জাতীয়
নানামুখী ব্যবস্থা নেওয়ায় ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হয়েছে: পুলিশ

পবিত্র ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট স্পিডগান ব্যবহারসহ নানামুখী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ফলে যানবাহন চলাচল ও ট্রাফিক ব্যবস্থা স্বাভাবিক থাকায় জনগণের ঈদযাত্রা ছিল নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক।
আজ বৃহস্পতিবার পুলিশ সদরদপ্তরে থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
পুলিশ সদরদপ্তর জানায়, সাধারণত ওভারস্পিড সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচিত। অননুমোদিত যানবাহনে যাত্রী পরিবহন রোধ এবং স্পিডগান ব্যবহারের মাধ্যমে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণের ফলে সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস পেয়েছে।
গত ১৩ থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশ পুলিশ দেশের বিভিন্ন মহাসড়ক ও সড়কের ৫৫৬টি স্থানে স্পিডগান ব্যবহার করেছে। একই সময়ে ওভারস্পিডের কারণে ১ হাজার ৪৫৮টি প্রসিকিউশন হয়েছে। ওই সময়ে গণপরিবহন ব্যতীত অন্যান্য পরিবহনে যাত্রী পরিবহন করায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ৫৮৩টি যানবাহনের বিরুদ্ধে। এছাড়া, পুলিশ ২ হাজার ১৪টি স্থানে চেকপোস্ট স্থাপনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের পরিবহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আলোচ্য সময়ে মোট ৭ হাজার ১০২টি প্রসিকিউশন দাখিল করা হয়েছে।
সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস, জনগণের নিরাপদ এবং স্বস্তিদায়ক চলাচল অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশ পুলিশের এ কার্যক্রম চলমান থাকবে

জাতীয়
সেনাপ্রধানের সঙ্গে ডব্লিউজিইআইডির ভাইস চেয়ারপারসনের সাক্ষাৎ

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছে জাতিসংঘের গুম বিষয়ক কার্যনির্বাহী দলের ভাইস চেয়ারপারসন গ্রাজিনা বারানোভস্কার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল।
সোমবার (১৬ জুন) সেনাসদরে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন প্রতিনিধি দলটি।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গ্রাজিনা বারানোভস্কা বিভিন্ন সংস্থায় (যেমন র্যাব, ডিজিএফআই, বিজিবি) অতীতে কর্মরত কিছু সেনা সদস্যের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। জবাবে সেনাবাহিনী প্রধান জানান, এ ধরনের সেনা সদস্যরা সংশ্লিষ্ট সংস্থার অধীনে নিয়ন্ত্রণাধীন থেকে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিচার প্রক্রিয়া ও মানবাধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক তদন্ত প্রক্রিয়ায় সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
জাতীয়
হজে গিয়ে আরও দুই হাজির মৃত্যু

