আন্তর্জাতিক
মাইক্রোসফটকে হটিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে দামি কোম্পানি এনভিডিয়া

মাইক্রোসফটকে হটিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানির তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে এনভিডিয়া। মূলত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় যে উন্নত মানের প্রসেসের প্রয়োজন হয়, তা তৈরির লড়াইয়ে এগিয়ে থাকায় মাইক্রোসফটকে পিছনে ফেলে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানির তকমা পেয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, গতকাল এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম ৩ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৩৫ দশমিক ৫৮ ডলারে উঠে যায়; বাজার মূলধন বেড়ে দাঁড়ায় ৩ লাখ ৩৫ হাজার কোটি ডলার। এর চেয়ে বেশি বাজার মূলধন কোনো কোম্পানির নেই। কয়েক দিন আগে অ্যাপলকে হটিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক বাজার মূলধনসম্পন্ন কোম্পানির তকমা পায় এনভিডিয়া; কয়েক দিনের মধ্যেই তারা শীর্ষ কোম্পানি হয়ে উঠল।
গতকাল মাইক্রোসফটের শেয়ারমূল্য শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ হ্রাস পায়; কোম্পানিটির বাজার মূলধন কমে ৩ দশমিক ৩১৭ টিলিয়ন বা ৩ লাখ ৩১ কোটি ডলারে নেমে আসে। একই দিনে অ্যাপলের স্টকমূল্য ১ শতাংশের বেশি হ্রাস পেয়ে ৩ দশমিক ২৮৬ ট্রিলিয়ন বা ৩ লাখ ২৮ হাজার কোটি ডলারে নেমে আসে।
এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম এক বছর ধরেই বাড়ছে। কোম্পানিটির শেয়ারমূল্যের এই বৃদ্ধি দেখে বোঝা যাচ্ছে, ওয়ালস্ট্রিটে এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কী ধরনের উন্মাদনা তৈরি হয়েছে।
এনভিডিয়ার শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে এসঅ্যান্ডপি ও নাসডাক সূচক রেকর্ড উচ্চতায় উঠে গেছে। তা সত্ত্বেও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে। এআই নিয়ে যে অসংযত উচ্চাশা তৈরি হয়েছে, সেই উচ্চাশা যেকোনো সময় হাওয়ায় মিলিয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। তাঁরা মনে করছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় বিনিয়োগ কমে যাচ্ছে—এমন ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র তেমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম যে বেড়েছে কেবল তা-ই নয়, একই সঙ্গে তাদের শেয়ার এখন যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হচ্ছে। প্রতিদিন এই কোম্পানির গড়ে পাঁচ হাজার কোটি ডলারের বেশি শেয়ার লেনদেন হচ্ছে, যেখানে অ্যাপল, মাইক্রোসফট ও টেসলার শেয়ারের লেনদেন হচ্ছে গড়ে এক হাজার কোটি ডলারের। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচকে এখন যত শেয়ার লেনদেন হচ্ছে, তার ১৬ শতাংশই এখন এনভিডিয়ার।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় যে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন প্রসেসর দরকার, সেই প্রসেসরের মূল উৎস এনভিডিয়া। ফলে চলতি বছর এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম প্রায় তিন গুণ হয়েছে। অথচ চলতি বছর মাইক্রোসফটের শেয়ারের দাম বেড়েছে মাত্র ১০ শতাংশের মতো।
মাইক্রোসফট, মেটা ও অ্যালফাবেটের মতো মহিরুহ প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো এআইভিত্তিক কম্পিউটিং সক্ষমতা বৃদ্ধির চেষ্টা করছে; এই কোম্পানিগুলো এআইভিত্তিক সেবা ও পণ্য নিয়ে আসছে। এসব ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হচ্ছে এনভিডিয়ার প্রসেসর।
