আন্তর্জাতিক
ঈদের দিন পশ্চিমবঙ্গে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা
পশ্চিমবঙ্গে ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা। এবার দুর্ঘটনার শিকার শিয়ালদাহগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। সোমবার (১৭ জুন) সকালে ঘটা এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
জানা যায়, কয়েক দিন ধরেই উত্তরবঙ্গে মুষলধারে বৃষ্টি চলছে। এই বৃষ্টির মধ্যেই নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে সোমবার সকালে নির্ধারিত সময়ে রওয়ানা দিয়েছিল কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। নীচবাড়ি ও রাঙামাটি স্টেশনের মাঝে ঢুকতেই একটি মালগাড়ি পিছন দিক থেকে ট্রেনটিকে ধাক্কা মারে।
সংঘর্ষের তীব্রতা এতটাই ছিল যে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পেছন দিক থেকে পরপর দুটি কামরা লাইনচ্যুত হয়ে ছিটকে পড়ে উলটে যায়। দুমড়েমুচড়ে গেছে অসংরক্ষিত কামরা। সেখানে আটকে পড়েছেন অসংখ্য যাত্রী। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন পশ্চিমঙ্গ রেলওয়ে কর্মকর্তা, এনডিআরএফ বাহিনী, জিআরপি ও আরপিএফের জওয়ানরা।
দ্রুত উদ্ধার কাজে হাত লাগায় সবাই। দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া কামরা থেকে পাঁচ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আহত হয়েছেন ৩০ থেকে ৪০ জনের মতো। উদ্ধার কাজ এখনো চলছে।
যেহেতু অসংরক্ষিত কামরায় প্রচুর মানুষের ভিড় ছিল, তাই আশঙ্ক করা হচ্ছে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। গ্যাস কাটার দিয়ে বগি কেটে উদ্ধার কাজ চলছে। দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া কামরার ভেতর থেকে এখনো গোঙানির শব্দ ভেসে আসছে।
যেহেতু একটি প্রত্যন্ত এলাকায় দূর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেহেতু ঘটনাস্থল থেকে হাসপাতালে অনেকটা দূরে। আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে। পরে যাদের আঘাত গুরুতর, তাদেরকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে।
এদিকে, এই দুর্ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া একটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, দার্জিলিংয়ের ফাঁসিদেওয়া এলাকায় ট্রেন দুর্ঘটনার খবর পেলাম। এখনো বিস্তারিত জানতে পারিনি। ঘটনাস্থলে জেলা প্রশাসক, এসপি, চিকিৎসক ও পর্যাপ্তসংখ্যক অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছেছে।
সোমবার সকাল থেকেই উত্তরবঙ্গে মুষলধারে বৃষ্টি চলছে। তার মধ্যেই উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে প্রশাসন। যদিও বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকাজে বেগ পেতে হচ্ছে প্রশাসনকে।
এদিকে, এ দুর্ঘটনায় সংকেত ব্যবস্থার ত্রুটি রয়েছে নাকি অন্য কোনো কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
৩৮ বছরের মধ্যে জাপানি মুদ্রার মূল্য সর্বনিম্ন
জাপানি মুদ্রার পতন কোনোভাবে ঠেকানো যাচ্ছে না। সম্প্রতি মুদ্রাটির মান কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। বুধবার (২৬ জুন) এক্ষেত্রে বড় পতন দেখলো বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির মুদ্রাটি।
এদিন মার্কিন ডলারের বিপরীতে ইয়েনের মান কমে ৩৮ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন হয়েছে। অর্থাৎ সর্বশেষ ১৯৮৬ সালে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।
মার্কিন ডলারের বিপরীতে জাপানি মুদ্রার মূল্য কমে দাঁড়িয়েছে ১৬০ দশমিক ৩৯ ইয়েনে। মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের সুদের হারের মধ্যে বড় পার্থক্যের কারণেই এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা জাপানের অর্থমন্ত্রণালয় ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দিকে নজর রাখছে। যদিও এরই মধ্যে মুদ্রাটিকে সহায়তা দিতে এপ্রিলের শেষের দিকে ও মে মাসের শুরুতে ৬২ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে জাপান সরকার।
