জাতীয়
নানামুখী ব্যবস্থা নেওয়ায় ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হয়েছে: পুলিশ

পবিত্র ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট স্পিডগান ব্যবহারসহ নানামুখী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ফলে যানবাহন চলাচল ও ট্রাফিক ব্যবস্থা স্বাভাবিক থাকায় জনগণের ঈদযাত্রা ছিল নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক।
আজ বৃহস্পতিবার পুলিশ সদরদপ্তরে থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
পুলিশ সদরদপ্তর জানায়, সাধারণত ওভারস্পিড সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচিত। অননুমোদিত যানবাহনে যাত্রী পরিবহন রোধ এবং স্পিডগান ব্যবহারের মাধ্যমে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণের ফলে সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস পেয়েছে।
গত ১৩ থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশ পুলিশ দেশের বিভিন্ন মহাসড়ক ও সড়কের ৫৫৬টি স্থানে স্পিডগান ব্যবহার করেছে। একই সময়ে ওভারস্পিডের কারণে ১ হাজার ৪৫৮টি প্রসিকিউশন হয়েছে। ওই সময়ে গণপরিবহন ব্যতীত অন্যান্য পরিবহনে যাত্রী পরিবহন করায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ৫৮৩টি যানবাহনের বিরুদ্ধে। এছাড়া, পুলিশ ২ হাজার ১৪টি স্থানে চেকপোস্ট স্থাপনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের পরিবহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আলোচ্য সময়ে মোট ৭ হাজার ১০২টি প্রসিকিউশন দাখিল করা হয়েছে।
সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস, জনগণের নিরাপদ এবং স্বস্তিদায়ক চলাচল অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশ পুলিশের এ কার্যক্রম চলমান থাকবে

জাতীয়
বেড়াতে গিয়ে বন্দি, পালিয়ে বাঁচা রেজাউলের তথ্যে ৮৩ জন উদ্ধার

কক্সবাজারে বেড়াতে গিয়ে অপহরণের শিকার হয় কুষ্টিয়ার কুমারখালীর পান্টি গ্রামের রেজাউল করিম।প্রাণ বাঁচিয়ে কোনো রকমে বিজিবির কাছে পৌঁছায় তিনি। এরপর তার দেওয়া তথ্যে বেরিয়ে আসে এক ভয়াবহ জগতের সন্ধান! উদ্ধার করা হয় আরো ৮৩ জনকে। রীতিমতো শিউরে ওঠার মতো এই ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। একে একে বেরিয়ে এসেছে মানব পাচারের এক ভয়ানক চক্রের সন্ধান।
দেশের এক সংবাদমাধ্যমের বিশেষ প্রতিবেদনে উঠে আসে এই ভয়াবহ অধ্যায়। কুষ্টিয়ার কুমারখালীর পান্টি গ্রামের রেজাউল করিম বেড়াতে এসেছিলেন কক্সবাজারের টেকনাফে। হোটেল আল করমে ওঠার পর অচেনা এক দুঃস্বপ্নে পড়েন তিনি। ৭ সেপ্টেম্বর স্থানীয় এক ব্যক্তি মো. আমিন যিনি হোটেলের সাবেক ম্যানেজার, তিনি রেজাউলকে অপহরণ করে ৫০ হাজার টাকায় পাচারকারীদের হাতে তুলে দেন। সেই থেকেই শুরু হয় তার বন্দিদশার ভয়াবহ অভিজ্ঞতা।
রেজাউলকে প্রথমে টেকনাফ পৌর শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের ঝরনা চত্বর থেকে অপহরণ করে পাহাড়ি আস্তানায় নিয়ে যাওয়া হয়। চোখ বাঁধা অবস্থায় বুঝতেও পারেননি কোথায় যাচ্ছেন। পরে মুক্তিপণের দাবিতে টানা ১৩ দিন তাকে নির্যাতন করা হয়।
শেষ পর্যন্ত আরো একদল পাচারকারীর কাছে বিক্রি করার পথে জীবন হাতে নিয়ে পাহাড় থেকে পালিয়ে যান তিনি। সরাসরি বিজিবি ক্যাম্পে গিয়ে আশ্রয় নিলে শুরু হয় পুরো ঘটনার মোড় ঘোরা।
রেজাউলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিজিবি ও র্যাব যৌথ অভিযান চালিয়ে টেকনাফের বাহারছড়া কচ্ছপিয়ার গহিন পাহাড় থেকে নারী-শিশুসহ ৮৩ জনকে উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃতরা সবাই সাগরপথে মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে পাচারের উদ্দেশ্যে সেখানে আটকে রাখা হয়েছিল। এসময় তিন মানব পাচারকারীকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়।
টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান এবং র্যাব-১৫-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কামরুল হাসান সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে অভিযানের বিস্তারিত তুলে ধরেন।
