জাতীয়
দ্বিতীয় দিনে আরও কমে বিক্রি হচ্ছে কোরবানির পশুর চামড়া

আজও সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে কমে বিক্রি হচ্ছে কোরবানির পশুর চামড়া। গতকাল (ঈদের দিন) যে দামে চামড়া বিক্রি হয়েছে, আজ সেই দামও পাচ্ছেন না বিক্রেতারা। অন্যদিকে, চাহিদা না থাকায় ছাগলের চামড়া কিনে বিপাকে পড়েছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার (১৮ জুন) রাজধানীর পুরান ঢাকার লালবাগের পোস্তায় গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
গতকাল ঈদের দিন রাজধানী ঢাকার মধ্যে দেওয়া কোরবানির পশুর চামড়া বেশি বেচাকেনা হয়েছে। তবে, আজ মূলত আড়তগুলোতে রাজধানীর বাইরে থেকেই বেশি চামড়া এসেছে।
পোস্তার আড়তদার মোখলেছুর রহমান রহমান বাদল বলেন, আজকে তুলনামূলকভাবে পশুর চামড়া কম এসেছে। ঢাকার বাইরের চামড়াগুলো আজকে লবণ ও লবণ ছাড়া দুইভাবে এসেছে। আজকের দাম গতকালের চেয়ে একটু কম।
মৌসুমি ব্যবসায়ীরা জানান, গতকাল গরুর যে চামড়া সাড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, সেটি আজ ৫০ টাকা কমে বিক্রি করতে হচ্ছে। যারা গতকাল চামড়া বিক্রি করতে পারেননি, সেগুলো আজ লবণ দিয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে। সরকারের বেঁধে দেওয়া লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট চামড়ার দাম ছিল ৫৫-৬০ টাকা। যারা লবণ দিয়ে আজ চামড়া নিয়ে এসেছেন, তাদের চামড়াও প্রায় অর্ধেকের একটু বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। লবণযুক্ত এক লাখ টাকা গরুর চামড়া দাম কমপক্ষে ১১০০-১২০০ টাকা হওয়ার কথা থাকলেও সেটি সর্বোচ্চ ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায় বিক্রি করা যাচ্ছে।
পোস্তা ছাড়াও ঈদের দ্বিতীয় দিন রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় অস্থায়ীভাবে চামড়া বেচাবিক্রি হচ্ছে। সায়েন্সল্যাব মোড়ে চামড়া বাজারে আকারভেদে ঈদের দিন যে চামড়া ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, আজ সেই চামড়া বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৬৫০ টাকায়। যদিও মৌসুমি চামড়া ক্রেতারা বলছেন, তারা আগের দামেই চামড়া কিনছেন।
এদিকে, ছাগল ও ভেড়ার চামড়া বেশিরভাগ ক্রেতাই কিনতে চাইছেন না। কিনলেও ১০ বা ২০ টাকায় কিনছেন এসব চামড়া। একাধিক ছাগল ও ভেড়ার চামড়া রাস্তা, ফুটপাতে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
পোস্তায় গরুর চামড়ার সঙ্গে ৩০টি ছাগলের চামড়া নিয়ে এসেছেন হামিদুল আলম। তিনি জানান, গরুর চামড়া আসল দামে বিক্রি করতে পারলেও ছাগলের চামড়ার কোনো দাম বলে না। এগুলো ফ্রি দিয়ে দিতে হবে, না হয় ফেলে দিতে হবে।
ছাগলের চামড়ার না কেনা প্রসঙ্গে আড়তদার মোখলেসুর রহমান বাদল বলেন, ঈদের সময় ছাগলের চামড়া কিনে তা প্রক্রিয়া করার মতো ট্যানারিতে জায়গা নেই। এজন্য ট্যানারিতে ছাগল-ভেড়ার চামড়া নিতে চায় না। আমরা কয়েকজন ২০০ পিস চামড়া কিনেছি। এগুলো এখন গলার কাটা হয়েছে।
অন্যদিকে, বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সরকার নির্ধারিত রেটের অর্ধেক দামও বলছেন না ক্রেতারা।