চলতি বছর জাপান সুদের হার শূন্য থেকে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে এই হার ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।
এর আগে দেশটির একজন সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন, জাপানিরা নিজেরাই আর জাপানে বিনিয়োগ করছে না ও বিদেশে থেকে অর্জিত মুনাফা দেশে ফিরিয়ে না এনে তা পুনরায় বিদেশেই বিনিয়োগ করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেছিলেন, মূলত সমস্যা সমাধানে কাঠামোগত সংস্কার দরকার।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
যাবজ্জীবন দণ্ডিত আসামির পিএইচডি
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মাওবাদী নেতা অর্ণব দাম। তিনি হুগলির একটি জেলে বন্দি রয়েছেন। জেলে থেকেই ডক্টর অব ফিলোসফি (পিএইচডি) করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন অর্ণব। মৌখিক পরীক্ষা দিতে পুলিশি ঘেরাটোপে বুধবার (২৬ জুন) বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলেন তিনি।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা এ খবর জানিয়েছে।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ বলেছে, তিনি ইউজিসি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মাবলি মেনে আবেদন করলে পিএইচডি করার সুযোগ দেওয়া হবে। সেই মোতাবেক হুগলি জেলা সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়। তারা সব ব্যবস্থা করে বুধবার তাকে নিয়ে আসে। সব কিছু ঠিক থাকলে এবং ভাইভাতে উত্তীর্ণ হলে অর্ণব পিএইচডি করার সুযোগ পাবেন।
অর্ণবের দাবিতে সমর্থন জানিয়ে হুগলি জেল কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছিল মানবাধিকার সংগঠন গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি (এপিডিআর)। অবশেষে কারা কর্তৃপক্ষ অনুমতি দেওয়ায় অর্ণবের ইন্টারভিউয়ের ব্যবস্থা হয়েছে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে হাজির হয়ে মৌখিক ইন্টারভিউও দেন অর্ণব।
হুগলি সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের এক সূত্রে জানা যায়, জেলে ভাল লাইব্রেরি আছে। সেখান থেকে বই নিয়ে পড়াশোনা করছেন অর্ণব। মৌখিক পরীক্ষায় পাস করলে ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করবেন তিনি। ২০১০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি শিলদা ইএফআর ক্যাম্পে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে। ওই হামলায় মৃত্যু ২৩ জন ইএফআর জওয়ান মারা যায়।
ওই ঘটনার মামলায় ২৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন আদালত। ওই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত অর্ণবের সাজা হয়। প্রথমে তাকে রাখা হয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুর সংশোধনাগারে। তারপর তাকে হুগলি সংশোধনাগারে রাখা হয়। সেখান থেকেই পিএইচডি করার আবেদন করেন অর্ণব। সেই আবেদন নথিভুক্তও করলেও বিষয়টি জেল কর্তৃপক্ষকে বিবেচনা করতে বলেছিলেন বিচারক। কিন্তু সংশোধনাগারে আসার পর অর্ণবের আবেদন বিশেষ পাত্তা পায়নি। তাই মাওবাদী নেতা অনশন করার ঘোষণা দেন। জেল থেকে পরীক্ষা দিয়েই স্টেট এলিজিবিলিটি টেস্টে (সেট) সফলভাবে উত্তীর্ণ হন তিনি।
