ধর্ম ও জীবন
‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত আরাফাত ময়দান
!['লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক' ধ্বনিতে মুখরিত আরাফাত ময়দান সাইফ পাওয়ার](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2024/06/arafat1.jpg)
শুক্রবার থেকেই শুরু হয়েছে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা। আজ শনিবার (১৫ জুন) ১৫ লাখেরও বেশি মানুষের আরাফাতের ময়দানে উপস্থিতির মাধ্যমে হজের চূড়ান্ত পর্যায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে হাজিরা মিনা থেকে আরাফায় উপস্থিত হয়েছেন। হাজিদের ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ (আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির) ধ্বনিতে প্রকম্পিত হচ্ছে আরাফাতের ময়দান।
শনিবার বাংলাদেশ সময় বিকেল সোয়া ৩টার দিকে আরাফাত ময়দানের নামিরাহ মসজিদ থেকে হজের খুতবা পাঠ শুরু করেন পবিত্র মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব শায়েখ ড. মাহের আল মুয়াইকিলি।
আজ সারাদিন আরাফাতেই অবস্থান করবেন হজযাত্রীরা। সেখানে সারা রাত খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করবেন তারা। সুবহে সাদিক থেকে সূর্য উদয় হওয়া পর্যন্ত যেকোনো এক মুহূর্ত মুজদালিফায় অবস্থান করতে হয়। ফজরের নামাজ আদায় করে সূর্য ওঠার কিছু আগে মিনার উদ্দেশে রওনা দেন হাজিরা। শয়তানের উদ্দেশে পাথর সংগ্রহ করতে হয় মুজদালিফায় অবস্থানের সময়, রাত কিংবা সকালে।
১০ জিলহজ সকালে মুজদালিফা থেকে মিনায় এসে বড় জামরায় সাতটি পাথর নিক্ষেপ করতে হয়। এরপর মিনায় কোরবানির পশু জবাই করতে হয়। কোরবানির পরপরই মাথা মুণ্ডন করার নিয়ম রয়েছে।
হজের সর্বশেষ কার্য কাবাঘর প্রদক্ষিণ, যা ১১ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ সূর্য ডোবার আগে সম্পন্ন করতে হয়। ১১ ও ১২ জিলহজ মিনায় অবস্থান করে ধারাবাহিকভাবে ছোট, মধ্যম ও বড় জামরায় সাতটি করে ২১টি পাথর নিক্ষেপ করতে হয় প্রতিদিন।
১০-১২ জিলহজ পর্যন্ত মিনায় রাতযাপন করতে হয়। কেউ মিনা ত্যাগ করতে চাইলে ১২ জিলহজ সূর্য ডোবার আগে চলে যেতে হবে। এ সময়ের মধ্যে মিনা ত্যাগ করতে না পারলে ১৩ জিলহজ মিনায় অবস্থান করতে হবে। সেদিন সাতটি করে আরো ২১টি পাথর নিক্ষেপ করতে হবে। দেশে রওনা হওয়ার আগে তাওয়াফ করতে হয়, যাকে বিদায়ী তাওয়াফ বলে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
![](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2023/02/Logo_OS_250_72.webp)
ধর্ম ও জীবন
পবিত্র কাবার চাবি সংরক্ষণের দায়িত্ব পেলেন যিনি
![পবিত্র কাবার চাবি সংরক্ষণের দায়িত্ব পেলেন যিনি সাইফ পাওয়ার](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2024/06/kaba-kay.jpg)
মক্কায় পবিত্র কাবাঘরের চাবি হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে। কাবাঘরের সদ্য প্রয়াত চাবিরক্ষক শায়খ সালেহের মৃত্যুর তিনদিন পর ১১০তম দায়িত্বশীল হিসেবে এ চাবি গ্রহণ করেছেন শায়খ আবদুল ওয়াহাব বিন জয়নুল আবেদিন আল-শায়বি। শায়বি পরিবারের সবচেয়ে প্রবীণ ব্যক্তি হিসেবে তাঁর কাছে এ চাবি হস্তান্তর করা হয়।
গত ২৫ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর কাছে পবিত্র কাবাঘর ও মাকামে ইবরাহিমের চাবি হস্তান্তর করেন সদ্য প্রয়াত শায়খ ড. সালেহের ছেলে আবদুর রহমান। সৌদি আরবের সরকারি টিভি চ্যানেল আল-ইখবারিয়া সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
