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। উল্লেখ্য, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাসভিত্তিক রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল নিম্নরূপ- জুলাই: ১৯১.৩৭ কোটি ডলার, আগস্ট: ২২২.১৩ কোটি ডলার, সেপ্টেম্বর: ২৪০.৪১ কোটি ডলার, অক্টোবর: ২৩৯.৫০ কোটি ডলার, নভেম্বর: ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বর: ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারি: ২১৯ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারি: ২৫৩ কোটি ডলার, মার্চ: ৩২৯ কোটি ডলার, এপ্রিল: ২৭৫ কোটি ডলার, মে: ২৯৭ কোটি ডলার এবং জুনে এসেছে ২৮২ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারঘোষিত প্রণোদনা ও প্রবাসী আয়ের পথ সহজ করায় রেমিট্যান্স প্রবাহ ইতিবাচক ধারায় রয়েছে।
অর্থনীতি
সাড়ে ৫ মাস বন্ধের পর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু

সাড়ে পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পাঁচটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে মোট ১৫০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় পেঁয়াজবোঝাই ভারতীয় একটি ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
রোববার (১৭ আগস্ট) বিকেল ৪টায় জগদীশ চন্দ্র রায়ের ৩০ টন পেঁয়াজবোঝাই ট্রাকটি বাংলাদেশে প্রবেশ করার মাধ্যমে আমদানি কার্যক্রম শুরু হয়। হিলি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি রাশেদ ফেরদৌস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হিলি স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধের উপ-সহকারী কর্মকর্তা ইউসুফ আলী জানান, সততা বাণিজ্যালয়, নাশাত ট্রেডার্স, আল মক্কা ইমপ্রেস, সুরাইয়া ট্রেডার্স এবং জগদীশ চন্দ্র রায় পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন পেয়েছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ৩০ টন করে পেঁয়াজ আমদানি করতে পারবে।
এদিকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পেলেও পরিমাণ যথেষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন আমদানিকারকেরা।
আমদানিকারক নুর ইসলাম বলেন, ৩০ টন করে অনুমতি খুবই সীমিত, যা একটি ভারতীয় ট্রাকের সমান। আগে ২ হাজার থেকে ৫ হাজার টন পর্যন্ত আইপি দেওয়া হতো।
অন্যদিকে আমদানির খবরে দুদিনের ব্যবধানে হিলি স্থলবন্দরের বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। দুদিন আগে যেখানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল ৭৫ টাকায়, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়।
হিলি কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের সর্বশেষ গত ৩ মার্চ এ বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল।
কাফি
অর্থনীতি
একনেকে ১১ প্রকল্প অনুমোদন, ব্যয় ৯ হাজার ৩৬১ কোটি

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ১১টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৯ হাজার ৩৬১ কোটি ৯২ লাখ টাকা।
রোববার (১৭ আগস্ট) শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক বৈঠকে প্রকল্পগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপার্সন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৈঠকে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ; আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল; স্বরাষ্ট্র এবং কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.); শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন; পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সভায় অংশগ্রহণ করেন।
পরিকল্পনা উপদেষ্টার কার্যালয় জানায়, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ৯ হাজার ৩৬১ কোটি টাকা ব্যয়ে ১১টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৬ হাজার ৬৭৭ কোটি টাকা, প্রকল্প ঋণ ২ হাজার ৪২৮ কোটি ৪ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ২৫৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে নতুন প্রকল্প ৫টি, সংশোধিত প্রকল্প ২টি এবং ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে মেয়াদ বৃদ্ধির ৩টি প্রকল্প রয়েছে।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে- আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রংপুর অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প; বাপবিবোর বিদ্যমান শিল্পসমৃদ্ধ এলাকার ৩৩/১১ কেভি আউটডোর উপকেন্দ্রের আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধন প্রকল্প; বিএমআর অব কেরু অ্যান্ড কোং (বিডি) লি. (২য় সংশোধিত) প্রকল্প; রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ স্থাপন প্রকল্প; ৫টি নির্ধারিত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (সিলেট, বরিশাল, রংপুর, রাজশাহী এবং ফরিদপুর) বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট স্থাপন (১ম সংশোধিত) প্রকল্প; ঢাকার আজিমপুর সরকারি কলোনির ভেতরে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বহুতল আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ (জোন-সি) প্রকল্প; ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য ২টি বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণ প্রকল্প; ঢাকা এনভায়রনমেন্টাল সাসটেনেবল ওয়াটার সাপ্লাই (তৃতীয় সংশোধিত) ও বান্দরবান পৌরসভা এবং বান্দরবান জেলার ৩টি উপজেলা সদরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে নিরাপদ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন (১ম সংশোধিত) প্রকল্প; চট্টগ্রামের মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপন প্রকল্প; উপজেলা পর্যায়ে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ (দ্বিতীয় পর্যায়) (প্রস্তাবিত প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প।
সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টার নিজস্ব ক্ষমতাবলে এরইমধ্যে অনুমোদিত ৯টি প্রকল্প সর্ম্পকে একনেক সদস্যদের অবহিত করা হয়। প্রকল্পগুলো হচ্ছে- ১. হাতিয়া দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া দ্বীপ শতভাগ নির্ভরযোগ্য ও টেকসই বিদ্যুতায়ন (২য় সংশোধিত), ২. রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগে নেসকোর আওতাধীন এলাকায় স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার স্বাপন (১ম সংশোধিত) প্রকল্প, ৩. বরগুনা জেলার ২টি পৌরসভা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, ৪. তিন পার্বত্য জেলায় দুর্যোগ ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক উন্নয়ন (২য় সংশোধিত) প্রকল্প, ৫. লাঙ্গলবন্দ মহাষ্টমী পুণ্যস্নান উৎসবের অবকাঠামো উন্নয়ন (২য় সংশোধিত), ৬. তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি (২য় সংশোধিত), ৭. সিলেট বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন (২য় সংশোধিত) প্রকল্প, ৮. কপোতাক্ষ নদ ও তৎসংলগ্ন এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ (২য় পর্যায়) (১ম সংশোধিত), ৯. বিদ্যালয় বহির্ভূত কিশোর-কিশোরীদের জন্য দক্ষতা কেন্দ্রিক সাক্ষরতা (২য় সংশোধিত) প্রকল্প।
কাফি
অর্থনীতি
এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে বছরের ব্যবধানে গ্রাহক বেড়েছে ১৪ লাখ