সৌদি আরবে পবিত্র হজ পালন শেষে দেশে ফিরতে শুরু করেছেন হাজিরা। হজ পালন করতে গিয়ে সোমবার (১৬ জুন) পর্যন্ত ৩২ জন হাজির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল বেগম সামছুন্নাহার (৭৬) ও মোজাহিদ আলী (৫১) নামে দুই হাজি মারা গেছেন।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ ব্যবস্থাপনা পোর্টালের মৃত্যু সংবাদে এসব তথ্য জানা গেছে। যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে মক্কায় মৃত্যু হয়েছে ২১ জনের, মদিনায় ১০ জন ও আরাফায় ১ জন।
হজ ব্যবস্থাপনা পোর্টালের তথ্য মতে, এ বছর হজে গিয়ে গত ২৯ এপ্রিল প্রথম মারা যান রাজবাড়ীর পাংশার মো. খলিলুর রহমান (৭০)। এরপর ২ মে মারা যান কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের মো. ফরিদুজ্জামান (৫৭), ৫ মে মারা যান পঞ্চগড় সদরের আল হামিদা বানু (৫৮), ৭ মে মারা যান ঢাকার মোহাম্মদপুরের মো. শাহজাহান কবির (৬০) এবং ৯ মে মারা যান জামালপুরের বকশিগঞ্জের হাফেজ উদ্দিন (৭৩), ১০ মে মারা যান নীলফামারী সদরের বয়েজ উদ্দিন (৭২), ১৪ মে মারা যান চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের মো. অহিদুর রহমান (৭২), ১৭ মে মারা যান গাজীপুর সদরের মো. জয়নাল হোসেন (৬১) এবং ১৯ মে মারা যান চাঁদপুরের মতলবের আ. হান্নান মোল্লা (৬৩) ও ২৪ মে রংপুরের পীরগঞ্জের মো. সাহেব উদ্দিন।
এছাড়া ২৫ মে মারা গেছেন চাঁদপুরের কচুয়ার বশির হোসাইন (৭৪), ২৭ মে মারা যান চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের শাহাদাত হোসেন, ২৯ মে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার মো. মোস্তাফিজুর রহমান(৫৩), একই দিন মাদারীপুর সদরের মোজলেম হাওলাদার (৬৩), গাজীপুরের টঙ্গীর পূর্ব থানার আবুল কালাম আজাদ (৬২), গত ১ জুন মারা যান, গাজীপুরের পুবাইলের মো. মফিজ উদ্দিন দেওয়ান (৬০) ও নীলফামারীর সৈয়দপুরের মো. জাহিদুল ইসলাম (৫৯), ৫ জুন মারা যান ঢাকার কেরানীগঞ্জের মনোয়ারা বেগম মুনিয়া, ৬ জুন খুলনার বটিয়াঘাটা এলাকার শেখ মো. ইমারুল ইসলাম, ৭ জুন নোয়াখালীর সোনাইমুড়ির মো. মুজিব উল্যা, ৯ জুন মারা যান গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরের এ টি এম খায়রুল বাসার মন্ডল, ১০ জুন সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার গোলাম মোস্তফা, ১২ জুন লালমনিরহাট পাটগ্রামের আমির হামজা, ময়মনসিংহের কোতয়ালি এলাকার মো. মনিরুজ্জামান (৬৬) ও নোয়াখালীর চাটখিল এলাকার খাতিজা বেগম (৪১)। ১৪ জুন ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকার রোকেয়া বেগম (৬২) ও যশোরের মনিরামপুর এলাকার মনজুয়ারা বেগম (৫৯)। ১৬ জুন ঢাকার রামপুরার মোজাহিদ আলী (৫১) ও কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার বেগম সামছুন্নাহার (৭৬)।
হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাত্রার প্রথম ফ্লাইট ছিল ২৯ এপ্রিল আর শেষ ফ্লাইট ৩১ মে। প্রথম ফিরতি ফ্লাইট শুরু হয় ১০ জুন এবং শেষ হবে ১০ জুলাই।
জাতীয়
দ্বিতীয় ধাপের সংলাপে ঐকমত্য কমিশন

আলোচিত জুলাই সনদ ঘোষণা ও অসমাপ্ত প্রস্তাবগুলোতে ঐকমত্যে পৌঁছাতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ে আবারও আলোচনায় বসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে এ আলোচনা শুরু হয়।
জানা যায়, প্রথম ধাপের অসমাপ্ত আলোচনা এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর ঐকমত্য গঠনে এ বৈঠকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। আজকের আলোচনার বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে– সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন, নারী প্রতিনিধিত্বসহ দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ এবং প্রধান বিচারপতির নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যে দ্বিমত রয়েছে সেসব বিষয়।
বৈঠকে অংশ নিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ ও হাফিজ উদ্দিন আহমেদসহ তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল প্রবেশ করেছে। এছাড়াও সিপিডি, বাসদসহ কয়েকটি ইসলামিক দলের নেতারা এসে যোগ দিয়েছেন এ বৈঠকে। ১৮ ও ১৯ জুনও পর্যায়ক্রমে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এ বৈঠক চলবে।
জাতীয়
বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিধানে জাতিসংঘের উদ্বেগ