শায়খ আবদুল ওয়াহাব আল-শায়বির দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে, পবত্রি কাবাঘরের দরজা খোলা ও বন্ধ করা, ধৌত ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করা, কাবাঘরের গিলাফ (কিসওয়া) পরিবর্তন কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করাসহ মসজিদে আগত অতিথিদের অভ্যর্থনা জানানো।
এর আগে গত ২১ জুন পবিত্র কাবাঘরের সর্বশেষ চাবিরক্ষক শায়খ ড. সালেহ বিন জয়নুল আবেদিন আল-শায়বি মক্কায় ইন্তেকাল করেন। তিনি ছিলেন মুহাম্মদ (সা.)-এর মক্কা বিজয়কাল থেকে ৭৭তম এবং তাঁর পূর্বপুরুষ কুসাই বিন কিলাব-এর যুগ থেকে ১০৯ তম চাবিরক্ষক।
পবিত্র কাবাঘরের চাবি গ্রহণ করে শায়খ আবদুল ওয়াহাব বলেন, ‘মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করি, যেন তিনি আমাকে এ গুরু দায়িত্ব পালনের তাওফিক দেন। বিশেষত সৌদি বাদশাহ সালমান ও যুবরাজ মোহাম্মদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।’
এদিকে আল-শায়বি পরিবারের সদস্য শায়খ নাজার আল-শায়বি বলেন, ‘প্রাচীনকাল থেকে পবিত্র কাবাঘরের চাবি আল-শায়বি বংশের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তির কাছে হস্তান্তরের রীতি চলে আসছে। সেই হিসেবে শায়খ আবদুল ওয়াহাবের কাছে এ চাবি দেওয়া হয়েছে।
এখন আমরা অপেক্ষায় থাকব যেন আগামী হিজরি নববর্ষের প্রথম রাতে তিনি পবিত্র কাবাঘরের গিলাফ পরিবর্তনসহ সংশ্লিষ্ট সব কাজের তত্ত্বাবধান করতে পারেন।’
মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর মক্কা বিজয়কাল থেকে ৭৮তম এবং তাঁর পূর্বপুরুষ কুসাই বিন কিলাব-এর যুগ থেকে ১১০ তম চাবিরক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন শায়খ আবদুল ওয়াহাব। তিনি বিখ্যাত সাহাবি উসমান ইবনে তালহা (রা.)-এর বংশধর ছিলেন। যাঁর ব্যাপারে রাসুল (সা.) বলেছিলেন, ‘হে তালহার বংশধর, তোমরা এ চাবি গ্রহণ কোরো। তোমাদের কাছে তা থাকবে।
মূলত ইসলাম-পূর্ব যুগ থেকেই কাবাঘরের চাবি আল-শায়বি গোত্রের কাছে থাকত। অষ্টম হিজরি তথা ৬২৯ খ্রিস্টাব্দে মক্কা বিজয়ের দিন রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজেই ওই গোত্রের উসমান ইবনে তালহার (রা.) কাছে চাবি হস্তান্তর করে তাকে সম্মানিত করেন। এরপর থেকে তাঁর বংশধরেরা ওই চাবি সংরক্ষণ করছেন। বর্তমান সময়ে তাদের কাছ থেকে চাবি নিয়েই বিভিন্ন সময় সৌদি আরবের বাদশাহ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ পবিত্র কাবা ঘরে প্রবেশ করে থাকেন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
দেশে ফিরেছেন প্রায় ১২ হাজার হজ যাত্রী
![দেশে ফিরেছেন প্রায় ১২ হাজার হজ যাত্রী সাইফ পাওয়ার](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2024/06/haj-haji-return-haz1.jpg)
চলতি বছর পবিত্র হজ পালন শেষে দেশে ফিরছেন হাজিরা। এদিকে এখন পর্যন্ত ১১ হাজার ৬৪০ হাজি দেশে ফিরেছেন। রোববার (২৩ মে) দিনগত রাতে হজ পোর্টালের সবশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।
সৌদি থেকে ৩০টি ফ্লাইটে এসব হাজি বাংলাদেশে এসেছেন। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ৮টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ১০টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ১২টি ফ্লাইট পরিচালনা করে।