কলকাতার গড়িয়ার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত বিচারক এসকে দামের ছেলে অর্ণব। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে খড়্গপুর আইআইটিতে পড়াশোনা করতেন তিনি। কিন্তু তিন সিমেস্টারের পর হঠাৎ ক্যাম্পাস থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে যান অর্ণব। পরে জানা যায়, সিপিআইয়ের (মাওবাদী) রাজনৈতিক মতবাদে আকৃষ্ট হয়ে ১৯৯৮ সালে সেই সংগঠনে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত মাও নেতা কিষেণজির স্নেহভাজন ছিলেন অর্ণব। আইআইটির ক্যাম্পাস থেকে পুরুলিয়া-ঝাড়খণ্ডের পাহাড়ে-জঙ্গলে হাতে একে-৪৭ নিয়ে ডেরা বেঁধেছিলেন এই যুবক। লালগড় আন্দোলনের সময় তার গেরিলা বাহিনী নাজেহাল করে দিয়েছিল যৌথ বাহিনী থেকে শুরু করে গোয়েন্দাদের। একাধিক মাওবাদী হামলায় অভিযুক্ত অর্ণব ২০১২ সালে আসানসোলে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। জেলবন্দি হওয়ার পর অসম্পূর্ণ থাকা উচ্চশিক্ষায় মন দেন ওই গেরিলা নেতা। বিষয় হিসেবে বেছে নেন ইতিহাস। জেল থেকেই অর্ণব প্রথম শ্রেণিতে ইতিহাসে স্নাতক হন। স্নাতকোত্তরেও ৬৬ শতাংশ নম্বর পেয়ে প্রথম শ্রেণিতে পাস করেন তিনি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ভারতে বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধী
ভারতে বিরোধী দলনেতার পদ পেতে গেলে লোকসভার মোট আসনসংখ্যার দশ শতাংশ বা ৫৪টি আসনে জিতে আসতে হতো। গত ১০ বছরে কোনো বিরোধী দলই এতগুলো আসন পায়নি। কংগ্রেস এবার ৯৯টি আসন পেয়েছে। ফলে তাদের দলনেতা রাহুল গান্ধী এবার বিরোধী নেতার পদ পেল।
কংগ্রেস সংসদীয় দলের চেয়ারপারসন সোনিয়া গান্ধী প্রোটেম স্পিকার ভর্তৃহরি মহাতবকে চিঠি লিখে জানিয়ে দিয়েছেন, কংগ্রেস রাহুল গান্ধীকেই বিরোধী নেতার পদের জন্য মনোনীত করেছে। ইন্ডিয়ার শরিক দলগুলোও কংগ্রেসের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে। ২০০৪ সালে আমেঠি থেকে জিতে লোকসভায় প্রবেশ করেছিলেন রাহুল গান্ধী। তারপর দশ বছর কেন্দ্রে ইউপিএর সরকার ছিল। সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং অনেকবার রাহুলকে মন্ত্রী হওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তিনি রাজি হননি।
২০১৭ সালে রাহুল কংগ্রেস সভাপতি হন। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের আবার ভরাডুবি হওয়ায় রাহুল ইস্তফা দেন। তারপর তিনি আর দলের দায়িত্ব নেননি। লোকসভায় কংগ্রেসের নেতার দায়িত্বও নেননি। কিন্তু এবার কংগ্রেসের ফল ভালো হওয়ায়, তাদের শক্তি অনেকটা বেড়ে যাওয়ার পর রাহুল বিরোধী নেতার পদ নিতে রাজি হয়েছেন। ফলে এই প্রথমবার তিনি কোনো সাংবিধানিক পদে গেলেন।
শুধু তাই নয়, এই প্রথমবার লোকসভায় তিনি সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দেবেন। লোকসভায় সরকারকে কোণঠাসা করার চেষ্টা থেকে শুরু করে ইন্ডিয়ার শরিক দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে এক হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানানোর কাজটা তাকেই করতে হবে। স্পিকার পদে কংগ্রেসের প্রার্থী স্পিকারের পদ নিয়ে এবার ভোটাভুটি হবে। স্পিকারের পদে এনডিএ-র প্রার্থী হলেন গতবারের স্পিকার ওম বিড়লা।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
২০৫০ সালের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতি হবে যেসব দেশ
২০৫০ সালের মধ্যে শীর্ষ অর্থনীতির তালিকায় থাকা দেশগুলো আগামী দিনের বৈশ্বিক অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। অর্গ্যানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা ৯০০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে জ্বালানি ও খাদ্য উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রাকৃতিক সম্পদের ওপরও চাপ বাড়াতে পারে।
বিশ্বের বৃহত্তম ২৫টি খাদ্য কোম্পানির আয়ের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে, সাম্প্রতিক সময়ে মন্দা থাকা সত্ত্বেও ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বে জিডিপি প্রায় চারগুণ হবে বলে পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে। তবে চীন এবং ভারতে জিডিপি বৃদ্ধির হার আগামী কয়েক দশক ধরে হ্রাস পাবে। অপরদিকে আফ্রিকা মহাদেশে ২০৩০ এবং ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার অর্জনের পূর্বাভাস পাওয়া গেছে।