প্রসেসরের জগতে আরও কিছু কোম্পানি আছে। কিন্তু বাজার–বিশ্লেষকেরা বলেন, এনভিডিয়ার প্রসেসরের মান অন্যান্য কোম্পানির চেয়ে ভালো। সে কারণে তারা প্রসেসর সরবরাহ করে কুলিয়ে উঠতে পারছে না। অনেক বিনিয়োগকারী মনে করেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জগতে যে প্রতিযোগিতা চলছে, তা থেকে সবচেয়ে লাভবান হচ্ছে এনভিডিয়া।
গতকাল এনভিডিয়ার এই শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে কোম্পানিটির স্টক মূল্য রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছে। কোম্পানিটির বাজার মূলধন বেড়েছে ১১০ বিলিয়ন বা ১১ হাজার কোটি ডলার।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এনভিডিয়ার শেয়ারের মূল্য দুই লাখ কোটি ডলারে উন্নীত হয়; এক লাখ কোটি ডলার থেকে দুই লাখ কোটি ডলারে উন্নীত হতে সময় লেগেছে মাত্র নয় মাস। সেখান থেকে তিন ট্রিলিয়ন বা তিন লাখ কোটি ডলারে উন্নীত হতে সময় লেগেছে মাত্র তিন মাসের বেশি কিছু সময়।
এখানেই শেষ নয়, এনভিডিয়ার নির্বাহীরা বলছেন, আগামী বছরের প্রথম ভাগ পর্যন্ত তাদের ব্ল্যাকওয়েল এআই চিপের সরবরাহ চাহিদার চেয়ে বেশি থাকবে।
এখন এনভিডিয়ার প্রতিটি শেয়ারকে ১০ ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে শেয়ারের মূল্যমানে পরিবর্তন আসবে না, তবে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা এনভিডিয়ার শেয়ার কিনতে পারবেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক
গ্রিনল্যান্ডের দখল আমাদের লাগবেই: ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার স্বার্থেই গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা যুক্তরাষ্ট্রের হাতে থাকা উচিত জানিয়ে গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের সীমানাভুক্ত করার সংকল্প ফের ব্যক্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ওভাল অফিসে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশনের (ন্যাটো) মহাসচিব মার্ক রুটের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। সেখানেই গ্রিনল্যান্ডের প্রসঙ্গটি তোলেন ট্রাম্প।
ন্যাটো মহাসচিবকে ট্রাম্প বলেন, “আপনি জানেন মার্ক, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য গ্রিনল্যান্ডের দখল আমাদের প্রয়োজন। এটা কিন্তু শুধু নিরাপত্তা নয়— আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা। আমাদের অনেক প্রিয় খেলোয়াড় এই দ্বীপের উপকূলের চারপাশে ঘোরাঘুরি করছে।”
এখানে ‘প্রিয় খেলোয়াড়’ বলতে রাশিয়া এবং চীনকে বুঝিয়েছেন ট্রাম্প। এর আগে একাধিকবার তিনি বলেছেন, গ্রিনল্যান্ড উপকূলের সমুদ্রে চীন এবং রাশিয়ার উপস্থিতি বাড়ছে এবং এটি যে কোনো সময় যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ন্যাটো মহাসচিবকে ট্রাম্প বলেন,“আমি মনে করি এটা (গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা) আমাদের হাতে আসবে। আর আমি শুধু ভাবছি; এর আগে অবশ্য এ ব্যাপারে খুব বেশি ভাবিনি, কিন্তু আমি এমন একজনের সঙ্গে বসে আছি যিনি (এ ব্যাপারে) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন। নিকট ভবিষ্যতেই এ ব্যাপারে আমরা আপনার সঙ্গে কথা বলব।”
ট্রাম্পের বক্তব্যের জবাবে মার্ক রুট তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। তবে গ্রিনল্যান্ডে সদ্য শেষ হওয়া নির্বাচনে জয়ী রাজনৈতিক দল ডেমোক্রাটিট পার্টির শীর্ষ নেতা জেনস-ফ্রেডেরিক নিলসেন ট্রাম্পের এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এক বার্তায় নিলসেন বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বক্তব্য একেবারেই অযথাযথ এবং এই বক্তব্য ইঙ্গিত দিচ্ছে যে নিকট ভবিষ্যতে গ্রিনল্যান্ডের স্বার্থে আমাদের সবাইকে একত্রিত হতে হবে।”
গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মিউটে এগেড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের নিজেদের সীমানা বাড়ানোর কথা বলেছেন। আমার মনে হয় যথেষ্ট হয়েছে এবং এখন তার থামা উচিত।”