পালিয়ে বাঁচা রেজাউল করিম জানান, চোখের বাঁধন খোলার পর দেখি চারপাশে দুই শতাধিক মানুষ আটক। সেখানে টাকার বিনিময়ে মানুষ কেনাবেচা হয়। সন্ধ্যা নামলেই শুরু হতো নির্যাতন। এক পর্যায়ে আমার পরিবারকে ফোন দিয়ে মুক্তিপণ দাবি করে পাচারকারীরা। যেদিন পালিয়ে আসি সেদিনও অন্তত ২৫০ জন ছিল সেই আস্তানায়।
তিনি আরো জানান, এখনো শতাধিক মানুষ বন্দি অবস্থায় রয়েছে, যাদের উদ্ধার করা না গেলে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।
যে হোটেল থেকে শুরু হয় রেজাউলের ভয়াবহ অধ্যায়, সেই হোটেল আল করমের মালিক মোহাম্মদ আলী জানান, হোটেলটি পারিবারিক সম্পত্তি হলেও ১০ বছরের জন্য অন্যদের কাছে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আমিন দুই বছর আগে ম্যানেজারের পদ থেকে বাদ পড়েছিল। বর্তমানে তার সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।
অন্য ভুক্তভোগীদের অভিজ্ঞতা
একই আস্তানা থেকে টেকনাফের নয়াপাড়ার বাসিন্দা আয়েশা খাতুনও উদ্ধার হন। ঘুরতে গিয়ে অপহৃত হয়ে তিনি ছয় দিন বন্দিদশায় কাটান। নির্যাতনের স্মৃতি বর্ণনা করতে গিয়ে আয়েশা বলেন, ঝুপড়ি ঘরে গাদাগাদি করে রাখা হয়েছিল। মুক্তিপণ না পেলে আমাদের মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচার সুযোগ থাকত না।
মুন্সীগঞ্জের অমিত হাসান ও মানিক মিয়াও একইভাবে প্রতারণার শিকার হন। পরিচিত এক কক্সবাজারবাসীর আমন্ত্রণে টেকনাফে এসে তারা পাচারকারীদের হাতে ধরা পড়েন। ২০ দিন পাহাড়ি আস্তানায় আটকে থাকার পর র্যাব-বিজিবির অভিযানে তারা মুক্তি পান।
এখানেই সীমাবদ্ধ নয়, রোহিঙ্গা শিবির থেকেও প্রলোভনে আনা হচ্ছে অনেক শরণার্থীকে। উদ্ধার হওয়া ৮৪ জনের মধ্যে ৬৬ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী। তাদের অনেককে মালয়েশিয়া বা থাইল্যান্ডে উন্নত জীবনযাপন ও চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে আনা হয়। আবার কয়েকজন নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়েও ফাঁদে ফেলা হয়।
উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্পের দুই রোহিঙ্গা যুবক মোহাম্মদ এনাম ও আমিন বাহার জানান, তারা সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার আশায় পাহাড়ে এসেছিলেন। কিন্তু সেখানে ১০ দিন আটক রেখে মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
এ ঘটনা উন্মোচন হতেই টানা ১২ ঘণ্টার অভিযানে যৌথ বাহিনী পাচারকারীদের তিন রাউন্ড গুলির মুখেও কৌশলে ভুক্তভোগীদের অক্ষতভাবে উদ্ধার করে। গ্রেপ্তার হওয়া পাচারকারীরা হলেন—আবদুল্লাহ (২১), সাইফুল ইসলাম (২০) ও মো. ইব্রাহিম (২০)। তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি বন্দুক, ধারালো অস্ত্র এবং গুলি উদ্ধার করা হয়।
বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, ‘টেকনাফের পাহাড়ে কয়েকটি সক্রিয় মানব পাচারকারী গ্রুপ কাজ করছে। এর নেতৃত্বে আছেন হোসেন, সাইফুল ও নিজাম নামের তিনজন, যারা আন্তর্জাতিক পাচার চক্রের মূল হোতা।’ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কিছু চক্রও পাচারের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে নদী ও পাহাড় থেকে পাচারের উদ্দেশ্যে আটকে রাখা ১৭৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১২ পাচারকারীকে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয়
আগামী নির্বাচন হবে গণতন্ত্রের নতুন ভিত্তি: প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আসন্ন ফেব্রুয়ারির নির্বাচন হবে একটি ভিত্তি স্থাপনকারী নির্বাচন, যা দেশের গণতন্ত্রে নতুন যুগের সূচনা করবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পথে রয়েছে এবং আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) প্যারিসের মেয়র আনে হিদালগো নিউইয়র্কে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে হোটেলে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ সব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানান।
