জাতীয়
সিলেটে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র সচল রাখার চেষ্টা সেনাবাহিনীর
ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢলে বিপদসীমা অতিক্রম করেছে সুরমা, কুশিয়ারা ও সারি নদীর পানি। যে কারণে বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে নগরের বিভিন্ন এলাকাসহ জেলার ১৩ উপজেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। সুরমার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ঝুঁকিতে পড়েছে সিলেট বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের বরইককন্দি উপকেন্দ্র।
মঙ্গলবার (১৮ জুন) বিকেল থেকে উপকেন্দ্রটিতে পানি ঢোকার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এতে সেখান থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধের ঝুঁকি রয়েছে।
বিষয়টি জানতে পেরে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটি পরিদর্শন করেন। তিনি বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে কেন্দ্রটি চালু রাখতে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চান।
মেয়রের সহযোগিতা আহ্বানে সাড়া দিয়ে সেনাবাহিনীর একটি টিম বরইককন্দি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটি রক্ষায় কাজ শুরু করেছে। সেখানে বালুর বস্তা ফেলে বাঁধ দেওয়ার কাজ চলছে।
সিলেটের বিদ্যুৎ উন্নয়ন ও বিতরণ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল কাদির বাংলানিউজকে বলেন, বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটিতে পানি ওঠার উপক্রম হলেও বন্ধ হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। বিদ্যুৎ সরবরাহ যাতে বিঘ্নিত না হয় সে জন্য আগেভাগেই বালুর বস্তা ফেলে সুরক্ষা প্রাচীর তৈরিতে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চাওয়া হয়। তারা সন্ধ্যা থেকে কাজ করছে।
এদিকে, বরিইকান্দি উপকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ২০২২ সালের বন্যার ছবি ছড়িয়ে দিয়ে অনেকে অপপ্রচার করছেন। একইভাবে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পুরনো ছবি ছড়িয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্টরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা গুজবে কান না দিতে অনুরোধ করেছেন।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের বন্যায় বরিইকান্দি উপকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। সে সময় সুরমা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে নগরের উপকণ্ঠে কুমারগাঁও বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটিও সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। পরে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় সরবরাহ সচল করা হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
বাংলাদেশ-আবুধাবি ফান্ডের মধ্যে হবে যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন
বাংলাদেশ ও আবুধাবি ফান্ডের মধ্যে একটি যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দুই পক্ষ এ বিষয়ে আলোচনা করেছে। বুধবার (২৬ জুন) অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর নেতৃত্বে ওপেক ফান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম ২০২৪-এ যোগ দিতে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা সফর করছেন। অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, অস্ট্রিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসাদ আলম সিয়াম ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মিরানা মাহরুখ প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসেবে রয়েছেন।
অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল গত মঙ্গলবার আবুধাবি ফান্ডের মহাপরিচালক মোহাম্মদ সাইফ আল সুওয়াইদির সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে উভয় পক্ষ শিগগির একটি যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন গঠনের বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা করেছে।
১৯৭৪ সাল থেকে অব্যাহত সমর্থন ও সহায়তার জন্য আবুধাবি ফান্ডকে ধন্যবাদ জানান অর্থমন্ত্রী। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়নের উল্লেখ করে আবুধাবি ফান্ডকে বাংলাদেশের অবকাঠামো ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে সহায়তা বাড়ানোর অনুরোধ জানান।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