প্রসঙ্গত, বিশ্বের সবচেয়ে বড় দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডের আয়তন ২১ লাখ ৬৬ হাজার ৮৬ বর্গকিলোমিটার, জনসংখ্যা মাত্র ৫৬ হাজার ৫৮৩ জন। এই জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশই ইনুইট জাতিগোষ্ঠীভুক্ত। গ্রিনল্যান্ডের অবস্থান উত্তর আমেরিকা অঞ্চলে হলেও এই দ্বীপটি ডেনমার্কের অধীন একটি স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রদেশ। এ দ্বীপের বাসিন্দারাও ডেনমার্ক এবং ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নাগরিক।
আর্কটিক এবং আটলান্টিক সাগরকে পৃথককারী এই দ্বীপটির নাম গ্রিনল্যান্ড হলেও উত্তর মেরুর কাছাকাছি অবস্থান হওয়ার কারণে বছরের একটি বড় সময়ই তুষারাচ্ছাদিত থাকে এ ভূখণ্ড। দ্বীপটির ভূপৃষ্ঠের গভীরে জ্বালানি তেলসহ বিভিন্ন খনিজ পদার্থ রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভূতত্ত্ববিদরা।
গ্রিনল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা অবশ্য নতুন নয় ট্রাম্পের। এর আগে যখন প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন, সে সময় ২০১৯ সালে একবার তিনি বলেছিলেন যে ‘কৌশলগত কারণে’ যুক্তরাষ্ট্রের এ দ্বীপটি কিনে নেওয়া উচিত।
এর আগে গত ২৫ নভেম্বর গ্রিনল্যান্ড ক্রয়ের ইচ্ছা প্রকাশ করে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি বলেছিলেন, “সারা বিশ্বের নিরাপত্তা এবং স্বাধীনতার স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্র মনে করে যে, গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা এবং নিয়ন্ত্রণ এই মুহূর্তে অত্যাবশ্যক।”
সে সময়েও তার জবাব দিয়েছিলেন মিউটে। ফেসবুকে এক পোস্টে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, “গ্রিনল্যান্ড আমাদের। আমরা বিক্রির জন্য নই এবং কখনও এমনটা ঘটবে না। দীর্ঘদিন ধরে আমরা স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করছি এবং নিশ্চিতভাবেই তা আমরা বৃথা যেতে দেবো না।”
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত পুতিন

ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে সম্মত হয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে যেকোনো যুদ্ধবিরতিতে সংঘাতের মূল কারণগুলোর সুরাহা করতে হবে বলে শর্ত দিয়েছেন তিনি।
তিন বছর ধরে চলা এই সংঘাত বন্ধে মস্কোর প্রতি ‘শর্তহীন’ যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে আসছে ওয়াশিংটন। এরই ধারাবাহিকতায় ইউক্রেনে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকারীরা রাশিয়ায় অবস্থান করছেন এবং তাদের পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছেন।
এর আগে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে একটি চুক্তি ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে নিজেদের দাবিদাওয়ার তালিকা পেশ করে রাশিয়া। বিষয়টি সম্পর্কে জানাশোনা আছে এমন দুই ব্যক্তি ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মস্কো দাবিদাওয়ার তালিকায় কী অন্তর্ভুক্ত করেছে ও তারা ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে ইচ্ছুক কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়। তবে ওয়াশিংটনের দেওয়া শান্তি প্রস্তাব এরই মধ্যে মেনে নিয়েছে ইউক্রেন।
এদিকে, ওই দুই ব্যক্তি রয়টার্সকে জানিয়েছেন, রুশ ও মার্কিন কর্মকর্তারা গত তিন সপ্তাহ ধরে ব্যক্তিগতভাবে ও ভার্চুয়ালি কথা বলার সময় ওই শর্তগুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন। তারা জানান, ক্রেমলিনের শর্তের আওতা বিস্তৃত এবং তারা আগেও ইউক্রেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর কাছে যেসব দাবি জানিয়েছে সেগুলোর সঙ্গে এবারের শর্তগুলোও এক।