চামড়া নিয়ে কোনো অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, পুলিশ, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও ঢাকা সিটি করপোরেশনসহ বেশ কয়েকটি সরকারি সংস্থা। গতকাল ঈদের দিনের মতো আজও সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে কম দামে চামড়া বেচাবিক্রি হচ্ছে। এরপরও গতকালকের মতো আজও সরকারি কোনো সংস্থাকে ওই এলাকায় বিষয়টি মনিটরিং করতে দেখা যায়নি। অবশ্য, পুলিশ সদস্যরা পোস্তা এলাকায় চামড়া বহনকারী যানবাহনের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে দায়িত্ব পালন করেছেন।
জানা গেছে, কোরবানির চামড়া সংরক্ষণ ও তদারকিতে পাঁচটি কমিটি গঠন করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সচিবের নেতৃত্বে সার্বিক ব্যবস্থাপনা তদারকি করতে থাকে কেন্দ্রীয় কমিটি। এ ছাড়া বিভাগীয় কমিটি, নিয়ন্ত্রণ কক্ষ পরিচালনা কমিটি, সার্বক্ষণিক তদারকির জন্য কমিটি ও জেলা কমিটি করা রয়েছে।
এসব কমিটি মূলত কাঁচা চামড়া সংগ্রহ, সংরক্ষণ, ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহনসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনা তদারকির করে। সচিরের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের একটি কেন্দ্রীয় কমিটি কাজ করে। এ ছাড়া, একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে আট সদস্যের বিভাগীয় কমিটি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আইআইটি অনুবিভাগের একজন উপসচিবের নেতৃত্বে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ দায়িত্ব পালন করে। পাশাপাশি ১১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল সেল ও ২৯ জন সদস্য নিয়ে গঠিত জেলা কমিটি থাকলেও সরেজমিনে বাজার মনিটরিং কিংবা তাদের কোনো কার্যক্রম দেখেননি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
এছাড়া, চামড়ায় সিন্ডিকেট করলে ঢাকা মেট্রোপলিটন কমিশনার ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানালেও আদৌতে বাজারে তদারকিতে তাদের পক্ষ থেকে কার্যক্রম চোখে পড়েনি।

জাতীয়
এখন শান্ত মনে জাতিসংঘের দিকে রওনা হতে পারবো: প্রধান উপদেষ্টা

‘এবার মনটা শান্ত হলো যে দুর্গাপূজা উপলক্ষে আপনাদের সঙ্গে দেখা হলো। আপনারা সাক্ষ্য দেবেন যে আমি হাজির ছিলাম। এখন শান্ত মনে আমি জাতিসংঘের দিকে রওনা হতে পারবো। সবাই দোয়া করবেন, আশীর্বাদ করবেন, নমস্কার।’
আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনকালে এ কথাগুলো বলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
চলতি মাসের শেষ দিকে যখন শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হবে তখন প্রধান উপদেষ্টা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সম্মেলনে থাকবেন। এ কারণে তিনি আগাম শুভেচ্ছা জানাতে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে হাজির হন।
এ সময় দেওয়া বক্তব্যে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, নিজেরা বিভক্ত হয়ে গেলে, ঐক্যবদ্ধ হতে না পারলে আমরা জাতি হিসেবে ব্যর্থ হয়ে যাব। আমরা জাতি হিসেবে ব্যর্থ হতে চাই না। আমাদের তরুণরা জেগেছে। আমাদের মানুষ জেগেছে। আমরা নতুন বাংলাদেশের কথা বলছি, সেটা নিশ্চিত করতে চাই। তা না হলে এত রক্তপাত, এত আত্মত্যাগের কী ফল পেলাম?