অর্থনৈতিক বিষয়-সরকারি ক্রয় কমিটিতে যুক্ত হলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী
অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সদস্য করা হয়েছে অর্থ প্রতিমন্ত্রীকে। এর ফলে আগামী অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে অংশ নেবেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান। এ বিষয়ে সম্প্রতি দুটি পৃথক গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির আহ্বায়ক।
আর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের; আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক; শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম; পরিকল্পনা মন্ত্রী আব্দুস সালাম, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদ, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন, যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু সদস্য হিসেবে রয়েছেন।
অন্যদিকে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন অর্থমন্ত্রী। আর কমিটির সদস্য সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান, পরিকল্পনা মন্ত্রী আব্দুস সালাম, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদ, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এবং বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
বিমানের পাইলট ঘাটতি পূরণে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ মন্ত্রীর
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট ঘাটতি কাটিয়ে উঠার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান।
বুধবার (২৬ জুন) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সদর দপ্তরে প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এ নির্দেশনা দেন। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফা কামাল উদ্দীন এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম ভূঞা।
মন্ত্রী বলেন, বিগত কয়েক বছরে বিমান নতুন নতুন আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট চালু করেছে এবং আরো কিছু নতুন রুটের চাহিদা রয়েছে।
সুতরাং বিমানের ফ্লাইট পরিচালনা নির্বিঘ্ন করার জন্য বিদ্যমান নিয়োগ নীতিমালার আলোকে যথাযথ স্বচ্ছতা বজায় রেখে দ্রুততার সঙ্গে পাইলট ও কেবিন ক্রু নিয়োগের মাধ্যমে ঘাটতি কাটিয়ে উঠার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, বিমানের সেবাকে আরো বেশি যাত্রী বান্ধব করতে হবে। দ্রুততার সঙ্গে প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ দিয়ে কল সেন্টার গুলোকে ২৪ ঘণ্টা সচল রাখতে হবে যাতে যাত্রীরা যেকোনো সময় তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে পারেন। এ ছাড়াও বর্তমানে ওয়েবসাইট ও দেশীয় সেল সেন্টারগুলোতে নগদ টাকার পাশাপাশি ক্রেডিট কার্ড দিয়ে টিকেট কাটা গেলেও বিদেশের বিভিন্ন স্টেশনের সেল সেন্টারে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। দ্রুত ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের এই সীমাবদ্ধতা দূর করতে হবে।
ফারুক খান বলেন, প্রতিটি উড়োজাহাজের যথাযথ স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর মেনে নিয়মিত ও যথাসময়ে মেইনটেনেন্স কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে। ফ্লাইটের ইনফ্লাইট সেবা ও অভ্যন্তরীণ পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে আরো বেশি যত্নবান হতে হবে। বিমানের প্রতিটি বিভাগের মধ্যে নিবিড় আন্ত:সমন্বয়ের মাধ্যমে ব্যবসা উন্নয়নের সময়োপযোগী কৌশল গ্রহণ করতে হবে। সেবা সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় তথ্য যাত্রী ও জনগণের কাছে যথাসময়ে পৌঁছে দিতে হবে।
এর আগে মন্ত্রী বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সদর দপ্তরের চেয়ারম্যান ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন। সেখানে তিনি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কাজ আরো গতিশীল করতে, তাদের আয় বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য এবং প্রতিটি ক্রয় ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে বিমানবন্দরে যাত্রীসেবা আরো উন্নত করার নির্দেশনা প্রদান করেন।