আগে রাশিয়া যে সব শর্ত দিয়েছিল সেগুলো ছিল, ইউক্রেনকে ন্যাটো সদস্যপদ না দেওয়া, ইউক্রেনে বিদেশি সেনা মোতায়েন করা হবে না মর্মে সমঝোতা এবং অধিকৃত ক্রিমিয়া ও চারটি প্রদেশ রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত, তা মেনে নেওয়া।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর সম্পদ কমেছে মাস্কসহ ৫ ধনকুবেরের

গত ২০ জানুয়ারি শপথ নেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার শপথের সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তিরা। ইলন মাস্ক, জেফ বেজোস এবং মার্ক জুকারবার্গের মতো বিলিয়নেয়ারদের সম্পত্তির পরিমাণ তখন ছিল সর্বোচ্চ শৃঙ্গে। তবে ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হওয়ার সাত সপ্তাহ পরে ঘুরে গিয়েছে তাদের ভাগ্য।
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ বড় বিপর্যয় ডেকে এনেছে ধনকুবেরদের জন্য।
ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্স অনুযায়ী, এই মার্কিন বিলিয়নিয়ারদের মধ্যে থাকা শীর্ষ পাঁচজনের মোট সম্পদের পরিমাণ কমেছে ২০৯ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ইলন মাস্কের কমেছে ১৪৮ বিলিয়ন, জেফ বেজোস ২৯ বিলিয়ন, সের্গেই ব্রিন ২২ বিলিয়ন, মার্ক জাকারবার্গ ৫ বিলিয়ন এবং বার্নার্ড আর্নল্টের ৫ বিলিয়ন ডলার।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে মন্দার আশঙ্কায় আমেরিকা থেকে জাপান পর্যন্ত শেয়ারবাজারে দরপতন চলছে।
এর প্রভাব আজ ওয়াল স্ট্রিটেও দেখা যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর আগে গতকাল ওয়াল স্ট্রিটের সূচকে বড় ধরনের পতন দেখা যায়।
এর জেরে জাপান, হংকংয়ের মতো এশিয়ান শেয়ারবাজারেও পতন দেখা যায়। জাপানের নিক্কেই ২২৫ পয়েন্ট বা ২.৭ শতাংশ কমেছে এবং টপিক্স সূচক কমেছে ২.৮ শতাংশ।
দক্ষিণ কোরিয়ার কোসপি ২.১৯ শতাংশ এবং কোডেক ২.২২ শতাংশ কমেছে। হংকংয়ের হ্যাং সেং ইনডেক্স ফিউচারস দুর্বল সূচনার ইঙ্গিত দেয়।
এদিকে আমেরিকায় ডাউ জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ সূচক ৮৯০.০১ পয়েন্ট বা ২.০৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৪১,৯১১.৭১ পয়েন্টে, অন্যদিকে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ পড়েছে ১৫৫.৬৪ পয়েন্ট বা ২.৭০ শতাংশ। এই আবহে এসঅ্যান্ডপি দাঁড়িয়ে আছে ৫৬১৪.৫৬ পয়েন্টে।
নাসডাক কম্পোজিট ৭২৭.৯০ পয়েন্ট বা ৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৭,৪৬৮.৩২ পয়েন্টে।
টেসলার শেয়ারের দাম কমেছে ১৫.৪ শতাংশ, এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম কমেছে ৫.০৭ শতাংশ, মাইক্রোসফটের শেয়ারের দাম কমেছে ৩.৩৪ শতাংশ। ডেল্টা এয়ারলাইনসের স্টকের দাম ৫.৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের পর থেকে নাসডাকের সবচেয়ে খারাপ দিন ছিল গতকাল।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি

কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী-নির্বাচিত হয়েছেন মার্কি কার্নি। এর মাধ্যমে দেশটিতে জাস্টিন ট্রুডো অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটেছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ট্রুডো তার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। রোববার (৯ মার্চ) রাতে কানাডার ক্ষমতাসীন দল লিবারেল পার্টি মার্ক কার্নিকে নতুন দলীয় নেতা হিসেবে নির্বাচিত করে। আর নিয়ম অনুযায়ী এখন তিনি নতুন প্রধানমন্ত্রীও হবেন। দলীয় প্রধান হতে মোট চারজন প্রার্থী লড়েছিলেন। সেখান থেকে মার্ক কার্নি নির্বাচিত হয়েছেন।
