আন্তর্জাতিক
মাইক্রোসফটকে হটিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে দামি কোম্পানি এনভিডিয়া
মাইক্রোসফটকে হটিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানির তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে এনভিডিয়া। মূলত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় যে উন্নত মানের প্রসেসের প্রয়োজন হয়, তা তৈরির লড়াইয়ে এগিয়ে থাকায় মাইক্রোসফটকে পিছনে ফেলে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানির তকমা পেয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, গতকাল এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম ৩ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৩৫ দশমিক ৫৮ ডলারে উঠে যায়; বাজার মূলধন বেড়ে দাঁড়ায় ৩ লাখ ৩৫ হাজার কোটি ডলার। এর চেয়ে বেশি বাজার মূলধন কোনো কোম্পানির নেই। কয়েক দিন আগে অ্যাপলকে হটিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক বাজার মূলধনসম্পন্ন কোম্পানির তকমা পায় এনভিডিয়া; কয়েক দিনের মধ্যেই তারা শীর্ষ কোম্পানি হয়ে উঠল।
গতকাল মাইক্রোসফটের শেয়ারমূল্য শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ হ্রাস পায়; কোম্পানিটির বাজার মূলধন কমে ৩ দশমিক ৩১৭ টিলিয়ন বা ৩ লাখ ৩১ কোটি ডলারে নেমে আসে। একই দিনে অ্যাপলের স্টকমূল্য ১ শতাংশের বেশি হ্রাস পেয়ে ৩ দশমিক ২৮৬ ট্রিলিয়ন বা ৩ লাখ ২৮ হাজার কোটি ডলারে নেমে আসে।
এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম এক বছর ধরেই বাড়ছে। কোম্পানিটির শেয়ারমূল্যের এই বৃদ্ধি দেখে বোঝা যাচ্ছে, ওয়ালস্ট্রিটে এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কী ধরনের উন্মাদনা তৈরি হয়েছে।
এনভিডিয়ার শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে এসঅ্যান্ডপি ও নাসডাক সূচক রেকর্ড উচ্চতায় উঠে গেছে। তা সত্ত্বেও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে। এআই নিয়ে যে অসংযত উচ্চাশা তৈরি হয়েছে, সেই উচ্চাশা যেকোনো সময় হাওয়ায় মিলিয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। তাঁরা মনে করছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় বিনিয়োগ কমে যাচ্ছে—এমন ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র তেমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম যে বেড়েছে কেবল তা-ই নয়, একই সঙ্গে তাদের শেয়ার এখন যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হচ্ছে। প্রতিদিন এই কোম্পানির গড়ে পাঁচ হাজার কোটি ডলারের বেশি শেয়ার লেনদেন হচ্ছে, যেখানে অ্যাপল, মাইক্রোসফট ও টেসলার শেয়ারের লেনদেন হচ্ছে গড়ে এক হাজার কোটি ডলারের। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচকে এখন যত শেয়ার লেনদেন হচ্ছে, তার ১৬ শতাংশই এখন এনভিডিয়ার।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় যে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন প্রসেসর দরকার, সেই প্রসেসরের মূল উৎস এনভিডিয়া। ফলে চলতি বছর এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম প্রায় তিন গুণ হয়েছে। অথচ চলতি বছর মাইক্রোসফটের শেয়ারের দাম বেড়েছে মাত্র ১০ শতাংশের মতো।