হজ শেষে গত ২০ জুন থেকে দেশে ফেরার ফ্লাইট শুরু হয়। ওইদিন বাংলাদেশ বিমানের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট ৪১৭ হাজি নিয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। আগামী ২২ জুলাই পর্যন্ত হাজিদের ফিরতি ফ্লাইট অব্যাহত থাকবে।
এবার বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন (ব্যবস্থাপনা সদস্যসহ) হজযাত্রী সৌদি আরবে যান হজ পালন করতে। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় চার হাজার ৫৬২ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮০ হাজার ৬৯৫ জন। হজে গিয়ে এখন পর্যন্ত ৪৪ জন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে পুরুষ ৩৫ এবং মহিলা নয়জন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
দুর্নীতি রোধে ইসলামের দশ নির্দেশনা
![দুর্নীতি রোধে ইসলামের দশ নির্দেশনা সাইফ পাওয়ার](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2024/06/islam.jpg)
ইসলাম নীতি ও নৈতিকতার ধর্ম। এখানে দুর্নীতির কোনো সুযোগ নেই। ইসলাম সব সময় সততা, ন্যায়পরায়ণতা, আমানতদারি ও বিশ্বস্ততার গুণাবলি অর্জনের নির্দেশনা দেয়। ইসলাম দুর্নীতি প্রতিরোধে আইন ও শাস্তির বিধানের সঙ্গে সঙ্গে আরো কিছু বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যা ইনসাফপূর্ণ একটি সমাজ প্রতিষ্ঠা করার পথ দেখায়।
জেনে নেওয়া যাক- দুর্নীতি দমনে ইসলাম কী কী নির্দেশনা দিয়েছে।
এক. আল্লাহর ভয় সম্পর্কে সচেতন করা
আল্লাহর ভয় ও আখিরাতের শাস্তি সম্পর্কে সচেতন করার দ্বারা অপরাধ দমন করা যায়। কারণ দুনিয়ায় অপরাধের শাস্তি হোক বা না হোক, আখিরাতে সব অপরাধের বিচার হবে। দুনিয়ায় মানুষের চোখ ফাঁকি দেওয়া গেলেও আখিরাতে আল্লাহর দরবারে ফাঁকি দেওয়ার কোনো সুযোগই থাকবে না; বরং সব কর্মকাণ্ডের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব দিতে হবে।
সেখানে কোনো বিষয়ে দুর্নীতি, ব্যক্তি বা জাতির হক আত্মসাৎ প্রমাণিত হলে তার জবাবদিহি করতে হবে এবং পরিণামে জাহান্নামের কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, আজ আমি তাদের মুখে মোহর এঁটে দেব, তাদের হাত আমার সঙ্গে কথা বলবে এবং তাদের পা তাদের কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে। (সুরা : ইয়াসিন, আয়াত : ৬৫) আল্লাহর সামনে হিসাব দিতে হবে এই মানসিকতা জনসাধারণের মধ্যে সৃষ্টি হলে দুর্নীতি ও অপরাধ কমে আসবে।
দুই. সর্বত্র ইসলামী শিক্ষা
দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি ইসলামী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। এ জন্য প্রথমেই পারিবারিকভাবে এ বিষয়ে পরিকল্পনা নিতে হবে। কারণ একজন শিশুর ওপর পরিবারের প্রভাব সবচেয়ে বেশি থাকে। তাই প্রত্যেক মা-বাবার উচিত, সন্তানকে সৎ, আল্লাহভীরু ও ইসলামী অনুশাসনের পূর্ণ অনুসারী হিসেবে গড়ে তোলার সুব্যবস্থা করা। আল্লাহ তাআলা বলেন, লোকালয়ের মানুষগুলো যদি ঈমান আনত এবং তাকওয়ার জীবন অবলম্বন করত, তাহলে আমি তাদের ওপর আসমান-জমিনের যাবতীয় বরকতের দুয়ার খুলে দিতাম। (সুরা : আরাফ, আয়াত : ৯৬)
তিন. হালাল-হারাম সম্পর্কে অবগত করা
