আন্তর্জাতিক
পারমাণবিক অস্ত্রের পেছনে বৈশ্বিক ব্যয় রেকর্ড ১৩ শতাংশ বেড়েছে
২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে পারমাণবিক অস্ত্রের ওপর ব্যয় ১৩ শতাংশ বেড়ে রেকর্ড ৯১.৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে বলে প্রাক্কলনে উঠে এসেছে। চাপ সৃষ্টিকারী গোষ্ঠী ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু অ্যাবোলিশ নিউক্লিয়ার ওয়েপন্স-এর (আইসিএএন) হিসাবে এ প্রাক্কলন উঠে এসেছে।
আগের বছরের তুলনায় গত বছর ১০.৭ বিলিয়ন ডলার বেশি খরচ করা হয়েছে পারমাণবিক অস্ত্রের পেছনে। ব্যয়বৃদ্ধির পেছনে বড় প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বাজেট বৃদ্ধি।
রাশিয়া-ইউক্রেন এবং ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের ফলে উদ্ভূত ব্যাপক ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তার ফলে শক্তিধর দেশগুলো প্রতিরক্ষা খাতে বাজেট বাড়িয়েছে। এর দরুন খরচ বেড়েছে পারমাণবিক অস্ত্রের পেছনেও।
বিশ্বের নয়টি পারমাণবিক শক্তিধর দেশই এ অস্ত্রের পেছনে খরচ বাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে আইসিএএন।
২০২৩ সালে পারমাণবিক অস্ত্রের ওপর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যয় করেছে চীন, ১১.৯ বিলিয়ন ডলার। যদিও এ খাতে বেইজিংয়ের মোট ব্যয় ওয়াশিংটনের চেয়ে অনেক কম। যুক্তরাষ্ট্র এ সময় পারমাণবিক অস্ত্রের পেছনে ব্যয় করেছে ৫১.৫ বিলিয়ন ডলার।
গত বছর পারমাণবিক অস্ত্রের ওপর ব্যয়ের দিক থেকে তৃতীয় অবস্থানে আছে রাশিয়া, ৮.৩ বিলিয়ন ডলার। এর পরই যুক্তরাজ্য (৮.১ বিলিয়ন ডলার) ও ফ্রান্সের (৬.১ বিলিয়ন ডলার) অবস্থান।
তবে তথ্যপ্রদানে স্বচ্ছতা না থাকায় কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্র বা আনুষ্ঠানিকভাবে পারমাণবিক কর্মসূচি ঘোষণা না করা তিন দেশের (ভারত, পাকিস্তান ও ইসরায়েল) ব্যয়ের হিসাব নিয়ে জটিলতা আছে।
গবেষণার অন্যতম লেখক সুসি স্নাইডার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো নিশ্চিতভাবে ‘পারমাণবিক অস্ত্রের ওপর বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে’। এই অর্থ অস্ত্রের পেছনে খরচ না করে পরিবেশ ও সামাজিক কর্মসূচিতে ব্যবহার করা যেত বলে মনে করেন তিনি।
সুসি স্নাইডার বলেন, এই শত শত কোটি ডলার জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য এবং পৃথিবীর জীবনকে বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচিয়ে রাখা প্রাণী ও গাছপালাকে বাঁচানোর জন্য ব্যবহার করা যেত। সেইসঙ্গে এই অর্থ দিয়ে বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা পরিষেবার উন্নতি করা যেত।
আইসিএএন তাদের গবেষণা শুরু করার পর গত পাঁচ বছরে পারমাণবিক অস্ত্রের পেছনে ব্যয় ৩৪ শতাংশ বা ২৩.২ বিলিয়ন ডলার বেড়েছে। এ সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের এই ব্যয় ৪৫ শতাংশ এবং যুক্তরাজ্যের ব্যয় ৪৩ শতাংশ বেড়েছে। আর বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২৪ সালে এ ব্যয় ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সর্বাত্মক চালানোর পর থেকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন উপর্যুপরি পশ্চিমা দেশগুলোকে তার দেশের দেশের পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডারের কথা উল্লেখ করে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। মে মাসে ইউক্রেনের সীমান্তের কাছে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সিরিজ মহড়াও দেওয়া শুরু করেছে রাশিয়া।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (সিপ্রি) সংগৃহীত অন্যান্য তথ্য বলছে, সক্রিয় পারমাণবিক ওয়ারহেডের সংখ্যাও কিছুটা বেড়েছে। বর্তমানে সক্রিয় পারমাণবিক ওয়ারহেড ৯ হাজার ৫৮৫টি। সক্রিয় ওয়ারহেড বাড়ার পেছনে মূল অবদান চীনের। বেইজিংয়ের ওয়ারহেড ৪১০ থেকে বেড়ে ৫০০-তে উন্নীত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া সবচেয়ে বড় পারমাণবিক রাষ্ট্র রয়ে গেছে। ১৯৫০-এর থেকেই তারা বৃহত্তম পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। এই দুটি দেশের কাছেই মোট ওয়ারহেডের প্রায় ৯০ শতাংশ।
গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ৩ হাজার ৭০৪টি পারমাণবিক ওয়ারহেডের বিপরীতে রাশিয়ার ৪ হাজার ৩৮০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড মোতায়েন বা মজুত রয়েছে।
সিপ্রির গবেষকরা বলেছেন, রাশিয়া ২০২৩ সালের জানুয়ারির তুলনায় অপারেশনাল বাহিনীর সঙ্গে প্রায় ৩৬টি বেশি ওয়ারহেড মোতায়েন করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও মস্কো তার কোনো পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র বেলারুশে মোতায়েন করেছে বলে প্রমাণ নেই বলে জানিয়েছেন তারা। যদিও পুতিন ও বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো প্রকাশ্যে বেলারুশে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের বিবৃতি দিয়েছেন।
প্রাক্কলনে বলা হয়েছে, ব্রিটেনের পারমাণবিক অস্ত্রের মজুত অপরিবর্তিত, অর্থাৎ ২২৫টিই আছে (ফ্রান্সেরও ২৯০টিই আছে আগের মতো)। তবে তিন বছর আগে যুক্তরাজ্য বলেছিল, রাশিয়া ও চীনের ‘হুমকি’ ঠেকাতে তারা ট্রাইডেন্ট ওয়ারহেডের সংখ্যার সীমা বাড়িয়ে ২৬০টি করতে ইচ্ছুক।
সিপ্রির গণবিধ্বংসী অস্ত্র (ডব্লিউএমডি) কর্মসূচির পরিচালক উইলফ্রেড ওয়ান বলেন, ‘স্নায়ুযুদ্ধের পর থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে পারমাণবিক অস্ত্রকে (আর কখনও) এত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে দেখিনি।’
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
৩৮ বছরের মধ্যে জাপানি মুদ্রার মূল্য সর্বনিম্ন
জাপানি মুদ্রার পতন কোনোভাবে ঠেকানো যাচ্ছে না। সম্প্রতি মুদ্রাটির মান কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। বুধবার (২৬ জুন) এক্ষেত্রে বড় পতন দেখলো বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির মুদ্রাটি।
এদিন মার্কিন ডলারের বিপরীতে ইয়েনের মান কমে ৩৮ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন হয়েছে। অর্থাৎ সর্বশেষ ১৯৮৬ সালে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।
মার্কিন ডলারের বিপরীতে জাপানি মুদ্রার মূল্য কমে দাঁড়িয়েছে ১৬০ দশমিক ৩৯ ইয়েনে। মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের সুদের হারের মধ্যে বড় পার্থক্যের কারণেই এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা জাপানের অর্থমন্ত্রণালয় ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দিকে নজর রাখছে। যদিও এরই মধ্যে মুদ্রাটিকে সহায়তা দিতে এপ্রিলের শেষের দিকে ও মে মাসের শুরুতে ৬২ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে জাপান সরকার।
চলতি বছর জাপান সুদের হার শূন্য থেকে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে এই হার ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।
এর আগে দেশটির একজন সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন, জাপানিরা নিজেরাই আর জাপানে বিনিয়োগ করছে না ও বিদেশে থেকে অর্জিত মুনাফা দেশে ফিরিয়ে না এনে তা পুনরায় বিদেশেই বিনিয়োগ করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেছিলেন, মূলত সমস্যা সমাধানে কাঠামোগত সংস্কার দরকার।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