মাইক্রোসফট, মেটা ও অ্যালফাবেটের মতো মহিরুহ প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো এআইভিত্তিক কম্পিউটিং সক্ষমতা বৃদ্ধির চেষ্টা করছে; এই কোম্পানিগুলো এআইভিত্তিক সেবা ও পণ্য নিয়ে আসছে। এসব ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হচ্ছে এনভিডিয়ার প্রসেসর।
প্রসেসরের জগতে আরও কিছু কোম্পানি আছে। কিন্তু বাজার–বিশ্লেষকেরা বলেন, এনভিডিয়ার প্রসেসরের মান অন্যান্য কোম্পানির চেয়ে ভালো। সে কারণে তারা প্রসেসর সরবরাহ করে কুলিয়ে উঠতে পারছে না। অনেক বিনিয়োগকারী মনে করেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জগতে যে প্রতিযোগিতা চলছে, তা থেকে সবচেয়ে লাভবান হচ্ছে এনভিডিয়া।
গতকাল এনভিডিয়ার এই শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে কোম্পানিটির স্টক মূল্য রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছে। কোম্পানিটির বাজার মূলধন বেড়েছে ১১০ বিলিয়ন বা ১১ হাজার কোটি ডলার।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এনভিডিয়ার শেয়ারের মূল্য দুই লাখ কোটি ডলারে উন্নীত হয়; এক লাখ কোটি ডলার থেকে দুই লাখ কোটি ডলারে উন্নীত হতে সময় লেগেছে মাত্র নয় মাস। সেখান থেকে তিন ট্রিলিয়ন বা তিন লাখ কোটি ডলারে উন্নীত হতে সময় লেগেছে মাত্র তিন মাসের বেশি কিছু সময়।
এখানেই শেষ নয়, এনভিডিয়ার নির্বাহীরা বলছেন, আগামী বছরের প্রথম ভাগ পর্যন্ত তাদের ব্ল্যাকওয়েল এআই চিপের সরবরাহ চাহিদার চেয়ে বেশি থাকবে।
এখন এনভিডিয়ার প্রতিটি শেয়ারকে ১০ ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে শেয়ারের মূল্যমানে পরিবর্তন আসবে না, তবে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা এনভিডিয়ার শেয়ার কিনতে পারবেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
হাজার বছরের পুরোনো বীজ থেকে যেভাবে জন্ম নিল রহস্যময় গাছ!
জেনেটিক্যালি মডিফাই করে ডাইনোসোরকে পুনরায় পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা নিয়ে তৈরি বৈজ্ঞানীক কল্পকাহিনী নির্ভর চলচ্চিত্র ‘জুরাসিক পার্ক’ কখনোই বাস্তবে ঘটবে না। তবে এর অর্থ এই নয় যে বিজ্ঞানীরা অতীতকে পুনরুজ্জীবিত করতে আগ্রহী নয়।
সম্প্রতি বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া প্রাণী- মেমাথ, ডোডো এবং তাসমানিয়ান টাইগার পুনরুজ্জীবিত করার প্রকল্পগুলো একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যে এসে পৌঁছেছে। তবে প্রাণীগুলোর কার্বন কপি নয় বরং এর শংকর সংস্করণ তৈরির প্রচেষ্টেই চলছে।
গবেষকরা প্রাচীন ডিএনএ থেকে নতুন মলিকিউলার ভিত্তিকে ঔষুধ তৈরির সম্ভাবনাও খুঁজছেন। অন্যদিকে কেউ কেউ ইতিহাসের পুরোনো উদ্ভিদগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করছেন।