তার আগে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হতে প্রবাসী যাত্রীদের জন্য চালু হওয়া ‘সাটল বাস সার্ভিসের’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগদান করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি।
এই সাটল বাস সার্ভিসের মাধ্যমে যাত্রীরা বিমানবন্দর থেকে টঙ্গী এবং টঙ্গী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সহজেই যাতায়াত করতে পারবেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের জন্য পরিকল্পনা হতে হবে বাস্তবসম্মত
স্বল্পোন্নত দেশ হতে বাংলাদেশের উত্তরণের জন্য প্রণীত নীতি-কৌশল এবং সংশ্লিষ্ট কর্ম পরিকল্পনা কার্যক্রমভিত্তিক ও বাস্তবসম্মত হওয়া প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত উচ্চ পর্যায়ের সংলাপে সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও নীতিনির্ধারকরা একথা বলেন।
বুধবার (২৬ জুন) ‘হাই লেভেল ডায়ালগ অন স্মুথ ট্রানজিশন স্ট্রাটেজি’ শীর্ষক সংলাপে তারা এই মন্তব্য করেন।
সংলাপে সভাপতিত্ব করেন, স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণ সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। এতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও শীর্ষস্থানীয় বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের জন্য অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে সুযোগ ও সম্ভাবনা তৈরি হবে। সেটি যথাযথভাবে কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে এই স্মুথ ট্রানজিশন স্ট্রাটেজি গুরুত্বপূর্ণ।
বৈঠকে অংশগ্রহণকারী নীতি নির্ধারক ও অংশীজনরা বলেন, স্মুথ ট্রানজিশন স্ট্রাটেজির খসড়াটি যথেষ্ট তথ্যবহুল ও মানসম্মত হয়েছে। তবে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের প্রেক্ষাপটে এই কৌশলপত্রে অর্থনীতির কাঠামোগত রূপান্তর, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি,অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ বৃদ্ধি, শুল্ক হার যৌক্তিকীকরণ প্রভৃতি বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ থাকা প্রয়োজন।
কর্মশালায় স্মুথ ট্রানজিশন স্ট্রাটেজির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ের উপর আলোকপাত করে উপস্থাপনা প্রদান করেন এসটিএস সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক ড. এম এ রাজ্জাক।
আরও বক্তব্য রাখেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহ্রিয়ার কাদের ছিদ্দিকী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব সেলিম উদ্দিন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আশরাফ আহমেদ, বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতির সভাপতি আবদুল মুক্তাদিরসহ অন্যান্যরা।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ২০১৮ ও ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) এর ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের সকল মানদণ্ড পূরণে সক্ষম হয়েছে। ফলে, পাঁচ বছর প্রস্তুতিকালীন সময় শেষে আগামী ২০২৬ সালের নভেম্বর মাসে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে আসবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদের হিসাব নেওয়ার পরামর্শ আইএমএফের
উচ্চমাত্রার দুর্নীতি কমাতে সরকারি চাকরিজীবীদের কাছ থেকে প্রতিবছর সম্পদের হিসাব নেওয়া এবং তা নিয়মিত হালনাগাদ করতে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। বাংলাদেশ বিষয়ে আইএমএফের কান্ট্রি রিপোর্টে এ পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। গত সোমবার বাংলাদেশের ঋণের তৃতীয় কিস্তি ছাড়ের অনুমোদনের দিনে কান্ট্রি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়।
সম্প্রতি সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও এনবিআর থেকে প্রত্যাহারকৃত সদস্য মতিউর রহমানের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের খোঁজ পাওয়ার পর সরকারি চাকরিজীবীদের দুর্নীতির ব্যাপকতা নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। এ সময়েই এমন পরামর্শ দিল আইএমএফ।