বিশ্বব্যাপী জ্বালানির চাহিদাও ৮০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। তবে বৈশ্বিক জ্বালানির মিশ্রণ অনেকাংশে অপরিবর্তিত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। জীবাশ্ম জ্বালানী এখনও প্রায় ৮৫ শতাংশ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি মাত্র ১০ শতাংশ এবং অবশিষ্টাংশ পারমাণবিক শক্তি হিসেবে রয়েছে।
ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা মেটাতে বিশ্বব্যাপী খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। এতে করে আগামী দশকে কৃষি জমির চাহিদা বেড়ে যাবে। চীন এবং ভারতে বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। সে কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে চীনের কর্মশক্তি হ্রাস পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কিন্তু সবকিছুর পরেও চীনই হবে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশ। বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষই ততদিনে শহরে বসবাস করবে।
গবেষণা সংস্থা পিডব্লিউসি-এর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে চীন, যা বিশ্বব্যাপী জিডিপির প্রায় ২০ শতাংশে অবদান রাখবে। ক্রয় ক্ষমতার সমতার (পিপিপি) ক্ষেত্রে চীন ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। ২০৩০ সালের আগেই দেশটি বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি হিসাবে আবির্ভূত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের জিডিপিতে ইইউর অবদান ১০ শতাংশের এর নিচে নেমে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, চীনের পর ভারত ২০৫০ সালের মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে। চীন এবং ভারত উভয়ই বর্তমান বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চীনের অবিস্বরণীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রকৃতপক্ষে মধ্যম আয়ের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সফল উন্নয়নের একটি।
২০১৬ সাল থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে উদীয়মান সেভেন বা ই৭ অর্থনীতির দেশগুলো জি৭ অর্থনীতির দেশগুলোর তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ দ্রুত বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া ভিয়েতনাম, ভারত এবং বাংলাদেশ দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশগুলোর তালিকায় থাকবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
অর্গ্যানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) একটি প্রতিবেদন পূর্বাভাস দিয়েছে যে, আফ্রিকা মহাদেশ ২০৩০ থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে যাচ্ছে। এছাড়া পোল্যান্ড ইউরোপীয় ইউনিয়নের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অপরদিকে ব্রাজিল, নাইজেরিয়া এবং তুরস্কের মতো দেশগুলোতে সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও তারা দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করতে ইচ্ছুক দেশগুলোর জন্য যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধা উপস্থাপন করছে। ফলে এই দেশগুলোতে উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে।
এই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য উদীয়মান বাজার তৈরিতে বিভিন্ন দেশের সরকারকে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি, অর্থনীতির বৈচিত্র্যকরণ এবং রাজনৈতিক ও আইনি প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে কাঠামোগত সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হবে।