১৯৮০ এর দশকে প্রত্নতাত্ত্বিকরা জুডিয়ান মরুভূমির একটি গুহা থেকে একটি সম্পূর্ণ সুস্থ বীজ আবিষ্কার করেন। কয়েক দশক পরে জেরুজালেমের লুই এল. বোরিক ন্যাচারাল মেডিসিন রিসার্চ সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা ড. সারা স্যালনের নেতৃত্বে একটি নতুন গবেষণা দল সেই বীজটি রোপণ করেন এবং অপেক্ষা করতে থাকেন যে কী ঘটতে পারে।
গবেষকদের বিস্মিত করে পাঁচ সপ্তাহ পরে ওই বীজ থেকে ছোট্ট একটি অঙ্কুর বেরিয়ে আসে। সেই অঙ্কুরের একটি অংশ পরীক্ষার মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হন যে বীজটি ১০০০ বছর পুরোনো ছিল।
অবিশ্বাস্যভাবে, গাছটি সুস্থভাবে বেড়ে উঠেছে এবং এখন এর উচ্চতা ১০ ফুট বা ৩ মিটার। তবে এটি এখন পর্যন্ত কোনো ফুল বা ফল দেয়নি।
ডিএনএ সিকোয়েন্সিং ব্যবহার করে গবেষকরা সেই রহস্যময় গাছকে কমিফোরা বর্গের অংশ হেসেব শনাক্ত করা হয়েছে। তবে এর সঠিক প্রজাতি এখনো অজানা এবং সম্ভবত বিলুপ্ত বলে ধারণা করা হচ্ছে। গবেষক দলটি বিশ্বাস করেন, গাছটি বাইবেলে উল্লেখিত একটি ঔষধি উদ্ভিদের সঙ্গে যোগসূত্র থাকতে পারে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ভিসা কমিয়ে দেওয়ায় যেসব সমস্যার মুখোমুখি বাংলাদেশ-ভারত
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের ভারতীয় দূতাবাস কিছুদিন ভিসা কার্যক্রম বন্ধ রেখে আবার চালু করলেও তা চলছে অত্যন্ত সীমিত আকারে। বর্তমানে শুধু শিক্ষা ও জরুরি চিকিৎসার জন্য ভিসার আবেদন করা যাচ্ছে। ভারতের ভিসা জটিলতার কারণে বাংলাদেশ থেকে ভারতগামী ফ্লাইটের সংখ্যাও কমে অর্ধেকে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে ইউরোপের অনেক দেশের দূতাবাস ভারতে থাকায় সংকটে পড়ছেন ইউরোপে পড়তে যেতে আগ্রহী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা।
এ ছাড়া চিকিৎসার জন্যও ভিসা পেতেও হিমশিম খাচ্ছেন আবেদনকারীরা। সীমিত ভিসা দেওয়ার প্রভাব পড়ছে এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও।
ফ্লাইটসংখ্যা কমে অর্ধেক
ভিসা জটিলতার সম্ভবত সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়েছে এয়ারলাইনস ব্যবসায়। বাংলাদেশের তিনটি বিমান সংস্থা নভোএয়ার, ইউএস বাংলা ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ভারতে ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে।
ভিসা জটিলতায় যাত্রী যেতে না পারায় এদের মধ্যে দুইটি বিমান সংস্থার ফ্লাইট কমে অর্ধেকে নেমেছে, আর পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে একটির।
বাংলাদেশ থেকে ভারতে সবচেয়ে বেশি ফ্লাইট পরিচালনা করত ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস। ৫ আগস্টের আগে ঢাকা-কলকাতা, ঢাকা-চেন্নাই ও চট্টগ্রাম-কলকাতা এই তিনটি রুটে সপ্তাহে মোট ৩২টি বিমান পরিচালনা করত সংস্থাটি। তবে ৫ আগস্টের পর থেকে দুটি রুটে এই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১২-তে।
আর পুরোপুরি বন্ধ আছে চট্টগ্রাম-কলকাতা রুটে বিমান চলাচল।