যাবজ্জীবন দণ্ডিত আসামির পিএইচডি
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মাওবাদী নেতা অর্ণব দাম। তিনি হুগলির একটি জেলে বন্দি রয়েছেন। জেলে থেকেই ডক্টর অব ফিলোসফি (পিএইচডি) করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন অর্ণব। মৌখিক পরীক্ষা দিতে পুলিশি ঘেরাটোপে বুধবার (২৬ জুন) বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলেন তিনি।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা এ খবর জানিয়েছে।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ বলেছে, তিনি ইউজিসি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মাবলি মেনে আবেদন করলে পিএইচডি করার সুযোগ দেওয়া হবে। সেই মোতাবেক হুগলি জেলা সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়। তারা সব ব্যবস্থা করে বুধবার তাকে নিয়ে আসে। সব কিছু ঠিক থাকলে এবং ভাইভাতে উত্তীর্ণ হলে অর্ণব পিএইচডি করার সুযোগ পাবেন।
অর্ণবের দাবিতে সমর্থন জানিয়ে হুগলি জেল কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছিল মানবাধিকার সংগঠন গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি (এপিডিআর)। অবশেষে কারা কর্তৃপক্ষ অনুমতি দেওয়ায় অর্ণবের ইন্টারভিউয়ের ব্যবস্থা হয়েছে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে হাজির হয়ে মৌখিক ইন্টারভিউও দেন অর্ণব।
হুগলি সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের এক সূত্রে জানা যায়, জেলে ভাল লাইব্রেরি আছে। সেখান থেকে বই নিয়ে পড়াশোনা করছেন অর্ণব। মৌখিক পরীক্ষায় পাস করলে ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করবেন তিনি। ২০১০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি শিলদা ইএফআর ক্যাম্পে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে। ওই হামলায় মৃত্যু ২৩ জন ইএফআর জওয়ান মারা যায়।
ওই ঘটনার মামলায় ২৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন আদালত। ওই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত অর্ণবের সাজা হয়। প্রথমে তাকে রাখা হয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুর সংশোধনাগারে। তারপর তাকে হুগলি সংশোধনাগারে রাখা হয়। সেখান থেকেই পিএইচডি করার আবেদন করেন অর্ণব। সেই আবেদন নথিভুক্তও করলেও বিষয়টি জেল কর্তৃপক্ষকে বিবেচনা করতে বলেছিলেন বিচারক। কিন্তু সংশোধনাগারে আসার পর অর্ণবের আবেদন বিশেষ পাত্তা পায়নি। তাই মাওবাদী নেতা অনশন করার ঘোষণা দেন। জেল থেকে পরীক্ষা দিয়েই স্টেট এলিজিবিলিটি টেস্টে (সেট) সফলভাবে উত্তীর্ণ হন তিনি।
কলকাতার গড়িয়ার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত বিচারক এসকে দামের ছেলে অর্ণব। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে খড়্গপুর আইআইটিতে পড়াশোনা করতেন তিনি। কিন্তু তিন সিমেস্টারের পর হঠাৎ ক্যাম্পাস থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে যান অর্ণব। পরে জানা যায়, সিপিআইয়ের (মাওবাদী) রাজনৈতিক মতবাদে আকৃষ্ট হয়ে ১৯৯৮ সালে সেই সংগঠনে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত মাও নেতা কিষেণজির স্নেহভাজন ছিলেন অর্ণব। আইআইটির ক্যাম্পাস থেকে পুরুলিয়া-ঝাড়খণ্ডের পাহাড়ে-জঙ্গলে হাতে একে-৪৭ নিয়ে ডেরা বেঁধেছিলেন এই যুবক। লালগড় আন্দোলনের সময় তার গেরিলা বাহিনী নাজেহাল করে দিয়েছিল যৌথ বাহিনী থেকে শুরু করে গোয়েন্দাদের। একাধিক মাওবাদী হামলায় অভিযুক্ত অর্ণব ২০১২ সালে আসানসোলে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। জেলবন্দি হওয়ার পর অসম্পূর্ণ থাকা উচ্চশিক্ষায় মন দেন ওই গেরিলা নেতা। বিষয় হিসেবে বেছে নেন ইতিহাস। জেল থেকেই অর্ণব প্রথম শ্রেণিতে ইতিহাসে স্নাতক হন। স্নাতকোত্তরেও ৬৬ শতাংশ নম্বর পেয়ে প্রথম শ্রেণিতে পাস করেন তিনি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ভারতে বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধী
