জাতীয়
সিলেটে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৭ লাখ ৭২ হাজার শিশু
বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ইউনিসেফ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এমনটি জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট। তিনি শুক্রবার (২১ জুন) এক বিবৃতিতে জানান, আকস্মিক এ বন্যায় ইতোমধ্যে ২০ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সাত লাখ ৭২ হাজারেরও বেশি শিশু। তাদের জরুরি সহায়তার প্রয়োজন।
শেলডন ইয়েট জানান, বন্যার পানি বৃদ্ধির সময় শিশুরাই সবচেয়ে বেশি অরক্ষিত হয়ে পড়ে। ডুবে মারা যাওয়া, অপুষ্টি ও মারাত্মক পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়া, বাস্তুচ্যুতির আতঙ্ক এবং জনাকীর্ণ আশ্রয়কেন্দ্রে নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে পড়ে তারা।
তিনি বলেন, আমাদের অগ্রাধিকার হলো, শিশুদের নিরাপত্তা ও মঙ্গল নিশ্চিত করা। বাংলাদেশ সরকার এবং মাঠপর্যায়ের অংশীদারদের সঙ্গে সমন্বয় ও অংশীদারত্বে, আমরা গত পাঁচ দিনে বন্যা কবলিত প্রায় এক লাখ মানুষের মধ্যে নিরাপদ পানি বিতরণ করেছি। এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকাকালীন তিন হাজারের বেশি ১০ লিটার ধারণক্ষমতাসম্পন্ন পানির পাত্র বিতরণ করেছি।
পরিস্থিতি বিবেচনায় বিভিন্ন গুদাম থেকে জরুরি ভিত্তিতে অতিরিক্ত জরুরি সরঞ্জাম আনা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউনিসেফের এ প্রতিনিধি জানান, সিলেট বিভাগে ৮১০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। ৫০০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। প্রায় ১৪০টি কমিউনিটি ক্লিনিক বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কঠিন এ সময়ে সম্ভাব্য সহিংসতা নিরসনে এবং ট্রমা বা আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে শিশুদের সহযোগিতা করতে শিশু সুরক্ষা সমাজকর্মীরা পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছেন।
সিলেট অঞ্চলের নদীগুলোর পানি বিপজ্জনক উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে এবং আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতি আরও অবনতির শঙ্কার কথাও জানান তিনি।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
বৈষম্যবিরোধী সিটি ও পৌর কাউন্সিলরদের পুনর্বহালের দাবি
তৃণমূল পর্যায়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার বাস্তবায়ন ও জনসাধারণের স্বার্থ রক্ষায় বৈষম্যবিরোধী সিটি ও পৌর কাউন্সিলরদের পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
আজ বুধবার (২৭ নভেম্বর) রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপোমা ইঞ্জিনিয়ার্স (আইডিইবি) ভবনে সিটি ও পৌর কাউন্সিলর সমাবেশ থেকে এ দাবি জানান সিটি করপোরেশন কাউন্সিলর অ্যাসোসিয়েশন ও পৌর কাউন্সিলর অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা। উভয় সংগঠন যৌথভাবে এ সমাবেশের আয়োজন করে।
কাউন্সিলরদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর বলেন, সরকার বুদ্ধিমান হলে আপনাদের অপসারণ না করে ডেকে নিতেন। সরকার আপনাদের সহযোগিতা পেত। আপনার সরকারকে সহযোগিতা করতেন। জনপ্রতিনিধিদের অপসারণ না করে সরাসরি আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত।
সমাবেশ কাউন্সিলদের দাবির প্রতি একাত্বতা প্রকাশ করে এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, আমলাদের পরামর্শে জনপ্রতিনিদিদের অপসারণ করা হচ্ছে। যে আমলারা ১৬ বছর ফ্যাসিবাদের দালালি করেছে তাদের আবার নতুন করে দালালির ঠিকাদারি কেন দেওয়া হলো?