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েরা ২০২৪-এর জুলাইয়ে যে অসাধ্য সাধন করেছে, তাদের মূল লক্ষ্য ছিল একটি বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার। এখানে সব নাগরিক সমান সুযোগ পাবে। আমাদের ছেলেমেয়েরা সে যে ঘরেই জন্মগ্রহণ করুক না কেন, সে ছেলে হোক আর মেয়ে হোক, সবাই নাগরিকের সমান সুবিধা পাবে। পুরো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেওয়ার শক্তি তাদের আছে। তারা কেউ বন্দী থাকার জন্য জন্মগ্রহণ করেনি। কারও ভয়ে পালিয়ে থাকার জন্য জন্মগ্রহণ করেনি। আমরা তাদের সে সুযোগ দিতে চাই। তারা নিজের মতো করে গড়ে উঠবে। দেশকে গড়ে তুলবে। পৃথিবীতে গড়ে তুলবে।
আমরা এমন রাষ্ট্র গঠন করতে চাই, পৃথিবী আমাদের অনুসরণ করবে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে আমরা বৈষম্য-দুর্নীতিমুক্ত একটি সমৃদ্ধ দেশ গড়ার যে অগ্রযাত্রা শুরু করেছি তার সফল বাস্তবায়ন করতে হলে ধর্ম-বর্ণ ভেদাভেদ ভুলে সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সব অশুভ, অন্যায়, অন্ধকারকে পরাজিত করে ঐক্য ও সম্প্রীতির জয় হবে। কল্যাণ ও সম্প্রীতির পথে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে, যোগ করেন অধ্যাপক ইউনূস।
সারা জাতিকে একটি পরিবার হিসেবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পরিবারের মধ্যে নানা রকম মতভেদ থাকবে, ব্যবহারের পার্থক্য থাকবে কিন্তু পরিবার একটি অটুট জিনিস। এটাকে কেউ ভাঙতে পারে না। আমাদের লক্ষ্য হলো আমরা যেন জাতি হিসেবে, অটুট একটি পরিবার হিসেবে দাঁড়াতে পারি। যত ধর্মীয় পার্থক্য থাকুক, মতের পার্থক্য থাকুক, যত রকমের পার্থক্যই থাকুক, রাষ্ট্র আমাদের প্রতি কোনো পার্থক্য করতে পারবে না। সে যে-ই হোক, সমান মর্যাদা দেওয়ার জন্য রাষ্ট্র দায়িত্ববদ্ধ। সে যে ধর্মেই বিশ্বাস করুক, যে মতবাদেই বিশ্বাস করুক, অসীম ধনের অধিকারী হোক অথবা নিঃস্ব হোক, রাষ্ট্রের কাছে সে একজন নাগরিক। নাগরিকের সব অধিকার সংবিধানে লিপিবদ্ধ করা আছে। তাকে ক্ষুদ্র পরিমাণেও বঞ্চিত করার কোনো অধিকার সরকারের নেই। নাগরিক হিসেবে আমার প্রতি কোনো বৈষম্য করা যাবে না- এ বিষয়ে সব সময় সোচ্চার হতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা মাঝে-মাঝে পারিবারিক বা অন্যান্য বিষয়ে সোচ্চার হয়ে যাই, হতে হয়। কিন্তু এ ব্যাপারে যেন তারচেয়ে বেশি সোচ্চার হই। আমার প্রতি কোনো রকমের বৈষম্য করা যাবে না। কারণ রাষ্ট্র আমাকে একেবারে তালিকা করে আমার প্রাপ্য কী সে ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিয়েছে। কাজেই যত কথা বলি সবচাইতে বড় কথাটি বলবেন- আমি নাগরিক, আমাকে এ তালিকাভুক্ত সব জিনিসের অধিকার দিতে হবে। এটাতে যদি না দাঁড়ান, বাকিগুলোতে সুবিধা হয় না। নানা কথার মারপ্যাঁচে এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু এটাতে এদিক-ওদিক করার কোনো সুযোগ নেই।
অধ্যাপক ইউনূস যোগ করেন, আপনারা যত কথাই বলুন, তার মধ্যে বারবার বলুন যে আমি এ দেশের নাগরিক। আমার জন্য সংবিধানে দেওয়া সব নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এসব অধিকার থেকে এখন আমি বঞ্চিত, এগুলো আমাকে দিতে হবে। তখন আপনি সঙ্গী-সাথী সবাইকে পাবেন। সারা দেশের মানুষ একসঙ্গে থাকবে, কারণ সবারই একই সমস্যা, তার নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। আমরা বারবার লাঞ্ছিত হই, অপমানিত হই, নানা রকমের বৈষম্যের শিকার হই। যেহেতু ওই অধিকারের প্রতি আমাদের নজর নেই বা হতাশ হয়ে গেছি। অধিকারের কথা মুখে আসে না, এখন আসতে হবে। আমরা যেই নতুন বাংলাদেশের কথা বলছি, তার মধ্যে এটি সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সবাইকে সব নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করা, সেটা যেন আমরা করতে পারি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা নিরাপত্তা বাহিনীর বেষ্টনীর মধ্যে আমাদের ধর্ম পালন করতে চাই না। আমরা নাগরিক হিসেবে মুক্তভাবে যার যার ধর্ম পালন করতে চাই। এ অধিকার আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, নিরাপত্তা বাহিনীকে তাদের ভূমিকা পালন করার জন্য সবার প্রতি ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু আমরা এমন একটি দেশ বানাতে চাই যেখানে এ রকম নিরাপত্তা বাহিনী বেষ্টিত হয়ে ধর্ম পালন করা একটি হাস্যকর জিনিস হবে। এটা কী কথা হলো! এটা কোন ধরনের দেশ বানালাম আমরা! এ রকম দেশ বানানোর জন্যই এত রক্তপাত, এত কিছু হলো? আমরা সেটা চাই না। আমরা সম্পূর্ণ নিরাপত্তার মধ্যে, সম্পূর্ণ বিশ্বাসের মধ্যে যার যার মতো, যার যার ধর্ম পালন করতে চাই, এ নিশ্চয়তা আমরা চাই।