একই অবস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের। আগে ঢাকা-কলকাতা, ঢাকা-চেন্নাই ও ঢাকা-দিল্লি রুটে সপ্তাহে ২৮টি ফ্লাইট পরিচালিত হলেও বর্তমানে চলছে মাত্র ১৩টি ফ্লাইট।
আর পুরোপুরি বন্ধ আছে শুধু ঢাকা-কলকাতা রুটে চলাচলকারী নভোএয়ারের ফ্লাইট। সংস্থাটির মার্কেটিং অ্যান্ড সেলসের প্রধান মেজবাউল ইসলাম জানান, আগে প্রতিদিন নভোএয়ারের একটি করে ফ্লাইট ঢাকা থেকে কলকাতায় গেলেও যাত্রী কমার পর তা কমিয়ে সপ্তাহে তিনটি করা হয়।
তবে ১৬ তারিখ থেকে ফ্লাইট চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রেখেছে সংস্থাটি।
ভিসার কারণেই ফ্লাইটসংখ্যা কমে গেছে বলে জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। ইউএস বাংলা এয়ারলাইনসের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. কামরুল ইসলাম বলেন, ‘যারা এখনো ট্র্যাভেল করছেন তাদের আর্লিয়ার (আগের) ভিসা ছিল। হয়তো কিছুদিন পর সেই ভিসাগুলো শেষ হয়ে গেলে ফ্লাইটের সংখ্যা হয়তো আরো কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে, যদি ভিসা সংক্রান্ত জটিলতা এর মধ্যে ক্লিয়ার না হয়।’
ভারত চিকিৎসা ভিসা দিলেও চেন্নাইগামী ফ্লাইটের সংখ্যাও ‘আপ টু দ্য মার্ক’ না বলে জানান এই কর্মকর্তা। এ ছাড়া ‘৫০ থেকে ৬০ শতাংশ লোড নিয়ে ফ্লাইটগুলো অপারেট করতে হচ্ছে’ বলেও জানান তিনি।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক বোসরা ইসলাম বলেন, ‘যাত্রী যাওয়ার ফ্লো কমে গেছে। কমার ফলে দেখা যাচ্ছে অনেক ফ্লাইট আন্ডারলোড যাচ্ছে। তখন আমরা এটা কমিয়ে নিয়ে এসে এডজাস্ট করেছি যে এ রকম ফ্রিকোয়েন্সি থাকলে আমাদের মোটামুটি অপারেটিং কস্ট উঠে আসবে।’
তবে ভিসা আবার আগের মতো দেওয়া শুরু হলে এবং যাত্রী চাপ বাড়লে আবারও আগের মতো ফ্লাইট পরিচালনা করা যাবে বলে মনে করছেন এই খাতসংশ্লিষ্টরা।
সংকটে ইউরোপে পড়তে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা
ইউরোপের বেশির ভাগ দেশের দূতাবাস বাংলাদেশে নেই। ফলে বাংলাদেশি কোনো শিক্ষার্থীকে ইউরোপের দেশগুলোতে পড়তে যেতে হলে, ভারতে গিয়ে সেই দেশের দূতাবাস থেকে দেশটির ভিসা সংগ্রহ করতে হয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ভর্তীচ্ছু শিক্ষার্থীদের প্রথমে ভারতের ভিসা প্রয়োজন হয়। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ৫ আগস্টের দুই দিন পর থেকে ভারতীয় দূতাবাস ভিসা কার্যক্রম বন্ধ রাখে। প্রায় এক সপ্তাহ পর দেশটি ‘সীমিত আকারে’ ভিসার কাজ চালু করে।
সাধারণত কূটনৈতিক, ব্যবসায়ী ও ভ্রমণসহ ১৫টি ক্যাটাগরিতে ভারত বাংলাদেশকে ভিসা দিয়ে থাকে। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে শুধু শিক্ষা ও জরুরি চিকিৎসার জন্য ভিসা আবেদন করা যাচ্ছে। তবে সে ক্ষেত্রেও বেশ বেগ পেতে হচ্ছে ভিসা আবেদনকারীদের।
পর্যটন ব্যবসায় ধস
গত রবিবার রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে গিয়ে দেখা যায় ভারতীয় ভিসা আবেদনকারীদের ভিড়। কাগজ হাতে দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলোর অপেক্ষা ভারতীয় ভিসার জন্য। কিন্তু সেখানকারই যে দোকানগুলো থেকে ভারতীয় ভিসার জন্য আবেদন করা যায়, সেখানটা ছিল অনেকটাই ফাঁকা। বন্ধও ছিল কয়েকটি দোকান।