ব্যাংকখাতের সংকটকালেও ডিজিটালের কারণে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে এজেন্ট ব্যাংকিং। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই খাতের গ্রাহক, আমানত, ঋণ বিতরণ ও প্রবাসী আয়ের পরিমাণে গত এক বছরে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন মাইলফলক সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ২০২৪ সালের জুন মাস শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ২ কোটি ৩০ লাখ ৩৪ হাজার ৫৩৮টি। এক বছরের ব্যবধানে তা বেড়ে ২০২৫ সালের জুনে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৪৪ লাখ ৬ হাজার ২৩৬টিতে। অর্থাৎ এক বছরে নতুন গ্রাহক যুক্ত হয়েছে প্রায় পৌনে ১৪ লাখ (১৩ লাখ ৭১ হাজার ৬৯৮), যা প্রবৃদ্ধির ৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
একই সময়ে এ খাতে ঋণ বিতরণ ১৮ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৮ কোটি টাকায়। ফলে এক বছরে ঋণ বিতরণ বৃদ্ধি পেয়েছে ১০ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা বা প্রায় ৫৫ শতাংশ।
প্রবাসী আয়েও বড় উল্লম্ফন দেখা গেছে। ২০২৪ সালের জুন শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রবাসী আয় ছিল ১ লাখ ৫৮ হাজার ৩১২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। চলতি বছরের জুনে তা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৮৮৮ কোটি ১৫ লাখ টাকায়। অর্থাৎ এক বছরে রেমিট্যান্স বেড়েছে ২৫ হাজার ৫৭৫ কোটি ২১ লাখ টাকা বা ১৬ দশমিক ১৫ শতাংশ।
অন্যদিকে, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের আমানত ২০২৪ সালের জুনের ৪০ হাজার ৭৩ কোটি টাকা থেকে বেড়ে গত জুনে দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার ৬০৫ কোটি ২৭ লাখ টাকায়। অর্থাৎ আমানত বেড়েছে ৫ হাজার ৫৩২ কোটি ২৭ লাখ টাকা।
তবে গ্রাহক ও লেনদেনে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি হলেও এজেন্ট ও আউটলেটের সংখ্যা কমেছে। গত এক বছরে এজেন্ট কমেছে ৬১৮টি এবং আউটলেট কমেছে ৯১৬টি। বর্তমানে সক্রিয় এজেন্টের সংখ্যা ১৫ হাজার ৩৭৩ এবং আউটলেট ২০ হাজার ৫৭৭টি।
শীর্ষ অবস্থানে ইসলামী ব্যাংক
প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি এককভাবে শীর্ষে রয়েছে। ২০২৫ সালের এপ্রিল-জুন সময়ে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মোট রেমিট্যান্সের ৫৫.০৮ শতাংশ (১ লাখ ১ হাজার ২৮২ কোটি টাকা) সংগ্রহ করেছে ব্যাংকটি। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক (৫১ হাজার ১৪৩ কোটি টাকা) এবং তৃতীয় স্থানে ব্যাংক এশিয়া (১৪ হাজার ২৫৩ কোটি টাকা)।
এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের রেকর্ড ভাঙা কেবল পরিসংখ্যান নয় বরং এটি প্রান্তিক অঞ্চলে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বিপ্লব। বিশেষ করে প্রবাসী আয় বিতরণে এজেন্ট ব্যাংকিং এখন অন্যতম প্রধান চ্যানেলে পরিণত হয়েছে।
এর আগে ২০১৩ সালে চালু হওয়া এজেন্ট ব্যাংকিং বর্তমানে দেশের গ্রামীণ ও ব্যাংকবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কাছে সহজলভ্য আর্থিক সেবার নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হয়ে উঠেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রবাসী আয়ের প্রবাহ, ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ ও গ্রামীণ জনগণের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে এটি এখন কার্যকর বিকল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।