সরকার দলীয় সংসদ সদস্যরাও জাতীয় সংসদে সরকারি চাকরিজীবীদের দুর্নীতির ব্যাপকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাদের নিয়ন্ত্রণে আনার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। আইএমএফও বলেছে, উঁচু-স্তরের দুর্নীতিকে কার্যকরভাবে মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে, এ বিষয়ে অসম্মতি (নন-কমপ্লায়েন্স) দেখা দিলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে। সম্পদের পরিমাণ নিয়মিত হালনাগাদের জন্য একটি মানসম্মত পন্থা অবলম্বন করে সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পদ ঘোষণার প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করতে হবে।
বহুপাক্ষিক ঋণদানকারী সংস্থাটি আরও বলেছে, দেশে ব্যবসায়িক পরিবেশের উন্নতির ক্ষেত্রে সুশাসনের উন্নয়ন এবং দুর্নীতি রোধ ব্যাপক অবদান রাখবে। রাজস্ব ও আর্থিক সুশাসনের উন্নতি, স্বচ্ছতা বৃদ্ধি এবং নীতি কাঠামো শক্তিশালীকরণও উন্নত ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
জানা গেছে, পাঁচ বছর পরপর সরকারি কর্মচারীর সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার বিধান ১৯৭৯ সালে চালু হয়। দেশে বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ সরকারি কর্মচারী আছেন। চাকরিজীবীর জবাবদিহি নিশ্চিত করতে আচরণ বিধিমালায় এ নিয়ম যুক্ত করা হয়। তবে চার দশকের বেশি সময় ধরে এ নিয়ম পুরোপুরি কার্যকর করা যায়নি। অতীতে দেখা গেছে, বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটি মন্ত্রণালয় তাদের অধীন কর্মচারীর কাছে সম্পদের বিবরণী চেয়েও তেমন সাড়া পায়নি।
সরকারি কর্মচারী আইন (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯-এর বিধি ১২ ও ১৩ অনুসারে সরকারি কর্মচারীর স্থাবর সম্পত্তি অর্জন, বিক্রি ও সম্পদ বিবরণী জমার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এমনকি জমি-বাড়ি-ফ্ল্যাটসহ যে কোনো সম্পদ কিনতে বা বিক্রি করতেও সরকারের অনুমতি নিতে হয় তাদের। সম্পদ কেনার ক্ষেত্রে টাকার উৎস সম্পর্কেও জানাতে হয়। আবার সম্পদ বিক্রি করা হলে দাম জানাতে হয়। কারণ, কমবেশি দামে সম্পদ বেচাকেনা হলো কিনা, তা যাচাই করার সুযোগ রাখা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে সরকারি কর্মচারীর ওপর সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার ব্যাপারে কোনো চাপই নেই। ফলে এ সম্পদের প্রশ্নে স্রোতে গা ভাসিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সবাই। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সম্পদের হিসাব জমা দিতে কড়া নির্দেশ দেওয়া হলে সে সময় সব কর্মচারী তা দিয়েছিলেন। নানা দিকে আলোচনা উঠলে ২০১৫ সালে আরেক দফা সরকারি কর্মচারীর সম্পদের হিসাব জমা দিতে সরকার থেকে বলা হয়। তখন গুটিকয়েক মন্ত্রণালয় তাদের নিয়ন্ত্রিত কর্মচারীর সম্পদের হিসাব নিতে পারলেও বেশির ভাগই ব্যর্থ হয়।
এ বিষয়ে গত মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-২ আসনের এমপি মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, সরকারি কর্মচারীদের দফায় দফায় বেতন বাড়ানোর পরও দুর্নীতি কেন হবে? চাকরিতে যোগ দেওয়ার সময় এবং নির্দিষ্ট সময় পরপর সরকারি কর্মচারীদের হলফনামা আকারে সম্পদের হিসাব দাখিলের বিধান করার দাবিও জানান।
সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প ও কেনাকাটায় দুর্নীতি হয়, উল্লেখ করে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘সেখানে (উন্নয়ন ও কেনাকাটা) রাজনীতিবিদদের সুযোগ কোথায়, যদি সরকারি কর্মকর্তারা তার সঙ্গে জড়িত না থাকেন? ২০১৮ সালে জনপ্রশাসনে তথ্য এসেছিল, এক হাজার কর্মকর্তা–কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ জমা হয়েছিল। এ রকম হাজার হাজার মতিউর (এনবিআরের সাবেক সদস্য মো. মতিউর রহমান) আছেন।’
মাহবুব উল আলম বলেন, এবার (ঈদুল আজহায়) একটি গরু ১ কোটি টাকা, একটি ছাগল ১৫ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে। যাদের অবৈধ আয় আছে, তারাই এই দামে কিনতে পারে। বৈধ আয়ে এটি সম্ভব নয়। সরকারি কর্মচারী আইন-২০১৮ নিয়ে আবার ভাবার পরামর্শ দিয়ে হানিফ বলেন, রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হলে তাদের গ্রেপ্তারে অনুমতি নেওয়া লাগে না। কিন্তু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে একই ধরনের মামলা হলে তাকে গ্রেপ্তারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি নিতে হয়। এই আইন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতি করতে উৎসাহিত করছে বলেও মনে করেন তিনি।