ব্যবসায়ীরা বলছিলেন, ভারতীয় ভিসা বন্ধ থাকায় ব্যবসার অবস্থা বেশ খারাপ। কারণ এসব দোকান থেকে যে দেশগুলোর ভিসার জন্য আবেদন করা হয়, তার বড় একটি অংশই ভারতের।
কথা হয় এশিয়া ট্যুরস অ্যান্ড ট্র্যাভেলস নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার ফরহাদ হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আগে যেখানে শুধু ভারতের জন্য মাসে বারো শ থেকে পনেরো শ ফাইল রেডি করা হতো, সেখানে গত এক মাসে ‘ইমার্জেন্সি কেসের’ মাত্র ১০০টি ফাইল রেডি করা গেছে।’
আর সাবমিট করতে পেরেছেন শুধু আট থেকে ১০টি ফাইল। একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য স্লট খোলার কারণে সবাই একসঙ্গে তাতে ঢোকার চেষ্টা করায় সার্ভার ডাউন থাকে বলেও জানান এই ব্যবসায়ী। তবে পাসপোর্ট জমা দেওয়ার পাঁচ থেকে সাত দিন পর ডেলিভারি থাকলেও ১৫ দিন পরও তা হাতে না পাওয়ায় আরো বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
চার শয়ের বেশি বাংলাদেশি ভিসা রিভিউ
ভারত থেকে বাংলাদেশিদের যে সীমিতসংখ্যক ভিসা দেওয়া হচ্ছে সেগুলোও বিশেষভাবে খতিয়ে দেখছে ভারত সরকার। ভারতীয় দৈনিক দ্য হিন্দুতে প্রকাশিত একটি খবর বলছে, নির্দিষ্ট ক্যাটাগরিতে করা আবেদনের মধ্যেও শুধু আগস্টেই ৪৩৪টি বাংলাদেশি ভিসা রিভিউ করেছে ভারত।
পিআরসি বা প্রায়োর রেফারেল চেকের এই প্রক্রিয়ায় সাধারণত ভিসা দেওয়ার আগে গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলো আবেদনকারীর ব্যাকগ্রাউন্ডের খোঁজ-খবর নেয়। একই মাসে পাকিস্তানের ৮৭৮টি ভিসা রিভিউ করা হয়েছে বলে খবরটিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রভাব পড়েছে ভারতের স্থানীয় ব্যবসায়
ভারতের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসে দেশটিতে পর্যটন খাতে ভ্রমণের শীর্ষে ছিল বাংলাদেশ, যা কিনা সে দেশে মোট বিদেশি পর্যটকের ২১ দশমিক ৫৫ শতাংশ। ফলে ভিসা না দেওয়ায় কেবল যে বাংলাদেশিরাই ভোগান্তিতে পড়ছে, তেমনও না। ভিসা কার্যক্রম সীমিত থাকায় সমস্যায় পড়েছেন ভারতের পর্যটন খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরাও।
রাজেশ আহুজা নামের কলকাতার একজন ব্যবসায়ী বিবিসি বাংলাকে বলেন, “বাংলাদেশে যে ঘটনাটা ঘটল, শুরুতে তাতে একটা ধাক্কা লেগেছে। প্রথম কিছুদিন আমরা ক্লিয়ারলি দেখতে পাই, মানুষ আসা কমে যায়। মাস দুয়েক প্রভাব ছিল। কিন্তু পুরনো যাদের ভিসা ছিল তারা ফিরে আসছে।”
হোটেল ও ট্যুরিজম ব্যবসায়ী মনোতোষ সরকার বলেন, ‘এখন কিছুটা হলেও আমাদের ভাটা পড়েছে। কেননা ট্যুরিস্ট ভিসা বন্ধ আছে, যারা মেডিক্যাল ভিসায় আসছে, তারা টুকটাক আসছে।’
ট্যুরিস্ট ভিসা না থাকায় ব্যবসায় প্রভাব পড়ছে বলে জানাচ্ছিলেন মো. কামরুদ্দিন মল্লিক। তিনি বলেন, ‘সর্বোচ্চ ২০ পারসেন্ট আসছে এখন, ৮০ পারসেন্ট ট্যুরিস্ট নেই। যারা আসছে তারাও মেডিক্যালের কাজ করে চলে যাচ্ছে। ট্যুরিস্ট ভিসা হলে কেনাকাটা কিছুটা হয়।’
ভিসা না দেওয়ার কারণ কী?