দুর্নীতি দমন বা সর্বপ্রকার অপরাধ দমনের মূলনীতি হিসেবে ইসলাম হালাল-হারাম তথা পবিত্র-অপবিত্রের মধ্যে পার্থক্য করে দিয়েছে। বৈধ ও অবৈধের প্রভেদ পরিষ্কার করেছে। যা মহান আল্লাহর দৃষ্টিতে পবিত্র, তা হালাল ও বৈধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। আর যা অপবিত্র, তা হারাম ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে হালালের কল্যাণ ও উপকারিতা এবং হারামের অপকারিতা ও ক্ষতি স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। পবিত্র কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, হে ঈমানদাররা! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস কোরো না। শুধু তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ। আর তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা কোরো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তোমাদের প্রতি দয়ালু। (সুরা : নিসা, আয়াত : ২৯)
চার. হারাম উপার্জনের প্রতি নিরুৎসাহ করা
অসৎ ও হারাম উপায়ে উপার্জনের প্রবণতা থেকেই মূলত মানুষ দুর্নীতিগ্রস্ত হয়, যা তাকে দুনিয়া ও আখিরাতে সর্বপ্রকার ক্ষতির মুখোমুখি করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) হারাম উপার্জনের প্রতি উম্মতকে নিরুৎসাহ করেছেন। এ ব্যাপারে আবু বকর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, হারাম দ্বারা বর্ধিত দেহ জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (মেশকাত )
পাঁচ. পরকালের পুরস্কারের ঘোষণা করা
সততা ও হালাল জীবনযাপনের ফলে ইহকালীন ও পরকালীন পুরস্কারের ঘোষণার মাধ্যমেও ইসলাম দুর্নীতি দমনের পদক্ষেপ নিয়েছে। কারণ একজন মানুষের মধ্যে যখন কিছু পাওয়ার আশা থাকবে এবং সে তা পাবে, তখন সে এর জন্য কষ্ট স্বীকার করতে প্রস্তুত থাকবে। অনৈতিক ও দুর্নীতিযুক্ত কাজে জড়িত হবে না। কারণ যারা নেক আমল করে তাদের জন্য প্রতিদান আছে। পবিত্র কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে পুরুষ বা নারী ঈমানের সঙ্গে নেক আমল করে তারাই জান্নাতে প্রবেশ করবে। সেখানে তাদের বেহিসাবে রিজিক দেওয়া হবে।’ (সুরা : মুমিন, আয়াত : ৪০)
ছয়. রাষ্ট্রে সুদ-ঘুষ নিষিদ্ধ করা
দুর্নীতি নির্মূল করতে হলে প্রথমেই সমাজ থেকে সুদ, ঘুষ ও দুর্নীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। সমাজ থেকে দুর্নীতি প্রতিরোধে রাসুলুল্লাহ (সা.) ঘুষদাতা ও গ্রহীতার প্রতি অভিশাপ দিয়েছেন। হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) সুদখোর, সুদদাতা, সুদের দলিল লেখক এবং সুদের দুই সাক্ষীর ওপর অভিশাপ করেছেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ)
সাত. অধীনদের মধ্যে সুষম বেতন-ভাতা প্রদান
দুর্নীতির একটি কারণ হলো অধীন বা কর্মচারীদের সীমিত বেতন-ভাতা নির্ধারণ। এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর বিখ্যাত উক্তি হলো, তারা (শ্রমিক ও কর্মচারী) তোমাদের ভাই। আল্লাহ তাদের তোমাদের অধীন করেছেন। কারো ভাই তার অধীনে থাকলে তার উচিত নিজে যা খাবে তাকে তাই খাওয়াবে। নিজে যা পরবে তাকেও তাই পরতে দেবে, তাকে দিয়ে এমন কোনো কাজ করাবে না, যা তার সাধ্যের বাইরে। কোনোভাবে তার ওপর আরোপিত বোঝা বেশি হয়ে গেলে নিজেও তাকে সে কাজে সহায়তা করবে। (সহিহ বুখারি)
আট. সততার সঙ্গে নিয়োগদান