ভারতে বিরোধী দলনেতার পদ পেতে গেলে লোকসভার মোট আসনসংখ্যার দশ শতাংশ বা ৫৪টি আসনে জিতে আসতে হতো। গত ১০ বছরে কোনো বিরোধী দলই এতগুলো আসন পায়নি। কংগ্রেস এবার ৯৯টি আসন পেয়েছে। ফলে তাদের দলনেতা রাহুল গান্ধী এবার বিরোধী নেতার পদ পেল।
কংগ্রেস সংসদীয় দলের চেয়ারপারসন সোনিয়া গান্ধী প্রোটেম স্পিকার ভর্তৃহরি মহাতবকে চিঠি লিখে জানিয়ে দিয়েছেন, কংগ্রেস রাহুল গান্ধীকেই বিরোধী নেতার পদের জন্য মনোনীত করেছে। ইন্ডিয়ার শরিক দলগুলোও কংগ্রেসের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে। ২০০৪ সালে আমেঠি থেকে জিতে লোকসভায় প্রবেশ করেছিলেন রাহুল গান্ধী। তারপর দশ বছর কেন্দ্রে ইউপিএর সরকার ছিল। সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং অনেকবার রাহুলকে মন্ত্রী হওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তিনি রাজি হননি।
২০১৭ সালে রাহুল কংগ্রেস সভাপতি হন। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের আবার ভরাডুবি হওয়ায় রাহুল ইস্তফা দেন। তারপর তিনি আর দলের দায়িত্ব নেননি। লোকসভায় কংগ্রেসের নেতার দায়িত্বও নেননি। কিন্তু এবার কংগ্রেসের ফল ভালো হওয়ায়, তাদের শক্তি অনেকটা বেড়ে যাওয়ার পর রাহুল বিরোধী নেতার পদ নিতে রাজি হয়েছেন। ফলে এই প্রথমবার তিনি কোনো সাংবিধানিক পদে গেলেন।
শুধু তাই নয়, এই প্রথমবার লোকসভায় তিনি সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দেবেন। লোকসভায় সরকারকে কোণঠাসা করার চেষ্টা থেকে শুরু করে ইন্ডিয়ার শরিক দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে এক হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানানোর কাজটা তাকেই করতে হবে। স্পিকার পদে কংগ্রেসের প্রার্থী স্পিকারের পদ নিয়ে এবার ভোটাভুটি হবে। স্পিকারের পদে এনডিএ-র প্রার্থী হলেন গতবারের স্পিকার ওম বিড়লা।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
২০৫০ সালের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতি হবে যেসব দেশ
২০৫০ সালের মধ্যে শীর্ষ অর্থনীতির তালিকায় থাকা দেশগুলো আগামী দিনের বৈশ্বিক অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। অর্গ্যানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা ৯০০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে জ্বালানি ও খাদ্য উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রাকৃতিক সম্পদের ওপরও চাপ বাড়াতে পারে।
বিশ্বের বৃহত্তম ২৫টি খাদ্য কোম্পানির আয়ের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে, সাম্প্রতিক সময়ে মন্দা থাকা সত্ত্বেও ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বে জিডিপি প্রায় চারগুণ হবে বলে পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে। তবে চীন এবং ভারতে জিডিপি বৃদ্ধির হার আগামী কয়েক দশক ধরে হ্রাস পাবে। অপরদিকে আফ্রিকা মহাদেশে ২০৩০ এবং ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার অর্জনের পূর্বাভাস পাওয়া গেছে।
বিশ্বব্যাপী জ্বালানির চাহিদাও ৮০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। তবে বৈশ্বিক জ্বালানির মিশ্রণ অনেকাংশে অপরিবর্তিত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। জীবাশ্ম জ্বালানী এখনও প্রায় ৮৫ শতাংশ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি মাত্র ১০ শতাংশ এবং অবশিষ্টাংশ পারমাণবিক শক্তি হিসেবে রয়েছে।
ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা মেটাতে বিশ্বব্যাপী খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। এতে করে আগামী দশকে কৃষি জমির চাহিদা বেড়ে যাবে। চীন এবং ভারতে বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। সে কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে চীনের কর্মশক্তি হ্রাস পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কিন্তু সবকিছুর পরেও চীনই হবে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশ। বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষই ততদিনে শহরে বসবাস করবে।
গবেষণা সংস্থা পিডব্লিউসি-এর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে চীন, যা বিশ্বব্যাপী জিডিপির প্রায় ২০ শতাংশে অবদান রাখবে। ক্রয় ক্ষমতার সমতার (পিপিপি) ক্ষেত্রে চীন ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। ২০৩০ সালের আগেই দেশটি বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি হিসাবে আবির্ভূত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের জিডিপিতে ইইউর অবদান ১০ শতাংশের এর নিচে নেমে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, চীনের পর ভারত ২০৫০ সালের মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে। চীন এবং ভারত উভয়ই বর্তমান বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চীনের অবিস্বরণীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রকৃতপক্ষে মধ্যম আয়ের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সফল উন্নয়নের একটি।
২০১৬ সাল থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে উদীয়মান সেভেন বা ই৭ অর্থনীতির দেশগুলো জি৭ অর্থনীতির দেশগুলোর তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ দ্রুত বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া ভিয়েতনাম, ভারত এবং বাংলাদেশ দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশগুলোর তালিকায় থাকবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
অর্গ্যানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) একটি প্রতিবেদন পূর্বাভাস দিয়েছে যে, আফ্রিকা মহাদেশ ২০৩০ থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে যাচ্ছে। এছাড়া পোল্যান্ড ইউরোপীয় ইউনিয়নের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অপরদিকে ব্রাজিল, নাইজেরিয়া এবং তুরস্কের মতো দেশগুলোতে সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও তারা দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করতে ইচ্ছুক দেশগুলোর জন্য যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধা উপস্থাপন করছে। ফলে এই দেশগুলোতে উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে।
এই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য উদীয়মান বাজার তৈরিতে বিভিন্ন দেশের সরকারকে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি, অর্থনীতির বৈচিত্র্যকরণ এবং রাজনৈতিক ও আইনি প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে কাঠামোগত সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হবে।
২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশ হতে যাওয়া চীনের জিডিপি ৪২ দশমিক ৯৬ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে এবং ২০৩০ সালের আগে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি হিসাবে আবির্ভূত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই সময়ের মধ্যে দেশটির জনসংখ্যা ১৩১ কোটিতে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকবে ভারত। দেশটির জিডিপি ৩৮ দশমিক ৬৮ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। এছাড়া তৃতীয় অবস্থানে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির জিডিপি হবে ২৬ দশমিক ৫৮ ট্রিলিয়ন ডলার।