‘সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর প্রেক্ষাপটে ভারত আশ্বস্ত হচ্ছে না বলেই হয়তো’ এখনো ভিসা নিয়ে এমন কড়াকড়ি করছে দেশটি, এমনটাই মনে করছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ূন কবির।
কিন্তু কিন্তু ভিসা না দেওয়ায় ভারত ও বাংলাদেশের ওপর কী প্রভাব পড়ছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রভাব তো নেতিবাচক বটেই। ভিসা যদি না দেওয়া হয় তাহলে যাতায়াত কমে যায়। যাতায়াত কমা মানে ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ব্যক্তিগত জীবনে অনেকেই নানান জটিলতায় পড়েন। দুই দেশের পিপল টু পিপল কানেক্টিভিটি যেটা ব্যাহত হয় নিশ্চিভাবেই।’
আবার বাংলাদেশিরা দেশটিতে কম যাওয়ায় ভারতের স্থানীয় ব্যবসাও ক্ষতির মুখে পড়ে। হুমাউন কবির বলেন, ‘কলকাতায় বাংলাদেশি ভিজিটরস না থাকার ফলে ট্যুরিজম বড় রকমের ধাক্কা খেয়েছে। কলকাতার বিপণীবিতানগুলোর অবস্থা একটু চাপের মুখে আছে। তাতে করে স্থানীয় অর্থনীতির ওপর একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এটাতে লাভ কারোই হচ্ছে না। দুই দেশের মানুষ এতে করে এফেক্টেড হয়ে যাচ্ছে।’
লাভ না হলেও ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে ভারতের কঠোরতার কারণ কি শুধুই নিরাপত্তা, না এর পেছনে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তও আছে- উঠছে এমন প্রশ্নও। তবে এ ক্ষেত্রে যদি নিরাপত্তার প্রসঙ্গ মুখ্য হয়ে ওঠে, তবে কূটনৈতিক পদক্ষেপের মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে বলেই মত এই বিশ্লেষকের।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দামে রেকর্ড
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ায় সেই প্রভাব পড়েছে জ্বালানি তেলের ওপর। এক সপ্তাহে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ৯ শতাংশ বেড়েছে। শুধুমাত্র গত বৃহস্পতিবারই বেড়েছে ৫ শতাংশ।
রয়টার্স জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দুই ব্র্যান্ড ব্রেন্টের দাম বেড়েছে। ক্রুডের দাম ৮ শতাংশ ও ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম ৯ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে। ব্যারেল প্রতি ব্রেন্ট ক্রুডের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৮.০৫ ডলারে এবং ডব্লিউটিআইয়ের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৪.৩৮ ডলারে। ২০২৪ সালে এই প্রথম এক সপ্তাহের মধ্যে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম এই পরিমাণ বৃদ্ধি পেল।
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার সাম্প্রতিক উত্তেজনা, সেই সঙ্গে ইরানের তেল খনিগুলোতে ইসরায়েলের হামলার হুমকি বিশ্ববাজারে তেলের দাম বৃদ্ধির জন্য দায়ী বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষণকারী বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা।
তারা বলছেন, ইসরায়েল ইরানের তেল অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে, তবে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম প্রতি ব্যারেলে ৩ থেকে ৫ ডলার পর্যন্ত বাড়বে। কারণ, জ্বালানি তেল উত্তোলন ও রপ্তানিকারক দেশগুলোর জোটের (ওপেক প্লাস) সদস্যরাষ্ট্র ইরান বিশ্ববাজারে দৈনিক ৩২ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল পাঠায়, যা শতকরা হিসেবে বাজারের মোট তেলের ৩ শতাংশ।
এক বিবৃতিতে ওপেক প্লাস বলেছে, ইসরায়েল যদি সত্যিই ইরানের তেল ক্ষেত্রেগুলোতে হামলা করে, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই আন্তর্জাতিক বাজারে ইরানি তেলের চালান আসা বন্ধ হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে কিছু দিন এই ঘাটতি পূরণ করতে পারলেও সদস্যরাষ্ট্রগুলোর পক্ষে দীর্ঘমেয়াদে তা সম্ভব হবে না।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
পাকিস্তানে ব্যাপক সংঘর্ষ, সেনা মোতায়েন