সৌজন্য এ সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম, খেলাধুলা ও অলিম্পিকে সামাজিক ব্যবসার ভূমিকা এবং বৈশ্বিক শরণার্থী সংকট, বিশেষ করে রোহিঙ্গা মানবিক সংকট নিয়ে দুই নেতা বিস্তারিত আলোচনা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, প্যারিস ২০২৪ অলিম্পিককে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সামাজিক ব্যবসার আসরে রূপান্তরিত করতে তিনি ভূমিকা রেখেছেন। তিনি ভবিষ্যতের সব অলিম্পিক গেমস, লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকসহ কার্বন-নিউট্রাল করার গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
প্যারিসের মেয়র আনে হিদালগো এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে প্রফেসর ইউনূসের নেতৃত্বের প্রতি পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমি আপনার নেতৃত্বের প্রশংসা করি। আপনি অসাধারণ কাজ করছেন।
দুই নেতা দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থানরত প্রায় এক মিলিয়ন রোহিঙ্গা শরণার্থীর মানবিক সহায়তার জন্য তহবিল বাড়ানোর জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। মেয়র হিদালগো বিশ্বব্যাপী শরণার্থী শিবিরে জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের আহ্বান জানান এবং আশা প্রকাশ করেন যে রোহিঙ্গারা একদিন নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারবেন।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জানান, আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘ রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি বড় আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করছে, যা বিশ্বের দৃষ্টি এই দীর্ঘস্থায়ী শরণার্থী সংকটের দিকে পুনর্নির্দেশ করবে।
তিনি মেয়র হিদালগোকে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
এসময় এসডিজি সমন্বয়ক ও সরকারের সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদও উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয়
বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে ভূমি জরিপ সংক্রান্ত সমঝোতা

দক্ষিণ কোরিয়ার ভূমি, অবকাঠামো ও পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ডিজিটাইজড ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে ও সমন্বিত ভূমি তথ্য ব্যবস্থাপনা সিস্টেম বাস্তবায়ন বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশে ভূমিসেবায় নতুন দিগন্তের উন্মোচন হলো বলে জানিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দক্ষিণ কোরিয়ায় আয়োজিত ২০২৫ কে-জিও ফেস্টে বাংলাদেশ সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমদ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার ভূমি, অবকাঠামো ও পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী মি. লি সাং কিয়ং এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন।
ভূমি মন্ত্রণালয় জানায়, এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে সমগ্র বাংলাদেশে ডিজিটাইজড ভূমি জরিপ পরিচালনা এবং সমন্বিত ভূমি তথ্য ব্যবস্থাপনা সিস্টেম বাস্তবায়নের পথ সুগম হলো। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের ভূমি ব্যবস্থাপনায় শতভাগ ডিজিটালাইজেশনের পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেল।
বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ জরিপ হিসেবে এটি বিবেচিত হচ্ছে। আনুমানিক প্রতি ২৫ বছর পরপর ভূমি জরিপ হয়ে থাকে। বাংলাদেশে নতুন যে জরিপ শুরু হয়েছে এটি সম্পূর্ণভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে করা হবে। বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে মূলত ভূমি সংক্রান্ত আধুনিক ডিজিটাল জরিপ কার্যক্রম, যা ভূমি মন্ত্রণালয় ভূমি ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন ও ডিজিটালাইজেশন করার লক্ষ্যে পরিচালনা করছে।
এর ফলে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে জমি সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণ, মালিকানা যাচাই এবং ভূমি ব্যবস্থাপনাকে আরও স্বচ্ছ, দক্ষ ও জনবান্ধব করা সম্ভব হবে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো জমি নিয়ে বিরোধ কমানো, দলিল ও রেকর্ডের সঠিকতা নিশ্চিত করা এবং নাগরিক সেবা অটোমেশনের মাধ্যমে মানুষের ভোগান্তি কমানো।