২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশ হতে যাওয়া চীনের জিডিপি ৪২ দশমিক ৯৬ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে এবং ২০৩০ সালের আগে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি হিসাবে আবির্ভূত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই সময়ের মধ্যে দেশটির জনসংখ্যা ১৩১ কোটিতে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকবে ভারত। দেশটির জিডিপি ৩৮ দশমিক ৬৮ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। এছাড়া তৃতীয় অবস্থানে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির জিডিপি হবে ২৬ দশমিক ৫৮ ট্রিলিয়ন ডলার।
এই তালিকার চতুর্থ অবস্থানে থাকবে ইন্দোনেশিয়া, ৫ম অবস্থানে রাশিয়া, ৬ষ্ঠ অবস্থানে জাপান, ৭ম জার্মানি, ৮ম তুরস্ক, ৯ম যুক্তরাজ্য এবং ১০ম স্থানে থাকবে ব্রাজিল। এরপরেই বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে জায়গা করে নেবে মিশর, ইথিওপিয়া, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া, স্পেন, সৌদি আরব, পাকিস্তান, পোল্যান্ড এবং মিয়ানমার।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ভিআইপিদের জন্য সড়ক-ফুটপাত খালি, সাধারণদের জন্য নয় কেন: মুম্বাইয়ের হাইকোর্ট
ভারতের মহারাষ্ট্র প্রদেশের মুম্বাইয়ের হাইকোর্ট বলেছেন, যখন প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য ভিভিআইপিদের জন্য একদিনেই রাস্তা ও ফুটপাত খালি করা হয়, তখন অন্য সবার জন্যও কেন তা প্রত্যেকদিন করা যাবে না। পরিষ্কার ফুটপাত এবং হাঁটার জন্য নিরাপদ জায়গা পাওয়া প্রত্যেকের মৌলিক অধিকার। রাজ্য কর্তৃপক্ষ এটা করতে বাধ্য।
সোমবার মুম্বাই হাইকোর্টের বিচারপতি এম এস সোনাক এবং কমল খাতার ডিভিশন বেঞ্চ ফুটপাত ও সড়ক থেকে হকার এবং অবৈধ বিক্রেতাদের উচ্ছেদের এক আবেদনের শুনানিতে এমন মন্তব্য করেছেন।
হাইকোর্টের বেঞ্চ বলেছেন, শহরের ফুটপাতে অবৈধ হকারদের দখল সমস্যা সমাধানের উপায় এবং এই বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপের জন্য রাজ্য কেবল চিরকালই ভাবতে পারে না।
গত বছর মুম্বাইয়ের হাইকোর্ট নগরীতে অবৈধ ও অবৈধ হকার এবং বিক্রেতাদের উচ্ছেদের বিষয়টি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আমলে নিয়েছিলেন। সোমবার হাইকোর্টের বেঞ্চ বলেছেন, তারা জানেন এই সমস্যাটি অনেক বড় এবং রাজ্য, নাগরিক সংস্থাসহ অন্যান্য কর্তৃপক্ষ কেবল এটাকে ছেড়ে দিতে পারে না। এই বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের বেঞ্চ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী বা কিছু ভিভিআইপি এলে রাস্তা এবং ফুটপাত তাৎক্ষণিকভাবে খালি করা হয়… এবং তারা সেখান দিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত এই ব্যবস্থা কার্যকর থাকে। তখন এটা কীভাবে করা হয়? কেন এটা অন্য সবার জন্য করা যায় না? নাগরিকরা করদাতা… তাদের পরিষ্কার ফুটপাত ও হাঁটার জন্য নিরাপদ জায়গা পাওয়ার অধিকার রয়েছে।
ফুটপাত এবং হাঁটার জন্য নিরাপদ জায়গা নাগরিকের মৌলিক অধিকার। আমরা আমাদের বাচ্চাদের ফুটপাতে হাঁটতে বলি। কিন্তু যদি হাঁটার জন্য কোনও ফুটপাত আর না থাকে, তাহলে আমরা আমাদের বাচ্চাদের কী বলব? প্রশ্ন করেন হাইকোর্ট।
মুম্বাইয়ের বিচারপতি এম এস সোনাক এবং কমল খাতার ডিভিশন বেঞ্চ বলেছেন, কয়েক বছর ধরে কর্তৃপক্ষ বলে আসছে, তারা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। রাষ্ট্রকে কঠোরভাবে কিছু করতে হবে। কী করা উচিত আর এটা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে বলে কর্তৃপক্ষ চিরকাল ভাবতে পারে না। মনে হচ্ছে তাদের ইচ্ছার অভাব আছে। কারণ ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়।
বৃহৎ মুম্বাই পৌর কর্পোরেশনের (বিএমসি) জ্যেষ্ঠ পরামর্শক এস ইউ কামদার বলেছেন, সড়ক এবং ফুটপাতে বসা বিক্রেতা ও হকারদের বিরুদ্ধে পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কিন্তু তারা আবার ফিরে আসে। বিএমসি ভূগর্ভস্থ বাজারের বিকল্পও বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আগামী ২২ জুলাই এই বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য ধার্য করেছেন মুম্বাইয়ের আদালত।
কাফি