রাষ্ট্রে দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়ার অন্যতম কারণ হলো অযোগ্য ও অসৎ ব্যক্তিদের অসদুপায়ে চাকরি, নিয়োগ ও পদোন্নতি প্রদান। কর্মকর্তাদের কাছে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পবিত্র আমানত। এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.) এই দায়িত্ব আমানত হিসেবে সাব্যস্ত করে বলেছেন, আমানত নষ্ট হতে থাকলে তোমরা কিয়ামতের প্রতীক্ষায় থেকো। আবু হুরায়রা (রা.) বলেছেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! কিভাবে আমানত নষ্ট হবে? তিনি বলেন, যখন অযোগ্য, অদক্ষ ব্যক্তিদের কোনো কাজের দায়িত্ব দেওয়া হবে, তখন তোমরা কিয়ামতের প্রতীক্ষায় থেকো।’ (সহিহ বুখারি )
নয়. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা
দুর্নীতি প্রতিরোধের অন্যতম পূর্বশর্ত হলো বিচারব্যবস্থার পূর্ণ স্বাধীনতা। বিচার বিভাগকে প্রভাবমুক্ত রাখতে পারলেই দুর্নীতি অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, মাখজুম গোত্রের এক নারী চোরের ঘটনা কুরাইশের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অত্যন্ত উদ্বিগ্ন করে তুলল। এ অবস্থায় তারা বলাবলি করতে লাগল- এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে কে আলাপ করতে পারবে? তারা বলল, একমাত্র রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রিয়তম উসামা বিন জায়েদ (রা.) এ ব্যাপারে আলোচনা করার সাহস করতে পারেন। উসামা (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে কথা বলেন। নবীজি (সা.) বলেন, ‘তুমি কি আল্লাহর নির্ধারিত সীমা লঙ্ঘনকারীর সাজা মওকুফের সুপারিশ করছ?’ অতঃপর রাসুলুল্লাহ (সা.) দাঁড়িয়ে খুতবায় বলেন, ‘তোমাদের আগের জাতিগুলোকে এ কাজই ধ্বংস করেছে যে যখন তাদের মধ্যে কোনো বিশিষ্ট লোক চুরি করত, তখন তারা বিনা সাজায় তাকে ছেড়ে দিত। অন্যদিকে যখন কোনো অসহায় গরিব সাধারণ লোক চুরি করত, তখন তার ওপর হদ জারি করত। আল্লাহর কসম, যদি মুহাম্মদ (সা.)-এর কন্যা ফাতিমা চুরি করত তাহলে আমি অবশ্যই তার হাত কেটে দিতাম।’ (সহিহ বুখারি )
দশ. সমাজের সবাই সচেতন থাকা
নাগরিক সচেতনতা ও সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমেও দুর্নীতি দমনের উদ্যোগ নিয়েছে ইসলাম। সমাজের সর্বস্তরে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। সাধারণ জনগণও এর আওতাভুক্ত থাকবে। কোথাও দুর্নীতি হতে দেখলে সাধ্যমতো প্রতিবাদ করতে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যখন কোনো অন্যায় হতে দেখে, সে যেন সম্ভব হলে তা হাত দিয়ে রুখে দেয়। আর তা সম্ভব না হলে প্রতিবাদী ভাষা দিয়ে যেন তা প্রতিহত করে। আর তা-ও না পারলে সে যেন ওই অপকর্মকে হৃদয় দিয়ে বন্ধ করার পরিকল্পনা করে (মনে মনে ঘৃণা করে), এটি দুর্বল ঈমানের পরিচায়ক।’ (জামে তিরমিজি)
আল্লাহ তাআলা আমাদের দুর্নীতির করাল থাবা থেকে হেফাজত করুন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পাওয়া যাবে ওমরাহ ভিসা
![২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পাওয়া যাবে ওমরাহ ভিসা সাইফ পাওয়ার](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2024/03/hajj-haz.jpg)
পবিত্র ওমরাহ পালনে আগ্রহী ব্যক্তিদের জন্য ইলেকট্রনিক ভিসা বা ই-ভিসা চালু করছে সৌদি আরব। সে দেশের হজ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রণালয় এ ভিসা চালুর ঘোষণা দিয়েছে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওমরাহ পালনে সৌদি আরব যেতে আগ্রহী ব্যক্তিরা নুসুক অ্যাপ ব্যবহার করে ই-ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