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, বিগত ১৬ বছরে যেসব আমলা আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের দালালি করেছে তাদের কেন অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হলো? তারা নিজের দায়িত্বই ভালোভাবে পালন করে না, আবার জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব নিয়েছে। এটা তো ভালো সমাধান হলো না।
সমাবেশ সিটি ও পৌর কাউন্সিলররা বলেন, আমরা কোনো দলের মনোনীত প্রার্থী নই। কোনো দলের প্রতীকে ভোট করিনি। জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়ে কাউন্সিলর হয়েছি। জাতীয় নির্বাচনের মত রাতের ভোটে নির্বাচিত হইনি। আমরা আওয়ামী লীগের সিলেক্টেড লোকদের হারিয়ে জিতে এসেছি।
কাউন্সিলররা আরও বলেন, আমরা ১৭ বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। বিভিন্নভাবে আমরা ছাত্রদের সঙ্গে ছিলাম। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আমাদের ছেলে-মেয়ে, আমাদের ভাই-বোন অংশগ্রহণ করেছে। আমরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের আন্দোলনের ফসল। আমরা এই সরকারের সঙ্গে আছি। আমরা সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চাই।
তারা আরও বলেন, রাষ্ট্র যখন সুষম বন্টনের কথা বলছে, তখন আমরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। যখন সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, বৈষম্যবিরোধী কাউন্সিলরদের সংস্কারের বাহিরে রাখা হচ্ছে। আমরা সংস্কারের অংশীজন হতে চাই। রাষ্ট্র সংস্কারে সরকারের সহযোগি হতে চাই। সরকারের হাত শক্তিশালী করতে চাই। সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হলে তৃণমূলে যেতে হবে। তৃণমূল জনসাধারণের প্রতিনিধি কাউন্সিলররা। জনপ্রতিনিধির কাজ একজন অফিসার করতে পারবে না।
আওয়ামী আমলাদের কুবুদ্ধিতে কাউন্সিলরদের অপসারণ করা হয়েছে দাবি করে তারা আরও বলেন, আমলারা সরকারকে অস্বস্তিতে রাখতে এ ধরণের কুবুদ্ধি দিয়েছে। কাউন্সিলর না থাকায় জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কাউন্সিলররা এলাকায় অভিভাবক। কাউন্সিলরা অপসারণ হওয়ায় পতিত স্বৈরাচার সরকারের লোকেরা এলাকায় এলকায় নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। তারা নতুন করে অভিভাবক সাজার চেষ্টা করছে। আমরা পুনর্বহাল চাই। অবিলম্বে আমাদের পদ ফিরিয়ে দেওয়া হোক। যারা নৌকা নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত হয়েছেন, তারা সরকারের সঙ্গে কাজ করছে, তাদের বহাল রেখেছেন। তাহলে আমরা কেন পারবো না।
বাংলাদেশ সিটি কর্পোরেশন কাউন্সিলর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে সমাবেশে সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন মাদারীপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাওসার মাহমুদ।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার বিচারের দাবিতে টিএসসিতে বিক্ষোভ
চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার বিচারের দাবিতে টিএসসিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট নামের দুই সংগঠন। এ সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলমান সংঘাত বন্ধের দাবিও জানান তারা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
৪৬তম বিসিএস প্রিলির ফল পুনরায় প্রকাশ, উত্তীর্ণ ২১৩৯৭
৪৬তম বিসিএস প্রিলিমিনারি ফলাফল আবার নতুন করে প্রকাশ করেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। এতে মোট উত্তীর্ণ হয়েছেন ২১ হাজার ৩৯৭ জন। বুধবার (২৭ নভেম্বর) পিএসসির এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
পিএসসি জানায়, ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফলাফল গত ৯ মে প্রকাশিত হয়। এ পরীক্ষায় ১০ হাজার ৬৩৮ প্রার্থীকে লিখিত পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হয়।
এক্ষেত্রে সম্ভাব্য বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে নির্বাচিত প্রার্থীদের সঙ্গে আরও সমসংখ্যক প্রার্থী লিখিত পরীক্ষার জন্য যোগ্য বিবেচনা করে পুনরায় ফলাফল ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেয় পিএসসি।
সিদ্ধান্ত অনুসারে আরও ১০ হাজার ৬৩৮ জনকে লিখিত পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করল পিএসসি। আগের ও বর্তমানের মিলে মোট ২১ হাজার ২৭৬ জন লিখিত পরীক্ষার জন্য ডাক পেলেন।