শুক্রবার পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থকদের সাথে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। তারপর থেকেই পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে দেশটির প্রদেশ থেকে প্রদেশে। শনিবার পাঞ্জাবের লাহোরেও বিক্ষোভ দেখা দেয়। ফলে সেখানেও সেনা মোতায়েন করতে বাধ্য হয় স্থানীয় প্রশাসন।
শনিবার ইসলামাবাদের পরিস্থিতিও উত্তপ্ত বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম। রাওয়ালপিন্ডিতেও উত্তেজনা চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ রাখছে শাহবাজ শরীফের নেতৃত্বাধীন সরকার। বড় বড় সড়কগুলোও কনটেইনার দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে।
বিভিন্ন গণমাধ্যম জানিয়েছে, শুক্রবার ইসলামাবাদের বিভিন্ন জায়গায় ইমরান খানের দল পিটিআইর সমর্থকরা জড়ো হয়েছিলেন। সেখানে জারি থাকা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করেন তারা। তাদের লক্ষ্য ছিল ডি-চকে বিক্ষোভ করার। কিন্তু পুলিশের বাধায় সেই বিক্ষোভ পণ্ড হয়ে যায়। ওই সময় বিক্ষোভের জন্য জড়ো হওয়ার পিটিআই সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ বাধে।
এদিকে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়াতেও সেনাবাহিনীর সাথে উগ্রপন্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দেশটির গণমাধ্যম জানিয়েছে, উগ্রবাদীদের সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ছয়জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। আর অপর পাঁচজন হলো উগ্রবাদী বাহিনীর সদস্য। খাইবার পাখতুনখাওয়ার নর্থ ওয়াজিরিস্তানের স্পিনওয়াম এলাকায় ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সোনা আছে যে ১০ দেশে
বিশ্বজুড়ে স্বর্ণকে একটি অতি মূল্যবান ধাতু হিসেবে দেখা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আবার স্বর্ণের প্রতি বেশ আবেগও রয়েছে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে স্বর্ণের ব্যবহার এবং উপহার হিসেবে স্বর্ণ কেনার রীতিও রয়েছে বহুকাল থেকেই। ফলে দেশে বিদেশে স্বর্ণের চাহিদাও ব্যাপক। বিশ্বে নারীদের অলঙ্কার হিসেবেও স্বর্ণের চাহিদার কমতি নেই। বিশ্ববাজারে বাড়ছে স্বর্ণের চাহিদা ও দাম।
একটি দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে, নাকি অচিরেই বিপদের মুখে পড়তে যাচ্ছে, তা নির্ধারণেও স্বর্ণের মজুত বিশেষ ভূমিকা রাখে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো নিরাপদ সম্পদ হিসেবে স্বর্ণের ওপর আস্থা রাখে।
সম্প্রতি লন্ডনভিত্তিক ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল (ডব্লিউজিসি) জানিয়েছিলেন, কোন দেশের কাছে সবচেয়ে বেশি স্বর্ণ মজুত রয়েছে। এ হিসাব ২০২৪ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকের (এপ্রিল থেকে জুন) শেষের।
ডব্লিউজিসির তথ্য অনুযায়ী বিশ্বের সবচেয়ে বেশি স্বর্ণ মজুত রাখা দেশের তালিকায় কারা রয়েছেন জেনে নিন—
বিশ্বে সবচেয়ে বেশি স্বর্ণ মজুত রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটির কাছে মজুত রয়েছে ৮ হাজার ১৩৩ দশমিক ৪৬ টন স্বর্ণ। ইউরোপের দেশ জার্মানি রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। দেশটির মজুত ৩ হাজার ৩৫১ দশমিক ৫৩ টন স্বর্ণ।
তৃতীয় অবস্থানে ইউরোপের আরেক দেশ ইতালি। দেশটির রয়েছে ২ হাজার ৪৫১ দশমিক ৮৪ টন স্বর্ণ। এর কাছাকাছি অবস্থানে আছে ফ্রান্স। দেশটিতে ২ হাজার ৪৩৬ দশমিক ৯৭ টন স্বর্ণ মজুত আছে। স্বর্ণের মজুতে রাশিয়ার অবস্থান পঞ্চম। দেশটির কাছে মজুত আছে ২ হাজার ৩৩৫ দশমিক ৮৫ টন স্বর্ণ।
ষষ্ঠ ও সপ্তম অবস্থানে আছে যথাক্রমে চীন ও জাপান। চীনে মজুত আছে ২ হাজার ২৬৪ দশমিক ৩২ টন স্বর্ণ। জাপানে ৮৪৫ দশমিক ৯৭ টন। আর ৮৪০ দশমিক ৭৬ টন স্বর্ণ নিয়ে ভারত আছে অষ্টম অবস্থানে।
এ ক্ষেত্রে নেদারল্যান্ডস ও তুরস্কের অবস্থান যথাক্রমে নবম ও দশম। নেদারল্যান্ডসে মজুত আছে ৬১২ দশমিক ৪৫ টন স্বর্ণ এবং তুরস্কে ৫৮৪ দশমিক ৯৩ টন।
কাফি