এছাড়াও ভূমির পরিমাণ, অবস্থান, ব্যবহারযোগ্যতা ও ভূমির শ্রেণিবিন্যাস সম্পর্কে নির্ভুল ও হালনাগাদ তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করার একটি ব্যবস্থা গড়ে উঠবে।
জাতীয়
আগামী নির্বাচন সম্পর্কে বিশ্বকে অবহিত করবেন প্রধান উপদেষ্টা: প্রেস সচিব

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বসেছে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশন। আজ (২৬ সেপ্টেম্বর) এ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে কী বার্তা দেবেন তিনি, সে সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেছেন তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানান, প্রধান উপদেষ্টা ২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। সেখানে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের গত ১৪ মাসে নেওয়া সংস্কার কার্যক্রম, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পদক্ষেপ তুলে ধরবেন।
তিনি বলেন, মূল বার্তা হলো— ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মৌলিক নির্বাচন হবে। এটি অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ, গ্রহণযোগ্য ও উৎসবমুখর হবে।
শফিকুল আলম আরও জানান, বিশ্বনেতারা ইতোমধ্যেই আসন্ন নির্বাচনে পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনের মতোই জনগণ অবাধে ভোট দিতে পারবেন।
এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব জানান, প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘে তার ভাষণে সরকারের কার্যক্রম, নির্বাচন প্রস্তুতি, বিচার কার্যক্রম এবং রোহিঙ্গা ইস্যু তুলে ধরবেন।
আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো দূরত্ব নেই। সরকার নিয়মিত তাদের সঙ্গে বৈঠক করছে।
আওয়ামী লীগের অতীত কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে শফিকুল আলম বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে আমরা দেখেছি, তারা কী করেছে। ১৫ বছরের শাসনামলে মানুষ হত্যা, গুম এবং হাজার হাজার মিথ্যা মামলা হয়েছে। এখন দেখুন আওয়ামী লীগের অবস্থা কোথায়? তাদের আর কোনো বন্ধু নেই।
জাতীয়
ড. ইউনূসকে ‘আনলক বিগ চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত থিয়ারওয়ার্ল্ডের বার্ষিক গ্লোবাল এডুকেশন ডিনারে সম্মানিত হয়েছেন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কের এক হোটেলে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে তাকে মর্যাদাপূর্ণ ‘আনলক বিগ চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়। সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে তার অগ্রণী অবদান এবং শিক্ষার প্রতি দীর্ঘদিনের অঙ্গীকারের স্বীকৃতিস্বরূপ এ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন জাতিসংঘের বৈশ্বিক শিক্ষা বিষয়ক বিশেষ দূত ও যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন এবং থিয়ারওয়ার্ল্ডের চেয়ারম্যান সারা ব্রাউন।
ড. ইউনূসের পাশাপাশি জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপো গ্রান্ডিকেও সম্মাননা জানানো হয়। তবে ইউনূসের দারিদ্র্য বিমোচনে ক্ষুদ্রঋণভিত্তিক কাজ এবং শিক্ষাকে মিশনের অংশ করার উদ্যোগ উপস্থিত অতিথিদের গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করে।
গর্ডন ব্রাউন এসময় বলেন, গত ৫০ বছরে কোনো বেসরকারি খাতের প্রকল্প মানুষের দারিদ্র্য দূরীকরণে গ্রামীণ ব্যাংকের মতো অবদান রাখতে পারেনি।
পুরস্কার গ্রহণকালে ড. ইউনূস বলেন, খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার মতো ঋণও একটি মৌলিক মানবাধিকার। আর্থিক ব্যবস্থার দরজা খুলে দিলে কেউ আর দরিদ্র থাকবে না। আমি ক্ষুদ্রঋণ সঙ্গে শিক্ষাকেও যুক্ত করেছি, যাতে নারীরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে পারে।
তিনি প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, শিশুদের ছোটবেলা থেকেই উদ্যোক্তা হওয়ার শিক্ষা দেওয়া উচিত। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ব্যবসাকে মানবকল্যাণের শক্তি হিসেবে ব্যবহারের শিক্ষা দিতে হবে।
ড. ইউনূস আরও বলেন, মানবজাতির সব সমস্যার সমাধান ব্যবসায়িক উপায়ে করা সম্ভব।