উত্তীর্ণ প্রার্থীদের তালিকা দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
আইনজীবী সাইফুল হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৬
চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানার লালদীঘি এলাকায় সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে সংঘর্ষের ঘটনায় সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে এক আইনজীবী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার ভিডিও দেখে সন্দেহভাজন অন্তত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ভিডিও ফুটেজ থেকে এই ছয়জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে মঙ্গলবার সংঘর্ষ চলাকালে ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে ২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি)।
একইসেঙ্গে দেশীয় ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভসহ (ককটেল) আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের ছয় সদস্যকে আটক করা হয়েছে।
এর আগে, মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নাকচ হওয়ায় তার অনুসারীরা আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করেন। এ সময় সংঘর্ষের মাঝে পড়ে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহত হন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে মত প্রকাশের স্বাধীনতা বেড়েছে
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের চেয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে মত প্রকাশের স্বাধীনতা বেড়েছে বলে মনে করেন ৬০ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ। এছাড়া এই আমলে সংবাদ মাধ্যমগুলো আওয়ামী লীগ আমলের চেয়ে বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে বলে মনে করে ৬১ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ।
বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা। গণমাধ্যমটির করা এক জরিপে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এই জরিপ ১৩ থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের আট বিভাগে ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী ১ হাজার মানুষের মধ্যে পরিচালিত হয়।
জরিপের ফল অনুযায়ী, ২৫ দশমিক ২ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের মতোই রয়েছে, ১৪ দশমিক ২ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সময় মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কিছুটা কম। এ বিষয়ে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ উত্তরদাতা মন্তব্য করতে চাননি।
পুরুষদের মধ্যে ৬৪ দশমিক ৩ শতাংশ এবং নারীদের মধ্যে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, বর্তমান সরকারের অধীনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আগের চেয়ে বেশি।
তরুণদের (১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী) মধ্যে ৫৭ দশমিক ১ শতাংশ এবং ৩৫ বছরের বেশি বয়সী ৬৩ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ মনে করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের তুলনায় বেড়েছে। গ্রামাঞ্চলে ৫৮ দশমিক ৪ শতাংশ এবং শহরাঞ্চলে ৬৬ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ একমত হয়েছেন যে, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বেশি।
জরিপে অংশগ্রহণকারী ৬১ দশমিক ২ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে সংবাদমাধ্যমগুলো আওয়ামী লীগ আমলের চেয়ে বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে। তবে এই দুই আমলের মধ্যে সংবাদ মাধ্যমগুলোর স্বাধীনতা ভোগের ক্ষেত্রে কোনো পার্থক্য দেখেন না বলে ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ নাজিয়েছেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের সময় আওয়ামী লীগ আমলের চেয়ে সংবাদ মাধ্যমগুলো কম স্বাধীন বলে মনে করেন ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ এবং ৬ দশমিক ৮ শতাংশ উত্তরদাতা এ ব্যাপারে জানেন না বলেছেন। এছাড়া, শূন্য দশমিক ২ শতাংশ উত্তরদাতা এ বিষয়ে কথা বলতে চাননি। অন্যদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে আওয়ামী আমলের তুলনায় সংবাদমাধ্যমগুলো অপেক্ষাকৃত বেশি স্বাধীনতা পাচ্ছে শহরের উত্তরদাতাদের ৭৩ দশমিক ৮ শতাংশ এমনটি মনে করেন। গ্রামের উত্তরদাতাদের মধ্যে এমন মত পোষণ করেন ৫৭ দশমিক ১ শতাংশ।