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, আমরা ঐক্যের কথা বলি, সেই ঐক্য দুর্গাপূজার কাঠামোর মধ্যেই আছে। সনাতনী ধর্মবিশ্বাস মতে দুর্গাপূজার কাঠামোতে দেশ ও জাতির সব ধরনের ঐক্য-সম্প্রীতির প্রতীক আছে। লক্ষ্মীর ধনসম্পদ, সরস্বতীর জ্ঞান, কার্তিকের বীরত্ব, গণেশের সাফল্য, দশভোজা দুর্গার অসীম শক্তি সম্মিলিতভাবে সব অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে। এর মধ্যেই ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চিত্র আছে। জ্ঞান নিয়ে, সম্পদ নিয়ে, শক্তি নিয়ে, সবাই যার যার শক্তি নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হলে আমরা সব অশুভ শক্তিকে পরাজিত করতে পারব। কারও সাধ্য নেই এ থেকে আমাদের বঞ্চিত করে।
জাতীয়
আট দিন বন্ধ থাকবে চীনা দূতাবাসের ভিসা কার্যক্রম

ঢাকায় চীনের ভিসা অফিস ৮ দিন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। চীনের জাতীয় দিবসসহ অন্যান্য ছুটিতে বন্ধ থাকবে দূতাবাসের ভিসা কার্যক্রম।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে ঢাকার চীন দূতাবাস।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ১ অক্টোবর থেকে ৮ অক্টোবর সাময়িকভাবে ভিসা অফিস বন্ধ থাকবে এবং ৯ অক্টোবর থেকে পুনরায় ভিসা অফিস চালু হবে। নিয়মিত কর্মদিবস হিসেবে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর ও ১০ অক্টোবর যথারীতি খোলা থাকবে।
জাতীয়
ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নতুন নির্দেশনা

ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা আরও সুশৃঙ্খল করতে সরকারি হাসপাতালগুলোকে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। নির্দেশনা অনুযায়ী, ডেঙ্গু চিকিৎসায় দেশের সব হাসপাতালকে অবিলম্বে বিশেষ ওয়ার্ড তৈরি করতে এবং একটি নির্দিষ্ট চিকিৎসা টিম গঠন করতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মনে করছে, এ ব্যবস্থার মাধ্যমে রোগীর সেবা উন্নত হবে, ঝুঁকি কমবে ও হাসপাতালে চিকিৎসার মান বৃদ্ধি পাবে।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান স্বাক্ষরিত এক জরুরি নির্দেশনায় এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, হাসপাতালগুলোতে ভর্তিকৃত ডেঙ্গু রোগীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় এনএস-১ পরীক্ষা, জরুরি চিকিৎসা ও পর্যাপ্ত ঔষধের ব্যবস্থা করতে হবে। হাসপাতালের ভর্তিকৃত রোগীদের একটি নির্দিষ্ট ওয়ার্ড বা কক্ষে রাখা জরুরি। আইসিইউ প্রয়োজন হলে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এ ছাড়া চিকিৎসক ও নার্সদের জন্য বিশেষ দায়িত্ব নির্ধারণ করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য মেডিসিন, শিশু ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি বোর্ড গঠন করতে হবে। এই বোর্ডের তত্ত্বাবধানে মেডিকেল অফিসার, রেসিডেন্ট ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের একটি দল শুধু এই রোগীদের চিকিৎসা দেবেন। হাসপাতালের বহির্বিভাগে আগত সন্দেহভাজন রোগীদেরও একটি নির্দিষ্ট কক্ষে একই বোর্ড ও চিকিৎসকরা চিকিৎসা দেবেন।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, হাসপাতালের চারপাশে মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনার জন্য হাসপাতাল পরিচালককে সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভাকে পত্র দিতে হবে। এ ছাড়া প্রতি শনিবার সকাল ১০টায় হাসপাতালে পরিচালক, তত্ত্বাবধায়ক ও সিভিল সার্জনের সভাপতিত্বে ডেঙ্গু সমন্বয় সভা করার কথাও বলা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ ধরনের নির্দেশনা শুধু হাসপাতালে চিকিৎসার মান বাড়াবে না, বরং রোগী ও পরিবারের জন্য ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করবে। চিকিৎসা প্রক্রিয়া সুশৃঙ্খল ও সমন্বিত হলে রোগী মৃত্যুর হারও হ্রাস পেতে পারে।