এই অ্যাপের মাধ্যমে ওমরাহ পালনের জন্য আবেদনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পাওয়া যাবে ভিসা। ভিসার মেয়াদ ৩০ দিন থেকে বাড়িয়ে ৯০ দিন করা হয়েছে। ভিসা পেতে স্বাস্থ্য পরীক্ষা লাগবে না। নারীদের জন্য পুরুষ অভিভাবক থাকার বাধ্যবাধকতাও থাকছে না।
নতুন ব্যবস্থায় আরবি বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস মহররমের প্রথম দিনই (১৯ জুলাই) ওমরাহ পালনে সৌদি আরবে যেতে পারবেন আগ্রহী ব্যক্তিরা।
সৌদি প্রেস এজেন্সির (সিপিএ) তথ্যমতে, ওমরাহ করতে আসা ব্যক্তিদের জন্য সেবার মানোন্নয়ন এবং তাঁদের সৌদি আরবে প্রবেশ আরও সহজ করতেই ই-ভিসা চালুসহ অন্যান্য সেবা সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়।
মক্কা ও মদিনায় আসা মুসলমানদের স্বাগত জানানোর প্রক্রিয়া সহজ করতেই মূলত নুসুক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা হয়। এখন থেকে হজ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রণালয় এটিকে ই-ভিসার আবেদনের জন্য ব্যবহার করবে। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিশ্বের সব প্রান্তের মানুষ সহজে ওমরাহর ই-ভিসার আবেদন করতে পারবেন। পাশাপাশি পরিবহন, আবাসনসহ অনেক সেবাও মিলবে প্ল্যাটফর্মটিতে।
এই প্ল্যাটফর্মে সব সময় নানা ভাষার ইন্টারঅ্যাকটিভ ম্যাপ দেখা যাবে। এসব সেবা সংযুক্তির ফলে ভ্রমণকারীরা বিনা বাধায় পুরো সৌদি আরবে বেড়াতে এবং নিজেদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা আরও সমৃদ্ধ করতে পারবেন।
ই-ভিসার ঘোষণা আসার আগে হজ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, গলফ কো-অপারেশন কাউন্সিলের (জিসিসি) সদস্যদেশগুলোর নাগরিকদের মধ্যে যাঁদের সৌদি আরব, শেনজেনভুক্ত দেশ, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে প্রবেশের ভিসা আছে, তাঁরা নুসুক অ্যাপের মাধ্যমে সৌদি আরবে আসার আগেই ওমরাহ পালন এবং মদিনার আল-রওজা দেখতে ‘রিজার্ভেশন’ করতে পারবেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
নামাজে রাকাত ভুল হলে কী করবেন?
![নামাজে রাকাত ভুল হলে কী করবেন? সাইফ পাওয়ার](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2024/03/JUMMAH-1.jpg)
নামাজ মনোযোগের সঙ্গে আদায় করতে হবে। নামাজ পড়তে গিয়ে ভুল করা ঠিক নয়। তবু মানুষ দোষেগুণেই মানুষ। নামাজ আদায় করতে গিয়ে কত রাকাত পড়া হলো তা নিয়ে ভুল করে বিভ্রান্তি হয়ে যেতে পারে।
ধরা যাক, জোহরের ৪ রাকাত সুন্নত নামাজের মধ্যে মনে হঠাৎ সংশয় হতে পারে, কত রাকাত নামাজ আদায় করা হলো? ২ রাকাত নাকি ৩ রাকাত? তখন কী করা যায়? সেই সমস্যার একটি সমাধান বাতলে দিয়েছে তিরমিজি শরিফে একটি হাদিস।
আবদুর রহমান ইবনে আওফ (রা.) বর্ণনা করেছেন, ‘আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, তোমাদের কেউ নামাজে ভুল করে, যখন সে বলতে পারে না সে এক রাকাত, দুই রাকাত না তিন রাকাত আদায় করেছে। সেটি ঠিক করতে না পারলে দুই রাকাতকে ভিত্তি ধরবে।
আর যদি তিন রাকাত আদায় করেছে না চার রাকাত আদায় করেছে সেটি বুঝতে না পারে, তবে তিন রাকাতকে ভিত্তি ধরবে। এ ক্ষেত্রে সালাম ফেরানোর আগে দুই সেজদা করতে হবে। (তিরমিজি, ৩৯৮)
এমআই