তরুণদের (১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী) মধ্যে ৬৫ দশমিক ৭ শতাংশ উত্তরদাতা এবং ৩৫ ও তারচেয়ে বেশি বয়সী উত্তরদাতাদের ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ মনে করেন বর্তমান সরকারের আমলে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের তুলনায় সংবাদমাধ্যমগুলো অপেক্ষাকৃত বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে।
পুরুষদের মধ্যে ৬৮ দশমিক ২ শতাংশ ও নারীদের মধ্যে ৫৪ দশমিক ২ শতাংশ উত্তরদাতা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে আগের আমলের চেয়ে সংবাদমাধ্যমগুলো বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে বলে মত দিয়েছে।
২০২৪ সালে মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৬৫তম, যা ২০০২ সাল থেকে মুক্ত গণমাধ্যম সূচক প্রকাশ শুরু হওয়ার পর থেকে সর্বনিম্ন। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর টানা চার মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত ১৫ বছরে মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে ৪৪ ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ। গণমাধ্যম সূচকের এই অবনতির পেছনে যেসব কারণগুলো বিশেষজ্ঞরা চিহ্নিত করেছেন, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো সরকারের বিভিন্ন নিপীড়নমূলক আইন, দলীয় বিবেচনায় গণমাধ্যমের লাইসেন্স প্রদান এবং গণমাধ্যমকে একটি ভীতির মধ্যে রাখা।
আন্তর্জাতিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) তাদের প্রতিবেদনে বলে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বা ডিএসএ সাংবাদিকদের জন্য বিশ্বে সবচেয়ে কঠোর আইনের মধ্যে অন্যতম। এই আইন কোনো পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেপ্তার বা তল্লাশি এবং যে কোনো কারণে সাংবাদিকের সূত্রের গোপনীয়তা লঙ্ঘন করা অনুমোদন করে। গত বছর বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে তার বদলে সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হয়। কিন্তু এ আইনটিও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন মহলের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে ভয়েস অফ আমেরিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই আইন প্রসঙ্গে দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, সাইবার সিকিউরিটি এ্যাক্ট যেটা পাস হয়েছে— আমাদের মতে শুধু খোলস পরিবর্তন ছাড়া সাইবার সিকিউরিটি আইন-এর সাথে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের, গুণগত বা উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন নেই। বাকস্বাধীনতা, মত প্রকাশের অধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা— এই বিষয়গুলো খর্ব করার মতো অনেক উপাদান এই আইনে রয়ে গেছে।
এ আইনটি বাতিলের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেইসাথে ইতোমধ্যে সাইবার নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া মামলাগুলো প্রত্যাহারেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের শাসনভার গ্রহণ করার পর প্রথম কয়েকদিন আওয়ামী লীগ আমলে সরকারের সুবিধাভোগী ও পতিত সরকারের প্রোপাগান্ডা প্রচার করতো বলে জনমনে পার্সেপশন থাকা কিছু টিভি চ্যানেল ও প্রিন্ট সংবাদমাধ্যম, যেমন এটিএন, একাত্তর টিভি, সময় টিভি হামলার শিকার হয়। তবে কিছুদিন পর থেকেই গণমাধ্যমগুলির কার্যালয়ে হামলার ঘটনা বন্ধ হয়ে যায়।
পরে সেপ্টেম্বরের ১১ তারিখ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া তার ভাষণে বলেন, আপনারা আমাদের সমালোচনা করুন। সংবাদমাধ্যম ও মত প্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতা ইতোমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। আমরা সবাইকে বলে দিয়েছি, আপনারা মন খুলে আমাদের সমালোচনা করেন। আমরা সবার মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। মিডিয়া যাতে কোনো রকম বাধা বিপত্তি ছাড়া নির্বিঘ্নে তাদের কাজ করতে পারে সেজন্য একটি মিডিয়া কমিশন গঠন করা সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন।
এমআই