ডেঙ্গু বাংলাদেশের জন্য প্রতি বর্ষা মৌসুমে বড় স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের বর্ষায় ইতোমধ্যে রাজধানী ও অন্য শহরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ কম থাকলেও সঠিক চিকিৎসা ও সতর্কতা ছাড়া পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
জাতীয়
দেশে ফ্যাসিস্ট শাসন যেন আর না আসে: মাহমুদুর রহমান

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেওয়ার আগে আমার দেশ প্রত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশে এই বিচারের মাধ্যমে আমরা চাই ফ্যাসিস্ট শাসন যেন আর না আসে।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্য দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
মাহমুদুর রহমান বলেন, ন্যায়বিচার করা হোক, তাহলে শহীদ পরিবার, আহত জুলাই যোদ্ধা এবং তাদের পরিবারের শোক কিছুটা লাঘব হয়।
এর আগে, সোমবর (১৫ সেপ্টেম্বর) প্রথম দিনের সাক্ষ্যে শেখ হাসিনার ‘ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠা’ ও বিচার বিভাগ ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে থাকার নানা কৌশল তুলে ধরেন মাহমুদুর রহমান। আজ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাকে জেরা করবেন শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। এরপরই নেওয়া হবে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের সাক্ষ্য।
গত ৯ সেপ্টেম্বর ১৪তম দিনের মতো এ মামলায় ছয়জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত এ মামলায় মোট ৪৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
গত ১০ জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করেন সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। ওইদিন তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে আন্দোলন চলাকালে আমাদের বিরুদ্ধে হত্যা-গণহত্যা সংঘটনের যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্য। এ ঘটনায় আমি নিজেকে দোষী সাব্যস্ত করছি। আমি রাজসাক্ষী হয়ে জুলাই-আগস্ট আন্দোলন চলাকালে যে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তার বিস্তারিত আদালতে তুলে ধরতে চাই। রহস্য উন্মোচনে আদালতকে সহায়তা করতে চাই।’
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ অভিযোগ গঠনের সময় মামুন এসব কথা বলেন।
জাতীয়
নিজেরা বিভক্ত হলে জাতি হিসেবে আমরা ব্যর্থ হয়ে যাব: প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমরা নিজেরা যদি বিভক্ত হই, তবে জাতি হিসেবে আমরা ব্যর্থ হবো। কিন্তু আমরা ব্যর্থ হতে চাই না।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর বেষ্টনির মধ্যে নয়, আমরা মুক্তভাবে সবাই সবার ধর্ম পালন করতে চাই। আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো—সব ধর্ম, সব বিশ্বাসকে সমান চোখে দেখা। ধর্মীয় পার্থক্য থাকতেই পারে, কিন্তু রাষ্ট্রের কাছে আমরা সবাই সমান। রাষ্ট্র কোনো নাগরিকের সঙ্গে ধর্ম, পরিচয় বা বিশ্বাসের ভিত্তিতে বৈষম্য করবে না।
ড. ইউনূস বলেন, আমরা এমন রাষ্ট্র গড়তে চাই যা বিশ্ব আমাদের অনুসরণ করবে। জুলাই আকাঙ্খা বাস্তবায়ন করতে হলে সব ধর্মের মানুষকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
এর আগে, সোমবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিভিন্ন পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা। এ সময় তারা প্রধান উপদেষ্টাকে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আপনাদের সঙ্গে সবসময় দেখা করার ইচ্ছা থাকলেও সুযোগ হয় না। পূজা উপলক্ষে বছরে একবার সামনাসামনি দেখা হওয়ার, কথা বলার সুযোগ হয়।
এ সময় দুর্গাপূজার প্রস্তুতি ও সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান প্রধান উপদেষ্টা।
হিন্দু ধর্মীয় নেতারা জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর এক হাজারের বেশি পূজামণ্ডপ বেড়েছে। সারাদেশে পূজামণ্ডপ প্রস্তুতের কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে।
তারা জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সকল পক্ষ থেকে এবারের পূজায় সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। বিশেষ করে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও সচিবকে ধন্যবাদ জানান তারা।