তিনি এমন সময় কানাডার প্রধানমন্ত্রী হলেন যখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির ‘বাণিজ্য যুদ্ধ’ শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী-নির্বাচিত হওয়ার পরই কার্নি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ক নিয়ে কথা বলেন। কানাডিয়ান পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপকে ‘নিজেদের জীবনের সবচেয়ে বড় সংকট’ হিসেবে অভিহিত করেছেন কার্নি। তিনি বলেছেন, “আমরা এই (বাণিজ্য) লড়াই চাইনি। কিন্তু কানাডিয়ানরা সবসময় প্রস্তুত থাকে যখন কেউ তার হাতের গ্লাভস ফেলে দেয়। তো মার্কিনিদের, কোনো ভুল করা উচিত নয়। হকি খেলার মতো বাণিজ্য লড়াইয়েও কানাডা জিতবে।”
দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হয়েই কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হিসেবে অভিহিত করে কটাক্ষ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে ‘গভর্নর ট্রুডো’ হিসেবে ডেকেছেন তিনি। ট্রাম্পের এই মন্তব্যের জবাব কিছুটা ঘুরিয়ে দিয়েছেন কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী-নির্বাচিত মার্ক কুর্নি। তিনি বলেছেন, “আমেরিকা কানাডা নয়। এবং কানাডা কখনো, কোনোদিন কোনোভাবে আমেরিকার অংশ হবে না।”
সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ জানিয়েছে, এ সপ্তাহের যে কোনো একদিন কানাডার গভর্নর জেনারেলের কাছে প্রধানমন্ত্রীর শপথ গ্রহণ করবেন মার্ক কার্নি। কানাডার গভর্নর জেনারেল যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লসের প্রতিনিধি। নতুন প্রধানমন্ত্রী কার্নি এপ্রিলের শেষ দিকে কানাডায় নতুন সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দিতে পারেন।
গত ৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রিত্ব ও দলীয় প্রধানের পদ ছাড়ার ঘোষণা দেন জাস্টিন ট্রুডো। তিনি ২০১৫ সালে প্রথম দেশটির প্রধানমন্ত্রী হন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তার জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে। এমন সময়ই তিনি সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ভারতে ১০ বাংলাদেশি গ্রেপ্তার

অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ওডিশা থেকে বাংলাদেশি ১০ নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রবিবার (৯ মার্চ) ওডিশা পুলিশের অপরাধ দমন শাখার স্পেশাল টাস্কফোর্সের সদস্যরা ওই বাংলাদেশিদের গ্রেপ্তার করেছেন।
দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ওডিশার রাজধানী ভুবনেশ্বরের রেলওয়ে স্টেশনে অভিযান চালিয়ে ১০ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী।
পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্সের সদস্যরা যে ১০ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছেন- তাদের মধ্যে ছয়জন পুরুষ, তিনজন নারী এবং একজন শিশু। রোববার সকালের দিকে ভুবনেশ্বর রেলওয়ে স্টেশন থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রাজ্য পুলিশ বলেছে, ওই বাংলাদেশিরা অবৈধ উপায়ে ভারতে প্রবেশ করেছেন। তাদের কাছে কোনও বৈধ নথিপত্র পাওয়া যায়নি। তারা গত কয়েক দিন ধরে ভুবনেশ্বর রেলওয়ে স্টেশন অবস্থান করছিলেন। এ সময় অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশিদের কাছ থেকে সাতটি মোবাইল ফোন, বাংলাদেশি মুদ্রা জব্দ করেছে এসটিএফ।
ওডিশা পুলিশের একাধিক সূত্র বলেছে, গ্রেপ্তারকৃত বাংলাদেশিরা আসামের ধুবরি জেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে অবৈধ উপায়ে ভারতে প্রবেশ করেন। পরে সেখান থেকে তারা ওডিশায় পৌঁছান। তাদের কাছে কোনও বৈধ নথিপত্র পাওয়া যায়নি।
ওই বাংলাদেশিরা কয়েক দিন ধরে ভুবনেশ্বর রেলওয়ে স্টেশনে অবৈধভাবে অবস্থান করছিলেন। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে ওডিশা পুলিশ।