বাংলাদেশে আইন পরিবর্তনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নিষিদ্ধ করার সুযোগ তৈরির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক।
সোমবার (১৬ জুন) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৫৯তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
ফলকার টুর্ক বলেন, বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো সংলাপের মাধ্যমে অগ্রগতি হচ্ছে, এতে আমি অনুপ্রাণিত। অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে তাদের আমি অর্থবহ সংস্কারের দিকে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানাই।
তিনি আরও বলেন, তবে আমি রাজনৈতিক দল ও সংগঠন এবং তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার জন্য আইনের সাম্প্রতিক পরিবর্তন নিয়ে উদ্বিগ্ন। এ ধরনের পরিবর্তন সংগঠন করার স্বাধীনতা, মতপ্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারকে অন্যায্যভাবে সীমিত করে।
জাতীয়
পাঁচ রাজাকারকে কুপিয়ে হত্যা করা মুক্তিযোদ্ধা সখিনা আর নেই

কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার নারী মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগম (৯৩) মারা গেছেন। মঙ্গলবার (১৭ জুন) ভোরে বাজিতপুর উপজেলার হিলচিয়া ইউনিয়নের বড়মাইপাড়া গ্রামে তিনি মারা যান।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হিলচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাজহারুল হক নাহিদ।
জানা গেছে, কিশোরগঞ্জের হাওর অধ্যুষিত নিকলী উপজেলার গুরুই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন সখিনা বেগম। তার বাবার নাম সোনাফর মিয়া এবং মায়ের নাম দুঃখী বিবি। সখিনা নিঃসন্তান। মুক্তিযুদ্ধের আগেই মারা যান স্বামী কিতাব আলী। নিকলীতে সখিনাকে দেখভাল করার কেউ না থাকায় তিনি বাজিতপুর উপজেলার হিলচিয়ার বড়মাইপাড়া গ্রামে ভাগ্নি ফাইরুন্নেছা আক্তারের কাছে থাকতেন। সেখানেই মঙ্গলবার ভোরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
হিলচিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নিয়াজ মামনুন রহমান পুটন বলেন, সখিনা বেগম বড়মাইপাড়া গ্রামে প্রায় ৪০ বছর যাবৎ বসবাস করে আসছেন। মঙ্গলবার ভোর ৫টার সময় তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। আমাদের বাড়ির পাশে তার বসবাস থাকায় ছোটকাল থেকেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বলতেন। তিনি খেতাবপ্রাপ্ত একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
নিকলী উপজেলার গুরুই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. তোতা মিয়া বলেন, গুরুই গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগমকে দেখভাল করার জন্য কেউ না থাকায় তিনি বাজিতপুর হিলচিয়া ভাগ্নির কাছে থাকতেন। সেখানে মারা গেছেন। মঙ্গলবার আসর নামাজ বাদ গুরুই ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে সখিনা বেগমের গ্রামে শাহী মসজিদের পাশে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে সখিনা বেগম নেমে পড়েন সশস্র যুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধে সখিনা বেগমের ভাগ্নে মতিউর রহমান সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিয়ে হানাদার পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের হাতে শহীদ হোন। ভাগ্নের অকালমৃত্যু সখিনাকে প্রতিশোধপরায়ণ করে তোলে। মুক্তিযুদ্ধের সময় সখিনা বেগম গুরুই এলাকায় বসু বাহিনীর নেতৃত্বাধীন মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে রাঁধুনির কাজ করতেন। কাজের ফাঁকে রাজাকারদের গতিবিধির বিভিন্ন খবর সংগ্রহ করে মুক্তিযোদ্ধাদের জানাতেন। একপর্যায়ে তিনি পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। পরে কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে আসেন। আসার সময় সেখান থেকে নিয়ে আসেন একটি ধারালো দা। পরে সেই দা দিয়েই নিকলীর পাঁচ রাজাকারকে কুপিয়ে হত্যা করেন। সখিনা বেগমের ওই দা বর্তমানে ঢাকায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।