এই তালিকার চতুর্থ অবস্থানে থাকবে ইন্দোনেশিয়া, ৫ম অবস্থানে রাশিয়া, ৬ষ্ঠ অবস্থানে জাপান, ৭ম জার্মানি, ৮ম তুরস্ক, ৯ম যুক্তরাজ্য এবং ১০ম স্থানে থাকবে ব্রাজিল। এরপরেই বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে জায়গা করে নেবে মিশর, ইথিওপিয়া, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া, স্পেন, সৌদি আরব, পাকিস্তান, পোল্যান্ড এবং মিয়ানমার।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ভিআইপিদের জন্য সড়ক-ফুটপাত খালি, সাধারণদের জন্য নয় কেন: মুম্বাইয়ের হাইকোর্ট
ভারতের মহারাষ্ট্র প্রদেশের মুম্বাইয়ের হাইকোর্ট বলেছেন, যখন প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য ভিভিআইপিদের জন্য একদিনেই রাস্তা ও ফুটপাত খালি করা হয়, তখন অন্য সবার জন্যও কেন তা প্রত্যেকদিন করা যাবে না। পরিষ্কার ফুটপাত এবং হাঁটার জন্য নিরাপদ জায়গা পাওয়া প্রত্যেকের মৌলিক অধিকার। রাজ্য কর্তৃপক্ষ এটা করতে বাধ্য।
সোমবার মুম্বাই হাইকোর্টের বিচারপতি এম এস সোনাক এবং কমল খাতার ডিভিশন বেঞ্চ ফুটপাত ও সড়ক থেকে হকার এবং অবৈধ বিক্রেতাদের উচ্ছেদের এক আবেদনের শুনানিতে এমন মন্তব্য করেছেন।
হাইকোর্টের বেঞ্চ বলেছেন, শহরের ফুটপাতে অবৈধ হকারদের দখল সমস্যা সমাধানের উপায় এবং এই বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপের জন্য রাজ্য কেবল চিরকালই ভাবতে পারে না।
গত বছর মুম্বাইয়ের হাইকোর্ট নগরীতে অবৈধ ও অবৈধ হকার এবং বিক্রেতাদের উচ্ছেদের বিষয়টি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আমলে নিয়েছিলেন। সোমবার হাইকোর্টের বেঞ্চ বলেছেন, তারা জানেন এই সমস্যাটি অনেক বড় এবং রাজ্য, নাগরিক সংস্থাসহ অন্যান্য কর্তৃপক্ষ কেবল এটাকে ছেড়ে দিতে পারে না। এই বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের বেঞ্চ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী বা কিছু ভিভিআইপি এলে রাস্তা এবং ফুটপাত তাৎক্ষণিকভাবে খালি করা হয়… এবং তারা সেখান দিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত এই ব্যবস্থা কার্যকর থাকে। তখন এটা কীভাবে করা হয়? কেন এটা অন্য সবার জন্য করা যায় না? নাগরিকরা করদাতা… তাদের পরিষ্কার ফুটপাত ও হাঁটার জন্য নিরাপদ জায়গা পাওয়ার অধিকার রয়েছে।
ফুটপাত এবং হাঁটার জন্য নিরাপদ জায়গা নাগরিকের মৌলিক অধিকার। আমরা আমাদের বাচ্চাদের ফুটপাতে হাঁটতে বলি। কিন্তু যদি হাঁটার জন্য কোনও ফুটপাত আর না থাকে, তাহলে আমরা আমাদের বাচ্চাদের কী বলব? প্রশ্ন করেন হাইকোর্ট।
মুম্বাইয়ের বিচারপতি এম এস সোনাক এবং কমল খাতার ডিভিশন বেঞ্চ বলেছেন, কয়েক বছর ধরে কর্তৃপক্ষ বলে আসছে, তারা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। রাষ্ট্রকে কঠোরভাবে কিছু করতে হবে। কী করা উচিত আর এটা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে বলে কর্তৃপক্ষ চিরকাল ভাবতে পারে না। মনে হচ্ছে তাদের ইচ্ছার অভাব আছে। কারণ ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়।
বৃহৎ মুম্বাই পৌর কর্পোরেশনের (বিএমসি) জ্যেষ্ঠ পরামর্শক এস ইউ কামদার বলেছেন, সড়ক এবং ফুটপাতে বসা বিক্রেতা ও হকারদের বিরুদ্ধে পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কিন্তু তারা আবার ফিরে আসে। বিএমসি ভূগর্ভস্থ বাজারের বিকল্পও বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আগামী ২২ জুলাই এই বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য ধার্য করেছেন মুম্বাইয়ের আদালত।
কাফি